ব্যাংক
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের এমডির পদত্যাগ
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মো. তাজুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন। ‘ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যগত কারণ’ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। এর আগে ব্যাংকটিতে থাকা নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা তুলে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় তিনি সোমবার পদত্যাগপত্র জমা দেন। ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট সূত্র তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
তাজুল ইসলাম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ছিলেন। ২০২২ সালের মার্চে তাজুল ইসলাম কমার্স ব্যাংকে এমডি হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি রাষ্ট্রমালিকানাধীন কর্মসংস্থান ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জনতা ব্যাংক লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।
জানা যায়, জনতা ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। সেই সূত্রে তাজুল ইসলামের সঙ্গে এস আলম গ্রুপের সখ্য গড়ে ওঠে। জনতা ব্যাংক থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি কমার্স ব্যাংকের এমডি হিসেবে নিয়োগ পান।
এদিকে এমডি পদত্যাগ করলেও এস আলম গ্রুপের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া বেশির ভাগ শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান এখনো বহাল রয়েছেন। ফলে ব্যাংকটি সংকট থেকে বের হতে পারছে না।
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এস আলম গ্রুপের দখলে ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ৩ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটিকে এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ পুনঃগঠন করে দেয়। নতুন পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. আতাউল রহমান মেঘনা ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মহসিন মিয়া, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট শেখ আশ্বফুজ্জামান।
এছাড়া দুজন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন-অর্থ মন্ত্রণালয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব কামরুল হক মারুফ। তিনি বর্তমানে সরকারের প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে আছেন এবং জনতা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম মরতুজা। তিনি জনতা ব্যাংকের প্রতিনিধি হিসেবে আছেন ।
কমার্স ব্যাংকের ৫১ শতাংশ শেয়ারের অংশীদার সরকারি ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০১৬ সাল থেকে এ ব্যাংকের পুরো নিয়ন্ত্রণ বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের হাতে ছিল। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ব্যাংকটিতে চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকও নিয়োগ দেয় এই গ্রুপ। তাদের মালিকানাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে আটকা পড়েছে ব্যাংকটির ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
এদিকে কমার্স ব্যাংক থেকে কৌশলে অন্য ব্যাংকে টাকা নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি এস আলম গ্রুপ। তারা ব্যাংকটিতে প্রায় ৬০০ জনবলও নিয়োগ দিয়েছে। এর বেশির ভাগই গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকার। সার্বিকভাবে আধা সরকারি এই ব্যাংকের কার্যক্রম থমকে আছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজারের আরও দুই ব্যাংক পাচ্ছে সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা
ঋণ জালিয়াতি ও নানান অনিয়োমের কারণে দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে তারল্য গ্যারান্টি দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আওতায় নতুন করে ৫৫০ কোটি টাকা তারল্য ধার পাচ্ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেসরকারি খাতের এক্সিম ও ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি। আর এই ধারের পুরোটাই দিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এরমধ্যে ৪০০ কোটি টাকার ধার পাচ্ছে এক্সিম ব্যাংক; অপরদিকে, ইউনিয়ন ব্যাংক পাচ্ছে ১৫০ কোটি টাকা।
যদিও ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রস্তাব ছিল ৩৫০ কোটি টাকার। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ১৫০ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে; বাকিটা পরবর্তীতে দেওয়া হতে পারে।
