অর্থনীতি
সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যাংক হিসাব তলব

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যাংক হিসাবের বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
আজ রোববার ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে নির্দেশনা পাঠিয়েছে।
ওবায়দুল কাদেরের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবে কত টাকা জমা হয়েছে, কবে জমা হয়েছে, কে জমা করেছে—এ ধরনের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে বিএফআইইউ। এর আগে গত ২৭ আগস্ট ওবায়দুল কাদেরের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করে সংস্থাটি।
বিএফআইইউর নির্দেশনায় ওবায়দুল কাদেরের পিতা-মাতার নাম, স্ত্রীর নাম, জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্মার্টকার্ডের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন ওবায়দুল কাদের। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগপর্যন্ত তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ছিলেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক এই সভাপতি নোয়াখালী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
৬ মাসে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা: বিডা

২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ৭৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৯২৪৭ কোটি টাকা)। এ ছাড়া বিগত নয় মাসে বেশ কিছু প্রস্তাবিত বিদেশি বিনিয়োগ মিলিয়ে এসেছে প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১২২২০ কোটি টাকা)।
মঙ্গলবার (২৭ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও বিনিয়োগ প্রবণতা বিষয়ে একটি শিল্প সংগঠনের প্রতিনিধির সাম্প্রতিক মন্তব্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) কেবলমাত্র জিটুজি প্রকল্পে জড়িত এবং গত আট মাসে দেশে নতুন কোনো বিদেশি বিনিয়োগ আসেনি। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিডা দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কার্যকর সংযোগ স্থাপনে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। পাশাপাশি, তিনি মত প্রকাশ করেন যে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাবেন না।
এসব মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সঠিক তথ্য তুলে ধরে বিডা জানায়, অক্টোবর ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত নেট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে মোট ৭৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৯,২৪৭ কোটি টাকা)। বিগত নয় মাসে বিডা মোট ৭৩৯টি শিল্প প্রকল্প নিবন্ধিত করেছে, তার মধ্যে শতভাগ বিদেশি প্রকল্প রয়েছে ৬৬টি এবং যৌথ বিনিয়োগ রয়েছে ৬১টি।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ১৬টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জমি ইজারা চুক্তি সম্পাদন করেছে, যার মধ্যে শতভাগ বিদেশি প্রকল্প রয়েছে ৬টি এবং যৌথ বিনিয়োগ রয়েছে ৩টি। বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) মোট ৩১টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইজারা চুক্তি করেছে। সব মিলিয়ে মোট প্রস্তাবিত বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১২,২২০ কোটি টাকা)।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিদেশি বিনিয়োগ ধারা সম্বন্ধে এ ধরনের ঢালাও মন্তব্য দুঃখজনক যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আমরা আশা করছি যে, বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জনসম্মুখে দেওয়া মন্তব্য সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে দেওয়া হবে, যাতে করে জনসাধারণ ও ব্যবসায়ী মহলের মধ্যে বিভ্রান্তি বা উদ্বেগ সৃষ্টি না হয়।
বিডা’র মূল দায়িত্ব নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা এবং দেশি-বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে অর্থবহ সংযোগ সৃষ্টি করে একটি শক্তিশালী বিনিয়োগ পাইপলাইন গঠন করা। বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫-এ নির্দিষ্ট খাতভিত্তিক সেশনের মাধ্যমে বিটুবি নেটওয়ার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়, যা ব্যবসায়ী চেম্বার, ব্যাংক ও বেসরকারি খাতের অন্যান্য অংশীদারদের সক্রিয় সহযোগিতায় আয়োজিত হয়। আগামী সপ্তাহে একটি উচ্চপর্যায়ের চীনা ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের জন্য বস্ত্র, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও ইলেকট্রনিক্স খাতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ১০০টি বিটুবি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রস্তাবিত বিনিয়োগ পরিপক্বতা লাভে সময় প্রয়োজন হয়, যা বিনিয়োগ প্রচারের ক্ষেত্রে একটি স্বীকৃত বাস্তবতা।
