অর্থনীতি
হাসিনাকে বেয়াইন ডেকে অর্থপাচার করতেন বিএবি’র সাবেক সভাপতি

আওয়ামী সরকারের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ব্যাংক খাতে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে নাসা গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৪টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার। এসব ঋণ থেকে শত শত কোটি টাকা দুবাই, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন তিনি।
ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে পৃথক অনুসন্ধানে নেমেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
সূত্র বলছে, নজরুল ইসলাম মূলত ২০১৭ সালের পর দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে নিজেকে একক ক্ষমতাধর বলে জানান দেন। এ সময় তার বড় ছেলে ওয়ালিদ ইবনে ইসলামের সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের ভায়রার মেয়ের বিয়ে হয়। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে শেখ হাসিনাকে তিনি বোন (বেয়াইন) ডাকা শুরু করেন। সম্পর্কের নতুন মোড়ে নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন নজরুল ইসলাম।
জানা যায়, বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার প্রভাবশালী মহলের আশীর্বাদে দেশের ব্যাংক খাতের অন্যতম মাফিয়া বনে যান। এ সুবাদে তিনি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবির চেয়ারম্যান পদ পেয়ে যান। আর্থিক খাতের নানা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজির টাকায় দেশ-বিদেশে গড়ে তোলেন অঢেল সম্পদ। বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের একাধিক দেশে রয়েছে তার বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ। তবে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেফতারের সংবাদ দেয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সূত্র জানায়, লন্ডন এবং হংকং ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে মজুমদারের বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে। সেখানে রিয়েল এস্টেট খাতে একাধিক কোম্পানি খুলে তিনি ব্যবসা করছেন। এছাড়া ২০১৫ সালের দিকে তিনি সৌদি আরবের কৃষি খাতে বিনিয়োগ করেন। সৌদির একাধিক খেজুর বাগানে বিনিয়োগ রয়েছে তার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এবং কাতারের রাজধানী দোহায় তার সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে।
নজরুল ইসলাম মজুমদার পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নজরুল ইসলাম মজুমদারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে তাঁর স্ত্রী নাছরিন ইসলাম ও তাঁদের ছেলে-মেয়েদের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়।
এমআই

অর্থনীতি
কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোতে বেড়েছে সোনা কেনার পরিমাণ, মে মাসে ২০ টন

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা কেনা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মে মাসে আরও ২০ টন সোনা কিনেছে। এই পরিমাণ আগের তুলনায় অনেকটা বেশি। খবর ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনার চাহিদা বেড়েছে। কাজাখস্তানের ন্যাশনাল ব্যাংক মে মাসে সাত টন সোনা কিনেছে। এতে ব্যাংকটির মোট মজুতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯৯ টন। এ ছাড়া বছরের শুরু থেকে কাজাখস্তানের ন্যাশনাল ব্যাংকের মজুত বেড়েছে ১৫ টন। গোল্ড কাউন্সিল অবশ্য বলছে, সামগ্রিকভাবে সোনা মজুতের গতি কিছুটা শ্লথ হয়েছে।
তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মে মাসে ছয় টন সোনা কিনেছে। এতে চলতি বছর ব্যাংকটির মোট ক্রয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ টন। চলতি বছর সোনার সবচেয়ে বড় নিট ক্রেতা দেশ পোল্যান্ড। চলতি বছর দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৬৭ টন সোনা কিনেছে। মে মাসে দেশটির ক্রয়ের পরিমাণ ছিল ছয় টন।
চীনের পিপলস ব্যাংক ও চেক রিপাবলিকের ন্যাশনাল ব্যাংক, উভয়ই মে মাসে দুই টন করে সোনা কিনেছে। এ ছাড়া মে মাসে বিক্রির ক্ষেত্রে শীর্ষে ছিল সিঙ্গাপুরের মুদ্রানীতি কর্তৃপক্ষ। তারা পাঁচ টন সোনা বিক্রি করেছে। এরপর উজবেকিস্তান ও জার্মানির ডয়চে বুন্ডেসব্যাক উভয়ই এক টন করে বিক্রি করেছে।
চলতি বছরের হিসাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নিট সোনা বিক্রেতা দেশ উজবেকিস্তান। এ সময় দেশটি ২৭ টন সোনা বিক্রি করেছে। সিঙ্গাপুরের বিক্রির পরিমাণ ছিল ১০ টন।
সম্প্রতি প্রকাশিত ‘সেন্ট্রাল ব্যাংক গোল্ড রিজার্ভ সার্ভে ২০২৫’-এ দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারী কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের ৪৩ শতাংশ জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে সোনা মজুত বৃদ্ধি করা হবে। এ ছাড়া ৯৫ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, আগামী ১২ মাসে সারা বিশ্বে সরকারি পর্যায়ে সোনা মজুত বাড়বে। অর্থনৈতিক সংকট ও মূল্যস্ফীতির সময়ে বিকল্প সম্পদ ও ঝুঁকি প্রতিরোধী হিসেবে সোনার কার্যকারিতা—এই সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলেছে বলে তাঁরা উল্লেখ করেন।
এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে ‘অফিশিয়াল মনিটারি অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস ফোরামের গ্লোবাল পাবলিক ইনভেস্টর ২০২৫ প্রতিবেদনে। ৩২ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, আগামী ১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে তারা সোনা মজুদ বাড়াতে চায়।
অর্থনীতি
আলোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাড়তি শুল্ক কার্যকর নয়, আশ্বাস যুক্তরাষ্ট্রের

