অর্থনীতি
সোনা চোরাচালানে রাজস্ব হারিয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকার

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে আসছে বিপুল পরিমাণ সোনা, যা সীমান্তের ৩০ জেলা দিয়ে পাচার হয় ভারতে। চোরাচালানের নিরাপদ রুট হওয়ায় বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করছে দেশি-বিদেশি চেরাকারবারি চক্র। ফলে ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রিজার্ভ আর ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হওয়ার তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ।
এ পরিস্থিতিতে দেশের আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা আনতে সোনা চোরাচালান বন্ধের তাগিদ দিয়েছেন অংশীজনরা।
তারা বলেছেন, অর্থনীতি ধ্বংস করছে সোনা চোরাচালান। এখন অর্থনীতি সুরক্ষায় চোরাচালান বন্ধের বিকল্প নেই। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রয়োজন। বিএফআইইউকে সক্রিয়করণ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কড়া নজরদারি লাগবে।
পাশাপাশি চোরাচালান প্রতিরোধে পৃথকভাবে সরকারি মনিটরিং সেল গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাজুস।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ইকোনোমিক রিচার্স গ্রুপ বা ইআরজির নির্বাহী পরিচালক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. সাজ্জাদ জহির গতকাল বলেন, সোনা চোরাচালানের ফলে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। এই চোরাচালানাটা কেন হচ্ছে, সেটা বিএফআইইউকে বলতে হবে। লোকে বলে, বাইরে থেকে আসা সোনা যায় ওপারে। এখন সোনা চোরাচালানে কারা লাভবান হয়, সেটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। কেননা, চোরাচালান বাণিজ্যের বিনিময় ব্যাপার।
রাষ্ট্রীয় স্বায়ত্তশাসিত জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ বা বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অনেক উদ্যোগ নিয়েছে। বিমান বন্দরগুলোতে যাত্রীসেবা কার্যক্রম উন্নত হয়েছে। আবার প্রতিদিনই বিমান বন্দরগুলোতে চোরাচালানের মাধ্যমে আসা সোনা ধরা পড়ছে।
বর্তমান সরকারের আমলে সোনা চোরাচালান হওয়া দুঃখজনক। অন্যদিকে দেশে সৎভাবে জুয়েলারি ব্যবসা পরিচালানার জন্যও বর্তমান সরকারকে সোনা চোরাচালান বন্ধের কর্মসূচি নিতে হবে। যারা চোরাচালান করছে, তাদের শাস্তি দিতে হবে। বাজুসকে যুক্ত করে জুয়েলারি শিল্প এগিয়ে নিতে হবে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
বাজুসের মুখপাত্র ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের অধিকাংশ জুয়েলারি ব্যবসায়ী সৎ ও সততার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করেন। কিন্তু প্রচলিত আইনি কাঠামো জুয়েলারি শিল্পবিরোধী। যারা সৎভাবে ব্যবসা করতে চান, তারা কঠিন বাস্তবতার শিকার হচ্ছেন। একটি নীতিমালা হলেও, তার সঠিক বাস্তবায়ন আজও হয়নি। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ- জুয়েলারি শিল্প বিকাশে কার্যকর উদ্যোগ নিন।
বাজুসের এই নেতা সোনা চোরাচালান বন্ধের দাবি জানিয়ে আরো বলেন, বিদেশে অর্থ পাচার বা হুন্ডি বন্ধ করতে হলে সোনা চোরাচালান বন্ধ করতে হবে। এজন্য সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করতে হবে সরকারকে। ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। দেশে বড় বড় আকারের বিদেশি সোনা এবং হীরার অলংকার কোথা থেকে কীভাবে আসে, এই সোনার বৈধ উৎস কী, কোনো বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, আগস্ট মাসে প্রবাসীরা ২২২ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন দেশে। এর আগে গত বছর আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে। সূত্র বলছে, মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের রক্তে-ঘামে অর্জিত রেমিট্যান্স মার্কিন ডলারের বদলে পাচার হয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশ ঢুকেছে অবৈধ সোনা হিসেবে। এই সোনার বড় চালান পুনরায় পাচার হয়েছে দেশের স্থল ও নৌপথে অন্য দেশে। অবৈধভাবে চোরাচালানের ফলে বছরে ৯১ হাজার কোটি টাকা হন্ডিতে পাচার হওয়ার তথ্য দিয়েছে বাজুস। অপরদিকে অব্যাহত ডলারসংকটের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ফলে ডলারসংকট কাটছে না। ব্যাংকগুলো সময়মতো এলসি খুলতে পারছে না। ব্যাহত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি।
এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন-এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, রিজার্ভের অর্থ হুন্ডিতে আসার ফলে সোনা চোরাচালানসহ সব ধরনের চোরাকারবারি বেড়ে যায়। কেন ৯১ হাজার কোটি টাকার সোনা ও হীরা চোরাচালান হচ্ছে তা সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে খতিয়ে দেখতে হবে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, চোরাকারবারিদের ধরতে বিএফআইইউকে সক্রিয় হতে হবে। চোরাচালানে সোনা কীভাবে আসে, সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। পাচার হওয়া সোনা কীভাবে দেশে আসছে, সেই পথ বন্ধ করতে হবে। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা আনতে চোরাচালান বন্ধের বিকল্প নেই। সর্বশেষ গত ৩ জুন সোনা ও হীরা চোরাচালানে বছরে ৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা পাচার হওয়ার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বাজুস বলেছে, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৩০টি জেলার সীমান্ত অবস্থিত।
এর মধ্যে খুলনা বিভাগের ৬টি মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর ও সাতক্ষীরা জেলা সোনা চোরাচালানের নিরাপদ রুট হয়ে উঠেছে। ভারতে পাচার হওয়া সোনার বড় একটি অংশ এসব জেলার সীমান্ত দিয়ে পাচার হয়ে থাকে। বাজুস চোরাকারবারিদের ধরতে সুপারিশে বলেছে, সোনা ও হীরা চোরাচালানে জড়িতদের ধরতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জোরালো অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন। সোনা ও হীরা চোরাচালান প্রতিরোধে বাজুসকে সম্পৃক্ত করে পৃথকভাবে সরকারি মনিটরিং সেল গঠন করা জরুরি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ১০১ দশমিক ৮৯ কোটি টাকার সোনা জব্দ করা হয়েছে।
২০১৪ থেকে ২০২৩ সালে বিজিবি সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে ৯২৫ কেজি সোনা জব্দ করেছে। গত ১০ বছরে শুল্ক গোয়েন্দা, কাস্টম হাউস, বিজিবি, পুলিশ ও এয়ারপোর্ট এপিবিএন সারা দেশে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৫৮৩ কেজি সোনা জব্দ করে। বিএফআইইউর তথ্য অনুযায়ী, এই সময়কালে সোনা যদি আনুষ্ঠানিক পথে আমদানি করা হতো তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকে ২২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ জমা হতো, যা থেকে সরকারের রাজস্ব আহরণ হতো প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
ঢাকা কাস্টমস হাউজের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমেই ২০২০ সালে ২ দশমিক ৭৭৫ টন, ২০২১ সালে ২৫ দশমিক ৬৮৯ টন, ২০২২ সালে ৩৫ দশমিক ৭৩৩ টন এবং ২০২৩ সালে ৩১ দশমিক ৪৬৮ টন সোনার বার ব্যাগেজ রুলের আওতায় আমদানি হয়েছে। কাস্টমসের তথ্যমতে, ২০২০ থেকে ২০২২ সালে শিল্পে ব্যবহারের জন্য চারটি চালানে ২ কেজি ১৬০ গ্রাম ডায়মন্ড আমদানি করা হয়েছে। তবে কোনো হীরার অলংকার আমদানি হয়নি। অবৈধ পথে হীরা আসছে। এর বড় কারণ শুল্ক ফাঁকি।
গত ১৯ বছরে এই মূল্যবান রত্ন আমদানিতে সরকার মাত্র ১২ কোটি টাকার রাজস্ব পেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, দেশের হীরার বাজার প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার। হীরা চোরাচালানের সঙ্গে কারা জড়িত, তাও দ্রুত চিহ্নিত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জোরালো ভূমিকা প্রয়োজন বলে মনে করছে বাজুস। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২ ধারায় সোনা চোরাচালানকে মানি লন্ডারিংয়ের স¤পৃক্ত অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আইনে সেখানে ১২ বছর পর্যন্ত কারাদ এবং ২০ (বিশ) লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, অপরাধীর মূল হোতা আড়ালে থেকে যায় এবং ধরা পড়ে চুনোপুঁটিরা। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও আইনের বেড়াজালে জামিনে মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে চুনোপুঁটির দল। ফলে চোরাচালান চলছে তাদের নিজস্ব গতিতেই।

