পুঁজিবাজার
সিএমএসএফে তিন বছরে ৩২৭ বৈঠক, ব্যয় ৩ কোটি টাকা
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে আস্থার সঞ্চার করতে ২০২১ সালে চালু করা হয় ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ)। উদ্দেশ্য ছিল– বাজারের যেকোনো অস্থিতিশীল অবস্থাতে শেয়ার কেনাবেচা করে তারল্য নিশ্চিত করা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা।
অন্যান্য দেশের একই ধরনের তহবিলের মতো বাজারকে স্থিতিশীল করার মতো কোনো ভূমিকাই রাখতে পারেনি সিএমএসএফ। বরং এর পর্ষদ (বোর্ড) এবং অন্যান্য এক ডজন কমিটির সদস্যদের পুঁজিবাজারে বাস্তব আর্থিক হস্তক্ষেপের পদক্ষেপ নেওয়ার চেয়ে সভা করার ক্ষেত্রে বেশি সক্রিয় দেখা গেছে।
বিদ্যমান তথ্যের রেকর্ড অনুযায়ী, তিন বছরে ৩২৩টি বৈঠক করেছেন তারা, যেখানে অংশগ্রহণকারীদের সম্মানী বাবদ ব্যয় করা হয়েছে ৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি এক বছরে ১০০টির বেশি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসবে সম্মানীর হারও কম না যেখানে প্রতি বৈঠক বাবদ কমিটির সদস্যদের জনপ্রতি সম্মানী ছিল ৮ হাজার টাকা।
একের পর এক সভা আর সেখানে উপস্থিতির সম্মানী আদায়ের পাশাপাশি সিএমএসএফের পরিচালনা পর্ষদ ১ কোটি ৫২ লাখ টাকায় দুটি গাড়ি (কার) কিনেছে; আবার অফিস সংস্কারের জন্য ব্যয় করেছে প্রায় ৫ কোটি টাকা।
কিন্তু ফান্ডের আকার ও লক্ষ্যগুলো যত বড় সে তুলনায় ফলাফল তেমন কিছুই আসেনি। চলতি বছরের ৩০ জুলাই পর্যন্ত এই ফান্ডের আকার বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকায়। যেখান থেকে রাষ্ট্রায়াত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান- ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ- আইসিবিকে ২২৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া, ৫০ কোটি টাকা দিয়ে একটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড চালু করা ছাড়া বাজার স্থিতিশীলতায় সিএমএসএফ’র ভূমিকা নেই।
আইসিবি সেই টাকা ঋণ নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে। তবে বাজারের সার্বিক স্থিতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে তার প্রভাব ছিল ন্যূনতম।
২০২১ সালে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- বিএসইসি এই ফান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানিগুলোর কাছে জমা অবন্টিত লভ্যাংশ, বোনাস ও আইপিও সাবস্ক্রিপশনের অর্থ ব্যবস্থাপনা এবং তার থেকেও বেশিকিছু করার উদ্দেশ্য থেকে।
ফান্ড গঠনের অন্যতম ম্যান্ডেট ছিল- নগদ টাকার ১০ শতাংশ টাকা এফডিআর, ৪০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ (শেয়ার কেনাবেচা) ও ৫০ শতাংশ ফান্ড বাজারের অংশীজনদের (রিফাইন্যান্সিং মার্জিন) ঋণ হিসাবে দিতে হবে। এরপর বাকি ১০ শতাংশ স্থায়ী আমানত, সরকারি সঞ্চয়পত্র ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডে সংরক্ষণ করতে হবে। ১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকার মধ্যে নগদ লভ্যাংশ প্রায় ৬৩২ কোটি টাকা আর স্টক ডিভিডেন্ট প্রায় ৯১৩ কোটি টাকা।
১১ সদস্যের বোর্ডের বাইরে ফান্ডটির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় প্রায় এক ডজনের বেশি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটির কোনোটির সদস্য ৪ জন, আবার কোনোটির সদস্য ১০ জনের বেশি।
সিএমএসএফ এর তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে ৬৩ বোর্ড মিটিং হয়েছে, আর অন্যান্য কমিটির সভা হয়েছে ২৬০টি। অর্থাৎ, প্রায় প্রতিদিনই করা হয়েছে কোন না কোন মিটিং, যেখান থেকে বছরে কোটি টাকা সম্মানী নিয়েছেন সিএমএসএফ এর বোর্ড সদস্য ও অন্যান্য কমিটির সদস্যরা।
উল্লেখ্য, এসব সভায় কেবল বোর্ড সদস্যরাই নয়, বোর্ড সদস্যের বাইরেও চেয়্যারম্যানের ঘনিষ্ঠজনদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারাও প্রতি মিটিংয়ে ৮ হাজার করে সম্মানী পেয়েছেন।
মিটিং বাবদ ব্যয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমএসএফ এর চিফ অব অপারেশন- মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, “কমিশন কর্তৃক গঠিত বোর্ড যেভাবে চেয়েছে, সেভাবেই করা হয়েছে। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি শূন্য থেকে শুরু হয়েছে, তাই প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করানোর প্রয়োজন হয়েছে, যা আর বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে কখনোই দরকার হবে না।”
সিএমএসএফ পর্যালোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার
সিএমএসএফকে পর্যালোচনা, এর প্রয়োজনীয়তা যাচাই ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থার রূপরেখা প্রণয়নের জন্য গত ২ সেপ্টেম্বর একটি কমিটি গঠন করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল রোববার বিএসইসির একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কমিটির সভাপতিত্ব করবেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা শাখার একজন অতিরিক্ত সচিব এবং সদস্য হিসেবে থাকবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও ফার্মের রেজিস্ট্রার, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিনিধিরা। ১০ দিনের মধ্যে এই কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
