অর্থনীতি
ব্যাংক নোট থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে শেখ মুজিবের ছবি
দেশের সব ধরনের ব্যাংক নোট থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ দেওয়া হতে পারে বলে বাংলাদেশে ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে। সব ধরনের ব্যাংক নোটের নতুন ডিজাইন চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, নতুন নকশার ব্যাংক নোটে শেখ মুজিবের ছবি বাদ যেতে পারে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর অর্থবিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের উপসচিব এলিশ শরমিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ব্যাংককে নতুন নোটের জন্য নির্দিষ্ট নকশার প্রস্তাব পাঠাতে অনুরোধ করেছে।
অনুরোধে নতুন মুদ্রার নকশা প্রবর্তনের তত্ত্বাবধানকারী বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা ও ডিজাইন অ্যাডভাইজরি কমিটির সুপারিশ চাওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, সরকার ব্যাংক নোটে শেখ মুজিবের ছবি রাখতে চাইলে নতুন ডিজাইনের নোট ছাপানোর কোনো প্রয়োজন হতো না।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘নতুন ডিজাইন ও বৈশিষ্ট্যের নোট প্রচলনে কী ধরনের ডিজাইন করা সমীচীন হবে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা ও ডিজাইন অ্যাডভাইজরি কমিটির সুপারিশ গ্রহণপূর্বক সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দ্রুততম সময়ের মধ্যে অর্থবিভাগে প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
বর্তমানে বাংলাদেশের ২ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত সব কাগুজে নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি রয়েছে। কোনো কোনো নোটের দুপাশে শেখ মুজিবের ছবি রয়েছে। এছাড়া ধাতব মুদ্রাগুলোতেও তার ছবি রয়েছে।
নতুন ডিজাইনের এ প্রবর্তনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে প্রতিষ্ঠিত মুদ্রামান থেকে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যেতে পারে।
শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার মাত্র দুদিন আগে ৫০০ ও ১০০০ টাকার ব্যাংক নোটে শেখ মুজিবের ছবি আরও বেশি স্পষ্ট করে ছাপাতে নতুন দুটি ডিজাইন এবং ২০ টাকা ও ১০০ টাকার নোটের মুদ্রণ পদ্ধতি পরিবর্তন করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়।
হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাওয়ার পর বিভিন্ন নোটের নতুন ডিজাইন করে সরকারের কাছে তা জমা দিতে ছয় মাস সময় চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, মুদ্রা ও ডিজাইন অ্যাডভাইজরি কমিটির নির্দেশিকা অনুসারে প্রতিটি নোটের জন্য চারটি ভিন্ন ডিজাইন তৈরি করা হবে।
পরে এ কমিটির অনুমোদন নিয়ে ডিজাইনগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হবে। তবে নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে আসতে ২০ থেকে ২২ মাস সময় লাগতে পারে বলে জানান এক কর্মকর্তা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শেখ মুজিবের ছবি-সম্বলিত নোট পরিবর্তন করা হবে কি না — সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেননি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
নকশার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যেই নতুন নোটের জন্য সুপারিশ সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
শেখ হাসিনা সরকারের সময় বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিটি নোটের চারটি ডিজাইনের মধ্যে অন্তত একটি ডিজাইনে শেখ মুজিবের ছবি যুক্ত করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবের ছবিযুক্ত নোটগুলো অনুমোদন করেছিলেন।
নতুন নোটের অনুমোদন প্রক্রিয়া একই পদ্ধতিতে হবে। চারটি নকশা তৈরি করার পর বাংলাদেশ ব্যাংক এটির ডেপুটি গভর্নর-১-এর নেতৃত্বে মুদ্রা ও ডিজাইন অ্যাডভাইজরি কমিটির কাছে নকশাগুলো জমা দেবে।
এ কমিটিতে উচ্চপদস্থ ব্যক্তি এবং চিত্রশিল্পীরা থাকেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার আগে নকশাগুলো তারা পর্যালোচনা করবেন।
মন্ত্রণালয় তারপর নকশাগুলো পর্যালোচনা করবে এবং অনুমোদন পাওয়ার পর একটি আন্তর্জাতিক দরপত্র বা সরাসরি দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে কোনো বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে নোটগুলোর জন্য নতুন প্লেট তৈরি করা হবে।
