আন্তর্জাতিক
ফোর্বসের শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকায় ৮ জনই প্রযুক্তি খাতের
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী শীর্ষ ৪০০ ধনীর তালিকা প্রকাশ করেছে মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস। তালিকায় থাকা শীর্ষ ১০ ধনীর মধ্যে ৮ জনই প্রযুক্তি খাতের। ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, শীর্ষ ২৫ ধনীর মোট সম্পদের মূল্য প্রায় আড়াই লাখ কোটি বা ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা তালিকায় থাকা ৪০০ ধনীর মোট সম্পদের প্রায় অর্ধেক। শুধু তা–ই নয়, শীর্ষ ২৫ ধনীর প্রত্যেকেরই সম্পদ গত বছরের তুলনায় এ বছর গড়ে ৩১ শতাংশ বেড়েছে।
শীর্ষ তালিকায় প্রযুক্তি উদ্যোক্তারা
ফোর্বস–এর তালিকার প্রথমেই আছেন এক্স, টেসলা, স্পেসএক্সসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের মালিক ইলন মাস্ক। ৫৩ বছর বয়সী ইলন মাস্কের মোট সম্পদের পরিমাণ ২৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর তাই ফোর্বস ইলন মাস্ককে টেকনোকিং বা প্রযুক্তি–রাজা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। সম্প্রতি টেসলার বাজার কিছুটা পড়ে যাওয়ার কারণে শেয়ারের দাম ১৪ শতাংশ কমে যাওয়ায় প্রায় ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খুইয়েছেন ইলন মাস্ক। তারপরও ফোর্বসের তালিকায় অন্যদের তুলনায় সম্পদের দিক থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছেন তিনি।
১৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। ৬০ বছর বয়সী জেফ বেজোস অ্যামাজন ছাড়াও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান লেভিয়াথানের ৯ শতাংশের মালিক। লেভিয়াথানের শেয়ারের দাম ২৯ শতাংশ বাড়ায় জেফের সম্পদের পরিমাণও বেড়েছে। জেফ বেজোস বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আর মহাকাশ পর্যটন নিয়ে কাজ করছেন।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। ৪০ বছর বয়সী এই ধনীর সম্পদের পরিমাণ ১৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত এক বছরে তাঁর সম্পদ বেড়েছে ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জাকারবার্গের সব প্রতিষ্ঠানের আয়ের পরিমাণ প্রতি ৩ মাস পরপর ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে।
ওরাকলের প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন আছেন চতুর্থ অবস্থানে। শীর্ষ ধনীর তালিকায় সবচেয়ে বেশি বয়সী তিনি। ৮০ বছরের ল্যারির মোট সম্পদের মূল্য ১৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ওরাকলের ৪০ ভাগ শেয়ারের মালিক ল্যারি। এ বছর ওরাকলের শেয়ারের দাম বেড়েছে ১২ শতাংশ। আর তাই ল্যারিরও সম্পদ বেড়েছে।
তালিকার ষষ্ঠ অবস্থানে আছেন গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ৫১ বছর বয়সী ল্যারি পেজ। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সপ্তম অবস্থানে আছেন গুগলেরই আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন। ১৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্পদের মালিক ৫১ বছর বয়সী সের্গেই। গত জুলাই মাসে গুগলের শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছিল। শেয়ারের দাম বাড়ার কারণে সের্গেই ও ল্যারির সম্পদ বেড়েছে।
শীর্ষ ধনীর তালিকার অষ্টম অবস্থানে আছেন মাইক্রোসফটের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিভ বলমার। ৬৮ বছর বয়সী স্টিভের সম্পদের পরিমাণ ১২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৪ বছর মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করার পর ২০১৪ সালে অবসরে যান তিনি।