“এই তহবিলের প্রয়োজন আছে কি না, তা কমিটি সুপারিশ করবে। যদি প্রয়োজন থাকে, তবে এটি যথাযথ ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবহারের কৌশল প্রস্তাব করবে”- নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসি কর্মকর্তা বলেছেন।
তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ খান এই তহবিলের পক্ষে নন। তিনি গত সপ্তাহে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টার কাছে তার অবস্থান জানিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। সেই পদক্ষেপের অংশ হিসাবে, ২২ আগস্ট পূর্ববর্তী বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও বিএসইসি নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেনি।
ফান্ডের যৌক্তিকতা, ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ
কোম্পানিগুলো্র ব্যাংকে পড়ে থাকা অবিতরণকৃত বা অবন্টিত লভ্যাংশ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গঠন করা হয় সিএমএসএফ, যার ৪০ শতাংশ নগদ অর্থে সরাসরি শেয়ার কেনাবেচা করা যাবে। কিন্তু, তিন বছর অতিবাহিত হলেও ফান্ড গঠনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট আইনগত সমস্যার সমাধান হয়নি, এই অবস্থায় নতুন কমিশন এখনও কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় এর অস্তিত্বই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক হি্সেবে ফান্ডের উদ্যোক্তা হওয়া শিবলী কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
একটি ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, “রেগুলেটরের কাজ বাজার নিয়ন্ত্রণ, সুশাসন ও আইন প্রণয়ন করা। কিন্তু কমিশন তার ম্যান্ডেট অনুযায়ী কাজ না করে– ফান্ড গঠন করে তারল্যের যোগান দিতে চেয়েছে, শেয়ার কেনাবেচা করবে সেই সুযোগ রাখা হয়েছে। এটা রেগুলেটরের কাজ হতে পারে না।”
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও ব্যাংকের কর্মকর্তারা এই ফান্ড গঠন ও পরিচালনার আইনগত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কমিশনের তত্ত্বাবধানের গঠিত ফান্ডটি গঠন ও পরিচালনার আইনি জটিলতা এখনো শেষ হয়নি। পরিচালনার দায়িত্ব কার হাতে থাকবে, সে বিষয়েও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
যদিও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের চাপে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো ব্যাংকে পড়ে থাকা অবিতরণকৃত বা অবন্টিত লভ্যাংশ এই ফান্ডে জমা দিয়েছে।
বিএসইসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ সিদ্দিকী বলেন, বাজারকে সমর্থন করার জন্য এই ধরনের তহবিল তৈরির উদ্দেশ্য সঠিক ছিল না।
তিনি বলেন, ‘এই ফান্ড গঠন করে আপনি কখনোই পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে পারবেন না। কৃত্রিমভাবে একটা ফান্ড গঠনের মাধ্যমে কিছুদিন হয়তো বাজারকে সমর্থন দেওয়া যায়, কিন্তু সেটা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হয় না।”
তিনি আরো বলেন, ফান্ডের অর্থ ব্যবস্থাপনার যে ম্যান্ডেট সে অনুযায়ী পরিচালিত হতে না পারলেও বিপুল ব্যয়ের ঘটনা ঘটেছে, যা একেবারেই প্রত্যাশিত নয়। যেহেতু কমিশনের দ্বারা এই ফান্ড গঠিত হয়েছে, তাই এবিষয়ে তাদেরকেই সতর্কতার সাথে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই এই স্থিতিস্থাপক ফান্ড গঠনের বিষয়টি বিতর্কিত ছিল। অবন্টিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের টাকা, যেগুলো সংগ্রহের পরে এই ফান্ডের তার ম্যান্ডেট অনুযায়ী পরিচালিত হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, “অর্থ সংগ্রহের পরে ফান্ড যদি ম্যান্ডেট অনুযায়ী পরিচালিত না হয়, সেক্ষেত্রে কমিশন বিষয়টির তদন্ত করতে পারে। যেহেতু এখানে জনগণের অর্থ রয়েছে, তাই ফান্ডকে অবশ্যই ম্যান্ডেট মেনে চলতে হবে।”
একই ধরনের ফান্ড অন্যান্য দেশে যেভাবে কাজ করে
বিভিন্ন দেশে আর্থিক সংকট এবং পুঁজিবাজারের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে এরকম ফান্ডগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যেমন ১৯৯২ সালে হর্ষদ মেহতা কেলেঙ্কারির ফলে শেয়ার বাজার বিপর্যয়ের পর– ভারতীয় পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যায়। আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, নিয়ন্ত্রক সংস্থা- এসইবিআই বা সেবি ইনভেস্টরস প্রটেকশন অ্যান্ড এডুকেশন ফান্ডের ভূমিকা বাড়িয়েছে। এই তহবিল প্রতারিত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে এবং বাজার সচেতনতা তৈরি ও পুঁজিবাজার সম্পর্কে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শিক্ষার উন্নতির জন্য তৈরি করা হয়। বাজারে খুচরা বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে আবারো উৎসাহিত করে এই উদ্যোগ, এবং বাজারকে স্থিতিশীল করতে ভূমিকা রাখে।
২০০৮ সালের আর্থিক সংকটকালে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনার অধীন এক্সচেঞ্জ স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডকে (ইএসএফ) বাজারে তারল্য বা নগদ অর্থ জোগান দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা প্রদান এবং পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ইএসএফকে ব্যবহার করা হয়েছিল, যদিও এর প্রাথমিক কাজ ছিল বৈদেশিক মুদ্রাবিনিময় বাজারকে স্থিতিশীল করা।
