ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য নয়, ছাত্রদের জন্য দায়িত্বে এসেছি: ইবি উপাচার্য

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, আমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো বহিরাগত মানুষ না। দীর্ঘ সাড়ে দশ বছর এখানে শিক্ষকতা করেছি। এখানে সবাই আমার পরিচিত মুখ। ব্যক্তিগত কোনো উদ্দেশ্য নেই। আমার ছাত্রদের উদ্দেশ্যই আমার উদ্দেশ্য। এটা ক্ষমতা নয়, দায়িত্ব পালনের পদ। আমি দায়িত্ব পালনের জন্য এসেছি।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্য কক্ষে দায়িত্ব গ্রহণের পর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজকের এই বাংলাদেশ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদের রক্তের ফসল। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আদর্শ, উদ্দেশ্য, লক্ষ্যকে সামনে রেখে আদর্শ একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে তৈরি করতে পারি তাহলে আমার এই প্রচেষ্টা সফল হবে। সবার সহযোগিতার মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী একটি সিস্টেম চালু করার মাধ্যমে আমি সামনে অগ্রসর হবো।
এছাড়াও তিনি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথে চিন্তা চেতনার ঐক্য মিল রেখে আমি এখানে কাজ করবো এবং আমার কাজ হবে সত্য পথের কাজ। আমার কাজ হবে আল্লাহ নির্দেশিত পথের কাজ। আমার কাজ হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা।
এর পূর্বে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান এবং প্রধান ফটকে তাঁকে বরণ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে কর্মস্থলে আগমনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে করে সালাত আদায় করেন। এরপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে, স্মৃতিসৌধে এবং মুক্ত বাংলায় পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। পরবর্তীতে নিজ কার্যালয়ে আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে উপাচার্য বাসভবনে গমন করেন নবনিযুক্ত উপাচার্য।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এমআই/সাকিব

ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ইবিতে ‘অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ ট্রাস্ট’র ১০ লাখ টাকা অনুদান

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এককালীন ১০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে ‘অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ ট্রাস্ট’।
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাস্টের শিক্ষা সহায়ক চুক্তিনামা ও অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ অনুদানের চেক গ্রহণ করেন। এসময় ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল হক, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এমতাজ হোসেন, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খন্দকার তৌহিদুল আনাম, আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুন এবং অধ্যাপক ড. নূরুন নাহারসহ বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুন জানান, কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এই ট্রাস্ট গঠন করেছেন। এর আগে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সাথেও তিনি শিক্ষা সহায়ক চুক্তি করেছেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত অনুদানের ১০ লাখ টাকা একটি তফসিলি ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর) আকারে সংরক্ষণ করা হবে। এই এফডিআরের মুনাফার ৮০ শতাংশ অর্থ প্রতিবছর সম্মান শ্রেণির ন্যূনতম সিজিপিএ ৩.৫০ প্রাপ্ত আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের মেধার ভিত্তিতে বৃত্তি হিসেবে দেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেছে, এই সহায়তা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আরও বেশি মনোযোগী হতে অনুপ্রাণিত করবে।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
টরন্টো মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি স্কলারশিপ পেলেন তাজিন নূয়েরী

