জাতীয়
দ্রুত অনুমোদন পাচ্ছে সোনালী ব্যাগ কারখানা ও বৈদ্যুতিক বাস কেনার প্রকল্প
দীর্ঘ দিন ধরে অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ঝুলে থাকা পরিবেশবান্ধব ও স্বল্প খরচের প্রকল্পগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে।
সরকার পরিবর্তনের পর পরিবেশগতভাবে টেকসই দুটি উদ্যোগের দ্রুত অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পরিকল্পনা কমিশন—একটি পাটের ব্যাগ তৈরির কারখানা স্থাপন, অপরটি ঢাকায় বৈদ্যুতিক বাস চালু করা।
পরিকল্পনা কমিশন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূ্ত্র জানায়, পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাট থেকে পরিবেশবান্ধব ও পচনশীল ‘সোনালী ব্যাগ’ উদ্ভাবন হয় ২০১৬ সালে। ২০১৭ সাল পরীক্ষামূলকভাবে বাজারজাত করা হয় শপিং ব্যাগটি।
কিন্তু এর পর বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) উদ্যোগের আওতায় সোনালী ব্যাগ উৎপাদনে কারখানা স্থাপনের প্রকল্প প্রস্তাব তৈরিতেই কেটে যায় ছয় বছর। ২০২৩ সালের শুরুর দিকে প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। তারপর আবার দেড় বছর পরিকল্পনা কমিশনে আটকে থাকে প্রস্তাবটি।
অবশেষে ২৬ সেপ্টেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির পর্যালোচনার পর প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) কাছে জমা দেওয়া হবে।
সোনালী ব্যাগের আবিষ্কারক করেন মোবারক আহমদ খান। তিনি বর্তমানে বিজেএমসির প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি বলেন, বিগত সরকারের উদ্যোগের ঘাটতি ছিল বলে আবিষ্কারের পর প্রকল্প প্রস্তাব তৈরিতে লম্বা সময় লেগেছে।
‘এখন অনুমোদন প্রক্রিয়া আবার শুরু হয়েছে। তবে শেষপর্যন্ত প্রস্তাবিত কারখানটি হবে কি না, তা নিয়েও অশ্চিয়তা রয়েছে,’ বলেন তিনি।
মোবারক আহমদ খান আরও বলেন, এ প্রকল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন দেশ সোনালী ব্যাগে আগ্রহ দেখিয়েছে। প্রয়োজনে বেসরকারিভাবেও এ ব্যাগ উৎপাদন সম্ভব। তবে সেক্ষেত্রে সরকারের নীতি সহায়তার প্রয়োজন হবে।
বিজেএমসি তাদের প্রস্তাবিত প্রকল্পে ডেমরায় লতিফ বাওয়ানি জুট মিলসের জায়তায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সোনালী ব্যাগ উৎপাদনের জন্য পাইলট কারখানার প্রস্তাব করেছে। এ প্রকল্পে সীমিত আকার বাণিজ্যিক উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত কারখানায় বছরে ১ হাজার ৫০০ টন সোনারী ব্যাগ ও পলিথিনের বিকল্প মোড়ক সামগ্রী উৎপাদিত হবে। প্রতিদিন গড়ে উৎপাদন হবে ৫ টন পলিমার ব্যাগ।
বৈদ্যুতিক বাস
১২টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বৈদ্যুতিক বাস কিনতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) প্রকল্পেরও দ্রুত অনুমোদন শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
বিআরটিসির প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের আওতায় মোট ৪৯.৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ১২টি বৈদ্যুতিক বাস কেনা হবে। প্রতিটি বাসের মূল্য ধরা হয়েছে ২.৯৫ কোটি টাকা এবং দুটি চার্জিং স্টেশন স্থাপনের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮.৪০ কোটি টাকা। এ প্রস্তাব নিয়ে সোমবার প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, ৫০ কোটি টাকার কম ব্যয়ের প্রকল্প মন্ত্রী বা উপদেষ্টা পর্যায়ে অনুমোদিত হতে পারে, একনেক উপস্থাপনের প্রয়োজন নেই। মন্ত্রী বা উপদেষ্টা পর্যায়ে অনুমোদন হয় বলে এসব প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।
তারা আরও বলেন, বিগত সরকারের আমলে প্রস্তাব করা বড় আকারের বৈদ্যুতিক বাস প্রকল্পের প্রকল্পের বিভিন্ন অঙ্গের ব্যয় প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি ছিল পরিকল্পনা কমিশনের।
উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালে কোরিয়ার ঋণে ৩৪০টি বৈদ্যুতিক বাস কেনার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল । ১৪০টি সিএনজিচালিত সিঙ্গেল ডেকার এসি সিটি বাস ও ১৫ শতাংশ খুচরা যন্ত্রাংশসহ কিনতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৭১.৬০ কোটি টাকা।
এছাড়া ২০০টি সিএনজিচালিত সিঙ্গেল ডেকার এসি ইন্টারসিটি বাস কেনায় খরচ ধরা হয়েছিল ৬৫৯.৬৫ কোটি টাকা। ভারতীয় ঋণে ১০০টি দ্বিতল বৈদ্যুতিক বাস কেনার প্রস্তাবও ছিল।
বিআরটিসির পরিচালক কর্নেল মোহাম্মদ মোবারক হোসেন মজুমদার বলেন, বৈদেশিক অর্থায়নের বৈদ্যুতিক বাস কেনার প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলো পাইপলাইনে থাকবে।
‘বাসের চাহিদা পূরণে সরকারি অর্থায়নের বাস কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বিআরটিসি,’ বলেন তিনি।
বর্তমানে বিআরটিসির বহরে ১ হাজার ৩৫০টি বাস রয়েছে। বিআরটিসি তার বর্তমান বাস বহর দিয়ে জনগণের বিশাল পরিষেবার চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট সক্ষম নয় বলে জানান সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে শীঘ্রই ৮০০ বাসের আয়ুষ্কাল শেষ হবে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে আয়ুষ্কালের হিসেবে মোট সচল বাসের সংখ্যা ৫৫০ হবে। তাই নতুন বাস সংগ্রহের পরিকল্পনা করা খুবই জরুরি বলে জানান বিআরটিসির কর্মকর্তারা।
