অর্থনীতি
ই-অরেঞ্জের মাধ্যমে ৩৫৮ কোটি টাকা অর্থপাচার!

আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ ডট শপের মাধ্যমে ৩৫৮ কোটি টাকা মানি লন্ডারিং হয়েছে। রাজধানীর গুলশান থানার সাবেক পুলিশ পরিদর্শক শেখ সোহেল রানা (পরে বরখাস্ত) সরকারি চাকরির আড়ালে ই–অরেঞ্জ পরিচালনা করতেন। তিনি ও তাঁর আত্মীয়স্বজনই মূলত এ মানি লন্ডারিংয়ে জড়িত। এর বাইরে জড়িত এক পরিবারের আপন দুই ভাই, যাঁদের আরপি করপোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আরও জড়িত ছিল অল জোন নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান।
আদালতে ই–অরেঞ্জের ওপর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দাখিল করা সাম্প্রতিক অভিযোগপত্রে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে গুলশান থানায় মামলা হওয়ার প্রায় তিন বছর পর এ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম অর্থ নিয়ে ২০১৯ সালের ৩১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ১৭ আগস্ট পর্যন্ত তিন বছর ব্যবসা করেছে ই–অরেঞ্জ। ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ‘ডাবল টাকা ভাউচার অফার’ দিয়ে তারা অস্বাভাবিক কম দামে মোটরসাইকেল, মুঠোফোন, রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন ইত্যাদি পণ্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেয়।
এভাবে মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে ই-অরেঞ্জ। এ সময় প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ১৫ হাজার ৫৭০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে সমপরিমাণ লেনদেনের মাধ্যমে ৯৫৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। অগ্রিম টাকা দিয়েও অনেকে পণ্য পাননি। আর এসব লেনদেনের অর্থই মানি লন্ডারিং হয়েছে।
অভিযোগপত্রে ১২ জন আসামির নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে প্রধান আসামি হচ্ছেন গুলশান থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক শেখ সোহেল রানা, তাঁর বোন ই-অরেঞ্জের সোনিয়া মেহজাবিন, সোনিয়ার স্বামী মাসুকুর রহমান, সোহেল-সোনিয়ার খালু রেড অরেঞ্জ ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ জায়েদুল ফিরোজ। প্রতিষ্ঠানের দুই সাবেক প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) নাজমুল আলম রাসেল এবং মঞ্জুর আলম পারভেজও এতে জড়িত। এ দুজন সম্পর্কে আপন ভাই।
মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন ই–অরেঞ্জের নতুন মালিক বীথি আক্তার, শেষ দিকে যোগ দেওয়া ই–অরেঞ্জের সিওও আমানউল্লাহ চৌধুরী, অল জোন নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মেহেদী হাসান, পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান সফটওয়্যার শপ লিমিটেডের (এসএসএল) চেয়ারম্যান সাবরিনা ইসলাম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম এবং এসএসএলের চিফ এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার নূরুল হুদা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (সদ্য বদলি হয়েছেন) কাজী জিল্লুর রহমান মোস্তফা গতকাল শনিবার মুঠোফোনে বলেন, ‘৩৫৮ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে ১২ জনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এখন তা আদালতের বিষয়।’
পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান এসএসএলের চেয়ারম্যান, এমডি ও কর্মকর্তা কেন আসামি—এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী জিল্লুর রহমান মোস্তফা বলেন, বেশি কমিশন পাওয়ার আশায় এসএসএলের এই তিনজন ই–অরেঞ্জের মানি লন্ডারিংয়ে সহায়তা করেছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান শাখায় ২৯৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা এবং সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৬০৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা অর্থাৎ ৯০০ কোটি ২১ লাখ টাকা স্থানান্তর করেছে ই–অরেঞ্জ। বাকি ৫৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার মধ্যে আদালতের নির্দেশে জব্দ আছে ৩৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা এবং ২২ কোটি ১৪ লাখ টাকা কমিশন নিয়েছে এসএসএল।
বলা হয়েছে, অনেক সন্দেহজনক লেনদেন হলেও এসএসএল সরকারি কোনো সংস্থায় সন্দেহজনক লেনদেন প্রতিবেদন (এসটিআর) দাখিল করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নেওয়া গেটওয়ে লাইসেন্সের শর্ত পালনে ব্যর্থ হয়েছে এসএসএল। প্রতিষ্ঠানটি মানি লন্ডারিংয়ে সহায়তাকারী। প্রতিবেদনে বলা হয়, অল জোনের স্বত্বাধিকারী মেহেদী হাসান মোটরসাইকেল সরবরাহের নামে ১৮৮ কোটি টাকা স্থানান্তর করেছেন। আর সোহেল রানা ও তাঁর বোন সোনিয়া মেহজাবিন নিজেদের নামে একাধিক ফ্ল্যাট কিনেছেন। এদিকে গ্রাহকদের টাকা নগদে জমা নেয় আরপি করপোরেশন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী ই–অরেঞ্জ ডট শপের প্রথম সিওও মো. নাজমুল আলম রাসেল, যাঁর হাতে ছিল ই–অরেঞ্জের সফটওয়্যার ও ওয়েবসাইটের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। তিনি পরে তাঁর ভাই মঞ্জুর আলম পারভেজকেও চাকরি দিয়ে ই–অরেঞ্জে নিয়ে আসেন। বাস্তবে আরপি করপোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকও এই দুই ভাই। যদিও আরপি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নাজমুল আলম রাসেলের স্ত্রী ফারিয়া সুবাহার নামে। সফটওয়্যারে ভুয়া পণ্য ক্রয় আদেশ তৈরির পাশাপাশি ভুয়া গ্রাহক তৈরির মাধ্যমে অনেক টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি, যা হিসাবে ধরা পড়ার পর স্বীকার করেন।
আত্মসাৎ প্রক্রিয়ায় জড়িত শেখ সোহেল রানা ভারতে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে জেল খেটেছেন। এখন জামিনে আছেন। সোহেল রানারই বোন সোনিয়া মেহজাবিন ও তাঁর স্বামী মো. মাসুকুর রহমান বর্তমানে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।
অরেঞ্জ বাংলাদেশ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের মালিক তাঁরা। এ ছাড়া ই–অরেঞ্জ শপ যার কাছে বিক্রি হয়েছিল, সেই বিথী আক্তার এবং ই–অরেঞ্জের সিওও মো. আমানউল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রতারণায় সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে। আমানউল্লাহ চৌধুরী সম্প্রতি জামিনে বের হয়েছেন।
যোগাযোগ করলে ই-কমার্স নিয়ে কাজ করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের অধ্যাপক সুবর্ণ বড়ুয়া বলেন, ‘যেহেতু অভিযোগপত্র জমা হয়েছে, সেহেতু আমরা এখন বিচারকাজ শুরু ও শেষ হওয়ার আশা করতে পারি।’
এমআই

