অর্থনীতি
চার দফা বৃদ্ধির পর কমলো স্বর্ণের দাম

রেকর্ড দাম হওয়ার পর দেশের বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ১ হাজার ২৫৯ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এ দাম কমানো হয়েছে। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এর আগে গত ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর দু’দফা দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়। ২৬ ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম ৩ হাজার ৪৪ টাকা বাড়ানো হয়। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়ায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৮ টাকা। দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম।
এ রেকর্ড দাম হওয়ার তিনদিনের মাথায় এখন সোনার দাম কিছুটা কমানো হলো। শনিবার বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ২৫৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ২০১ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৩৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৮৭৪ টাকা কমিয়ে ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর সব থেকে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৩ হাজার ৪৪ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৮৯৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৪৯৬ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৯১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ১২২ টাকা বাড়িয়ে ৯৩ হাজার ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আজ বুধবার পর্যন্ত এ দামেই সোনা বিক্রি হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
বেড়েছে সবজি–মাছের দাম, কমেছে মুরগির

বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ কম, যে কারণে বাড়ছে দাম। এখন প্রায় অধিকাংশ সবজি কিনতে কেজিপ্রতি গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। আবার দাম বাড়ছে মাছেরও। ফলে বাজারে অস্বস্তিতে পড়ছেন ক্রেতারা। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। সেই সঙ্গে ডিম ও নানা ধরনের মুদি পণ্যের দাম আগের মতোই আছে। পেঁয়াজের দামও কয়েক সপ্তাহ বেড়ে এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় আটকে আছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে এমনটা।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, শীতের সবজির মৌসুম শেষ হয়ে গ্রীষ্মের মৌসুম পড়ছে। যে কারণে এ মাঝামাঝি সময়ে সবজির সরবরাহ কম। এতে প্রায় প্রতিটি সবজির কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, শীত মৌসুমের সবজি নিয়ে গত তিন-চার মাস সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে যে স্বস্তি ছিল, তা আর নেই। বাজারে এখন বেশিরভাগ সবজির দাম ৬০ টাকার ওপরে। কোনো কোনো সবজির দাম একশো পেরিয়ে গেছে।
কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল ও রামপুরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে এখন প্রতি কেজি পটোল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙা, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এরচেয়ে কমে শুধু পেঁপে পাওয়া যাচ্ছে, তাও ৪০-৫০ টাকা কেজিতে।
এদিকে করলা, বেগুন, বরবটি কিনতে খরচ করতে হচ্ছে কেজিতে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এরচেয়ে বেশি দর দেখা গেছে কাঁকরোলের দাম। গ্রীষ্মকালীন এসব সবজি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। সজিনার দর সবসময় কিছুটা বেশি থাকে। এর কেজি দেখা গেছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা।
তবে কারওয়ান বাজারে যেহেতু পাইকারি কেনাবেচা বেশি হয়, ফলে সেখানে সবজির দাম অন্য বাজারগুলোর চেয়ে কিছুটা কম।
হাতিরপুল বাজারের সবজি বিক্রেতা আবু কালাম বলেন, গ্রীষ্মের সবজি কেবল উঠতে শুরু করেছে। প্রতিবছর সিজন চেঞ্জের এসময়ে দাম বেশি থেকে। কিছুদিন গেলে আবার দাম কমবে।
এদিকে, মাছের বাজারেও বেশ চড়াভাব দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে চাষের মাছের সরবরাহ কিছুটা কম। এতে নদীর কিছু মাছের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি জাটকা ধরা বন্ধ থাকায় অনেক নদীতে মাছ আহরণ বন্ধ আছে।
যে কারণে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ইলিশসহ চিংড়ি মাছের দাম। প্রতি ৭০০ গ্রামের এক হালি ইলিশ ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ প্রতি পিস ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। ৪০০-৫০০ গ্রামের মাছের দাম ১২০০-১৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, দাম বেড়ে প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ১০০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে। এছাড়া কই, শিং, শোল, ট্যাংরা ও পুঁটির দাম বাড়তি। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙাশও আগের চেয়ে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি চাষের রুই -কাতলা ৩২০-৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা ও পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বিক্রেতা বুলু মিয়া বলেন, এখন চাষের মাছের সরবরাহ কম। এ কারণে নদীর মাছের চাহিদা বেড়েছে; দামও বেড়েছে।
অন্যদিকে, ঈদের পর থেকে চড়া পেঁয়াজের বাজার। এসময়ে কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে দাম। এখন বাড়তি দামে আটকে আছে। খুচরা পর্যায়ে ভালো মানের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। পাড়া-মহল্লায় এ দাম আরও ৫-১০ টাকা বেশি।
তবে মাংসের বাজারে এখন অনেকটাই স্বস্তি আছে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে বাড়তে থাকে মাংসের দাম। তখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২১০ থেকে ২৩০ টাকা দরে। একইভাবে সোনালি জাতের মুরগির কেজি ছিল ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা। এখন ব্রয়লার ১৭০-১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৭০-২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কিছুটা দাম কমেছে গরুর মাংসেরও। ঈদের আগে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়। এখন তা কমে ৭৫০ টাকায় মিলছে।
বেশ কয়েক সপ্তাহ নিম্নমুখী থাকা ডিমের দামে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। মাসখানেক ধরেই এ দামের আশপাশে রয়েছে ডিম।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সঞ্চয়পত্র কেনার চেয়ে ভাঙানোর প্রবণতা বেশি

