সারাদেশ
বিপৎসীমার কাছাকাছি তিস্তার পানি
উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের টানা বর্ষণে হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি। ফলে রংপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ওইসব অঞ্চলের। পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা ও ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে নদীপাড়ের মানুষ।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার দশমিক ৫ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে একই সময়ে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ২৯ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ এই পয়েন্টে বিপৎসীমার দশমিক ১ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ী, লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর এবং গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
ডিমলা উপজেলার ছোটখাতা গ্রামের জুলহাস মিয়া বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি এবং বাচ্চাদের নিয়ে বিপদে আছি।
বাইশপুকুর গ্রামের সলেমান আলী বলেন, পানিবন্দি হয়ে বৃদ্ধ, শিশু ও নারীদের নিয়ে চরম বিপদে পড়েছি। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি দিনের বেলায় রাস্তার উঁচু স্থানে রাখলেও রাতে কষ্ট বাড়ে। নির্ঘুম রাত কাটছে সবার।
এদিকে বন্যা-পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্র বলছে, রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের (≥৮৯ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা কমে এসেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন হ্রাস পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদীর পানি সমতল বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং জেলাসমূহের সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চল এবং কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরবর্তী দুই দিনে তিস্তা নদীর পানি সমতল হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার উপপ্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির চাপ সামলাতে তিস্তার ৪৪ জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে।
এদিকে ‘তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও’ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, অসময়ের বন্যা ও ভাঙনে প্রতি বছর ১ লাখ কোটি টাকার সম্পদ তিস্তার গর্ভে চলে যায়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নদী খনন, সংরক্ষণ ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা ছাড়া বিকল্প নেই।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
জেলা বিএনপির সভাপতির দখলদারিত্ব-প্রভাব বিস্তারে আতঙ্কিত চাঁদপুরবাসী
৫ই আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে হাসিনা ভারত পালানোর পরবর্তি সময়ে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতির শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের দখলদারিত্ব ও প্রভাব বিস্তারে বেপরোয়া হয়ে উঠার অভিযোগ রয়েছে।ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব নিয়ে বিএনপির কেন্দ্র থেকে সম্প্রতি শোকজও করা হয় চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মানিককে। সম্প্রতি আলজাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সামি চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতির অনৈতিক দখলদারিত্ব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে। পরবর্তীতে বিএনপির কেন্দ্র থেকে শেখ ফরিদ আহমেদকে শোকজ করা হলে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি।সম্প্রতি চাঁদপুর জেলা বিএনপির দলীয় অফিসের জন্য একটি পরিবারের বাড়ি দখলেরও অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানববন্ধনও করেছে মীর আহমদ আলী নামের চাঁদপুরের একটি পরিবার। এছাড়াও সম্প্রতি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে দালাল চক্র ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী জনতার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরবর্তীতে দালাল চক্রের পক্ষ নিয়ে সিভিল সার্জনকে হেনস্থা করার অভিযোগে জেলা বিএনপির সভাপতি সমালোচনার মুখে পড়েন। এ নিয়ে চাঁদপুর শহরে উত্তেজনা বিরাজ করে। এসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ফলে খোদ চাঁদপুর জেলা বিএনপির মধ্যেই ভিবক্তি দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, জেলা বিএনপির সভাপতির দখল, লুটপাট ও নৈরাজ্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখা-লেখির ফলে চাঁদপুর জেলা বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক কাজী ইব্রাহিম জুয়েল বহিষ্কার হয়। এর ফলে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ও জুয়েল প্রকাশ্যে দ্বন্ধে জড়ায়।
সূত্র মতে, চাঁদপুর জেলা বিএনপি সভাপতির দখল-লুটপাট চাঁদাবাজি ও ভয় ভীতি দেখানোর বিষয় নিয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ দেয় জুয়েল। একই সঙ্গে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচী পালনের অনুমতি নেয় সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জুয়েল।
