অর্থনীতি
দুই মাসে রাজস্ব ঘাটতি ১৫ হাজার কোটি টাকা
জুলাই ও আগস্টে সরকারবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে সরকারের রাজস্ব আয়ে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪২ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ১৫ হাজার ৬৯ কোটি টাকা কম।
২০২৩-২৪ অর্থ বছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৪৭ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ শতাংশ। রাজস্ব বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। যার মধ্যে আয়কর ১ লাখ ৭৭ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা, মূসক ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ও শুল্ক রয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
অর্থবছরের প্রথম ২ মাসে শুল্ক আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১৪ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা। কম আদায় হয়েছে ২ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় শুল্কে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১৬ হাজার ৭৪ কোটি টাকার শুল্ক আদায় হয়েছিল।
এছাড়া, আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ২১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১৬ হাজার ২৮ কোটি টাকা। কম আদায় হয়েছে ৫ হাজার ১২২ কোটি টাকা।
গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় মূসকে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১৮ হাজার ২৬২ কোটি টাকার মূসক আদায় হয়েছিল।
আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১৮ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১১ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা। কম আদায় হয়েছে ৭ হাজার ৪১ কোটি টাকা।
গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয়করে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১৩ হাজার ২২৪ কোটি টাকার আয়কর আদায় হয়েছিল।
সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, বিগত সরকারের বেঁধে দেওয়া রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অন্তর্বর্তী সরকার কাটছাঁট করবে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত সরকারের প্রকৃত তথ্য ‘ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানোর’ প্রবণতা থেকে অন্তর্বর্তী সরকার বের হয়ে এসেছে। ফলে রাজস্ব আদায় কিছুটা কম হলেও এখন প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাচ্ছে। জুলাই আগস্টে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শিল্প কারখানায় হামলার কারণে রাজস্ব আদায়ে ভাটা পড়েছে।
জানতে চাইলে সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিগত অর্থবছরের ন্যায় চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার অবস্থা দেখছিনা। আগামীর কথা চিন্তা করে কর ফাঁকিরোধে ব্যাপক সংস্কার করতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ভারতে গেল অনুমোদনের মাত্র ২০ শতাংশ ইলিশ
দুর্গাপূজা উপলক্ষে গত ১৭ দিনে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে মোট ৪৮৩ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানি হয়েছে, যা সরকারি অনুমোদনের এক-পঞ্চমাংশ বা ১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এ বছর ভারতে ২ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
রপ্তানিকারকেরা বলছেন, দেশে ইলিশ–সংকট ও উচ্চ দাম এবং পশ্চিমবঙ্গে চাহিদা কম থাকার কারণে অনুমোদিত রপ্তানি কোটা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে পক্ষে–বিপক্ষে নানা মতামত ও প্রতিক্রিয়া এবং ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনার কারণেও রপ্তানিতে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতে ইলিশ রপ্তানি নিয়ে বাংলাদেশের সরকারি নীতিনির্ধারকেরা যেমন নেতিবাচক মনোভাব দেখান, তেমনি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক নাগরিকও রপ্তানি না করার মত দেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের ইলিশ না খাওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গেও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলে। এসব মিলিয়ে ইলিশ রপ্তানিতে প্রভাব পড়েছে বলে বেনাপোল স্থলবন্দরের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন।
এদিকে আজ শনিবার মধ্যরাত থেকে আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সাগর ও নদীতে ইলিশ ধরা, মজুত বা সংরক্ষণ এবং বিপণন সবই নিষিদ্ধ।
