অর্থনীতি
মেট্রোরেলের সাবেক এমডির সুবিধায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা অপচয়!
নিজের সুবিধার জন্য বাসার কাছেই নেন অফিস ভাড়া। বাসা থেকে অফিসের দূরত্ব ছিল ৭০০ মিটার। শুধু অফিস ভাড়া বাবদই মাসে খরচ হতো কয়েক লাখ টাকা। মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানকে একচ্ছত্র ক্ষমতায় পরিচালনা করা সাবেক এমডি এম এ এন ছিদ্দিকের বিরুদ্ধে রয়েছে এমন অভিযোগ। উত্তরার দিয়াবাড়িতে বিশাল জায়গায় মেট্রোরেলের নিজস্ব ভবন থাকলেও এতদিন ভাড়া কার্যালয়ে অফিস করেছেন ছিদ্দিক। এজন্য মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানকে গচ্চা দিতে হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা।
ডিএমটিসিএল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সাবেক এমডি এম এ এন ছিদ্দিকের সুবিধার জন্য এতদিন অফিস স্থান্তরিত করা হয়নি। তাই এই অর্থ ভাড়া হিসেবে দেয়া লেগেছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের।
উত্তরার দিয়াবাড়িতে অবস্থিত এমআরটি লাইন-৬ এর ডিপো। সেখানে অবস্থিত ডিএমটিসিএল ভবন। ওই ভবনটি নির্মাণে চুক্তি বাস্তবায়নের মেয়াদ ছিল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর। নির্দিষ্ট সময়েই শেষ হয়েছে কাজ। এরপর ডিফেক্ট লাইবিলিটি পিরিয়ড (ডিএলপি) ছিল দেড় বছর। ২০২১ সালে ভবনের কাজ শেষ হওয়ার পরই ডিএমটিসিএলে অফিস করেছেন মেট্রোরেলের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী। তবে ডিএমটিসিএল এর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ইস্কাটন রোডের প্রবাসী কল্যাণ ভবনে ভাড়া অফিসেই এতদিন কার্যক্রম চালিয়েছেন। এমআরটি লাইন-১, লাইন-৬ ও লাইন-৫ এর রুটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেখানে অফিস করেছেন। চলতি মাস থেকে এ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরিত হয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) সাবেক এমডি এম এ এন ছিদ্দিকের কারণে এতদিন নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরিত হতে পারেনি ডিএমটিসিএল এর অফিস। প্রবাসী কল্যাণের ভবন থেকে মাত্র ৭০০ মিটার দূরে রাজধানীর বেইলী রোডের সরকারি অফিসার্স কোয়ার্টার গুলফিশানে থাকতেন ছিদ্দিক। সেখান থেকে প্রবাসী কল্যাণ ভবন কাছাকাছি হওয়ায় এতদিন ভবনটি ভাড়া নিয়ে অফিসের কার্যক্রম চালিয়েছেন। যদিও দিয়াবাড়িতে ডিএমটিসিএল এর নিজস্ব অফিসটি দৃষ্টিনন্দন। এতদিন সেখানে অফিস না করা নিয়ে উষ্মাও রয়েছে কিছু কর্মকর্তাদের মধ্যে।
গতকাল মঙ্গলবার বেইলী রোডের গুলফিশানে গিয়ে খোঁজ নিলে জানা যায়, ডিএমটিসিএল’র সাবেক এমডি সেখানে আর নেই। ডিএমটিসিএল থেকে তার নিয়োগের চুক্তি বাতিল হওয়ার পর গুলফিশান থেকে চলে গেছেন ছিদ্দিক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৫ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রবাসী কল্যাণ ভবন ভাড়া নিয়েছে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ। এমআরটি লাইন-১ এর জন্য ১১ হাজার ৮৯০ স্কয়ারফিট জায়গায় ভাড়া নিয়েছিলো প্রবাসী কল্যাণ ভবনে। তবে দিয়াবাড়িতে ডিএমটিসিএল এর নিজস্ব ভবন নির্মাণ হওয়ার পর অর্থাৎ ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ভাড়া দিতে হয়েছে ২ কোটি ৪০ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এরমধ্যে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত মাসে প্রতি স্কয়ার ফিট ভাড়া ছিল ৫৫ টাকা করে। আর ওই বছরের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রতি স্কয়ার ফিট ভাড়া ছিল ৬০ টাকা ৫০ পয়সা। এরপর থেকে গত আগস্ট পর্যন্ত ভাড়া ছিল ৬৬ টাকা ৫০ পয়সা। এ ছাড়া এমআরটি লাইন-১ এর আরও একটি ফ্লোর ভাড়া নেয়া হয় ২০২৩ সালের জুলাই মাসে। ৫ হাজার ৪৪৪ স্কয়ার ফিটের প্রতি স্কয়ার ফিটের মাসিক মূল্য ছিল ৫৫ টাকা। অর্থাৎ তখন থেকে চলতি বছর আগস্ট পর্যন্ত ভাড়া দিয়েছে ৪১ লাখ ৯১ হাজার টাকা।
সূত্র জানায়, প্রবাসী কল্যাণ ভবনে মেট্রোরেল সাউদার্ন রুটের জন্য ভাড়া নেয়া হয়েছিল ৭ হাজার ৮৫৭ স্কয়ার ফিট। ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত এজন্য ভাড়া দিতে হয়েছে ১ কোটি ৬১ লাখ ১৮ হাজার টাকা। এরমধ্যে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাসে প্রতি স্কয়ার ফিট ভাড়া ছিল ৫৫ টাকা করে। আর তারপর থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ভাড়া দিয়েছে ৬০ টাকা ৫০ পয়সা।
