খেলাধুলা
প্রধান উপদেষ্টার পরিকল্পনায় এবার চমক দেখাবে বিপিএল
বিপিএলের এবার ১১তম আসর বসবে। এর আগে ১০টি আসর পার করে ফেললেও দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্টটি এখনো ধুঁকছে। নানা বিতর্ক আর সমালোচনা এর সঙ্গী। বিপিএল মানে যেন ‘বিতর্ক প্রিমিয়ার লিগ’, বিপিএল মানে যেন ‘বকেয়া প্রিমিয়ার লিগ’!
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাহায্য নিয়ে ফারুক আহমেদের বিসিবি এবার চেষ্টা করছে সব বিতর্ক ঝেড়ে ফেলে একটা নতুন বিপিএল উপহার দিতে। তা করতে গিয়ে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে টুর্নামেন্টটির সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোয় এবং সেটি করা হচ্ছে খোদ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পরিকল্পনা অনুযায়ী।
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ ও বিপিএল সামনে রেখে আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। সভাপতি ফারুক আহমেদসহ বোর্ডের আরও কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে সভা করেছেন, যেখানে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় নতুন বিপিএলের একটা প্রেজেন্টেশনও বিসিবির বিপিএল বিভাগ থেকে ক্রীড়া উপদেষ্টাকে দেখানো হয়েছে।
সভা শেষে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে ক্রীড়া উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘পরিবর্তিত সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিপিএলকে কীভাবে মানুষের সঙ্গে আরও সম্পৃক্ত করা যায়, সেটাই আমরা চেষ্টা করছি।’
বিপিএলের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিপিএলকে একটা টুর্নামেন্ট হিসেবে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে চাই। বিসিবি অবশ্যই বড় ভূমিকাটা রাখবে। তবে আমার মনে হয়েছে, আমাদের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু অলিম্পিকের মতো ইভেন্টের ডিজাইনে সাহায্য করতেন, তিনি সর্বশেষ অলিম্পিকেও বড় একটা ভূমিকা রেখেছেন, বিপিএলের মতো টুর্নামেন্টে আমরা যদি তাঁর সেই অভিজ্ঞতা ব্যবহার না করি, সেটা দুর্ভাগ্যজনক হবে।’
এই চিন্তা থেকেই ক্রীড়া উপদেষ্টা সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দেন বিসিবির কর্মকর্তাদের। যেখানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বিপিএলে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর এবং নতুনত্ব আনার তাৎক্ষণিক কিছু ধারণা দেন। সেসব নিয়েই একটা প্রাথমিক প্রেজেন্টেশন দাঁড় করায় বিসিবির বিপিএল বিভাগ। দু–তিন দিনের মধ্যে এটা নিয়ে আবারও প্রধান উপদেষ্টার সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে বিসিবি ঠিক করবে চূড়ান্ত পরিকল্পনা।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘বিপিএলকে কীভাবে আন্তর্জাতিকভাবে আরও স্বীকৃত করা যায় এবং কী কী নতুনত্ব যুক্ত করা যায়, তা থেকে বিসিবি আজ একটা প্রেজেন্টেশন দিয়েছে। স্যারও আরও বিস্তারিত আইডিয়া দিয়েছেন। দিন দুয়েকের মধ্যে আমরা আবারও বসব। আমরা চাই এবারের বিপিএলটাকে নতুন করে সাজাতে এবং এবারের বিপিএল যেন আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে নতুন উদ্দীপনা নিয়ে আসে।’