বিনিয়োগকারীদের সহায়তা প্রদান বিডার কার্যক্রমের অন্যতম প্রধান ভিত্তি এবং আমরা শিল্প নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যৌথভাবে জ্ঞান, দক্ষতা ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উচ্চমানের এফডিআই আকর্ষণে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা করছি বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৪৮৪ কোটি টাকায় ৭০ হাজার টন সার কিনবে সরকার

সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৭০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৪৮৪ কোটি ১৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া এবং ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানি করা হবে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের কাছ থেকে এই সার কিনতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৮ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৭৭ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মা আদেন সৌদি আরব এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ।
সৌদি আরবের মা আদেন থেকে এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৩৪৫ কোটি ৯৯ লাখ ২০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম ধরা হয়েছে ৭০৯ মার্কিন ডলার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি নড়বড়ে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পথে বাংলাদেশ ব্যাংক

দেশের ২০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ভিত্তি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানত রাখা গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) নিবন্ধন সনদ বা লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই সাথে এসব এনবিএফআইয়ের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একইসঙ্গে ১৫ দিনের মধ্যে এই চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এসব প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সিভিসি ফাইন্যান্স, বে লিজিং, ইসলামিক ফাইন্যান্স, মেরিডিয়ান ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, হজ্জ ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স, আইআইডিএফসি, প্রিমিয়ার লিজিং, প্রাইম ফাইন্যান্স, উত্তরা ফাইন্যান্স, আভিভা ফাইন্যান্স, ফিনিক্স ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বিআইএফসি, ফারইষ্ট ফাইন্যান্স ও এফএএস ফাইন্যান্স।
এর আগে দীর্ঘদিন ধরে সংকটে থাকা, উচ্চ খেলাপি ঋণ ও গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে না পারা ২০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠানের যে ঋণ রয়েছে, তার বিপরীতে জামানতও খুবই কম। এই অবস্থায় এসব এনবিএফআইয়ের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিঠির জবাব পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাতে এসব প্রতিষ্ঠান একীভূত বা অবসায়নের উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নথিপত্র থেকে জানা যায়, দেশে মোট এনবিএফআই রয়েছে ৩৫টি। এর মধ্যে ২০টির অবস্থা খুবই নাজুক। গত ডিসেম্বরে এসব প্রতিষ্ঠানের আমানতের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক আমানত ১২৭ কোটি উক্তা কোটি টাকা ও ব্যক্তি আমানত ও কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে এসব হাজার ৭৬০ কো প্রতিষ্ঠানের ঋণের পরিমাণ ছিল ২০ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। এই অণের ৮৩ শতাংশই খেলাপি হয়ে পড়েছে, যার পরিমাণ ২১ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা। ঋণের বিপরীতে জামানতের পরিমাণ ৬ হাজার কোটি টাকা। জামানতের অর্থ নিয়ে ব্যক্তি আমানতকারীর অর্থ ফেরত দেওয়া সম্ভব। সব পুঞ্জিত ক্ষতির মিলিয়ে ২০টি প্রতিষ্ঠানের ক্রম পুঞ্জিত পরিমাণ ২৩ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে ভালো আর্থিক ও পুরো বাতের ওপর প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরও। এতে পুরো খাতের ওপর আস্থাহীনতা তৈরি হচ্ছে। ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা ও বাজার বিরুপভাবে প্রভাবিত হচ্ছে, যা হতে উত্তরণ আবশ্যক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চিহ্নিত ২০টি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বছরে বেতন ১৭২ কোটি টাকা ও এমডিদের বেতন ১২ কোটি টাকা। ভাড়া, অন্যান্য খরচসহ সব মিলিয়ে ব্যয় ২০৬ কোটি টাকা। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত কোনো সুদ আয় নেই। তাই আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন ও একর্মীকরণের প্রয়োজন দেখা নিয়েছে।