২০১৫ সালে একটি বড় ধসের কবলে পড়ে চীনের পুঁজিবাজার, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই যেখানে শেয়ারদরের ৩০ শতাংশ পর্যন্ত পতন হয়। ব্রোকারেজ সংস্থাগুলো বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ না দিতে পারলে– সেজন্য সিকিউরিটিজ ইনভেস্টরস প্রটেকস্বয়ং ফান্ড (এসআইপিএফ) রয়েছে চীনে, এই ফান্ডকেই তখন শেয়ার কিনে বাজারের ধস ঠেকানোর কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। এসআইপিএফ প্রধান প্রধান কোম্পানিগুলোর শেয়ার কিনে বাজারে হস্তক্ষেপ করে, যা শেয়ারদরকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সপ্তাহজুড়ে ব্লকে সর্বোচ্চ লেনদেন ১০ কোম্পানির
বিদায়ী সপ্তাহে (০৮ ডিসেম্বর-১২ ডিসেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ১০ কোম্পানির।
কোম্পানিগুলো হলো- ওরিয়ন ইনফিউশন, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, ফাইন ফুডস, লাভেলো আইস্ক্রিম, রিলায়েন্স ওয়ান, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আইডিএলসি, জিপিএইচ ইস্পাত এবং বিচ হ্যাচারি।
আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে ব্লক মার্কেটে এই ১০ কোম্পানির মোট ১০৫ কোটি ১৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে ব্লক মার্কেটে ওরিয়ন ইনফিউশনের সবচেয়ে বেশি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ব্লক মার্কেটে কোম্পানিটির ৬৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। বিদায়ী সপ্তাহে কোম্পানিটির সর্বশেষ দর ছিল ৩২০ টাকা ২০ পয়সা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মিউচ্যুাল টাস্ট ব্যাংকের ১৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহে কোম্পানিটির সর্বশেষ দর ছিল ১২ টাকা। তৃতীয় সর্বোচ্চ আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ৪ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহে কোম্পানিটির সর্বশেষ দর ছিল ১৯ টাকা ৩০ পয়সা।
সপ্তাহজুড়ে ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া অন্যান্য ৭টি কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বিচ হ্যাচারির ৪ কোটি ২৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা, লাভেলো আইস্ক্রিমের ৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা, রিলায়েন্স ওয়ানের ২ কোটি ৭৩ লাখ ১০ হাজার টাকা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ২ কোটি ৩৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা, আইডিএলসির ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, জিপিএইচ ইস্পাতের ১ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং বিচ হ্যাচারির ১ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সপ্তাহজুড়ে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ দরপতন
বিদায়ী সপ্তাহে (০৮ ডিসেম্বর-১২ ডিসেম্বর) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া ৩৯২ কোম্পানির মধ্যে ২৯৩টির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ শেয়ারদর পতন হয়েছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সপ্তাহজুড়ে কোম্পানির দর কমেছে ২৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ৩৩ টাকা ৯০ পয়সা।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার্সের শেয়ারদর কমেছে ১৩ দশমিক ১২ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ১২৫ টাকা ৮০ পয়সা।
আর তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ইস্টর্ন লুব্রিকেন্টেসের শেয়ারদর কমেছে ১১ দশমিক ৭১ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ১৩০৩ টাকা ৩০ পয়সা।
তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- ইসলামী ব্যাংকের ১১ দশমিক ৪৬ শতাংশ, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের ১১ দশমিক ০০ শতাংশ, জেমিনি সী ফুডের ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ, ফাইন ফুডসের ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ, জেনেক্স ইনফোসিসের ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং মনোস্পুল পেপারের ৯ দশমিক ০১ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর বেড়েছে ২৭ শতাংশ
বিদায়ী সপ্তাহে (০৮ ডিসেম্বর-১২ ডিসেম্বর) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া ৩৯২ কোম্পানির মধ্যে ৭৬টির শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। এর মধ্যে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
সূত্র মতে, সমাপ্ত সপ্তাহে কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ২৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ২৮ টাকা ৯০ পয়সা।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা এইচ আর টেক্সটাইলের শেয়ার দর বেড়েছে ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ৩৪ টাকা ৭০ পয়সা।
তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেনের শেয়ার দর বেড়েছে ১৭ দশমিক ০৫ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ১৫ টাকা ১০ পয়সা।
তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- সাইহাম কটনের ১৫ দশমিক ২৮ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিংয়ের ১৫ দশমিক ০০ শতাংশ, সোনারগাঁও টেক্সটাইলের ১৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ, হামি ইন্ডাস্ট্রিজের ১২ দশমিক ৫২ শতাংশ, লুব-রেফ বাংলাদেশের ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ, সাইহাম টেক্সটাইলের ৯ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং আমরা টেকনোলজিসের ৮ দশমিক ৬২ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে ওরিয়ন ইনফিউশন
বিদায়ী সপ্তাহে (০৮ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩৯২ কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
সূত্র মতে, সমাপ্ত সপ্তাহে কোম্পানিটির গড়ে ২২ কোটি ২১ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। তাতে লেনদেনের শীর্ষে জায়গা নিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ অবদান ওরিয়ন ইনফিউশনের।
লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ড্রাগণ সোয়েটার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ৮ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ২ দশমিক ৬০ শতাংশ।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
এছাড়া, প্রতিদিন গড় লেনদেনে সাপ্তাহিক শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে লাভেলো আইসক্রিমের ৭ কোটি ২৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা, সাইহাম কটনের ৭ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা, এনআরবি ব্যাংকের ৬ কোটি ৮৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা, বেক্সিমকো ফার্মার ৬ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৫ লাখ ৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা, জেনেক্স ইনফোসিসের ৫ কোটি ৩ হাজার টাকা এবং স্কয়ার ফার্মার ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
বিনিয়োগকারীদের মূলধন কমেছে ২৩ হাজার কোটি টাকা
বিদায়ী সপ্তাহে (৮ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সব সূচকের পতন হয়েছে। আলোচ্য সপ্তাহজুড়ে সূচকের সঙ্গে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের মোট বাজার মূলধন কমেছে ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ডিএসই ও সিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।
গত সপ্তাহের শুরুতে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৭০৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫২ হাজার ৪৯৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার ২০৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা বা ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
দেশের অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে গত সপ্তাহের শুরুতে বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ২১৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আর সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৩৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার ৮১৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের মোট বাজার মূলধন কমেছে ২৩ হাজার ২৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
চলতি সপ্তাহে কমেছে ডিএসইর সবকটি সূচক। প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এছাড়া, ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ৩০ দশমিক ০২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আর ডিএসইএস সূচক কমেছে ২৩ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ০৬ শতাংশ।
সূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬১০ কোটি ৯২ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ২২১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এক সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ৬১০ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
চলতি সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩২২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৪৪৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৯২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৬টি কোম্পানির, কমেছে ২৯৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে, সপ্তাহ ব্যবধানে দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ও সিএসসিএক্স যথাক্রমে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ ও ১ দশমিক ৯১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৩০৪ পয়েন্টে ও ৮ হাজার ৭০২ পয়েন্টে।
এছাড়া, সিএসআই সূচক ১ দশমিক ৭০ শতাংশ ও সিএসই-৩০ সূচক ০ দশমিক ২০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৯২৫ দশমিক ৩৮ পয়েন্টে ও ১১ হাজার ৭৫৫ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে। আর সিএসই-৫০ সূচক কমেছে অবস্থান করছে ১০৮৩ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ২৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৫৬ লাখ টাকা।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩১৫টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৭টির, কমেছে ২১৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টি কোম্পানির শেয়ার দর।
এসএম