জাতীয়
আট মাসে ধর্ষণের শিকার ২২৪ কন্যাশিশু
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত আট মাসে ২২৪ কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এছাড়া ৩২ কন্যাশিশু ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
‘কন্যাশিশুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন’ শিরোনামে এ সংবাদ সম্মেলনে কন্যাশিশুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির কোঅর্ডিনেটর সৈয়দা আহসানা জামান (এ্যানী)।
সৈয়দা আহসানা জামান বলেন, বর্তমানে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়া সত্ত্বেও ধর্ষণ যেনো প্রতিযোগিতা করে বেড়েই চলেছে। গত ৮ মাসে মোট ২২৪ কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে একক ধর্ষণের শিকার ১৩৪ জন, গণধর্ষণের শিকার হয় ৩৩ জন কন্যাশিশু, প্রতিবন্ধী কন্যাশিশু রয়েছে ৯ জন। এছাড়া ৩২ কন্যাশিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠীভেদে কেউ বাদ যায়নি এই জঘন্যতম বর্বর আচরণ থেকে। প্রেমের অভিনয়ের ফাঁদে ফেলে ৩৫ কন্যাশিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণ ও গণধর্ষণের মতো জঘন্যতম অপরাধের শিকার হতে হচ্ছে এক বছর বয়সের শিশুদেরকেও, যারা যৌনতা বোঝাতো দূরের কথা, কথা বলতেও শিখেনি।
এসময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ডিএমপির পরিচালিত গবেষণায় অংশগ্রহণকারী শিশুদের মধ্যে প্রায় ২৪ শতাংশ কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
সৈয়দা আহসানা জামান আরও বলেন, গত ৮ মাসে ৮১ জন কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এর অন্যতম কারণ ছিল পারিবারিক দ্বন্দ্ব, পারিবারিক শত্রুতার জের, ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতন। পাশাপাশি ২০ জন কন্যাশিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু কেন মৃত্যু হয়েছে এ সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো কারণ বা ব্যাখ্যা পাওয়া য়ায়নি।
আত্মহত্যার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, কন্যাশিশুরাই শুধু নয়, কোনো একজন শিশু আত্মহত্যার পথ বেছে নিবে এটি মোটেও কাম্য নয়। এর মাধ্যমে পরিবার, সমাজ এমনকি রাষ্ট্রের ওপরও দায়ভার এসে পড়ে। কিন্তু গত ৮ মাসে ১৩৩ জন কন্যাশিশু আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। এর পেছনে মূলত যে কারণগুলো কাজ করেছে তা হলো হতাশা, পারিবারিক মতানৈক্য বা দ্বন্দ্ব, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হওয়া এবং শারীরিকভাবে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ।
অন্যান্য নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরে সৈয়দা আহসানা জামান বলেন, এ বছরের প্রথম আট মাসে যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২৮ জন কন্যাশিশু। অপহরণ ও পাচার হয়েছে ১৯ জন, পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ১৮৭ জন কন্যাশিশুর। এছাড়া ১০ জন গৃহশ্রমিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে, একজনকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে এবং চারজন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
এসময় সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কন্যা শিশু বঞ্চনার শিকার হলে পুরো জাতিকে তার মাশুল দিতে হবে। আমাদের দেশে অনেক ক্ষেত্রে ভালো করলেও পুষ্টির ক্ষেত্রে ভালো করতে পারিনি। কারণ হচ্ছে কন্যা শিশুদের প্রতি অবহেলা ও তাদের প্রতি যথাযথ বিনিয়োগ না করা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জন্মের পর থেকেই ছেলে শিশুদের তুলনায় কন্যা শিশুদের অপুষ্টির হার সব থেকে বেশি। এমনকি অতীতে কন্যা শিশুরাই স্কুলে যাওয়া থেকে বঞ্চিত হতো। এখন অনেক ক্ষেত্রে স্কুলে তাদের নাম লেখা থাকে, কিন্তু সত্যিকার অর্থে তারা স্কুলে যায় না। বিদ্যা অর্জন থেকে তারা বঞ্চিত হয়। পাশাপাশি কন্যা শিশুদের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, জাতি হিসেবে উন্নত হতে হলে কন্যা শিশুদের প্রতি বঞ্চনা কমাতে হবে। তাদের প্রতি আমাদের যথাযথ বিনিয়োগ করার পাশাপাশি সুযোগ করে দিতে হবে। তা না হলে পুরো জাতি ভুগবে।
এসময় পরিবর্তিত ও সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গড়তে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের পক্ষ থেকে ১১টি প্রত্যাশা ও দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো-
যৌন হয়রানি, উত্ত্যক্তকরণ ও নিপীড়ন রোধে সর্বস্তরের জন্য ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’ নামে একটি আইন জরুরি ভিত্তিতে প্রণয়ন করা। শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার সব ঘটনাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা। ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ আসলে ধর্ষণের শিকার নারী ও কন্যার পরিবর্তে অভিযুক্ত ব্যক্তিকেই প্রমাণ করতে হবে যে, সে এ ঘটনা ঘটায়নি, এ সম্পর্কিত প্রচলিত আইনের বিধান সংশোধন করা।
হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল গঠনের কঠোর নির্দেশনা মনিটরিংয়ের ভিত্তিতে নিশ্চিত করা, যাতে যৌন নিপীড়নের যেকোনো ঘটনার বিচার করা যায়। এ সংক্রান্ত জোরালো নির্দেশনা প্রতিটি অফিস-আদালতেও প্রণয়ন করা, যাতে একজন নারী বা কন্যাশিশু কোনোভাবেই যেন তার সহকর্মী, শিক্ষক বা বন্ধু কারও দ্বারা নিপীড়নের শিকার না হন।
কন্যাশিশু নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া বন্ধ করা। শিশু সুরক্ষায় একটি পৃথক অধিদফতর গঠন করা। বাল্যবিবাহ বন্ধে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা।
বর্তমানে বেশিরভাগ শিশুই স্মার্টফোনের মতো ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে। তাই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং প্রযুক্তির নেতিবাচক দিক থেকে তাদেরকে রক্ষার জন্য উচ্চপর্যায়ের আইসিটি বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় সব ধরনের পর্নোগ্রাফিক সাইট বন্ধ করা। সাইবার বুলিংয়ের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ বাস্তবায়ন করা এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা, একজন কন্যাশিশুও যাতে পর্নোগ্রাফির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করা।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বাজেট বৃদ্ধি করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কন্যাশিশু ও তাদের অভিভাবকদের এর আওতায় আনা। ক্রমবর্ধমান কন্যাশিশু ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে নারী-পুরুষ, সরকার, প্রশাসন, নাগরিক সমাজ, মিডিয়া, পরিবার সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং তরুণ ও যুবসমাজকে সচেতনকরণ সাপেক্ষে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তাদেরকে যুক্ত করা।
বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির (বিএনডাবিট্রএলএ) নির্বাহী পরিচালক এডভোকেট সালমা আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সহ-সভাপতি শাহীন আকতার ডলি, গুড নেইবারস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্ট মাঈনুদ্দিন মাইনুল, এডুকো বাংলাদেশের চাইল্ড রাইটস এন্ড প্রোটেকশনের স্পেশালিস্ট মো. শহীদুল ইসলাম, এডুকো বাংলাদেশের পলিসি এন্ড অ্যাডভোকেসির ম্যানেজার হালিমা আক্তার প্রমুখ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড: তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে তদন্ত কমিটি
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আগামী তিনদিন অর্থাৎ রবিবারের মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দেবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
এর আগে উপদেষ্টা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রকৃত কারণ নিরূপণে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান বলেন, সচিবালয়ের মধ্যরাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সরকারের সিদ্ধান্ত জানাতে এসেছি। এ ব্যাপারে আজ প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তিন দিনের মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দেবে।
একমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রধান। এছাড়া রয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, সশস্ত্র বাহিনীর একজন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বুয়েটের ড. কাদরী মনসুর ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ড. ইয়াসির আরাফাত।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ভোটার এলাকা হিসেবে থাকছে না বর্তমান ঠিকানা
জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) আলাদা করা হচ্ছে ভোটার এলাকা ও বর্তমান ঠিকানা। নাগরিকদের ভোট দেওয়ার অধিকার এক জায়গায় রাখতে এ উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কারণ কোনো কারণে একজন নাগরিক ভোটার এনআইডিতে ঠিকানা পরিবর্তন করার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার এলাকাও পরিবর্তন হয়ে যায়। এ জন্যই ভোটার এলাকা আলাদা করার উদ্যোগ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, এনআইডির বর্তমান ঠিকানাই ভোটার এলাকা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে কোনো কারণে বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন হলে ভোটার এলাকাও পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। আর ভোটার এলাকা পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার ফলে অনেকেই নিজের এলাকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সম্প্রতি ভোটার এলাকা পরিবর্তন বা স্থানান্তর এবং এনআইডি সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করে ইসি। সেবাগ্রহীতাদের বিভিন্ন সমস্যা পর্যালোচনা করে ওই কমিটি একটি সুপারিশ করেছে। কমিটি প্রধান ও ইসির উপসচিব এম মাজহারুল ইসলামের সই করা সুপারিশ অনুমোদনের জন্য তোলা হয়েছে। কমিশনের অনুমোদন পেলেই তা বাস্তবায়ন করা হবে এ সিদ্ধান্ত।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, কোনো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত ভোটার স্থানান্তর কার্যক্রম বন্ধ থাকে। ওই সময়ে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ব্যতিত স্থানান্তর কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয় না।
