অর্থনীতি
এলএনজি টার্মিনাল চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় সামিট

ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সামিট গ্রুপ। বুধবার (৯ অক্টোবর) সিঙ্গাপুর থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিজেদের এই আহ্বানের কথা জানায় কোম্পানিটি।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বিশেষ আইনে সামিটের সঙ্গে দৈনিক ৬০০ মিলিয়ন ক্ষমতার একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের চুক্তি করে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার। অন্তবর্তী সরকার এসে ওই চুক্তিটি বাতিল করে দেয়।
প্রেস রিলিজে বলা হয়েছে, সামিট গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সামিট এলএনজি টার্মিনাল-২ কোম্পানি লিমিটেড (এসএলএনজি-২) দেশে তৃতীয় ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) প্রকল্প বন্ধ করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সামিট ৭ অক্টোবর পেট্রোবাংলা থেকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে অবস্থিত প্রকল্পটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত জানতে পেরেছে।
সামিট বলছে, চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে পেট্রোবাংলা তাদের জানিয়েছে- টার্মিনেশন নোটিশটি এই ভিত্তিতে জারি করা হয়েছিল যে ৩০ মার্চ ২০২৪ তারিখে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলো কার্যকর হয়নি। কারণ নির্ধারিত ৯০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ২৮ জুন ২০২৪ তারিখে পারফরম্যান্স বন্ড জমা দেওয়া হয়নি। এসএলএনজি-২ জানায়, ওই তারিখটি শুক্রবার (বাংলাদেশে ব্যাংকিং দিবস না) পড়ায় পেট্রোবাংলার স্বীকৃতি দিয়ে সম্ভাব্য পরবর্তী কর্মদিবসে পারফরম্যান্স বন্ড হস্তান্তর করা হয়।
এসএলএনজি-২ এর আইনজীবীরা নিশ্চিত করেছেন, গত ৩০ মার্চের চুক্তির কোনও ধারা লঙ্ঘন হয়নি। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে ৩০ দিনের মধ্যে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পক্ষকে জানানোর বিধান থাকলেও সেটি পেট্রোবাংলার তরফ থেকে এসএলএনজি-২ কে জানানো হয়নি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে লাগবে স্নাতক ডিগ্রি

দেশের ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে হলে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। বিকল্প, প্রতিনিধি বা স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগেও শিক্ষাগত যোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া পরিচালকদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক জ্ঞান ও দক্ষতা থাকতে হবে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালকদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। এ ছাড়া পরিচালকদের কোম্পানির পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক জ্ঞান ও দক্ষতা থাকতে হবে। বিকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পরিচালক যেহেতু একটি নির্দিষ্ট যোগ্যতা এবং উপযুক্ততার অধিকারী, সেহেতু বিকল্প পরিচালকের নিয়োগে এই যোগ্যতা এবং উপযুক্ততা সম্পর্কিত বিধানাবলি অপরিহার্য হবে। এর মাধ্যমে পরিচালকের মনোনয়ন প্রক্রিয়া আরও কার্যকর এবং স্বচ্ছ হবে।
একই সঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষে মনোনীত বা প্রতিনিধি পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে, ওই পরিচালককে স্বতন্ত্র পরিচালকের মতো যোগ্যতা এবং উপযুক্ততা শর্তাবলি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া এ সংক্রান্ত পূর্বের জারি করা অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কিছু পণ্যের দাম বাড়লেও সংসার খরচে চাপ পড়বে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা

দিন দিন ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। ফলে কিছু পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পেলেও সংসার খরচে চাপ ততটা পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ: চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সরকারের করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আপনারা দেখেছেন, ক্রমান্বয়ে আমাদের মূল্যস্ফীতি নামছে। আমাদের টাকার ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন কিছু পণ্যের দাম বাড়ছে। কিন্তু আমরা চাই না সাধারণ মানুষের মাঝে চাপটা পড়ুক। আমরা আমাদের সামগ্রিক প্রচেষ্টার মধ্যে এটা রেখেছি। তারপরও মূল্যবৃদ্ধি পেলে সংসার খরচে চাপ ততটা পড়বে না।
মঙ্গলবার একলাফে সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে উত্তর দিতে গিয়ে উপদেষ্টা এসব বলেন। অনেকটা বাধ্য হয়ে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে এ উপদেষ্টা বলেন, সরকার দুই হাজার কোটি টাকা শুধু তেলের বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য ভর্তুকি দিয়েছে। আমাদের কাছে তথ্যের কোনো গরমিল নেই। ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করছি, রমজানে ভোক্তা অধিকারকে কাজে লাগিয়ে আমরা বাজারের শৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করেছি। সেখানে বহুলাংশে সফল হয়েছি, হয়তো কিছু অংশে ব্যর্থতা রয়েছে।
তিনি বলেন, তেলের দাম ১৪ টাকা বেড়েছে, সেটা বাড়াতে বাধ্য হয়েছি। সরকারের যে নিজস্ব পরিচালন ব্যয় রয়েছে, সেই টাকাটা তো তুলতে হবে। না হলে রাষ্ট্রের দায় তৈরি হবে। সরকারকে লোন করে পরিশোধ করতে হবে। সে টাকা তো আপনাকে-আমাকে দিতে হবে। এখন আমরা কি সেটা করবো, নাকি নিজেদের সামর্থ্যে চলার চেষ্টা করবো। এই কষ্টটা আমাদের করতে হয়।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমরা এখন দেশে স্থানীয়ভাবে তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাড়ানোর চেষ্টা করছি। তেল না এনে তেলবীজ এনে তেল করার চেষ্টা করছি। যাতে খরচ কম হয়। প্রতিযোগিতা বাড়ে। দেশে বড় বড় দুটি প্রতিষ্ঠান এখন বিনিয়োগে আসছে। টেকসইভাবে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ভোজ্যতেল আমদানিতে ৫ শতাংশ আগাম কর অব্যাহতি

অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ আগাম কর (এটি) অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এক বিশেষ আদেশে আগাম কর অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) এনবিআরের প্রথম সচিব (মূসক নীতি) মো. মসিউর রহমান স্বাক্ষরিত আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। আদেশে বলা হয়, অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ও অপরিশোধিত পামতেল আমদানির ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে।
আদেশে বলা হয়, এ অব্যাহতি সুবিধা নেওয়ার আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি নিতে হবে। আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪ অনুযায়ী পণ্য আমদানির জন্য প্রযোজ্য সব শর্তাদি পরিপালন করতে হবে। মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৫১, ৫৩, ৫৪, ৬৪ ও ১০৭ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৪০ এ উল্লিখিত মূল্য সংযোজন কর সংক্রান্ত হিসাবরক্ষণসহ কর চালানপত্র ও দাখিলপত্রের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা প্রতিপালন করতে হবে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আবারও ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্বর্ণের দাম

দেশের বাজারে আবারও বাড়ানো হয়েছে সোনার দাম। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ৩ হাজার ৩৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ২০৯ টাকা। দেশের বাজারে সোনার এত দাম আগে কখনো হয়নি।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৪ হাজার ১৮৭ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬৩ হাজার ২১৪ টাকা। এতদিন দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিল। এই রেকর্ড দাম নির্ধারণ করার একদিন পর অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল সোনার দাম কিছুটা কমানো হয়। এখন আবার দাম বাড়ানো হলো। এতে অতিতের সকল রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় উঠেছে সোনা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৩ হাজার ৩৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ২০৯ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৮৯২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৪৮৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ১২২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১১ হাজার ৬৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত ১৪ এপ্রিল সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৩৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬২ হাজার ১৭৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৯৯১ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৮৫১ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৩২ হাজার ৬৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৭৩৪ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৯ হাজার ৫৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।। আজ বুধবার এ দামেই সোনা বিক্রি হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আসছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট, উপস্থাপন ২ জুন

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ২ জুন অর্থ উপদেষ্টা এই বাজেট উপস্থাপন করতে পারেন। নতুন অর্থবছরের বাজেটের আকার চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল ও বাজেট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ সভায় আগামী বাজেট বিষয়ে একটি উপস্থাপনা দেন অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার।
স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম আগের বছরের তুলনায় নতুন বাজেটের আকার ছোট হচ্ছে। মূলত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকুচিত মুদ্রানীতির সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি ব্যয় কমানো এবং বাজেট ‘বাস্তবায়নযোগ্য’ করতেই আকার কমানো হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সংসদ না থাকায় এবার সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থান করা হবে না। অর্থ উপদেষ্টা টেলিভিশনে নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগেই বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ কারণে সোমবার (২ জুন) বাজেট ঘোষণার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণত আগের অর্থবছরগুলোতে বৃহস্পতিবার বাজেট দেওয়া হতো। বাজেট ঘোষণার পর আগের রীতি অনুযায়ী অর্থ উপদেষ্টা বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।
সূত্রটি জানিয়েছে, বাজেটের আকার কমানো হলেও সমাজে বৈষম্য কমানোর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির চাপে নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বস্তি দিতে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে উপকারভোগী ও কিছু ক্ষেত্রে ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ থাকছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। একই সঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার জিডিপির প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৫ শতাংশ ধরতে পারে। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অবশ্য বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং এডিবির পূর্বাভাস হলো- এবার প্রবৃদ্ধি এর চেয়ে অনেক কম হবে।
এদিকে আগামী অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় সরকার। চলতি অর্থবছরেও একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। তবে গত মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
সাধারণত প্রতি অর্থবছরেই বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় বড় রাখা হয়। তবে এবার বাজেট ঘাটতি কমিয়ে রেখে বাজেট ছোট কারার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হতে পারে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। চলতি বাজেটে যা ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের জন্য যে ঘাটতি ধরা হচ্ছে, সেই ঘাটতির অর্ধেকেরও বেশি বিদেশি উৎস থেকে এবং বাকিটা ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রাণালয় সূত্র জানা গেছে, নতুন বাজেটের আকার কমলেও পরিচালন বা অনুন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে এ খাতের ব্যয় ধরা হতে পারে ৫ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা।
অনুন্নয়ন ব্যয় বাড়লেও কমবে উন্নয়ন ব্যয়। নতুন অর্থবছরের বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হতে পারে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ রাখা হতে পারে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয় ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। এডিপিতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নেওয়া বেশিরভাগ মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্পন্ন হয়েছে। আর অন্তর্বর্তী সরকার মেগা প্রকল্প গ্রহণ না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া, বিগত সরকারের সময় রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া প্রকল্পগুলো বাতিল করায় আগামী অর্থবছর প্রকল্পের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ফলে নতুন অর্থবছর উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় কমবে।
এদিকে রাজস্ব আহরণে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়া এবং বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান কমে যাওয়ায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাদ দিয়ে আগামী অর্থবছরের ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করা হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, বাজেটের আকার কমলেও এনবিআর’র রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হচ্ছে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে এনবিআর’র মাধ্যমে ৫ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হতে পারে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। তবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আহরণ অনেক কম হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়। সার্বিকভাবে এনবিআরের পক্ষ থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে এনবিআর’র কাঁধে রাজস্ব আদায়ের ভার বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।