প্লেট তৈরির প্রযুক্তিগত এবং নিরাপত্তা জটিলতার কারণে নতুন নোট প্রবর্তনের পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হতে প্রায় দুই বছর সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নতুন নোটের ছাপার তদারকি করবে সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড। এটির উচ্চ মূল্যমান নোটের (১০০, ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা) বর্তমান কাগজের মজুত ও আমদানিতব্য কাগজ দ্বারা আনুমানিক ১৩ মাস মুদ্রণ কার্যক্রম চলমান রাখা যাবে।
এর ফলে নতুন ডিজাইন চূড়ান্ত এবং প্রস্তুত করার সময় বর্তমান ডিজাইনের নোটগুলো বাজারে প্রচলিত থাকবে।
১৮ সেপ্টেম্বর অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদারের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ‘অনুমোদিত ১০০০, ৫০০, ১০০ ও ২০ টাকার নোটের প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়নের কার্যাবলী প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে [হাসিনা সরকারের পতন] উক্ত অনুমোদন মোতাবেক বাস্তবায়নাধীন কার্যক্রম চলমান রাখা হবে কি না, সে বিষয়ে আপনাদের মতামত প্রদানের জন্য অনুরোধ জানানো হলো।’
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এটি নতুন সরকারি নির্দেশিকাগুলোর ওপর ভিত্তি করে নকশার কাজ চালিয়ে যাবে, যার মধ্যে নোট থেকে শেখ মুজিবের ছবি সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
ব্যাংক নোটের নতুন এ সিরিজ অনুমোদিত হলে, বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চিত করবে যে, কাগজের বর্তমান স্টক এবং উচ্চ মূল্যমান নোটগুলো পর্যায়ক্রমে পরবর্তী কয়েক বছরে নতুন ডিজাইন করা নোটগুলির সঙ্গে যেন প্রতিস্থাপন করা হয়।
ঐতিহাসিকভাবে, বাংলাদেশি মুদ্রায় শেখ মুজিবের ছবি একটি বিশিষ্ট বৈশিষ্ট্য। স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালে প্রথমবারের মতো ১, ৫, ১০ ও ১০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়া হয়। এসব নোটের প্রত্যেকটিতেই শেখ মুজিবের ছবি ছিল।
তবে পরবর্তী বিভিন্ন সরকারের সময়ে নতুন নতুন নোট প্রচলনের পাশাপাশি পুরোনো নোটগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি সম্বলিত ১০ ও ৫০০ টাকার নোট ছাপে। আর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ মুজিবের ছবিযুক্ত ১, ২ ও ৫ টাকার কয়েন চালু করে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার।
এরপর সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব কাগুজে নোটেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ছাপানোর প্রক্রিয়া শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে ২০১১ সালের ১১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ২, ৫, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা মূল্যমানের নোট চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ইলেকট্রিক-হাইব্রিড গাড়ি আমদানিতে নগদ মার্জিনের শর্ত শিথিল
হাইব্রিড ও সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক গাড়ি আমদানির ঋণপত্রে (এলসি) নগদ মার্জিনের শর্ত শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড ব্যতীত অন্যান্য গাড়ি আমদানিতে নগদ মার্জিন অর্ধেক করা হয়েছে।
বৃহম্পতিবার (২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে।
এতে বলা হয়, দেশের মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অধিকতর সুসংহত রাখার জন্য মোটরকার আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণের জন্য নির্দেশনা রয়েছে। তবে জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব বিবেচনায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড গাড়ির ব্যবহারকে নীতিগতভাবে অগ্রাধিকার প্রদান করা হচ্ছে।
ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশে এ ধরনের পরিবহন মাধ্যম কার্বণ নিঃসরণ হ্রাস ও বায়ুর গুণমান সূচক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। এসব বিষয় বিবেচনায় সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড মোটরকারের আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হলো।
তবে সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড মোটরকার ব্যতীত অন্যান্য মোটরকারের (সেডানকার, এসইউভি, এমপিভি ইত্যাদি) আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে। এ নির্দেশনা আগামী ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ২৯ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করেছে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সোনালী ব্যাংকে বেক্সিমকোর ঋণের বড় অংশই খেলাপি
