জাতীয়
বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস আজ
আজ (২৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাজধানীসহ সারা দেশে র্যালি ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছে।
এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘জলাতঙ্ক নিমূলে প্রয়োজন সব প্রতিবন্ধকতা নিরসন’।
এবারের প্রতিপাদ্যে- জলাতঙ্ক নির্মূলে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা, সমতার গুরুত্ব এবং সামগ্রিক ব্যবস্থাকে ওয়ান হেলথ এর মাধ্যমে সম্পন্ন করার বিষয়গুলোতে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
সম্প্রতি কুকুর-বিড়ালসহ অন্যান্য প্রাণীর আক্রমণের শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। গত বছর প্রাণীর কামড়-আঁচড়ে আক্রান্ত ৫ লাখেরও বেশি মানুষ জলাতঙ্কের টিকা নিয়েছেন। এতে জলাতঙ্কে আক্রান্ত রোগীর বহুলাংশে সংখ্যা কমেছে। বাংলাদেশে ২০১০ সালের আগে প্রতিবছর জলাতঙ্ক রোগে ২০০০ এর বেশি মানুষ মারা যেত, যা ২০২৩ সালে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪২ জনে। তার আগের বছর ছিল ৪৪ জন। মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মরণঘাতী জলাতঙ্ক বহু পুরোনো সংক্রামক রোগ। এই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে মৃত্যু অনিবার্য। তবে সময়মতো সঠিক ব্যবস্থা তথা টিকা গ্রহণ করলে এ রোগ শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য। কুকুর, বিড়াল, বানর, বেজি ও শিয়ালের কামড় বা আঁচড় দিলে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষারযুক্ত সাবান পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান কমপক্ষে ১৫ মিনিট ধুয়ে নিতে হবে। সঙ্গে যথাসময়ে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা নিলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করে। স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রাণিসম্পদ ও স্থানীয় সরকার বিভাগের যৌথ উদ্যোগে ২০১১-১২ সাল থেকে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূল কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কৌশল পত্র প্রস্তুত করে দেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়ে এবং তা বাস্তবায়নে রোডম্যাপ তৈরি করা হয়। আর এসব বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছে জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর মাধ্যমে সারাদেশে সব জেলা সদর হাসপাতাল ও ৩৩৮টির বেশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমের দেশের সব উপজেলায় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
রাজধানী ঢাকার মহাখালীতে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল ও ঢাকার ৫টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে জলাতঙ্কের আধুনিক চিকিৎসা কার্যক্রমও পরিচালিত হচ্ছে। কুকুর বা অন্যান্য প্রাণীর কামড়ের ঘটনায় এসব কেন্দ্রে আধুনিক চিকিৎসার পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্নভাবে বিনামূল্যে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা দেওয়া হচ্ছে।
জাতীয় গাইডলাইন অনুসারে বর্তমানে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের পূর্ণ ডোজ তিনটি (০, ৩ ও ৭) দিনে নির্ধারণ করা হয়। এর ফলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় রোগীদের অর্থ ও সময়, দুই-ই সাশ্রয় হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সব সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে। যা দক্ষিণ এশিয়ায় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ল্যাবে প্রাণীদেহে জলাতঙ্কের জীবাণু নিশ্চিতকরণের কাজ করছে। এতে নির্দিষ্ট স্থানে এ রোগের উপস্থিতি ও প্রাদুর্ভাব নির্ণয় করে মানুষ ও প্রাণিদেহে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর নির্ভর করে পরিবেশে জলাতঙ্কের প্রধান উৎস কুকুরের মধ্যে ব্যাপকহারে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
তরুণ নাগরিকদের পেছনে বিনিয়োগ করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