মৎস্য বিভাগ ও বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে এ বছর ভারতে ইলিশ রপ্তানি শুরু হয়। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ১৭ দিনে ৪৮৩ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। বন্দরে তখনো অবশ্য ইলিশ বোঝাই আরও কয়েকটি ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। ট্রাকগুলোর আজ সন্ধ্যায়ই ভারতে ঢোকার কথা।
এ বছর ৭০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ গড়ে ১০ মার্কিন ডলারে রপ্তানি হয়েছে, যা দেশের ১ হাজার ১৮০ টাকার মতো। দেশের বাজারে অবশ্য আরও অনেক বেশি দামে ইলিশ বিক্রি হয়, যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়, প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যা পরে কমিয়ে ২ হাজার ৪২০ টন করা হয়। এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে। এর মধ্যে ৪৮টি প্রতিষ্ঠান ৫০ টন করে ২ হাজার ৪০০ টন আর অন্য প্রতিষ্ঠানটি ২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পায়।
বেনাপোল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক কাজী রতন জানান, গত ১৭ দিনে এই স্থলবন্দর দিয়ে ৪৮৩ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের অনেকে বাংলাদেশের ইলিশ খাবে না বলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে। এতেও রপ্তানিতে প্রভাব পড়তে পারে।’
অনুমোদনের তুলনায় এত কম ইলিশ রপ্তানি হলো কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান লাকি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী তারেক রহমান জানান, এবার আমার প্রতিষ্ঠান ৫০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন পায়। আমরা ৪৬ মেট্রিক টন রপ্তানি করতে পেরেছি। দেশে ইলিশের সংকট থাকায় অনুমোদনের সব ইলিশ রপ্তানি করতে পারিনি।
কলকাতাভিত্তিক মাছ আমদানিকারকদের সংগঠন ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এফআইএ) থেকে গত ৯ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়ার অনুরোধ জানায়। সরকার ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। ১২ অক্টোবরের (আজ) মধ্যে এই ইলিশ রপ্তানি শেষ করার নির্দেশনা ছিল।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বকেয়া বেতনের দাবিতে বেক্সিমকোর শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
বকেয়া বেতনসহ বিভিন্ন দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা। আজ শনিবার দুপুরে গাজীপুর নগরের সারাবো এলাকায় তাদের কারখানার সামনে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে কারখানার সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চক্রবর্তী এলাকায় চন্দ্রা–নবীনগর সড়ক অবরোধ করেন।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে প্রায় ২০–২২ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। আশপাশের বেশির ভাগ কারখানায় গত মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে। তবে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা এখনো গত মাসের বেতন পাননি। বকেয়া বেতনসহ আরও বেশ কিছু দাবিতে আজ দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে দেন। কারখানার প্রধান ফটকে জড়ো হয়ে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। শ্রমিকেরা মিছিল করে কারখানার সামনে চন্দ্রা–নবীনগর সড়কে আসেন এবং অবরোধ করেন।
এ প্রতিবেদন লেখার সময় বেলা সোয়া দুইটায় শ্রমিকেরা সড়কে ছিলেন। এ কারণে সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা।
বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিক কুরবান আলী বলেন, আগের মাসেও অনেক আন্দোলন করে বেতন নিতে হয়েছে। এ মাসের ১২ দিন হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বেতন পাননি। বেতন চাইতে গেলে কর্তৃপক্ষ নানা টালবাহানা করছে। বাধ্য হয়ে তাঁদের রাস্তায় নামতে হয়েছে।
আরেক শ্রমিক আবদুল মমিন বলেন, ‘বেতন চাইতে গিয়েছিলাম। তখন এখানকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাদের জানান, মালিকের ব্যাংক হিসাব সরকার বন্ধ করে রেখেছে। এ কারণে বেতন দিতে পারছেন না। তাঁরা নাকি সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন। সমাধান হলে বেতন দেবেন। এসব কথা শুনে তো আর আমাদের সংসার চলবে না। আমরা কাজ করেছি। এখন বেতন দিতে হবে। এ ছাড়া আমাদের অন্য কোনো পথ নেই।’
