অর্থনীতি
টাকা পাচ্ছে না গ্রাহকেরা, নিজেদের সব টাকা তুলে নিলো দুই ব্যাংকের এমডি
স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখা টাকা নগদে উত্তোলন ও অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া ইউনিয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের গ্রাহকদের। চেক নিয়ে ব্যাংক দুটির এক শাখা থেকে আরেক শাখা ঘুরেও তুলতে পারছেন না টাকা। এমন সংকটের মধ্যেও ব্যাংক দুটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা (এমডি) তাঁদের বেতনের পুরো টাকা ঠিকই তুলে ফেলেছেন। তাঁদের ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, দুটি ব্যাংকই নিজ নিজ কর্মকর্তাদের বেতনের টাকা তোলার সীমা বেঁধে দিয়েছে। কেউ ১০ হাজার, আবার কেউ ২০ হাজার টাকা তুলতে পারেন। তবে ব্যাংক দুটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা (এমডি) তাঁদের বেতনের পুরো টাকা ঠিকই তুলে ফেলেছেন। এর মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডি এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী ২ ও ৩ অক্টোবর তুলে নিয়েছেন ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। কমার্স ব্যাংকের এমডি তাজুল ইসলাম গত ২৬ সেপ্টেম্বর একবারে তুলেছেন ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
ইউনিয়ন ব্যাংকে গ্রাহক জ্যেষ্ঠ নাগরিক কামরুন নাহার জানান, তিন বছর আগে প্রায় এক কোটি টাকা স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখেন। গত জুলাই থেকে তিনি সেই টাকা নগদে উত্তোলন ও অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। এখন পর্যন্ত কোনো টাকা তিনি তুলতে পারেননি। শুধু তিনি নন, ব্যাংকটি কোনো গ্রাহকেরই টাকা ফেরত দিতে পারছে না। তবে মাঝেমধ্যে পরিচিত গ্রাহকদের ১০-১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দেয়।
ব্যাংক দুটি এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংক দুটির পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। স্বতন্ত্র পরিচালকেরা এখন দুই ব্যাংকের চেয়ারম্যান। এর মধ্যে কমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান হয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক আতাউর রহমান। তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অবসরের পর প্রায় পাঁচ বছর এস আলমের মালিকানাধীন ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন।
দেখা গেছে, কমার্স ব্যাংকের এমডি তাজুল ইসলামের হিসাবে ২৫ আগস্ট বেতনের ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা জমা হয়। এরপর ২৯ আগস্ট তিনি আগের জমাসহ ১৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা অন্য ব্যাংকের হিসাবে নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে বিশেষ ব্যবস্থায় পয়লা সেপ্টেম্বর সেই টাকা অন্য হিসাবে নিতে সক্ষম হন। ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁর হিসাবে ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা বেতন বাবদ জমা হওয়ার পরদিনই তিনি পুরো টাকা তুলে ফেলেন।
জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি আয়কর দেওয়ার জন্য পে-অর্ডার করেছিলাম। এ ছাড়া খরচের জন্য বেতনের টাকা তোলা হয়েছে। ব্যাংকে টাকার সংকট রয়েছে। এ জন্য অনেকে টাকা পাচ্ছেন না। ভবিষ্যতে এটি ঠিক হয়ে যাবে। আমরা ঋণ আদায়ের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আজও ১০ কোটি টাকা আদায় হয়েছে।
কমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, কবে তারল্যসংকট মিটবে, এটা বলতে পারব না।
ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডি এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী তাঁর ব্যাংক হিসাব থেকে পয়লা সেপ্টেম্বর ২ লাখ টাকা ও ৫ সেপ্টেম্বর ৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁর হিসাবে ৫০ লাখ টাকা জমা হয়। একই দিন মাসের বেতনের ১০ লাখ ৮ হাজার ২৪২ টাকা জমা হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর ওই হিসাবে জমা হয় ৪২ লাখ টাকা। এরপর তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর ৫০ হাজার টাকা, ২ অক্টোবর ৫০ লাখ টাকা এবং ৩ অক্টোবর ৫০ লাখ ও ৫৩ লাখ টাকা তোলেন।
