রাজনীতি
শিবির সেক্রেটারির সঙ্গে আলোচনা করে ৯ দফা তৈরি: সমন্বয়ক কাদের

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঘোষিত নয় দফা নিয়ে এবার মুখ খুললেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের। নয় দফা কিভাবে ঘোষণা হয়েছিল সে বিষয়ে রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিজের ফেসবুক পেজে বিস্তর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন তিনি।
আব্দুল কাদের লিখেছেন, ‘কোটা সংস্কারকে উদ্দেশ্য করে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল; কিন্তু সরকার পরিস্থিতি ঘোলাটে করলে আন্দোলন ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় নয় দফার অবতারণা হয়।’
‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলাম; কিন্তু ১৬ তারিখ মঙ্গলবার আবু সাঈদসহ ৬ জন যখন শহীদ হন। ওইদিন রাত ১২ টায় সামনের সারির সমন্বয়করা মিলে আমরা একটা অনলাইন মিটিং করি। মিটিংএ প্রথম এজেন্ডাই ছিল আজকে যে ছয়জন শহীদ হলেন, এই ছয়টা লাশের বিনিময়ে শুধু কোটা সংস্কার কি না? তখন সবাই হই হই করে বলে উঠে, ছয়টা লাশের বিনিময়ে শুধু কোটা সংস্কার হতে পারে না। পরবর্তীতে দীর্ঘক্ষণ আলাপ আলোচনা করা হয়।
এই আলোচনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিসহ আরো কিছু দাবি দাওয়া উঠে আসে। বলে রাখা ভালো, আমরা এতোদিন “বাংলা ব্লকেড” থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি পেশসহ নানান সফট এবং হার্ড কর্মসূচি নিয়ে মাঠে অবস্থান করেছিলাম; কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে একেবারে নির্বিকার-নির্লিপ্ত মনোভাব পরিলক্ষিত হয়েছিল। আলাপ-আলোচনার ধার ধারেনি সরকার, কেবল হাইকোর্টের কাঁধে বন্দুক রেখে চুপচাপ দেখে যাচ্ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি যখন বেগতিক হয়ে যায়, ৬ জন শহীদ হয়; ওইদিনই সরকার আলোচনার জন্য তোড়জোড় শুরু করে দেয়, আমাদেরকে বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ দিতে থাকে আলোচনায় বসার জন্য।
কিন্ত আমরা আলোচনার আহ্বানকে বরাবরের মতোই প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করি। যদিও ভিতর-বাহির থেকে আলোচনায় বসার নানারকম চাপ আসছিল।’
তিনি বলেন, ‘সরকার সংলাপের আহ্বান ফরমালি জানিয়েছিল কিন্ত সেটার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের অবস্থান ফরমালি ক্লিয়ার করিনি। ক্লিয়ার করার সুযোগও পাইনি। বুধবার গায়েবানা জানাযায় ঢাবি ক্যাম্পাসে পুলিশ আমাদের উপর গুলি চালায়, আমিসহ কয়েকজন আহত হই।