এ ছাড়া মেট্রোরেল লাইন-৬ এর জন্য ১৩ হাজার ৭৮৫ স্কয়ার ফুটের অফিস ভাড়া নিয়েছিল ডিএমটিসিএল। ২০২১ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত এজন্য ভাড়া দিতে হয়েছে ২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মাসে প্রতি স্কয়ার ফিট ভাড়া ছিল ৫৫ টাকা। এরপর থেকে চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত ভাড়া ছিল ৬০ টাকা ৫০ পয়সা। এপ্রিল থেকে চলতি আগস্ট পর্যন্ত ভাড়া ছিল ৬৬ টাকা ৫০ পয়সা। সব মিলে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে প্রবাসী কল্যাণে অফিস ভাড়া নেয়ার জন্য ডিএমটিসিএলকে দিতে হয়েছে ৭ কোটি ৩৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা প্রায়।
ডিএমটিসিএলের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ২০২১ সালের ভেতরেই দিয়াবাড়ির ভবনের কাজ হয়েছে। তারপর থেকে সেখানে অপারেশন, মেইনটেইনেন্স দলের সবাই অফিস করেছেন। চলতি মাস থেকে প্রবাসী কল্যাণের ভবনে কাজ করা কর্মকর্তারাও এখানে অফিস শুরু করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমটিসিএল’র আরেক কর্মকর্তা বলেন, সাবেক এমডি চাননি দেখে এতদিন দিয়াবাড়িতে অফিস নেয়া যায়নি। তার নিজস্ব সুবিধার কারণে প্রবাসী কল্যাণে আমাদের অফিস করতে হয়েছে। এখানে আমাদের এতদিন শুধু শুধু ভাড়া দিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, আগের এমডি বলেছেন, কমলাপুরের কাজ শেষ না হলে দিয়াবাড়ির অফিস আনা যাবে না। তাহলে এখন কীভাবে এনেছে। প্রবাসী কল্যাণে যখন অফিস ছিল সেখান থেকে তো দিয়াবাড়ির কাজ চালানো গেছে। তাহলে এখান থেকে কমলাপুরের কাজ চালাতে তো অসুবিধা নেই। তার ব্যক্তিগত সমস্যা ছিল সেজন্য সেখানে অফিস রাখতে হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ডিএমটিসিএলে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন সাবেক এমডি। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে তার বাইরে কথা বলতে পারতেন না কেউই। গণমাধ্যমের সঙ্গেও তার ভয়ে কথা বলতেন না কোনো কর্মকর্তা। এমনকি জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কাছে সাংবাদিকরা কিছু জানতে চাইলেও সাবেক এমডি’র কাছেই জানার জন্য বলতেন। সাবেক এমডি’র ব্যবস্থাপনায় কর্মকর্তাদের মধ্যেও অসন্তোষ ছিল।
এ ব্যাপারে জানতে মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের সাবেক এমডি এম এ এন ছিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সিপি-০২ এর কাজ ২০২২ সালে পরিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছিল। তৎপূর্ব থেকেই ডিএমটিসিএল’র পূর্ণ অপারেশন ও কারিগরি টিম দিয়াবাড়ি কার্যালয়ে নিয়মিত অফিস করছে। অতি নগণ্য সংখ্যক অকারিগরি জনবল প্রবাসী কল্যাণ ভবনে অবস্থিত এমআরটি লাইন-৬ এর প্রকল্প অফিসের অব্যবহৃত কক্ষ ব্যবহার করেছে। ডিএমটিসিএল কখনো কোনো কক্ষ ভাড়া করেনি।
তিনি আরও বলেন, ডিএমটিসিএল’র নিজস্ব অকারিগরি জনবল কম থাকায় বিভিন্ন লাইনের (লাইন-৬, লাইন-১, লাইন-৫ (উভয় রুট) জনবলকে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে কাজ চালানো হয়েছে। তারা সবাই প্রবাসী কল্যাণ ভবনের স্ব স্ব প্রকল্প কার্যালয়ে বসতেন। এখান থেকে জনস্বার্থে স্বল্প ব্যয়ে মতিঝিল-কমলাপুর অংশের এবং বিনা ব্যয়ে অন্যান্য সকল লাইনে কাজের সহজ সমন্বয় করা গেছে। প্রতি মাসে সচিবালয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অনুষ্ঠিত সভায় অংশগ্রহণে সময় ও ব্যয় সাশ্রয় হয়েছে। সর্বোপরি অপারেশন ও কারিগরি সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম একইসঙ্গে দিয়াবাড়ি অফিসে গিয়ে নিয়মিত পরিচালনা করা হয়েছে। কাজেই কোনো ভাড়ার অপচয় হয়নি বরং সাশ্রয় হয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ডিএমটিসিএলের চাহিদা অনুযায়ী তাদের অফিস ধরাই ছিল ডিপোতে হবে। সেটা চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণ হয়ে যাওয়ার পর অস্থায়ীভাবে বসে যে অর্থ খরচ হলো সেটা বেচে যাওয়ার কথা। এজন্যই বিনিয়োগ করা হয়েছে। কেউ যদি বিনিয়োগের সদ্ব্যবহার না করে অপচয় করে তাহলে নিশ্চয়ই এখানে আইন বহির্ভূত কাজ হয়েছে। এই অর্থ অপচয়ে যদি সঙ্গত কোনো কারণ না থাকে তাহলে তদন্ত করে যার দায় তার কাছ থেকে আদায় করতে হবে। কারণ জনগণের টাকায় এটা করা হয়েছে। যারা এটা তদন্ত করবে না তারাও দায়ী থাকবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের বাজারে ফের বাড়ল সোনার দাম