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস আছেন তালিকার নবম অবস্থানে। তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ৬৮ বছর বয়সী বিল গেটস মাইক্রোসফটের দায়িত্ব ছাড়লেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), চিকিৎসাসহ বিভিন্ন গবেষণা বিষয়ে কাজ করছেন।
তালিকায় ১১তম স্থানে আছেন হাল আমলের আলোচিত প্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব জেনসেন হুয়াং। সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের আলোচিত মুখ হুয়াংয়ের মোট সম্পদের পরিমাণ ১০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি প্রসেসর নির্মাতা এনভিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা। এনভিডিয়ার শেয়ার গত বছরের তুলনায় ১৬২ শতাংশ বাড়ায় তাঁর সম্পদ গত বছরের তুলনায় ৬৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেড়েছে। ১৯৯৩ সালে তিনি এনভিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। সাম্প্রতিক সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির জন্য এনভিডিয়ার তৈরি প্রসেসরের চাহিদা বেড়েছে।
ডেল টেকনোলজিসের প্রতিষ্ঠাতা ৫৯ বছর বয়সী মাইকেল ডেল রয়েছেন তালিকার ১২তম স্থানে। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১০১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বছর ডেল টেকনোলজিসের শেয়ারের দাম বাড়ায় তাঁর সম্পদ গত বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
কনিষ্ঠ ধনী যাঁরা
ফোর্বসের ৪০০ জনের তালিকায় ২৬ জন আছেন, যাঁদের বয়স ৫০ বছরের কম। দুজনের বয়স ৩০–এর ঘরে। ১০ জন ধনীর গড় বয়স ৪২ বছর বা তার কম। শীর্ষ ১০ কনিষ্ঠ ধনীর মোট সম্পদের পরিমাণ ১৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ তালিকায় বেশ কয়েকজন আছেন প্রযুক্তি খাতের।
কনিষ্ঠ ধনীদের তালিকায় তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে আছেন ফেসবুকের দুই সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ও ডাস্টিন মস্কোভিৎজ। ৪০ বছর বয়সী মার্ককে সারা পৃথিবী চিনলেও প্রযুক্তি খাতে কিছুটা অপরিচিত ৪০ বছর বয়সী ডাস্টিন। জাকারবার্গের সম্পদের পরিমাণ ১৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আর ডাস্টিনের ১৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মেটাতে ডাস্টিন মস্কোভিৎজের অংশীদারত্ব আছে। এ ছাড়া আসানা নামের একটি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে তাঁর।
তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছেন এয়ারবিএনবির সহপ্রতিষ্ঠাতা ৪১ বছর বয়সী নাথান ব্লেচারজিক। তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ কয়েন বেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রায়ান আর্মস্ট্রং আছেন তালিকার ষষ্ঠ স্থানে। ৪১ বছর বয়সী ব্রায়ান আর্মস্ট্রংয়ের মোট সম্পদের পরিমাণ ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কয়েন বেজের শেয়ার গত বছরের চেয়ে ১২৩ শতাংশ বাড়ায় এ বছর সম্পদ বেড়েছে ব্রায়ান আর্মস্ট্রংয়ের।
তালিকার ১০ নম্বরে আছেন ই–কমার্স উদ্যোক্তা আর্নেস্ট গার্সিয়া। ৪২ বছর বয়স্ক আর্নেস্টের মোট সম্পদের মূল্য ৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর্নেস্ট গার্সিয়া ২০১২ সালে ই–কমার্স প্ল্যাটফর্ম কারভানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাবার সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়ে আর্নেস্ট গাড়ি কেনাবেচার ই–কমার্স চালু করেন। ২০১৭ সালে শেয়ারবাজার থেকে কারভানা ২২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছিল।
প্রথমবারের মতো তালিকায় যাঁরা
তালিকায় ৪০০ জনের মধ্যে নতুন সদস্য হিসেবে ২ জন প্রযুক্তি উদ্যোক্তার নাম রয়েছে। ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্পদ নিয়ে তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন আলেকজান্ডার কার্প। তিনি ডেটা মাইনিং প্রতিষ্ঠান প্যালান্টির টেকনোলজিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী কর্মকর্তা। গত ১২ মাসে তাঁর প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ১৭০ শতাংশ।
এনভিডিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম ব্যক্তিগত শেয়ারের মালিক ৬৬ বছর বয়সী টেঞ্চ কোক্সি। এনভিডিয়ার শেয়ার গত বছরের তুলনায় ১৬২ শতাংশ বাড়ায় তাঁর সম্পদও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। আর তাই ৫ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্পদ নিয়ে ফোর্বসের তালিকায় প্রথমবারের মতো নাম লিখিয়েছেন তিনি। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানও রয়েছে টেঞ্চ কোক্সির। সূত্র: ফোর্বস
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিএসএফ বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ করাচ্ছে: মমতা
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গকে অশান্ত করতে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ করাচ্ছে বিএসএফ এবং সেটি করানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের মদদে।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাজ্যের প্রশাসনিক বৈঠকে বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে আলোচনা উঠলে মমতা এমন দাবি করেন।
বৈঠকে রাজ্যের পুলিশকে নিয়েও কড়া কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজ্য পুলিশের একাংশ বিএসএফের সঙ্গে ‘অ্যাডজাস্ট’ করে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের বাংলায় ঢোকাচ্ছে। আমি জানি আপনারা (পুলিশ) ঢোকাচ্ছেন না, ঢোকাচ্ছে বিএসএফ। আমাদের কাছে খবর আছে, বিএসএফ মালদার ইসলামপুর, সীতাই, চোপড়া দিয়ে লোক ঢোকাচ্ছে, আরও অনেক জায়গা দিয়ে ঢোকাচ্ছে। বিএসএফ নারীদের ওপর অত্যাচার করছে। পুলিশের দিক থেকে কেন কোনো প্রতিবাদ হচ্ছে না?
‘আমি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) রাজীব কুমারকে বলব, কোন কোন জায়গা দিয়ে কত লোক বাংলায় ঢুকেছে তার তথ্য দিতে। কারণ, বর্ডার আমাদের হাতে নেই। বর্ডার হচ্ছে বিএসএফের হাতে। ভিসাও আমাদের হাতে নেই। সেটাও কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। ’
মমতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা বাংলাদেশ থেকে আসতো, তাদের লিস্ট আমাদের আগে দেওয়া হতো। কিন্তু এখন আমাদের দেওয়া হয় না। ফলে আমরা জানতে পারি না কারা আসছে। এখন দেখছি, প্লেনও চলছে, ট্রেনও চলছে, বাসও চলছে, সঙ্গে বিএসএফও চলছে। কেউ যদি মনে করে অনুপ্রবেশকারী ঢুকিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বদনাম করবে, তাহলে ভুল ভাবছে। কারণ, তৃণমূল কাউকে অনুপ্রবেশ করাচ্ছে না। দুয়েকটা টিভি চ্যানেল বিএসএফের দায়িত্বটা তৃণমূলের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। মনে রাখবেন, সীমান্ত রক্ষা তৃণমূল করে না, এমনকি পুলিশও করে না। সেটা বিএসএফের দায়িত্ব। আমি এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে একটি কড়া চিঠি দেব। কেন বাংলায় এত অনুপ্রবেশ ঘটানো হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা চাই দুপাড়েই শান্তি থাক। আমাদের তো দুই বাংলার মধ্যে কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই। আমরা এক ভাষায় কথা বলি, এক ভাষায় পথ চলি। চিকিৎসার কারণে কেউ আসতেই পারে। মানবিকতার কারণেও কেউ আসতে পারে। কিন্তু আমাদের তো জানাতে হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের কোনো তথ্য দিচ্ছে না। আমি সাধারণ বাংলাদেশিদের কথা বলছি না। আমি বলছি এখানে গুন্ডা (সন্ত্রাসবাদী) পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে এসে তারা খুন করছে। আবার তারা বর্ডার দিয়ে চলে যাচ্ছে। সীমান্ত দিয়ে তাদের আসা যাওয়া বিএসএফের মদদে হচ্ছে।