এদিকে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন এবং সংবাদ সম্মেলনের উদ্যোগ নেয় কাজী ইব্রাহীম জুয়েল। তবে এই প্রতিবাদ কর্মসূচীতে হামলায় আহত হয় অর্ধশত।একই সঙ্গে জুয়েলের বাসা-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও তাঁর মালিকানাধীন পত্রিকা কার্যালয় ভাঙচুর-লুটপাট করে একদল দূর্বৃত্ত।ভুক্তভুগী জুয়েলের দাবি এই হামলার ইন্ধন দিয়েছে চাঁদপুর জেলা বিএনপি সভাপতি মানিক। কারণ হামলার সময় উপস্থিত ছিলেন মানিকের অনুগত চাঁদপুর জেলা ছাত্রদল সভাপতি- সাধারণ সম্পাদকসহ সসস্র সন্ত্রাসীরা।হামলায় কাজী ইব্রাহিমের ছেলেসহ গুরুতর আহত শতাধিক। এসময় বাসা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার, সিসিটিভি ডিভিআর, মূল্যবান জিনিসপত্র ও লগদ টাকা লুট করার অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানায়, কাজী ইব্রাহীম জুয়েলের বাসা-বাড়ী, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, হোটেল ও প্রত্রিকা কার্যালয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ব্যাপক হামলা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। হামলায় উপস্থিত নেতৃত্ব দেয় চাঁদপুর জেলা ছাত্রদল সভাপতি ইমাম গাজী , সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন পাটোয়ারী,সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান সোহাগ। এছাড়াও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, মেহেদী হাসান শাকিল, চাঁদপুর পৌর ছাত্রদল মামুন খান, চাঁদপুর সরকারি কলেজ সভাপতি সোহেল গাজী, জিসান আহমেদ মুরাদ (সভাপতি থানা ছাত্রদল), পারভেজ খান (সাধারণ সম্পাদক সদর থানা), জুনায়েদ খান (সাবেক সাধারণ সম্পাদক সদর থানা), মাসুদ মাঝি (যুগ্ম আহ্বায়ক স্বেচ্ছাসেবক দল, চাঁদপুর জেলা)। এসময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতাকর্মীদেরকে হামলা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট অংশগ্রহণ করতে দেখা যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এবিষয়ে ভুক্তভুগী কাজী জুয়েল অর্থসংবাদকে বলেন, গত ১৭ বছর আমি স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনে নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হয়েছি। অসংখ্যবার কারাবরণ করেছি। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়িতে অসংখ্যবার আওয়ামী সন্ত্রাসীর হামলা ও লুটপাট করেছে। তবুও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথ থেকে এক পাও সরে যাইনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে এবং নির্দেশে রাজপথে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছি। আমার কষ্টে উপার্জিত অর্থ দিয়ে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। আজকে ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে আমার সন্তানকে রক্তাক্ত করা হলো। আমাকে খুন করার চেষ্টা করেছে। এ বিচার আমি মহান আল্লাহর কাছে দিলাম।
এছাড়া আমি দলের পরিক্ষীত কর্মী। আমাকে দলের নেতাকর্মীরা ভালোবাসেন এবং আমি সুনাম ক্ষুন্ন যেন না হয় সেই জন্য জেলা বিএনপি সভাপতি অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেছি এটাই আমার অপরাধ। তাই আমার প্রতি ইর্শান্বিত হয়ে তিনি বার বার আমাকে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি আমার দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে এর সঠিক বিচার চাই।’
এ বিষয়ে শান্তিপ্রিয় ও সচেতন চাঁদপুর বাসির দাবি, এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। না হয় চাঁদপুরে বিএনপি জনপ্রিয়তা হ্রাস পেতে থাকবে । পাশাপাশি চাঁদপুরবাসীর জান ও মালের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বিভাগের হস্তক্ষেপ চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনে সাড়া দেননি। ফলে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার রবিক উদ্দিন অর্থসংবাদকে বলেন, আমরা সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। সঠিক তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।
এদিকে জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা নাম না প্রাকাশ করার শর্তে বলেন, আসলে জুয়েল শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের অন্যায়ের প্রতিবাদ করে দলের ইমেজ রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মানিক সাহেব তা সহ্য করতে পারেননি। তাই জুয়েলকে দল থেকে বহিস্কারের পথ বেছে নেন। শুধু বহিস্কার করেই ক্ষান্ত হননি এবার তিনি জুয়েলকে প্রাণে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ব্যাপারে বিএনপির উর্ধ্বতন মহল ব্যবস্থা না নিলে মানিক সাহেব জেলা বিএনপিকে শেষ করে দিবে এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই আমরা জেলা বিএনপি সভাপতির অনৈতিক কর্মকান্ডের ব্যাপারে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতি দাবী জানাই।