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক সফিকুল ইসলাম বলেন, বকেয়া বেতনসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে শ্রমিকেরা দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা চক্রবর্তী এলাকায় চন্দ্রা–নবীনগর সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
২২ দিনের শিকার নিষেধাজ্ঞায় চাঁদপুরে রেকর্ড দামে ইলিশ
ইলিশ মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের মধ্যে চাঁদপুরে আকাশছোঁয়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। শনিবার (১২ অক্টোবর) রাত ১২টার পর থেকে প্রশাসনের জারি করা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
পদ্মা-মেঘনার মিঠাপানিতে ইলিশের ডিম ছাড়াকে নির্বিঘ্ন করতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন। প্রতিবছর এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
সরকারের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণেই দেশের অন্যতম বৃহৎ চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র- ‘বড় স্টেশন মাছ ঘাটে’ ইলিশ কিনতে শুক্রবার ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। তবে দাম মধ্যবিত্ত ও গরীবের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আজও রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। ১ কেজি বা ১১০০-১২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে ইলিশের বড় পাইকারি এই মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম আড়তগুলো। বিশেষ করে, খুচরা ক্রেতাদের ভিড়। তারা দূর দুরান্ত থেকে এসেছেন।
কিছু সময় ঘাটে অপেক্ষা করে দেখা গেল, স্থানীয় জেলেরা বরফ ছাড়া তাজা ইলিশ নিয়ে আসছেন আড়তগুলোতে। আবার কিছু ইলিশ নোয়াখালীর হাতিয়া এলাকা থেকে মিনি ট্রাকে সড়ক পথে আসছে ঘাটে।
আড়তগুলো ঘুরে একাধিক খুচরা ইলিশ বিক্রেতার সঙ্গে দাম নিয়ে কথা হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে থেকে ২ হাজার টাকা। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০টাকায়। আর ছোট সাইজের অর্থাৎ ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা কেজি।
শহরতলীর আশিকাটি থেকে আসা সোলাইমান বলেন, গত এক সপ্তাহ আগেও ইলিশের দাম আরও কম ছিল। ইলিশ ধরা বন্ধ হওয়ার কারণে ছোট-বড় প্রতিকেজি ইলিশের দামে বেড়েছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। কেনার ইচ্ছা থাকলেও দাম বেশি হওয়ার কারণে কিনতে পারছি না।
ঢাকা থেকে বেড়াতে এসে ঘাটে ইলিশ মাছ কিনতে এসেছেন কলেজ শিক্ষিকা নাজনীন। তিনি বলেন, “আড়তগুলো ঘুরে দেখছি। দাম অনেক চড়া।”
জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলা থেকে ইলিশ কিনতে আসা মানিক, মন্টু ও সোহরাব জানান, বরফ দেওয়া ইলিশের দামও রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এক কেজি ওজনের ইলিশের খুচরা দাম ৩ হাজার টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এই ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। একদম জাটকা সাইজের ইলিশ প্রতিকেজি ৮০০ থেকে হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অসম্ভব দাম বেড়েছে ইলিশের।
মেসার্স কালু ভুঁইয়া আড়তের ম্যানেজার ওমর ফারুক বলেন, “ইলিশের দাম এখন সর্বোচ্চ। এর কারণ হচ্ছে সামনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। মাছঘাটে সরবরাহের চাইতে খুচরা ক্রেতার সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খুচরা বিক্রেতার ভিড় থাকে। তাছাড়া আজ ছুটির দিনে অনেক ট্রুরিস্টও মাছঘাট সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু ট্যুরিস্ট পার্কে এসেছেন।”
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সম্পাদক শবেবরাত সরকার বলেন, “১২ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাত থেকেই ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা। ২২ দিন ইলিশ বিক্রি বন্ধ থাকবে। শেষ মুহূর্তে ইলিশ কিনতে লোকজন ঘাটে আসছেন। দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা থেকে চাঁদপুরের এ ঘাটে ইলিশের সরবরাহ কম হওয়ায় ইলিশ এখন সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে- যা আগে কেউ দেখেনি।”
ঘাটের প্রবীণ ব্যবসায়ী আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম, মোস্তফা খান, দীদার খানসহ সবাই জানান, ইলিশ মাছের এত দাম গত ৫০ বছরেও কখনো দেখিনি।