মমতা আরও বলেন, এটা অনেক গভীর চক্রান্ত। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্লু প্রিন্ট (নীল নকশা) আছে। কেন্দ্রীয় সরকারের চক্রান্ত না থাকলে এটা হতো না। আমি বারবারে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলেছি, বাংলাদেশ নিয়ে যা আপনারা করবেন সেটাই আমাদের পথ। কিন্তু আমি যদি দেখি, কেউ মদদ দিচ্ছে সেক্ষেত্রে আমরা প্রতিবাদ করব। সেজন্য আমরা প্রতিবাদপত্র পাঠাবো কেন্দ্রীয় সরকারকে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বছরের প্রথম দিনে বিশ্ববাজারে বাড়ল সোনার দাম
২০২৪ সালজুড়ে দাম বেড়েছে স্বর্ণের। নতুন বছরের প্রথম দিনই আউন্সপ্রতি ১৮ দশমিক ২৫ ডলার বেড়েছে ধাতুটির দাম। সেই হিসেবে দেশের বাজারেও যেকোনো সময় স্বর্ণের দাম বাড়তে পারে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ছিল আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৬২৪ দশমিক ৪৯ ডলার।
রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২৪ সালে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ২৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ বা ৫৪৬ দশমিক ৬৩ ডলার। ২০১০ সালের পর স্বর্ণের সবচেয়ে বাজার ছিল ২০২৪ সাল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রয়, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা ও মুদ্রানীতির রাশ আলগা হওয়ার কারণে গত বছর পণ্যটির দাম বেড়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম বেড়েছে দশমিক ৪ শতাংশ; প্রতি আউন্সের দাম ওঠে ২ হাজার ৬১৫ ডলারে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে থাকে। সংগঠনটির সবশেষ দেওয়া দাম অনুযায়ী, সবশেষ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। সংগঠনটির সবশেষ দেওয়া দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৮৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩২ হাজার ১ টাকা। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৩ হাজার ১৪১ টাকা। সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ৮৬৯ টাকা।
সংগঠনটির পক্ষে স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি। এই কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘বিশ্ববাজারে যে হারে স্বর্ণের দাম বাড়ছে, তাতে দেশের বাজারেও দাম বাড়ানো লাগবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমার স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় আন্তর্জাতিক বাজারের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারের ওপর ভিত্তি করে। স্থানীয় বাজারে পাকা স্বর্ণের দাম বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আবার পাকা স্বর্ণের দাম কমলে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববাজারের দামের চিত্র পাকা স্বর্ণের দামে প্রভাব ফেলে।’
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। গত ৩ ডিসেম্বর আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারির পর কয়েকদিনের মধ্যে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অভিশংসিত ও পরে বরখাস্ত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
দক্ষিণ কোরিয়ার উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্তের দায়িত্বে থাকা দ্য করাপশন ইনভেস্টিগেশন অফিস ফর দ্য হাই-র্যাঙ্কিং অফিশিয়ালস (সিআইও) নিশ্চিত করেছে, সামরিক আইন জারি কেন্দ্র করে তদন্তকারীদের অনুরোধে প্রেসিডেন্ট ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন সিউল ওয়েস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট।