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পঞ্চম মাস নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনার চেয়ে ভাঙছেন বেশি। আর গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের অধিকাংশ সময়েই নেতিবাচক ধারায় ছিল সঞ্চয়পত্র বিক্রি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সপ্তম মাস জানুয়ারিতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ঋণাত্মক ধারায় রয়েছে ৪ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা। মাসটিতে (জানুয়ারি) বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়েও (জানুয়ারি) সঞ্চয়পত্র বিক্রি ছিল ঋণাত্মক। গত অর্থবছরের ওই সময়ে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের ষষ্ঠ মাস ডিসেম্বরেও সঞ্চয়পত্র বিক্রি ঋণাত্মক ধারায় ছিল। এ মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ ৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল। চলতি অর্থবছরের পঞ্চম মাস নভেম্বরেও ঋণাত্মক ধারায় ছিল সঞ্চয়পত্র বিক্রি। নভেম্বরে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে ৩ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৭ মাসেও (জুলাই-জানুয়ারি) সঞ্চয়পত্রের মোট বিক্রি ঋণাত্মক পর্যায়ে রয়েছে। আলোচিত ৭ মাসে বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে প্রায় ৭ হাজার ১৩ কোটি টাকা। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়েও সঞ্চয়পত্র বিক্রি ছিল ঋণাত্মক। গতবার বিক্রির চেয়ে আগের আসল-সুদ বাবদ বেশি করতে হয়েছিল ৭ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
প্রয়োজনীয় সংস্কারেই দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে: বিশ্বব্যাংক

বিশ্ব অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা দুর্বল হয়ে পড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। তবে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে মধ্যমেয়াদে বাংলাদেশের প্রকৃত জিডিপি ধীরে ধীরে বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিশব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য হ্রাস এবং বিনিয়োগের অভাবের কারণে গত অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫.৮ শতাংশ থেকে কমে ৪.২ শতাংশে নেমে এসেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে এবং চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি আরও কমে ৩.৩ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। এছাড়া বিনিয়োগের মন্থরতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং আর্থিক খাতের দুর্বলতা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এখনো চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। তবে কিছুটা স্বস্তির খবর হচ্ছে রেমিট্যান্স প্রবাহে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি এবং রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাহ্যিক খাতের চাপ কিছুটা কমেছে।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার মনে করেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা জোরদার করতে এবং দ্রুত প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট সংস্কার প্রয়োজন। বাণিজ্য উন্মুক্ত করা, কৃষি খাতকে আধুনিকীকরণ এবং বেসরকারি খাতের গতিশীলতা বাড়ানোর এখনই উপযুক্ত সময়।
বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর ফর বাংলাদেশ গেইল মার্টিন আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করতে বাণিজ্য সহজ করা এবং অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায় বাড়াতে “সাহসী ও জরুরি সংস্কার” এর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ বিশ্বব্যাংকের ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ এর একটি অংশ। আঞ্চলিক এই প্রতিবেদনে ২০২৫ সালে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি ৫.৮ শতাংশে নেমে আসার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে অভ্যন্তরীণ সম্পদ একত্রীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে যেখানে প্রায়শই উচ্চ করের হার থাকা সত্ত্বেও এই অঞ্চলের কর রাজস্ব অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় কম।
রাজস্ব বৃদ্ধি করে কীভাবে একটি কঠিন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবেশে স্থিতিশীলতা আনা যায় সে বিষয়েও প্রতিবেদনে আলোকপাত করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এশিয়া অঞ্চলে এডিবির ৪০ বিলিয়ন ডলার উন্নয়ন সহায়তা

