অর্থনীতি
সংস্কার চলা ব্যাংকিংখাতে সহযোগিতা করবে বিশ্বব্যাংক: অর্থ উপদেষ্টা

দেশের সংস্কার চলা ব্যাকিংখাতে বিশ্বব্যাংক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমাদের ব্যাকিংখাতে সংস্কার চলছে। এখানে তারা (বিশ্বব্যাংক) সাহায্য করবে।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ অঞ্চলীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট মি. মার্টিন রাইজারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ কথা জানান।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্য ও জ্বালানি শক্তি খাত, খাদ্য, বন্যা ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাপোর্ট নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা তাদের কাছে যে প্রস্তাবনা দিয়েছি তাতে তারা মোটামুটি ইতিবাচক। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে অন্য দাতা সংস্থাগুলো একত্রে সমন্বয় করার কথা বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কারিগরি সহায়তাসহ অন্যান্য বিষয়ে তাদের কোনো কার্পণ্য থাকবে না। দ্বিতীয়ত, আমাদের ব্যাকিংখাতে সংস্কার চলছে। এখানে তারা সাহায্য করবে। বিশেষ করে বেসরকারি সেক্টরে উদ্যোক্তা বাড়ানো, তাদের বিনিয়োগে সুযোগ-সুবিধা দেখার বিষয় আলোচনা হয়েছে। আমরা যে সংস্কারগুলো করছি তারা সে বিষয় সন্তুষ্ট।
কাফি

অর্থনীতি
১৯ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৫২ কোটি ২৩ লাখ ডলার

প্রবাসী আয়ের উর্ধ্বগতির ধারা জুলাইয়েও অব্যাহত আছে। জুলাইয়ের ১৯ দিনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৩লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। আজ রোববার (২০ জুলাই) প্রবাসী আয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জুলাইয়ের ১৯ দিন প্রতিদিন প্রবাসী আয় আসে ৮ কোটি ১ লাখ ২১ হাজার ৫৭৯ ডলার। আগের মাস জুনে প্রতিদিন আসে ৯ কোটি ৪০ লাখ ৪১ হাজার ৬৬৬ ডলার। আর আগের বছরের জুলাই মাসে প্রতিদিন এসেছিল ৬ কোটি ৩৭ লাখ ৯২ লাখ ৩৩৩ ডলার।
এ হিসাবে চলতি জুলাইয়ের ১৯ দিনে প্রবাসী আয় আগের মাস জুনের চেয়ে কিছু কমলেরও আগের বছরের জুলাইয়ের চেয়ে বেড়েছে। এতে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে।
তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ১৯ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩২ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার। রাষ্ট্রমালিকানাধীন কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৮ কোটি ১২ লাখ ৮০ হাজার ডলার। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১০০ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৮০ লাখ ১০ হাজার ডলার।
কাফি
অর্থনীতি
পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২১.৬ শতাংশ

চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জানুয়ারি – মে) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩.৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১.৬০ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে, একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে মোট পোশাক আমদানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৭.০৬ শতাংশ, যার পরিমাণ ৩১.৭০ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশের এই প্রবৃদ্ধির বিপরীতে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক আমদানি ১০.০২ শতাংশ কমে গেছে। অন্যদিকে ভারত ১৬.৯৬ শতাংশ, পাকিস্তান ২১.৫৮ শতাংশ, ভিয়েতনাম ১৬.৩৩ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ১৩.৫৫ শতাংশ এবং কম্বোডিয়া ১৭.৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
তবে ইউনিট প্রতি মূল্যের দিক দিয়ে বাংলাদেশ খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি। বাংলাদেশের ইউনিট মূল্য বেড়েছে মাত্র ০.৪৭ শতাংশ। বিপরীতে ভিয়েতনাম ৩.৪৭ শতাংশ ইউনিট মূল্যে প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। চীন ০.৯৩ শতাংশ, পাকিস্তান ৩.২৪ শতাংশ এবং কম্বোডিয়া ৪.১৯ শতাংশ হারে ইউনিট মূল্যে পিছিয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, রপ্তানির পরিমাণ ও মূল্য বৃদ্ধি অবশ্যই ইতিবাচক খবর। তবে ইউনিট মূল্যে স্থবিরতা বা পতন আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। ক্রেতারা এখনো দামে বেশ সংবেদনশীল এবং মূল্য প্রতিযোগিতার কারণে আমরা অধিকাংশ সময়েই ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে পারছি না। ভিয়েতনাম যেভাবে ইউনিট মূল্যে এগিয়ে আছে, তা আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। বাংলাদেশকে এখন শুধু পরিমাণ নয়, মান ও মূল্য সংযোজনেও আরও মনোযোগী হতে হবে, না হলে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা কঠিন হবে।
‘আমাদের পণ্যের বৈচিত্র্য এবং কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিযোগিতামূলক মূল্য ধরে রেখেই রপ্তানি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। কারণ আমাদের উৎপাদন দক্ষতা, পরিবেশবান্ধব কারখানা এবং সময়মতো ডেলিভারির ফলে ক্রেতারা আমাদের প্রতি আস্থা রেখেছে’, বলে মন্তব্য করেন স্নোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম খালেদ।
তিনি বলেন, আমরা এখন অ্যাক্টিভওয়্যার, স্পোর্টসওয়্যার এবং আউটারওয়্যারের মতো নতুন ধরনের পণ্যে দক্ষতা অর্জন করেছি। বর্তমানে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন প্রযুক্তি গ্রহণে বিনিয়োগ বাড়ানো। শুধু আধুনিক যন্ত্রপাতি আনা নয়, সেই সঙ্গে আমাদের শ্রমিকদের আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও পরিচালনায় প্রশিক্ষণ দিতে হবে। শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং উচ্চমূল্যের পণ্যে রপ্তানি সক্ষমতা অর্জনের জন্য প্রযুক্তিগত দক্ষতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কাফি
অর্থনীতি
বাণিজ্যঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির চুক্তি সই

