অর্থনীতি
ই-অরেঞ্জের মাধ্যমে ৩৫৮ কোটি টাকা অর্থপাচার!
আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ ডট শপের মাধ্যমে ৩৫৮ কোটি টাকা মানি লন্ডারিং হয়েছে। রাজধানীর গুলশান থানার সাবেক পুলিশ পরিদর্শক শেখ সোহেল রানা (পরে বরখাস্ত) সরকারি চাকরির আড়ালে ই–অরেঞ্জ পরিচালনা করতেন। তিনি ও তাঁর আত্মীয়স্বজনই মূলত এ মানি লন্ডারিংয়ে জড়িত। এর বাইরে জড়িত এক পরিবারের আপন দুই ভাই, যাঁদের আরপি করপোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আরও জড়িত ছিল অল জোন নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান।
আদালতে ই–অরেঞ্জের ওপর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দাখিল করা সাম্প্রতিক অভিযোগপত্রে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে গুলশান থানায় মামলা হওয়ার প্রায় তিন বছর পর এ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম অর্থ নিয়ে ২০১৯ সালের ৩১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ১৭ আগস্ট পর্যন্ত তিন বছর ব্যবসা করেছে ই–অরেঞ্জ। ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ‘ডাবল টাকা ভাউচার অফার’ দিয়ে তারা অস্বাভাবিক কম দামে মোটরসাইকেল, মুঠোফোন, রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন ইত্যাদি পণ্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেয়।
এভাবে মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে ই-অরেঞ্জ। এ সময় প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ১৫ হাজার ৫৭০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে সমপরিমাণ লেনদেনের মাধ্যমে ৯৫৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। অগ্রিম টাকা দিয়েও অনেকে পণ্য পাননি। আর এসব লেনদেনের অর্থই মানি লন্ডারিং হয়েছে।
অভিযোগপত্রে ১২ জন আসামির নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে প্রধান আসামি হচ্ছেন গুলশান থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক শেখ সোহেল রানা, তাঁর বোন ই-অরেঞ্জের সোনিয়া মেহজাবিন, সোনিয়ার স্বামী মাসুকুর রহমান, সোহেল-সোনিয়ার খালু রেড অরেঞ্জ ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ জায়েদুল ফিরোজ। প্রতিষ্ঠানের দুই সাবেক প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) নাজমুল আলম রাসেল এবং মঞ্জুর আলম পারভেজও এতে জড়িত। এ দুজন সম্পর্কে আপন ভাই।
মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন ই–অরেঞ্জের নতুন মালিক বীথি আক্তার, শেষ দিকে যোগ দেওয়া ই–অরেঞ্জের সিওও আমানউল্লাহ চৌধুরী, অল জোন নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মেহেদী হাসান, পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান সফটওয়্যার শপ লিমিটেডের (এসএসএল) চেয়ারম্যান সাবরিনা ইসলাম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম এবং এসএসএলের চিফ এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার নূরুল হুদা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (সদ্য বদলি হয়েছেন) কাজী জিল্লুর রহমান মোস্তফা গতকাল শনিবার মুঠোফোনে বলেন, ‘৩৫৮ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে ১২ জনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এখন তা আদালতের বিষয়।’
পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান এসএসএলের চেয়ারম্যান, এমডি ও কর্মকর্তা কেন আসামি—এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী জিল্লুর রহমান মোস্তফা বলেন, বেশি কমিশন পাওয়ার আশায় এসএসএলের এই তিনজন ই–অরেঞ্জের মানি লন্ডারিংয়ে সহায়তা করেছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান শাখায় ২৯৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা এবং সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৬০৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা অর্থাৎ ৯০০ কোটি ২১ লাখ টাকা স্থানান্তর করেছে ই–অরেঞ্জ। বাকি ৫৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার মধ্যে আদালতের নির্দেশে জব্দ আছে ৩৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা এবং ২২ কোটি ১৪ লাখ টাকা কমিশন নিয়েছে এসএসএল।
বলা হয়েছে, অনেক সন্দেহজনক লেনদেন হলেও এসএসএল সরকারি কোনো সংস্থায় সন্দেহজনক লেনদেন প্রতিবেদন (এসটিআর) দাখিল করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নেওয়া গেটওয়ে লাইসেন্সের শর্ত পালনে ব্যর্থ হয়েছে এসএসএল। প্রতিষ্ঠানটি মানি লন্ডারিংয়ে সহায়তাকারী। প্রতিবেদনে বলা হয়, অল জোনের স্বত্বাধিকারী মেহেদী হাসান মোটরসাইকেল সরবরাহের নামে ১৮৮ কোটি টাকা স্থানান্তর করেছেন। আর সোহেল রানা ও তাঁর বোন সোনিয়া মেহজাবিন নিজেদের নামে একাধিক ফ্ল্যাট কিনেছেন। এদিকে গ্রাহকদের টাকা নগদে জমা নেয় আরপি করপোরেশন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী ই–অরেঞ্জ ডট শপের প্রথম সিওও মো. নাজমুল আলম রাসেল, যাঁর হাতে ছিল ই–অরেঞ্জের সফটওয়্যার ও ওয়েবসাইটের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। তিনি পরে তাঁর ভাই মঞ্জুর আলম পারভেজকেও চাকরি দিয়ে ই–অরেঞ্জে নিয়ে আসেন। বাস্তবে আরপি করপোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকও এই দুই ভাই। যদিও আরপি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নাজমুল আলম রাসেলের স্ত্রী ফারিয়া সুবাহার নামে। সফটওয়্যারে ভুয়া পণ্য ক্রয় আদেশ তৈরির পাশাপাশি ভুয়া গ্রাহক তৈরির মাধ্যমে অনেক টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি, যা হিসাবে ধরা পড়ার পর স্বীকার করেন।