ব্যাংকাররা জানান, আন্তঃব্যাংক থেকে এই সহায়তা পাওয়ায় দুর্বল ব্যাংকগুলোর প্রতি গ্রাহকের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। অনেকের উদ্বেগ কেটে যাওয়ায় এখন আর আগের মত এসব ব্যাংকগুলোতে আমানতের টাকা তুলতে গ্রাহকরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন না। যদিও এখনও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী আমানতের টাকা ফেরত দেওয়ার মতো সক্ষম হয়ে ওঠেনি ব্যাংকগুলো।
জানা যায়, বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে যেসব ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়েছে, তাদের সংকট কাটাতে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে তহবিল সংগ্রহ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টি সাপেক্ষে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে ভালো অবস্থায় থাকা ১০টি ব্যাংক ঋণ সহায়তা দিতে রাজি হয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরে সঙ্গে এক বৈঠকে এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি) তাদের তারল্য সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি প্রকাশ করেন। এর অংশ হিসেবে প্রথম দফায় ৪টি দুর্বল ব্যাংককে ৯৭৫ কোটি টাকার ধার দেয় পাঁচটি সবল ব্যাংক।
দ্বিতীয় দফায় আগের ৪টিসহ ৫টি ব্যাংকে আরও ১,৪৮০ কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে ৩টি সবল ব্যাংক। এখন তৃতীয় দফায় সোনালী ব্যাংক সংকটে থাকা বেসরকারি এক্সিম ও ইউনিয়ন ব্যাংকে ৫৫০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
পদ হারালেন এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান-পরিচালক
ঋণখেলাপি হওয়ায় অবশেষে পদ হারিয়েছেন বেসরকারি এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার। একই কারণে পরিচালক পদ হারিয়েছেন তার বাবা মো. আব্দুল আউয়াল। তাদের মালিকানাধীন প্রাইম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে দশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণ থাকার কারণে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) তাদের দুই জনের পরিচালক পদ শূন্য করে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আট ব্যাংক ও দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁদের নেওয়া ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৭ ধারায় ইতিপূর্বে নোটিশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নোটিশ দেওয়ার নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তাঁদের পরিচালক পদ শূন্য হয়ে যাওয়াই নিয়ম। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল বৃহস্পতিবার চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ১২ অক্টোবর থেকে তাঁদের পরিচালক পদ শূন্য হয়ে গেছে।
এনসিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১–এর ১৭ ধারার আওতায় প্রদত্ত নোটিশের শর্ত অনুযায়ী নোটিশ গ্রহণের দুই মাসের মধ্যে মো. আবুল বাশার ও আবদুল আউয়াল নোটিশে উল্লেখিত অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১২ অক্টোবর থেকে এনসিসি ব্যাংকে তাঁদের পরিচালক পদ শূন্য হয়ে গেছে। নোটিশে উল্লেখিত ব্যাংক এশিয়ার পাওনা আদায়ে ব্যাংক–কোম্পানি আইন, ১৯৯১–এর ১৭ (৫) ধারার বিধান কার্যকর হবে। ১৭ (৫) ধারা অনুযায়ী, এনসিসি ব্যাংকে থাকা তাঁদের শেয়ার বিক্রি করে অন্য ব্যাংকের ঋণ শোধ করা যাবে।
জানা গেছে, মো. আবুল বাশার ও আবদুল আউয়ালের বাইরে এনসিসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলা হোসাইন ও পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেমও ঋণখেলাপি হয়ে পড়েছেন। চার পরিচালকের ঋণখেলাপি হয়ে পড়ায় এনসিসি ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়ার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যের ভিত্তিতে বিএসইসি এ সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তবে সম্প্রতি সোহেলা হোসাইনের ঋণ নিয়মিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঋণখেলাপি হয়েও বহাল এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ চার পরিচালক
এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আবুল বাশার আট ব্যাংক ও দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করছেন না। খেলাপি হয়ে পড়ায় বেশ কয়েকটি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছে। একই অবস্থা তাঁর বাবা ও এনসিসি ব্যাংকের পরিচালক আবদুল আউয়ালেরও। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁদের প্রাইম গ্রুপের ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা।