বাংলাদেশের উদীয়মান আইন গবেষক ও সমাজকর্মী বারিস্টার তাজিন নূয়েরী আনোয়ার কানাডার টরন্টো মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে (টিএমইউ) পিএইচডি প্রোগ্রামে পূর্ণ স্কলারশিপে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি “পলিসি স্টাডিস (মাইগ্রেশন ল)” বিষয়ে গবেষণা করবেন এবং এই স্কলারশিপটি তিনি অর্জন করেছেন কানাডা ফার্স্ট রিসার্চ এক্সেলেন্স ফান্ডের আওতাধীন ব্রিজিং ডিভাইডস ইনিশিয়েটিভ থেকে।
তাঁর গবেষণার মূল লক্ষ্য হলো অভিবাসন আইন ও অভিবাসীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা-একটি এমন ক্ষেত্র যা মানবিকতা, আইন এবং মানসিক কল্যাণকে একসূত্রে যুক্ত করে।
তাজিন নূয়েরী ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন (ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রাম) থেকে এলএল.বি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি ইউনিভার্সিটি অব দ্য ওয়েস্ট অব ইংল্যান্ড, ব্রিস্টল থেকে এলএল.এম এবং বার প্রফেশনাল ট্রেনিং স্টাডিজ (বিপিটিএস) সম্পন্ন করেন।
তিনি ব্রিটিশ স্কুল অফ ল-এ লেকচারার ও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় স্টার্টআপ শপআপ-এ প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। আইন, অভিবাসন নীতি ও শ্রম অধিকার নিয়ে তিনি জাতীয় দৈনিকে নিয়মিত লেখালেখি করেন।
বারিস্টার তাজিন নূয়েরীর স্বামী মো. জিয়াউল হক ভুইয়াঁ, যিনি শপআপের চিফ অব স্টাফ এবং জেসিআই বাংলাদেশের সাবেক জাতীয় সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির (বিডিপি) চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চানের কন্যা।
‘ব্রিজিং ডিভাইডস’ স্কলারশিপটি কানাডার অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ গবেষণা অনুদান কর্মসূচি। নির্বাচিত পিএইচডি শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর সর্বোচ্চ ৪০ হাজার কানাডিয়ান ডলার (প্রায় ৩৪ লাখ টাকা) করে চার বছর পর্যন্ত অনুদান পান। অভিবাসন, অন্তর্ভুক্তি ও নীতিনির্ধারণমূলক গবেষণায় এই তহবিল বরাদ্দ দেওয়া হয়।
তাজিন নূয়েরী বলেন, এই স্বীকৃতি আমার একার নয়। এটি এমন এক সুযোগ, যার মাধ্যমে আমি মানবিক অভিবাসন নীতির পক্ষে কাজ করতে পারব-যেখানে আইনি অধিকার ও মানসিক স্বাস্থ্য একসঙ্গে বিবেচিত হবে। আমার পরিবারের সদস্যরা এই পুরো যাত্রায় যেভাবে পাশে থেকেছেন, আমি তাঁদের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।
কাফি
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ঢাবির জগন্নাথ হলের ছাদ থেকে পড়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের ছাদ থেকে পড়ে সঞ্জয় বাড়ৈ (২৮) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন।
সোমবার (১৪ জুলাই) ভোরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সঞ্জয়ের বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায়। তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা জগন্নাথ হলের কর্মচারী মানিক কুমার দাস জানান, আজ ভোরে এক দারোয়ান ফোন করে জানান যে, জগন্নাথ হলের ভেতরে রাস্তার পাশে ওই শিক্ষার্থী পড়ে রয়েছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গিয়ে আরও কয়েকজনের সহযোগিতায় রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে হলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে যে, ওই যুবক ভবন থেকে পড়ে গেছে। তবে তিনি পড়ে গেছেন না কি লাফ দিয়েছেন বিষয়টি জানা যায়নি।
জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল বলেন, আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে একজন ক্লিনার কাজ করার সময় ওপর থেকে কিছু পড়ার শব্দ পান। কাছে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় একজনকে পড়ে থাকতে দেখেন। পরবর্তীতে বিষয়টি দারোয়ানকে জানালে তিনি আমাকে অবগত করেন এবং অন্যদের সহায়তায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা প্রথমে তার পরিচয় সনাক্ত করতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে শাহবাগ থানা থেকে পুলিশ এসে তার পকেট থেকে একটা নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রশ্ন পায়। তারপর আমার তার সহপাঠীদের কাছ থেকে তার পরিচয় জানতে পারি।”
তিনি আরও বলেন, ছেলেটি কিছুদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তার বন্ধুদের সাথে কথা বলে জানতে পারি গত দুইদিন ধরে সে হলে ছিল না। আজ ভোর ৪টার দিকে সে হলে আসে এবং ৪টা ১০ মিনিটে হলের ছাদে যায়।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, মরদেহটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে, আমরা বিষয়টি শাহবাগ থানা পুলিশকে জানিয়েছি।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ইবি সাংবাদিককে মারধর, ২২ ঘন্টার পর ফোন উদ্ধার

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় কেড়ে নেওয়া ফোন ২২ ঘন্টা পর অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের নিকট হস্তান্তর করেন। তবে হস্তান্তরিত মোবাইল চালু করে দেখা যায় রিসেট/ফ্ল্যাশ দেওয়া হয়েছে। পরে ভুক্তভোগী সাংবাদিক ফোন ফেরত না নিয়ে ফের অভিযোগ দেন।
রবিবার (১৩ জুলাই) বিকাল ৩টার দিকে ভুক্তভোগী সাংবাদিককে ফোন ফেরত দেয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, ‘আজ রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে প্রক্টর স্যার আমার ফোন ফিরিয়ে দেয়। প্রক্টর অফিসে আমি ফোন চালু করলে দেখতে পাই- ফোনটি রিসিট/ফ্লাশ করা হয়েছে। ফোনে কোনো ডকুমেন্টস নাই। সেখানে আমার ও আমার বাবার গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস ছিলো। গত ৫ বছরের আমার পারিবারিক ও ক্যাম্পাসে আসার পর সাংবাদিকতা সমস্ত তথ্য সংরক্ষিত ছিলো। এতে আমার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। মোবাইলটি ফেরত না নিয়ে প্রক্টর অফিসে রেখে গিয়েছি।’
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, আজ (রবিবার) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে অর্থনীতি বিভাগের সভাপতিসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক এসে মোবাইলটা দিয়ে যায়। আমি গতকাল থেকে মোবাইলটা উদ্ধারের চেষ্টা করেও রেসপন্স পাইনি। ফোন রিসেটের বিষয়ে বিভাগের সভাপতিকে জানানো হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল ১২ জুলাই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে অর্থনীতি বিভাগের আন্তঃসেশন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ইবি সাংবাদিকদের ওপর হামলা: ছাত্র সংগঠনগুলোর নিন্দা ও প্রতিবাদ