আগামী পাঁচ বছরে ৭ লাখ টন করে গম আমদানির জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যঘাটতি কমাতে সরকারিভাবে এ গম আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রবিবার (২০ জুলাই) বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এই সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়।
সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, এ সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও আমেরিকার মধ্যে আস্থা এবং পারস্পরিক বাণিজ্য সহযোগিতার আরও বিস্তৃত ক্ষেত্র তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে।
জানা গেছে, আগামী পাঁচ বছর প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বছরে সাত লাখ টন উচ্চমানের গম আমদানি করা হবে।
আমদানির বিষয়ে এ সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেফ কে সওয়ার স্বাক্ষর করেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসানের সভাপতিত্বে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। এ সময় বাংলাদেশ নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূত ট্র্যাসি অ্যান জ্যাকবসন, বাণিজ্য সচিবসহ উভয় পক্ষের সংশ্লিষ্ট ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থনীতি
বিনিয়োগ সম্ভাবনা প্রসারে চীন সফরে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল

বাংলাদেশে বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণ ও সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল চীনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে।
বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত এই দলে রয়েছেন বিডা, বেজার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং এইচএসবিসি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ ও সিটি ব্যাংক এনএ-এর প্রতিনিধিরা।
রবিবার (২০ জুলাই) বিডার জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মণ্ডল এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ২০ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত চলা এই সফরে দলটি সাংহাই ও গুয়াংজুতে একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেবে। আগামী ২১ জুলাই সাংহাইয়ে বিডা ও বাংলাদেশ দূতাবাসের যৌথ আয়োজনে বিনিয়োগ সেমিনার আয়োজন করবে।
সেমিনারে ইলেকট্রনিক্স, টেক্সটাইল, কৃষি ব্যবসা, বায়োটেকনোলজি, ফার্মাসিউটিক্যালস ও মেডিকেল ডিভাইস খাতের ১০০টিরও বেশি চীনা কোম্পানি অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ সফর সম্পর্কে বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, আমাদের এই সফর ঘিরে যে আগ্রহ দেখা দিয়েছে, তাতে আমরা অত্যন্ত উৎসাহিত। আমরা চীনা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার প্রত্যাশায় রয়েছি এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় সব তথ্য ও সহায়তা করব।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সফর বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। এ ধরনের উচ্চপর্যায়ের আলোচনা শিল্পখাতে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অর্থনীতি
বাণিজ্যঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির চুক্তি আজ