হান্নান মাসউদ গুলিবিদ্ধ হন। তখন থেকেই আমরা আন্দোলন পরিচালনা করে যাবার স্বার্থে কৌশলী অবস্থান নিয়ে গ্রেপ্তার এড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই। যদিও সরকারের সংলাপকে প্রত্যাখ্যান করে মঙ্গলবার রাতে আমরা কিছু দাবি দাওয়া ঠিক করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে সবাই মিলে আলাপ-আলোচনা করে যে সেই দাবিগুলো ফাইনাল করব সে সময় পাইনি। তবে আমরা বৃহস্পতিবার মাঠের কর্মসূচি (কমপ্লিট শাটডাউন) দিয়ে নিজেদের অবস্থান ক্লিয়ার করেছিলাম। বৃহস্পতিবার আমি আর আসিফ ভাই এক বাসা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভিন্ন ভিন্ন গন্তব্যে চলে যাই। ওইদিন ১৮ তারিখ রাতেই ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় সরকার। আমরাও কর্মসূচি চলমান রাখতে, গ্রেপ্তার এড়াতে বার বার জায়গা পরিবর্তন করে বেড়াচ্ছি। কারো সাথে তেমন কোনো যোগাযোগ করতে পারছি না।’
‘আন্দোলনের শুরুতেই নাহিদ ভাই আমাকে ডেকে নিয়ে এক লোকের সাথে মিট করায় এবং পরবর্তীতে আন্দোলনের পারপাসে একাধিকবার ওই লোকের সাথে যোগাযোগ হয়; পরবর্তীতে জানতে পারি তিনি ঢাবি শিবিরের ছাত্র আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। কিন্ত তখনো শিবিরের সভাপতি এবং সেক্রেটারির সাথে ওইভাবে যোগাযোগ হয়নি।’
‘শুক্রবার যাত্রাবাড়ি এলাকায় যখন আন্দোলন করছিলাম তখন শিবিরের ঢাবি সেক্রেটারি ফরহাদ ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, “আন্দোলনরত কয়েকজন সমন্বয়ক সরকারের মন্ত্রীদের সাথে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে, এতো এতো শহীদের রক্তের সাথে বেইমানী করতেছে তারা। আন্দোলন শেষ হয়ে যাবে। কিছু দাবি-দাওয়া দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে, মানুষের সাথে বেইমানি করা যাবে না।” আমি সম্মতি জানাই। আমাদের তো আগেই অবস্থান ছিল আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার। তাছাড়া মঙ্গলবার রাতের মিটিংয়ে ঠিক করা কিছু দাবি দাওয়া আমার মাথায় আছে।’
‘আন্দোলন চালিয়ে নেয়ার মতো মাঠে কোনো সিনিয়র নেই। আসিফ-নাহিদ ভাইকে গুম করে রেখেছে। আমি সাত-পাঁচ না ভেবে রিস্ক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ওইদিন জুমার নামাজের পর পরই যাত্রাবাড়ীতে কয়কজন শহীদ হন, সবগুলা আমার চোখের সামনেই ঘটতেছে। মানুষকে পাখির মতো গুলি করে মেরে ফেলছে, এটা আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না। তাছাড়া দীর্ঘদিন জেল-জুলুম, হামলা-মামলার শিকার হয়ে হাসিনার এমন অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলে গেছি; মাথা নত করিনি। আমার পরিণতি কি হবে, সেটা ঘুনাক্ষরেও কল্পনা করিনি। চোখের সামনে মানুষ মেরে ফেলছে, মানুষের কথা চিন্তা করে নিজের জীবনের কথা ভাবার সময় পাইনি। গত ৪/৫ বছর ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই আমাদেরকে দৃঢ়তা ধরে রাখার শিক্ষাই দিয়েছে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে হাল ধরার সিদ্ধান্ত নিই।’
‘যাইহোক, কিছুক্ষণ বাদে শিবিরের সেক্রেটারি আমাকে আবারো ফোন দিলেন। বলছেন, “কিছু দাবি দাওয়া খসড়া আকারে করছি, তোমার সাথে আলোচনা করি”৷ আমাদেরও যেহেতু আগেই আলোচনা হয়েছিল অনেকগুলো দাবির ব্যাপারে সেগুলো তখন উনার সাথে আলোচনা করে সমন্বিতভাবে তৈরী হয় ৯ দফা।’
