পুঁজিবাজার
সামিট গ্রুপের আজিজ খানের ঘনিষ্ঠ বিএসইসি চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ

দেশের অর্থনৈতিক খাতে লুটপাট এবং অর্থপাচারের সঙ্গে অভিযুক্ত সামিট গ্রুপের আজিজ খানের সঙ্গে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের ঘনিষ্ঠতার সত্যতা মিলেছে। একই সঙ্গে আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ছবিতে তাদের একত্রে দেখা গেছে। ছবিতে সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান ছাড়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান এবং সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুও রয়েছেন। এদের প্রত্যেকের নামে লুটপাট, দুর্নীতি, অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে। একইসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতা হত্যার দায়ে মামলা রয়েছে। এছাড়া আরেক ছবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিনে ‘মুজিব শতবর্ষ’ পালনেও দেখা যায় রাশেদ মাকসুদকে।
সূত্র বলছে, আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী-এমপি, লুটপাটে বিতর্কিত অংশীজনদের সঙ্গে আগে থেকেই ঘনিষ্ঠ ছিলেন রাশেদ মাকসুদ। তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকায় বিএসইসির নীতিমালায় তাদের অনুকূলে সিদ্ধান্ত আসার সম্ভবনা রয়েছে। এতে ঝুঁকির মুখে পড়বে সাধারণ বিনিয়োগকারী। এছাড়া বিএসইসির দায়িত্ব নেওয়ার আগে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ সামলানো রাশেদ মাকসুদের দুই ব্যাংকই ছিলো আওয়ামী লীগ নেতাদের।
জানা যায়, বিএসইসি নতুন চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ সর্বশেষ বেসরকারি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছিলেন। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যেখানকার চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠাভাজন হিসেবে পরিচিত এবং ব্যবসায়ীদের বড় সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ। গোপালগঞ্জের এ চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যানও ছিলেন। একই সাথে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাই দাবি করতেন নিজেকে। দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ কুক্ষিগত করে রেখেছিলেন।
এর আগে ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বেসরকারি এনআরবিসি ব্যাংকের এমডি ছিলেন খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। যার চেয়ারম্যান ছিলেন শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এসএম পারভেজ তমাল। নিজেকে রাশিয়ান অলিগার্ক পরিচয় দেওয়া পারভেজ তমাল রাশিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ছিলেন। নিজের নাম আর পদবী ব্যবহার করে দেশ ছেড়ে পালানো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন নেতাদের সহায়তায় ঋণ জালিয়াতি, কমিশন বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, শেয়ার কারসাজি, মানিলন্ডারিং, বিদেশে অর্থপাচার, গ্রাহকের কোম্পানি দখলসহ বিবিধ আর্থিক দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে।
তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকার সুর করে আচরণের ভোল পাল্টেছেন তিনি। এনআরবিসি ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা তৎকালীন কোটা সংস্কার আন্দোলনে শামিল হলে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিয়ে সতর্ক করেছিলেন। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত কোন পোস্ট শেয়ার ও মন্তব্য করলে, তাকে প্রশাসনিক হয়রানির হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। অথচ তৎকালীন সরকার পতনের পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিয়ে অতীত অপকর্মের ইতি টানতে মরিয়া পারভেজ তমাল।
পুঁজিবাজারের টানা দরপতনের প্রতিবাদে গত কয়েকদিন আন্দোলন করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। একইসঙ্গে বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ এবং তাকে আওয়ামী সরকারের দোসর হিসেবে অভিহিত করছেন। তার প্রমাণ হিসেবে ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী সরকারের একাধিক বির্তকিত সদস্যের সঙ্গে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের ছবি ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে থাকা সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান, শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান এবং সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুও লুটপাট, দুর্নীতি, অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