দেশের তরুণদের ভূমিকার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশ্ব নেতাদেরকে একটি স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গঠনে নিজ দেশের তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনায় বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “বাংলাদেশ গত জুলাই ও আগস্টে যে যুগান্তকারী পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করেছে, তার জন্য আমি জাতিসংঘের এই সংসদে দাঁড়িয়ে আছি।”
‘জনগণের শক্তি’ বিশেষ করে যুবসমাজ বাংলাদেশিদের স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসন থেকে মুক্ত করতে সহায়তা করেছে।
মানবিক মর্যাদা, স্বাধীনতা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে বাংলাদেশকে রাজনৈতিক চেতনার নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যুব নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের কৃতিত্বও দেন তিনি।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অধ্যাপক ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, “এই রূপান্তর চ্যালেঞ্জমুক্ত নয়, তবে জনগণ, বিশেষ করে যুবসমাজের সহনশীলতা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের দৃঢ় সংকল্প আরও ন্যায়সঙ্গত ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করছে।”
প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা এবং সকল নাগরিকের মানবাধিকার নিশ্চিত করার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন এবং শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য তার দেশের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, “আমাদের জনগণ অসাধারণ সাহসিকতার সঙ্গে স্বাধীনতা ও তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছে। আজকের তরুণরা ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার ও সাম্যের জন্য সেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।”
তিনি তার ভাষণে এমন একটি পরিবেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান, যেখানে তরুণরা উন্নতি করতে পারে, উদ্ভাবন করতে পারে এবং নেতৃত্ব দিতে পারে।
বৈশ্বিক পর্যায়ে অধ্যাপক ইউনূস তরুণদের ক্ষমতায়ন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বের তরুণরাই দারিদ্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈষম্যের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কেন্দ্রীভূত।
তিনি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই বিশ্ব তৈরি করতে তাদের তরুণ নাগরিকদের সম্ভাবনায় বিনিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে তরুণদের সক্রিয়তার ঐতিহ্য এবং এর ভবিষ্যৎ গতিপথ তুলে ধরে তার বক্তব্য শেষ করেন।
দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শিক্ষা কীভাবে আজকের যুবকদের কর্ম ও আকাঙ্ক্ষায় প্রতিধ্বনিত হয় তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিশ্ব হয়তো দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে, তবে আমাদের যুবসমাজ যে মূল্যবোধকে সমর্থন করছে, তা চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের তরুণরা দেখিয়েছে যে, স্বাধীনতা, মর্যাদা ও মানুষের অধিকার সমুন্নত রাখা শুধু উচ্চাকাঙ্খা হয়েই থাকতে পারে না- এটি পদ-ভেদাভেদ নির্বিশেষে সবার প্রাপ্য।”
বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বেশ ব্যস্ত অবস্থান ও ধারাবাহিক বৈঠক শেষে শুক্রবার রাতে ঢাকার উদ্দেশে নিউইয়র্ক ত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস ও তার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা নিউইয়র্ক সময় রাত সাড়ে ৯টায় জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন এবং শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটে (ঢাকা সময়) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ইউএনবিকে জানান, এখানে চারদিন অবস্থানকালে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে প্রায় ৪০টি বড় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
আলম বলেন, অধ্যাপক ইউনূস ২৬ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ ১৬টি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্তত ১২ জন বিশ্ব নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
সবার জন্য স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘নতুন বাংলাদেশ’র সঙ্গে নতুনভাবে সম্পৃক্ত হতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৯তম অধিবেশনে ড. ইউনূসের ভাষণে এই আহ্বান জানানো হয়।
