আন্তর্জাতিক
ফোর্বসের শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকায় ৮ জনই প্রযুক্তি খাতের

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী শীর্ষ ৪০০ ধনীর তালিকা প্রকাশ করেছে মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস। তালিকায় থাকা শীর্ষ ১০ ধনীর মধ্যে ৮ জনই প্রযুক্তি খাতের। ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, শীর্ষ ২৫ ধনীর মোট সম্পদের মূল্য প্রায় আড়াই লাখ কোটি বা ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা তালিকায় থাকা ৪০০ ধনীর মোট সম্পদের প্রায় অর্ধেক। শুধু তা–ই নয়, শীর্ষ ২৫ ধনীর প্রত্যেকেরই সম্পদ গত বছরের তুলনায় এ বছর গড়ে ৩১ শতাংশ বেড়েছে।
শীর্ষ তালিকায় প্রযুক্তি উদ্যোক্তারা
ফোর্বস–এর তালিকার প্রথমেই আছেন এক্স, টেসলা, স্পেসএক্সসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের মালিক ইলন মাস্ক। ৫৩ বছর বয়সী ইলন মাস্কের মোট সম্পদের পরিমাণ ২৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর তাই ফোর্বস ইলন মাস্ককে টেকনোকিং বা প্রযুক্তি–রাজা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। সম্প্রতি টেসলার বাজার কিছুটা পড়ে যাওয়ার কারণে শেয়ারের দাম ১৪ শতাংশ কমে যাওয়ায় প্রায় ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খুইয়েছেন ইলন মাস্ক। তারপরও ফোর্বসের তালিকায় অন্যদের তুলনায় সম্পদের দিক থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছেন তিনি।
১৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। ৬০ বছর বয়সী জেফ বেজোস অ্যামাজন ছাড়াও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান লেভিয়াথানের ৯ শতাংশের মালিক। লেভিয়াথানের শেয়ারের দাম ২৯ শতাংশ বাড়ায় জেফের সম্পদের পরিমাণও বেড়েছে। জেফ বেজোস বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আর মহাকাশ পর্যটন নিয়ে কাজ করছেন।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। ৪০ বছর বয়সী এই ধনীর সম্পদের পরিমাণ ১৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত এক বছরে তাঁর সম্পদ বেড়েছে ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জাকারবার্গের সব প্রতিষ্ঠানের আয়ের পরিমাণ প্রতি ৩ মাস পরপর ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে।
ওরাকলের প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন আছেন চতুর্থ অবস্থানে। শীর্ষ ধনীর তালিকায় সবচেয়ে বেশি বয়সী তিনি। ৮০ বছরের ল্যারির মোট সম্পদের মূল্য ১৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ওরাকলের ৪০ ভাগ শেয়ারের মালিক ল্যারি। এ বছর ওরাকলের শেয়ারের দাম বেড়েছে ১২ শতাংশ। আর তাই ল্যারিরও সম্পদ বেড়েছে।
তালিকার ষষ্ঠ অবস্থানে আছেন গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ৫১ বছর বয়সী ল্যারি পেজ। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সপ্তম অবস্থানে আছেন গুগলেরই আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন। ১৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্পদের মালিক ৫১ বছর বয়সী সের্গেই। গত জুলাই মাসে গুগলের শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছিল। শেয়ারের দাম বাড়ার কারণে সের্গেই ও ল্যারির সম্পদ বেড়েছে।
শীর্ষ ধনীর তালিকার অষ্টম অবস্থানে আছেন মাইক্রোসফটের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিভ বলমার। ৬৮ বছর বয়সী স্টিভের সম্পদের পরিমাণ ১২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৪ বছর মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করার পর ২০১৪ সালে অবসরে যান তিনি।
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস আছেন তালিকার নবম অবস্থানে। তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ৬৮ বছর বয়সী বিল গেটস মাইক্রোসফটের দায়িত্ব ছাড়লেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), চিকিৎসাসহ বিভিন্ন গবেষণা বিষয়ে কাজ করছেন।
তালিকায় ১১তম স্থানে আছেন হাল আমলের আলোচিত প্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব জেনসেন হুয়াং। সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের আলোচিত মুখ হুয়াংয়ের মোট সম্পদের পরিমাণ ১০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি প্রসেসর নির্মাতা এনভিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা। এনভিডিয়ার শেয়ার গত বছরের তুলনায় ১৬২ শতাংশ বাড়ায় তাঁর সম্পদ গত বছরের তুলনায় ৬৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেড়েছে। ১৯৯৩ সালে তিনি এনভিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। সাম্প্রতিক সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির জন্য এনভিডিয়ার তৈরি প্রসেসরের চাহিদা বেড়েছে।