সূত্র জানায়, আজিজ খান বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে অর্জিত প্রায় সব টাকা পাচার করেছেন সিঙ্গাপুরে। সম্প্রতি এমনই একটি তথ্য উঠে এসেছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) দপ্তর থেকে। মাত্র দুই মাস আগেই বিটিআরসি থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল সামিট কমিউনিকেশনস কোনো ফি ছাড়াই তার শেয়ার হস্তান্তর করতে পারবে। তবে আকস্মিকভাবেই সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সংস্থাটি। অভিযোগ উঠেছে, সামিট কমিউনিকেশন নতুন শেয়ার ইস্যুর আড়ালে শেয়ার হস্তান্তর ও বিক্রি করছিল।
সামিট কমিউনিকেশন ২০০৯ সালে আত্মপ্রকাশের পর টেলিকম ও ইন্টারনেট সেক্টরের বৃহত্তম কোম্পানিতে পরিণত হয়। প্রতিষ্ঠানটি মার্চের শেষের দিকে আবুধাবি ও মরিশাসভিত্তিক দুটি পৃথক কোম্পানির কাছে ১৭০ কোটি ৫ লাখ টাকা মূল্যের নতুন শেয়ার ইস্যু করার জন্য বিটিআরসির অনুমোদন চায়। আবেদন অনুসারে প্রতিটি ১২ টাকা দরে মোট ১৪ দশমিক ২০ কোটি নতুন শেয়ার ইস্যু করা হবে। এর এক মাস পর এটির প্রাক-অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরের মাসেই সরকারি অনুমোদন আসে।
এরপর চলতি বছরের ১২ জুন বিটিআরসি কোম্পানিটিকে কোনো চার্জ ছাড়াই শেয়ার ট্রান্সফারের অনুমতি দেয়। সরকারি অনুমোদনের জন্য পাঠানোর আগে বিটিআরসি আইন সংস্থার আইনি মতামত চেয়েছিল, যেখানে বলা হয়েছিল- যেহেতু সামিট কেবল মাত্র নতুন শেয়ার ইস্যু করছে, তাই মোট শেয়ার বিক্রিয় মূল্যের ওপর ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ফি প্রদানের যে নিয়ম রয়েছে তা সামিট কমিউনিকেশনের জন্য প্রযোজ্য হবে না। এ ক্ষেত্রে সামিটও একই কথা উল্লেখ করে ‘এই ফি প্রযোজ্য নয়, কারণ কোম্পানিটি নতুন শেয়ার ইস্যু করে তার মূলধন বাড়াচ্ছে।’
এছাড়া রাশেদ মাকসুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুও আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে বিদ্যুৎ খাতে লুটপাটের মহোৎসব চালিয়েছেন। সূত্র বলছে, বিদ্যুৎ খাতে অপকর্মের নেপথ্যে ছিল একটি মাফিয়া সিন্ডিকেট। এক যুগ ধরে এর (সিন্ডিকেট) নেতৃত্ব দিয়েছেন খোদ সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসে সব অপকর্মকে নির্বিঘ্ন করতে যারা কলকাঠি নাড়তেন, তারা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সাবেক মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ ও আহমেদ কায়কাউস। একটি দৈনিক পত্রিকার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এতে বলা হয়, একটি বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নেওয়া থেকে শুরু করে অনুমোদন পর্যন্ত কমপক্ষে ২০টি ধাপে ওই সিন্ডিকেটকে টাকা দিতে হতো। এর মধ্যে ছিল প্ল্যানিং, সাইট ভিজিট, মেশিনপত্র অনুমোদন দেওয়া, নেগোসিয়েশন, প্রকল্পের সাইট সিলেকশন, মাটি ভরাট, জমি ক্রয়, বিদ্যুৎ ক্রয়ের দরদাম ঠিক করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা বা কমিশনিং, মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পাঠানো, ক্রয় অনুমোদন, বিল অনুমোদন, বিল ছাড় করা-অর্থাৎ প্রতিটি খাতে এ সিন্ডকেটকে টাকা দিতে হতো।
এছাড়া পিডিবি চেয়ারম্যান কিংবা মন্ত্রী স্বাক্ষর করলে সেই স্বাক্ষরের পাশে সিল দেওয়ার জন্যও ঘুস দিতে হতো। পাশাপাশি বিদ্যুৎ খাতের বিভিন্ন কোম্পানির নানা কেনাকাটা এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন পারচেজসহ লোভনীয় কমিটিতে পছন্দের কর্মকর্তাদের রাখা, পদোন্নতি, পোস্টিং দিয়েও এ চক্র হাতিয়ে নিত কোটি কোটি টাকা। বিভিন্ন কোম্পানির পরিচালনা পর্যদে যাওয়ার জন্যও এ সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিত মোটা অঙ্কের টাকা। এছাড়া প্রকল্পের বিরুদ্ধে নিজস্ব লোকদের দিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় রিপোর্ট করিয়ে প্রকল্পের পিডি বা কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তাদের ব্ল্যাকমেইল করে তাদের কাছ থেকে টাকা নিতেন সিন্ডিকেট সদস্যরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য ছিলেন পিডিবির বর্তমান চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানসহ সাবেক দুই চেয়ারম্যান ও একাধিক প্রধান প্রকৌশলী, সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন, প্রতিমন্ত্রীর ছোট ভাই ইন্তেখাবুল হামিদ অপু এবং সাবেক সেতুমন্ত্রীর এক ভাতিজা। আর সিন্ডিকেটের অবৈধ আয়ের হিসাবনিকাশের দায়িত্বে ছিলেন প্রতিমন্ত্রীর এপিএস মুজাহিদুল ইসলাম মামুন, কেরানীগঞ্জের প্রভাবশালী শাহীন চেয়ারম্যান এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর আসলাম।
