অর্থনীতি
ঋণপত্র খোলার প্রতিবন্ধকতাসহ নানা সমস্যায় বেসরকারিখাত: ডিসিসিআই
টাকার মূল্যমান হ্রাস, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্বল্পতা, ব্যাংক ঋণের সুদের উচ্চহার এবং ঋণপত্র খোলার প্রতিবন্ধকতাসহ নানাবিধ সমস্যা আমাদের বেসরকারিখাত মোকাবেলা করছে বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ডিসিসিআই আয়োজিত ‘ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া সহজিকরণ: প্রেক্ষিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সংগঠনটির সভাপতি আশরাফ আহমেদ এসব কথা বলেন।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, আমাদের জিডিপিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অবদান প্রায় ২৫ শতাংশ। তবে এ হার আরও উন্নীত করতে হলে, বন্দর এবং শুল্ক কার্যক্রমে অটোমেশন, লজিস্টিক সুবিধা বৃদ্ধি, সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার সমন্বয়হীনতা হ্রাস, ব্যালেন্স অব পেমেন্টের অবস্থার উন্নয়ন, বৈদেশিক রিজার্ভ বাড়ানো এবং ব্যাংক ঋণের সুদহার যৌক্তিকভাবে হ্রাস করা জরুরি।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে টাকার মূল্যমান হ্রাস, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্বল্পতা, ব্যাংক ঋণের সুদের উচ্চহার এবং ঋণপত্র খোলার প্রতিবন্ধকতাসহ নানাবিধ সমস্যা আমাদের বেসরকারিখাত মোকাবেলা করছে।
এ ছাড়াও বন্দরের আমদানি পণ্যের শুল্কায়নে পদ্ধতিগত জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা, নানা ধরনের জরিমানা আরোপের ফলে আমাদের ব্যবসায়িক খরচ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন আশরাফ আহমেদ।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৫ অর্থবছরের জন্য সরকার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৫৭.৫ বিলিয়ন নির্ধারণ করছে, এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে রপ্তানি বৃদ্ধিকল্পে আমাদের সকল বন্দরগুলোর কার্যক্রমে অটোমেশনের পাশাপাশি সহজিকরণ, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, বন্দর ও কাস্টমস হাউসে নিয়োজিত ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি, বন্দরগুলোর সাথে স্থল, রেল ও জলপথের সংযোগ উন্নীতকরণ, আন্তর্জাতিক লেনদেন প্রক্রিয়া সহজতর করার লক্ষ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে নির্ধারিত আলোচনায় সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের সদস্য (ফিন্যান্স) এস এম লাভলুর রহমান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমোডর এম ফজলুর রহমান, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপসচিব (পরিচালক, ট্রাফিক) মো. কামাল হোসেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (ডব্লিউটিও অনুবিভাগ) ড. ফারহানা আইরিছ এবং বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাসান আলী অংশগ্রহণ করেন।
লাভলুর রহমান বলেন, বন্দরের নিয়োজিত সরকারি সংস্থাসমূহের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে পণ্যের আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা পরিলক্ষিত হয়। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কার্যক্রম চালু হলে কার্গো সুবিধা আরও ২-৩ গুণ বৃদ্ধি পাবে এবং সেখানে আরও ৩টি কার্গো ভিলেজ স্থাপন করা হবে। বিমানবন্দরগুলো পণ্য খালাস প্রক্রিয়া সহজতর করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট সময় ভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগদান করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমোডর এম ফজলুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে অনেকক্ষেত্রে বন্দরে কন্টেইনারসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, বিষয়টি মোকাবেলায় অটোমেশন কার্যক্রম বাড়ানো জরুরি।
বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাসান আলী বলেন, দেশের ২৪টি স্থলবন্দরের মধ্যে ভারতের সাথে ২৩টি এবং মিয়ানমারের সাথে একটি দিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সকল স্থলবন্দরে অটোমেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে, যা আগামী ২ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। যার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি পাবে পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন। এ ছাড়াও স্থলবন্দরসমূহে স্ক্যানিং সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হলে পণ্য আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ইলেকট্রিক-হাইব্রিড গাড়ি আমদানিতে নগদ মার্জিনের শর্ত শিথিল
হাইব্রিড ও সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক গাড়ি আমদানির ঋণপত্রে (এলসি) নগদ মার্জিনের শর্ত শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড ব্যতীত অন্যান্য গাড়ি আমদানিতে নগদ মার্জিন অর্ধেক করা হয়েছে।
বৃহম্পতিবার (২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে।
এতে বলা হয়, দেশের মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অধিকতর সুসংহত রাখার জন্য মোটরকার আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণের জন্য নির্দেশনা রয়েছে। তবে জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব বিবেচনায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড গাড়ির ব্যবহারকে নীতিগতভাবে অগ্রাধিকার প্রদান করা হচ্ছে।
ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশে এ ধরনের পরিবহন মাধ্যম কার্বণ নিঃসরণ হ্রাস ও বায়ুর গুণমান সূচক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। এসব বিষয় বিবেচনায় সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড মোটরকারের আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হলো।
তবে সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড মোটরকার ব্যতীত অন্যান্য মোটরকারের (সেডানকার, এসইউভি, এমপিভি ইত্যাদি) আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে। এ নির্দেশনা আগামী ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ২৯ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করেছে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সোনালী ব্যাংকে বেক্সিমকোর ঋণের বড় অংশই খেলাপি
বিভিন্ন অনিয়েম জন্য সমালোচিত দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপ রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী ব্যাংক থেকে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এই ঋণের বড় অংশই এখন খেলাপি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী মো. শওকত আলী খান।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান এমডি।
এক প্রশ্নের জবাবে এমডি বলেন, হলমার্ক গ্রুপ ঋণের বিপরীতে যে পরিমাণ সম্পত্তি মর্টগেজ দিয়েছিল তার অতিরিক্ত আরও ১৬৭ একর জমি নতুন করে সংযুক্ত করা হয়েছে। শুধু হলমার্ক নয় টিএম ব্রাদার্সসহ যাদের কাছে ব্যাংকের বড় বড় পাওনা রয়েছে তাদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ের সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ব্যাংক।
অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ২০২৪ সালে বিপুল মুনাফা করেছে দেশের বৃহত্তম তফসিলি ব্যাংক সোনালী ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ সালের চেয়ে ২০২৪ সালে পরিচালন মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে ১ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। ২০২৪ সাল শেষে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফার পরিমাণ ৫ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। ২০২৩ সাল শেষে সোনালী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফার পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা। রেকর্ড মুনাফার পাশাপাশি ২০২৪ সালে আমানতের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ১৪ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা বেশি।
তিনি জানান, বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এ বছর নেট ইন্টারেস্ট ইনকামের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪২৫ কোটি টাকায়, যা গত বছরের চেয়ে ৯৪৯ কোটি টাকা বেশি।
ব্যাংকের জন্য এ বছরের স্লোগান ‘২০২৫ সাল হবে সোনালী ব্যাংকের সমৃদ্ধির পথে চলার বছর’ উল্লেখ করে তিনি জানান, কর্মীরাই ব্যাংকের প্রাণ। তাদের মোটিভেট করতে আমরা উল্লেখযোগ্য কর্মীদের প্রমোশন দিয়েছি। তারা ভালো থাকলে ব্যাংক আরও ভালো করবে। প্রমোশনপ্রাপ্তদের অনেকেই ৭/৮ বছর পর প্রমোশন পেয়েছেন। তাদের মধ্যে হতাশা কাজ করছিল। ব্যাংকের স্বার্থেই আমরা তাদের প্রমোশন দিয়েছি।
খেলাপি ঋণ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এমডি অ্যান্ড সিইও শওকত আলী খান বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসরণ করে আমরা খেলাপি ঋণ কমাতে কাজ করছি। উৎপাদনশীল খাতে ঋণ দিতে আমরা সিএমএসএমই ঋণে জোর দিয়েছি। ২০২৪ সালে রেকর্ড মুনাফার কারণে প্রভিশন ঘাটতি কমে আসবে বলে তিনি জানান।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টরসহ, প্রধান কার্যালয়ের জেনারেল ম্যানেজাররা এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৫৮২ কোটি টাকায় এক লাখ টন সার কিনবে সরকার
দেশে কৃষিখাতে ব্যবহারের জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে কাতার, সৌদি আরব ও মরক্কো থেকে এক লাখ মেট্রিক টন সার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৪০ হাজার টন ডিএপি, ৩০ হাজার টন টিএসপি এবং ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৫৮২ কোটি ২৪ লাখ ১২ হাজার টাকা।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই সার কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর সঙ্গে চুক্তির আওতায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানির প্রস্তাব নিয়ে আসে কৃষি মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদ প্রস্তাবটি অনুমোদন দিয়েছে। প্রতি টন টিএসপির মূল্য ধরা হয়েছে ৪৪০ মার্কিন ডলার। এতে মোট ব্যয় হবে ১৫৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তির আওতায় ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানি করার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রতি টন ডিএপির মূল্য ধরা হয়েছে ৬১৭ ডলার। এই সার আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ২৯৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