বিভিন্ন অনিয়েম জন্য সমালোচিত দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপ রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী ব্যাংক থেকে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এই ঋণের বড় অংশই এখন খেলাপি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী মো. শওকত আলী খান।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান এমডি।
এক প্রশ্নের জবাবে এমডি বলেন, হলমার্ক গ্রুপ ঋণের বিপরীতে যে পরিমাণ সম্পত্তি মর্টগেজ দিয়েছিল তার অতিরিক্ত আরও ১৬৭ একর জমি নতুন করে সংযুক্ত করা হয়েছে। শুধু হলমার্ক নয় টিএম ব্রাদার্সসহ যাদের কাছে ব্যাংকের বড় বড় পাওনা রয়েছে তাদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ের সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ব্যাংক।
অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ২০২৪ সালে বিপুল মুনাফা করেছে দেশের বৃহত্তম তফসিলি ব্যাংক সোনালী ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ সালের চেয়ে ২০২৪ সালে পরিচালন মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে ১ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। ২০২৪ সাল শেষে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফার পরিমাণ ৫ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। ২০২৩ সাল শেষে সোনালী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফার পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা। রেকর্ড মুনাফার পাশাপাশি ২০২৪ সালে আমানতের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ১৪ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা বেশি।
তিনি জানান, বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এ বছর নেট ইন্টারেস্ট ইনকামের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪২৫ কোটি টাকায়, যা গত বছরের চেয়ে ৯৪৯ কোটি টাকা বেশি।
ব্যাংকের জন্য এ বছরের স্লোগান ‘২০২৫ সাল হবে সোনালী ব্যাংকের সমৃদ্ধির পথে চলার বছর’ উল্লেখ করে তিনি জানান, কর্মীরাই ব্যাংকের প্রাণ। তাদের মোটিভেট করতে আমরা উল্লেখযোগ্য কর্মীদের প্রমোশন দিয়েছি। তারা ভালো থাকলে ব্যাংক আরও ভালো করবে। প্রমোশনপ্রাপ্তদের অনেকেই ৭/৮ বছর পর প্রমোশন পেয়েছেন। তাদের মধ্যে হতাশা কাজ করছিল। ব্যাংকের স্বার্থেই আমরা তাদের প্রমোশন দিয়েছি।
খেলাপি ঋণ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এমডি অ্যান্ড সিইও শওকত আলী খান বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসরণ করে আমরা খেলাপি ঋণ কমাতে কাজ করছি। উৎপাদনশীল খাতে ঋণ দিতে আমরা সিএমএসএমই ঋণে জোর দিয়েছি। ২০২৪ সালে রেকর্ড মুনাফার কারণে প্রভিশন ঘাটতি কমে আসবে বলে তিনি জানান।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টরসহ, প্রধান কার্যালয়ের জেনারেল ম্যানেজাররা এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৫৮২ কোটি টাকায় এক লাখ টন সার কিনবে সরকার
দেশে কৃষিখাতে ব্যবহারের জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে কাতার, সৌদি আরব ও মরক্কো থেকে এক লাখ মেট্রিক টন সার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৪০ হাজার টন ডিএপি, ৩০ হাজার টন টিএসপি এবং ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৫৮২ কোটি ২৪ লাখ ১২ হাজার টাকা।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই সার কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর সঙ্গে চুক্তির আওতায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানির প্রস্তাব নিয়ে আসে কৃষি মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদ প্রস্তাবটি অনুমোদন দিয়েছে। প্রতি টন টিএসপির মূল্য ধরা হয়েছে ৪৪০ মার্কিন ডলার। এতে মোট ব্যয় হবে ১৫৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তির আওতায় ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানি করার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রতি টন ডিএপির মূল্য ধরা হয়েছে ৬১৭ ডলার। এই সার আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ২৯৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
বৈঠকে সার কেনার আর একটি প্রস্তাব নিয়ে আসে কৃষি মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার এনার্জি মার্কেটিং থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
কাতার এনার্জী মার্কেটিং এর সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে প্রতি মেট্রিক টন ৩৫৪ দশমিক ৬৭ ডলার হিসেবে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১ কোটি ৬ লাখ ৪০ হাজার ১০০ ডলার। বাংলাদেশে মুদ্রায় এর পরিমাণ ১২৭ কোটি ৬৮ লাখ ১২ হাজার টাকা।