এদিকে প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানান, গতকাল ৯ ডিসেম্বর ইব্রাহীম জুয়েল এর বাসার মূল গেইট ভেঙ্গে হামলাকারী জুয়েলকে ঘেরাও করে হত্যার উদ্দেশ্যে তুলে নেওয়ার চেষ্টা চালায় এবং তার পূর্ব নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন যেন না করেন তার জন্য হুমকি দেন। এসময় তারা জুয়েলের কাছে সিসি টিভির ডিভিআর ও কম্পিউটার ল্যাপটপ তুলে দেওয়ার দাবী জানায়। এরপর তারা অস্ত্রের মুখে জোর পূর্বক অফিসের সকল কম্পিউটার ও সিসিটিভির ডিভিআর ও ক্যামেরাসহ সব খুলে নিয়ে যায়। তবে ইব্রাহীম কাজী জুয়েলকে পুলিশের সহযোগীতায় নিরাপদে সরিয়ে নেয় উপস্থিত বিএনপির, যুব দল ও ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মীরা।
অপর দিকে ইব্রাহীম জুয়েলকে না পেয়ে তাঁর একমাত্র ছেলে আফতাবকে কাছে পেয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তার অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। তাকে প্রথমে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় রেফার করলে তাকে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার অবস্থা আসঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তার পরিবার। এতিকে হামলায় ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারী এবং সাংবাদিক সহ প্রায় শতাধিক আহত হয়েছে বলে জানা যায়।
এদিকে ছাত্রদলের একটি সূত্র জানায় রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকেই জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদা মানিকের নির্দেশে ছাত্রদল-যুবদলের অসংখ্যা দুর্বৃত্ত ইব্রাহিম জুয়েল এর বাড়িতে হামলার ছক আঁকেন। সেই মোতাবেক পরিকল্পিতভাবেই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানান বিএনপি’র একাধিক সূত্র। হামলার সময় পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এবং চাঁদপুর কুমিল্লা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে ৮ ডিসেম্বর রোববার রাত থেকেই ছাত্রদল ও যুবদলের একটি অংশ চাঁদপুর শহর ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তারা শত শত মোটরসাইকেল চড়ে এবং দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার, নতুন বাজার এবং ষোলঘর এলাকায় মহড়া দেয়। জনমনে প্রীতি ও এত সৃষ্টি করতে মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। হঠাৎ করেই একেরপর এক ককটেল বিস্ফোরনের আওয়াজে কেঁপে ওঠে পুরো চাঁদপুর শহর। এতে চাঁদপুর কুমিল্লা মহাসড়কে যান চলাচলে ব্যাহত হয়। পরে পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে আতঙ্ক সৃষ্টিকারীরা সটকে পড়ে। পরের দিন গতকাল সোমবার সকাল থেকেই তারা চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার, নতুন বাজার এবং ষোলঘর এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নেয়। এরপর সন্ধ্যা পর্যন্ত মোটরসাইকেল এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করতে মহড়া দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নির্যাতিত সাবেক কয়েকজন নেতা জানানা, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদা মানিকের নির্দেশে বিএনপি ছাত্রদল যুবদলের একটি অংশ চাঁদপুর শহর জুড়ে এই তাণ্ডব এবং হামলা চালিয়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর যে সকল সাবেক ছাত্র নেতারা চাঁদপুরে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের দখল, লুটপাট ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল তাদের টার্গেট করে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
চাঁদপুর শহরে ককটেল বিস্ফোরণে জনমনে আতঙ্ক
চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত শহরের নতুন বাজার, পুরান বাজারসহ বিভিন্ন সড়কে মোটরসাইকেল মহড়া দেয় একদল দুর্বৃত্ত। এদের মধ্যে কয়েকজন বিস্ফোরক বস্তু ছুড়ে শহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সন্ধ্যার পর থেকে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মোটরসাইকেলে সওয়ার হয়ে দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্ফোরণ করতে থাকে। একে একে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঝলসে ওঠে। বিশেষ করে নতুন বাজার ও পুরান বাজারে বিস্ফোরণগুলোর তীব্রতা ছিল বেশি। এই বিস্ফোরণগুলো স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চাঁদপুরের সাধারণ মানুষ। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এভাবে দিনে-দুপুরে শহরে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো খুবই ভয়ানক। আমাদের সন্তানরা স্কুলে যায়, এমন পরিস্থিতিতে বাসায় থাকতে ভয় লাগছে।
এছাড়া, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শহরের ব্যবসায়ী এবং সাধারণ নাগরিকরা। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বাহার মিয়া জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং যারা এই বিস্ফোরণগুলোর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, শহরের প্রধান সড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করতে অভিযান চলমান রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
চট্টগ্রাম ইপিজেডে কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট
চট্টগ্রামের ইপিজেডে ছয়তলা একটি ভবনের চতুর্থতলায় থাকা একটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট কাজ করছে।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটের দিকে ইপিজেড বেপজা গেটের পাশে ইউনিটি অ্যাক্সেসরিজ নামে ওই কারখানায় আগুনের সূত্রপাত হয়।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কফিল উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