বৈঠকে সার কেনার আর একটি প্রস্তাব নিয়ে আসে কৃষি মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার এনার্জি মার্কেটিং থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
কাতার এনার্জী মার্কেটিং এর সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে প্রতি মেট্রিক টন ৩৫৪ দশমিক ৬৭ ডলার হিসেবে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১ কোটি ৬ লাখ ৪০ হাজার ১০০ ডলার। বাংলাদেশে মুদ্রায় এর পরিমাণ ১২৭ কোটি ৬৮ লাখ ১২ হাজার টাকা।
এদিকে বৈঠকে ‘ই-জিপি সিস্টেমের উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং অ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক সেবা ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দোহাটেক নিউ মিডিয়া বাংলাদেশ এবং জিএসএস ইনফোটেক লিমিটেডের নিয়োগ এক বছরের বাড়ানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এই এক বছরের সেবা নিতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে ৪২ কোটি ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ৮১৮ টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জানুয়ারিতেও অপরিবর্তিত এলপি গ্যাসের দাম
ডিসেম্বরের মতো নতুন বছরের জানুয়ারি মাসেও ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দাম অপরিবর্তিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
এদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকেই নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। যা বলবৎ থাকবে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত।
বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ জানান, জানুয়ারি মাসে এলপিজির দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ১২ কেজি সিলিন্ডার বিক্রি হবে এক হাজার ৪৫৫ টাকায়।
তবে বৃহস্পতিবার অটোগ্যাসের দাম কমিয়েছে বিইআরসি। জানুয়ারি মাসে ভোক্তা পর্যায়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম ৩ পয়সা কমিয়ে প্রতি লিটার ৬৬ টাকা ৭৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিইআরসি জানিয়েছে, জানুয়ারি মাসের জন্য সৌদি আরামকোর প্রোপেন এবং বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন যথাক্রমে ৬২৫ মার্কিন ডলার ও ৬১৫ মার্কিন ডলার এবং প্রোপেন ও বিউটেনের অনুপাত ৩৫:৬৫ অনুযায়ী প্রোপেন ও বিউটেনের গড় সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন ৬১৮.৫০ মার্কিন ডলার বিবেচনায় জানুয়ারি মাসের জন্য বেসরকারি এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম ভোক্তা পর্যায়ে সমন্বয় করা হলো।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ৪ দফা কমেছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম, আর বেড়েছে ৭ দফা। এক দফা ছিল অপরিবর্তিত। গত বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর বাড়ানো হয়েছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম। আর দাম কমেছিল এপ্রিল, মে, জুন ও নভেম্বরে। তবে দাম অপরিবর্তিত ছিল ডিসেম্বরে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
টিসিবির জন্য ২৮৪ কোটি টাকার তেল-ডাল কিনবে সরকার
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এ তেল ও ডাল কিনতে মোট ব্যয় হবে ২৮৪ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ তেল ও ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠক এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব দেওয়া হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে। এ তেলের ক্রয় মূল্য ধরা হয়েছে ১৮৯ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি লিটারের মূল্য ধরা হয়েছে ১৭১ টাকা ৯৫ পয়সা।
সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড থেকে এ সয়াবিন তেল কেনা হবে। ক্রয় সম্পন্ন করার পর টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে এ সয়াবিন তেল বিক্রি করা হবে।
জানা যায়, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে দুই কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহের জন্য একটি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে।
দরপ্রস্তাবটি আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির (টিইসি) সুপারিশে রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড থেকে এ সয়াবিন তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ধরা হয়েছে ৯৪ টাকা ৯৫ পয়সা। শবনাম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে এ ডাল কেনা হবে।
জানা যায়, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ক্রয়ের জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে তিনটি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। তিনটি দরপ্রস্তাবই কারিগরিভাবে ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান শাবনাম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে এ মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি ৫০ কেজির বস্তায় এ ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল সরবরাহ করবে।