‘এটি একটি যুগান্তকারী বক্তব্য ছিল’ উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ভাষণে বাংলাদেশের সমস্যা ছাড়াও বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা বিষয় উঠে এসেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস আজ
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর, আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস। বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে।
দিবসটির এ বছরের নির্ধারিত প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘রাষ্ট্রের মূলধারায় তথ্য অধিকারের সংযুক্তি এবং সরকারি খাতের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ’।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ তথ্য কমিশন দেশীয় প্রেক্ষাপটে ‘তথ্য জানার অধিকার দিবস-২০২৪’ এর স্লোগানের শিরোনাম দিয়েছে ‘কর্তৃপক্ষের সকল দ্বার, খুলে দেবে তথ্য অধিকার’।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস-২০২৪ উপলক্ষে শুক্রবার বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে তিনি সমাজ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর জনগণের ক্ষমতায়ন সুদৃঢ় করতে সঠিক তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সব বাধা দূর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
অন্যদিকে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) তথ্য কমিশনকে ঢেলে সাজানো ও বিদ্যমান তথ্য অধিকার আইনের সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি বাকস্বাধীনতা ও তথ্যের অবাধ অভিগম্যতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বপ্নের ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অপরিহার্য হিসেবে গণ্য করে তথ্য কমিশনকে দলীয়করণের সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করে এর আমূল সংস্কার এবং সর্বজনীন তথ্য অধিকার, প্রবেশগম্যতা ও জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তথ্য অধিকার আইনের যুগোপযোগী সংশোধনসহ ১৩ দফা সুপারিশ উত্থাপন করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
মালদ্বীপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে তারা বৈঠক করেন। বৈঠকে মালদ্বীপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন ড. ইউনূস। খবর বাসস
এ সময় দুই নেতা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন, সার্ক সক্রিয়করণ, জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণা সহযোগিতা এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক সম্প্রসারণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা মালদ্বীপের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্কের আহ্বান জানিয়ে বলেন, দুই দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের গুরুতর প্রভাবসহ অনেক কিছু ভাগ করে নিয়েছে।
জলবায়ু সংকটের কারণে উদ্ভূত বিপদের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমাদের পুরো অস্তিত্বই ঝুঁকির মুখে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট দেশের নির্মাণ ও পর্যটন খাতে বাংলাদেশের শ্রমিকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
মোহাম্মদ মুইজু বলেন, দুদেশ পর্যটন, মৎস্যসম্পদ এবং জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণায় একসঙ্গে কাজ করতে পারে। তিনি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত করার আহ্বান জানান।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করলে তা দুদেশের মানুষের জন্য উপকারী হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি সার্কের সক্রিয়তাকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ঘনিষ্ঠ সংহতকরণের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখতে চান। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা কাছাকাছি থাকব। আমাদের দূরে থাকা উচিত নয়।
এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস বলেছেন জলবায়ু সংকট মোকাবিলার পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতিকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের মতো জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে জলবায়ু অভিযোজনের জন্য শক্তিশালী সম্পদ কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাংলায় দেওয়া ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে আমাদের জীবন রক্ষাকারী প্রযুক্তিগুলোর সুবিধা দরকার, বিশেষত কৃষি, পানি বা জনস্বাস্থ্যে, যেখানে পরিমিত সমাধান বা উদ্ভাবন লাখ লাখ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে বাঁচাতে পারে।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সবার জন্য অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এই গ্রীষ্মে স্মরণকালের তাপপ্রবাহ বিশ্বকে জলবায়ু-প্ররোচিত পরিবর্তনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো জলবায়ুতে ন্যায়বিচার। যাতে দায়িত্বজ্ঞানহীন পছন্দ বা উদাসীন পদক্ষেপ বা ক্ষতির হিসাব করা হয়।
তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি চারদিকে অপূরণীয় ক্ষতি করে। আমরা জীববৈচিত্র্য হারাচ্ছি, রোগজীবাণু পরিবর্তন নতুন রোগের দিকে পরিচালিত করে, চাষাবাদ চাপে পড়ছে, পানিসম্পদের সংকোচন আবাসস্থলের জন্য হুমকিস্বরূপ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও লবণাক্ততা জীববৈচিত্র্যকে ধ্বংস করছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আশুলিয়ায় সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, বন্ধ ১৬ কারখানা
সাভারের আশুলিয়ায় বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও বেতন বাড়ানোর দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের জিরাবো এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন লুসাকা কারখানার শ্রমিকরা। পরে তাদের সঙ্গে মণ্ডল গ্রুপ ও ম্যাংগো ট্যাক্সের শ্রমিকরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
শ্রমিকরা জানান, বিভিন্ন দাবির মুখে কয়েক দিন আগে লুসাকা কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
বন্ধ কারখানাটি খুলে দেওয়ার দাবিতে আজ শ্রমিকরা কয়েকটি কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে চারটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বেতন বৃদ্ধির দাবিতে মণ্ডল গ্রুপের শ্রমিকরাও বিক্ষোভ করছেন বলেও জানান তারা।
শিল্পপুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, শ্রম আইন ২০০৬ সালের ১৩(১) ধারায় ১০টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।
এ ছাড়া আজ ছয়টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে আশুলিয়ার মোট ১৬টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শিল্প পুলিশ কাজ করছে বলে জানান তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
দ্রুত অনুমোদন পাচ্ছে সোনালী ব্যাগ কারখানা ও বৈদ্যুতিক বাস কেনার প্রকল্প
দীর্ঘ দিন ধরে অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ঝুলে থাকা পরিবেশবান্ধব ও স্বল্প খরচের প্রকল্পগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে।
সরকার পরিবর্তনের পর পরিবেশগতভাবে টেকসই দুটি উদ্যোগের দ্রুত অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পরিকল্পনা কমিশন—একটি পাটের ব্যাগ তৈরির কারখানা স্থাপন, অপরটি ঢাকায় বৈদ্যুতিক বাস চালু করা।
পরিকল্পনা কমিশন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূ্ত্র জানায়, পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাট থেকে পরিবেশবান্ধব ও পচনশীল ‘সোনালী ব্যাগ’ উদ্ভাবন হয় ২০১৬ সালে। ২০১৭ সাল পরীক্ষামূলকভাবে বাজারজাত করা হয় শপিং ব্যাগটি।
কিন্তু এর পর বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) উদ্যোগের আওতায় সোনালী ব্যাগ উৎপাদনে কারখানা স্থাপনের প্রকল্প প্রস্তাব তৈরিতেই কেটে যায় ছয় বছর। ২০২৩ সালের শুরুর দিকে প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। তারপর আবার দেড় বছর পরিকল্পনা কমিশনে আটকে থাকে প্রস্তাবটি।
অবশেষে ২৬ সেপ্টেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির পর্যালোচনার পর প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) কাছে জমা দেওয়া হবে।
সোনালী ব্যাগের আবিষ্কারক করেন মোবারক আহমদ খান। তিনি বর্তমানে বিজেএমসির প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি বলেন, বিগত সরকারের উদ্যোগের ঘাটতি ছিল বলে আবিষ্কারের পর প্রকল্প প্রস্তাব তৈরিতে লম্বা সময় লেগেছে।
