জাতীয়
এবারের জাতিসংঘ সম্মেলন যেসব কারণে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ড. ইউনূস এমন সময় জাতিসংঘের এই অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন যার মাত্র দেড় মাস আগে বাংলাদেশে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের শাসন ক্ষমতাকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে হটিয়ে এখন দেশটিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিচালনা করছে। ফলে এবারের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য একটা ভিন্ন পরিস্থিতিতে হচ্ছে।
এবারের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য কেন বা কতটা গুরুত্ব বহন করছে?
বাংলাদেশের জন্য এবারের সম্মেলন কেন গুরুত্বপূর্ণ
বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া এবং ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিচ্ছে।
এর আগে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র ইস্যুতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা অনেক দেশের সাথে বাংলাদেশের একপ্রকার টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বাংলাদেশের পরিস্থিতির কড়া সমালোচনা করে আসছিল।
ফলে এই সম্মেলনকে বাংলাদেশের জন্য ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের একটি প্রেক্ষাপট হিসাবে বিশ্লেষকদের অনেকেই দেখছেন।
এমন মনোভাব পরিষ্কার হয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের বক্তব্যেও।
এবারের অধিবেশন দেশের জন্য “বিশ্বসভায় নতুন পদচারণা” এবং বিশ্ব দরবারে নতুনভাবে বাংলাদেশকে তুলে ধরার ‘বিশাল সুযোগ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন
বাংলাদেশে জাতিসংঘের সদস্যপদ প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্ণ হওয়ায় এবারের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
এ উপলক্ষে ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বাংলাদেশ একটি উচ্চ পর্যায়ের রিসেপশন আয়োজন করেছে যেখানে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি দলের প্রধান, জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা, কিছু সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান অংশ নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এবারের অধিবেশনে “অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় আসার প্রেক্ষাপট, এই মুহূর্তে কী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছেন, ভবিষ্যতে তারা কী করতে চান, এ বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরা এবং তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আহবান জানানো” এ বিষয়গুলো দেখা যাবে বলে ধারণা করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ূন কবির।
ড. ইউনূসের মতো ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া এবং বাংলাদেশের হয়ে কথা বলাটা একটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।
একই সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের জায়গা, বিভিন্ন সংস্কারের কৌশলগত বা টেকনিক্যাল দিকে সাপোর্ট, বিদেশে টাকা পাচার, অত্যাচার-নির্যাতন নিয়ে চলমান তদন্ত, এসব বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতার পথ সুগম হবে বলেও মনে করেন হুমায়ূন কবির।
আরেক সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহমুদ হাসান মনে করেন, বাংলাদেশ অর্থনীতির যে সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সেখানে বৈদেশিক সাহায্য ও বিনিয়োগ আনতেও এবারের সম্মেলনটিকে কাজে লাগানো হতে পারে। তিনি বলছেন, আমাদের তো দরকার এখন আর্থিক সহায়তা এবং সহযোগিতা।
ফলে ক্ষয়ক্ষতি থেকে উত্তরণে এবং একটা টেকসই আর্থিক উন্নয়নে ড. ইউনূস বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোর কাছে সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদল সাইডলাইনে আলোচনা করবেন বলে তিনি মনে করেন।
সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিম ফেরদৌস মনে করেন, উন্নয়ন, ঋণ বা আর্থিক সহায়তার মতো বিষয়গুলো কমিটি পর্যায়ের আলোচনায় আসবে এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল সেখানে কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারবে তার ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের জন্য এবারের পরিষদ কতদূর ফলপ্রসূ হবে।
গত বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র ইস্যু জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অন্যতম উদ্বেগের জায়গা ছিল। সেখানেও বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের কর্মকর্তারা পরিবর্তিত চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করবেন বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহমুদ হাসান মনে করেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, মানবাধিকার এমন বিষয়গুলোও তাদের আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব সহকারে আসবে। বর্তমানে যে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে, সেটা তারা তুলে ধরতে চাইবেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার পর আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে শুভেচ্ছা পেয়েছেন। বিশ্বপরিসরে খ্যাতির কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনি বাংলাদেশের জন্য একটা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারবেন বলে বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন।
সাবেক কূটনীতিবিদ নাসিম ফেরদৌস মনে করেন, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক পরিচিতি এবং একরকম বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জায়গা থাকায় তার বক্তব্য একটা বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে শোনা হবে।