এর বাইরে ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলা হোসাইন ও পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেমও ঋণখেলাপি হয়ে পড়েছেন। ৪ পরিচালকের ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ায় এনসিসি ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়ার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যের ভিত্তিতে বিএসইসি এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
ঋণখেলাপি হলেও এনসিসি ব্যাংকের পরিচালক পদে বহাল রয়েছেন তাঁরা। আবার পুনর্নিয়োগ পাওয়ারও চেষ্টা করছেন নানাভাবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, ঋণখেলাপি কেউ ব্যাংকের পরিচালক হতে পারেন না। আবার পরিচালক পদে থাকা কেউ ঋণখেলাপি হলে তাঁকে অপসারণ করতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এনসিসি ব্যাংকের চার পরিচালকের বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর এনসিসি ব্যাংক ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়ার জন্য অনুমতি চেয়ে বিএসইসির কাছে আবেদন করে। ৯ অক্টোবর বিএসইসি এক চিঠিতে এনসিসি ব্যাংকের এমডিকে জানায়, ব্যাংকটির চার পরিচালকের ঋণ (আবুল বাশার, আবদুল আউয়াল, এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেম ও সোহেলা হোসাইন) খেলাপি থাকায় এই বন্ড অনুমোদন দেওয়া গেল না।
জানা যায়, আবুল বাশার তিন বছর ধরে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও প্রাইম গ্রুপের ডিএমডি। তাঁর পিতা আবদুল আউয়াল গ্রুপটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আট ব্যাংক ও দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁদের ঋণ ১ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৭ ধারায় নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ধারায় নোটিশ দেওয়ার নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর পরিচালক পদ শূন্য হয়ে যাওয়ার নিয়ম রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ধলেশ্বরী ওয়ার্ল্ড ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি বেনামি প্রতিষ্ঠান খুলে ৫০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করে প্রাইম গ্রুপ। পরে অন্য পরিচালকদের বাধায় তা আটকে যায়। আবার অনিয়মের আশঙ্কায় ৪০০ কোটি টাকা খরচ করে বিদেশ থেকে কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার (সিবিএস) কেনাও আটকে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলা হোসাইন মীর আকতার হোসাইন লিমিটেডের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া তিনি মীর সিমেন্ট, মীর রিয়েল এস্টেট ও মীর কংক্রিট প্রোডাক্টস লিমিটেডের প্রধান। এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণও খেলাপি হয়ে পড়েছে। ব্যাংকটির অপর পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেম আবদুল মোনেম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী। এই প্রতিষ্ঠানের ঋণও খেলাপি হয়ে পড়েছে।
এনসিসি ব্যাংকের কোম্পানি সচিব ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল আলম বলেন, ‘ভাইস চেয়ারম্যানের ঋণ পুনঃ তফসিল করে ইতিমধ্যে নিয়মিত হয়ে গেছে। অন্যদের ঋণও নিয়মিত করার চেষ্টা চলছে।’
জানা যায়, গত ১ আগস্ট কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এক-তৃতীয়াংশ পরিচালক পদত্যাগ করেন। তাঁরা আবার পুনর্নির্বাচিত হন। সভায় মো. আবদুল আউয়াল, মো. নূরুন নেওয়াজ, সৈয়দ আসিফ নিজামুদ্দীন ও মো. মইনুদ্দীন পদত্যাগ করেন। বিদ্যমান নিয়মে এজিএম হওয়ার সাত কর্মদিবস তথা ১১ আগস্টের মধ্যে অনাপত্তির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করার কথা। সব তথ্য যাচাই করে সেখান থেকে অনাপত্তি আসার পর পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হয়। এজিএমের পর পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভায় পরিচালকদের ভোটের ভিত্তিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তবে এজিএম হওয়ার ১ মাস ২৫ দিন পর গত ২৫ সেপ্টেম্বর অনাপত্তি চেয়ে চিঠি দিয়েছে এনসিসি ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। ফলে আড়াই মাস ধরে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। আটকে আছে অনেক সিদ্ধান্ত।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমালের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হুমকিদাতা এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আন্দোলনের সময় বাংলামোটর মোড়ে বেলাল হোসেন নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় হত্যায় প্রতক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্ররোচনার অভিযোগে তাকে ১৩ নম্বর আসামী করা হয়েছে। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
গতকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর শাহবাগ থানায় নিহত বেলালের মা জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোট ২২ জন ও অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামাস খান কামাল, ড. হাসান মাহমুদ, মো. আলী আরাফাত হোসেন, জুনায়েদ আহমেদ পলক, মাহবুবুল আলম হানিফ, সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, এ.এস.এম. ফিরোজ আলম, মোহাম্মদ আব্দুল আউযাল, এস,এম, পারভেজ (তমাল), সাদ্দাম হোসেন, শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, মো. শহীদুল ইসলাম, মো. মোশাররফ হোসেন, মাহবুবা মোশাররফ, মোহাম্মদ ফারহান মোশাররফ, মোহাম্মাদ ফাহিম মোশাররফ, নজিবুল্লাহ হিরো, মো. মকবুল হোসেন।
মামলার এজাহারে বাদী বলেন, আমায় বড় ছেলে মো বেলাল হোসেন রাবি রমনা মডেল থানাধীন কাকড়াইল সংলগ্ন ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করতো। গত ০৪ আগস্ট বিকাল অনুমান সাড়ে ৪ টার সময় শাহাবাগ থানাধীন বাংলামটর মোড়ের সামনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আমার ছেলে মো. বেলাল যৌক্তিক দাবির পক্ষে একাত্ততা পোষন করে ছাত্র আন্দোলনে যোগদান করে। এসময় শাহবাগ হতে বাংলামোটর মোড়ের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় উল্লেখিত আসামীরাসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী অঙ্গ সংগঠনের দুষ্কৃতিকারী সন্ত্রাসীদের আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে আমার ছেলে মো. বেলাল হোসেন ঘাড়ের পেছনে সাভিক্যাল কর্ডে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়া পড়ে। আন্দোলনে অংশ গ্রহণকারী তার বন্ধু রিয়াজ তাৎক্ষনিকভাবে রক্তাক্ত মুমূরর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে আমার ছেলেকে ভর্তি করায়। তৎপরবর্তীতে দীর্ঘ ৫ দিন আইসিওতে মৃত্যুর সাথে লড়াই করতে থাকা অবস্থায় গত ০৮ আগস্ট বেলা আনুমানিক ১১ টা ৪০ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার ছেলেকে মৃত ঘোষনা করেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
একীভূত হচ্ছে না পদ্মা ব্যাংক-এক্সিম ব্যাংক
বেসরকারি খাতের আলোচিত পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হবে না এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ পিএলসি (এক্সিম ব্যাংক)। বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যান।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের সাথে বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম স্বপন।
তিনি বলেন, ব্যাংকটির ঘুরে দাঁড়াতে প্রয়োজন তারল্য সহায়তা। ইতিমধ্যে ব্যাংকটিকে এক হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, প্রয়োজনে আরো সহায়তা দেয়া হবে।
আর্থিক অবস্থা দুর্বল হলেও সবল ব্যাংকের তকমা লাগিয়ে পদ্মা ব্যাংকের সাথে একীভূত হওয়ার চুক্তি করেছিল এক্সিম ব্যাংক। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের নানা অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি উঠে আসে। এমনকি দুর্নীতিতে নুয়ে পড়া ব্যাংকে তৈরি হয়েছে বড় আকারের তারল্য সংকট।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সাথে বৈঠকে বসেন এক্সিম ব্যাংকের নতুন পরিচালনা পর্ষদদের সদস্যরা। তারা ব্যাংকের নানা সমস্যা তুলে ধরেন গভর্নরের কাছে। চান তারল্য সহায়তা।
এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, ৩০০ থেকে ৩৫০ কোটি টাকা নেব, যেটা আমাদের দুইমাসের জন্য হয়ে যাবে। পদ্মার সঙ্গে একীভূত হওয়ার বিষয়ে এখনো কিছু বলেনি। আমি বলেছি, আগামী ৬ মাস পর্যন্ত যতক্ষণ ব্যাংককে সুস্থ্য না হবে ততক্ষণ একীভূত হবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ইতিমধ্যে এক হাজার কোটি টাকা তারল্য দেয়া হয়েছে এক্সিম ব্যাংকে। আরো সহায়তা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতিসুদ আরো বাড়ানো হবে বলেও জানান মুখপাত্র।
এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, এক্সিম ব্যাংক কিন্তু এর আগে এক হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা পেয়েছে। কাজেই তারা পায়নি এটা বলা যাবে না। ভবিষ্যতে তারা যে গ্যারিন্টির জন্য যে আবেদন করেছে সেটা বাংলাদেশ ব্যাংক খতিয়ে দেখছে।
এর আগে গত আগস্ট মাসের ২৯ তারিখ এক্সিম ব্যাংকের নতুন পর্ষদ গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও, এখন পর্যন্ত সাবেক পর্ষদের আগ্রাসী ঋণ বিতরণের তথ্য উদঘাটন করতে পারেনি নতুন পর্ষদ।