অর্থনীতি
বিদেশ থেকে এমডির পদত্যাগ, ইউসিবির আর্থিক চিত্র যাচাইয়ে ৭ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান
সরকার পরিবর্তনের পর ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে যান ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ কাদরী। তবে ছুটি শেষ হলেও দেশে না ফিরে গত ১১ সেপ্টেম্বর তিনি বিদেশ থেকে ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। এদিকে ইউসিবির প্রকৃত আর্থিক চিত্র যাচাই করে দেখতে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে নিরীক্ষার দায়িত্ব দিয়েছে পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ। আগামী অক্টোবরে এই নিরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ইউসিবির চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরী। বিদেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিপুল সম্পদ থাকার খবর ও শেয়ারধারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর এই ব্যাংকের পর্ষদে পরিবর্তন আনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। সাইফুজ্জামান ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে বিদেশে বিপুল সম্পদ থাকার কারণে চলতি বছরের শুরুতে গঠিত নতুন আওয়ামী লীগ সরকারে সাইফুজ্জামানকে মন্ত্রী করা হয়নি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইউসিবি সূত্রে জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর গত ১৪ আগস্ট এই ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরিফ কাদরী ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে বিদেশে যান। এর অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বিদেশে থেকেই তিনি ছুটি বাড়িয়ে নেন। ১০ সেপ্টেম্বর ছুটি শেষ হওয়ার পরদিন তিনি বিদেশ থেকে ই–মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠান। এরপর ব্যাংকটির অতিরিক্ত এমডি সৈয়দ ফরিদুল ইসলামকে চলতি দায়িত্বে এমডি করা হয়। এরই মধ্যে পরিচালনা পর্ষদ এনসিসি ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদকে এমডি পদে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মামদুদুর রশীদ একসময় ইউসিবির অতিরিক্ত এমডি ছিলেন।
এদিকে ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে ব্যাংকটির ডিএমডি আলমগীর কবির অফিস করছেন না। তিনি সম্পর্কে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই হন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, আরিফ কাদরীর পদত্যাগ ও মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদের নিয়োগ এখন অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। তবে বিদেশ থেকে পদত্যাগপত্র দেওয়ায় আরিফ কাদরীর পদত্যাগ বিনা প্রশ্নে অনুমোদন হবে, নাকি তাঁকে জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
এবিষয়ে ইউসিবির অতিরিক্ত এমডি ও কোম্পানি সচিব এ টি এম তাহমিদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, এমডি পদত্যাগ করেছেন। তা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যেসব ব্যাংকে বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে, সেগুলোর সাবেক পরিচালক ও শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিদেশ যাত্রা আটকে না দিলে অনিয়মের প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটন করে বিচার করা কঠিন হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইউসিবিকে সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ও তাঁর পরিবারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ব্যাংকটির শেয়ারধারীরা। তখন তাঁরা বিভিন্ন ধরনের ফেস্টুন প্রদর্শন করে সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ‘বিদেশে অর্থ পাচার’ ও ব্যাংকে নানা অনিয়ম করার অভিযোগ তোলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো এক চিঠিতে ব্যাংকটির কিছু শেয়ারধারী জানান, কাগজপত্রে স্ত্রী রুখমিলা জামান ইউসিবির চেয়ারপারসন হলেও বাস্তবে স্বামী সাইফুজ্জামান চৌধুরীই এ দায়িত্ব পালন করতেন। তাঁর স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটপাটের কারণেই ব্যাংকটি আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে। ওই চিঠিতে আরও অভিযোগ করা হয়, যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ১ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে, যা এই ‘ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা লুট করে পরিশোধ করা হয়েছে।
গত ২৭ আগস্ট ইউসিবির পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন চেয়ারম্যান করা হয় ব্যাংকটির উদ্যোক্তা প্রতিনিধি শরীফ জহীরকে। পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান শেয়ারধারী মো. তানভীর খান। স্বতন্ত্র পরিচালক করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি মো. ইউসুফ আলী ও হিসাববিদ ওবায়দুর রহমানকে।
ইউসিবির নতুন পরিচালনা পর্ষদ প্রতিষ্ঠানটির ঋণ, বিনিয়োগ, কেনাকাটা, মানবসম্পদসহ সব ধরনের কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ জন্য সাতটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান এখন ব্যাংকটিতে নিরীক্ষা চালাচ্ছে। এতে ব্যাংকের প্রকৃত আর্থিক চিত্র বেরিয়ে আসবে বলে পর্ষদ ও কর্মকর্তারা আশা করছেন।
এদিকে, কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সম্প্রচারমাধ্যম আল-জাজিরার এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ শুধু যুক্তরাজ্যেই ৩৬০টি বাড়ির মালিক। এর বেশির ভাগই বার্কলি গ্রুপের মতো এই খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কেনা। বাড়িগুলোর বর্তমান বাজারমূল্য ৩২ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮২৪ কোটি টাকার বেশি (প্রতি ডলার ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা ধরে)। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র আর দুবাইয়েও তাঁর সম্পদ রয়েছে। গত বুধবার রাতে ‘দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস’ শিরোনামে ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে আল-জাজিরা। অনুসন্ধান করেছে আল-জাজিরার অনুসন্ধানী দল ‘আই ইউনিট’।
আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান লন্ডনের বাইরে দুবাইয়ে ২০২০ সালের মধ্যে অন্তত ৫৪টি সম্পদের মালিক হন। যুক্তরাষ্ট্রেও তাঁর সম্পদ আছে। সেখানে তিনি ৯টি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন। এর মধ্যে ৫টি ম্যানহাটানসহ নিউইয়র্কের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এবং ৪টি নদীর ওপারে নিউ জার্সিতে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী দেশের বাইরে এত বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তোলার তথ্য তাঁর নির্বাচনী হলফনামা ও ট্যাক্স ফাইল তথা আয়কর নথিতে গোপন করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের বন্দর ও জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী ডেনমার্ক
বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামো এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে ডেনমার্ক। বুধবার (৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার সৌজন্য সাক্ষাৎ করে এ আগ্রহের কথা জানান।
সাক্ষাৎকালে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গঠিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ডেনমার্কের সরকারপ্রধান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন এবং বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যকার বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নিতে দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ৷ ডেনমার্ক বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশ-ডেনমার্ক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও সহযোগিতার পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এই দীর্ঘ পথচলায় উভয় দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব ও সহানুভূতির স্বাক্ষর হিসেবে চমৎকার একটি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। জলবায়ু পরিবর্তনসহ বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে সমভাবাপন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দেশ দুটিকে একাত্ম করেছে।
তিনি বলেন, ‘বন্দর ও জাহাজ শিল্পে ডেনমার্কের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ডেনিশ সরকার বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামোসহ জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী। এ সময় রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় লালদিয়ার চরে কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগের বিষয়ে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেন। ’
বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প ও বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নে ডেনমার্কের বিনিয়োগের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমান সরকার বিনিয়োগবান্ধব সরকার। ছাত্র-জনতার বিপ্লবে গঠিত নতুন বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যেকোনো সমুদ্রবন্দরের জন্য আন্তর্জাতিক মানের শিপইয়ার্ড/ডকইয়ার্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ’
এ সময় উপদেষ্টা মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের শিপইয়ার্ড নির্মাণে ডেনিশ সরকারের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা কামনা করে বলেন, ‘সরকার বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এখানে বিনিয়োগকারীদের প্রতিটি বিনিয়োগ হবে নিরাপদ ও হয়রানিমুক্ত। ’
এ সময় তিনি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে নিশ্চিন্তে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, তার মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর সংস্থার সকল কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। কোনো ব্যবসায়ী বা বিনিয়োগকারীকে হয়রানি করার সুযোগ নেই।
উপদেষ্টা বাংলাদেশের গৌরবময় পাট ও বস্ত্র শিল্পে ডেনিশ কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘পরিবেশগত কারণে ইউরোপে পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় পাট উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক দেশ। আমাদের পঁচিশটি করে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল ও বস্ত্রকল রয়েছে। যেগুলোর অধিকাংশ অবস্থান বন্দরের নিকটে। এ খাতে দক্ষ জনবল রয়েছে। এ সকল খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে উভয় দেশই উপকৃত হতে পারে।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ডেনমার্ককে অন্যতম প্রধান অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘বন্ধুপ্রতীম দু’দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক খুবই চমৎকার। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী ও উপকূলীয় এলাকার উন্নয়নে ডেনমার্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ’
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
শ্রমিক অসন্তোষের মাঝেও সেপ্টেম্বরে বেড়েছে রপ্তানি আয়
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শ্রমিক অসন্তোষে শিল্পখাতে উৎপাদন ব্যাহত হলেও চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে। বুধবার (৯ অক্টোবর) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন।
ইপিবি জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সফটওয়্যারে সরাসরি যুক্ত হওয়া রপ্তানি চালানের তথ্যের ভিত্তিতে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ রপ্তানি থেকে আয় করেছে ৩৫১ কোটি ডলার, আগের বছরের একই মাসে যা ছিল ৩২৯ বিলিয়ন ডলার। এই হিসাবে তা বেড়েছে প্রায় ২২ কোটি ডলার।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়ে ৯ দশমিক ২৮ বিলিয়ন হয়েছে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৮ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার।
সেপ্টেম্বর মাসে পোশাক খাত ২ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন আয় করেছে, যা ৬ শতাংশ বেশি। ওভেন পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ৮ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যেখানে নিট পণ্যের রপ্তানি আয় ৪ দশমিক ৪০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারে।
সেপ্টেম্বর মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৯৭ মিলিয়ন ডলার। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৮২ শতাংশ। প্লাস্টিক পণ্য ২৭ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা একবছর আগের একই সময়ে ২১ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ১৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়ে ৮২ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্যের আয় ১৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ কমে ৬৭ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। বিশেষায়িত টেক্সটাইল সেক্টর ৩৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এ খাত থেকে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। হোম টেক্সটাইল খাতের রপ্তানি আয় কমেছে ২ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং আয় করেছে ৬২ মিলিয়ন ডলার।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে স্পেনকে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
বাংলাদেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে স্পেনের প্রতি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (৯ অক্টোবর) বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিস্তিয়াগা সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চেয়েছেন যে, তার নিজস্ব অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে সংস্কার উদ্যোগে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করতে পারেন কি না?
