ধর্ম ও জীবন
বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

রাজধানীসহ সারাদেশে বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে আজ রবিবার শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
রবিবার সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
চন্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে গত ৯ অক্টোবর থেকে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫দিন রাজধানীসহ দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চনার মধ্যদিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে উৎসবের শেষ হয়।
এ বছর দেবী দুর্গার আগমন হয় দোলায় বা পালকিতে। দেবীর এই আগমনের ফলাফল হবে মড়ক। যা শুভ ইঙ্গিত নয়। এছাড়াও দেবী স্বর্গে গমন করবেন ঘোটকে বা ঘোড়ায়। শাস্ত্রমতে দেবীর গমন বা আগমন ঘোটকে হলে ফলাফল ছত্রভঙ্গ হয়। শাস্ত্রমতে এই ঘোটকে গমনের ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খল অবস্থাকে ইঙ্গিত করে। এটি যুদ্ধ, বিগ্রহ, অশান্তি, বিপ্লবের ইঙ্গিত দিয়ে থাকে।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে যা তার বাবার গৃহ। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিদায়ের করুণ ছোঁয়ায় সারিবদ্ধভাবে একে একে বুড়িগঙ্গা নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা ।
একই সময় রাজধানীর উপকণ্ঠে তুরাগ নদীতে চলে বিসর্জন। সড়কে পুলিশের টহল ও নদীতে ছিল নৌপুলিশের টহল। ফায়ার সার্ভিসের টিমও দায়িত্ব পালন করে।
এদিকে দুপুরে পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বের হয় বর্ণাঢ্য বিজয়া শোভাযাত্রা। বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জনে অংশ নিতে দুপুর গড়াতেই ভক্তরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপ থেকে ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেন পলাশীর মোড়ে।
অধিকাংশ মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হলেও ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রতিমাটি রেখে দেওয়া হয়। কিন্তু পূজার কাজে ব্যবহৃত দেবীর ফুল, বেলপাতা ও ঘট বিসর্জন দেওয়া হয়।
সারা দেশে এ বছর ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ২৫২টি। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি করা হয় মণ্ডপ পাহারার জন্য।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ধর্ম ও জীবন
পরিবারের একাধিক ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হলে করণীয়

মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদতের নাম কোরবানি। যা প্রতিটি সামর্থ্যবান নর-নারীর ওপর ওয়াজিব।
কিন্তু কোরবানি সম্পর্কে আমাদের পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকার কারণে বিভিন্ন সময়ে এর সঙ্গে অনেক ভুল ধারণাকেও গুলিয়ে ফেলি। তার মধ্যে একটি হলো গৃহকর্তার নামেই কোরবানি দিতে হবে বা সংসারের পুরুষদের নামেই কোরবানি দিতে হবে।
বাংলাদেশে অনেক পরিবার এমন আছে, যাদের ঘরের নারী/মেয়েদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে আছে, অথচ তাদের নামে কোরবানি করা হয় না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যার পক্ষ থেকে কোরবানি করা হয়েছে, তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়নি। আবার অনেক পরিবারে মা-বাবার নামে কোরবানি দেওয়া হলেও তাদের অবিবাহিত ছেলে-মেয়ের (যারা শিক্ষা/বিয়ের জন্য রাখা টাকা/সোনা দিয়ে জাকাতযোগ্য হয়ে গেছেন) নামে কোরবানি দেওয়া হয় না। অথচ তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব।
অনেক আছেন চল্লিশ-পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করে পরিবারের দুয়েকজনের নামে কোরবানি করেন, অথচ এই টাকায় কোরবানির উপযুক্ত একটি পশু কিনে পরিবারে সাত সদস্যের নামেও কোরবানি করার সুযোগ ছিল। অথচ এই সহজ সমাধানটি অনেকেই মেনে নিতে চান না।
