শিল্প-বাণিজ্য
চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগ করতে চায় সংযুক্ত আরব আমিরাত

চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। বাংলাদেশে নিযুক্ত আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ খাসিফ আল হামুদি নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনকে একথা জানান।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি সচিবালয়ের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে একথা জানান।
সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রাম বন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার বিনিয়োগ করতে চায় জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ আমিরাতের বন্ধু রাষ্ট্র। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে পোশাক, কৃষিজাত পণ্য, নিটওয়্যারসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে আসছে। এ ধারাবাহিকতায় আমরা বাংলাদেশের অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আরো বৃহৎ পরিসরে নতুনভাবে কাজ করতে আগ্রহী। যার মাধ্যমে উভয় দেশের জনগণই উপকৃত হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সমুদ্রবন্দর ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ড (দুবাই পোর্ট) বর্তমানে ছয়টি মহাদেশজুড়ে ৬০টির বেশি সমুদ্রবন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে।
এছাড়া ১০টি দেশে তাদের কার্যক্রম আরো বিস্তৃত ও নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। আমাদের লন্ডন গেটওয়ে পোর্ট নির্মাণের অভিজ্ঞতাও রয়েছে। উপমহাদেশের অন্যান্য দেশ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কায়ও ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের। সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার বিশ্বাস করে, বাংলাদেশেও বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগের মাধ্যমে উভয় দেশই উপকৃত হতে পারে।
রাষ্ট্রদূতের এ বিনিয়োগ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সব সময় বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সেক্টরে বহুমাত্রিক সম্পর্ক বিদ্যমান। আমরা চট্টগ্রাম বন্দরসহ অন্যান্য সকল ক্ষেত্রেই আমিরাতের বিনিয়োগের আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানাই। আমি মনে করি, এর মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। বাংলাদেশের জন্য যেটি মঙ্গলজনক, সে সকল বিদেশি প্রস্তাবকে বর্তমান সরকার ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে।
এ সময় উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশী নাবিকদের জন্য দুবাইয়ের ভিসা জটিলতা দূরীকরণের মাধ্যমে সহজ উপায়ে ট্রানজিট ভিসা ইস্যু করার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত আল হামুদি উপদেষ্টার প্রস্তাব গ্রহণ করে বলেন, বাংলাদেশী নাবিকদের জন্য এখন থেকে সহজ উপায়ে ট্রানজিট ভিসা প্রদানের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উভয় দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য ঘাটতি দূর করে বাণিজ্য ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে– বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি পাটজাত পণ্য আমদানির আহ্বান জানিয়ে বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা বলেন, সোনালী আঁশ পাট বাঙালির ঐতিহ্য। এটি সহজে পচনশীল ও পরিবেশবান্ধব। আমরা পাটের সোনালী অতীত ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। ইতোমধ্যে ২৮২ ধরনের পাটজাত দ্রব্য উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে, যেগুলো অত্যন্ত আকর্ষণীয়। পরিবেশ দূষণরোধে পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহারে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের সুপারশপগুলোতে প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দুবাইয়ের সুপারশপগুলোতেও এ সকল পণ্য যা পরিবেশের ক্ষতিকর সেগুলো ব্যবহারে বিধিনিষেধ রয়েছে। ইউএই সরকার বাংলাদেশ থেকে অত্যন্ত মানসম্মত ও বৈচিত্রপূর্ণ পাটজাত দ্রব্য আমদানি করতে পারে।
এসময় তিনি বাংলাদেশের পাট ও বস্ত্র শিল্পে আমিরাতকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার পরিবেশের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য এক বিরাট হুমকি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সারাবিশ্বেই পাটজাত দ্রব্যের চাহিদা ক্রমশ বেড়ে চলছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়াত্ব পাটকল ও বস্ত্র কল গুলোতেও বিদেশি বিনিয়োগ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি আশা করব সংযুক্ত আরব আমিরাতও বাংলাদেশের পাট ও বস্ত্র শিল্পে বিনিয়োগ করবে।
উপদেষ্টার এ আহবানকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রদূত উভয় দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যেকোনো বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব দেয়ার অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ খাসিফ আল হামুদির নেতৃত্বে বৈঠকে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে।