এবিষয়ে মন্তব্য জানতে এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরীকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ফরীদ উদ্দীন আহমদকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির অর্থে সবুর খানের স্ত্রী-কন্যার নামে শেয়ার ক্রয়
বিগত সরকারের কয়েকজন প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপির ঘনিষ্ঠতায় কোন জবাবদিহি ছাড়া সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির মাত্রা অতিক্রম করেছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান। তিনি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) পরিচালক ও সাবেক সভাপতি ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির তৎকালীন বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্যকে অবৈধভাবে বাদ দিয়ে ইউজিসি থেকে দ্রুততম সময়ে রেজুলেশন বের করে দায়িত্ব ছিনিয়ে নেন প্রথম জীবনে কম্পিউটারের পার্টস বিক্রি করা এই সবুর খান। এরপর থেকেই তিনি শুরু করেন দেশের অন্যতম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় দুর্নীতি। পরিচালকসহ বিভিন্ন পদে স্বজনদের বসিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলের অর্থ ব্যক্তিগত খরচে ব্যবহার করতে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিকে অনিয়মের আখড়া বানিয়েছেন সবুর খান। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া টিউশন ফির অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে ব্যয় না করা, সরকারি জমি দখল, কর ফাঁকি, বিদেশে অর্থপাচার করে বাড়ি-ব্যবসা সবকিছুই করতে নানান কৌশল ও প্রতারণার আশ্রয় নেন তিনি। এছাড়াও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের বিষয়ে নানান অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে সবুর খানের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ করে নিজের এবং স্ত্রী-কন্যার ব্যক্তিগত নামে একটি ওষুধ কোম্পানির বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনেছেন সবুর খান। এই তিনজনের নামে এরই মধ্যে নভো হেলথ কেয়ার অ্যান্ড ফার্মা লিমিটেডের ৫৭ দশমিক ৬ শতাংশ শেয়ার হস্তান্তর করা হয়েছে। যার মোট মূল্য ১৯ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর এই অর্থের পুরোটাই দেওয়া হয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংক হিসাব থেকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও ব্যবহারিক শিক্ষার সুবিধার জন্য একটি ওষুধ কোম্পানির শেয়ার কেনার প্রস্তাব দেন সবুর খান। নভো হেলথ কেয়ারের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনায়ও এ বিষয়টি সামনে আনা হয়েছিল। তবে শেয়ার হস্তান্তরের চূড়ান্ত পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে সবুর খান, তার স্ত্রী সাহানা খান এবং মেয়ে সামিহা খানের নামে সব কাগজপত্র তৈরি করেন। চুক্তিপত্রে দেখা যায়, ওষুধ কোম্পানিটির মোট ৮ লাখ ৬৮ হাজার শেয়ারের মধ্যে ৪ লাখের মালিক এখন সবুর খান, যা মোট শেয়ারের ৪৬ দশমিক ০৮ শতাংশ। তার স্ত্রী সাহানা খান এবং মেয়ে সামিহা খানের নামে কেনা হয়েছে ৫০ হাজার করে মোট ১ লাখ শেয়ার। এই দুজন এখন কোম্পানিটির ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ করে মোট ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ারের অধিকারী। সব মিলিয়ে কোম্পানিটির ৫৭ দশমিক ৬ শতাংশ শেয়ারের মালিক এখন এই পরিবার।
জানা গেছে, প্রথম জীবনে কম্পিউটারের পার্টস বিক্রির ব্যবসা করা এই সবুর খান বিএনপি সরকারের আমলে খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ও তৎকালীন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের বদৌলতে তার সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্র সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে ১/১১ এর পটপরিবর্তনের সময় বিএনপির সাথে সে সমস্ত সম্পর্ক ছিণ্ণ করার ঘোষণা দেয় এবং ইউজিসির তৎকালীন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পাশ করা রেজুলেশনে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির অন্যতম সদস্য বিএনপির নেতা শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন বিদেশে চলে যাওয়ায়, এই সুযোগকে ট্রাস্টি বোর্ড থেকে অবৈধভাবে তাকে বাদ দিয়ে ইউজিসি থেকে দ্রুততম সময়ে পুণরায় রেজুলেশন বের করেন মো. সবুর খান।