কীভাবে তা করা হবে, সেটা নিয়ে এখনই বিস্তারিত না জানালেও সামান্য ধারণা দেওয়া হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে। ক্রীড়া উপদেষ্টা যেমন বলেছেন, দর্শকদের আগ্রহ ও সম্পৃক্ততা বাড়াতে দেশের সেলিব্রেটি এবং কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের এর সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
এ ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘নতুন শুরু সব সময়ই করা যায়, যেখান থেকে আমরা উত্তরোত্তর ভালো করতে পারি। চমৎকার কিছু আইডিয়া আছে। আমরা চেষ্টা করব সেগুলো বাস্তবায়ন করতে। আপনারা এই বিপিএলে অবশ্যই নতুন কিছু দেখতে পাবেন, যেটাতে আপনাদের সম্পৃক্ততা থাকবে। দর্শক, মিডিয়া…সবাই যেন টুর্নামেন্টটার সঙ্গে সম্পৃক্ততা অনুভব করে।’
স্টেডিয়াম সংস্কার প্রসঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেছেন, বিপিএল সামনে রেখে প্রাথমিক কিছু কাজ করা হবে। পরে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের পরিসর আরও বাড়ানোর দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হতে পারে।
দেশের অব্যবহৃত স্টেডিয়ামগুলোও সংস্কার করে সেগুলোতে আবার খেলা শুরুর কথাও বলেছেন আসিফ মাহমুদ। নতুন স্টেডিয়াম বানিয়ে অর্থ অপচয়ের চেয়ে পুরোনো স্টেডিয়ামগুলোকেই নতুন প্রাণ দেওয়ার পক্ষে তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব নিয়ে যা বললেন হৃদয়
সাম্প্রতিক সময়ে সব ফরম্যাটের অধিনায়কের পদ থেকে সরে যাওয়ার গুঞ্জন ছিল নাজমুল হোসেন শান্ত’র। তবে আপাতত আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও তাকে নেতৃত্বে রেখেই বাংলাদেশের স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি দুই ফরম্যাটের বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। এর আগে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের অধিনায়ক হিসেবে তাওহীদ হৃদয়ের নামও শোনা যাচ্ছিল।
আফগানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে আজ (শনিবার) দলের কয়েকজন ক্রিকেটার আরব আমিরাতের উদ্দেশে দেশ ছাড়ছেন। তার আগে মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব নিয়ে হৃদয় বলেন, ‘এ বিষয়ে বিসিবি সিদ্ধান্ত দেবে। আমার হাতে কিছু নেই। আমি মনে করি, এটা শুধু আমার বা এক-দুজন দিয়ে হবে না। এটা বিসিবি বা যারা দায়িত্বে আছেন, তারা ভালো জানবেন। আমার যেটা মনে হয়, দলের ভালোর জন্য যার কাছে (অধিনায়কত্ব) যাওয়া উচিৎ, তাকেই দেওয়া উচিৎ। আর যার কাছেই যাবে, তার জন্য শুভকামনা।’
জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব নিতে প্রস্তুত কি না প্রশ্নে হৃদয়ের জবাব, ‘আমি এই ব্যাপারটা নিয়ে এখন কথা বলতে চাচ্ছি না। সামনে যেহেতু আমাদের একটা খেলা আছে, এই ব্যাপারটাতেই মনোযোগ দিতে চাচ্ছি।’
সাম্প্রতিক সময়ে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে বাংলাদেশ। তবুও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা হৃদয়ের, ‘আশা করি, ভালোভাবে শুরু করতে পারব। বরাবরই এই সংস্করণে আমরা ভালো খেলে থাকি। এবারও অবশ্যই ভালোভাবে শুরু করতে চাই। আমাদের যে সামর্থ্য আছে, সে অনুযায়ী যদি খেলতে পারি, ভালো কিছু হবে ইনশা-আল্লাহ।’
প্রসঙ্গত, আগামী ৬ নভেম্বর শারজায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে ৯ ও ১১ নভেম্বর।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ইউরোপের ক্লাবে খেলার প্রস্তাব পেয়েছেন ঋতুপর্ণা