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বহুমাত্রিক উন্নয়ন প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে। ২০২৪ সালে নিজস্ব তহবিল থেকে ২৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার এবং অংশীদারদের সহযোগিতায় অতিরিক্ত ১৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয় সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) প্রকাশিত ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
কীভাবে এডিবি তার উন্নয়ন সহযোগী সদস্য দেশগুলোকে টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহনশীল উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে সহায়তা করেছে তা তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এডিবি প্রেসিডেন্ট মাসাতো কান্দা বলেন, আমাদের আর্থিক সক্ষমতা ও কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে। আমরা এখন উন্নয়ন প্রতিশ্রুতিকে বাস্তবে রূপান্তর করছি।
তিনি বলেন, আমরা আরও সাশ্রয়ী, দক্ষ জ্বালানি ও পরিবহন ব্যবস্থায় অর্থায়ন করছি। এমন একটি গতিশীল বেসরকারি খাত গড়ে তুলছি যা উন্নতমানের কর্মসংস্থান তৈরি করে। আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে একযোগে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি উজ্জ্বল আগামীর ভিত্তি তৈরি করছি।
২০২৪ সালে এডিবি মোট ২৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের মাধ্যমে ঋণ, অনুদান, ইক্যুইটি বিনিয়োগ, গ্যারান্টি ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছে, যা সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিতরণ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বেসরকারি খাতভিত্তিক প্রকল্প ও প্রোগ্রামের মাধ্যমে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক ৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করেছে— যা আগের বছরের তুলনায় ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। এতে ১০ লাখ সরাসরি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সরকার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি, মূলধন বাজার উন্নয়ন এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক আরও জানায়, আগামী দশকে ব্যাংকটি তার কার্যক্রম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে সক্ষম হবে। এছাড়া সংস্থাটির কৌশলগত কাঠামোতে বড় ধরনের হালনাগাদ এবং সবচেয়ে দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ সদস্য দেশগুলোর জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে রেকর্ড পাঁচ বিলিয়ন ডলার পুনঃঅর্থায়ন নিশ্চিত করা হয়েছে।
২০২৪ সালে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থাকে আরও উৎপাদনশীল ও সহনশীল করা, চরম আবহাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস, পরিবেশগত অবক্ষয় এবং জীববৈচিত্র্য হ্রাস প্রতিরোধে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এডিবি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশকে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা দেবে বিশ্বব্যাংক

বাণিজ্য সম্প্রসারণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক করার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে ৮৫ কোটি ডলার ঋণ দিবে বিশ্বব্যাংক। দেশীয় মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ১০ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। ঋণের এই অর্থ দুটি প্রকল্পে ব্যয় করতে পারবে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস সূত্র নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ ঋণ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার সিদ্দিকী এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর ফর বাংলাদেশ গেইল মার্টিন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং দক্ষিণ এশিয়ার জন্য বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংক জানায়, বাংলাদেশকে দেওয়া আর্থিক প্যাকেজের মধ্যে দুটি প্রধান প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে একটি ‘বে-টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’। ৬৫ কোটি ডলার ব্যয় করা হবে এই মেগা প্রকল্পে। বে-টার্মিনাল গভীর সমুদ্র বন্দরের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে। এর ফলে বন্দরের জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষমতা বাড়বে এবং পরিবহন খরচ ও সময় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।
বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই বন্দরের উন্নয়ন বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন গতি সঞ্চার করবে এবং প্রতিদিন প্রায় এক মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। বৃহত্তর জাহাজ আগমনের সুবিধা তৈরি হওয়ায় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ আরও সুদৃঢ় হবে। এ ছাড়াও প্রকল্পটি নারী উদ্যোক্তা এবং বন্দর পরিচালনায় নারী কর্মীদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
চুক্তির বাকি ২০ কোটি ডলার ব্যয় করা হবে ‘স্ট্রেন্থেনিং সোশ্যাল প্রোটেকশন ফর ইম্প্রুভড রেজিলিয়েন্স, ইনক্লুশন, অ্যান্ড টার্গেটিং (এসএসপিআইআরআইটি)’ প্রকল্পে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ সরাসরি নগদ অর্থ ও জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবে। এক্ষেত্রে যুব, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, নারী এবং জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের শ্রমিকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এ ছাড়া আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একটি জাতীয় ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি তৈরি করা হবে, যা প্রকৃত সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের কাছে সহায়তা পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোক্তা তৈরি, ক্ষুদ্রঋণ এবং পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অন্যষ্ঠানে ইআরডি শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং দেশের উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষা অর্জনে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের একটি শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্ব রয়েছে। এই প্রকল্পগুলো দেশের জলবায়ু স্থিতিশীলতা এবং একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
আর বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি গেইল মার্টিন বলেন, টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে থাকতে হলে বাংলাদেশকে তার জনসংখ্যার জন্য, বিশেষ করে প্রতি বছর শ্রমবাজারে প্রবেশকারী প্রায় ২০ লাখ যুবকের জন্য মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। বাণিজ্য ও রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সবচেয়ে দুর্বলদের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি থেকে উত্তরণে ও চাকরির বাজারের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে একটি গেম-চেঞ্জার হবে বিশ্বব্যাংকের এই আর্থিক প্যাকেজটি।
কাফি