বর্তমানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি পরিচালনার জন্য রয়েছে ১১ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড। এর চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা মো. সবুর খান। পাশাপাশি তার স্ত্রী সাহানা খান ভাইস চেয়ারম্যান, কন্যা সামিহা খান, মা রওশন আরা বেগম এবং শ্যালক মো. ইমরান হোসেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে রয়েছেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে, এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় হবে অলাভজনক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। ট্রাস্ট আইন অনুসারেও ট্রাস্টের কোনো সদস্য প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যক্তিগতভাবে সুবিধা নিতে পারবেন না। এদের মধ্যে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালকসহ বিভিন্ন পদে চাকরি করেন। যেখান থেকে তারা মাসে বেতন-ভাতা নেন। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় সম্মানীর নামে অর্থ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। যদিও আইন অনুযায়ী তাদের এসব সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো এটিকে দাতব্য প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর অধিনে প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করতে হবে। এছাড়াও সিন্ডিকেট, একাডেমিকসহ আরো বেশ কিছু কমিটি থাকবে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো বিশ্ববিদ্যালয়কে অবশ্যই অলাভজনক এবং দাতব্য মডেলে পরিচালনা করতে হবে। এসব শর্ত থাকা স্বত্তেও সে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র নিজের আত্মীয় স্বজনদের নিয়োগ দিয়ে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান সবুর খানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। একইসঙ্গে তার মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আনোয়ার হাবিব কাজলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অর্থসংবাদকে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও ব্যবহারিক শিক্ষার সুবিধার জন্য বোর্ড ট্রাস্টির কাছে একটা ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। এই প্রস্তাবনার প্ররিপ্রেক্ষিতে ট্রাস্ট্রি বোর্ড ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের একটি সংবাদের সূত্র ধরে ট্রাস্টি বোর্ড হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়। বিচারপতি মমতাজউদ্দিনসহ তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ গত জুন মাসের ২৭ তারিখে রায় দেয়। রায় অনুযায়ী, ওষুধ কোম্পানি টাকাটা ফেরত দেবে। এর সাথে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ট্রাস্ট্রি বোর্ডের কোন সম্পর্ক থাকবে না।
অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সবুর খানের শ্যালক-দুলাভাইসহ আত্মীয়-স্বজন নিয়োগ দিয়ে একক রাজত্ব্য কায়েম করেছেন। আত্মীয়করণের এই প্রক্রিয়ায় অযোগ্যদের হাতে পড়ে বিনষ্ট হচ্ছে একটি সম্ভাবনাময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশে আইটি শিক্ষার প্রসারে সরকারের অগ্রাধিকার থাকলেও এমন কিছু অযোগ্য মালিক ও কর্তৃপক্ষের হাতে পড়ে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার মানে নিম্নগামী হচ্ছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তির ধুয়া তুলে উৎসাহী তরুণ-তরুণীর কাছ থেকে নিয়ে নিচ্ছে কাড়িকাড়ি টাকা।