‘তিনি একে একে কিছু দাবি বললেন। যেগুলা খুব কমন দাবিদাওয়া- যেমন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ, ছাত্র হত্যার সাথে জড়িত পুলিশ প্রশাসনকে বরখাস্ত, সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনা, ভিসি’র পদত্যাগ। যেগুলা ৬ জন শহীদ হওয়ার পরে মঙ্গলবার রাতের বৈঠকের আলোচনাতেই আমরা ভেবেছিলাম। এছাড়া মানুষজনও সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন কিছু দাবিদাওয়া জানিয়ে আসছিল। শেষের দিকে গিয়ে শিবিরের সেক্রেটারি একটা দাবি এড করলেন, “ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে” এটা আমি মানি নাই, দীর্ঘক্ষণ আলাপ আলোচনা হল। পরে আমি বললাম, ঢালাওভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা যাবে না, এক্ষেত্রে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের কথা বলতে পারেন। পরে সেটাই ঠিক হল, “লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে”।
‘এই হইলো নয় দফা তৈরির পেছনের গল্প। তবে নয় দফা প্রচার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল শিবির। যেহেতু নেট নেই, গোলাগুলি-কারফিউয়ের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সশরীরে হাউজে হাউজে পৌঁছে দিয়েছে, বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা তারাই করেছে।’
‘আমাকে নতুন একটা সীম এবং মোবাইল কালেক্ট করার পরামর্শ দিল তারা। আমি স্টুডেন্টের বাসা থেকে সীম নিয়ে ওই নম্বরটা নয় দফা সংবলিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির সাথে দিয়ে দিলাম। ওইদিন সন্ধ্যায় বাসা থেকে ৪-৫ কিলো দূরে হেটে গিয়ে পরিচিত সাংবাদিকদেরকে ফোন দিয়ে নয় দফার বিষয়টা জানালাম। টুকটাক ছাত্র রাজনীতি করার সুবাদে ক্যাম্পাসের সাংবাদিকদের সাথে আমার পরিচয় ছিল। তো ওই রাতে তাদের অনেককে একটা একটা করে দফা বাটন ফোন দিয়ে ম্যাসেজের মাধ্যমে দাবিগুলা লিখে পাঠাইছি। পুরা নয়টা দাবি একসাথে ম্যাসেজে পাঠানো যায় না। কাউকে আবার মুখে বলে দিয়েছি, সে লিখে নিয়েছে। কেউ আবার রেকর্ড করে নিয়েছেন। কনফার্ম হওয়ার জন্য অনেকেই ফোন দিয়েছেন, এটা আসলেই আমি দিয়েছি কি না। বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলাকেও ফোন দিয়ে কনফার্ম করতে হয়েছে, ‘আমার পক্ষ থেকে এটা যাচ্ছে, আপনাকে একজন পেনড্রাইভের মাধ্যমে পৌঁছে দেবেন।’ এইভাবে চলল রাতের ১১ টা পর্যন্ত।’
‘প্রতিদিন রাতের বেলায় বাসা থেকে দূরে চলে যেতাম। ফোন অন করে সাংবাদিকদের সাথে ২-৩ ঘন্টা কথাবার্তা বলে, তাদেরকে কনফার্ম করে, ফোন বন্ধ করে আবার বাসায় ফিরতাম। সিনিয়ররা গুম অবস্থায় ছিল, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না বাকিদের সাথেও। এইভাবেই চলতে থাকল। আমার বাসা ছিল যাত্রাবাড়ী থানার পাশেই। গ্রেপ্তারের আতঙ্ক, তারপরও বাসায় থাকতে হতো। শুরুতেই যাওয়ার কোনো জায়গা ছিল না। কোনো রাত মসজিদে কাটিয়েছি, কোনো রাত অর্ধেকটা বাইরে কিংবা বাসার ছাদে কাটিয়ে শেষ রাতে বাসায় ফিরেছি।’
‘এইতো ঐতিহাসিক নয় দফা, আমাদের নয় দফা,
ফ্যাসিস্ট হাসিনা থেকে মুক্তি লাভের সনদ!’