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় কোনো প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম গ্রেফতারি পরোয়ানা। দেশটির বার্তাসংস্থা ইয়োনহাপ সিআইওকে উদ্ধৃত করে বলেছে, বর্তমান এই পরোয়ানা ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর থাকবে ও এটি প্রয়োগ করা হলে ইউনকে সিউল ডিটেনশন সেন্টারে আটক রাখা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অবশ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা মঞ্জুর করার বিষয়ে আদালতের যুক্তি সম্পর্কে সিআইও কোনো মন্তব্য করেননি। আদালতও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
চলতি বছরের ৩ ডিসেম্বর উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট শক্তির হুমকি থেকে কোরিয়ান প্রজাতন্ত্র রক্ষা, জনগণের স্বাধীনতা, উত্তর কোরিয়াপন্থি ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলোকে’ নির্মূল ও উদার সাংবিধানিক সুরক্ষার ঘোষণা দিয়ে হঠাৎ করে দেশজুড়ে সামরিক আইন জারি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল।
যদিও বিরোধীদের তীব্র আপত্তি ও সংসদে ভোটাভুটির পর মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে সেই সামরিক আইন প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। পরে দক্ষিণ কোরিয়ার এই প্রেসিডেন্টের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন আদালত। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্ত চলমান আছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট ইউন অভিশংসিত হওয়ায় তার স্থানে এখন একজন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। অবশ্য সংসদে অভিশংসিত হলেও জটিল আইনি প্রক্রিয়ার কারণে সাংবিধানিক আদালতে সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদে থাকবেন ইউন। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোনো নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে না তার।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাজ্যে জরিমানার মুখে পড়তে পারেন টিউলিপ
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী ও শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক আইন লঙ্ঘনের কারণে জরিমানার মুখে পড়তে পারেন। ভাড়া দেওয়া ফ্ল্যাটের এনার্জি সার্টিফিকেট না থাকার কারণে তার ১০ হাজার ইউরো জরিমানা হতে পারে। মেইল অন সানডে এক প্রতিবেদনে এমনটি জানায়।
চলতি বছরের শুরুতে ওই ফ্ল্যাটের ভাড়া থেকে আয়ের নিবন্ধন না করার জন্য টিউলিপ সিদ্দিক তদন্তের মুখে পড়েছিলেন। এখন প্রশ্ন উঠছে তিনি একজন বাড়িওয়ালা হিসেবে তার আইনি দায়িত্ব পালন করেছেন কি না।
ভাড়াটে সম্পত্তির জন্য এনার্জি পারফরম্যান্স সার্টিফিকেট (ইপিসি) থাকা বাধ্যতামূলক। তবে সংবাদপত্রটি উত্তর লন্ডনের ওই ঠিকানার জন্য কোনো ইপিসি খুঁজে পায়নি। তিনি ও তার স্বামী ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ওই বাড়ি ভাড়া দিচ্ছেন।
বাড়িওয়ালারা ইপিসি নিয়ম তিন মাসের বেশি না মানলে সর্বনিম্ন ১০ হাজার ইউরো জরিমানায় পড়তে পারেন। সম্পত্তির মূল্য অনুযায়ী ২০ শতাংশ পর্যন্ত সর্বোচ্চ মোট দেড় লাখ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
মেইল অন সানডে জানতে পেরেছে, ওই সম্পত্তি টিউলিপ সিদ্দিক ও তার স্বামী সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ক্রিস্টিয়ান পার্সি ২০১৮ সালে আট লাখ ৬৫ হাজার ইউরোতে কিনেছিলেন। একটি লেটিং এজেন্সি ওই সম্পত্তির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে।
লেটিং এজেন্সি হলো একটি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা যা ভাড়া দেওয়ার জন্য সম্পত্তি দেখভাল এবং মালিকদের পক্ষ থেকে ভাড়াটে খোঁজা, চুক্তি তৈরি করা এবং অন্যান্য কাজগুলো সম্পন্ন করে।
মন্ত্রী টিউলিপ এর আগে ভাড়া থেকে আসা আয় সঠিকভাবে দেখাতে ব্যর্থ হন। প্রায় ১৪ মাসে ১০ হাজার পাউন্ডেরও বেশি অর্থ ভাড়া থেকে আয়ের কথা প্রতিবেদনে বলা হয়। এই ব্যর্থতায় তিনি পার্লামেন্টারি কমিটির তদন্তের মুখে পড়েন।