এদিকে স্ক্যামের মহাযজ্ঞকে বাস্তবায়ণ করতে সবুর খান আরো প্রতিষ্ঠা করেন ড্যাফোডিল পরিবার। গ্রুপ অব কোম্পানির আদলে এই ড্যাফোডিল পরিবারে রয়েছে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে ডিসিএল, ওভাল ফার্নিচার, ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল, সবুজ প্রিন্টার্স, ডিওএল, বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিমিটেড, স্কিল জবস, গ্রিন গার্ডেন, ড্যাফোডিল এডুকেশন নেটওয়ার্কসহ অনেক প্রতিষ্ঠান।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনোক্ষেত্রেই উন্মুক্ত টেন্ডার আহ্বান করা হয় না। মূলত এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই ফলস টেন্ডার সাবমিশনের মাধ্যমে কাজ পায় ড্যাফোডিল পরিবারেরই কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠান। যার মাধ্যমে বাজারমূল্যের থেকে বেশি দামে পণ্য কিংবা সেবা দেখিয়ে সরানো হয় বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডে জমা পড়া শিক্ষার্থীদের টাকা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সামিটের দ্বিতীয় এলএনজি টার্মিনাল চুক্তি বাতিল
কক্সবাজারের মহেশখালীতে সামিট গ্রুপের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রূপান্তরের দ্বিতীয় টার্মিনাল নির্মাণ চুক্তি বাতিল করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা)।
সোমবার (০৭ অক্টোবর) পেট্রোবাংলার সচিব রুচিরা ইসলামের সই করা এক আদেশে সামিট গ্রুপের সঙ্গে বিশেষ আইনে সম্পাদিত চুক্তিটি বাতিল করার আদেশ জারি করা হয়েছে।
জানা যায়, কোনো রকম দরপত্র ছাড়াই বিশেষ আইনের আওতায় চলতি বছরের ৩০ মার্চ পেট্রোবাংলা ও সামিট গ্রুপ চুক্তিটি করেছিল। একই দিন টার্মিনাল নির্মাণের পাশাপাশি ২০২৬ সালের শেষে বছরে দেড় মিলিয়ন টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করার চুক্তিও করা হয়।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে বর্তমানে যে দুটি এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে, তার একটি সামিটের। সেখানে নতুন আরেকটি টার্মিনাল নির্মাণের যে চুক্তি সই হয়েছিল সেটি বাংলাদেশের তৃতীয় আর সামিট গ্রুপের মালিকানাধীন দ্বিতীয় টার্মিনাল নামে পরিচিত ছিল।
নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সম্প্রতি আজিজ খান ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে সরকার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এসডিজি অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারে ‘থ্রি জিরো’
শান্তিতে নোবেল জয়ী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ উন্নয়ন দর্শন টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যের সফল বাস্তবায়নে এর অন্তর্ভুক্ত অন্য সব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে সক্রিয় ও অপরিহার্য ভূমিকা পালন করতে পারে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘প্রিপারিং ভিএনআরএস: রিভিউইং প্রোগ্রেস অ্যান্ড স্ট্রেনদেনিং পার্টনারশিপ ফর এসডিজি-১৭ ইন কনটেক্সট অব এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন বক্তারা। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সাপোর্ট টু সাস্টেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্পের (এসএসজিপি) সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রিয়াজ হামিদুল্লাহ এবং বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পাওটিয়াইনেন। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী।
লামিয়া মোরশেদ বলেন, বাংলাদেশ সমগ্র বিশ্বের কাছে ‘থ্রি জিরো’ ভিত্তিক উন্নয়ন দর্শনের একটি উদাহরণ হতে পারে। অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার এরই মধ্যে ওই লক্ষ্য অর্জনে কাজ শুরু করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও তাঁর স্ত্রী জাসদের সহসভাপতি আফরোজা হকের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে আজ সোমবার এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে।
নির্দেশনায় বিএফআইইউ জানিয়েছে, ব্যাংকের শাখায় উল্লিখিত ব্যক্তিরা এবং তাঁদের ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেসব হিসাবের লেনদেন ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হলো।
লেনদেন স্থগিতের পাশাপাশি উল্লিখিত ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবসংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল (হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি) বিএফআইইউতে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা ও দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের নেতা হাসানুল হক ইনু ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেওয়া হলো।
জোটের অন্যতম শরিক দল জাসদ। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বিগত আওয়ামী লীগ সরকারে একসময় তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে কুষ্টিয়ার একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে হেরে যান। হাসানুল হক ইনুর স্ত্রী আফরোজা হক একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ছিলেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আওয়ামী সরকারের আমলে ডলারের দাম বেড়েছে ৭৯ শতাংশ
আওয়ামী সরকারের আমলে বিগত ১৫ বছরে মূল্যস্ফীতির ভয়াবহ চাপে টাকার মানে ধস নেমেছিল। মার্কিন ডলারের বাজার হয়েছিল লাগামহীন। মুদ্রাবাজার, পুঁজিবাজার ও ডলার বাজার (বৈদেশিক মুদ্রা)- অর্থনীতির এই তিন খাত প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ৬৭ টাকার ডলার ১২০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছায়। সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে দেশ থেকে কোটি কোটি ডলার পাচার ও ব্যাংক ব্যবস্থায় নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিরি সৃষ্টি হয়। মুদ্রাবাজারে ভয়াবহ দুর্নীতির কারণে ডজনের বেশি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়। কয়েকটি ব্যাংক মার্জার করতে বাধ্য হয়। শেষ দিকে এ ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার কোনো সরবরাহ ছিল না। ফলে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় সব ধরনের লেনদেন। পুঁজিবাজার থেকেও হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেন হাসিনা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ লোকেরা। যার পুরোটা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। ডলারসংকটের কারণে এলসি বন্ধ করতে হয়েছে। ফলে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের ব্যবসা কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৮ সালের অক্টোবরে দেশে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ওই বছরের অক্টোবরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ২ হাজার টাকা বৃদ্ধি পায়। এই বৃদ্ধির সূচক আর থামেনি। প্রতিবছর খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। বেড়েছে ব্যাংক লুটপাট। ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে ঋণ নিয়ে ব্যাংক দেউলিয়া করে দেওয়া হয়েছে। অনিয়ম-জালিয়াতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, লুটপাটে অংশীদারদের হাতে ব্যাংকব্যবস্থা ছেড়ে দেওয়া হয়। তারা নতুন ব্যাংক অনুমোদন দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা লুট করেছে। এর চাপ পড়ে দেশের পুরো অর্থনীতিতে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো লুটপাটের কেন্দ্রে পরিণত করা হয়। ব্যাংকের টাকা লুট করে ডলারে রূপান্তর করে কোটি কোটি ডলার পাচার করে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সময় প্রতি ডলারের দাম ছিল ৬৭ টাকা। এই দর বেড়ে ২০১১ সাল পর্যন্ত ডলারের বিনিময় হার ওঠানামা করে ৬৯ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। ২০১২ সাল থেকে ডলারের দাম এক লাফে ৭৬ টাকায় পৌঁছায়। ২০১৪ সালে হাসিনা সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে ডলার বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। ব্যাংক থেকে নানা জালিয়াতি করে অবাধে ডলার পাচার শুরু হয়। সরকার বিদেশি ঋণ এনে এই ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করে।