এমআই

রাজনীতি
খালেদা জিয়াকে ফল পাঠালেন ভুটানের রাষ্ট্রদূত

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য ভুটানের মৌসুমি ফল পাঠিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত দাশো কারমা হামু দর্জি।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে এ উপহার পৌঁছে দেন রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধিরা। উপহার গ্রহণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য এ শুভেচ্ছা উপহার পাঠানো হয়।
রাজনীতি
দুর্নীতিবাজ-চাঁদাবাজদের ভোটের মাধ্যমে বয়কট করতে হবে: ড. হেলাল

দুর্নীতিবাজ-চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের ভোটের মাধ্যমে বয়কট করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।
তিনি আরও বলেন, যারা ক্ষমতায় আসার আগেই ৫ আগস্ট পরবর্তী সারাদেশে খুন, গুম, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, লুটপাট, দখলদারিত্বের মহোৎসবে মেতে উঠেছে তারা ক্ষমতায় গেলে জনগণ নিরাপদে-নির্বিঘ্নে রাতে ঘুমাতেও পারবে না। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে মানুষ ঘরের দরজা খুলে র্নিভয়ে, নির্বিঘ্নে, নিরাপদে ঘুমাতে পারবে। চুরি-ছিনতাই, মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। নারীর স্বাধীনতার নামে যারা নারীদের অধিকার লুন্ঠন করেছে, ধর্ষণ করেছে তাদের ঘুম হারাম হয়ে যাবে। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে সবার আগে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। মানুষের জানমাল, ইজ্জতের নিরাপত্তা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করা হবে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শাহবাগ পূর্ব থানা কর্তৃক নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ পূর্বক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, অতীতে যারাই ক্ষমতা বসেছে তাদের মধ্যে একদল এদেশে ভারতীয় আধিপাত্যবাদ প্রতিষ্ঠা করে দেশের মানুষকে পরাধীনতার শিকলে বন্দী করেছে, আরেকদল দেশকে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান করেছে। দেশের হাজার-হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সেই টাকা দিয়ে বিদেশে বিলাশী জীবনযাপন করছে। ক্যামেরার সামনে শেষে মানুষের অধিকারের কথা বলে জাতিকে আবারও ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করছে। যেই দলের নেতাকর্মীরা ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজি-দখলবাজি, নদীর বালু-পাথর লুট করে সেই দলের কাছে জাতি নিরাপদ থাকতে পারবে কিনা প্রশ্ন রেখে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, পুরোনো ব্যবস্থা রাষ্ট্র চলবে নাকি নতুন বাংলাদেশ বির্নিমাণ করবে; জনগণের নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে নিজেদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
জামায়াতে ইসলামী কখনো ক্ষমতায় না গিয়েও জনগণের ভাগ্যান্নয়নে কাজ করছে উল্লেখ করে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মসূচিই হচ্ছে সমাজ সংস্কার ও সমাজ সেবা। জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজ সংস্কার সংগ্রাম করে আসছে, মানুষের ভাগ্যান্নয়নে সমাজ সেবা করে আসছে। দারিদ্র্যতা দূরীকরণ ও বেকারত্বের অবসানের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী বিভিন্ন কর্মমূখী প্রশিক্ষণ প্রদান করে প্রশিক্ষিতদের কর্মের ব্যবস্থা নিশ্চিত করছে। আগামীতে জামায়াতে ইসলামীকে জনগণ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিলে প্রতিটি মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে। তাই জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়তে তিনি দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শাহবাগ পূর্ব থানা আমীর আহসান হাবীবের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মো. নুরন্নবী রায়হানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহীন আহমেদ খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শাহবাগ মানব কল্যাণ সংস্থার সেক্রেটারি ওবায়দুল্লাহ, শাহবাগ পূর্ব থানার সহকারী সেক্রেটারি আব্দুল মুনিম খান, থানা বাইতুলমাল সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান, অফিস সম্পাদক মোখলেছুর রহমান জুয়েল প্রমুখ। সভা শেষে, প্রশিক্ষিত ১২ জন নারী উদ্যোক্তার মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।
রাজনীতি