স্ট্যান্ডার্ডস কমিশনার টিউলিপের পার্লামেন্টারি নিয়ম লঙ্ঘনের তথ্য খুঁজে পায়। তবে তার প্রশাসনিক ত্রুটির ব্যাখ্যাও মেনে নেয়। তিনি ইতোমধ্যে লন্ডনের আরেকটি সম্পত্তি থেকে আয়ের তথ্য জানিয়েছেন। ওই সম্পত্তির ইপিসি রয়েছে।
টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের কয়েক সদস্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে চার বিলিয়ন ইউরো পরিমাণ অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন দুই সপ্তাহ আগে টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা, তার খালা ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৪০০ কোটি পাউন্ড আত্মসাৎ করেছেন এমন অভিযোগে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা।
তবে তিনি অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন এখন পর্যন্ত তার সাথে কোনো কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিবিসির চোখে সিরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার ‘আয়নাঘর’
সিরিয়ার মানুষদের কাছে ভীতিকর এই জায়গাটিতে অনেককে আটক ও নির্যাতন করা হতো। মাটির নিচে সাবেক সরকারের এই গোপন আস্তানায় প্রবেশ করেন বিবিসি অ্যারাবিক সার্ভিসের সংবাদদাতা ফেরাস কিলানি। এটি এমনই এক জগত, যেখানে বাইরের মানুষ খুব কমই ঢুকতে পেরেছে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সদর দপ্তরের বেইসমেন্টে এই ভয়ানক জায়গা দেখা যায়।
যেটি দেশটির গোপন গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের অংশ, যা কয়েক দশক ধরে নৃশংস নেতৃত্বকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে। পুরু ইস্পাতের দরজা দেওয়া সারিবদ্ধ ছোট ছোট কক্ষ দেখা যায়, যেখানে বন্দিদের রাখা হতো। একটি কক্ষের ভেতর তাকিয়ে দেখা যায়, ঘরটি মাত্র দুই মিটার লম্বা ও এক মিটার চওড়া। ময়লা দেয়ালে গাঢ় দাগ লেগে রয়েছে।
দেয়ালের উঁচুতে থাকা ছোট ছোট ঝাঁঝরি দিয়ে যে সামান্য সূর্যের আলো পৌঁছয়, সেটাই এসব কক্ষের একমাত্র আলোর উৎস। এই বদ্ধ কক্ষে বন্দিদের মাসের পর মাস আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতন করা হতো। এগুলোর অবস্থান দামেস্কের কেন্দ্রের কাফর সউসা এলাকার একটি ব্যস্ত রাস্তার ঠিক নিচে, যেখানে নিরাপত্তা সদর দপ্তর অবস্থিত।
প্রতিদিন হাজার হাজার সিরীয় এই পথ দিয়ে যাওয়া আসা ক্যার, তাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্ম চালিয়ে যেত।
অথচ, তাদের কোনো ধারণাই ছিল না যে মাত্র কয়েক মিটার দূরে তাদের মতো কিছু নাগরিককে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে।
একটি করিডরে দেখা যায়, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের ছিন্নভিন্ন ছবিগুলো মাটিতে পড়ে আছে। এর সঙ্গে রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার ফাইলের স্তূপ, যেসব নথি লাখো মানুষের কর্মকাণ্ড নজরদারির জন্য ব্যবহৃত হতো।
এই স্থানে বন্দিদের সাময়িকভাবে আটকে রাখার পর, তাদের দীর্ঘমেয়াদে আটক রাখতে বন্দিশিবিরে পাঠানো হতো।
রাজধানীর উপকণ্ঠে অবস্থিত সাইদনায়া কারাগার, এমনই এক কুখ্যাত বন্দীশিবির। এই স্থাপনাটি সিরিয়ার সাবেক সরকারের পরিচালিত বিশাল নেটওয়ার্কের একটি অংশ।
স্বাধীন পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস (এসএনএইচআর) ২০১১ সালে আসাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরুর পর থেকে গত জুলাই পর্যন্ত ১৫ হাজার ১০২টি মৃত্যুর তথ্য রেকর্ড করেছে, যা দেশটির কারাগারে নির্যাতনের কারণে হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছরের অগাস্ট পর্যন্ত এক লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষকে আটক বা জোর করে বন্দি করে রাখা হয়।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, সাবেক সিরীয় সরকার ভিন্নমত দমন করার জন্য বহু বছর ধরে নির্যাতন ও গুম করত। সংস্থাটির মতে, দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাউকে জবাবদিহি করত না।