অর্থনীতির বাইরে প্রযুক্তিগত দিক, তরুণ প্রজন্মের অংশিদারিত্ব, রাজনৈতিক সহযোগিতা পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সদিচ্ছার মতো দিক নিয়ে আলোচনাও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের যেসব অগ্রাধিকারের যেসব জায়গা রয়েছে সেগুলো বাংলাদেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, তাদের প্রতিনিধিদল সেসব ইস্যু সংক্রান্ত ইভেন্টে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে। এবারের অধিবেশন বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোকে বিস্তৃত ও সুদৃঢ় করবে বলে আশাবাদও জানিয়েছেন তিনি।
২৭ তারিখ বক্তব্যে যে বিষয়গুলো উঠে আসবে তার একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের বিবরণ, জনগণকেন্দ্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু ইস্যু, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবস্থান, উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে সম্পদ পাচার প্রতিরোধ, নিরাপদ অভিবাসন, প্রযুক্তির টেকসই হস্তান্তর, ফিলিস্তিন–এমন বিভিন্ন বিষয় আসতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
গণহত্যার বিচার করে বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বাংলাদেশ
জুলাই গণহত্যার বিচার করে বাংলাদেশ বিশ্বের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার যে গণহত্যা চালিয়েছে, তা এক কথায় কল্পনাতীত। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ চায় এ গণহত্যার বিচার হোক। অন্তর্বর্তী সরকার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার মাধ্যমে এ গণহত্যার বিচার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পৃথিবীর সামনে এ গণহত্যার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায় বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের দপ্তরে তুরস্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক জুরিস্ট ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাতের শুরুতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে তৈরি করা ভিডিও ‘জুলাই অনির্বাণ’ জুরিস্ট ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলকে দেখানো হয়।
নাহিদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তারপর দেশে টানা তিনদিন সরকার না থাকায় অনেক ফ্যাসিস্ট সমর্থক দেশ ছেড়ে পালানোর সুযোগ পেয়েছে। আমরা গণহত্যার বিচারের কাজ শুরু করেছি। প্রাথমিকপর্যায়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ চলছে।
প্রতিনিধিদল জুলাই গণহত্যার বিচারের সময়কাল ও প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুততম সময়ে অত্যন্ত স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে সম্পন্ন করা হবে। এ বিচার কখনোই প্রতিশোধমূলক হবে না। কারণ বিচার মানেই ন্যায়বিচার।
গণহত্যার বিচারের বিষয়ে ফ্যাসিস্ট বিরোধী সব দল ঐকমত্য বলেও তাদের জানান উপদেষ্টা। পাশাপাশি এ বিচার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে দেশ-বিদেশের সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, এ বিচার শুধুমাত্র বাংলাদেশের নির্যাতিত ও গণহত্যার শিকার হওয়া মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নয় বরং বিশ্বের মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের পরিণাম হিসেবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা প্রয়োজন।
‘এ বিচার প্রক্রিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর রয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে। আন্তর্জাতিক জুরিস্ট ইউনিয়নের পরামর্শ, সহযোগিতা এবং অভিজ্ঞতা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গ্রহণ করতে প্রস্তুত’ যোগ করেন নাহিদ ইসলাম।
এদিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যে গণহত্যা হয়েছে তা সুস্পষ্ট অপরাধ এবং তার শাস্তি হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরাও। তারা নৈতিকভাবে জুলাই গণহত্যার বিচারকে সমর্থন করেন জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে গণহত্যাকারীদের বিচারের বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।
সাক্ষাৎকালে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, আইসিটি পলিসি অ্যাডভাইজার ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া জুরিস্ট ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলে ছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, তুরস্কের চারটি গণঅভ্যুত্থানে বিচারিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চিফ প্রসিকিউটর, তুরস্কের একাধিক সাবেক সংসদ সদস্য, তুরস্কের সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাংলাদেশের প্রসিকিউটররা।
আন্তর্জাতিক জুরিস্ট ইউনিয়ন বিশ্বের ৪০টি দেশে আইনজীবী, শিক্ষাবিদ এবং প্রসিকিউশন এক্সপার্টদের সঙ্গে কাজ করে। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের কিছু আইনজীবীও কাজ করছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
নেচারের সেরা ১০ ব্যক্তিত্বের তালিকায় ড. ইউনূস
বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারের সেরা ১০ ব্যক্তিত্বের তালিকায় স্থান পেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নেচার তাকে ‘নেশন বিল্ডার’ আখ্যা দিয়েছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) নেচার সাময়িকীর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে কীভাবে গবেষকেরা পৃথিবীকে গড়ছেন তার স্বীকৃতি এই তালিকা।
এ বছরের তালিকায় আবহাওয়া পূর্বাভাসের নতুন ধারণা থেকে শুরু করে একটি জাতিকে নেতৃত্ব দেয়ার মতো বিষয় স্থান পেয়েছে।
ড. ইউনূস সম্পর্কে নেচার বলেছে, বাংলাদেশে স্বৈরাচারী সরকারের পতনে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীরা শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেশের নেতৃত্ব দিতে আমন্ত্রণ জানানোর দাবি জানিয়েছিলেন। এটি ইউনূসের জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ ছয় দশকের পেশাজীবনে তিনি কখনো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেননি।