টাকার অবমূল্যায়ন করা হয় কয়েক দফা। এতে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি তো হয়নি, বরং তা অর্থ পাচারকারীদের আরও সহায়তা করে। বাড়তে থাকে ডলারের সংকট, সেই সঙ্গে ডলারের দর। ২০১৭ সালের অক্টোবরে ডলারের দর ছিল ৮০ টাকা, ২০২০ সালে ৮৩ টাকা। ২০২১ সালে ৮৫ টাকা। এর পর ২০২২ সালে হাইজাম্প দিয়ে ডলারের দর পৌঁছায় ১০০ টাকা। পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে ওঠে। ডলারের চরম সংকট দেখা যায়। ২০২৩ সালে খোলাবাজারে ডলার দর ১৩০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। এর পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচন নীতির কারণে ডলারের দর কিছুটা কমে আসে। বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রলিং পদ্ধতি চালু করলে ডলারের দর ১২০ টাকায় ওঠানামা করে।
২০১৬ সালে এসে ব্যাংক খাতে বড় কয়েকটি জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশিত হয়। সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংকের কেলেঙ্কারি। দুই ঘটনায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা সামনে আসে। এতে ব্যাংক খাতে চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়। এই জালিয়াতির পুরো টাকা ডলারে রূপান্তর করে দুবাই, সিঙ্গাপুর পাচার করার বিষয়টি প্রকাশ পায়। দেশের মূল্যস্ফীতির ভয়াবহ সংকটে পড়ে দেশের অর্থনীতি। সরকার এই নৈরাজ্য ঠেকানোর পরিবর্তে আরও উৎসাহিত করার পদক্ষেপ নেয়। ব্যাংকের নেতৃত্বে এনে বসানো হয় হাজার কোটি টাকা লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের। যাদের বিরুদ্ধে বড় বড় দুর্নীতির অভিযোগ ছিল তাদের হাতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন ব্যাংকগুলোর হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়। মিথ্যা ঘোষণায় এলসি করে রপ্তানি দেখানো হলেও সেই মূল্য দেশে না এনে বিদেশে পাচার করা হয়। এতে টাকার মান কমতে কমতে গিয়ে একেবারে তলানিতে ঠেকে।
টাকার মান কমতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। ২০১০ সালে জানুয়ারি মাসে দেশে সোনার (২২ ক্যারট) ভরি ছিল ৩২ হাজার ৮৯২ টাকা। ২০২৪ সালে জানুয়ারিতে এসে ভরি দাঁড়ায় ১ লাখ ১২ হাজার ৪৪০ টাকা। অর্থাৎ ১৫ বছরে টাকার অবমূল্যায়ন সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়িয়েছে ভয়াবহভাবে। ২০১০ সালে যে মোটা চালের কেজি ছিল ২৪ থেকে ২৬ টাকা। এখন সেটা ৬০ টাকার ওপর। ২০১০ সালে গরুর মাংসের কেজি ছিল ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। ২০২৩ সালে গরুর মাংসের কেজি হয় ৮০০ টাকার ওপর। বিগত সরকার নতুন টাকা ছাপিয়ে ঋণ নিয়ে উন্নয়ন বাজেটে ব্যবহার করে দেশের অর্থনীতিকে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়।
ক্রমবর্ধমান ব্যয় ও দুর্বল চাহিদার কারণে দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যবসা প্রভাবিত হয়েছে। দেশের ব্যবসা পরিস্থিতি নিয়ে ২৫টিরও বেশি খাতের বহুজাতিক, স্থানীয় বড় কোম্পানি, স্টার্টআপ ও এসএমই খাতের ১৬৭টি কোম্পানি নিয়ে একটি জরিপে বলা হয়েছে, টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন ছাড়াও আর্থিক অনিয়ম, উচ্চখেলাপি, নগদ ঘাটতি ও সঞ্চয় হ্রাসের ফলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। ক্রমবর্ধমান ব্যয় এবং কর্মক্ষম নগদ প্রবাহের ঘাটতি কোম্পানিগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিদেশি মুদ্রার বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করায় অনেক বেসরকারি কোম্পানিও বর্তমানে ক্ষতির সম্মুখীন। ডলারের বিপরীতে টাকার তীব্র অবমূল্যায়নের পাশাপাশি বিলম্বিত এলসি পেমেন্ট সেটেলমেন্টের কারণে এ ধরনের ক্ষতি বাড়ছে বলে খাত-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়েছে যেসব কোম্পানির বিদেশি ঋণ রয়েছে এবং উৎপাদিত পণ্যের কাঁচামাল বেশির ভাগই আমদানিনির্ভর।
জানতে চাইলে, বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ডলারের এই উচ্চ দরের কারণে দেশের মূল্যস্ফীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন কঠিন করে তুলেছে। ভোক্তাদের এই দুর্গতির এখনো পরিবর্তন হয়নি। যারা বড় খেলাপি তাদের সুবিধা হয়েছে। তাদের মূল্যস্ফীতে কোনো সমস্যা হয়নি। হয়েছে দেশের অর্থনীতির, দেশের সাধারণ মানুষের।
এমআই