বিকালে শহরের ব্যস্ততম বাজার- বিপনীবাগ বাজার, ওয়ারলেস বাজার, প্রসিদ্ধ পালের বাজার, নতুনবাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। বাজারে মাছের সরবরাহ প্রচুর থাকলেও দাম সাধারণের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারি সারওয়ার হোসেনসহ অনেককে অসহায়ভাবে ইলিশের দিকে তাকিয়ে দাম বেশি হওয়ায় ফিরে যেতে দেখা গেছে। তার বলছেন, ইলিশ মাছ টুকরা করে বিক্রি করলেও কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে। এক ইলিশের টাকা দিয়ে ৪ কেজি গরুর গোশত কেনা যায়।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, “ইলিশ সামুদ্রিক মাছ। ডিম ছাড়ার জন্য এই সময়টাতে পদ্মা–মেঘনার মিঠাপানিতে ছুটে আসে ইলিশ। যে কারণে সরকার আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা, বহন ও বিক্রি বা স্টক করা নিষিদ্ধ করেছে। মা ইলিশ রক্ষায় ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।”
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
লাগামহীন হয়ে উঠেছে মুরগির বাজার
লাগামহীন হয়ে উঠেছে মুরগির বাজার। একদিনের ব্যবধানে জাত ভেদে কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে মুরগির দাম। তবে চড়া দামে বিক্রি হওয়া ইলিশের কেজিতে কমেছে ৩০০-৪০০ টাকা। আর কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে সবজির দাম।
শনিবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এমনটা জানা গেছে।
মুরগির বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ২১০ টাকা। দাম বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা।
মাছের বাজারে গেলে দেখা যায়, ইলিশ কেজিতে ৩০০-৪০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৭০০ টাকায়। গতকাল যা বিক্রি হয়েছে ২০০০-২১০০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ বাড়ায় মাছের দাম কিছুটা কমেছে।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, গতকাল বরবটির কেজি ছিল ১৪০ টাকা, যা আজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি। ৮০ টাকার পটল ৭০ টাকা, ১২০ টাকার করোলা ১২০ টাকা নেয়া হচ্ছে।
এদিকে, ২৬০ থেকে ২০টাকা কমে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। ১০০ টাকার শসা পাওয়া যাচ্ছে ৮০ টাকায়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কর অব্যাহতি পেলো গ্রামীণ ব্যাংক ও আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন
আয়কর রিটার্ন দাখিলের শর্তে প্রায় চার বছর পর ফের কর অব্যাহতি সুবিধা ফিরে পেয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক। একই সুবিধা পেয়েছে অলাভজনক ধর্মীয় দাতব্য সংস্থা আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। উভয় প্রতিষ্ঠান ২০২৯ পর্যন্ত এ সুবিধা গ্রহণ করবে।
গত বৃহস্পতিবার গ্রামীণ ব্যাংককে কর অব্যাহতি সুবিধা দিয়ে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এটি ২০২৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। প্রতিষ্ঠানটিকে প্রতি বছর দিতে হবে আয়কর রিটার্ন। প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
গেজেট আকারে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০২৩ সালের আয়কর আইনের ৭৬-এর উপধারা (৫) এবং (৬)-এর বিধানাবলি পরিপালন সাপেক্ষে গ্রামীণ ব্যাংকের অর্জিত সব আয়কে আয়কর থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। এই প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে।
জানা যায়, ১৯৮৩ সালে সামরিক অধ্যাদেশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সব সময়ই কর অব্যাহতি সুবিধা পেয়ে আসছিল গ্রামীণ ব্যাংক। সুযোগটি প্রতিষ্ঠানটি পেয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশের ৩৩ ধারার আওতায়। ২০১৩ সালে অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করা হলেও ওই ধারা অব্যাহত রয়েছে। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই সুবিধা বন্ধ করে দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
অন্যদিকে, ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত দানকৃত আয় থেকে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে অলাভজনক ধর্মীয় দাতব্য সংস্থা আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনকে। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আলাদা গেজেট প্রকাশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। সেখানে বলা হয়েছে, কর দিবসের মধ্যে রিটার্ন দাখিলসহ যাবতীয় নিয়ম পরিপালন করে তবেই এ সুবিধা পাওয়া যাবে।
এমআই