দেশের বাজারে আবারও বেড়েছে স্বর্ণের দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮২৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪২ হাজার ২৬৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। রোববার (২৪ নভেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৪২ হাজার ২৬৬ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৬ হাজার ৩৯৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৫ হাজার ৬৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এর আগে, সবশেষ গত ২১ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২২ নভেম্বর থেকে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রমজানে দ্রব্যমূল্য সর্বোচ্চ সহনীয় করার চেষ্টা করবো: বাণিজ্য উপদেষ্টা
আসন্ন রমজান মাস উপলক্ষে খাদ্যদ্রব্যসহ জিনিসপত্রের দাম সর্বোচ্চ সহনীয় করার চেষ্টা করবো বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন।
আজ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউর প্রয়াত সদস্য সন্তানদের শিক্ষা ভাতা দেওয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমি জানি আপনারা অনেক কষ্টে আছেন। তবে এটাও বলতে চাই যে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে পেঁয়াজ, চিনি ও তেলের দাম কিছুটা কমে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জাতীয় মসজিদের খতিব পালিয়ে গেছেন, এমন একটি পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আজকের এ সরকার গঠিত হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য একটি মর্যাদাপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ।
ডিআরইউর সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিআরইউর কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির পরিচালক ও চেয়ারম্যান (রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটি) এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ব্যাংকিং খাত দেশের অর্থনীতির অন্যতম শক্তি। এনআরবিসি ব্যাংক অর্থনৈতিক উন্নয়নধর্মী কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি মানবিক অনেক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত।
এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও (চলতি দায়িত্ব) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নমূলক অনেক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এনআরবিসি ব্যাংক। ডিআরইউর এ ধরনের বৃত্তিমূলক কাজে সব সময় আমরা পাশে থাকবো।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পতনের পর স্বর্ণের দামে বড় লাফ
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। বড় উত্থানের পর যেমন বড় দরপতন হয়েছে, তেমনি বড় দরপতনের পর বড় উত্থানের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববাজারে সোনার দামের অস্থিরতার মধ্যে দেশের বাজারেও দামি এই ধাতুটির দামে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুটহাট দাম বাড়া বা কমার ঘটনা ঘটছে। চলতি নভেম্বর মাসে ৬ বার দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানো হয়েছে।
বিশ্ববাজারে গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে সোনার দামে বড় পতন হয়। পাঁচ কার্যদিবসে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ১২২ ডলার কমে যায়। এমন পতনের পর গত সপ্তাহে সোনার দামে বড় উত্থান হয়েছে। প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ১৫৩ ডলারের বেশি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ সাড়ে ১৮ হাজার টাকার ওপরে।
বিশ্ববাজারে বড় ধরনের উত্থান হওয়ায় বাংলাদেশেও গত সপ্তাহে সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারের তুলনায় বাংলাদেশে সোনার দাম বাড়ানোর হার বেশ কম। ফলে দেশের বাজারে যে কোনো সময় সোনার দাম আবার বাড়তে পারে। গত সপ্তাহে দুই দফায় দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ হাজার ৯৩৪ টাকা। অবশ্য গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে দুই দফায় ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ৪ হাজার ১৯৯ টাকা কমানো হয়।
তথ্য পর্যালোচায় দেখা যায়, বিশ্ববাজারে দফায় দফায় দাম বেড়ে গত ৩০ অক্টোবর প্রতি আউন্স সোনার দাম রেকর্ড ২ হাজার ৭৮৯ ডলারে ওঠে। বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ায় বাংলাদেশে ২০, ২৩ ও ৩১ অক্টোবর টানা তিন দফা সোনার দাম বাড়ানো হয়। ৩১ অক্টোবর সব থেকে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় এক হাজার ৫৭৫ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়ায় এক লাখ ৪৩ হাজার ৫২৬ টাকা। দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম।