আত্মসাৎ প্রক্রিয়ায় জড়িত শেখ সোহেল রানা ভারতে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে জেল খেটেছেন। এখন জামিনে আছেন। সোহেল রানারই বোন সোনিয়া মেহজাবিন ও তাঁর স্বামী মো. মাসুকুর রহমান বর্তমানে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।
অরেঞ্জ বাংলাদেশ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের মালিক তাঁরা। এ ছাড়া ই–অরেঞ্জ শপ যার কাছে বিক্রি হয়েছিল, সেই বিথী আক্তার এবং ই–অরেঞ্জের সিওও মো. আমানউল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রতারণায় সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে। আমানউল্লাহ চৌধুরী সম্প্রতি জামিনে বের হয়েছেন।
যোগাযোগ করলে ই-কমার্স নিয়ে কাজ করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের অধ্যাপক সুবর্ণ বড়ুয়া বলেন, ‘যেহেতু অভিযোগপত্র জমা হয়েছে, সেহেতু আমরা এখন বিচারকাজ শুরু ও শেষ হওয়ার আশা করতে পারি।’
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের বাজারে ফের বাড়ল সোনার দাম
দেশের বাজারে আবারও বেড়েছে স্বর্ণের দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮২৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪২ হাজার ২৬৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। রোববার (২৪ নভেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৪২ হাজার ২৬৬ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৬ হাজার ৩৯৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৫ হাজার ৬৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এর আগে, সবশেষ গত ২১ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২২ নভেম্বর থেকে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রমজানে দ্রব্যমূল্য সর্বোচ্চ সহনীয় করার চেষ্টা করবো: বাণিজ্য উপদেষ্টা
আসন্ন রমজান মাস উপলক্ষে খাদ্যদ্রব্যসহ জিনিসপত্রের দাম সর্বোচ্চ সহনীয় করার চেষ্টা করবো বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন।
আজ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউর প্রয়াত সদস্য সন্তানদের শিক্ষা ভাতা দেওয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমি জানি আপনারা অনেক কষ্টে আছেন। তবে এটাও বলতে চাই যে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে পেঁয়াজ, চিনি ও তেলের দাম কিছুটা কমে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জাতীয় মসজিদের খতিব পালিয়ে গেছেন, এমন একটি পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আজকের এ সরকার গঠিত হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য একটি মর্যাদাপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ।
ডিআরইউর সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিআরইউর কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির পরিচালক ও চেয়ারম্যান (রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটি) এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ব্যাংকিং খাত দেশের অর্থনীতির অন্যতম শক্তি। এনআরবিসি ব্যাংক অর্থনৈতিক উন্নয়নধর্মী কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি মানবিক অনেক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত।
এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও (চলতি দায়িত্ব) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নমূলক অনেক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এনআরবিসি ব্যাংক। ডিআরইউর এ ধরনের বৃত্তিমূলক কাজে সব সময় আমরা পাশে থাকবো।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পতনের পর স্বর্ণের দামে বড় লাফ
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। বড় উত্থানের পর যেমন বড় দরপতন হয়েছে, তেমনি বড় দরপতনের পর বড় উত্থানের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববাজারে সোনার দামের অস্থিরতার মধ্যে দেশের বাজারেও দামি এই ধাতুটির দামে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুটহাট দাম বাড়া বা কমার ঘটনা ঘটছে। চলতি নভেম্বর মাসে ৬ বার দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানো হয়েছে।
বিশ্ববাজারে গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে সোনার দামে বড় পতন হয়। পাঁচ কার্যদিবসে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ১২২ ডলার কমে যায়। এমন পতনের পর গত সপ্তাহে সোনার দামে বড় উত্থান হয়েছে। প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ১৫৩ ডলারের বেশি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ সাড়ে ১৮ হাজার টাকার ওপরে।
বিশ্ববাজারে বড় ধরনের উত্থান হওয়ায় বাংলাদেশেও গত সপ্তাহে সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারের তুলনায় বাংলাদেশে সোনার দাম বাড়ানোর হার বেশ কম। ফলে দেশের বাজারে যে কোনো সময় সোনার দাম আবার বাড়তে পারে। গত সপ্তাহে দুই দফায় দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ হাজার ৯৩৪ টাকা। অবশ্য গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে দুই দফায় ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ৪ হাজার ১৯৯ টাকা কমানো হয়।