অর্থনীতি
৯ হাজার কোটি টাকার জ্বালানি তেল কিনছে সরকার

আন্তর্জাতিক দরপত্র (কোটেশন) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের তিন প্রতিষ্ঠান থেকে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। দেশের জ্বালানি তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে চলতি বছরের জুলাই-ডিসেম্বরের (ছয় মাস) জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (৪ জুন) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এই জ্বালানি তেল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের তিনটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তিনটি প্যাকেজে এ তেল আমদানি করা হবে। প্যাকেজ বি- পেট্রোচিনা ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড, প্যাকেজ সিতে- ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড এবং প্যাকেজ ডিতে সিনোচেম আন্তর্জাতিক তেল (সিঙ্গাপুর) পিটিই লিমিটেড সিঙ্গাপুর। এতে মোট ব্যয় হযে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এর আগে গত ২ জানুয়ারি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে ২০২৫ সালের জানুয়ারি টু জুন সময়ের জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ম করপোরেশন (বিপিসি)’র ২০২৫ সালের পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব গত বছরের ২৪ অক্টোবর সিসিইএ বৈঠকে নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়।
দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে মেয়াদি চুক্তির আওতায় জি-টু-জি ভিত্তিতে নেগোসিয়েশন করা চীনের দুটি এবং ইন্দোনেশিয়া, আরব আমিরাত, ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ওমানের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন সময়ের জন্য ১৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।
এই জ্বালানি তেলের মূল্য প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স প্রাইসসহ ৯৫ কোটি ৬৫ লাখ ৮৭ হাজার ৩২ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১১ হাজার ৪৭৯ কোটি ৪ লাখ টাকা। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে সভায় এই প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তা যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দিয়েছে।
এরমধ্যে গ্যাস অয়েল ৮ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন, জেট এ-১: ১ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন, মোগ্যাস ৭৫ হাজার মেট্রিক টন, ফার্নেস অয়েল ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন এবং মেরিন ফুয়েল ৩০ হাজার মেট্রিক টন কেনা হবে।
কাফি
অর্থনীতি
১৭২ কোটি টাকায় পুলিশের জন্য কেনা হবে গাড়ি

বাংলাদেশ পুলিশের অপারেশনাল কাজে ব্যবহারের জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (ডিপিএম) মাধ্যমে ২০০টি ডাবল কেবিন পিকআপ ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে খরচ হবে ১৭২ কোটি টাকা।
বুধবার (৪ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ পুলিশের অপারেশনাল কাজে ব্যবহারের জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি (ডিপিএম)-এর মাধ্যমে ২০০টি ডাবল কেবিন পিকআপ ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বাংলাদেশ এর কাছ থেকে এই গাড়ি কিনতে খরচ হবে ১৭২ কোটি টাকা।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে আমরা কতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরমধ্যে ধারাবাহিকভাবে এলএনজি আনা যাতে জ্বালানির বিষয়ে আমরা সেভ থাকি।
তিনি বলেন, বৈঠকে শস্য গুদামজাত করার জন্য সাইলো নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পুলিশের অনেকগুলো গাড়ি ডেমেজ হয়েছে। এজন্য গাড়ি কেনার অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। একইসঙ্গে পুলিশের জন্য ঢাকার কাছাকাছি আমরা একটা বিশেষ স্থান করেছি। তারা সেখানে হাউজিং কমপ্লেক্স করবে।
এছাড়া বৈঠকে এমওপি, টিএসপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের কিছু লাইট হাউজ আছে সেগুলো চর কুকড়িমুকড়ি মতো বিভিন্ন জায়গায় করার জন্য অনুমোদন দিয়েছি। জলযান ও সেলভেজ ভেইক্যাল এর মতো একটা জাহাজ রিপেয়ার করবে সেটার জন্য টাকা অনুমোদন করেছি।
অর্থনীতি
৩৭৯ কোটি টাকায় ১০০ টন সার কিনবে সরকার

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে কানাডা ও রাশিয়া থেকে ৭০ মেট্রিক টন এমওপি সার এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ইউএই থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন রক ফসফেট আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৭৯ কোটি ৫৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯০০ টাকা।
বুধবার (৪ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সার উৎপাদনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের (টিএসপিসিএল) জন্য ৩০ হাজার মেট্রিক টন রক ফসফেট (৭০ শতাংশ বিপিএল মিনিমাম) আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) মেসার্স জেনট্রেড এফজেডই থেকে এ রক ফসফেট আনতে ব্যয় হবে ৮৯ কোটি ৫০ লাখ ৩৪ হাজার ৭০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ২৩২ দশমিক ৯০ মার্কিন ডলার।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন (সিসিসি) ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে এ সার আনতে ব্যয় হবে ১৬৫ কোটি ৭৩ লাখ ৯৪ হাজার ৪০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৩৯ দশমিক ৬৩ মার্কিন ডলার।
এছাড়া বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাশিয়ার জেএসসি ও বিএডিসির মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ সার আনতে ব্যয় হবে ১২৪ কোটি ৩০ লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৩৯ দশমিক ৬৩ মার্কিন ডলার।
অর্থনীতি
ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে অর্থনীতি স্থবির হবে না: অর্থ উপদেষ্টা

ঈদে টানা ১০ দিনের দীর্ঘ ছুটিতে দেশের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না বা স্থবির হবে না জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (০৪ জুন) সচিবালয়ে দুপুরে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ঈদে টানা ১০ দিনের ছুটি এ সময় দেশের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা বা স্থবির হবে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, স্থবির হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, ব্যবসায়ীরা তাদের মতো করে ব্যবসা করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে কোন কোন দিন, কোন কোন স্থানে ব্যাংক খোলা থাকবে… গরুর হাটে কীভাবে থাকবে।
তিনি বলেন, এ রকম হলিডে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে আরও বেশি থাকে। বড়দিনে ২০ থেকে ২৫ দিন ছুটি থাকে। নেপালে দুর্গাপূজার সময় ৩০ দিন ছুটি থাকে। তখন তাদের দেশ চলে না? সুতরাং দেশ চলবে। ইতোমধ্যে আমরা বাজেট দিয়ে দিয়েছি। বাজেটে মোটামুটি কর্মপন্থা কী হবে সেই অনুযায়ী কাজ হবে।
তিনি আরও বলেন, ঈদের পর বাজেটের ওপর কার কী মন্তব্য, সাজেশন থাকবে সেটি নেব। ১৯ জুন পর্যন্ত মতামত দিতে পারবে বাজেটের বিষয়ে। ২২ তারিখ কেবিনেট বৈঠকে বাজেট অনুমোদন হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে দারিদ্র্যদের জন্য সুখবর আছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সুখবর আছে, আপনারা বাজেটের কোথায় কোথায় পরিবর্তন হয়েছে সেটি একটু দেখেন।
এতে সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি ফিরবে বলে মনে করেন? এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, বাজেটে স্বস্তি আছে।
অর্থনীতি
যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় টোল আদায় ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা

ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে ঘরমুখো হচ্ছে মানুষ। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে।এদিকে বাড়ছে যমুনা সেতুতে টোল আদায়ের পরিমাণ। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু থেকে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং এর বিপরীত ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) সকালে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৭ হাজার ৬৫৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৫০ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৫ হাজার ৯০৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪১ লাখ ৮১ হাজার ৫০ টাকা।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য ৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর ওপর কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেই জন্য দুইটি রেকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় আছে। সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে, নেই যানজট। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশ মহাসড়কে সার্বক্ষণিক রাত-দিন কাজ করছে। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।