অর্থনীতি
নতুন ঋণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধিদল

নতুন করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা চেয়েছে সরকার। এ ঋণের বিষয়ে সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনায় চলতি মাসেই ছয় দিনের ঢাকা সফরে আসছে সংস্থাটির প্রতিনিধিদল। ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা সফর করবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও আইএমএফ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দেশের পরিবর্তিত অবস্থায় অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিতে গত ২৯ আগস্ট আইএমএফের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ওই বৈঠকেই চলমান ঋণ বাড়ানোর প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কার্যক্রম চলমান, যার শর্ত পূরণে সংস্কার কার্যক্রম চলছে। তিন কিস্তিতে এ পর্যন্ত ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাকি অর্থ আরও চার কিস্তিতে পাওয়া যাবে।
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য এ সময় অর্থের বিকল্প নেই বলে মত বিশ্লেষকদের। অন্যদিকে নতুন ঋণের জন্য আর্থিক খাতের দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে চায় আইএমএফ।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, এগুলো যেন বাণিজ্যিক ঋণ না হয়, কেননা সরকার বাণিজ্যিক ঋণ নেয়ার পরিস্থিতিতে নেই। ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধের একটি কাটামোতে আমরা ঢুকেছি। যত সহজ শর্তই হোক, ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধের কাঠামোটা ভালো লক্ষণ না। বরং এটি একটি দুষ্টু চক্রের ইঙ্গিত দেয়।
ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিক খাতের সংস্কার উদ্যোগকে গুরুত্ব দেয় আইএমএফ। এক্ষেত্রে ব্যাংক খাতের সুশাসন, রাজস্ব খাতের অটোমেশন, পুঁজিবাজারে স্বস্তি, বিনিয়োগ পরিবেশ, অর্থের ব্যবহারসহ নানাদিক গুরুত্ব পায়। ঋণের অঙ্ক বাড়লে পরিশোধেও বাড়বে চাপ। কিন্তু এই সময়ে অর্থের বিকল্প নেই।
ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম আরও বলেন, আইএমএফের নীতির সঙ্গে প্রো-বিজনেস, প্রো-রিফর্মের এক ধরনের সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এক মাসের মধ্যে ব্যাপক ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গায় বেশকিছু ইতিবাচক সংস্কার করার চেষ্টা করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ব্যাংকগুলোকে রিফর্ম করার উদ্যোগ নেওয়া এবং একইসাথে এনবিআরের রিফর্ম আমরা দেখতে পাচ্ছি। রাজস্ব খাতে সংস্কার উদ্যোগ হাতে নেওয়া গেলে বাড়ানো সম্ভব অভ্যন্তরীণ আয়।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ জানান, আইএমএফ আফ্রিকার কয়েকটি দেশকে নিয়ে যেটা করেছে, কর প্রশাসনকে যদি শক্তিশালী করা যায়, সেভাবে অটোমেশন করা গেলে জিডিপির ২-৩ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি করা সম্ভব।
গত শুক্রবার ওয়াশিংটনে প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইএমএফের যোগাযোগ বিভাগের পরিচালক জুলি কোজ্যাক বলেন, আইএমএফের পক্ষ থেকে আমরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং স্টাফ মিশন হিসেবে এবং সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে। মিশনটি বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সম্ভাব্য অর্থায়ন চাহিদা পর্যালোচনা করবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে এবং আইএমএফ কর্মসূচির আওতায় দেশটির জনগণকে সহায়তা করতে আমরা সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সংস্কার এজেন্ডাকে এগিয়ে নিতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কার্যক্রম অব্যাহত রাখব।
কাফি

অর্থনীতি
মে মাসে রেমিট্যান্স এলো ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা

দেশের ইতিহাসে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আসায় একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে। সর্বোচ্চ, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই। সদ্য বিদায়ী মে মাসে ২৯৭ কোটি বা ২.৯৭ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা।
প্রতিদিন গড়ে আসছে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ডলার বা ১১৬৯ কোটি টাকা। এটি দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।
এর আগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল গত এপ্রিল মাসে, সে রেকর্ড ভেঙে দিল সদ্য বিদায়ী মে মাস। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সে এসেছিল গত মার্চ মাসে ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, বর্তমানে দেশ থেকে অর্থপাচার বন্ধ হয়েছে। একইভাবে হুন্ডির দৌরাত্ম্যও কমেছে। তাছাড়া ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্সের দরও ভালো এবং নিরাপদ রয়েছে। এসব কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতি মাসেই দুই বিলিয়ন ছাড়াচ্ছে রেমিট্যান্স। এখন পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে (প্রথম ১১ মাসে) মোট ২ হাজার ৭৫০ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) এসেছিল ২ হাজার ১৩৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৬.১৩ বিলিয়ন ডলার বা ৬১৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার বেশি এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, মে মাসের পুরো সময়ে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বা ২৯৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪১ কোটি ৫০ লাখ ডলার বেশি এসেছে। গত মাস এপ্রিলের চেয়ে ২২ কোটি ডলার বেশি এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে প্রায় ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বেশি। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৩৭ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪১ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার এবং সবশেষ এপ্রিলে আসে ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
কাফি
অর্থনীতি
বাজেট ঘোষণা আগামীকাল, সব তথ্য পাওয়া যাবে যেসব ওয়েবসাইটে

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আগামীকাল সোমবার (২ জুন) ঘোষণা করতে যাচ্ছে। নতুন বছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। চলতি বাজেটের থেকে আগামী বাজেট ছোট হচ্ছে। ২০২৫–২৬ অর্থবছর সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতা সমাপ্তির পরপরই এ সংক্রান্ত সব তথ্য অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে।
বিকেল ৪টায় ধারণ করা বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচার করা হবে। সংসদ না থাকায় ধারণকৃত জাতীয় বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে ফিড নিয়ে অন্য সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতারে একই সময়ে প্রচারের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
নতুন বছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। পরে তা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাশ হবে।
প্রস্তাবিত এই বাজেট পাস হলে এটি হবে দেশের ৫৪তম, অন্তবর্তীকালীন সরকার ও অর্থ উপদেষ্টার প্রথম বাজেট। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে চলতি বাজেটের চেয়েও ছোট বাজেট দিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছর সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম।
এসএম
অর্থনীতি
নতুন ডিজাইনের ৩ নোট বাজারে আসছে আজ

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সই করা নতুন নকশা ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট রবিবার (১ জুন) প্রথমবারের মতো বাজারে আসছে। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য অফিসগুলো থেকে এই নোটগুলো ইস্যু করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের সব মূল্যমানের (১০০০, ৫০০, ২০০, ১০০, ৫০, ২০, ১০, ৫ ও ২ টাকা) নতুন নোট মুদ্রণের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সই করা নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট আজ রোববার (১ জুন) প্রথমবারের মতো বাজারে দেওয়া হবে। বর্ণিত নোটসমূহ ওই তারিখে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য অফিস থেকে ইস্যু করা হবে।
এসব মূল্যমানের নতুন নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সব কাগুজে নোট এবং ধাতব মুদ্রাও যথারীতি চালু থাকবে। এছাড়া, মুদ্রা সংগ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে নিয়মিত নোটের পাশাপাশি ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের নমুনা নোট (যা বিনিময়যোগ্য নয়) মুদ্রণ করা হয়েছে; যা টাকা জাদুঘর, মিরপুর থেকে নির্ধারিত মূল্যে সংগ্রহ করা যাবে।
‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
১০০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটের ডিজাইন:
১০০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬০ মি.মি.×৭০ মি.মি.। নোটটি ১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘১০০০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে বেগুনি রঙের আধিক্য রয়েছে।
নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, সাভার এর ছবি ও মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’ ও মূল্যমান (এক হাজার টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানের ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ওপরে বামদিকে নোটের মূল্যমান ‘১০০০’, ডানকোণে ‘১০০০’ ও নিচে ডানকোণে ‘৳১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছনভাগের ডিজাইন হিসেবে জাতীয় সংসদ ভবন, ঢাকা এর ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের ওপরে বামকোণে মূল্যমান ‘১০০০’ ও ডানকোণে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং নিচে ডানকোণ এবং বামকোণে মূল্যমান ‘১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ডানপাশে উলম্বভাবে ‘১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে।
নোটটিতে মোট ১৩ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ৫ মি.মি. চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে যাতে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ এবং ‘১০০০ টাকা’ খচিত রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া করলে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ অংশের নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয় এবং ‘১০০০ টাকা’ অংশে একটি উজ্জ্বল রংধনু বার ওপর থেকে নিচে উঠানামা করে।
এছাড়া, নোটের ডানদিকের কোণায় মুদ্রিত মূল্যমান ‘১০০০’ রং পরিবর্তনশীল উন্নতমানের নিরাপত্তা কালি (ওভিএমআই) দ্বারা মুদ্রিত। যাতে নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রং ম্যাজেন্টা থেকে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয় এবং মূল্যমানের ভেতরে কোনাকুনিভাবে মুদ্রিত ‘১০০০’ লেখাটি দৃশ্যমান হয়। পাশাপাশি, নোটের সম্মুখভাগের পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা দ্বারা মুদ্রিত যা ইউভি ডিটেক্টর মেশিন দ্বারা দৃষ্টিগোচর হয়।
৫০ টাকা মূল্যমানের নোট:
৫০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩০ মি.মি.×৬০ মি.মি.। নোটটি ১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘৫০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংককের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে গাঢ় বাদামি রঙের আধিক্য রয়েছে।
ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে আহসান মঞ্জিল, ঢাকা- লেখাটি উভয় পাশে মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে ইংরেজিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং পেছনভাগের বামদিকের ওপরে ‘৫০’ ও নিচে ‘৫০’ লেখা ব্যাকগ্রাউন্ডে মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে যথাক্রমে “50 TAKA’ এবং BANGLADESHBANK’ মুদ্রিত রয়েছে।
২০ টাকা মূল্যমানের নোট:
২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৭ মি.মি.×৬০ মি.মি.। নোটটি ১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ’, ‘২০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ রয়েছে। নোটটিতে সবুজ রঙের আধিক্য রয়েছে।
ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে ঐতিহাসিক স্থাপনা কান্তজিউ মন্দির, দিনাজপুরের ছবি এবং নোটের মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’ ও মূল্যমান (বিশ টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা’র ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ওপরে বামদিকে মূল্যমান ‘২০’, ডানকোণে ‘২০’ ও নিচে ডানকোণে ‘৳২০’ মুদ্রিত রয়েছে।
অর্থনীতি
বিজিএমইএ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল ফোরাম, সভাপতি হচ্ছেন বাবু