ডেল টেকনোলজিসের প্রতিষ্ঠাতা ৫৯ বছর বয়সী মাইকেল ডেল রয়েছেন তালিকার ১২তম স্থানে। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১০১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বছর ডেল টেকনোলজিসের শেয়ারের দাম বাড়ায় তাঁর সম্পদ গত বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
কনিষ্ঠ ধনী যাঁরা
ফোর্বসের ৪০০ জনের তালিকায় ২৬ জন আছেন, যাঁদের বয়স ৫০ বছরের কম। দুজনের বয়স ৩০–এর ঘরে। ১০ জন ধনীর গড় বয়স ৪২ বছর বা তার কম। শীর্ষ ১০ কনিষ্ঠ ধনীর মোট সম্পদের পরিমাণ ১৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ তালিকায় বেশ কয়েকজন আছেন প্রযুক্তি খাতের।
কনিষ্ঠ ধনীদের তালিকায় তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে আছেন ফেসবুকের দুই সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ও ডাস্টিন মস্কোভিৎজ। ৪০ বছর বয়সী মার্ককে সারা পৃথিবী চিনলেও প্রযুক্তি খাতে কিছুটা অপরিচিত ৪০ বছর বয়সী ডাস্টিন। জাকারবার্গের সম্পদের পরিমাণ ১৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আর ডাস্টিনের ১৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মেটাতে ডাস্টিন মস্কোভিৎজের অংশীদারত্ব আছে। এ ছাড়া আসানা নামের একটি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে তাঁর।
তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছেন এয়ারবিএনবির সহপ্রতিষ্ঠাতা ৪১ বছর বয়সী নাথান ব্লেচারজিক। তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ কয়েন বেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রায়ান আর্মস্ট্রং আছেন তালিকার ষষ্ঠ স্থানে। ৪১ বছর বয়সী ব্রায়ান আর্মস্ট্রংয়ের মোট সম্পদের পরিমাণ ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কয়েন বেজের শেয়ার গত বছরের চেয়ে ১২৩ শতাংশ বাড়ায় এ বছর সম্পদ বেড়েছে ব্রায়ান আর্মস্ট্রংয়ের।
তালিকার ১০ নম্বরে আছেন ই–কমার্স উদ্যোক্তা আর্নেস্ট গার্সিয়া। ৪২ বছর বয়স্ক আর্নেস্টের মোট সম্পদের মূল্য ৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর্নেস্ট গার্সিয়া ২০১২ সালে ই–কমার্স প্ল্যাটফর্ম কারভানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাবার সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়ে আর্নেস্ট গাড়ি কেনাবেচার ই–কমার্স চালু করেন। ২০১৭ সালে শেয়ারবাজার থেকে কারভানা ২২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছিল।
প্রথমবারের মতো তালিকায় যাঁরা
তালিকায় ৪০০ জনের মধ্যে নতুন সদস্য হিসেবে ২ জন প্রযুক্তি উদ্যোক্তার নাম রয়েছে। ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্পদ নিয়ে তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন আলেকজান্ডার কার্প। তিনি ডেটা মাইনিং প্রতিষ্ঠান প্যালান্টির টেকনোলজিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী কর্মকর্তা। গত ১২ মাসে তাঁর প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ১৭০ শতাংশ।
এনভিডিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম ব্যক্তিগত শেয়ারের মালিক ৬৬ বছর বয়সী টেঞ্চ কোক্সি। এনভিডিয়ার শেয়ার গত বছরের তুলনায় ১৬২ শতাংশ বাড়ায় তাঁর সম্পদও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। আর তাই ৫ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্পদ নিয়ে ফোর্বসের তালিকায় প্রথমবারের মতো নাম লিখিয়েছেন তিনি। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানও রয়েছে টেঞ্চ কোক্সির। সূত্র: ফোর্বস
কাফি

আন্তর্জাতিক
ভারতে বাংলাদেশের ইলিশ নিয়ে কাড়াকাড়ি

এ বছর বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশের প্রথম চালান পৌঁছানোর পর কলকাতার বাজারে তা নিয়ে রীতিমতো কাড়াকাড়ি শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই উচ্চমূল্য সত্ত্বেও ক্রেতারা সব ইলিশ লুফে নিয়েছেন। তবে সামনে আরও চালান আসার সম্ভাবনায় দাম কমার আশা করছেন তারা।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতার জনপ্রিয় বাজারগুলোতে প্রায় ১ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ২ হাজার রুপিতে বিক্রি হয়েছে। আর ১.৫ কেজির বেশি ওজনের বড় ইলিশের দাম ছিল ২,৫০০ রুপি প্রতি কেজি। দুর্গাপূজার জন্য অপেক্ষায় থাকা ক্রেতারা এই দামেই বিপুল আগ্রহ নিয়ে ইলিশ কিনেছেন।
কসবার একজন মাছ বিক্রেতা অতুল দাস জানান, কিছু ক্রেতা যেকোনো মূল্যে ইলিশ কিনতে চেয়েছিলেন, যদিও অনেকের কাছে দামটা একটু বেশি মনে হয়েছে। তিনি আশা করছেন, সরবরাহ বাড়লে দাম কিছুটা কমতে পারে।
প্রথম চালানে সীমিত সরবরাহ থাকায় হাওড়ার পাইকারি বাজারেও দাম চড়া ছিল। সেখানে ১ কেজির বেশি ওজনের ইলিশ ১,৫০০ থেকে ১,৮০০ রুপিতে এবং এর চেয়েও বড় ইলিশ ২,০০০ রুপিতে বিক্রি হয়েছে।