এর কারণ হলো, কোরবানির বিধান সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ধারণা নেই। কোরবানি করার সময় আমরা চিন্তা করি না যে আমাদের পরিবারের কজন সদস্যের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়েছে।
কিংবা একটি মানুষের কাছে কী পরিমাণ সম্পদ থাকলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে যায়। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কোন কোন কারণে মানুষের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়।
কার ওপর কোরবানি ওয়াজিব : এক বাক্যে বলতে গেলে, যার ওপর জাকাত ওয়াজিব, তার ওপর কোরবানিও ওয়াজিব। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন ওই মুসলিম নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব। যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে।
নিসাব কী : সোনার ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭ দশমিক ৫) ভরি সোনার মালিক হলেই তাকে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক বলে গণ্য করা হবে আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২ দশমিক ৫) ভরি। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ বা এমন প্রয়োজনাতিরিক্ত জিনিস যার মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ বা বেশি হয়।
কারো কাছে যদি সোনা বা রুপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ নাও থাকে, কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলে তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। (আল মুহিতুল বুরহানি : ৮/৪৫৫)
যেমন—কারো কাছে এক ভরি সোনা ও সামান্য কিছু টাকা আছে, যার কোনো একটিও পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ নয়। কিন্তু এক ভরি সোনার মূল্য ও সামান্য টাকাকে একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের বেশি হয়ে যায়। যেহেতু এখন সোনার মূল্য অনেক বেশি, তাই কারো কাছে এক ভরির কিছু কম সোনা ও সঙ্গে কিছু টাকা থাকলেই সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমপরিমাণ হয়ে যায়। ফলে তিনি নিসাবের মালিক বলে গণ্য হবেন এবং তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্য কত : বর্তমানে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার দাম প্রায় ৯০ হাজার টাকার মতো।
উল্লিখিত আলোচনা দ্বারা বোঝা যায়, আমাদের দেশে অনেক নারীর ওপরই কোরবানি ওয়াজিব, যেহেতু তাদের সবার কাছে কমবেশি গহনা থাকে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোরবানি দেওয়া হয় না। আবার এমন অনেক পুরুষ আছেন, যার ওপর মূলত কোরবানি ওয়াজিব নয় (ওয়াজিব তার স্ত্রী/কন্যার ওপর)। কিন্তু তার পক্ষ থেকেই কোরবানি দেওয়া হয়।
কোরবানি করতে না পারলে করণীয়
কেউ যদি কোরবানির দিনগুলোতে ওয়াজিব কোরবানি দিতে না পারে, তাহলে কোরবানির পশু ক্রয় না করে থাকলে তার উপর কোরবানির উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। আর যদি পশু ক্রয় করেছিল, কিন্তু কোনো কারণে কোরবানি দেওয়া হয়নি, তাহলে ওই পশু জীবিত সদকা করে দেবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৪; ফাতাওয়া কাজিখান: ৩/৩৪৫)
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
মুসাফিরের জন্য জুমার নামাজের করণীয়

ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী যিনি মুসাফির অর্থাৎ যিনি নিজের আবাস থেকে ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার দূরে যাওয়ার নিয়ত করে নিজের এলাকা থেকে বের হয়েছেন, তার ওপর জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব নয়। সফরের ব্যস্ততার কারণে তার জন্য জুমা ছেড়ে দেওয়ার অনুমতি রয়েছে।
জুমার নামাজ ওয়াজিব মুসলমান প্রাপ্তবয়স্ক, জ্ঞানসম্পন্ন (যিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন নন) মুকিম (যিনি মুসাফির নন) স্বাধীন (যিনি ক্রিতদাস নন) নগর বা লোকালয়ের অধিবাসী পুরুষদের ওপর; যার এমন কোনো গ্রহণযোগ্য অসুবিধা, অসুস্থতা বা বার্ধক্য নেই যে কারণে তিনি মসজিদে উপস্থিত হতে ও জুমা আদায় করতে অক্ষম।
জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন,
مَن كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَعَلَيْهِ الْجُمُعَةُ إِلَّا مَرِيضًا أَوْ مُسَافِرًا أَوِ امْرَأَةً أَوْ صَبِيًّا أَوْ مَمْلُوكًا
আল্লাহ ও পরকালের ওপর যাদের ইমান আছে, তাদের ওপর জুমা ওয়াজিব। তবে অসুস্থ, মুসাফির, নারী, শিশু ও ক্রিতদাসদের ওপর জুমা ওয়াজিব নয়। (বায়হাকি ও দারাকুতনি)
তাই মুসাফির যদি গাড়িতে বা বিজন কোনো জায়গায় থাকেন অথবা সফরের ব্যস্ততার কারণে শহরে থাকা সত্ত্বেও জুমার নামাজে উপস্থিত হতে না পারেন, তাহলে তার গুনাহ হবে না। তিনি জুমার সময় প্রতিদিনের মতো জোহরের নামাজের কসর (দুই রাকাত) আদায় করবেন।
তবে জুমার জামাতে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকলে অবশ্যই জুমা আদায় করা উচিত। জুমার নামাজ যাদের ওপর ওয়াজিব নয় তাদের জন্যও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। সুযোগ থাকার পরও এই ফজিলত থেকে বঞ্চিত হওয়া উচিত নয়।
মুসাফির যদি জুমার নামাজে অংশগ্রহণ করেন, তাহলে তিনি অন্যান্য সময়ের মতো জুমার নামাজ দুই রাকাতই আদায় করবেন। মুকিম ও মুসাফিরের জুমার নামাজে কোনো পার্থক্য নেই।
সফরের ক্লান্তি বা তাড়া থাকলে জুমার আগে ও পরের সুন্নত নামাজ তিনি ছেড়ে দিতে পারেন। কারণ মুআক্কাদা সুন্নত নামাজ সফর অবস্থায় মুআক্কাদা থাকে না। তবে ঝামেলা ও ক্লান্তিমুক্ত থাকলে সুন্নত নামাজও পড়ে নেওয়া উত্তম।
মুসাফিরের নামাজ কসর বা সংক্ষিপ্ত করার বিধান শুধু প্রতিদিনের চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এ ছাড়া দুই ও তিন রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ, জুমা, সুন্নত বা অন্য কোনো নামাজ কসর করার নিয়ম নেই।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
বছরের শুরুতে যে দোয়া পড়বেন

সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে হিশাম (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, সাহাবায়ে কেরাম (হিজরি ক্যালেন্ডারের) নতুন মাস বা নতুন বছর শুরু হলে এ দোয়াটি পড়তেন:
اللَّهُمَّ أَدْخِلْهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَالْإِيمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَالْإِسْلَامِ وَرِضْوَانٍ مِنَ الرَّحْمَنِ وَجَوَار مِنَ الشَّيْطَانِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আদখিলহু আলাইনা বিল-আমনি ওয়াল ইমানি ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলামি ওয়া রিদওয়ানিম মিনার রাহমানি ওয়া জাওয়ারিম মিনাশ শায়ত্বানি।
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমাদের মাঝে এ মাস/বছরের আগমন ঘটান শান্তি, নিরাপত্তা এবং ইমান ও ইসলামের ওপর অবিচলতার সাথে, শয়তান থেকে সুরক্ষা ও দয়াময় আল্লাল্লাহর সন্তুষ্টির সাথে। (মু’জামুস সাহাবাহ: ১৫৩৯)
ইসলামে মুসলমানদের ক্যালেন্ডার হিসেবে হিজরি চন্দ্র ক্যালেন্ডার পরিচিত ও গ্রহণযোগ্য। ইসলামের অনেক বিধান এ ক্যালেন্ডারের তারিখ অনুযায়ী পালন করতে হয়। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তারা তোমাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বলো, তা মানুষের ও হজের জন্য সময় নির্ধারক। (সুরা বাকারা: ১৮৯)
নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চন্দ্র ক্যালেন্ডারের মাসের হিসাব রাখতেন। মাসের শুরুতে নতুন চাঁদ দেখে দোয়া পড়তেন। ওপরে উল্লেখিত দোয়াটিও সাহাবায়ে কেরাম পড়তেন হিজরি নতুন মাস বা নতুন বছরের শুরুতে।
আমাদের দেশে যেহেতু বাংলা ক্যালেন্ডারও প্রচলিত, বৈষয়িক কিছু কাজকর্মে আমরা ক্যালেন্ডারটি ব্যবহার করে থাকি, তাই বাংলা ক্যালেন্ডারের নতুন বছরের শুরুতেও এ দোয়াটি আমরা পড়তে পারি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
দেশের সব মসজিদে একই সময় জুমা আদায়ের আহ্বান

মুসল্লিদের সুবিধার্থে দেশের সব মসজিদে একই সময় (দুপুর ১.৩০ মিনিট) জুমার নামাজ আদায়ের আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা)।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খানের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