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সংগঠন বিজিএমইএর (বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন) ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনে ফোরাম জোট বেশি সংখ্যক পদের জয় পেয়েছে।
ঢাকায় পরিচালকের ২৬টি পদের মধ্যে ২৫ তাদের প্রার্থী জয়ী হয়েছে। আর চট্টগ্রামে পরিচালকের ৯টি পদের মধ্যে তারা ৬টি পদে জয় পেয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সবমিলেয়ে ৩৫টি পদের বিপরীতে ৩১ জন ফোরাম প্যানেলের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া সম্মিলিত পরিষদের ঢাকায় একজন ও চট্টগ্রামে রয়েছেন ৩ জন জয়ী হয়েছেন। সে হিসেবে সম্মিলিত পরিষদের মোট ৪ জন জয়ী হয়েছেন।
আগামী ২ জুন নির্বাচিত পরিচালকরা নিজেদের মধ্য থেকে সভাপতি ও সহ সভাপতি নির্বাচন করবেন।
এবারের নির্বাচনে প্যানেল লিডার হিসেবে ফোরাম জোটের নেতৃত্ব দিয়েছেন রাইজিং ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান (বাবু)। ফোরাম সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় বিজিএমইএর পরবর্তী সভাপতি হচ্ছেন তিনি।
শনিবার (৩১ মে) ঢাকায় ও চট্টগ্রামে সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ১৫ মিনিট বাড়িয়ে বিকেল সোয়া ৫টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই ভোট গণনা শুরু হয়।
বিজিএমইএর ৩৫টি পরিচালক পদে নির্বাচনকেন্দ্রিক তিন জোট– ফোরাম, সম্মিলিত পরিষদ ও ঐক্য পরিষদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। তবে ভোটে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের মধ্যে। এই দুই প্যানেল ঢাকা ও চট্টগ্রামে সব পদে প্রার্থী দিয়েছে। অন্যদিকে ঐক্য পরিষদের প্রার্থী মাত্র ছয়জন। অর্থাৎ ৩৫টি পরিচালক পদের বিপরীতে ৭৬ জন প্রার্থী লড়াই করেন।
বিজিএমইএর ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনে ভোটার ছিল মোট ১ হাজার ৮৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ ও চট্টগ্রামে ৩০৩ জন ভোটার।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে মোট ভোট দিয়েছেন ১৬৩১ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ভোট দিয়েছেন ১৩৭৭ জন ভোটার, যা মোট ভোটারের ৮৮ দশমিক ২১ শতাংশ। অপরদিকে চট্টগ্রামে ভোট দিয়েছেন মোট ২৫৪ জন, যা সেখানকার মোট ভোটারের ৮৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
বিজিএমইএ নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল।
অর্থনীতি
অবাধ বাণিজ্য প্রসারে চীনের সঙ্গে দুই সমঝোতা স্মারক সই

অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও। উভয় দেশের মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে দ্বিপাক্ষিক এ বৈঠকে।
শনিবার (৩১ মে) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ ও চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য প্রসারে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন ও ই-কমার্স বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে এ বৈঠকে। সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও চীনের পক্ষে সে দেশের বাণিজ্য মন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও সই করেন।
এ সময় চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে কৃষিখাতে ড্রোন প্রযুক্তির সহায়তাও কামনা করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা জোরদার করতে এই সহায়তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে সার, বীজ বপন, কীটনাশক ছিটানো ও ফসল নিরীক্ষণে বিপ্লব আনা সম্ভব। চীনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বাংলাদেশের কৃষিখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীও বাংলাদেশের সঙ্গে প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, কৃষি ও ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত চীন। বিশেষ করে স্মার্ট কৃষি ও ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে আমরা সহযোগিতা করতে পারি।
এরপর ফিশিং জাহাজ ও প্রযুক্তি সহায়তা কামনা করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা থাকলেও আধুনিক ফিশিং জাহাজ ও প্রযুক্তির অভাবে এই খাতের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সামুদ্রিক মৎস্য খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের জন্য অত্যাধুনিক ফিশিং জাহাজ ও মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তি প্রয়োজন। চীনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা আমাদের এই খাতকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।
এ ছাড়া চামড়াজাতশিল্প, হালকা প্রকৌশল, এগ্রি মেশিনারিজ ও অ্যাগ্রো টেকনোলজি, ফুড প্রসেসিং এবং ওষুধ শিল্পেও চীনা বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন তিনি।
এ সময় চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে মৎস্য ও সমুদ্রসম্পদ খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের মৎস্য খাত ও সমুদ্রসীমার সম্পদ আহরণে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
ওয়াং ওয়েনতাও আরও বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি এরই মধ্যে পার হয়েছে। দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন; বিশেষ করে এ দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে চীন সরকার বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যার সুফল এ দেশের জনগণ ভোগ করছে।
আগামী দিনে চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বৈঠকে চীনের প্রতিনিধিদলে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর জেনারেল অব আউটওয়ার্ড ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিক কো অপারেশন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর জেনারেল অব দ্য ডিপার্টমেন্ট অব এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স এবং বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বাণিজ্য সচিব, শিল্প সচিব, কৃষি সচিব ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এদিন দুপুরে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের বিশাল এক বহর নিয়ে ঢাকা সফরে আসেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও। ২০০ জনের বিশাল
এ প্রতিনিধিদলে ১০০ জন চীনা ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী রয়েছেন।