এ বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার মোট ৩৭ জন রপ্তানিকারককে ১,২০০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। প্রথম চালানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ১ হাজার ১৯২ কেজি ইলিশ ত্রিপুরায় গেছে, আর বেনাপোল বন্দর দিয়ে গেছে প্রায় ৩৭ টন ৪৬০ কেজি ইলিশ।
প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ ডলার ৫০ সেন্ট, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১,৫২৫ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইলিশ রপ্তানি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও ভালো করবে। তবে সাধারণ ক্রেতাদের আশঙ্কা, এর ফলে বাংলাদেশের বাজারে ইলিশের দাম বেড়ে যেতে পারে।
আন্তর্জাতিক
সাইবার হামলা: ইউরোপজুড়ে শত শত ফ্লাইট বাতিল

ইউরোপের বড় বড় বিমানবন্দরগুলোতে চেক-ইন ও বোর্ডিং পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কলিনস অ্যারোস্পেসের ওয়েব সাইটে সাইবার হামলা হয়েছে। এতে লন্ডনের হিথ্রো, বেলজিয়ামের ব্রাসেলস এবং জার্মানির বার্লিন বিমানবন্দরের বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন্সের শত শত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে কলিন্স অ্যারোস্পেস জানিয়েছে, ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটি’র কারণে সংস্থাটি আপাতত পরিষেবা দিতে পারছে না এবং ত্রুটি সারাতে সময় লাগবে।
প্রসঙ্গত বিশ্বের বেশ কয়েকটি বিমান পরিবহন সংস্থা (এয়ারলাইন্স) এবং বিমানবন্দরে পরিষেবা প্রদান করে কলিন্স অ্যারোস্পেস। ইউরোপভিত্তিক বেশিরভাগ বিমান পরিবহন সংস্থা কলিন্স অ্যারোস্পেসের পরিষেবার গ্রাহক। সাইবার হামলার ফলে বিমানের চেক-ইন ও বোর্ডিং পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এয়ারলাইন্সগুলোও তাদের ফ্লাইট বাতিলে বাধ্য হয়েছে।
লন্ডন, ব্রাসেলস ও বার্লিন বিমানবন্দর ইতোমধ্যে যাত্রীদের ফোন নাম্বারে বার্তা প্রদানের মাধ্যমে ফ্লাইট বাতিলের ব্যাপারটি অবহিত করেছে।
ইউরোপের সব বড় বিমানবন্দর অবশ্য এ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ফ্রাঙ্কফুর্ট, হামবুর্গ ও জুরিখ বিমানবন্দরে বিমান চলাচল স্বাভাবিক আছে।
ব্রাসেলস বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইন্টারনেট পরিষেবা যতক্ষণ পর্যন্ত স্বাভাবিক না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে যাত্রীদের পরিষেবা প্রদান করা হবে।
“এটা একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। যদি শিগগিরই কলিন্স অ্যারোস্পেসের ত্রুটি না সারে, তাহলে প্রতিটি ফ্লাইটের ডিপার্চার সময় ৫৪ মিনিট পিছিয়ে যাবে”, ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইলকে বলেছেন ওই কর্মকর্তা।
সূত্র : ডেইলি মেইল
আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলকে ৬ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েলকে ৬ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের কাছে ৬ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চেষ্টা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই অস্ত্র বিক্রির জন্য কংগ্রেসের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
পরিকল্পিত এই প্যাকেজে রয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর জন্য ৩.৮ বিলিয়ন ডলারের ৩০টি ‘এএইচ-৬৪’ অ্যাপাচি অ্যাটাক হেলিকপ্টার এবং ১.৯ বিলিয়ন ডলারের ৩ হাজার ২৫০টি ইনফ্যান্ট্রি অ্যাসল্ট ভেহিকেল।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাঁজোয়া যান এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আরও ৭৫০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সহায়ক যন্ত্রাংশ এই প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হাউজ ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি এবং সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটির চার শীর্ষ রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট নেতার অনুমোদন চাইছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
গত ৯ সেপ্টেম্বর কাতারে হামাস নেতাদের ওপর ইসরায়েলের হামলার আগে প্রস্তাবিত অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি প্রথমে কংগ্রেসের নেতাদের কাছে পাঠানো হয়। কাতারে ইসরায়েলের ওই হামলার পরেও ট্রাম্প প্রশাসন অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন চাওয়া অব্যাহত রেখেছে বলে জানা গেছে।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ আগ্রাসন এবং সাম্প্রতিক সময়ে কাতারে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দা ও তীব্র সমালোচনার পরেও দখলদার দেশটিতে অস্ত্রসহ নানাভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় ৬৫ হাজার ১৪১ জন নিহত এবং ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯২৫ জন আহত হয়েছে। হতাহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশসহ ৯ দেশের ওপর আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা

বাংলাদেশসহ ৯ দেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে নতুন এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। শ্রমিক, পর্যটক এবং ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক এই নয় দেশের নাগরিকরা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভ্রমণ, কাজ বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক বিদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা একটি অপরিহার্য নথি। যদিও বেশিরভাগ নাগরিক সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর্যটন ভিসা বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাজের ভিসার জন্যই আবেদন করেন।
তবে এবার বেশ কিছু দেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করলো আমিরাত। এই বিধিনিষেধের অর্থ হলো- পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই দেশগুলোর নাগরিকরা শ্রমিক, পর্যটক এবং ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
দেশটির অভিবাসন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলো হলো- আফগানিস্তান, লিবিয়া, ইয়েমেন, সোমালিয়া, লেবানন, বাংলাদেশ, ক্যামেরুন, সুদান এবং উগান্ডা।
কেন এসব দেশের নাগরিকের ওপর ভিসা নিষিদ্ধ করা হয়েছে?
আরব আমিরাত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত কারণ জানায়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এর সম্ভাব্য কারণগুলো হলো-
নিরাপত্তা উদ্বেগ: সন্ত্রাসবাদ বা বেআইনি কার্যকলাপ থেকে আমিরাতের নাগরিকদের সুরক্ষিত রাখা।
ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক: উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েন।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধ: সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও কঠোর প্রবেশ নীতিমালা প্রয়োগ।
এই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক বলে মনে করা হচ্ছে এবং আরব আমিরাতের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য মূল্যায়ণের ওপর নির্ভর করে তা পর্যালোচনা করা হবে। তবে যারা বৈধ ভিসা নিয়ে এরই মধ্যে আমিরাতে বসবাস করছেন, তারা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ছেন না।
সূত্র: ইউএই ভিসা অনলাইন
আন্তর্জাতিক
সুদানে মসজিদে ড্রোন হামলায় নিহত অন্তত ৭৮

সুদানের পশ্চিমাঞ্চলে একটি শহরের একটি মসজিদে ড্রোন হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সুদানের দারফুর অঞ্চলের আল-ফাশের শহরে ওই হামলা চালায় আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ)। তবে গোষ্ঠীটি এখনও নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেনি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেন, শুক্রবার ভোরে প্রার্থনা চলাকালে ওই হামলা চালানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই বছরের বেশি সময় ধরে আরএসএফের সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনী লড়াইয়ে লিপ্ত রয়েছে। আল-ফাশের শহরের দখলে নিতে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে আরএসএফ। এটি দারফুরে সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটি। সেখানকার তিন লাখের বেশি বেসামরিক নাগরিক এই লড়াইয়ের ফাঁদে আটকা পড়েছে।
ইয়েল ইউনিভার্সিটির হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাবের (এইচআরএল) বিশ্লেষণ অনুযায়ী স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, শিবিরটির বড় অংশ এখন আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে।
এদিকে, জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়, সংঘাত ক্রমেই জাতিগত রূপ নিচ্ছে এবং প্রতিপক্ষকে সহযোগিতার অভিযোগে দুপক্ষই সাধারণ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে।
জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সংস্থার নথিতে দেখা গেছে, দখল করা এলাকায় অ-আরব সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূলনীতি চালাচ্ছে আরএসএফ।
সম্প্রতি ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স জানিয়েছে, আল-ফাশেরকে অ-আরব জনগোষ্ঠীমুক্ত করার পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যেই ঘোষণা করেছে গোষ্ঠীটি।
অবশ্য এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে আরএসএফ। তাদের দাবি, কোনো জাতিগত সংঘাতে তারা জড়িত নয়।