টানা দুইবার সাফের শিরোপা জিতে প্রশংসায় ভাসছে বাংলাদেশের মেয়েরা। দলটির এই সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন ঋতুপর্ণা চাকমা। নেপালের বিপক্ষে আসরের ফাইনালে গোল করেছেন তিনি। এরপর হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ও।
সাফে সাফল্যের পর চারদিকে ঋতুপর্ণাকে নিয়ে বন্দনা চলছে। পাচ্ছেন সংবর্ধনাও। এর মধ্যেই একটি সুখবরও দিলেন জাতীয় দলের এই মিডফিল্ডার। আসরের মাঝেই নাকি ভারত ও ইউরোপের দুটি ক্লাবের পক্ষ থেকে খেলার প্রস্তাব পেয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের ভারত থেকে খেলার প্রস্তাব পাওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে ইউরোপ থেকে ডাক পাওয়ার ব্যাপারটি নতুন। দেশের একটি জাতীয় দৈনিককে এ নিয়ে ঋতুপর্ণা বলেন, আমি সাফ চলাবস্থায় ভারত ও ইউরোপের দুটি ক্লাব থেকে প্রস্তাব পেয়েছি।
তবে এখনই ইউরোপের সেই ক্লাবের নাম প্রকাশ করতে রাজি নন ঋতুপর্ণা। তিনি বলেন, ‘এখনই এটা বলা বারণ আছে। সব ঠিক হলে আনুষ্ঠানিকভাবেই জানাব। তবে ভারতের যে ক্লাবে গত বছর সাবিনা আপু খেলেছেন, সেখান থেকেও প্রস্তাব এসেছে। ’
জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ২০১৮ সালে ভারতীয় ক্লাব সেথু এফসির হয়ে খেলেছেন। এরপর গত বছরের ডিসেম্বর তিনি ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগের ক্লাব কিকস্টার্ট এফসির হয়ে খেলেছেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ব্যাটিং স্বর্গে টাইগারদের উইকেট বিলানোর মিছিল!
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইনিংস ও ২৭৩ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ৬ উইকেট হারিয়ে ৫৭৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে প্রোটিয়ারা। পরে প্রথম ইনিংসে ১৫৯ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৩ রান করে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ৫ দিনের টেস্ট ২ দিনে হেরে দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ পেল শান্তবাহিনী।
দক্ষিণ আফ্রিকার ৫৭৫ রানের জবাবে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে তুলতে পেরেছিল মোটে ১৫৯ রান। সফরকারীরা ফলো অন করায় নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে। ৪১৬ রানে পিছিয়ে থেকে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আবারও বিপাকে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। ৪৩ রান তুলতেই খুইয়ে বসে ৪ উইকেট। এ যেন ব্যাটিং স্বর্গে টাইগারদের উইকেট বিলানোর মিছিল!
প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বাংলাদেশ রীতিমতো অসহায় আত্মসমর্পণই করেছে। ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিলে ৩৬ রানের ইনিংসে কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুমিনুল হকরা কিছুই করতে পারেননি। শেষ দিকে অভিষিক্ত মাহিদুল অঙ্কন ২৯ আর হাসান মাহমুদ করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৮ রান। তাতে অবশ্য ব্যবধানটাই একটু কমেছে, আর তেমন কোনো লাভ হয়নি। শেষ বিকেলে বাংলাদেশ অলআউট হয় ১৪৩ রানে। তাতে ইনিংস ও ২৭৩ রানের হারে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় শান্তর দল।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
নেপালকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