চিঠিতে মহাপরিচালক বলেন, জুমার দিন সর্বাপেক্ষা উত্তম ও বরকতময় দিন। সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিন। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘হে বিশ্বাসীরা। জুমার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন করো। এই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯) জুমা পারস্পরিক দেখা সাক্ষাৎ ও সাপ্তাহিক ঈদের দিন। এ দিনকে বিশেষ মর্যাদা ও তাৎপর্যপূর্ণ হওয়ার কারণ হলো এ দিনে বিশেষ সময়ে বরকত ও কল্যাণ রয়েছে।
ইফা ডিজি বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন মসজিদে বিভিন্ন সময়ে জুমার নামাজ আদায় করতে দেখা যায়। কোনো মসজিদে দুপুর ১টায়, কোনো মসজিদে দেড়টায়, আবার কোনো মসজিদে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে জুমার নামাজ শুরু করতে দেখা যায়। সময়ের তারতম্যের কারণে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা বিশেষ করে পথচারী (সফররত মুসল্লিরা) বিভ্রান্ত ও সমস্যার সম্মুখীন হন। এ সমস্যা দূরীকরণে দুপুরে দেড়টায় জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। বিভাগ/জেলায় অবস্থিত সব মসজিদে একই সময়ে অর্থাৎ দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায় করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার দিন সফরে বের হওয়ার বিধান

জুমার দিন সর্বাবস্থায় ভ্রমণে বের হওয়া মাকরুহ নয়। পথে জুমার নামাজ পড়া সম্ভব না হলে জুমার ওয়াক্ত হওয়ার পর শরিয়তসম্মত ওজর ছাড়া ভ্রমণে বা সফরে বের হওয়া মাকরুহে তাহরিমি।
জুমার দিন জুমার সময় হওয়ার আগে এবং জুমার পরে সফরে হওয়া মাকরুহ নয়। একইভাবে পথে জুমার নামাজ পড়ার সুযোগ থাকলে জুমার ওয়াক্ত হওয়ার পরও সফরে বের হওয়াও মাকরুহ নয়।
জুমার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল জুমার নামাজ। জুমার নামাজের গুরুত্ব বোঝাতে রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি অলসতা করে ধারাবাহিকভাবে তিনটি জুমার জামাতে অনুপস্থিত থাকে, আল্লাহ তা’আলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেন। (সুনানে নাসাঈ: ১৩৭২) অর্থাৎ সেই অন্তর হেদায়াত পাওয়ার অযোগ্য হয়ে যায়।
জুমার নামাজে দেরি করে যাওয়া কিংবা দায়সারাভাবে জুমা আদায় করাও জুমার ব্যাপারে অলসতা হিসেবে গণ্য হতে পারে; তাই এ ব্যাপারে সবার সাবধান হওয়া উচিত।
জুমার দিন খুতবার আগেই মসজিদে চলে যাওয়া উচিত। জুমার আজানের পর দুনিয়াবি কাজকর্ম করার ব্যাপারে কোরআনে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। দ্রুত মসজিদে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে সালাতের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে। (সুরা জুমা: ৯)
তাই জুমার আজান হয়ে গেলে মসজিদে চলে যাওয়া, সব দুনিয়াবি কাজ বন্ধ করে দেওয়া কুরআনের সরাসরি নির্দেশে ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য।
জুমার ফরজ নামাজ দুই রাকাত যা জামাতে আদায় করা হয়। জুমার সুন্নতে মুআক্কাদা নামাজ আট রাকাত; জুমার ফরজ নামাজের আগে চার রাকাত, পরে আরও চার রাকাত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন জুমার ফরজ পড়ে, তখন সে যেন জুমার পর চার রাকাত নামাজ পড়ে নেয়। (সহিহ মুসলিম: ৮৮১) সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদের (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে তিনি তার ছাত্র ও অনুসারীদের জুমার আগে চার রাকাত ও জুমার পরে চার রাকাত নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিতেন। তাই এ আট রাকাত সুন্নতে মুআক্কাদা নামাজ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আদায় করা উচিত।
জুমা পরবর্তী চার রাকাত সুন্নতে মুআক্কাদা নামাজের পর ভিন্ন সালামে আরও দুই রাকাত নামাজ আদায় করাও সুন্নত। তবে এ দুই রাকাত সুন্নতে মুআক্কাদার অন্তর্ভুক্ত নয়।