এসময়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের রুটিন দায়িত্বে) সঞ্জয় কুমার বণিক ও নৌপরিবহন অধিদপ্তরে মহাপরিচালকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনীতি
ব্যাংকিং খাত বর্তমানে সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে: ডিসিসিআই সভাপতি

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত বর্তমানে এক সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের খেলাপির কারণে আর্থিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগের ওপর বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। এর ফলে ঋণপ্রাপ্তি কঠিন হয়ে গেছে এবং এসএমই খাতসহ উৎপাদনমুখী ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ।
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে ‘বর্তমান ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ: ঋণগ্রহীতাদের দৃষ্টিকোণ’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (মুদ্রানীতি বিভাগ) ড. মো. এজাজুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিভারস্টোন ক্যাপিটাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ও ডিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি মো. আশরাফ আহমেদ।
তাসকিন আহমেদ বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ এবছরের জুন পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এটি মোট ঋণের ২৪ শতাংশের বেশি। যা আর্থিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগের ওপর বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। এর ফলে ঋণপ্রাপ্তি কঠিন হয়ে গেছে, এসএমই খাতসহ উৎপাদনমুখী ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছেন এবং বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭.৫৭ শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে থাকায় নীতি সুদহার ও তারল্য সংকুচিত হয়েছে, ফলে মূলধনের খরচ বেড়েছে। এতে করে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
এ অবস্থায় তিনি কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ঋণগ্রহীতাদের পুনর্বাসনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ, উৎপাদনমুখী খাতে (যেমন এসএমই, কৃষি, সবুজ শিল্প) সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা, সেক্টরভিত্তিক প্রণোদনা এবং গ্যারান্টি স্কিম, ঋণের শর্ত শিথিল করে দীর্ঘ মেয়াদে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া, ঋণ শ্রেণিকরণ সময়সীমা ৬ মাস বাড়ানো এবং ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত খেলাপি আলাদা করে চিহ্নিত করা।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার শুধু ঝুঁকির দিক থেকে নয়, ঋণগ্রহীতাদের কথাও মাথায় রেখে করতে হবে। নইলে বিনিয়োগ, উদ্ভাবন ও প্রতিযোগিতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সেমিনারে বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী নেতা ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
শিল্প-বাণিজ্য
এমএসএমই দিবস আজ

আন্তর্জাতিক অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (এমএসএমই) দিবস আজ। ২০২৫ সালে এ দিবসের প্রতিপাদ্য– টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনের চালিকাশক্তি হিসেবে এমএসএমইর ভূমিকা সম্প্রসারণ।
অর্থনীতিতে ছোট ও মাঝারি উদ্যোগের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে এবং সচেতনতা তৈরিতে বিশ্বজুড়ে ২৭ জুন পালন করা হয় এ দিবস। ২০১৭ সালে জাতিসংঘ ২৭ জুনকে এমএসএমই দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
বাংলাদেশে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস পালন করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে মূল আয়োজন করে এসএমই ফাউন্ডেশন। এছাড়া বেসরকারি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ দিবস পালন করে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, এবার এমএসএমই দিবস দুটি বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন সামনে রেখে উদযাপিত হচ্ছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্পেনের সেভিলায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন’ শীর্ষক চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এছাড়া কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে সামাজিক উন্নয়ন-বিষয়ক দ্বিতীয় বিশ্ব সম্মেলন।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ব্যবসার ৯০ শতাংশ, কর্মসংস্থানের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ এবং জিডিপিতে ৫০ শতাংশ অবদান এমএসএমই খাতের। বিশ্বজুড়ে কর্মক্ষম দরিদ্র, নারী, যুবক ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নয়নের মেরুদণ্ড হিসেবে ভূমিকা রাখছে এমএসএমই খাত।
শিল্প-বাণিজ্য
গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পেলো পিএইচপি শীপ ব্রেকিং এন্ড রিসাইকেলিং ইন্ডাস্ট্রিজ

গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড বা পরিবেশবান্ধব কারখানা পুরস্কার পেয়েছে পিএইচপি শীপ ব্রেকিংএন্ড রিসাইকেলিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথিদের হাত থেকে এ পুরস্কার নেন পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবায় একুশে পদক পাওয়া সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও পিএইচপি শীপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম রিংকু।
উল্লেখ্য, এ বছর গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ৩০টি প্রতিষ্ঠান। পরিবেশবান্ধব কার্যপদ্ধতি, জ্বালানি দক্ষতা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং কর্মপরিবেশে উৎকর্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
নিট তৈরি পোশাক খাত থেকে পুরস্কার পেয়েছে নরসিংদীর পলাশের চরকা টেক্সটাইল, গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ইকোটেক্স ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ফকির ফ্যাশন। ওভেন তৈরি পোশাক খাত থেকে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার তারাসিমা অ্যাপারেলস, গাজীপুরের জিরানী বাজারের আউকু টেক্স ও ময়মনসিংহের স্কয়ার ফ্যাশন পুরস্কার পেয়েছে।
বস্ত্র খাতের চারটি প্রতিষ্ঠান এবার পরিবেশবান্ধব কারখানার পুরস্কার পেয়েছে। সেগুলো হচ্ছে মানিকগঞ্জের চরকান্দার আকিজ টেক্সটাইল মিলস, হবিগঞ্জের মাধবপুরের পাইওনিয়ার ডেনিম, চট্টগ্রাম চান্দগাঁওয়ের কেডিএস টেক্সটাইল মিলস ও পটিয়ার ফোর এইচ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং। অটোমোবাইল খাতের একটিমাত্র প্রতিষ্ঠান পুরস্কার পেয়েছে। সেটি হলো চট্টগ্রামের নাসিরাবাদের সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ।
ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক পণ্য প্রস্তুতকারক খাতের তিনটি প্রতিষ্ঠান পুরস্কার পাচ্ছে। সেগুলো হলো নরসিংদীর শাষপুরে অবস্থিত ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস, নরসিংদীর শিবপুরের ফেয়ার ইলেকট্রনিকস ও গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ।
সরঞ্জাম ও সংযোগশিল্প খাত থেকে একমাত্র পুরস্কার পেয়েছে ঢাকার ধামরাইয়ের আদজি ট্রিমস। খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে পুরস্কার পাচ্ছে ধামরাইয়ের আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো। চা–শিল্প থেকে পুরস্কার পেয়েছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের জেরিন চা-বাগান ও মির্জাপুর চা-বাগান।
চামড়াশিল্প (তৈরি পণ্য) খাতের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে ময়মনসিংহের ভালুকার সুনিভার্স ফুটওয়্যার। এ ছাড়া পাট খাতে রংপুরের রবার্টগঞ্জের কারুপণ্য রংপুর, টাইলস অ্যান্ড সিরামিক খাতে গাজীপুরের শ্রীপুরের এক্স সিরামিক পুরস্কার পেয়েছে।
এ ছাড়া প্রসাধন খাতে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় রিমার্ক এইচবি ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের স্কয়ার টয়লেট্রিজ পুরস্কার পেয়েছে। ওষুধ খাতে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস।
জাহাজভাঙা ও জাহাজ নির্মাণ খাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ, খুলনার লবণচরার খুলনা শিপইয়ার্ড ও সীতাকুণ্ডের কেআর শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ড পরিবেশবান্ধব শিল্প হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে। এ ছাড়া সিমেন্ট খাতে গাজীপুরের কালীগঞ্জের সেভেন সার্কেল ও ইস্পাত খাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএসআরএম স্টিলস এবার পুরস্কার পেয়েছে।
পুরস্কার হিসেবে ট্রফি, সনদ ও এক লাখ টাকা পেয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
শিল্প-বাণিজ্য
জুলাই থেকে আমদানি-রপ্তানির সব সনদ অনলাইনে জমা বাধ্যতামূলক

আগামী জুলাই থেকেই আমদানি ও রপ্তানি পণ্যের ছাড়ের জন্য সব ধরনের সনদ অনলাইনে জমা দিতে হবে। ৩০ জুনের পর থেকে পণ্যের চালান শুল্কায়নের জন্য ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে গ্রহণ করা হবে না।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) এ-সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এতে বলা হয়েছে, ‘৩০ জুনের পর থেকে আমদানি ও রপ্তানি পণ্য চালান শুল্কায়নের ক্ষেত্রে ১৯টি সংস্থার ইস্যু করা সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (সিএলপি) অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডোর (বিএসডব্লিউ) মাধ্যমে দাখিল বাধ্যতামূলক করা হলো। ওই তারিখের পর কোনো ধরনের ম্যানুয়াল সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট গ্রহণ করা হবে না।’
এনবিআর জানিয়েছে, সংস্থাটির অধীনে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের আওতায় বিএসডব্লিউ সিস্টেম ইতিমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। বিএসডব্লিউ মূলত একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যা ব্যবহার করে একজন আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক পণ্য খালাসের জন্য প্রযোজ্য সব ধরনের সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিটের (সিএলপি) জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিএলপি সংগ্রহ করতে পারবেন। সিএলপি গ্রহণের আগে বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (বিআইএন) ব্যবহার করে বিএসডব্লিউ সিস্টেমে নিবন্ধন করতে হবে।