বেশ কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের শুল্ক চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়নি। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্ক যাতে আরোপ না হয়, তার জন্য সম্ভাব্য এ চুক্তির বিষয়ে দর-কষাকষি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে সবকিছু চূড়ান্ত করে চুক্তি করা না গেলেও ঢাকার ওপর বাড়তি শুল্ক কার্যকর না করার আশ্বাস দিয়েছে ওয়াশিংটন। গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এ আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। সব দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ওপর তিন মাসের স্থগিতাদেশ শেষ হচ্ছে ৯ জুলাই।
ইউএসটিআরের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দীন, প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানসহ ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
গত ২ এপ্রিল বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বিভিন্ন দেশের ওপর ‘পাল্টা শুল্ক’ আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ঘোষণা করা হয় ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট। যদিও সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক কার্যকর করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শুল্ক ইস্যুতে চুক্তির খসড়া নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য করে বাজেটে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে ইউএসটিআরের সঙ্গে বৈঠক হয়। বৈঠকে চুক্তির খসড়া নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তবে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে, উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বাড়তি শুল্ক কার্যকর করা হবে না। এ ছাড়া বৈঠকে ইউএসটিআর আশ্বাস দিয়েছে যে, ছাড় পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিযোগীদের চেয়ে পিছিয়ে থাকবে না বাংলাদেশ।
বৈঠকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে কোন কোন পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায়, তার একটি তালিকা চেয়েছে। সূত্র জানায়, তালিকা হাতে পেলে সেটি সরকারের অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে চূড়ান্ত করবে বাংলাদেশ এবং তারপর যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাবে।
অর্থনীতি
রিটার্ন জমায় পাঁচ খাতে মিলবে করছাড়

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম দিন অর্থ্যাৎ ১ জুলাই থেকে বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেওয়া যাচ্ছে। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন দেওয়া যাবে। এবার করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি। তবে এবার রিটার্ন দেওয়ার সময় বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। কেননা রিটার্ন জমার সময় করের হিসাবের ক্ষেত্রে বাজেটে অনেকগুলো পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আপন ভাইবোন দান করলে কর নেই
আপন ভাইবোনের দানকে করমুক্ত হিসেবে এবার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রিটার্ন নথিতে ভাইবোনের দান করা অর্থ বা সম্পদ করমুক্ত থাকবে। এ উদ্যোগের ফলে পারিবারিক জমি, ফ্ল্যাটসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর আরও সহজ হবে। এমনকি বিদেশে থাকা ভাইবোনের অর্থ পাঠালেও তা করমুক্ত থাকবে। এত দিন শুধু স্বামী-স্ত্রী, মা-বাবা ও সন্তানেরা দান করলেই করমুক্ত থাকত।
কৃষি খাতের আয় পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত
শহরের মানুষও জমিজমা কিনে শাকসবজির উৎপাদন করেন। অনেকে জমি লিজ নিয়ে কৃষিকাজ করেন। বাণিজ্যিক কৃষিকে উৎসাহিত করতে কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। কোনো করদাতার কৃষি থেকে আয় পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত রাখা হয়েছে।
বেসরকারি চাকরিজীবীর আয় গণনায় বাড়তি সুবিধা
বেসরকারি চাকরিজীবীদের করযোগ্য আয় গণনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বাদযোগ্য অঙ্কের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। নানা ধরনের ভাতাসহ এত দিন সাড়ে চার লাখ টাকা পর্যন্ত আয় বাদ দেওয়া যেত। এটি এখন থেকে পাঁচ লাখ টাকা হবে।
পেনশনের আয় করমুক্ত
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের আয় ও জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সর্বজনীন পেনশন স্কিম থেকে প্রাপ্ত সুবিধাভোগীর কোনো আয় করমুক্ত থাকবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় এখন প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহক আছেন।
চাকরিজীবীদের মরণব্যাধির চিকিৎসার খরচ করমুক্ত
চাকরিজীবী করদাতাদের মরণব্যাধির চিকিৎসা খরচকে করমুক্ত রাখা হয়েছে। চাকরিরত কর্মচারীদের জন্য কিডনি, লিভার, ক্যানসার, হার্টের চিকিৎসার পাশাপাশি মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার ও কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনসংক্রান্ত চিকিৎসা বাবদ প্রাপ্ত অর্থ করমুক্ত থাকবে। এসব চিকিৎসায় বিপুল অর্থ খরচ হয়।
অর্থনীতি
হালাল পণ্যের বাজার বিকাশে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে: শিল্প সচিব

শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) হালাল পণ্যের বাজার বিকাশে সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।
শনিবার (৫ জুলাই) বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) আয়োজিত “হালাল পণ্যের বাজার, হালাল পণ্য উৎপাদনে অনুসরণীয় পদ্ধতি এবং হালাল সার্টিফিকেট সংগ্রহ পদ্ধতি” বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এ কথা বলেন। বিসিআই বোর্ডরুমে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
বিসিআই এর সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন (বিসিসি) এর সাবেক পরিচালক মো. খালেদ আবু নাছের, হালাল সার্টিফিকেশন, বিএসটিআই এর উপ-পরিচালক (সিএম) এস এম আবু সাঈদ, এবং বিএসটিআইয়ের সিএম উইং সহকারী পরিচালক (সিএম) মোছা. রেবেকা সুলতানা। কর্মশালাটি পরিচালনা করেন বিসিআই এর সেক্রেটারি জেনারেল ড. মো. হেলাল উদ্দিন। এতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সেক্টরের ২২ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, হালাল পণ্যের বাজার বিশ্বব্যাপী দ্রুত বর্ধনশীল একটি খাত। শুধু মুসলিম নয়, অমুসলিম ভোক্তারাও স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তার কারণে হালাল পণ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এটি শুধু খাদ্য নয়, বরং প্রসাধনী, ওষুধ, পোশাক, পর্যটনসহ বহু খাতে বিস্তৃত। বিশ্বে বৃহত্তম হালাল ভোক্তা দেশগুলো হলো ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, পাকিস্তান, তুরস্ক। ইউরোপেও এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। হালাল পণ্যের বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড।
তিনি আরও বলেন, মুসলিম প্রধান বাংলাদেশের হালাল পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ এই বাজারে বিশাল সম্ভাবনা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শুধুমাত্র পরিকল্পিত উদ্যোগ, মানসম্পন্ন উৎপাদন ও সঠিক বিপণনের মাধ্যমে আমরা এই বিশ্ববাজারে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নিতে পারি। হালাল পণ্য হতে পারে বাংলাদেশের পরবর্তী রপ্তানিযোগ্য সোনালী খাত।
সভাপতির বক্তব্যে আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, বিসিআই নিয়মিতভাবে দেশের শিল্পায়ন, বৈদেশিক বাণিজ্য এবং অন্যান্য শিল্প ও ব্যবসা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ আইন ও নীতিমালা বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন/প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করে আসছে, আর তারই ধারাবাহিকতায় হালাল পণ্য নিয়ে আজকের এই কর্মশালা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে হালাল পণ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখন আর হালাল পণ্য খাদ্য পণ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; আমাদের নিত্য ব্যবহার্য সব পণ্য হালাল হতে পারে যেমন, পোশাক, কলম, চশমা ইত্যাদি।
তিনি উল্লেখ করেন, হালাল পণ্যের চাহিদা বিশ্বে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেখানে তৈরি পোশাকের বিশ্ব বাজার ১.৮ ট্রিলিয়ন ডলার, সেখানে হালাল পণ্যের বাজার ৩.৩ ট্রিলিয়ন ডলার, যা প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ হালাল পণ্য রপ্তানি করছে মাত্র ৮৪৩.০৩ মিলিয়ন ডলার, যার বেশিরভাগই কৃষিভিত্তিক পণ্য। তিনি বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের একটা বড় সম্ভাবনা রয়েছে হালাল পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে, আমাদের সেটা কাজে লাগানোর জন্য সকলে মিলে কাজ করতে হবে।”
অর্থনীতি
সঞ্চয়পত্রের মুনাফা বাড়ালে কেউ ব্যাংকে টাকা রাখবে না: অর্থ উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা হার বাড়িয়ে দিলে সবাই সঞ্চয়পত্র কিনবে, ব্যাংকে টাকা রাখবে না। ব্যাংকেও তো তারল্যের ব্যাপার আছে। ব্যালেন্স করে দেখতে হবে। সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে দিলে ব্যাংক কোত্থেকে টাকা পাবে?
শনিবার (৫ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, খারাপ ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। ইসলামী ব্যাংক এর একটি উদাহরণ। এ ব্যাংকে আস্থা ফিরে আসছে। অন্য ব্যাংকগুলোর জন্য ব্যাংক রেজুলেশন অ্যাক্ট করা হয়েছে। এটার প্রথম শর্ত হলো যারা ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছে, তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। কারও টাকা মার যাবে না। একটু সময় লাগতে পারবে না। কারণ টাকা নিয়ে চলে গেছে অনেকে। পৃথিবীর কোনো দেশে এরকম ঘটনা ঘটেনি।
এনবিআরে চলমান অস্থিরতা প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সমস্যা সমাধানে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে যা যা করা লাগবে আমরা করবো। পাঁচ সদস্যের একটি শক্তিশালী কমিটিও করে দেওয়া হয়েছে।
এসময় উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব চৌধুরী, নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিয়াস বসাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কাফি