জানা যায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নতুন প্রজন্মের নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী ছিলেন সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। আওয়ামী লীগের দলীয় থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর রিসার্চ ইনফরমেশন বা সিআরআই-এর পৃষ্ঠপোষকও ছিলেন। শেখ হাসিনার জীবনের ওপর নির্মিত “হাসিনা : এ ডটার’স টেল” তথ্যচিত্রটির একজন প্রযোজকও ছিলেন বিপু।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমানের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা ছিল বিএসইসি চেয়ারম্যানের। দেশের আর্থিক খাতে লুটপাট, দুর্নীতি, অর্থপাচারের নেতৃত্ব দেওয়া এসব বিতর্কিত মানুষের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি কীভাবে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান হন- এমন প্রশ্ন তুলছেন বিনিয়োগকারীরা।
এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যানের খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজার ভীষণভাবে পঙ্গু হয়ে আছে: ডিএসই চেয়ারম্যান

পুঁজিবাজারকে বলা হয় মুক্তবাজার অর্থনীতির সর্বোত্তম সৃষ্টি। অমাদের দেশে দূর্ভাগ্যজনকভাবে বিগত বছরের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি বা যে নীতি সেটার কারনে আমাদের পুঁজিবাজার ভীষণভাবে সংকুচিত এবং পঙ্গু হয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম।
সোমবার (১৪ জুলাই) ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথির আলোচনায় এসব কথা বলেন ডিএসই চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে রেগুলেশনকে এত কঠোর করা হয় যে, ভালো কোম্পানি যারা তাদের জন্য কস্ট অব কমপ্লায়েন্স খুব এক্সটেন্সিভ হয়। তারা সাধারণত এই রেগুলেশনের মধ্যে আসতে চায় না। মার্কেটের প্লেয়াররা ভালভাবে তাদের কাজ করতে পারে না।
পুঁজিবাজারকে অবশ্যই মার্কেটের ওপরে ছেড়ে দিতে হবে উল্লেখ করে ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, এখানে মার্কেটের যারা অংশীজন আছে তাদের অংশগ্রহণেই যদি কোন ইনইফিসিয়েন্সি থাকে সেটাকে দূর করতে হবে। রেগুলেটর এখানে এসে প্রভাবিত করতে পারে না। যখন রেফারি হিসেবে ডিএসইকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে তখন তাকে রেফারির ভূমিকা পালন করতে দিতে হবে। তাদেরকে বলা যাবে না যে এই সময়ে তুমি বাঁশি বাজাও আর এই সময়ে বাজাবে না। আমরা আশা করছি এই জায়গাটাতে পরিবর্তন আসবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ও অভিযোগ ছিল যে আমরা শীর্ষস্থানীয় পদগুলোতে নিয়োগ দিতে পারছি না। এটা মার্কেটের উপরে একটা অবিশ্বাস তৈরি করেছে। এ মাসের প্রথমে নতুন চিফ অপারেটিং অফিসার এবং চিফ টেকনোলজি অফিসার জয়েন করেছেন। আমরা আশা করছি শীঘ্রই আমাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং চিফ রিস্ক অফিসার জয়েন করে যাবেন। আমরা অন্যান্য জায়গা শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছি।
মমিনুল ইসলাম বলেন, ভবিষ্যতে তালিকাভুক্তির কাজ স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে আসবে। সামগ্রিকভাব আমরা কিভাবে ব্যবস্থাপনা দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতেও কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, আইপিও ডিজিটালাইজেশনের কাজ করছি। আমরা কথা দিচ্ছি আগামী এক বছরের মধ্যে ১০টি আইপিও আমরা চাচ্ছি। আমরা বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে ২ মাসের মধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পাদন করব। এই মুহূর্তে যা ২ বছরের মতো লেগে যায়।
পুঁজিবাজার
শেয়ারবাজারে দুষ্টচক্র সক্রিয় রয়েছে: আমীর খসরু

দেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে একটি দুষ্টচক্র সক্রিয় রয়েছে, যা বাজারের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের একটি ‘ভালোর চক্র’ বা ভার্চ্যুয়াস সাইকেল গড়ে তুলতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে পুঁজিবাজার বিষয়ক এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি। কর্মশালাটি আয়োজন করে ইআরএফ ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রোকারেজ হাউস মালিকদের সংগঠন ডিবিএ।