প্রধান উপদেষ্টা স্পেনের প্রস্তাবের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে যে সংস্কার করার চেষ্টা করছে, তাতে দেশটির যে কোনো সমর্থনকে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য সহযোগিতা, স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিনিয়োগ এবং অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলোও উল্লেখ করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পেনের রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ‘স্পেন আমাদের বিভিন্ন উপায়ে সমর্থন করতে পারে। স্পেন এখানে আরও বিনিয়োগ করতে পারে এবং আমাদের পোশাক পণ্যের আমদানি সম্প্রসারিত করতে পারে।’
বর্তমানে প্রায় ৬০ হাজার বাংলাদেশি স্পেনে কাজ করেন উল্লেখ করে ড. ইউনূস কারিগরি ও নন-টেকনিক্যাল উভয় ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি মজুরি উপার্জনকারী নিয়োগের জন্য দেশটির প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত সিস্তিয়াগা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়ে স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানচেজের একটি চিঠি হস্তান্তর করেন।
তিনি ৩০ জুন থেকে ৩ জুলাই ২০২৫-এর মধ্যে তার দেশে অনুষ্ঠিতব্য উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সময় প্রধান উপদেষ্টাকে স্পেন সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ডিম ট্রাকে থাকতেই ৪ বার হাতবদল হয়: সমন্বয়ক হাসনাত
ডিম ট্রাকে থাকা অবস্থাতেই কারওয়ান বাজারে চারবার হাতবদল হয় বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। বুধবার (৯ অক্টোবর) সমন্বয়ক হাসনাত তার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে করা এক স্ট্যাটাসে এ সব কথা বলেন।
আজ দুপুরে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, ‘ডিম ট্রাকে থাকা অবস্থাতেই কারওয়ান বাজারে চারবার ডিমের হাতবদল হয়। এখনো পর্যন্ত এই সরকার কোনো সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। শুধু সিন্ডিকেটের সাইনবোর্ড পরিবর্তন হয়েছে। সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে এই অভ্যুত্থানের প্রাথমিক মাহাত্ম্য কী?’
প্রসঙ্গত, দেশের বাজারে বছরের ব্যবধানে ডিমের দাম প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছে। কিছু মুনাফালোভীর দৌরাত্ম্যে দাম বেড়েছে খুচরা বাজারেও। এতে সাধারণ ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে গেছে ডিমের দাম। দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার শর্তসাপেক্ষে ৭ প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে চার কোটি পিস ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। একই সঙ্গে আমদানি করা ডিমের দাম নাগালের মধ্যে রাখতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৯০ হাজার টন সার কিনবে সরকার, ব্যয় ৬০১ কোটি টাকা
মরক্কো, সৌদি আরব ও কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ৯০ হাজার মেট্রিক টন সার কিনবে সরকার। এর মধ্যে মরক্কো থেকে ৩০ হাজার টন টিএসপি, সৌদি আরব থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া এবং কাফকো থেকে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানি করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬০১ কোটি ২৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আজকের বৈঠকে এলএনজি গ্যাস, ইউরিয়া ও মসুর ডাল কেনার প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশে কৃষি পণ্যের উৎপাদন যেন কোনোভাবে ব্যাহত না হয়, সে লক্ষ্যে যথাসময়ে সারের মজুত ও সরবরাহ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে আমদানির জন্য সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তাছাড়া, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেমন মসুর ডাল, পেঁয়াজ, আলু, চিনি, সয়াবিন তেল ইত্যাদির সরবরাহ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর ওসিপি এস এ এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৭ম লটে ৩০ টন টিএসপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৪১৫ মার্কিন ডলার।
অপর প্রস্তাবে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য সৌদি আরবের কৃষি পুষ্টি কোম্পানির (সাবিক) কাথ থেকে ৩য় লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১২৮ কোটি ২২ লাখ ১২ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৩৫৬.১৭ মার্কিন ডলার।
এছাড়া, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশের কাছ থেকে ৫ম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১২৩ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৪৩.৩৭৫ মার্কিন ডলার।
এমআই