‘এখন অনুমোদন প্রক্রিয়া আবার শুরু হয়েছে। তবে শেষপর্যন্ত প্রস্তাবিত কারখানটি হবে কি না, তা নিয়েও অশ্চিয়তা রয়েছে,’ বলেন তিনি।
মোবারক আহমদ খান আরও বলেন, এ প্রকল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন দেশ সোনালী ব্যাগে আগ্রহ দেখিয়েছে। প্রয়োজনে বেসরকারিভাবেও এ ব্যাগ উৎপাদন সম্ভব। তবে সেক্ষেত্রে সরকারের নীতি সহায়তার প্রয়োজন হবে।
বিজেএমসি তাদের প্রস্তাবিত প্রকল্পে ডেমরায় লতিফ বাওয়ানি জুট মিলসের জায়তায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সোনালী ব্যাগ উৎপাদনের জন্য পাইলট কারখানার প্রস্তাব করেছে। এ প্রকল্পে সীমিত আকার বাণিজ্যিক উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত কারখানায় বছরে ১ হাজার ৫০০ টন সোনারী ব্যাগ ও পলিথিনের বিকল্প মোড়ক সামগ্রী উৎপাদিত হবে। প্রতিদিন গড়ে উৎপাদন হবে ৫ টন পলিমার ব্যাগ।
বৈদ্যুতিক বাস
১২টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বৈদ্যুতিক বাস কিনতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) প্রকল্পেরও দ্রুত অনুমোদন শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
বিআরটিসির প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের আওতায় মোট ৪৯.৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ১২টি বৈদ্যুতিক বাস কেনা হবে। প্রতিটি বাসের মূল্য ধরা হয়েছে ২.৯৫ কোটি টাকা এবং দুটি চার্জিং স্টেশন স্থাপনের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮.৪০ কোটি টাকা। এ প্রস্তাব নিয়ে সোমবার প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, ৫০ কোটি টাকার কম ব্যয়ের প্রকল্প মন্ত্রী বা উপদেষ্টা পর্যায়ে অনুমোদিত হতে পারে, একনেক উপস্থাপনের প্রয়োজন নেই। মন্ত্রী বা উপদেষ্টা পর্যায়ে অনুমোদন হয় বলে এসব প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।
তারা আরও বলেন, বিগত সরকারের আমলে প্রস্তাব করা বড় আকারের বৈদ্যুতিক বাস প্রকল্পের প্রকল্পের বিভিন্ন অঙ্গের ব্যয় প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি ছিল পরিকল্পনা কমিশনের।
উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালে কোরিয়ার ঋণে ৩৪০টি বৈদ্যুতিক বাস কেনার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল । ১৪০টি সিএনজিচালিত সিঙ্গেল ডেকার এসি সিটি বাস ও ১৫ শতাংশ খুচরা যন্ত্রাংশসহ কিনতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৭১.৬০ কোটি টাকা।
এছাড়া ২০০টি সিএনজিচালিত সিঙ্গেল ডেকার এসি ইন্টারসিটি বাস কেনায় খরচ ধরা হয়েছিল ৬৫৯.৬৫ কোটি টাকা। ভারতীয় ঋণে ১০০টি দ্বিতল বৈদ্যুতিক বাস কেনার প্রস্তাবও ছিল।
বিআরটিসির পরিচালক কর্নেল মোহাম্মদ মোবারক হোসেন মজুমদার বলেন, বৈদেশিক অর্থায়নের বৈদ্যুতিক বাস কেনার প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলো পাইপলাইনে থাকবে।
‘বাসের চাহিদা পূরণে সরকারি অর্থায়নের বাস কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বিআরটিসি,’ বলেন তিনি।
বর্তমানে বিআরটিসির বহরে ১ হাজার ৩৫০টি বাস রয়েছে। বিআরটিসি তার বর্তমান বাস বহর দিয়ে জনগণের বিশাল পরিষেবার চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট সক্ষম নয় বলে জানান সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে শীঘ্রই ৮০০ বাসের আয়ুষ্কাল শেষ হবে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে আয়ুষ্কালের হিসেবে মোট সচল বাসের সংখ্যা ৫৫০ হবে। তাই নতুন বাস সংগ্রহের পরিকল্পনা করা খুবই জরুরি বলে জানান বিআরটিসির কর্মকর্তারা।
নতুন প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে পরিবহন বহরের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ বৈদ্যুতিক বহরে রূপান্তরের লক্ষ্য রয়েছে। এছাড়াও ২০৩০ সালের মধ্যে ডিজেল ও অকটেনচালিত বাস বিশ্বব্যাপী পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাবে। ২০৩৫ সালের পর অটোমোবাইল উৎপাদনকারীরা আর ডিজেল ইঞ্জিনের গাড়ি তৈরি করবে না। তাই এখনই বিআরটিসির বহরে বৈদ্যুতিক গাড়ি যুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তা না হলে হঠাৎ করেই বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে।