আন্তর্জাতিক
মোদি-ইউনূস বৈঠক বাতিল হলো যে কারণে

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্ভাব্য বৈঠকটি বাতিল হয়েছে। এবার বৈঠকটি না হওয়ার কারণ জানাল নয়াদিল্লি। খবর এনডিটিভির।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যস্ততম ও সংক্ষিপ্ত সফরসূচির কারণে দুই নেতার বৈঠক হয়নি। তাছাড়া অভিন্ন সময়ে তারা নিউইয়র্কে অবস্থানও করেননি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সফর শেষ করে যখন দেশে ফিরেছেন; বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা তখন সবে নিউইয়র্ক পৌঁছেছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।
আগেরদিন সোমবার তিনি বলেন, আপনারা জানেন, এবার আমাদের প্রধানমন্ত্রী খুবই সংক্ষিপ্ত সফরে নিউইয়র্কে যান। তার সফরের মেয়াদ ছিল মাত্র ৫৫ ঘণ্টা এবং কয়েক মিনিট আগে তিনি নিউইয়র্ক থেকে নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এখনও নিউইয়র্কে গিয়ে পৌঁছাননি। যেহেতু উভয়ের সফরসূচি ভিন্ন ছিল, তাই এবার তাদের মধ্যে বৈঠকের কোনো সুযোগ ছিল না।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল নরেন্দ্র মোদির। কিন্তু সংক্ষিপ্ত শিডিউল এবং ব্যস্ততার কারণে সেই বৈঠকও বাতিল হয়েছে।
এমআই

আন্তর্জাতিক
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৩২ জন গ্রেপ্তার

মালয়েশিয়ার জোহর প্রদেশে আয়ার হিতাম শহরে বাংলাদেশিসহ ৩২ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে রাজ্যের অভিবাসন বিভাগ।
বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৬ আগস্ট স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট বন্দর বারু আয়ার হিতামে অপস বেলাঞ্জা, অপস সেলেরা, অপস সাপু এবং অপস কুটিপ অভিযানের মাধ্যমে মোট ৩২ জন বিদেশীকে আটক করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) জোহর জেআইএমের পরিচালক দাতুক মোহাম্মদ রোসদি মোহাম্মদ দারুস এক বিবৃতিতে বলেন, জেআইএম এনফোর্সমেন্ট ডিভিশন অ্যাকশন ইউনিটের গোয়েন্দা তথ্য এবং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বৈধ ওয়ার্ক পারমিট বা পাস ছাড়াই কাজ করছে এবং বসবাস করায়, এই বিদেশিদের আটক করা হয়।
বন্দর বারু আয়ের হিতামের ১৬টি স্থানে পরিচালিত অভিযানে মোট ৬২ জন বিদেশী এবং স্থানীয় নাগরিককে তল্লাশি করা হয়। এর মধ্যে মোট ২০ জন পাকিস্তানি পুরুষ, নয়জন বাংলাদেশি পুরুষ এবং একজন পুরুষ এবং দুইজন ইন্দোনেশিয়ান মহিলাকে আটক করা হয়।
মোহাম্মদ রোসদির মতে, আটককৃত অভিবাসীরা ১৯৫৯/৬৩ সালের ইমিগ্রেশন আইনের ধারা ৬(১)(সি) এর অধীনে একটি অপরাধ করেছেন বলে যুক্তিসঙ্গতভাবে বিশ্বাস করা হচ্ছে, অর্থাৎ বৈধ পাস বা পারমিট ছাড়া মালয়েশিয়ায় প্রবেশ এবং অবস্থান করা।
আন্তর্জাতিক
গাজা দখলের পরিকল্পনা ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

গাজা উপত্যকা পুরোপুরি দখলে নেওয়ার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। শুক্রবার (৮ আগস্ট) এক সরকারি বিবৃতিতে গাজা পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনায় ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার অনুমোদন কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজা দখলের যে পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে, তা মন্ত্রিসভায় পাস হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ‘হামাসকে পরাজিত করার রূপরেখা’কে অনুমোদন দিয়েছে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে অবস্থানরত বেসামরিক মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। পাশাপাশি হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির জন্য যেসব শর্ত ইসরায়েল দেবে, তার মধ্যে পাঁচটি মূলনীতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্য।
এই পাঁচটি মূলনীতি হলো—হামাসকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ, জিম্মি অবস্থায় থাকা বাকি ৫০ জনকে মুক্ত করা (যাদের মধ্যে আনুমানিক ২০ জন জীবিত), গাজা উপত্যকার সামগ্রিক নিরস্ত্রীকরণ, অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নয়—এমন একটি বিকল্প বেসামরিক সরকারের হাতে গাজার প্রশাসন তুলে দেওয়া।
এর আগে বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, গাজা দীর্ঘমেয়াদে দখলে রাখার পরিকল্পনা নেই। বরং সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শেষে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ এমন একটি বেসামরিক প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে, যারা ‘ইসরায়েল ধ্বংসে আগ্রহী নয়’। তবে কার হাতে শাসনভার দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘আমরা গাজা থেকে হামাসকে উৎখাত করতে চাই, কিন্তু অঞ্চলটি নিজের কাছে রাখতে চাই না। আমরা সেখানে নিরাপত্তা বেষ্টনী চাই, শাসন নয়। আমরা এমন আরব নেতৃত্বের হাতে গাজা তুলে দিতে চাই, যারা অঞ্চলটি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবে এবং আমাদের জন্য হুমকি হবে না।’
তবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ। তিনি মন্তব্য করেন, ‘এ ধরনের প্রস্তাব মানে আরও দীর্ঘ যুদ্ধ, আরও জিম্মির প্রাণহানি এবং বিপুল অর্থের অপচয়।’
আন্তর্জাতিক
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা নাকচ করলেন ট্রাম্প

ভারতের সঙ্গে চলমান শুল্ক বিতর্কের অবসান না হওয়া পর্যন্ত কোনো বাণিজ্য আলোচনা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার প্রশাসন সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ওভাল অফিসে এএনআই-এর এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, না, এটা (বাণিজ্য আলোচনা) হবে না যতক্ষণ না বিষয়টি মীমাংসিত হয়।
এর আগে হোয়াইট হাউজে এক নির্বাহী আদেশ জারি করে ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। যার ফলে ভারতের ওপর মোট শুল্ক দাঁড়াবে ৫০ শতাংশ। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, ভারতের রাশিয়ান তেল আমদানিকে কেন্দ্র করে জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতির ঝুঁকি বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
হোয়াইট হাউজ জানায়, রাশিয়া থেকে সরাসরি বা মধ্যস্থ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে আমদানিকৃত জ্বালানি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি অস্বাভাবিক এবং চরম ঝুঁকি তৈরি করছে, যা জরুরি অর্থনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণকে ন্যায্যতা দেয়।
প্রথম ২৫ শতাংশ শুল্ক ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়েছে। বর্ধিত শুল্ক ২১ দিনের মধ্যে কার্যকর হবে, যদিও চলমান পরিবহন ও নির্দিষ্ট কিছু ক্যাটাগরির পণ্য এর আওতামুক্ত থাকবে।
এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই চাপের বিরুদ্ধে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে ভারতের কৃষক, জেলে ও দুগ্ধখাতের স্বার্থে কোনো আপস হবে না।
মোদী বলেন, আমাদের কাছে কৃষকদের স্বার্থই আগে। ভারতের কৃষক, জেলে ও দুগ্ধ খাতের স্বার্থে আমরা কখনোই আপস করবো না। এর জন্য যদি মূল্য চুকাতেও হয়, আমরা প্রস্তুত। ভারত প্রস্তুত।
আন্তর্জাতিক
আজ থেকেই কার্যকর ট্রাম্পের নতুন শুল্কহার

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশি পণ্যের ওপর নতুন শুল্কহার আজ (৭ অগাস্ট) থেকে কার্যকর হবে। এর ফলে পোশাকসহ বিভিন্ন রপ্তানি পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ওপর চূড়ান্ত শুল্কহার ঘোষণা করেন। তাতে বাংলাদেশের পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমে হয় ২০ শতাংশ।
মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা আলোচনার পর বাংলাদেশের পণ্যের ওপর শুল্ক কামানোর ঘোষণা আসে।
গত এপ্রিলে বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প, পরে জুলাইতে তা ৩৫ শতাংশে নামিয়ে আনেন।
তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সম্প্রতি তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, এর আগে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হতো। এখন যে ২০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক নির্ধারিত হয়েছে তার ফলে বাংলাদেশের মোট শুল্কের হার দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশে, যা সুনির্দিষ্টভাবে বিভিন্ন পণ্যের জন্য বিভিন্ন হারে প্রযোজ্য হবে।
বাংলাদেশের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একক বৃহত্তম বাজার। আবার যত পণ্য দেশটিতে বাংলাদেশ রপ্তানি করে তার ৮৬ শতাংশের বেশি হলো তৈরি পোশাক।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ৭ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন বা ৭৫৪ কোটি ডলারের গার্মেন্ট পণ্য।
আন্তর্জাতিক
গাজার মাত্র ২ বর্গকিলোমিটার কৃষিজমি ব্যবহারযোগ্য: জাতিসংঘ

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে মাত্র ২ বর্গকিলোমিটার কৃষিজমি বর্তমানে ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় রয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই ভয়াবহ তথ্য জানিয়েছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, গাজা এখন ‘সম্পূর্ণ দুর্ভিক্ষের’ দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
জাতিসংঘের স্যাটেলাইট জরিপের মতে, জুলাই মাসের ২৮ তারিখের পরিস্থিতি অনুযায়ী, গাজার ৮.৬ শতাংশ জমি প্রবেশযোগ্য হলেও, মাত্র ১.৫ শতাংশ জমি বর্তমানে কৃষিকাজের জন্য উপযোগী। বাকি ৮৬.১ শতাংশ জমি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১২.৪ শতাংশ জমি অক্ষত থাকলেও তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে রয়েছে।
এফএও’র মহাপরিচালক কু দোংইউ বলেন, মানুষ খাবারের অভাবে মারা যাচ্ছে না, তারা মারা যাচ্ছে কারণ তারা খাবারের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। স্থানীয় খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে, ফলে পরিবারগুলো তাদের জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সামগ্রীও সংগ্রহ করতে পারছে না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইসরায়েলের হামলার আগে গাজার কৃষিখাত ছিল তার অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা মোট অর্থনীতির প্রায় ১০ শতাংশ অবদান রাখত। গাজার অন্তত ৫ লাখ ৬০ হাজার মানুষ (যা মোট জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ) কৃষি এবং মৎস্য শিল্পের ওপর নির্ভরশীল ছিল।
এফএও সংস্থাটি নিরাপদ ও টেকসই মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্থানীয় কৃষি ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারের জন্য ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।