ধর্ম ও জীবন
জুমার দিনের গুনাহ মাফ হওয়ার ৮ আমল
ইসলামে জুমার দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে জুমার দিন দ্রুত মসজিদে গমনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া হাদিসে গুরুত্বপূর্ণ আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! জুমার দিন নামাজের আজান হলে তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং বেচাবিক্রি বন্ধ কোরো, তা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝো।
এরপর নামাজ শেষ হলে ভূপৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) অনুসন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা : জুমা, আয়াত : ৯-১০) জুমার দিনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো—
১. জুমার দিনের বিশেষ মর্যাদা
আবু লুবাবা বিন আবদুল মুনজির (রা.) থেকে বর্ণিত, হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার দিনের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। সেগুলো হলো—এক. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন। দুই. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম (আ.)-কে জমিনে অবতরণ করিয়েছেন।
তিন. এই দিনে আদম (আ.)-কে মৃত্যু দিয়েছেন। চার. এই দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা কিছুই প্রার্থনা করবে তিনি তা দেবেন। যতক্ষণ সে হারাম কিছু প্রার্থনা করবে না। পাঁচ. এই দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৮৯৫)
২. জুমার নামাজ আদায়
সালমান ফারসি থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা, এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজান মধ্যবর্তী সময়ের পাপ মোচন করে; যদি সেই ব্যক্তি সব ধরনের কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)
৩. জুমার দিন গোসল করা
জুমার দিন গোসল করা ও আগে আগে মসজিদে যাওয়া অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। আউস বিন আউস সাকাফি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করল, দ্রুততর সময়ে মসজিদে গেল ও (ইমামের) কাছাকাছি বসে মনোযোগসহ (খুতবা) শুনল, তাঁর জন্য প্রতি কদমের বদলে এক বছরের রোজা ও নামাজের সওয়াব থাকবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৫)
৪. মসজিদে প্রথমে প্রবেশ করা
জুমার দিন মসজিদে আগে প্রবেশ করা ও মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনার বিশেষ গুরুত্ব আছে।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, অতঃপর প্রথমে মসজিদে গেল সে যেন একটি উট কোরবানি করল। যে এরপর মসজিদে গেল, সে যেন একটি গরু কোরবানি করল। আর যে এরপর ঢুকল, সে যেন ছাগল কোরবানি করল, এরপর যে ঢুকল সে যেন মুরগি কোরবানি করল, আর যে এরপর ঢুকল সে ডিম সদকা করল। অতঃপর ইমাম খুতবার জন্য এলে ফেরেশতারা আলোচনা শোনা শুরু করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৪১)
৫. জুমার দিন দোয়া কবুল হয়
জুমার দিন একটি সময় আছে, যখন মানুষ আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে ভালো কিছুর দোয়া করলে আল্লাহ তাকে তা দেন। তোমরা সময়টি আসরের পর অনুসন্ধান কোরো।’ (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর : ১০৪৮)
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো মুসলিম এ সময় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এই মুহূর্তটি তোমরা আছরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান কোরো। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)
৬. সুরা কাহাফ পাঠ
জুমার অন্যতম আমল সুরা কাহাফ পাঠ করা। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পড়বে তা দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার জন্য আলোকিত হয়ে থাকবে। আর যে ব্যক্তি এই সুরার শেষ ১০ আয়াত পাঠ করবে অতঃপর দাজ্জাল বের হলে তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ (সহিহ তারগিব, হাদিস : ১৪৭৩, আল মুসতাদরাক : ২/৩৯৯)