তথ্য পর্যালোচায় দেখা যায়, বিশ্ববাজারে দফায় দফায় দাম বেড়ে গত ৩০ অক্টোবর প্রতি আউন্স সোনার দাম রেকর্ড ২ হাজার ৭৮৯ ডলারে ওঠে। বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ায় বাংলাদেশে ২০, ২৩ ও ৩১ অক্টোবর টানা তিন দফা সোনার দাম বাড়ানো হয়। ৩১ অক্টোবর সব থেকে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় এক হাজার ৫৭৫ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়ায় এক লাখ ৪৩ হাজার ৫২৬ টাকা। দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম।
বিশ্ববাজারে রেকর্ড দাম হওয়ার পরদিন থেকেই অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর থেকে পতনের মধ্যে পড়ে সোনা। কয়েক দফায় দাম কমে ১৪ নভেম্বর প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৫৪৭ দশমিক ১০ ডলারে নেমে যায়। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে যেমন সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে, তেমনই বিশ্ববাজারে দরপতন দেখা দিলে দেশের বাজারেও সোনার দাম কমানো হয়। ৫ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে চার দফায় দেশের বাজারে ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম কমানো হয় ৯ হাজার ১৭ টাকা।
অবশ্য এই বড় দরপতনের পর বিশ্ববাজারে সোনার দামে আবার বড় উত্থান প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহে লেনদেন শুরুর সময় প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৫৬২ দশমিক ৫৪ ডলার। সপ্তাহ শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭১৫ দশমিক ৮৫ ডলারে। অর্থাৎ গত সপ্তাহে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ১৫৩ দশমিক ৩১ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৮ হাজার ৩৯৭ টাকা (এক ডলার ১২০ টাকা ধরে)।
বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহের ২০ ও ২২ নভেম্বর দুই দফায় দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়। এর মধ্যে ২০ নভেম্বর সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়ানো হয়। এছাড়া ২২ নভেম্বর বাড়ানো হয় এক হাজার ৯৯৪ টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ হাজার ৯৩৪ টাকা।
বাজুসের এক সদস্য বলেন, বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুটহাট দাম বাড়ছে। বাজার পরিস্থিতি অনুমান করা খুব কঠিন হয়ে গেছে। গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক উত্থান হয়েছে। তার আগে বড় দরপতন হয়। বিশ্ববাজারে এমন অস্থিরতা থাকায় দেশের বাজারেও কয়েক দফা সোনার দাম বাড়া-কমার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ বিশ্ববাজারের যে চিত্র দেখা গেছে, তাতে দেশের বাজারে যে কোনো সময় সোনার দাম বাড়তে পারে। কারণ, গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ৫০ ডলার বেড়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
তিন মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে ৩১ শতাংশ
দেশে সঞ্চয়পত্র বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই-সেপ্টেম্বরে ১৪ হাজার ৯৯২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ২১ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রি সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা বা ৩১ শতাংশ কমেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটিতে জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি, আসল পরিশোধ ও সর্বশেষ স্থিতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রের নগদায়নও (ভাঙানো) কমে গেছে। এ কারণে এই তিন মাসে সঞ্চয়পত্রের আসল পরিশোধ বাবদ সরকারের খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। এ বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বরে সঞ্চয়পত্রের আসল বাবদ গ্রাহকদের পরিশোধ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে সঞ্চয়পত্রের আসল পরিশোধ বাবদ সরকারের খরচ কমেছে ১৬ হাজার ২৬২ কোটি টাকা বা প্রায় ৭১ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত জুলাই-আগস্টে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ১৪ হাজার ৯৯২ কোটি টাকার। তার বিপরীতে সঞ্চয়পত্রের আসল বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এই তিন মাসে সঞ্চয়পত্রের প্রকৃত বিক্রি দাঁড়ায় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকায়। বিক্রি কমে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের নিট স্থিতিও কমেছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের নিট স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। এর মানে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের স্থিতি এক বছরে ১১ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা বা সোয়া ৩ শতাংশের মতো কমেছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রাজউক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ
কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মমিন উদ্দিন একটি অফিস আদেশ জারি করে কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি জানান, রাজউকের ৯ম গ্রেডে ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের এবং অবশিষ্ট গ্রেড ১০ থেকে অন্য গ্রেডের কর্মকর্তাদের সম্পদ বিবরণী আগামী ৩০ নভেম্বর মধ্যে চেয়ারম্যান দপ্তরে দাখিল করতে হবে।
এমআই