এদিকে বৈঠকে ‘ই-জিপি সিস্টেমের উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং অ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক সেবা ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দোহাটেক নিউ মিডিয়া বাংলাদেশ এবং জিএসএস ইনফোটেক লিমিটেডের নিয়োগ এক বছরের বাড়ানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এই এক বছরের সেবা নিতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে ৪২ কোটি ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ৮১৮ টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জানুয়ারিতেও অপরিবর্তিত এলপি গ্যাসের দাম
ডিসেম্বরের মতো নতুন বছরের জানুয়ারি মাসেও ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দাম অপরিবর্তিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
এদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকেই নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। যা বলবৎ থাকবে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত।
বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ জানান, জানুয়ারি মাসে এলপিজির দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ১২ কেজি সিলিন্ডার বিক্রি হবে এক হাজার ৪৫৫ টাকায়।
তবে বৃহস্পতিবার অটোগ্যাসের দাম কমিয়েছে বিইআরসি। জানুয়ারি মাসে ভোক্তা পর্যায়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম ৩ পয়সা কমিয়ে প্রতি লিটার ৬৬ টাকা ৭৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিইআরসি জানিয়েছে, জানুয়ারি মাসের জন্য সৌদি আরামকোর প্রোপেন এবং বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন যথাক্রমে ৬২৫ মার্কিন ডলার ও ৬১৫ মার্কিন ডলার এবং প্রোপেন ও বিউটেনের অনুপাত ৩৫:৬৫ অনুযায়ী প্রোপেন ও বিউটেনের গড় সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন ৬১৮.৫০ মার্কিন ডলার বিবেচনায় জানুয়ারি মাসের জন্য বেসরকারি এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম ভোক্তা পর্যায়ে সমন্বয় করা হলো।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ৪ দফা কমেছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম, আর বেড়েছে ৭ দফা। এক দফা ছিল অপরিবর্তিত। গত বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর বাড়ানো হয়েছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম। আর দাম কমেছিল এপ্রিল, মে, জুন ও নভেম্বরে। তবে দাম অপরিবর্তিত ছিল ডিসেম্বরে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
টিসিবির জন্য ২৮৪ কোটি টাকার তেল-ডাল কিনবে সরকার
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এ তেল ও ডাল কিনতে মোট ব্যয় হবে ২৮৪ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ তেল ও ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠক এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব দেওয়া হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে। এ তেলের ক্রয় মূল্য ধরা হয়েছে ১৮৯ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি লিটারের মূল্য ধরা হয়েছে ১৭১ টাকা ৯৫ পয়সা।
সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড থেকে এ সয়াবিন তেল কেনা হবে। ক্রয় সম্পন্ন করার পর টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে এ সয়াবিন তেল বিক্রি করা হবে।
জানা যায়, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে দুই কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহের জন্য একটি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে।
দরপ্রস্তাবটি আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির (টিইসি) সুপারিশে রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড থেকে এ সয়াবিন তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ধরা হয়েছে ৯৪ টাকা ৯৫ পয়সা। শবনাম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে এ ডাল কেনা হবে।
জানা যায়, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ক্রয়ের জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে তিনটি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। তিনটি দরপ্রস্তাবই কারিগরিভাবে ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান শাবনাম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে এ মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি ৫০ কেজির বস্তায় এ ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল সরবরাহ করবে।