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ব্যবধান কমে আসুক—বাংলাদেশ সরকারও তা চায়। কীভাবে এ ব্যবধান কমিয়ে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি বাড়ানো যায়, সে জন্যই মার্কিন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তার অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকারিভাবে গম আমদানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এত দিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আসত সাহায্য হিসেবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির জন্য উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে আজ রোববার। বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে খাদ্য অধিদপ্তর এবং ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচারের (ইউএসডিএ) পক্ষে ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েটসের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা সমঝোতা স্মারকে সই করবেন।
সূত্রগুলো জানায়, সরকার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরাসরি তিন লাখ টন গম আমদানি করবে। প্রতি টনে ২০ থেকে ২৫ মার্কিন ডলার বেশি দিয়ে হলেও এ গম যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হবে। তবে এ দফায় তিন লাখ টনের এমওইউ হচ্ছে না, হচ্ছে ২ লাখ ২০ টনের। প্রতি লটে বা কনসাইনমেন্টে ১ লাখ ১০ হাজার টন করে গম আসবে।
এবিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, তিন উদ্দেশ্য সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠকগুলো চলছে। উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি, বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠন (অ্যাডভোকেসি) এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি কমানো।
সপ্তাহব্যাপী চলা বৈঠকগুলোর মধ্যে শেষটি হতে যাচ্ছে ২২ জুলাই, মঙ্গলবার। এটি হবে আমেরিকান অ্যাপারেলস অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের (এএএফএ) সঙ্গে। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ও জুতা আমদানিকারক কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে এই সংস্থা।
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি শেভরন, এক্সিলারেট এনার্জি এবং ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েটস, ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (ইউএসএসইসি) ও ইউএস কটন অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে এরই মধ্যে অনলাইনে বৈঠক করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক হার কমিয়ে আনার ব্যাপারে দুই দফা আলোচনা চললেও এখন পর্যন্ত কোনো ফয়সালা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৮ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো চিঠির ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১ আগস্ট নতুন হার কার্যকর হলে বিদ্যমান ১৫ শতাংশের সঙ্গে নতুন হার যোগ হয়ে মোট শুল্কহার দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে।
এ হার কমিয়ে আনার ব্যাপারে আরেক দফা আলোচনা করতে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে একটি দল যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, তাঁরা যাচ্ছেন। তবে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ গতকাল শনিবার পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, পাল্টা শুল্কের হার কমিয়ে আনার ব্যাপারে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনার তারিখের জন্য আজ রোববার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ই-মেইল পাঠিয়ে অনুরোধ করা হবে।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ব্যবধান বরাবরই বাংলাদেশের পক্ষে, যা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অসন্তুষ্টি রয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, গত জুন মাসে শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ৮৭৬ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। এক বছর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ৭৬৮ কোটি ডলারের পণ্য। তার বিপরীতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ দেশটি থেকে আমদানি করেছে ২৫০ কোটি ডলারের পণ্য। অথচ এক বছর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি করেছিল ২৬২ কোটি ডলারের পণ্য। যুক্তরাষ্ট্র থেকে একক পণ্য হিসেবে সবচেয়ে বেশি আমদানি করা হয় স্ক্র্যাপ লোহা বা লোহার টুকরা। আর দেশটিতে একক পণ্য হিসেবে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করা হয় তৈরি পোশাক।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, গমের পাশাপাশি উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ, ভোজ্যতেল, তুলা, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ইত্যাদি আমদানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনবে বাংলাদেশ, যা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যঘাটতি কমাতে বাংলাদেশ আগে থেকেই ১৯০টি পণ্যের শুল্কহার শূন্য রেখেছে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট করার সময় আরও ১০০ পণ্যকে এই তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। যদিও এ সুবিধা শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, অন্য দেশও পাবে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধি অনুযায়ী, নির্দিষ্ট কোনো দেশের নির্দিষ্ট কোনো পণ্যের ওপর শুল্ক কমানো যায় না। শুল্ক কমাতে হয় পণ্যের ওপর। কেউ যদি শুধু একটি দেশের কোনো পণ্যের ওপর শুল্ক কমায়, তাহলে অন্য কোনো দেশ ডব্লিউটিওর কাছে অভিযোগ করতে পারে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আমার দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। বাণিজ্য কৌশল যেন এক দেশমুখী না হয়ে যায়। কারণ, রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি অন্য অংশীদারদেরও অবদান কম নয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করে যে বাণিজ্য চাপ দেওয়া হচ্ছে, ডব্লিউটিওর ভূমিকা সেখানে হতাশাজনক।’
ডলারসংকটের এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চ দামে গম আমদানি, প্রতিযোগিতার বাইরে গিয়ে অন্য পণ্য আমদানির উদ্যোগ এবং আপাতত চাহিদা না থাকলেও উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ আমদানির কথা যে শোনা যাচ্ছে, এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, দর-কষাকষি পর্যায়ে যেটুকু অঙ্গীকার করা দরকার, সেটুকুই করতে হবে। চুক্তি যদি দীর্ঘমেয়াদি হয়, তা বাংলাদেশের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে ঝুঁকিপূর্ণ হবে।