বিএনপির হাত ধরেই সব ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির হাত ধরেই ৩১ দফাসহ সকল ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সম্মেলনের উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, দলের নেতাকর্মীরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন ও ত্যাগ শিকার করেছেন, কিন্তু আন্দোলন থেকে কখনো সরে যাননি। এ সময় তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আজ একদিকে যেমন আনন্দের দিন, অন্যদিকে দুঃখের। বিএনপি নেতাকর্মীরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে সরে যাননি। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সক্ষম হতে হবে। বিএনপির হাত ধরেই ৩১ দফাসহ সকল ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হবে।
সম্মেলনে বিকেলে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রাজনীতি
জামায়াত সুযোগ পেলে কর্মমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হবে: ড. হেলাল

আগামীতে জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে কর্মমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।
রোববার (০৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মতিঝিল পূর্ব থানা কর্তৃক কমলাপুর শেরে বাংলা রেলওয়ে স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীর মাঝে সিরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে পুরস্কার বিতরণ পূর্বক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জামায়াত সুযোগ পেলে আদর্শ ও নৈতিক জাতি গঠনে তরুণ প্রজন্মকে গড়ে তোলা হবে। অতীতে যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসেছে তারা তরুণ প্রজন্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। তারা শিক্ষার্থীদের হাতে মাদক ও অস্ত্র তুলে দিয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে বিপদগামী করে জাতিকে নেতৃত্ব শূন্য করার ষড়যন্ত্র করেছে। কারণ তারা চেয়েছে চিরকাল তারাই জাতির নেতৃত্ব দিবে। কিন্তু জাতি কোন দূর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বকে কখনো মেনে নেয়নি, নিবে না। আদর্শ ও নৈতিকতাহীন দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্ব নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারবে না। নতুন বাংলাদেশ গড়তে জাতি দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত আল্লাহভীরু নেতৃত্বতে নির্বাচিত করবে।
তিনি আরো বলেন, অতীতে যারাই ক্ষমতা বসেছে তারাই শিক্ষাকে দলীয়করণ করেছে। তাদের শিক্ষানীতি ছিল কুশিক্ষা নীতি। যেখানে বাস্তব শিক্ষা ও জীবন এবং কর্মমূখী কোন শিক্ষা নেই। যার ফলে সমাজে নৈতিকার অবজ্ঞা দেখা দিয়েছে। সমাজকে আলোকিত হলে শিক্ষিত সমাজ গঠন করতে হবে। সেই শিক্ষা দলের প্রধানের জীবনী নয়। সেই শিক্ষা হতে হবে মহানবীর (সা.) আদর্শিক শিক্ষা। ইসলামী নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে সৎ ও আদর্শ তরুণ প্রজন্ম গঠন করে বৈষম্যহীন একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র গঠন করতে হবে। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ও জামায়াতে ইসলামী নৈতিক ও আদর্শিক মানুষ তৈরির কারখানা। যেখানে ইসলামিক নৈতিক ও আদর্শ শিক্ষা দেওয়া হয়। তাই জামায়াতে ইসলামীতে রয়েছে সৎ, যোগ্য, দক্ষ, ন্যায়পরায়ন, আল্লাহভীরু নেতৃত্ব। যারা আল্লাহকে ভয় করে তারা দুর্নীতি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে না, করবে না। এজন্য নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি উপস্থিত সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মতিঝিল পূর্ব থানা আমীর নুর উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কমলাপুর শেরে বাংলা রেলওয়ে স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীবৃন্দসহ স্থানীয় ইসলামি ছাত্রশিবিরের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
রাজনীতি
তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন, জানালেন ডা. জাহিদ

কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরছেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি।
জাতীয় নির্বাচনের বহু আগেই দেশে থেকে তারেক রহমান দলকে নেতৃত্ব দেবেন জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, ‘যারা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে সেই ষড়যন্ত্র কাজে দেবে না, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার পেছন দিক দিয়ে এসে জনগণের অধিকার হরণ করার পাঁয়তারা করছে।’ বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী নয়, তারা ষড়যন্ত্র করছে।’
পিআর পদ্ধতি বেআইনি আবদার উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘সংবিধান ইচ্ছা করলেই ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া যায় না। আবেগী না হয়ে জন-আকাঙ্ক্ষা বুঝতে হবে।’