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃসেশন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের একাংশ মারামারিতে জড়ান। এসময় মারামারির ভিডিও ধারণ করতে গেলে সাংবাদিকদের দফায় দফায় মারধর করেন তারা।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, খেলাফত ছাত্র মজলিস ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন।
শনিবার (১২ জুলাই) রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইবি শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফিজ আহমেদ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইবি শাখার দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন স্বাক্ষরিত দুইটি পৃথক বিবৃতিতে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়।
এদিকে রোববার (১৩ জুলাই) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ইবি শাখার দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ আবসার নবী হামযা, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস ইবি শাখার প্রচার সম্পাদক হাবিবুর রহমান জুনাঈদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সহ সমন্বয়ক পঙ্কজ রায়, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র আন্দোলন তথ্য, গবেষণা ও প্রচার সম্পাদক হাবিব আল মিসবাহ স্বাক্ষরিত পৃথক বিবৃতিতে নিন্দা ও বিচারের দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে ইবি ছাত্রদল নেতৃবৃন্দরা বলেন, আমরা মনে করি, আজকের যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত ও অনিচ্ছাকৃত ভুল মাত্র। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ও সংবাদ কর্মীদের সহনশীল ও সহানুভূতিশীল আচরণের আহ্বান জানাই। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীরা একে অপরের পরিপূরক। ভুলত্রুটি ভুলে গিয়ে আমরা সকলেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গঠনমূলক ভূমিকা প্রত্যাশা করি। প্রজ্ঞাপনে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি জানানো হয়।
ইবি ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দরা নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে বলেন, সাংবাদিকদের ওপর এই নির্মম হামলা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক চর্চা এবং ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা পুনরায় না ঘটে, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাংবাদিকতার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা সকলের দায়িত্ব।
অপর এক বিবৃতিতে ইবি ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের আন্তঃসেশন খেলাকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে কয়েকজন সাংবাদিককে মারধরের ঘটনা ঘটেছে এবং একজন সাংবাদিকের ফোন কেড়ে নেয়া হয়েছে; যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। শিক্ষাঙ্গনে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। গণমাধ্যম হলো রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। দেশে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য স্বাধীন সাংবাদিকতা অপরিহার্য। এ ঘটনায় সাংবাদিকদের ওপর অন্যায়ভাবে হামলা প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন সাংবাদিকতার উপর আঘাত। আমরা অবিলম্বে এই ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা আহত সকলের আশু সুস্থতা কামনা করছি। সেই সাথে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে এবং সকল ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
বিবৃতিতে ইবি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃবৃন্দ বলেন, খেলায় সংঘটিত বিশৃঙ্খলার খবর সংগ্রহের জন্য উপস্থিত সংবাদকর্মীরা ভিডিও ফুটেজ ধারণ করতে গেলে, অর্থনীতি বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী তাঁদের উপর হামলা চালায় এবং মোবাইল ফোন জোরপূর্বক কেড়ে নেয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় এবং সাংবাদিকদের প্রতি সহিংস আচরণের প্রতিবাদ জানায়। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীরা কেউ কারও প্রতিপক্ষ নয়, বরং তারা একে অপরের পরিপূরক। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও সৌহার্দ্য রক্ষায় সবার সম্মিলিত ভূমিকা প্রয়োজন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন। আমরা এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সকলের পক্ষ থেকে সচেতনতা, সহনশীলতা ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করি।
বিবৃতিতে ইবি খেলাফত ছাত্র মজলিস নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১২ জুলাই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃসেশন ফুটবল ম্যাচ চলাকালে সংবাদ সংগ্রহের সময় অর্থনীতি বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীর হাতে সাংবাদিকদের লাঞ্ছনা ও পেশাগত কাজে বাধা প্রদানের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই।সাংবাদিকদের ওপর হামলা শুধু দুঃখজনক নয়, এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আঘাত। আমরা এ ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। গণমাধ্যম রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ। এর স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। ছাত্র মজলিস আহত সাংবাদিকদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে শিক্ষাঙ্গনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সকলের সহযোগিতার প্রত্যাশা করে।
বিবৃতিতে ইবি ইসলামী ছাত্র আন্দোলন নেতৃবৃন্দ বলেন, গতকাল বিকাল ৫:০০টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের আন্তঃসেশন খেলাকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে কতিপয় শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন হতাহতের ঘটনা ঘটে। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাঁধা দেয়ার ঘটনায় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাই এবং এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে শিক্ষার্থীসহ সকল পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হয় এমন সকল কাজ থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। আমরা আহত সকলের আশু সুস্থতা কামনা করছি এবং সকল ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সবার সচেতনতা ও আন্তরিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম