ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
সপ্তাহে ৭ দিনই হাফ পাস সুবিধা পাবে শিক্ষার্থীরা

সপ্তাহের সাত দিনই শিক্ষার্থীরা হাফ পাস সুবিধা পাবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের এক সচেতনতামূলক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
সাইফুল আলম বলেন, ঢাকা মহানগর এলাকায় ইউনিফর্ম অথবা ছবিযুক্ত পরিচয়পত্র দেখানো সাপেক্ষে আজ (সোমবার) থেকেই শিক্ষার্থীরা হাফ পাস সুবিধা পাবেন।
তিনি আরও বলেন, আগের সময়সীমা (সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা) বাতিল করে এখন থেকে ভোর ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এ সুবিধা দেওয়া হবে।
ঢাকা মহানগর এলাকার সব রুট ও এলাকার সব সিটি বাসে এই সিদ্ধান্ত বলবৎ হবে বলেও জানান ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
নিরাপদ সড়ক আন্দলোনের (নিসআ) আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ মেহেদি দীপ্ত বলেন, ২০২৪ সালের গণআন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিশেষ অবদানের প্রতি ধন্যবাদ জানাতে হাফ পাস বাস্তবায়ন করা হয়।
এ সময় হাফ পাস শুধু বাস নয়, রেল ও নৌযানসহ সব পরিবহনে সরকারকে বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানান তিনি।

ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ইবি শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু: তদন্ত শুরু, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভে সমাবেশ ও দিনব্যাপী প্রশাসন ভবন অবরোধ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এদিকে শিক্ষার্থী রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শাখা ছাত্রদল।
অপরদিকে, ইবি পুকুর থেকে শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার দ্রুততম সময়ের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করতে ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শহিদ জিয়াউর রহমান হলে এবং ক্যাম্পাসে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় সাজিদের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভে করতে থাকেন তারা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতারাও অংশ নেন। তবে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন শেষে র্যালি নিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে আসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, এসময়ে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের লিখিত আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ৫ ঘণ্টা পর প্রশাসন ভবনের অবরোধ তুলে নিলেও প্রকৃতপক্ষে দাবিসমূহ স্বাক্ষরিত হওয়ার পর প্রধান ফটকের তালা খোলা হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা সাজিদের মৃত্যুর তদন্ত দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ, পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা, আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের এন্ট্রি ও এক্সিট শতভাগ মনিটরিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা, ক্যাম্পাসের চারপাশে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তাবেষ্টিত বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা, ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত স্ট্রিট লাইট স্থাপন ও সক্রিয় রাখা ও বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন দাবি জানান।
মানববন্ধনে শাখা ছাত্রদল আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদ বলেন, আমার ভাই সাজিদের মৃত্যর ঘটনায় আমরা শোকাহত। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই। কোষাধ্যক্ষকে হুশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, নতুন অর্থবছর শুরু হয়েছে। অর্থের কোন অভাব নেই। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে যা কিছু প্রয়োজন তার সবই আপনাদের করতে হবে। আপনাদের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসিনি, আমাদের জন্য আপনারা এখানে এসেছেন।
আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. খান মুহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, আমরা আমাদের সন্তানদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছি। প্রশাসনের কাছে জানতে চাই, আমার ছেলে কেন এভাবে মৃত্যুবরণ করলো? এর সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের সাথে আমরা থাকবো। যে ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কারণে সাজিদের মত ছেলেরা জীবন দেয়, এই জীবন দেয়ার ব্যবস্থা কে ভেঙ্গে দিতে হবে। সুরক্ষিত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে, দুপুরেতদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেনের নেতৃত্বে মরদেহ উদ্ধারের তথ্য ও সাজিদের কক্ষ পরিদর্শন করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
এসময় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বলেন, রবিবার তার রুমমেট, বন্ধু সার্কেল এবং শিক্ষকদের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলা হবে। এ ঘটনার ব্যপারে সাংবাদিকদের নিকট যদি কোন তথ্য থাকে তা প্রদানের জন্য কমিটির পক্ষ থেকে অনুরোধ করছি।
তিনি আরও বলেন, সুরতহাল রিপোর্ট রেজিস্ট্রারের (ভারপ্রাপ্ত) কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে। সাজিদের ব্যবহৃত মোবাইলের এক সপ্তাহের কল রেকর্ডও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত)-এর মাধ্যমে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে চাওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাজিদের যোগাযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কমিটির দুজন সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে শহিদ জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজী বলেন, নির্ধারিত দিনের পূর্বে ৪টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছি এবং প্রশাসনে সাথে মিটিং হয়েছে পরবর্তীতে আরও পর্যাপ্ত ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, তদন্ত কার্যক্রম কীভাবে দ্রুত করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোও মেনে নেওয়া হয়েছে। আজকে থেকেই সিসিটিভি লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। আমরা এখন যত পদক্ষেপ ই নেই না কেন, সাজিদকে তো আর ফিরে পাব না। তবে তার মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদের আকস্মিক মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত ও শোকাহত। দেশের বাইরে থাকায় সরাসরি আমি উপস্থিত থাকতে না পারা আমার জন্য দুঃখজনক। বিষয়টি জানার পরপরই আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। আমি বলেছি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে যতদ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন দাখিল করে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা যে দাবিগুলো করছে সেগুলো অত্যন্ত যৌক্তিক দাবি। আমরা তাদের দাবির সাথে একমত। শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছি।
উল্লেখ্য, এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠে শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখা, ছাত্রশিবির’সহ ক্রিয়াশীল সকল সামাজিক ও রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষণ করেন এবং তাদের সাথে সহাবস্থান করেন।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
শিক্ষার্থীর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে ছাত্রশিবিরের ‘টর্চ লাইট’ মিছিল

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ’র রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে ‘টর্চ লাইট’ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় নিরাপদ ক্যাম্পাস ও শতভাগ আবাসিকতা নিশ্চিত করার দাবিও জানান সংগঠনটি।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাত ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে সমবেত হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা।
মিছিলে তারা ‘আমার ভাই মরলো কেন’ প্রশাসন জবাব চাই’, ‘পুকুরে লাশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘সাজিদ হত্যার তদন্ত, করতে হবে করতে হবে’, ‘আর কত পরলে লাশ, প্রশাসনের হবে লাজ’, ‘ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত কর, করতে হবে’, ‘লাশ নিয়ে রাজনীতি, চলবে না চলবে না’, ‘প্রশাসনের তালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘শিবিরের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরো দিবো রক্ত’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
এসময় শাখা ছাত্রশিবির নেতা হাসানুল বান্না অলি বলেন, ‘সদর হাসপাতালের ডাক্তার বলেছে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসতে আড়াই মাস সময় লাগবে। আমরা আগামী ২ দিনের মধ্যে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেখতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির আগামী ৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন টালবাহানা করে তদন্তের নামে মুলা ঝুলিয়ে দেয়। আমরা কেউ সাজিদের মতো হতে চাই না। আমরা তার রহস্যময় মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মু. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা আজকে সবাই এখানে একত্রিত হয়েছি আমাদের ভাই সাজিদ আবদুল্লাহকে কেন হারালাম এটা জানার জন্যে। এটার সুষ্ঠু তদন্ত প্রশাসনকে করতে হবে। এটা নিয়ে প্রশাসন কোন অবহেলা করতে পারবে না, এটাকে নিয়ে কোন রাজনীতির আশ্রয় নেয়া যাবে না। আপনারা শিক্ষার্থীদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন-দশ কার্যদিবসের ভেতরে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করবেন। যদি তা এগারো দিনে গড়ায় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেয়া হবে। আজকে ছাত্রশিবির দলীয় দাবি নিয়ে এখানে আসে নাই, শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
এছাড়া তিনি আরও বলেন, ‘এখানে শিক্ষার্থীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় নাই। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাইটিং ও সিসিটিভি স্থাপন করা হয় নাই, যদি আপনারা মনে করেন আপনাদের টাকা নাই, নিজেদের কাঙ্গালী মনে হয়, তাহলে আমাদেরকে বলুন ভিক্ষা দিয়ে প্রশাসনকে সহায়তা করবো। কিন্তু এই কাঙ্গালিপনা আমাদের দেখাবেন না।’
তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে হবে। বড় ভাই রাজনীতি সিস্টেম আর চলবে না। শুধু এখানে-সেখানে বক্তব্য দেয়া প্রশাসনের কাজ নয়। শিক্ষার্থীদর নিরাপত্তা নিশ্চিত সহ সুবিধা-অসুবিধা দেখা প্রশাসনের কাজ। যদি শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা না বুঝেন তাহলে এমন এক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে যাতে প্রশাসন টিকতে পারবে না। ইকসু নিশ্চিত করতে হবে তাহলে প্রশাসন হবে শিক্ষার্থীবান্ধব। নাহলে প্রশাসন শিক্ষার্থীবান্ধব হবে না। আগামীকাল থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে যে আন্দোলন হবে ইসলামী ছাত্রশিবির সবসময় সাথে থাকবে।’
অর্থসংবাদ/সাকিব/কাফি
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ইবি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুই তদন্ত কমিটি গঠন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাহ আজিজুর রহমান হল পুকুরে এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় প্রশাসন কর্তৃক পাঁচ সদস্যের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি এবং ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে শহীদ জিয়াউর রহমান হল প্রশাসন।
শুক্রবার (১৮ জুলাই ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ ও শহীদ জিয়াউর রহমান হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এসব তথ্য জানা যায়।
অফিস সূত্রে জানা যায়, গত (১৭জুলাই) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুর থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২০২২ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ’র ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে সঠিক ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদানের জন্য উপাচার্য একটি ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেছেন।
ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন। অন্য সদস্যরা হলেন- শাহ আজিজুর রহমান হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড.এ টি এম মিজানুর রহমান, লালন শাহ হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. গাজী আরিফুজ্জামান খান, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড.খাইরুল ইসলাম।
গঠিত কমিটিকে আগামী ১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে উপাচার্যের নিকট রিপোর্ট পেশ করার জন্য অনুরোধ করা হয়।
ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট সদস্যদের নিয়ে আগামীকাল থেকেই কার্যক্রম শুরু করবো। যেহেতু বিষয়টি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার সাথে জড়িত।’
এদিক হল প্রশাসনের আদেশ সূত্রে জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২০২২ বর্ষের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ১০৯ নং কক্ষে অবস্থানরত মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ এর পুকুরে ডুবে মৃত্যুর বিষয়টি যথাযথ তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রদানের লক্ষ্যে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হলো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কিমিটি করছে। ময়নাতদন্ত করা হয়েছে, রিপোর্ট পেলেই আমরা প্রকৃত ঘটনাটি জানতে পারবো। সবকিছুই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার বিশ্লেষণ করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা) অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা বের করা হবে।’
অর্থসংবাদ/সাকিব/কাফি
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
পুকুর থেকে ইবি শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার, ক্যাম্পাসজুড়ে শোক

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুর থেকে এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, শিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, খেলাফত মজলিস’সহ ক্যাম্পাসজুড়ে শোক প্রকাশ করেছে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শোক প্রকাশ ও রহস্যজনক মৃত্যুর তদন্তের দাবি জানান তারা।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সাড়ে ৬ টায় ইবির নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে কুষ্টিয়া মেডিকেলে পাঠানো হলে মৃত্যু ঘোষণা করে ডাক্তার সুতপা রায়। তিনি জানান, ‘ডুবে যাওয়ার সিম্পটম পাওয়া গেছে। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে পেঠের লান্স ফেটে ডুবে গিয়ে মারা গেছে। তবে পোস্টমর্টেম করানোর পর বিস্তারিত জানা যাবে।
প্রত্যক্ষদর্শী আকমল জানান, আছরের নামাজের পর হঠাৎ করে পুকুরে মাঝে কিছু একটা দেখেছিলাম। পুকুরে অনেক সময় ময়লার স্তুূপ ভেসে থাকে তাই তেমন কিছু মনে করেনি। পরবর্তীতে লাশ পুকুরের কিনারায় আসে তখন বুঝতে পারি এটা মানুষের মৃতদেহ। এরপর সবাই জানতে পেরে জড়ো হয়। পরবর্তীতে পুলিশ উপস্থিততে পুকুর থেকে মরদেহ তোলা হয়।
জানা গেছে, সাজিদ গতকাল বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলছিলেন। এরপর থেকে বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করা হয়নি। আজ ৬ টার দিকে পুকুরে লাশ দেখা গেলে সাড়ে ৬ টার দিকে নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ইবি মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে অ্যাম্বুলেন্স করে কুষ্টিয়া সদরে নেওয়া হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই সময় পুকুর পাড়ে সাজিদের জুতা পাওয়া যায়। তিনি শহিদ জিয়াউর রহমান হলের ১০৯ নং রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী।
মৃত ব্যক্তির এক বন্ধু ইনসাফ জানান, ‘আমি গতকাল দিনাজপুরে গেছিলাম। তার সাথে গতকাল দুপুর ২ টা পর্যন্ত ছিলাম। রাত থেকে কল দিয়ে যাচ্ছি- বন্ধ। তবে সকালে কেউ একজন কল রিসিভ করে কথা বলেননি।’ আমার ৮ বছরের বন্ধু বলে কান্না ভেঙে পড়েন তার বন্ধু ইনসাফ।
ইবি থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, স্টাফদের সহায়তায় আমরা লাশটা কিনারায় আনার ব্যবস্থা করি এবং তাকে উপরে তুলে সে মারা গেছে না বেঁচে আছে এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যে মেডিকেল সেন্টার আছে সেখানে প্রেরণ করি। এখানে ডাক্তার মৃত্যু নিশ্চিত বা কোন কিছু ক্লিয়ার না হতে পেরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল (২৫০ বেড) প্রেরণ করেন।
ইবি মেডিকেলের চিকিৎসক মো. শাহেদ বলেন, লাশটা যখন মেডিকেলে সাড়ে ছয়টার দিকে আনা হয় তখন পালস ছিল না। ডেড সিম্পটম দেখে বুঝা যাচ্ছিল সাত থেকে আট ঘন্টা পূর্বে মৃত্যু ঘটেছে। মেডিকেলে আমরা ডেড ক্লিয়ারেন্স করতে পারি না। পুলিশি কেস ও পোস্টমর্টেমের ব্যপার থাকে তাই নিয়ম অনুযায়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ৬ টার দিকে শিক্ষার্থীরা জানালে দ্রুত পুলিশ নিয়ে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদরে যায়। ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। ডাক্তার আপাতত ডুবে যাওয়ার আলামত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন এবং পোস্টমর্টেম করানোর পর বিস্তারিত জানা যাবে। শিক্ষার্থীর অভিভাবক আসলে সম্মতিক্রমে পোস্টমর্টেম করানো হবে।
উল্লেখ্য, সাজিদ আব্দুল্লাহর বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এবং শিল্পী হিসেবে তার বেশ সুনাম রয়েছে। তার এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। শিক্ষক -শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, এটা কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু হতে পারে না। এর পিছনে কোনো না কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে। এ মৃত্যুর সঠিক তদন্ত দাবি করছি। সাজিদ আব্দুল্লাহ’র মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।
অর্থসংবাদ/সাকিব/কাফি
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
৪৮তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা আজ, নিয়োগ পাবেন ৩ হাজার চিকিৎসক

৪৮তম বিশেষ বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা (এমসিকিউ) আজ অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী এ পরীক্ষা শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।
স্বাস্থ্যখাতের জন্য জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগে আয়োজিত এই বিশেষ বিসিএসে মোট ৩ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সূত্রে জানা গেছে, মোট ৩ হাজার চিকিৎসকের মধ্যে ২ হাজার ৭০০ জনকে সহকারী সার্জন এবং ৩০০ জনকে সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।
পিএসসির নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রার্থীদের সকাল ৮টা থেকে ৯টা ৩০ মিনিটের মধ্যে পরীক্ষার কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে। নির্ধারিত সময়ের পর কেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে না। পরীক্ষার্থীদের শুধু প্রবেশপত্র ও কালো কালি ব্যবহারযোগ্য বলপেন সঙ্গে আনার অনুমতি রয়েছে। নিষিদ্ধ কোনো সামগ্রী সঙ্গে আনলে নেওয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা।
জানা গেছে, ২০০ নম্বরের এই লিখিত পরীক্ষাটি হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে। এর মধ্যে মেডিকেল সায়েন্স বিষয়ে ১০০ নম্বর এবং সাধারণ বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। সাধারণ বিষয়ের মধ্যে বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, মানসিক দক্ষতা এবং গাণিতিক যুক্তি- এই ছয়টি ভাগে প্রশ্ন বিভক্ত থাকবে।
এই লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।
চিকিৎসক সংকট মোকাবিলায় সরকার এই বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে দ্রুত নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে। পরীক্ষার সার্বিক নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে পিএসসি সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের কথা জানিয়েছে।