চিঠিতে যা বলা হয়েছে, সংকটে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানে আমানতকারীর। আমানতকারীর দায় পরিশোধে সম্পদের অপর্যাপ্ততা, শ্রেণিকৃত ঋণের উচ্চহার, মূলধন মাটতি তথা ন্যূনতম সংরক্ষিতব্য মূলধন সংরক্ষণে ব্যামান্ডাসহ নানা বিষয় পরিলক্ষিত হয়েছে। চাই এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাখ্যাও ২ পরিকল্পনা জানতে চাওয়া হয়। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, আইন অনুযায়ী কেন প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হবে না, তা-ও জানাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আর্থিক খাতের বহুল আলোচিত ব্যক্তি প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে অনিয়ম করে গেছেন, তার জের টানতে হচ্ছে পুরো খাতকে। পি কে হালদারের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় ছিল, এমন কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠনও রয়েছে এই তালিকায়। পি কে হালদার যখন এসব অনিয়ম করেন, তখন তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠ মোহাম্মদ সাইফুল আলমের (এস আলম) নিয়ন্ত্রণাধীন একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছিলেন। পি কে হালদারের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের পর ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোরও একই দশা করেন এস আলম। তাতে পুরো আর্থিক খাতই এখন ধুকছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জুলাইয়ের মধ্যে ৬ দুর্বল ব্যাংক একীভূত হবে: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, নানা অনিয়ম ও ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে দুর্বল হয়ে পড়া ৬টি ব্যাংককে একীভূত করে সাময়িকভাবে সরকারের মালিকানায় নেওয়ার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।
যে ছয়টি ব্যাংককে একীভূত করা হবে সেগুলো হলো– ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক।
এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে পাঁচটি ব্যাংক ছিল বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে। বাকি একটি ব্যাংক পরিচালনায় ছিলেন নজরুল ইসলাম মজুমদার।
গভর্নর বলেন, আমরা আশা করছি জুলাইয়ের মধ্যে এই ছয়টি ব্যাংককে সরকারের অধীনে এনে প্রয়োজনীয় মূলধন জোগান দিতে পারব। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে তাদের তারল্য (লিকুইডিটি) সহায়তা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার এসব ব্যাংকের মালিক সাময়িকভাবে থাকবে। পরবর্তী সময়ে ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন শেষে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ও আন্তর্জাতিক কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার হস্তান্তর করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, একটি ব্যাংককে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের (রিস্ক-ওয়েটেড অ্যাসেট) বিপরীতে কমপক্ষে ১২.৫ শতাংশ মূলধন রাখতে হয় — যার মধ্যে ১০ শতাংশ মূলধন এবং অতিরিক্ত ২.৫ শতাংশ ‘ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফার’ হিসেবে সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক।
গভর্নর বলেন, যেসব ব্যাংকের এই মূলধনের ঘাটতি রয়েছে, সেসব ব্যাংকে আগামী চার বছরের মধ্যে ১২.৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ-এ উন্নীত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, একটি টেলিভিশন চ্যানেল ছয়টি ব্যাংক একীভূত হওয়ার খবর প্রচার করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সেই খবরের প্রতিবাদ করা হয়নি, সুতরাং গভর্নর যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সঠিক বলেই মনে করি। তবে এখনো এ বিষয়ে অফিসিয়ালি কোনো তথ্য আসেনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বন্ধ হচ্ছে হাজারের বেশি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট

বাংলাদেশে অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে সরকার একটি বড় ধরনের অভিযানে নেমেছে। সাইবার স্পেসে জুয়া বন্ধে গৃহীত সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে জড়িত প্রায় ১ হাজার ১০০ মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, দেশের কোনো নাগরিক জুয়া খেলার কোনো বিজ্ঞাপনে অংশ নিলে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। কোনো নাগরিক, সম্মানিত ব্যক্তি বা সেলিব্রেটি যদি মনে করেন- অনুমতি ছাড়া জুয়া খেলার ওয়েবসাইট বা পোর্টালে তার ছবি অথবা ভিডিও ব্যবহৃত হচ্ছে তাকে আইনের আশ্রয় নিতে হবে।
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়নের আগে যারা জুয়া খেলা বা জুয়া খেলার বিজ্ঞাপনের সঙ্গে স্বেচ্ছায় জড়িত ছিলেন তাদের অবিলম্বে এ কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। যারা আগে জুয়ার কারণে প্রতারণার শিকার এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের জন্য আইনের ৩০ ধারা অনুযায়ী অভিযুক্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করা এবং ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
সরকার দেশের জনগণকে সাইবার স্পেসে জুয়া খেলা এবং জুয়া খেলা সংক্রান্ত যে কোনো কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার এবং এ অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি/কোম্পানির ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ করছে।
জুয়া একটি সামাজিক ব্যাধি এবং সাইবার স্পেসে জুয়া খেলার কারণে দেশে অসংখ্য ব্যক্তি সর্বস্বান্ত হয়েছে, অনেকে আত্মহত্যার পথও বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে। তাই দেশের জনগণের কাছে সরকার সাইবার স্পেসে জুয়া খেলা বন্ধ করার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে। সরকার এরই মধ্যে এক হাজার একশোর অধিক এজেন্ট শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা শুরু করেছে। এরূপ কার্যক্রমের সঙ্গে যেসব মোবাইল ফিন্যান্সিং এজেন্ট, ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান যুক্ত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যদি কোনো ব্যক্তি উল্লিখিত অপরাধ করেন, তিনি অনধিক ২ (দুই) বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক কোটি টাকার অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এ বিষয়ে সরকারের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং সাইবার স্পেসে জুয়া খেলা, ফিন্যান্সিয়াল স্ক্যাম, জুয়ার লেনদেনের (ক্রিপ্টোকারেন্সিসহ) সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তি, সেলিব্রেটি, বিভিন্ন পেশাজীবী, অপারেটর, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেম, এমএফএস এজেন্ট, ব্যাংক, বিমা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাশাপাশি অনলাইন জুয়ায় জড়িত বিভিন্ন পেশাজীবী, বিজ্ঞাপন দাতা কোম্পানি, মিডিয়া বায়ার, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিজ্ঞাপনদাতা এবং বিজ্ঞাপন গ্রহীতা সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন তাই যে কোনো জুয়ার অ্যাকাউন্ট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।
অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত মোবাইল ব্যাংকিং, রেগুলার ব্যাংকিং, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যে কোনো এজেন্ট, ডিস্ট্রিবিউটর কিংবা কোনো ক্রিপ্টো ব্রোকার কিংবা হুন্ডির অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে জানাতে নিম্নোক্ত মেইলে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে— notify@ncsa. gov. bd
সাইবার স্পেসে জনস্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে নতুন সাইবার সুরক্ষা বাংলাদেশ জারি করেছে সরকার। অধ্যাদেশের ২০ ধারা অনুসারে জুয়া খেলা এবং জুয়া খেলার সঙ্গে জড়িত সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ আইন অনুসারে সাইবার স্পেসে জুয়া খেলার জন্য কোনো পোর্টাল/অ্যাপস/ডিভাইস তৈরি/পরিচালনা করা, জুয়া খেলা, খেলায় সহায়তা বা উৎসাহ দেওয়া বা বিজ্ঞাপনে অংশ নেওয়া এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রচার বা বিজ্ঞাপনের সঙ্গে জড়িত থাকাকে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ২১ এবং ২২ ধারা অনুযায়ী জুয়া খেলার জন্য কোনো অর্থনৈতিক লেনদেন, জুয়া খেলা বিষয়ে কোনো প্রতারণা বা জালিয়াতি করাকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।