ড. ইউনূসের সঙ্গে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করা অ্যালেক্স কাউন্টস বলেন, ‘তিনি আশির কোঠায়, কিন্তু তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উজ্জ্বল। তার সহানুভূতি রয়েছে এবং তিনি একজন চমৎকার যোগাযোগকারী।’
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জন্ম নেয়া ড. ইউনূস ১৯৬০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং পরিবেশগত অর্থনীতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নিকোলাস জর্জেসকু-রোগেনের অধীনে পড়াশোনা করেন।
তার যুগান্তকারী উদ্ভাবন হলো ‘ক্ষুদ্র ঋণ’। এই উদ্ভাবনের মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন, সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে ক্ষুদ্রঋণ সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র অংশের জীবন বদলে দিতে পারে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
সাবেক ডিসি জসীমসহ চার পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের সাবেক উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জসীম উদ্দীন মোল্লাসহ চার পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অন্য কর্মকর্তারা হলেন, গুলশান বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. রফিকুল ইসলাম, ট্রাফিক-যাত্রাবাড়ী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) তানজিল আহমেদ এবং এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রকাশ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেনের সই করা পৃথক চারটি প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ডিএমপির সাবেক ডিসি ও বর্তমানে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত মো. জসীম উদ্দীন মোল্লাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গত ৩০ অক্টোবর রংপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সেহেতু জসীম উদ্দীন মোল্লাকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৩৯ (২) ধারার বিধান অনুযায়ী ৩০ অক্টোবর থেকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
গুলশান বিভাগের সাবেক এডিসি মো. রফিকুল ইসলামকে নিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাড্ডা থানার মামলায় গত ১৮ অক্টোবর গ্রেপ্তার করে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
সেহেতু, রফিকুল ইসলামকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৩৯ (২) ধারার বিধান অনুযায়ী ১৮ অক্টোবর থেকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
সাময়িক বরখাস্তকালীন রফিকুল ইসলামকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
ট্রাফিক-যাত্রাবাড়ী জোনের এসি তানজিল আহমেদের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় গত ১৫ অক্টোবর তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
সেহেতু, তানজিল আহমেদকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৩৯ (২) ধারার বিধান অনুযায়ী ১৫ অক্টোবর থেকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
সাময়িক বরখাস্তকালীন তানজিল আহমেদকে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, হাটহাজারী মডেল থানার মামলায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
সেহেতু, রফিকুল ইসলামকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৩৯ (২) ধারার বিধান অনুযায়ী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
সাময়িক বরখাস্তকালীন রফিকুল ইসলামকে ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
দুদকের নতুন চেয়ারম্যান মোমেন, নিয়োগ পেলেন দুই কমিশনারও
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান হিসেবে জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দুজন কমিশনারও নিয়োগ পেয়েছেন। নতুন দুই কমিশনার হলেন মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহ্সান ফরিদ।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে চুক্তিতে কর্মরত ছিলেন। তিনি ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। আজই তাঁর এই চুক্তি বাতিল করে আলাদা একটি আদেশ জারি করে জনপ্রশাসন।
এখন দুদক চেয়ারম্যান হিসেবে মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের বেতন–ভাতা, অন্যান্য সুবিধা ও পদমর্যাদা হবে আপিল বিভাগের বিচারকের সমান। আর দুই কমিশনারের বেতন–ভাতা, অন্যান্য সুবিধা ও পদমর্যাদা হবে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের সমান।
মোহাম্মদ আবদুল মোমেনকে যুগ্ম সচিব থাকা অবস্থায় ২০১৩ সালে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চুক্তিতে তাঁকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। পরে তাঁকে জ্যেষ্ঠ সচিবের পদমর্যাদা দেওয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সামরিক সংলাপ বুধবার
১১তম বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সামরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ ও ১২ ডিসেম্বর। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আইএসপিআর জানায়, এই সামরিক সংলাপে বাংলাদেশ থেকে একটি সামরিক প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করবে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের অপারেশন্স ও পরিকল্পনা পরিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.আলীমুল আমীন।
এই সামরিক সংলাপ দুই দেশের পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সংলাপে উভয় দেশের সামরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হবে। এ ছাড়াও বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি, দুর্যোগ মোকাবিলা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন, যৌথ অনুশীলন ও মহড়া, কর্মশালা ইত্যাদি নানাবিধ ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়টি আলোচিত হবে। প্রতিনিধি দলে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন।
কাফি