আমীর খসরু বলেন, শেয়ারবাজারে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণের কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। পাশাপাশি তাদের দক্ষতার ঘাটতিও রয়েছে। এই দুর্বলতা শুধু শেয়ারবাজার নয়, গোটা আর্থিক খাতকেই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে।
তিনি অর্থনৈতিক খাতকে গণতান্ত্রিক করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, রাজনৈতিক গণতন্ত্রের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও গণতন্ত্রায়ণ প্রয়োজন, নইলে জনগণের অংশগ্রহণ এবং আস্থা অর্জন সম্ভব নয়।
তিনি দাবি করেন, বিএনপির শাসনামলে শেয়ারবাজার বা আর্থিক খাতে কোনো বড় ধরনের স্ক্যান্ডালের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু বিগত সরকারগুলোর সময়ে অর্থনৈতিক খাত ধ্বংসের মুখে পড়েছে। ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসিতে রাজনৈতিক নিয়োগ দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী থাকার সময় তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল আমদানির অনুমোদন প্রক্রিয়া ইপিবি থেকে সরিয়ে বিজিএমইএর হাতে তুলে দেন, যার ফলে ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া অনেক সহজ হয়। একইভাবে ভবিষ্যতে সরকারি অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বেসরকারি খাতের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানান।
সবশেষে আমীর খসরু বলেন, বিএনপি সরকারে এলে পুঁজিবাজারকে ধারণ করেই উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করবে, কারণ সত্যিকারের উন্নয়ন জনগণের অংশগ্রহণ ও আস্থার মাধ্যমে সম্ভব।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান, ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম, ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান, পুঁজিবাজার প্রতিবেদকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মানিক মুনতাসির।
ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, শেয়ারবাজারকে জাতীয় অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং নিয়ন্ত্রণ কাঠামোকে আরও বাজারমুখী করতে হবে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান বলেন, বাজারে নতুন এবং ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। গত ৯ মাসে মাত্র একটি কোম্পানি বাজারে এসেছে, যা বাজারের জন্য উদ্বেগজনক।
পুঁজিবাজার
ব্লকে ১৫ কোটি টাকার লেনদেন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লকে মোট ২৭টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ৪৬ লাখ ৮৭ হাজার ৮৬৪টি শেয়ার ৬৪ বারে লেনদেন হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ১৫ কোটি ৮৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সোমবার (১৪ জুলাই) ব্লকে সবচেয়ে বেশি ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফাইন ফুডসের ২ কোটি ৬১ লাখ টাকার ও তৃতীয় স্থানে থাকা রেনাটার ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এসএম
পুঁজিবাজার
মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই আরামিট পিএলসির

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আরামিট পিএলসির শেয়ারদর অস্বাভাবিক বাড়ার পেছনে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। সম্প্রতি কোম্পানিটির শেয়ার দর অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে ডিএসই’র পাঠানো নোটিশের জবাবে এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, গত ০৭ জুলাই কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ১৫৮ টাকা ৭০ পয়সা। আর আজ ১৪ জুলাই বাজার শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দর ২০৮ টাকা ২০ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ ৫ কার্যদিবসে শেয়ারটির দর বেড়েছে ৪৯ টাকা ৫০ পয়সা।
এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ।
এসএম
পুঁজিবাজার
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানিটির ক্রেডিট রেটিং নির্ণয় করেছে ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (সিআরআইএসএল)। কোম্পানিটির দীর্ঘমেয়াদী ‘এএ-’ এবং স্বল্প মেয়াদি ‘এসটি-২’ রেটিং হয়েছে।
কোম্পানিটির ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক পরিমাণগত ও গুণগত তথ্য অনুযায়ী এ রেটিং নির্ণয় করা হয়েছে।
এসএম