৭. ইমামের কথা শোনা
সালমান ফারসি থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮৩)
৮. দরুদ পাঠ
জুমার দিন নবীজি (সা.)-এর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা কর্তব্য। আউস বিন আবি আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে শিঙায় ফুঁ দেওয়া হবে এবং এই দিনে সবাইকে বেহুঁশ করা হবে। অতএব, তোমরা এই দিনে আমার ওপর বেশি পরিমাণ দরুদ পড়ো। কারণ জুমার দিনে তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়।’ সাহাবারা বললেন, আমাদের দরুদ আপনার কাছে কিভাবে পেশ করা হবে, অথচ আপনার দেহ একসময় নিঃশেষ হয়ে যাবে? তিনি বলেন, ‘আল্লাহ জমিনের জন্য আমার দেহের ভক্ষণ নিষিদ্ধ করেছেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
টানা ৩ জুমা আদায় না করলে যে গুনাহ হবে
জুমার দিনের মর্যাদা ও সম্মান সপ্তাহের অন্য দিনের চেয়ে বেশি। এই দিনকে আল্লাহ তায়ালা সব দিনের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। কোরআন ও হাদিসে এই দিনের বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন , হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে। (সূরা জুমা- ০৯)।
আল্লাহর রাসুল (সা.) একটি হাদিসে বলেছেন, মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৯৮)
জুমার দিনের অনেক আমলের কথা বিভিন্ন হাদিসে চমৎকারভাবে আলোচিত হয়েছে। আউস ইবনে আউস (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করাবে (জুমার নামাজের পূর্বে স্ত্রী-সহবাস করে তাকেও গোসল করাবে) এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তমরূপে গোসল করবে। এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে একবছর নফল রোজা ও একবছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৫)
ফজিলতের পাশাপাশি জুমার নামাজ অনাদায়ে হাদিসে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। কেউ পর পর তিন জুমা আদায় না করলে তার জন্য সতর্কবাণী উল্লেখ করেছেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত পর পর তিন জুমা পরিত্যাগ করে, আল্লাহ তায়ালা তার অন্তরে মোহর এঁটে দেন।’ (বুখারি, হাদিস : ১০৫২; তিরমিজি, হাদিস : ৫০২; মুসলিম, হাদিস : ১৯৯৯)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পর পর তিনটি জুমা পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পেছনের দিকে নিক্ষেপ করল। (মুসলিম)।
তবে অপর এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, চার শ্রেণির লোক ব্যতীত জুমার নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গোনাহ। চার শ্রেণির লোক হলো- ক্রীতদাস, স্ত্রীলোক, অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক, মুসাফির ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। (আবু দাউদ)।
এছাড়া নামাজ পড়া মুসলিমদের একটি নিদর্শন। তাই হজরত উমর (র.) বলতেন, ‘নামাজ ত্যাগকারী নির্ঘাত কাফের’ (বায়হাকি: ১৫৫৯, ৬২৯১)। হজরত আলি (রা.) বলেন, ‘যে নামাজ পড়ে না সে কাফের’ (বায়হাকি: ৬২৯১)। নামাজ পরিত্যাগকারীর ব্যাপারে কোরআন-সুন্নাহর দলিলগুলো প্রমাণ করে, বে-নামাজি ব্যক্তি ইসলাম নষ্টকারী বড় কুফরিতে লিপ্ত। তাই জুমা ও যেকোনো ওয়াক্তের ফরজ নামাজের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার নামাজ চার ধনের ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব নয়
ইয়াওমুল জুমা। সপ্তাহের সেরা মহিমান্বিত দিন। এ নামে আল্লাহ তাআলা একটি সুরা নাজিল করেছেন। সুরাটিতে জুমার পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ৪ শ্রেণির লোক এবং ওজর ছাড়া জুমা তরক করা কবিরা গুনাহ। তারা কারা যাদের জন্য জুমা আবশ্যক নয়?
জুমার নামাজ পড়া ফরজ। জুমার দিন দ্রুত প্রস্তুতি নিয়ে আগে আগে জুমা আদায় করতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ। কোরআনে এসেছে-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ
‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ৯)
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।’ (ইবনে মাজাহ)
তবে ৪ শ্রেণির লোক ব্যতীত জুমার নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গোনাহ। হাদিসে পাকে তাদের ব্যাপারে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
হজরত ত্বারিক ইবনু শিহাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার নামাজ সত্য। যা প্রত্যেক মুসলিমের উপর জামাতের সাথে আদায় করা ফরজ। তবে চার শ্রেণীর লোকের জন্য তা ফরজ নয়। তারা হলেন-
১. ক্রীতদাস।
২. নারী।
৩. শিশু ও
৪. রোগী।’ (আবু দাউদ,)
জুমার নামাজ পরিত্যাগ করার পরিণাম খুবই ভয়াবহ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে এ ব্যাপারে সাবধান করেছেন। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তা ওঠে এসেছে-
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পরপর তিন জুমা বিনা ওজরে ও ইচ্ছা করে ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির অন্তরে মোহর মেরে দেবেন।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘আর এরপর তারা (জুমা পরিত্যাগ কারীরা) আত্মভোলা হয়ে যাবে। এরপর তারা সংশোধন লাভের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়ে যাবে।’ (মুসলিম)।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পরপর তিন জুমা পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পেছনের দিকে নিক্ষেপ করলো। (মুসলিম)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নিয়মিত জুমা আদায় করা। হাদিসে উল্লেখিত ৪ শ্রেণির ব্যক্তি ছাড়া কারো জন্য জুমা থেকে বিরত থাকা উচিত নয়। কেননা জুমা আদায় করা ফরজ। কেউ তা থেকে বিরত থাকলে ফরজ তরকের কবিরা গুনায় লিপ্ত হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমা আদায় করার তাওফিক দান করুন। জুমার গুরুত্ব ও ফজিলত পেতে জুমার দিনের যথাযথ হক আদায় করে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
নারী হজ যাত্রীদের নিয়ে সৌদি আরবের নতুন নির্দেশনা
মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ এবং মসজিদে নববী কর্তৃপক্ষ নারী হজ যাত্রীদের জন্য নয় নির্দেশনা জারি করেছে। ইনফোগ্রাফির মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ এক্স পোস্টে এ নির্দেশনা শেয়ার করে। এসব নির্দেশনা নারীদের নামাজের স্থানগুলোতে মেনে চলতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যথাযথ ইসলামিক পোশাক পরিধান করা, দায়িত্বরত কর্মীদের সঙ্গে উত্তম আচারণ করা, ফ্লোরে ঘুমানো কিংবা বসা পরিহার করা এবং নামাজে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানো।
নির্দেশনায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের ওপর জোর দেয়া হয়েছে, বিশেষ করে নামাজের স্থানে খাওয়া বা পানি পান করা থেকে বিরত থাকা, হইচই না করা এবং জুতা পায়ে কার্পেটের ওপর না হাঁটা। এছাড়া নারীদের হজ যাত্রীদের ব্যক্তিগত মালামাল সাবধানে রাখতে বলা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
আল্লাহর কাছে যে ব্যক্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট
দুনিয়ার সৃষ্টিকুলের মধ্যে শুধু জিন ও মানুষকেই আল্লাহ তাআলা বিবেক ও চিন্তাশক্তি দান করেছেন। সত্য ও কল্যাণ বুঝে গ্রহণ করার সামর্থ্য দান করেছেন। অসত্য ও অকল্যাণ প্রত্যাখ্যান করার সামর্থ্য দান করেছেন। আল্লাহ তাআলা চান মানুষ তার এই নেয়ামতের মূল্যায়ন করুক। চিন্তাশক্তি কাজে লাগাক। চোখে দেখে, কানে শুনে পর্যবেক্ষণ করার শক্তি কাজে লাগাক।