অর্থনীতি
ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে অর্থনীতি স্থবির হবে না: অর্থ উপদেষ্টা

ঈদে টানা ১০ দিনের দীর্ঘ ছুটিতে দেশের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না বা স্থবির হবে না জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (০৪ জুন) সচিবালয়ে দুপুরে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ঈদে টানা ১০ দিনের ছুটি এ সময় দেশের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা বা স্থবির হবে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, স্থবির হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, ব্যবসায়ীরা তাদের মতো করে ব্যবসা করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে কোন কোন দিন, কোন কোন স্থানে ব্যাংক খোলা থাকবে… গরুর হাটে কীভাবে থাকবে।
তিনি বলেন, এ রকম হলিডে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে আরও বেশি থাকে। বড়দিনে ২০ থেকে ২৫ দিন ছুটি থাকে। নেপালে দুর্গাপূজার সময় ৩০ দিন ছুটি থাকে। তখন তাদের দেশ চলে না? সুতরাং দেশ চলবে। ইতোমধ্যে আমরা বাজেট দিয়ে দিয়েছি। বাজেটে মোটামুটি কর্মপন্থা কী হবে সেই অনুযায়ী কাজ হবে।
তিনি আরও বলেন, ঈদের পর বাজেটের ওপর কার কী মন্তব্য, সাজেশন থাকবে সেটি নেব। ১৯ জুন পর্যন্ত মতামত দিতে পারবে বাজেটের বিষয়ে। ২২ তারিখ কেবিনেট বৈঠকে বাজেট অনুমোদন হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে দারিদ্র্যদের জন্য সুখবর আছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সুখবর আছে, আপনারা বাজেটের কোথায় কোথায় পরিবর্তন হয়েছে সেটি একটু দেখেন।
এতে সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি ফিরবে বলে মনে করেন? এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, বাজেটে স্বস্তি আছে।
অর্থনীতি
যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় টোল আদায় ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা

ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে ঘরমুখো হচ্ছে মানুষ। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে।এদিকে বাড়ছে যমুনা সেতুতে টোল আদায়ের পরিমাণ। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু থেকে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং এর বিপরীত ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) সকালে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৭ হাজার ৬৫৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৫০ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৫ হাজার ৯০৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪১ লাখ ৮১ হাজার ৫০ টাকা।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য ৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর ওপর কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেই জন্য দুইটি রেকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় আছে। সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে, নেই যানজট। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশ মহাসড়কে সার্বক্ষণিক রাত-দিন কাজ করছে। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
অর্থনীতি
১১ মাসে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ

সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে— এই ১১ মাসে দেশের মোট পণ্য রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৯৫ কোটি মার্কিন ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।
মঙ্গলবার (৩ জুন) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে প্রকাশিত হালনাগাদ রিপোর্ট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত মে মাসেই পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৭৪ কোটি ডলারের, যা গত বছরের মে মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। এটি চলতি অর্থবছরের মধ্যে এক মাসে সর্বোচ্চ রপ্তানির রেকর্ড। এর মধ্যে, সবচেয়ে বড় সুখবর এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। মে মাসে এককভাবে এই খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৯২ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি। অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস মিলিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬৫৬ কোটি ডলারে— পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১০ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি।
মূলত, বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। শিল্প মালিকরা বলছেন, নতুন বাজার খোঁজা, অর্ডার পণ্যের বৈচিত্র্য এবং উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধির কারণে এ সাফল্য সম্ভব হয়েছে।
অন্যদিকে, ইপিবির বিশ্লেষণ বলছে, তৈরি পোশাক ছাড়াও মে মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা, প্রকৌশল পণ্য এবং প্লাস্টিক সামগ্রীর রপ্তানি বেড়েছে। তবে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় কমেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
অর্থনীতি
সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৭ শতাংশে নামবে মূল্যস্ফীতি: গভর্নর

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বিশ্ববাজারে খাদ্য, তেল-গ্যাসের দর কমতির দিকে। এর সুফল পাবে। এ ছাড়া মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক করা হয়েছে। আশা করছি আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৭ শতাংশে নেমে আসবে মূল্যস্ফীতি।
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর তার এ প্রত্যাশার কথা জানান। একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতি কমলে সুদহারও কমানো হবে বলেও জানান তিনি।
গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতির বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এক্সচেঞ্জ রেট। এটা কমাতে না পারলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ত। এখন এটা স্বস্তিতে এসেছে। এক্সচেঞ্জ রেট বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরও তেমন পরিবর্তন হয়নি। এতে করে আস্থা এসেছে, মূল্যস্ফীতি একটি ভালো জায়গায় যাচ্ছে।
গভর্নর বলেন, আমরা যদি পরিসংখ্যান দেখি— খাদ্য মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১৪ শতাংশ ছিল, এখন তা সাড়ে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি একটু বেশি আছে, এটি কমছে, এখন ১০ শতাংশের নিচে আছে। বিশ্ববাজারে খাদ্য, তেল-গ্যাসের দর কমতির দিকে। এর সুফল পাবে। এ ছাড়া মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক করা হয়েছে। আশা করছি আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৭ শতাংশে নেমে আসবে মূল্যস্ফীতি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ জ্বালানি সড়ক সেতু ও রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য, বিমান এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আর্থিক খাতের প্রধানরা।
গতকাল বিকেলে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম বাজেট।
প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা এটি।
কাফি
অর্থনীতি
এবারের বাজেট জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব: অর্থ উপদেষ্টা

এবারের বাজেট জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ৷ আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি৷
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সামনের পথ কঠিন৷ আমরা চেষ্টা করছি এনবিআরকে রিঅর্গানাইন করতে, বাইরে থেকে ঋণ আনার প্রক্রিয়াটাও মোটামুটি নেগোশিয়েট করে ফেলেছি৷
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি আমরা একটি জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব বাজেট দিতে পেরেছি৷ অনেকে বলছে তোমরা আগের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছ৷ হুট করেই যে আমরা একটা বিপ্লবী বাজেট দিয়ে দেব, সেটা তো সম্ভব না৷ বাজেটে একেবারে যে ইনোভেশন নেই, তা কিন্তু নয়৷ গতকাল বাজেট দিয়েছি, এটা ওপেন থাকবে৷ কিছু সাজেশন আসবে৷ পরবর্তীতে ফাইনাল বাজেটটা আসবে৷
তিনি আরও বলেন, সার্বিকভাবে আমি মনে করি চ্যালেঞ্জের মুখে একটু কোলাবোরেটিভ, সিমপেথেটিক হয়ে কাজ করবেন৷ সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে৷ আমরা চাই একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে যে, এতো প্রতিকূলতার মধ্যেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে৷ বাজেটের নির্যাস হলো সবার জীবন যাপনকে স্বচ্ছ করা, সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো ও জীবনমান উন্নত করা৷
বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ জ্বালানি সড়ক সেতু ও রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টার মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য বিমান বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টার শেখ বশিরউদ্দীন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আর্থিক খাতের প্রধানরা।
এর আগে সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভি সহ অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম বাজেট।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারের বাজেটটি বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, যা পূর্ববর্তী বছরগুলোর বাজেটের তুলনায় ভিন্ন।
প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা।
কাফি