সাফের ফাইনালে মুখোমুখি বাংলাদেশ-নেপাল। আগের মতো আরও একবার স্বপ্ন ভঙ্গ স্বাগতিক নেপালের। গত আসরের মত এবারও বাংলাদেশের কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হলো তাদের। বাংলার বাঘিনীরা মাতল হিমালয় জয়ের উল্লাসে। নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে তুলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটালেন সাবিনারা।
দশরথ স্টেডিয়ামে ফাইনালটা হলো ফাইনালের মতোই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচ রং ছড়াতে শুরু করে। প্রথমার্ধে ক্রসবারের বাধায় এগিয়ে যাওয়া হলো না দুই দলের। দ্বিতীয়ার্ধে লড়াই চললো সমানতালে। বাংলাদেশের হয়ে গোল করলেন মনিকা চাকমা এবং ঋতুপর্ণা চাকমা। ম্যাচে সমতায় ফিরলেও শেষ পর্ন্তয জয়টা অধরাই রয়ে গেল নেপালের।
ম্যাচের শুরুতেই গোলের সুযোগ পেলেও তহুরার শট ক্রস বারে লেগে ফিরে আসে। ক্রসবারের বাধায় প্রথমার্ধে এগিয়ে যওয়া হয়নি বাংলাদেশের। একই ভাবে নেপালেরও বাধা হয়ে দাড়িয়েছে ক্রসবার।
দ্বিতীয় মিনিটে গীতা রানার ভুলে গোল হজম করতে বসেছিল নেপাল। গোলকিক নিতে এসে পিছলে পড়ে ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি। বক্সের বাইরে থাকা তহুরা খাতুন বল পেয়ে গোলে শট নেন। ক্রসবারে লেগে বল ফিরে আসে। ফিরতি বলে তহুরার হেড নেপালের গোলরক্ষ আঞ্জিলা সুব্বুর গ্লাভসে জমা পড়লে রক্ষা পায় নেপাল।
ক্রসবারের বাধায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি নেপালেরও। ম্যাচের ১০ মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে সাবিত্রা ভান্ডারির উদ্দেশ্যে মাঝ মাঠ থেকে উচু পাস বাড়ান প্রীতি। বক্সের ভেতর ঢোকা বল ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক রূপনা চাকমা। ফিরতি বলে সাবিত্রার ক্রস বক্সের বাইরে পেয়ে যান আমিসা। তার জোরালো শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি স্বাগতিকদের। আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেললেও প্রথমার্ধ শেষ হয়েছে গোলশূন্য ভাবেই।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় দুই দলই। ৫২ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মেলে বাংলাদেশের। বক্সের বাইরে তহুরার উদ্দেশ্যে পাস দেন সাবিনা। তবে বল পান নেপালের ফুটবলার রানা মাগার। তার ভুল পাসের সুযোগ নিতে ভুল করেননি মনিকা চাকমা। আলতো ছোঁয়ায় বল জালে জড়ান তিনি।
সমতায় ফিরতে সময় নেয়নি নেপাল। চার মিনিটের ব্যবধানে আমিসা কার্কির গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। প্রীতির ডিফেন্সচেরা থ্রু বল বক্সের কাছে বল পেয়ে যান আমিশা। একাই বল নিয়ে বক্সে ঢুকে রূপনাকে বোকা বানান তিনি। ৬০ মিনিটে অল্পের জন্যে এগিয়ে যাওয়া হয়নি নেপালের। সাবিত্রা ভান্ডারির শট অল্পের জন্য সাইড পোস্ট ঘেষে বেরিয়ে যায়।
৬৭ মিনিটে মারিয়ার বুলেট গতির শট ঝাপিয়ে কর্ণারের বিনিময়ে রক্ষা করেন নেপালের গোলরক্ষক। ঋতুপর্ণার পাস থেকে বক্সের বাইরে বল পান মারিয়া। সেখান থেকেই জোড়ালো শট নেন তিনি।
৮১ মিনিটে বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হলেন ঋতুপর্ণা চাকমা। বা প্রান্ত থেকে ঋতুর দূরপাল্লার শট নেপালের গোলরক্ষকের হাত ছুঁইয়ে জালে ঢোকে। এই গোলেই জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। খেলার বাকি সময়ে চেষ্টা করেও আর ম্যাচ ফিরতে পারেনি নেপাল। এ সময় বেশ কয়েকটি হাফচান্স তৈরি করে বাংলাদেশ। তবে রক্ষণে বেশি মনোযোগী বাংলাদেশও পায়নি গোলের দেখা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ভুটানকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ
ফুটবল বিশ্বকাপের সবচেয়ে আলোচিত স্কোরলাইনটা বলা চলে ৭-১। ব্রাজিলের ঘরের মাঠ বেলো হরিজেন্তে স্টেডিয়ামে জার্মানি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে স্বাগতিকদের জালে পুরেছিল সাত গোল। আলোচিত সেই স্কোরলাইনকে আবার সামনে আনল বাংলাদেশের মেয়েরা। নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সেমিফাইনালে ভুটানের জালে ৭ গোল দিয়েছেন সাবিনা খাতুন-তহুরা আক্তাররা। বিপরীতে হজম করেছে মাত্র এক গোল।
৭-১ গোলের এই জয়ের পর আরও একবার নারী সাফের ফাইনালে পা রাখল বাংলাদেশ। পুরো ম্যাচে বলতে গেলে ভুটানের মেয়েদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। তহুরা পেয়েছেন হ্যাটট্রিক। অধিনায়ক সাবিনার পা থেকে এসেছে দুই গোল। একটি করে গোল ঋতুপর্ণা এবং মাসুরা পারভিনের।
প্রথমার্ধেই অবশ্য ম্যাচের এপিটাফ লিখে ফেলেছিল বাংলাদেশ। শক্তিমত্তায় এগিয়ে থাকা সাবিনা খাতুনের দল শুরুর ৪৫ মিনিটেই রীতিমতো গোল উৎসব করেছে। প্রথম লিড নিতে তাদের তেমন অপেক্ষা করতে হয়নি। সপ্তম মিনিটে তহুরা খাতুনের পাস পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নেন ঋতুপর্ণা চাকমা। সেখান থেকেই বাংলাদেশের গোল বন্যার শুরু।
১৫ মিনিটে লিড দ্বিগুণ করেন তহুরা। তাতে অবশ্য দায় ছিল ভুটানের। ডিফেন্ডাররা বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন তহুরা। ডি বক্সের ঠিক সামনে থেকে বাঁ-পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
১৮ মিনিটের দিকে ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিল ভুটান। গোলবার কিছুক্ষণ ফাঁকা থাকলেও ভুটানের ডেকি লাজন বেশ দূর দিয়ে বল বাইরে মারেন।
২৪তম মিনিটে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তার শট গোলবারে লেগে ফেরার পর প্রতিপক্ষের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন মনিকা চাকমা। তার পাস পেয়ে সাবিনা শট নেন দূর থেকে। হতাশ হওয়ার এক মিনিটের মাথায় পেয়ে যান কাঙ্ক্ষিত গোল। বাংলাদেশ লিড নেয় ৩-০ গোলে।
তহুরা নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ৩৫ মিনিটে। ভুটানের একজনকে কাটিয়ে তিনি শট নেন ডি বক্সের বাইরে থেকে। তহুরার দৃষ্টিনন্দন সেই শট বাংলাদেশকে ৪ গোলে এগিয়ে দেয়। ৩৭ মিনিটে ফের সাবিনার আঘাত। এবার গোলরক্ষক রুপনার বাড়ানো বল মধ্যমাঠ থেকে নিয়ে এগিয়ে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক। বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে কাটিয়ে ডানপ্রান্ত দিয়ে তিনি বল জালে জড়ান।
৪২ মিনিটে এক গোল শোধ করে ভুটানের মেয়েরা। ডেকি লাজনের নেওয়া শট পা বাড়িয়েও ঠেকাতে ব্যর্থ হন রুপনা। ৫-১ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতির পর বাংলাদেশের খেলায় কিছুটা ধীরগতি দেখা যায়। ফাইনালের জন্য নিজেদের ফিটনেস ধরে রাখা আর নেপালের তপ্ত রোদের নিচে খেলা হওয়ায় খুব বেশি প্রেসিং কিংবা আগ্রাসী আক্রমণ দেখা যায়নি। এর মাঝেও ৫৭ মিনিটে মনিকা চাকমার চিপ শটে বল পেয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তহুরা।
পরে বাংলাদেশের হয়ে সপ্তম গোল করেন ডিফেন্ডার মাসুরা পারভিন। চলতি আসরে দারুণ ছন্দে থাকা এই ডিফেন্ডার কর্ণার থেকে মাথা ছুঁইয়ে করেছেন গোল। ৭-১ গোলের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
এমআই