নতুন প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে পরিবহন বহরের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ বৈদ্যুতিক বহরে রূপান্তরের লক্ষ্য রয়েছে। এছাড়াও ২০৩০ সালের মধ্যে ডিজেল ও অকটেনচালিত বাস বিশ্বব্যাপী পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাবে। ২০৩৫ সালের পর অটোমোবাইল উৎপাদনকারীরা আর ডিজেল ইঞ্জিনের গাড়ি তৈরি করবে না। তাই এখনই বিআরটিসির বহরে বৈদ্যুতিক গাড়ি যুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তা না হলে হঠাৎ করেই বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ভোটার তালিকা হালনাগাদে ইসির প্রস্তুতি
আগামী বছর বাড়িবাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটকে (ইটিআই) আগাম প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলেছে সংস্থাটি।
ইসির অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ ইতোমধ্যে নির্দেশনাটি ইটিআই মহাপরিচালক এসএম আসাদুজ্জামানকে পাঠিয়েছেন।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরুর পূর্বেই প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণসহ সকল প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে হবে এবং তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারদের জন্য নির্দেশিকা এবং তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষক নির্দেশিকা মুদ্রণের জন্য চূড়ান্ত করতে হবে।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, প্রতি বছর ১ জানুয়ারি অনুযায়ী হালনাগাদ ভোটার তালিকা হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত ১৭ লাখ তথ্য আমাদের হাতে আছে, যেটা ১ জানুয়ারি ২০২৫ সালে আমরা সন্নিবেশ করবো এবং তারা নতুন ভোটার হিসেবে তালিকায় যুক্ত হবেন। তবে পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে এই তথ্যটা পূর্ণাঙ্গ হয় না। কারণ অনেকেই অফিসে এসে নিবন্ধন সম্পন্ন করেন না। আনুমানিক ৪৫ লাখ হতে পারতো এই সংখ্যাটা। আমাদের হাতে যে ১৭ লাখ তথ্য আছে তার মধ্যে ১৩ লাখ আমরা ২০২২ সালে সংগ্রহ করেছিলাম। আর বাকি চার লাখ আমাদের বিভিন্ন অফিসে এসে এই বছরে নিবন্ধন করেছে। অর্থাৎ আমাদের ধারণা ২৭ থেকে ২৮ লাখ ভোটার, কম-বেশি হতে পারে, যারা কিন্তু ভোটার হওয়ার যোগ্য।
তিনি আরও বলেন, যারা বাদ পড়লেন আমরা চাই তারা ভোটার তালিকায় যুক্ত হোক৷ এজন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের তথ্য সংগ্রহ করবো। এই বাদপড়া ভোটাররা ছাড়াও ২০২৫ সালে যারা ভোটার হবেন অর্থাৎ ২০২৬ সালের ১ জানুযারি যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য হবেন তাদের তথ্যও আমরা বাড়িবাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করবো। আগামী বছর মার্চের পর থেকে এই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।
সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার রয়েছে ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের নৌ ধর্মঘট শুরু
এমভি আল-বাখেরা জাহাজে নিহত সাত শ্রমিকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, নৌপথে চাঁদাবাজি বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে পণ্যবাহী নৌযান শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, এমভি আল-বাখেরা জাহাজে নির্মম হত্যাকাণ্ডে মাস্টারসহ সাত শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন, হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার, নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য সরকারিভাবে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা, সব নৌপথে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি ডাকাতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এজন্য বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন ঘোষিত ২৬ ডিসেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিট অর্থাৎ ২৭ ডিসেম্বর সূচনালগ্ন থেকে মালবাহী, তৈল-গ্যাসবাহী, বালুবাহীসহ সব ধরনের পণ্যবাহী নৌযানের শ্রমিকরা লাগাতার কর্মবিরতি শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে বেসিক ইউনিয়ন ও শাখার নেতারাসহ সব নৌযান শ্রমিকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে ফেডারেশন।
তবে যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগের বিষয় বিবেচনা করে আপাতত সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সচিবালয়ে আগুন: সংগ্রহ করা হয়েছে সিসিটিভি ভিডিও
সচিবালয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিকে সহায়তা করতে সচিবালয়ের অভ্যন্তরে স্থাপিত সিসিটিভি থেকে ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, সচিবালয়ের স্পর্শকাতর স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি সরকার খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
২৬ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।
সচিবালয়ে সিসিটিভি রয়েছে কি না, কিংবা ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।
সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সচিবালয়ের নিরাপত্তার জন্য একজন এসপি, একজন অ্যাডিশনাল এসপি ও একজন এএসপিসহ সাড়ে পাঁচশরও বেশি নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। এছাড়া সচিবালয়ে সাতটি টাওয়ার রয়েছে, সেগুলোতেও গার্ড থাকেন।
ব্রিফিংয়ে সরকারের নানান উদ্যোগের কথা জানাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয় উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তায় সতর্ক সেনাবাহিনী
দেশের গুরুত্বপূর্ণ বা কেপিআইভুক্ত স্থাপনার সার্বিক নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী সতর্ক অবস্থানে আছে বলে জানিয়েছেন সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের বনানী অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, এসব স্থানের নিরাপত্তা দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আমরা একযোগে কাজ করে যাচ্ছি।
‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের’ আওতায় মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে সচিবালয়ে আগুনের ঘটনার বিষয়ে কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত করা হবে, সেখানে আগুন লাগার প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এ লক্ষ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সার্বিক সহযোগিতা করছে সেনাবাহিনী।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় চাপ নেওয়ার জন্যই সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তবে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে সেনাবাহিনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।
কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, আইন-শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে অনেক ঘটনা ঘটছে তবে অবনতি হয়নি। এক্ষেত্রে পুলিশসহ অন্যান্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহনশীল রাখতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী।
মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কক্সবাজারে সেনাবাহিনী সর্তক অবস্থানে আছে। ফলে সেখানে সার্বভৌমত্বের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেই। এছাড়া রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো কাজ করছে।
বান্দরবানে ত্রিপুরাদের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ঘটেছে বলেও জানান কর্নেল ইন্তেখাব।
এ সেনা কর্মকর্তা জানান, সেনাবাহিনী কতদিন মাঠে দায়িত্ব পালন করবে, এটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দেশের জনগণের জানমাল এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা প্রদানসহ সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
চট্টগ্রামে বিমানের বোয়িং উড়োজাহাজ জব্দ
চোরাচালানের স্বর্ণ বহনের অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ জব্দ করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিমানটি জব্দ করা হয়।
এর আগে সকালে বিমানটি দুবাই থেকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছালে একটি আসনের নিচ থেকে দুই কেজির বেশি স্বর্ণ জব্দ করা হয়। এ সময় রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানা এলাকার আতিয়া সামিয়া নামের এক যাত্রীকে আটক করা হয়। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি স্বর্ণ দোকানের বিক্রয়কর্মী বলে জানিয়েছেন কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
এর আগে স্বর্ণ চোরাচালানের ঘটনায় শাহজালালে বিমান জব্দ করা হলেও শাহ আমানতে এবারই প্রথম।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১৪৮ ফ্লাইটটি দুবাই থেকে এসে সকালে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফ্লাইটে তল্লাশি চালায় জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসআই), শুল্ক গোয়েন্দা ও বিমানবন্দর নিরাপত্তা শাখার সদস্যরা। তল্লাশির সময় ৯-জে নম্বর যাত্রী আসনের নিচে টেপ দিয়ে মুড়িয়ে বিশেষ কৌশলে রাখা ২০টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। জব্দ করা ২৪ ক্যারেটের স্বর্ণের বারগুলোর ওজন দুই কেজি ৩৩০ গ্রাম। যেগুলোর বাজার দর প্রায় দুই কোটি ৬০ লাখ টাকা।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, বিমানের আসনের নিচে যেভাবে স্বর্ণের বারগুলো রাখা হয়েছিল, সেগুলো বিমানের কারও সহায়তা ছাড়া রাখা সম্ভব না। তাই তদন্তের স্বার্থে কাস্টমস আইন অনুযায়ী, বিমানটি জব্দ করা হয়েছে। বিমানটি জব্দ করা হলেও সেটি বৃহস্পতিবার সকালে শাহ আমানত বিমানবন্দরে যাত্রী নামিয়ে বেলা ১১টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, স্বর্ণ উদ্ধার করা বিমানটি জব্দ করা হয়েছে, যেন বাংলাদেশ বিমানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা যায়। তারা মনে করছেন, বিমানের আসনের নিচে স্বর্ণ লুকিয়ে রাখা যাত্রীর পক্ষে সম্ভব না। এটাতে বিমানে কেউ জড়িত কি-না, বিমানের ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহসহ তল্লাশি বা নিরাপত্তায় কোনো গাফিলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখতে কাগজ-কলমে বিমানটি জব্দ করা হয়েছে। কিন্তু যাত্রী পরিবহন চলবে।