এছাড়া বর্তমানে প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রবাসেই নিবন্ধন করা হচ্ছে। তাদের বর্তমান ঠিকানা বসবাসরত দেশে হলেও কার্ডের পেছনে বাংলাদেশে যে এলাকার ভোটার তালিকায় নিবন্ধিত আছেন, সে এলাকার ঠিকানা উল্লেখ থাকে। অথচ তাদের নিবন্ধন ফরম পূরণের সময় প্রবাসের ঠিকানার তথ্যও সংগ্রহ করা হয়। এ ক্ষেত্রে বর্তমান ঠিকানা ও ভোটার এলাকা নিয়ে একটি জটিলতা তৈরি হয়।
কর্মকর্তারা আরও বলেন, নাগরিকদের বিভিন্ন দাপ্তরিক প্রয়োজন ও বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রে ঠিকানা পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে তা সম্ভব হয় না। কারণ ভোটার স্থানান্তরের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তনও ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
এক্ষেত্রে কেস টু কেস নথিতে উপস্থাপন করে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনক্রমে স্থানান্তর কার্যক্রমে অনেক সময় প্রয়োজন হয় এবং নাগরিকরা ক্ষতির সম্মুখীন হন। এই বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সেবা সহজীকরণ কমিটি ওই সুপারিশ করেছে। কমিটির সুপারিশে এনআইডি নেওয়ার সময় বা নতুন ভোটার হওয়ার সময় নির্ধারিত ফরমে স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানার পাশাপাশি ভোটার এলাকা লিপিবদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটারের তথ্য সংগ্রহের সময় ভোটারের তিনটি ঠিকানা থাকবে, যথা বর্তমান বা যোগাযোগ, স্থায়ী ও ভোটার ঠিকানা। একজন নাগরিকের তিনটি ঠিকানা একই হতে পারে অথবা একাধিক স্থান হতে পারে। জাতীয় পরিচয়পত্রের পেছনে বর্তমান বা যোগাযোগের ঠিকানা উল্লেখ থাকবে। এটা দেশে বা প্রবাসের ঠিকানা হতে পারে। ভোটার ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা ডাটাবেজে থাকবে। তবে ভোটার ঠিকানা মুদ্রিত ভোটার তালিকায় উল্লেখ থাকবে। এতে করে তিন ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে।
প্রথমত, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য ভোটার মাইগ্রেশন প্রয়োজন হবে না। বর্তমান বা যোগাযোগের ঠিকানা সংশোধন করলেই হবে। তাতে ভোটার তালিকায় কোনো প্রভাব পড়বে না।
দ্বিতীয়ত, বর্তমানে একই ব্যক্তি একাধিকবার ভোটার স্থানান্তর করে থাকে। ডাটাবেজে বর্তমান ঠিকানা ও ভোটার ঠিকানা ফিল্ড একটাই হওয়ার কারণে কোনো ব্যক্তির দাপ্তরিক প্রয়োজনে ঠিকানা পরিবর্তন করতে হলে বাধ্য হয়ে তাকে ভোটার স্থানান্তরও করতে হয়। আবার নির্বাচনের আগে আগে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় স্থানান্তরে চাপ বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে তিনি নির্বাচন সংক্রান্ত কাজে স্থানান্তর করছেন, নাকি দাপ্তরিক প্রয়োজনে স্থানান্তর করছেন, তা বোঝার উপায় থাকে না। ডাটাবেজে তিনটি ঠিকানা থাকার ফলে আবেদনের উদ্দেশ্য বোঝা যাবে এবং বিভিন্ন নির্বাচনের আগে বারবার স্থানান্তর রোধ করা সম্ভব হবে। এমনকি ভোটার স্থানান্তর কতবার করা যাবে, তা নির্দিষ্ট করা সম্ভব হবে।
তৃতীয়ত, তিনটি ঠিকানা থাকার ফলে প্রবাসী নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্রের পেছনে বর্তমান বা যোগাযোগের ঠিকানা হিসেবে প্রবাসের ঠিকানা উল্লেখ থাকবে। এতে করে প্রবাসীদের সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে এবং তারা সরকার ঘোষিত বিভিন্ন সেবা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রাপ্ত হবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
চাচাকে বাবা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি
চাচা-চাচিকে পিতা-মাতা সাজিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটায় প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি গ্রহণের অভিযোগে কামাল হোসেন নামে একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কামাল হোসেন বর্তমানে নওগাঁ জেলার আত্রাইয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম মিন্টু।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং চাকরি লাভসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগের উদ্দেশ্যে জন্মদাতা পিতা মো. আবুল কাশেম ও গর্ভধারিণী মা মোছা. হাবীয়া খাতুনের পরিবর্তে আপন চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আহসান হাবীব এবং চাচি মোছা. সানোয়ারা খাতুনকে বাবা-মা সাজিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে চরম প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণপূর্বক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের কোটায় প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি গ্রহণ করেছেন। আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, মো. কামাল হোসেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সিরাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণি এবং ফিলিপনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নকালীন বাবার নাম হিসেবে তার প্রকৃত জন্মদাতা পিতা মো. আবুল কাশেমের নাম ব্যবহার করলেও পরবর্তীতে একই স্কুলে ৯ম শ্রেণিতে তিনি তার আপন চাচা মুক্তিযোদ্ধা মো. আহসান হাবীব এবং চাচী মোছা. সানোয়ারা খাতুনকে বাবা-মা সাজিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে এসএসসি, এইচএসসিসহ বিভিন্ন উচ্চতর ডিগ্রি পরীক্ষায় চাচা-চাচির নামই বাবা-মার নাম হিসেবে ব্যবহার করেন। এ ছাড়া প্রতারণার মাধ্যমে মো. কামাল হোসেন তার জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রকৃত বাবা-মায়ের পরিবর্তে চাচা-চাচির নামই ব্যবহার করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, মো. কামাল হোসেনের জন্মসনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদে বাবা-মায়ের নামের স্থলে চাচা-চাচির নামই উল্লেখ রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং চাকরি লাভসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগের উদ্দেশ্যে তিনি আপন চাচা-চাচিকে বাবা-মা সাজিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে চরম প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের কোটায় প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি গ্রহণ করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিলো সরকার
বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদের বৈধতা অর্জনের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়ে দিয়েছে সরকার। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যথায় অবৈধভাবে অবস্থানকারী এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের বৈধতা অর্জনের এ সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, অনেক বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন/কর্মরত রয়েছেন। এমতাবস্থায় অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত/কর্মরত ভিনদেশি নাগরিকদের আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে অবস্থানের বা কর্মরত থাকার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বৈধতা অর্জনের অনুরোধ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর/প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের কথাও বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এই সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পর অবৈধভাবে অবস্থানকারী এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
দেশে ফিরেছেন আজহারী, অংশ নেবেন মাহফিলে
দেশে ফিরেছেন জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। অক্টোবরে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দেশে ফিরেছেন তিনি। এবার শীত মৌসুমে দেশের প্রত্যেক বিভাগে মাহফিলে অংশ গ্রহণ করবেন তিনি। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি নিজেই।
পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ, নিরাপদে দেশে এসে পৌঁছালাম। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর, বাধাহীনভাবে আবারো প্রিয় মাতৃভূমিতে তাফসিরুল কোরআনের মহতী আয়োজনে অংশগ্রহণ করছি। উদ্বোধনী প্রোগ্রাম হিসেবে আগামীকাল কক্সবাজারে পেকুয়ার বৃহত্তর সাবেক গুলদি তাফসির ময়দানে আলোচনা পেশ করবো। এটি একটি ওয়ার্ম-আপ প্রোগ্রাম। মূলত নতুন বছর ২০২৫-এর জানুয়ারি থেকে বিভাগীয় সফর শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, প্রতিটি বিভাগেই একটি করে প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছে আছে। রাব্বে কারিম নব উদ্যমে এই দাওয়াতি অভিযাত্রায় যুক্ত রাখুন। আমাদের প্রচেষ্টায় ভরপুর বারাকাহ দিন। প্রজন্ম-ক্ষুধা নিবারণে বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে ইসলামের শাশ্বত বাণী উপস্থাপনের তাওফিক দিন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে দেশ ছাড়ার পর প্রায় সাড়ে ৪ বছর পর ২ অক্টোবর দেশে ফিরেছিলেন তিনি। তবে মাত্র ৯ দিন দেশে অবস্থানের পর ১১ অক্টোবর আবারো মালয়েশিয়া চলে যান তিনি। অক্টোবরের পর ডিসেম্বরে আবারো দেশে ফিরলেন তিনি।