বিশ্ববাজারে রেকর্ড দাম হওয়ার পরদিন থেকেই অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর থেকে পতনের মধ্যে পড়ে সোনা। কয়েক দফায় দাম কমে ১৪ নভেম্বর প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৫৪৭ দশমিক ১০ ডলারে নেমে যায়। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে যেমন সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে, তেমনই বিশ্ববাজারে দরপতন দেখা দিলে দেশের বাজারেও সোনার দাম কমানো হয়। ৫ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে চার দফায় দেশের বাজারে ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম কমানো হয় ৯ হাজার ১৭ টাকা।
অবশ্য এই বড় দরপতনের পর বিশ্ববাজারে সোনার দামে আবার বড় উত্থান প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহে লেনদেন শুরুর সময় প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৫৬২ দশমিক ৫৪ ডলার। সপ্তাহ শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭১৫ দশমিক ৮৫ ডলারে। অর্থাৎ গত সপ্তাহে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ১৫৩ দশমিক ৩১ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৮ হাজার ৩৯৭ টাকা (এক ডলার ১২০ টাকা ধরে)।
বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহের ২০ ও ২২ নভেম্বর দুই দফায় দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়। এর মধ্যে ২০ নভেম্বর সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়ানো হয়। এছাড়া ২২ নভেম্বর বাড়ানো হয় এক হাজার ৯৯৪ টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ হাজার ৯৩৪ টাকা।
বাজুসের এক সদস্য বলেন, বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুটহাট দাম বাড়ছে। বাজার পরিস্থিতি অনুমান করা খুব কঠিন হয়ে গেছে। গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক উত্থান হয়েছে। তার আগে বড় দরপতন হয়। বিশ্ববাজারে এমন অস্থিরতা থাকায় দেশের বাজারেও কয়েক দফা সোনার দাম বাড়া-কমার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ বিশ্ববাজারের যে চিত্র দেখা গেছে, তাতে দেশের বাজারে যে কোনো সময় সোনার দাম বাড়তে পারে। কারণ, গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ৫০ ডলার বেড়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
তিন মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে ৩১ শতাংশ
দেশে সঞ্চয়পত্র বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই-সেপ্টেম্বরে ১৪ হাজার ৯৯২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ২১ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রি সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা বা ৩১ শতাংশ কমেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটিতে জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি, আসল পরিশোধ ও সর্বশেষ স্থিতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রের নগদায়নও (ভাঙানো) কমে গেছে। এ কারণে এই তিন মাসে সঞ্চয়পত্রের আসল পরিশোধ বাবদ সরকারের খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। এ বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বরে সঞ্চয়পত্রের আসল বাবদ গ্রাহকদের পরিশোধ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে সঞ্চয়পত্রের আসল পরিশোধ বাবদ সরকারের খরচ কমেছে ১৬ হাজার ২৬২ কোটি টাকা বা প্রায় ৭১ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত জুলাই-আগস্টে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ১৪ হাজার ৯৯২ কোটি টাকার। তার বিপরীতে সঞ্চয়পত্রের আসল বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এই তিন মাসে সঞ্চয়পত্রের প্রকৃত বিক্রি দাঁড়ায় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকায়। বিক্রি কমে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের নিট স্থিতিও কমেছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের নিট স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। এর মানে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের স্থিতি এক বছরে ১১ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা বা সোয়া ৩ শতাংশের মতো কমেছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রাজউক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ
কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মমিন উদ্দিন একটি অফিস আদেশ জারি করে কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি জানান, রাজউকের ৯ম গ্রেডে ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের এবং অবশিষ্ট গ্রেড ১০ থেকে অন্য গ্রেডের কর্মকর্তাদের সম্পদ বিবরণী আগামী ৩০ নভেম্বর মধ্যে চেয়ারম্যান দপ্তরে দাখিল করতে হবে।
এমআই