আ. লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ২ ইউপি সদস্য
নরসিংদীর রায়পুরায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও গুলিবিদ্ধ হয়ে এক নারীসহ ২ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ১০ জন। শরিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে জেলার রায়পুরা উপজেলার মেতিকান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো- রায়পুরার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের সামসু মিয়ার ছেলে ও চাঁন্দেরকান্দি ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য মানিক মিয়া (৫০) ও একই এলাকার আবু খালেক মিয়ার স্ত্রী ও চাঁন্দের কান্দি ইউনিয়নের সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য কল্পনা বেগম (৪২)। তারা আবিদ হাসান রুবেল এর সমর্থক।
বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে ভারত: রিজভী
আহতরা হলো- জুয়েল (৩০),রাব্বি (২২),সাব্বির (৩৮),আমির হোসেন (২১),টুটুল (৩৫),বাদল ভেন্ডার(৫৫),মারুফ মিয়া (১৫),সুফিয়া বেগম (৩৮)।
আব্দুল বাসেদ মেম্বার সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ও রায়পুরা আসনের এমপি রাজি উদ্দিন আহামেদ রাজুর সমর্থক। এবং যুবলীগ নেতা আবিদ হাসান রুবেলও রায়পুরা আসনের এমপি রাজি উদ্দিন আহামেদ রাজুর সমর্থক ছিল। তবে গেল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমপি রাজুর সমর্থন না পাওয়া এমপির সাথে তার দূরত্ব হয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহামেদ রাজুর এক সময়ের সমর্থক যুবলীগ নেতা আবিদ হাসান রুবেলের সাথে সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহামেদ রাজুর অপর সমর্থক বাসেত মেম্বারের দন্ধ চলে আসছিল। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে এই দন্দ্ব আরো তীব্র হয়। এরই জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সব সংঘর্ষে একাধিক ব্যক্তি নিহত ও আহত হয়। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী সুমন মিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করে যুবলীগ নেতা আবিদ হাসান রুবেল ও তার সমর্থকরা। এ ঘটনায় রুবেল সে গা ঢাকা দেয়। সম্প্রতি মামলায় জামিন নিয়ে এলাকায় এসে নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চালায়।
এতে প্রতিপক্ষ বাসেদ মেম্বার গ্রুপের সমর্থখরা বাধা দেয়। ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সর্বশেষ আজ শনিবার ভোরে অস্ত্র গোলাবারুদ ও দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এসময় প্রতিপক্ষ হামলা চালিয়ে আবিদ হাসান রুবেল এর সমর্থক সাবেক মেম্বার মানিক মিয়ার ও কল্পনা বেগম গুলিবিদ্ধ হয়। খবর পেয়ে রায়পুরা থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়। এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে জোড়া হত্যার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছে।
রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খান নুরউদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, গুলিবিদ্ধ দুই জনকে মৃতঅবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। এবং আহতবস্থায় ৬জন চিকিৎসা নিয়েছে।
নরসিংদী পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ান। এতে ২ জন নিহত হয়েছে। এলাকায় পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
পঞ্চগড়ের ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আনোয়ার হোসেন (৪০) নামে এক বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) ভোরে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের মোমিনপাড়া ও ভারতের শিংপাড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫১ এর ৮ ও ৯ নং সাব পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত আনোয়ার তেতুঁলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের দেবনগড় এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন বাংলাদেশি ভারতে গরু আনতে যান। শুক্রবার ভোরে গরু নিয়ে ফেরার পথে ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তরে দেশটির ৯৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের চানাকিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে এবং কয়েক রাউন্ড গুলি করেন। এতে রফিকুলের মৃত্যু হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে আনোয়ারের মরদেহ নিয়ে যায় বিএসএফ সদস্যরা।
এদিকে গুলির শব্দ পেয়ে এবং চোরাকারবারিদের প্রতিহত করতে আট রাউন্ড গুলি ফাঁকা গুলি করেন পঞ্চগড়ের ঘাগড়া বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরাও।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা বলেন, সীমান্তের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো হবে। পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মরদেহ ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার পরে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা থেকে চোরাচালানের একটি ভারতীয় গরু জব্দ করা হয়েছে।