অর্থনীতি
বিদেশ থেকে এমডির পদত্যাগ, ইউসিবির আর্থিক চিত্র যাচাইয়ে ৭ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান

সরকার পরিবর্তনের পর ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে যান ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ কাদরী। তবে ছুটি শেষ হলেও দেশে না ফিরে গত ১১ সেপ্টেম্বর তিনি বিদেশ থেকে ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। এদিকে ইউসিবির প্রকৃত আর্থিক চিত্র যাচাই করে দেখতে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে নিরীক্ষার দায়িত্ব দিয়েছে পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ। আগামী অক্টোবরে এই নিরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ইউসিবির চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরী। বিদেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিপুল সম্পদ থাকার খবর ও শেয়ারধারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর এই ব্যাংকের পর্ষদে পরিবর্তন আনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। সাইফুজ্জামান ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে বিদেশে বিপুল সম্পদ থাকার কারণে চলতি বছরের শুরুতে গঠিত নতুন আওয়ামী লীগ সরকারে সাইফুজ্জামানকে মন্ত্রী করা হয়নি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইউসিবি সূত্রে জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর গত ১৪ আগস্ট এই ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরিফ কাদরী ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে বিদেশে যান। এর অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বিদেশে থেকেই তিনি ছুটি বাড়িয়ে নেন। ১০ সেপ্টেম্বর ছুটি শেষ হওয়ার পরদিন তিনি বিদেশ থেকে ই–মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠান। এরপর ব্যাংকটির অতিরিক্ত এমডি সৈয়দ ফরিদুল ইসলামকে চলতি দায়িত্বে এমডি করা হয়। এরই মধ্যে পরিচালনা পর্ষদ এনসিসি ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদকে এমডি পদে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মামদুদুর রশীদ একসময় ইউসিবির অতিরিক্ত এমডি ছিলেন।
এদিকে ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে ব্যাংকটির ডিএমডি আলমগীর কবির অফিস করছেন না। তিনি সম্পর্কে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই হন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, আরিফ কাদরীর পদত্যাগ ও মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদের নিয়োগ এখন অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। তবে বিদেশ থেকে পদত্যাগপত্র দেওয়ায় আরিফ কাদরীর পদত্যাগ বিনা প্রশ্নে অনুমোদন হবে, নাকি তাঁকে জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
এবিষয়ে ইউসিবির অতিরিক্ত এমডি ও কোম্পানি সচিব এ টি এম তাহমিদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, এমডি পদত্যাগ করেছেন। তা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যেসব ব্যাংকে বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে, সেগুলোর সাবেক পরিচালক ও শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিদেশ যাত্রা আটকে না দিলে অনিয়মের প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটন করে বিচার করা কঠিন হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইউসিবিকে সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ও তাঁর পরিবারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ব্যাংকটির শেয়ারধারীরা। তখন তাঁরা বিভিন্ন ধরনের ফেস্টুন প্রদর্শন করে সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ‘বিদেশে অর্থ পাচার’ ও ব্যাংকে নানা অনিয়ম করার অভিযোগ তোলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো এক চিঠিতে ব্যাংকটির কিছু শেয়ারধারী জানান, কাগজপত্রে স্ত্রী রুখমিলা জামান ইউসিবির চেয়ারপারসন হলেও বাস্তবে স্বামী সাইফুজ্জামান চৌধুরীই এ দায়িত্ব পালন করতেন। তাঁর স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটপাটের কারণেই ব্যাংকটি আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে। ওই চিঠিতে আরও অভিযোগ করা হয়, যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ১ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে, যা এই ‘ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা লুট করে পরিশোধ করা হয়েছে।
গত ২৭ আগস্ট ইউসিবির পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন চেয়ারম্যান করা হয় ব্যাংকটির উদ্যোক্তা প্রতিনিধি শরীফ জহীরকে। পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান শেয়ারধারী মো. তানভীর খান। স্বতন্ত্র পরিচালক করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি মো. ইউসুফ আলী ও হিসাববিদ ওবায়দুর রহমানকে।
ইউসিবির নতুন পরিচালনা পর্ষদ প্রতিষ্ঠানটির ঋণ, বিনিয়োগ, কেনাকাটা, মানবসম্পদসহ সব ধরনের কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ জন্য সাতটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান এখন ব্যাংকটিতে নিরীক্ষা চালাচ্ছে। এতে ব্যাংকের প্রকৃত আর্থিক চিত্র বেরিয়ে আসবে বলে পর্ষদ ও কর্মকর্তারা আশা করছেন।
এদিকে, কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সম্প্রচারমাধ্যম আল-জাজিরার এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ শুধু যুক্তরাজ্যেই ৩৬০টি বাড়ির মালিক। এর বেশির ভাগই বার্কলি গ্রুপের মতো এই খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কেনা। বাড়িগুলোর বর্তমান বাজারমূল্য ৩২ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮২৪ কোটি টাকার বেশি (প্রতি ডলার ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা ধরে)। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র আর দুবাইয়েও তাঁর সম্পদ রয়েছে। গত বুধবার রাতে ‘দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস’ শিরোনামে ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে আল-জাজিরা। অনুসন্ধান করেছে আল-জাজিরার অনুসন্ধানী দল ‘আই ইউনিট’।
আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান লন্ডনের বাইরে দুবাইয়ে ২০২০ সালের মধ্যে অন্তত ৫৪টি সম্পদের মালিক হন। যুক্তরাষ্ট্রেও তাঁর সম্পদ আছে। সেখানে তিনি ৯টি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন। এর মধ্যে ৫টি ম্যানহাটানসহ নিউইয়র্কের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এবং ৪টি নদীর ওপারে নিউ জার্সিতে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী দেশের বাইরে এত বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তোলার তথ্য তাঁর নির্বাচনী হলফনামা ও ট্যাক্স ফাইল তথা আয়কর নথিতে গোপন করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
ভিয়েতনাম থেকে এলো ১২ হাজার ৭০০ টন চাল

ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা আরও ১২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, গত ৩ ফেব্রুয়ারি সম্পাদিত চুক্তির আওতায় জি টু জি ভিত্তিতে (প্যাকেজ-১) ভিয়েতনাম থেকে ১২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন আতপ চাল নিয়ে এমভি এমডি সি জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জাহাজে রক্ষিত চালের নমুনা পরীক্ষা এরইমধ্যে শেষ হয়েছে এবং চাল খালাসের কার্যক্রম দ্রুত শুরু হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জি টু জি চুক্তির আওতায় ভিয়েতনাম থেকে মোট ১ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। এরইমধ্যে চুক্তি অনুযায়ী ৬০ হাজার মেট্রিক টন চাল দেশে পৌঁছেছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ৯০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন

নতুন উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেখান থেকে শুধু স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোকে মূলধন জোগান দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫-এর স্টার্টআপ কানেক্ট সেশনের আলোচনায় এ কথা জানান তিনি। এ বিষয়ে শিগগিরই একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলেও নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর।
এদিন রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘এমপাওয়ারিং ইনোভেশন কানেক্টিং অপরচ্যুনিটি’ শিরোনামে স্টার্টআপ কানেক্ট সেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় চারদিনব্যাপী বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনের। দেশি-বিদেশি তরুণ ও উদ্ভাবনী উদ্যোক্তারা অংশ নেন এ সেশনে।
সেশনের মূলপ্রবন্ধে বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর সম্ভাবনা তুলে ধরেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তানভীর আলী। প্রবন্ধে বলা হয়, দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে উদ্ভাবনী স্টার্টআপ উদ্যোগের চাহিদা বাড়ছে। তবে প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় দেশে এখনো এই খাতে বিনিয়োগ কম।
বাংলাদেশ ব্যাংক আহসান এইচ মনসুর বলেন, নতুন উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক যে বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে তার অর্থ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
এরপর বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ব্যবসা করার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স পাওয়াসহ সরকারি লালফিতার দৌরাত্ম্য বেশি। প্রতিবছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে গিয়ে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়।
তিনি আরও বলেন, ৪০ দেশের ৫ শতাধিক বিদেশি বিনিয়োগকারী এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। এসব বিনিয়োগকারীকে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরিয়ে দেখানো হবে।
বাংলাদেশে উদ্ভাবনী উদ্যোক্তার অভাব নেই বলে মন্তব্য করেন বিডার চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, স্টার্টআপ তহবিলের সংকটে নতুন উদ্যোক্তারা ব্যবসা শুরু করতে পারেন না। এ কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংক ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি টাকার স্টার্টআপ তহবিল গঠন করতে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বার্তা দেন লিংকডইনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। প্যানেল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব এবং আইসিটি সচিব শীশ হায়দার চৌধুরী।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঈদের ছুটি শেষে দর্শনা দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু

ঈদের ছুটিতে টানা ৯ দিন বন্ধ থাকার পর শনিবার (৫ এপ্রিল) থেকে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা রেলওয়ে শুল্ক স্টেশন দিয়ে।
দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক মির্জা কামরুল হক বলেন, ঈদ উপলক্ষে দুই দেশের পারস্পরিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) থেকে দর্শনা শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। ঈদের আগের দিন ও পরের দিনসহ মোট ৯ দিন বন্ধ ছিল এ কার্যক্রম। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ছুটি শেষ হওয়ায় পরদিন শনিবার সকাল থেকে আবারও পণ্য পরিবহন শুরু হয়।
তিনি আরও জানান, ছুটি শুরুর আগে ভারতের যেসব খালি মালবাহী ওয়াগন বাংলাদেশে অবস্থান করছিল, সেগুলো ধাপে ধাপে ফেরত পাঠানো হয়। কারণ, এসব ওয়াগনের জন্য প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাড়া বাংলাদেশ সরকারকে ভারতকে পরিশোধ করতে হয়। অতিরিক্ত খরচ এড়াতেই ছুটির আগেই ওয়াগনগুলো ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এদিকে দর্শনার জয়নগর ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ইনচার্জ রমজান জানান, দুই দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে চেকপোস্টের কার্যক্রম ঈদের দিনসহ ছুটির পুরো সময় জুড়েই চালু ছিল।
তিনি বলেন, আমাদের কিছু সদস্য ছুটির মধ্যেও দায়িত্বে ছিলেন, যাতে যাত্রীসেবা অব্যাহত থাকে। যাত্রীদের যাতায়াতে কোনো ধরনের বিঘ্ন ঘটেনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে ২৫ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের উর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে। এ পর্যন্ত রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী প্রকৃত রিজার্ভ ২০ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার।
রোববার (৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একক মাসে প্রবাসী আয় ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে মার্চ মাসে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে এসেছে ৩২৯ কোটি মার্কিন ডলার। এটি এখনও পর্যন্ত একক মাসে রেমিট্যান্স আয়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, ২০২৪ সালের মার্চে প্রবাসী আয় ছিল ১৯৯ কোটি ডলার। এক বছরের ব্যবধানে প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
এ ছাড়া, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৭৭ কোটি ডলার। এটি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, টানা সাত মাস ধরে প্রতি মাসে ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসছে। শুধু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই এসেছে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। তা আগের বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঢাকায় ৪ দিনের বিনিয়োগ সম্মেলন শুরু আজ

দেশে বৈশ্বিক বিনিয়োগের দুয়ার খুলতে আজ থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে চার দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’। এতে বিশ্বের ৫০টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি বিনিয়োগকারী ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি অংশ নেবেন।
রোববার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
আয়োজকরা জানান, এই আয়োজনের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের জন্য একটি বিনিয়োগের পাইপলাইন তৈরি হবে। সম্মেলনে দেশি-বিদেশি পাঁচজন বিনিয়োগকারীকে পুরস্কার দেওয়া হবে। এছাড়া মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হবে।
সম্মেলনে কারা আসছেন
বিনিয়োগ সম্মেলনে অতিথি হিসেবে থাকবেন যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের সদস্য ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন, বহুজাতিক কোম্পানি স্যামসাংয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাং-জু লি, কাপড়ের ব্র্যান্ড জিওর্ডানো ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কলিন মেলভিল কেনেডি কারি। এ ছাড়া এক্সিলারেট এনার্জির প্রেসিডেন্ট ও পাকিস্তানের দাউদ গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্টের সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এসব ব্যক্তির পাশাপাশি আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের বিনিয়োগ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা, উবার, টেলিনর ও টয়োটার মতো অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। এ ছাড়া বিশ্বের বেশ কিছু বড় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানিও আসছে সম্মেলনে। তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বি-ক্যাপিটাল, মালয়েশিয়া ও হংকংভিত্তিক গোবি পার্টনার্স, কনজাংশন ক্যাপিটাল ও মার্কোর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে।
জানা গেছে, সম্মেলনে যোগ দেওয়া বড় ব্যবসা খাতের বিনিয়োগকারীদের নিয়ে ঢাকার বাইরে একাধিক অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করা হবে। এর অংশ হিসেবে সম্মেলনের প্রথম দিনে সোমবার (৭ এপ্রিল) বিনিয়োগকারীদের চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত কোরিয়ান ইপিজেড ও মিরসরাইয়ের জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এনএসইজেড) পরিদর্শন করানো হবে। এ ছাড়া মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, এ বছর সংস্কারের বছর, আমরা বিনিয়োগকারীদের নিয়ে এসে নতুন বাংলাদেশ দেখাতে চাই। ১০ বছর পর বাংলাদেশ কেমন হবে সেই আভাস দেওয়া হবে এবারের সামিটে। বাংলাদেশের ব্যাপারে বিশ্বের ধারণা চেঞ্জ করা হবে এই সামিটের মাধ্যমে।
প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিনিয়োগ বাড়ানোর দিকে জোর দিচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে আজ থেকে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শুরু হতে যাচ্ছে চারদিন ব্যাপী এই বিনিয়োগ সম্মেলন। যেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে তুলে ধরা হবে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অর্থনৈতিক সংস্কারের পূর্বাপর। আগামী ৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’ এর উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।