স্টেট সিকিউরিটি সদর দপ্তর থেকে কয়েক শ মিটার দূরে জেনারেল ইন্টেলিজেন্স ডিরেক্টরেট নামে আরেকটি গোয়েন্দা সংস্থার অফিস রয়েছে, যা দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার নেটওয়ার্কের আরেকটি অংশ। আসাদ সরকারবিরোধীরা অভিযোগ করেছে, এটি এমন একটি সংস্থা, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি বিষয় নজরদারি করত।
অফিসের ভেতরে একটি কম্পিউটার সার্ভার রুম পাওয়া যায়। মেঝে ও দেয়াল একদম ঝকঝকে সাদা এবং সারি ধরে কালো ডাটা স্টোরেজ ইউনিটগুলো শান্তভাবে গুঞ্জন করছে।
দামেস্কের বেশির ভাগ স্থানে বিদ্যুৎ নেই। তবে এই স্থাপনাটি হয়ত এত গুরুত্বপূর্ণ যে এর নিজস্ব বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। ডিজিটাল সিস্টেম থাকা সত্ত্বেও সেখানে প্রচুর কাগজের নথিও রয়েছে, যা সবই অক্ষত আছে বলে মনে হচ্ছে। একটি কক্ষের দেয়ালজুড়ে লোহার পুরনো আলমারিতে নথিগুলি ঠেসে রাখা হয়েছে। আরেকটি দেয়ালে সারি ধরে নোটবইগুলো মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত থরে থরে সাজানো আছে।
ধারণা করা হচ্ছে, যখন শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, তখন এখানে যারা কাজ করতেন, তারা পালানোর আগে কিছুই ধ্বংস করার সুযোগ পাননি। নথিগুলো অনেক পুরনো, বছরের পর বছর ধরে সংরক্ষণ করা, কিন্তু কিছুই ধ্বংস করা হয়নি। এমনকি সেখানে গুলির খালি খোসা ভরা বাক্সও পাওয়া যায়। আরেকটি ঘরে দেখা গিয়েছে নানা ধরণের অস্ত্রশস্ত্র, যার মধ্যে মর্টার আর স্থলমাইনও আছে।
বিবিসি সংবাদদাতার সঙ্গে এইচটিএস নামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর একজন যোদ্ধা ছিলেন, যারা এখন দামেস্ক নিয়ন্ত্রণ করছে। তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, এখানে এত অস্ত্র কেন? তিনি বলেন, ‘আসাদ সরকারের সময়, রাশিয়ার সহযোগিতায় সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সিরিয়ার মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও নিপীড়নের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।’
জেনারেল ইন্টেলিজেন্স ডিরেক্টরেটে জমা থাকা পাহাড় সমান নথি ও কম্পিউটার রেকর্ড, ভবিষ্যতে সিরিয়ার নাগরিকদের আটক ও নির্যাতনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এইচটিএস নেতা আহমেদ আল-শারা, যিনি আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি নামেও পরিচিত, তিনি এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছেন, বিগত শাসনামলে যারা আটক ব্যক্তিদের নির্যাতন বা হত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের সবাইকে খুঁজে বের করে বিচার করা হবে; ক্ষমা করার প্রশ্নই আসে না। তিনি টেলিগ্রামে এক বার্তায় বলেছেন, ‘আমরা সিরিয়ার ভেতরে তাদের খুঁজে বের করব এবং যারা পালিয়ে গেছে তাদেরকে আমাদের হাতে তুলে দিতে অন্যান্য দেশের কাছে অনুরোধ জানাব, যাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায়।’
কিন্তু সিরিয়ার গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়ার প্রভাব দেশের সীমানার বাইরে অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার এমন অনেক নথি পাওয়া গিয়েছে যেগুলো জর্দান, লেবানন ও ইরাকের সঙ্গে সম্পর্কিত। যদি এই নথিগুলো প্রকাশ্যে আসে এবং ওই দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আসাদ সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ সামনে আসে, তাহলে পুরো অঞ্চলেই বড় ধাক্কা লাগতে পারে। আসাদ সরকারের সাবেক গোয়েন্দা সংস্থার যত তথ্য সামনে আসবে, এর প্রভাব তত বড় হতে পারে।