এনবিআর মনে করছে, এই সিস্টেম ব্যবহারের ফলে একটি কমন প্ল্যাটফর্মে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের জন্য প্রযোজ্য সার্টিফিকেট, লাইসেন্স এবং পারমিট-সংক্রান্ত সব কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা কর্তৃক যুগপৎভাবে অনলাইনে সম্পন্ন করা হবে; সরকারি কাজে ব্যক্তিগত যোগাযোগ (হিউম্যান ইন্টারেকশন) না থাকায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে; পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে সময় ও ব্যয় হ্রাস পাবে; দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বিএসডব্লিউ হতে ইতোমধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিটের সংখ্যা অদ্য ১৯ জুন তারিখে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ২ অতিক্রম করেছে। সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট সমূহের ৮৫.৭৬ শতাংশ একঘণ্টার কম সময়ে এবং ৯৪.৬৮ শতাংশ একদিনের কম সময়ে স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় ইস্যু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট ইস্যুকারী ১৯টি সংস্থার (ডিজিডিএ, ইপিবি, ডিওইএক্স,বিএনএসিডব্লিউসি, বিজিজেডএ, বিইপিজেডএ, ডিওই, বিএসটিআই, বিএইআরএ, বিএইসি, সিএএবি, বিটিআরসি, ডিওএফ, ডিএলএস, পিকিউডব্লিউ, বিআইডিএ, বিজিএমইএ, বিএকেএমইএ, বিএকএমইএ, সিসিআইঅ্যান্ডই) ক্ষেত্রে ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট বিএসডব্লিউ সিস্টেমের মাধ্যমে দাখিল করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এসএম
শিল্প-বাণিজ্য
প্লাস্টিক শিল্পের যন্ত্রপাতি আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক সুবিধা চান মালিকরা

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের কারণে গত দেড় বছরে দেশের প্লাস্টিক খাতের অধিকাংশ শিল্পপ্রতিষ্ঠান ক্ষতির মুখে পড়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় শিল্পটির বিকাশে আগামী (২০২৫-২৬) অর্থবছরে রপ্তানিমুখী প্লাস্টিক শিল্পের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও কাঁচামাল আমদানির ওপর শুল্কহার টেক্সটাইল শিল্পের মতো ১ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ)।
নতুন অর্থবছর আমদানি যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক সুবিধা চেয়ে সরকারের কাছে ১৫টি সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। তবে বিপিজিএমইএর অভিযোগ, প্রস্তাবিত বাজেটে প্লাস্টিক খাতের জন্য করা গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবগুলো উপেক্ষিত তথা বিবেচনা করা হয়নি।
বিপিজিএমইএ বলছে, প্লাস্টিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান এসআরও-এর অধীনে আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক সুবিধা দেওয়া হলে অর্থনীতিতে আরও ভালো অবদান রাখতে সক্ষম হবে। এর মাধ্যমে শুল্ক খাত আরও স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সক্ষম হবে। রপ্তানিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করবে।
বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর পল্টন টাওয়ারের বিপিজিএমইএ কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনটির সভাপতি সামিম আহমেদ। এসময় বিপিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সামিম আহমেদ বলেন, বর্তমানে প্লাস্টিক খাত একটি সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু উৎপাদন দক্ষতা ও আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে খাতটি কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি পাচ্ছে না। নতুন যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ও ভ্যাট জটিলতা অনেক প্রতিষ্ঠানকে নিরুৎসাহিত করছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটে বিগত দেড় বছরে প্লাস্টিক খাতের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান ক্ষতির মুখে পড়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকার যদি আমদানি যন্ত্রপাতিতে ১ শতাংশ শুল্ক সুবিধা দেয়, তবে খাতটি আরও প্রতিযোগিতামূলক ও বিকশিত হবে। একই সঙ্গে রপ্তানিও বাড়বে।
বর্তমানে টেক্সটাইল খাতের সংগঠনগুলোর (বিটিএমএ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিএলএমইএ, বিটিটিএলএমইএ, বিটিডিপিএ) সদস্যরা এসআরও নং-১২০-আইন/২০২১/০৯/কাস্টমস অনুযায়ী মাত্র ১ শতাংশ শুল্কে যন্ত্রপাতি আমদানির পাশাপাশি মূসক ও অন্যান্য শুল্ক থেকেও ছাড় পাচ্ছে।
বিপিজিএমইএ বলছে, প্লাস্টিক শিল্প একই সুবিধা পেলে এ খাত আরও দ্রুত বিকশিত হবে এবং দেশের রপ্তানি আয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।
সামিম আহমেদ বলেন, প্লাস্টিকের তৈরি সব ধরনের টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, গৃহস্থালি সামগ্রী উৎপাদন পর্যায়ে মূসকের হার প্রথমে ৫ শতাংশ, তারপর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাবটি সংশোধন করে মূসক ৫ শতাংশ আরোপ করার প্রস্তাব করছি। মূসক ১৫ শতাংশ করা হলে তৃণমূল পর্যায়ের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ দুর্ভোগ পোহাবে।