মানুষ যখন নিজের বিবেক, চিন্তা ও পর্যবেক্ষণশক্তি কাজে লাগায় এবং সত্য গ্রহণ করে, তখন মানুষ হয় সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ, যে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে আল্লাহ তাআলা তাকে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু মানুষ যখন নিজের চিন্তাশক্তি অকেজো করে রাখে, আল্লাহ তাআলা চোখ, কান ও অন্তর দেওয়ার পরও অন্ধ ও বধির হয়ে থাকে, নির্বোধ হয়ে থাকে, তখন মানুষ হয় সবচেয়ে নিকৃষ্ট। মানুষের মধ্যে নিকৃষ্ট তো বটেই, চতুস্পদ জন্তুর চেয়েও নিকৃষ্ট। কারণ আল্লাহ তাআলার নেয়ামত পেয়েও সে সেগুলোর মূল্যায়ন করতে পারে নি।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَقَدۡ ذَرَاۡنَا لِجَهَنَّمَ كَثِیۡرًا مِّنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ لَهُمۡ قُلُوۡبٌ لَّا یَفۡقَهُوۡنَ بِهَا۫ وَ لَهُمۡ اَعۡیُنٌ لَّا یُبۡصِرُوۡنَ بِهَا وَ لَهُمۡ اٰذَانٌ لَّا یَسۡمَعُوۡنَ بِهَا اُولٰٓئِكَ كَالۡاَنۡعَامِ بَلۡ هُمۡ اَضَلُّ اُولٰٓئِكَ هُمُ الۡغٰفِلُوۡنَ
আর অবশ্যই আমি সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের জন্য বহু জিন ও মানুষকে। তাদের রয়েছে অন্তর, তা দ্বারা তারা বোঝে না; তাদের রয়েছে চোখ, তা দ্বারা তারা দেখে না এবং তাদের রয়েছে কান, তা দ্বারা তারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তারা অধিক পথভ্রষ্ট। তারাই হচ্ছে গাফেল। (সুরা আ’রাফ: ১৭৯)
আল্লহ তাআলা ‘জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছেন’ এর অর্থ এই নয় যে বিনা কারণে তাদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করার জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছিল। বরং তারা নিজেদের কাজের কারণে জাহান্নামের উপযুক্ত হয়। যেহেতু আল্লাহ তাআলা তাদেরকে অন্তর, মস্তিষ্ক, কান, চোখ সবকিছু দিয়েই সৃষ্টি করার পরও তারা এগুলোকে যথাযথভাবে ব্যবহার করে না। তারা কিছু বোঝে না, দেখে না, শোনে না। অথচ তারা পাগল বা উম্মাদ নয় যে কিছুই বুঝতে পারবে না। অন্ধও নয় যে কোনো কিছু দেখবে না, বা বধিরও নয় যে কোনো কিছু শুনবে না। বরং তারা পার্থিব বিষয়ে অধিকাংশ লোকের তুলনায় অধিক সতর্ক ও চতুর।
কোরআনের আরেকটি আয়াতেও এ ধরনের ব্যক্তিদের সৃষ্টিকুলের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَطِیۡعُوا اللّٰهَ وَ رَسُوۡلَهٗ وَ لَا تَوَلَّوۡا عَنۡهُ وَ اَنۡتُمۡ تَسۡمَعُوۡنَ وَ لَا تَكُوۡنُوۡا كَالَّذِیۡنَ قَالُوۡا سَمِعۡنَا وَ هُمۡ لَا یَسۡمَعُوۡنَ اِنَّ شَرَّ الدَّوَآبِّ عِنۡدَ اللّٰهِ الصُّمُّ الۡبُكۡمُ الَّذِیۡنَ لَا یَعۡقِلُوۡنَ
হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য কর এবং তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না, অথচ তোমরা শুনছ। আর তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা বলে আমরা শুনেছি অথচ তারা শোনে না। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম বিচরণশীল প্রাণী হচ্ছে বধির, বোবা, যারা বোঝে না। (সুরা আনফাল: ২২)
অর্থাৎ আল্লাহর সৃষ্টিকুলের মধ্যে সেসব মানুষই সবচেয়ে নিকৃষ্ট যারা সত্য ও ন্যায় শ্রবণের ব্যাপারে বধির এবং তা গ্রহণ করার ব্যাপারে বোবা হয়ে থাকে। কারণ আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সত্য জানা ও সে পথে চলার জন্য চোখ ও কান দিয়েছিলেন, কিন্তু তারা সেগুলো কাজে লাগায়নি।
আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, মানুষের চোখ, কান ও অন্তর সম্পর্কে কেয়ামতের দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে যে আল্লাহর এই নেয়ামতগুলো সে কী কাজে লাগিয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَ لَا تَقۡفُ مَا لَیۡسَ لَكَ بِهٖ عِلۡمٌ اِنَّ السَّمۡعَ وَ الۡبَصَرَ وَ الۡفُؤَادَ كُلُّ اُولٰٓئِكَ كَانَ عَنۡهُ مَسۡـُٔوۡلًا
আর সে বিষয়ের পেছনে ছুটো না, যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই। কান, চোখ আর অন্তর- এগুলোর প্রতিটির ব্যাপারেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (সুরা ইসরা: ৩৬)
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
বুধবার থেকে পবিত্র জমাদিউস সানি মাস গণনা শুরু
বাংলাদেশের আকাশে কোথাও জমাদিউস সানি মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামী বুধবার (৪ ডিসেম্বর) থেকে পবিত্র জমাদিউস সানি মাস গণনা শুরু হবে বলে জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের আকাশে আজ কোথাও ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র জমাদিউস সানি মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামীকাল (৩ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার পবিত্র জমাদিউল আউয়াল মাস ৩০ দিন পূর্ণ হবে এবং আগামী ৪ ডিসেম্বর বুধবার থেকে পবিত্র জমাদিউস সানি মাস গণনা করা হবে।