অর্থনীতি
বিমা উন্নয়ন প্রকল্পের ৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে পাচার করলেন নাফিসা

সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের মেয়ে নাফিসা কামালের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে স্মার্ট টেকনোলজিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিমা উন্নয়ন প্রকল্পের ৬৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকা) হাতিয়ে নিয়ে পাচার করেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) প্রযুক্তিগত উন্নয়নের প্রায় ১০টি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল সরকার। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পেয়েছিল নাফিসা কামালের এনকে সফট, স্মার্ট টেকনোলজি, চীনের সিনোসফট, সিএনএস, ইএসএল, শামীম আহসান ই-জেনারেশন। নাফিসা কামালের সঙ্গে স্মার্ট টেকনোলজির সম্পর্কের কারণে এসব প্রকল্পের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারেনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। অর্থমন্ত্রীর মেয়ের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে তখন মুখ খোলার সাহস পাননি প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুজ্জামান। তিনিও কাজ করেছেন সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে।
প্রকল্পের নথি থেকে পাওয়া তথ্যমতে, যেসব প্রতিষ্ঠান বিমা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পেয়েছে সবগুলোতে অর্থমন্ত্রীর মেয়ের মালিকানা রয়েছে। ফলে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলো খুব সহজে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রকল্পগুলোর অনুমোদন পেয়েছে। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমিতে একটি গবেষণা কেন্দ্র ও সার্ভার রুম উন্নয়নে ২০২৩ সালের ২২ মে ১ দশমিক ২১ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি শামীম আহসানের ই-জেনারেশন এবং এনকে সফটের চুক্তি অনুমোদন করেন প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুজ্জামান। ডলারের পাশাপাশি ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকাও বরাদ্দ দেওয়া হয়। মিলিয়ন ডলারের গবেষণা কেন্দ্রের খোঁজে মহাখালীতে ইন্স্যুরেন্স একাডেমিতে গিয়ে কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি।
স্মার্ট টেকনোলজির আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ
২০২২ সালের ৩০ মার্চ আইটি অ্যান্ড সাপোর্টিং নেটওয়ার্ক ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিস্টেম, সার্ভার ও স্টোরেজ সরবরাহের জন্য দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা (এল-ও) হলেও ১০ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলারের কাজ দেওয়া হয় স্মার্ট টেকনোলজিকে। আওয়ামী লীগের প্রশ্রয়ে গড়ে ওঠা স্মার্ট টেকনোলজিকে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অতিরিক্ত আরও ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন কামরুজ্জামান।
কাজ না করেই টাকা তুলে নিয়েছে স্মার্ট টেকনোলজি
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ), সাধারণ বিমা করপোরেশন এবং জীবন বিমা করপোরেশনের আইটি সাপোর্টিং পাওয়ার ইনফ্রাস্ট্রাকচারের নামে ৯ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন ডলারের আরও একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দেওয়া হয় স্মার্ট টেকনোলজিকে। এ প্রকল্পের সর্বনিম্ন দ্বিতীয় দরদাতা (এল-২) ছিল স্মার্ট টেকনোলজি।
জানা গেছে, এই প্রকল্পের ২০ শতাংশ কাজও করেনি অথচ বরাদ্দের পুরো অর্থ তুলে নিয়েছে স্মার্ট টেকনোলজি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ সময়ে গত ২০ জুন তাড়াহুড়ো করে স্মার্ট টেকনোলজির ঠিকানায় এনকে সফট এবং সিনোসফটের জয়েন্ট ভেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ৪ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন ডলার ছাড় করে নাফিসা কামালের নিয়ন্ত্রিত প্রকল্প পরিচালক। ডলারের পাশাপাশি অতিরিক্ত ২ কোটি ৩১ লাখ টাকাও বরাদ্দ দেওয়া হয় এ প্রতিষ্ঠানকে।
চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোসফটকে প্রকল্পের ওয়েবসাইট, কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট এবং কল সেন্টার উন্নয়নের জন্য ১১ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলার ছাড় করা হয় ২০২২ সালের ২১ আগস্ট। বিমা ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার উন্নয়নের জন্য একই দিন আলাদা চিঠিতে চীনের সিনোসফট, রেজটেককে দেওয়া হয় ৯ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালের ৩১ মে আরেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমকে (সিএনএস) একটি এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ইআরপি) সফটওয়্যার ও ইমেইল ব্যবস্থাপনার জন্য ২৩ কোটি ৪ লাখ টাকা দেওয়া হয়। প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানের আসল লাইসেন্স দেয়নি সিএনএস। তার এক সপ্তাহ আগে ২৪ মে ভারতের জেরক্স ইন্ডিয়া এবং আইওই বাংলাদেশ নামে প্রতিষ্ঠানে জয়েন্ট ভেঞ্চারকে ডকুমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সরবরাহের জন্য ৩ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি অনুমোদন করা হয়। এই ধাপে ১৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকার অতিরিক্ত বরাদ্দ পায় সিন্ডিকেটটি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিমা প্রকল্পের এই অর্থ পুঁজিবাজারভুক্ত ই-জেনারেশনে বিনিয়োগ করেছেন সালমান এফ রহমানের আশীর্বাদপুষ্ট শামীম আহসান। যিনি বেসিসের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালকও হয়েছিলেন।
প্রকল্পের নথি থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর নাফিসা কামালের এনকে সলিউশনস, এক্সপ্রেস সিস্টেমস এবং আসপায়ার টেক সার্ভিসেসের জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠানকে ২৮ দিনের মধ্যে সাইবার সিকিউরিটি, রানসমওয়্যার এবং এন্ডপয়েন্ট পণ্য সরবরাহের জন্য ১ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি অনুমোদন করেন প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুজ্জামান। প্রকল্পের এ ধাপে, ডলারের পাশাপাশি বাংলাদেশি টাকায় ৫৮ লাখ ৬১ হাজার টাকা আলাদাভাবে বরাদ্দ পায় নাফিসা কামালের সিন্ডিকেট।
কাগজপত্রে সংখ্যাটা কম পাওয়া গেলেও অনুসন্ধান বলছে, এ প্রকল্প থেকে ৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে স্মার্ট টেকনোলজি এবং নাফিসা কামালের এনকে সফট। আইডিআরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিন বছরের জন্য বিমা উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হলেও আর্থিক সুরক্ষা খাতের অবস্থা আগের মতোই রয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সপরিবারে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমিয়েছেন লোটাস কামাল এবং তার মেয়ে নাফিসা কামাল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) এক সাবেক সভাপতি বলেন, বিমা উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পের অগ্রগতি না হলেও অর্থ তুলে নেওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। আরেকটা বিষয় হলো এখানে কয়েকটি বিদেশি সফটওয়্যার কোম্পানির অংশগ্রহণ। ফলে বিদেশের টাকা বিদেশেই চলে গেছে। বিমা উন্নয়নে প্রযুক্তিগত সাপোর্ট সফটওয়্যার উন্নয়নের কাজ দেশি প্রতিষ্ঠান করলে ৩০ কোটি টাকা সমমানের ডলার সাশ্রয় হতো বলে মনে করেন তিনি।
সার্বিক বিষয়ে নাফিসা কামাল এবং স্মার্ট টেকনোলজিসের চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলামের বক্তব্য জানার চেষ্টা করলে তারা মোবাইল ফোনের কল রিসিভ করেননি। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমি, সাধারণ বিমা করপোরেশন এবং জীবন বিমা করপোরেশনের পেশাদারিত্ব এবং প্রযুক্তিগতভাবে আরও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশের বিমা খাত উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয় বিশ্বব্যাংক।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
বিকেএমইএর নতুন সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম

বিকেএমইএ পরিচালনা পর্ষদের ২০২৫-২৭ মেয়াদে অফিস বেয়ারার্স পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ হাতেম। নির্বাহী সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ফজলে শামীম এহসান। এছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে অমল পোদ্দার, সহ-সভাপতি (অর্থ) পদে মোরশেদ সারোয়ার এবং পাঁচজন সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) নারায়ণগঞ্জে বিকেএমইএ’র প্রধান কার্যালয়ে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে নির্বাচন বোর্ড কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দেন প্রার্থীরা। এতে দেখা যায়- সভাপতি, নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি (অর্থ) ও পাঁচজন সহ-সভাপতি মিলিয়ে মোট নয়টি অফিস বেয়ারার পদের জন্য নয়টি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। নির্বাচন বোর্ড তা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে।
যেহেতু নয়টি পদের বিপরীতে নয়টিই মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে, সেহেতু আলাদা করে নির্বাচনের প্রয়োজন হয়নি। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সব পদের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। পাঁচজন সহ-সভাপতির মধ্যে রয়েছেন মো. সামসুজ্জামান, গাওহার সিরাজ জামিল (চট্টগ্রাম), আশিকুর রহমান, ফকির কামরুজ্জামান নাহিদ এবং মোহাম্মদ রাশেদ।
এছাড়া আগেই পরিচালক পদে নির্বাচিত হয়েছেন ২৬ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- মনসুর আহমেদ, আহসান খান চৌধুরী, বেলায়েত হোসেন, ইমরান কাদের তুর্য, খন্দকার সাইফুল ইসলাম, এম. ইসফাক আহসান, আহেমদ নূর ফয়সাল, মো. আব্দুল হান্নান, মোহাম্মদ জাকারিয়া ওয়াহিদ, মহসিন রাব্বানি, শাহরিয়ার সাইদ, মোহাম্মদ শামসুল আজম, আব্দুল বারেক, মো. জামাল উদ্দিন মিয়া, নন্দ দুলাল সাহা, রতন কুমার সাহা, মো. মনিরুজ্জামান, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মো. ইয়াসিন, রাজীব চৌধুরী, ফৌজুল ইমরান খান, মোহাম্মদ সেলিম, মিনহাজুল হক, মামুনুর রশিদ, রাকিব সোবহান মিয়া, সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বেড়েছে ডিমের দাম, কমেছে মুরগির

এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে ডিমের দাম ডজনে প্রায় ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। তবে এসময়ে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। এছাড়া বেশির ভাগ সবজির দামে চড়াভাব এখনো কাটেনি। তবে কিছু কিছু সবজি আগের চেয়ে তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার (১৬ মে) সকালে রাজধানী রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও তালতলা ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
দীর্ঘদিন বাজারে প্রোটিনের সস্তা উৎস হিসেবে পরিচিত ডিমের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে ছিল। এখন দাম বাড়ায় তাদের কেউ কেউ উষ্মা প্রকাশ করছেন। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এতদিন ডিম বিক্রি করে লোকসান করেছেন খামারিরা। এখন দাম কিছুটা বাড়লে সেটি খামারিদের জন্য ন্যায্য হবে।
মালিবাগ বাজারের পাইকারি ডিম বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, বর্ষার এ মৌসুমে অন্যান্য বছর ডিমের দাম আরও বেশি থাকতো। এ বছর অনেকদিন ধরে ডিমের দাম কম, খামারিরা লোকসান গুনছেন। অনেক খামার বন্ধও হয়ে গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় বাজারগুলোতে এখন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা ডজন হিসাবে। পাড়া-মহল্লায় প্রতি ডজন ডিম ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেখানে গত সপ্তাহেও এ দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা।
তবে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বাজারে এখন ব্রয়লার ১৬০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে কিছু কিছু দোকানে গরুর মাংস কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। আগে ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন ৭৮০ টাকা দাম হাঁকাচ্ছেন অনেক বিক্রেতা। তবে দরদাম করে আগের দামে কেনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
পুরোনো মিনিকেট চাল বাড়তি দামে বিক্রি হলেও কিছুটা কমেছে বাজারে নতুন আসা মিনিকেট। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পুরোনো মিনিকেট চাল যেখানে সর্বনিম্ন ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে নতুন মিনিকেটের কেজি ৭০ টাকা। তবে ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পুরোনো মিনিকেট চাল এখনো সর্বোচ্চ ৮৫-৮৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
বাজারে এখন গ্রীষ্মের পটোল-ঢ্যাঁড়সের মতো সবজিগুলো অন্যসময়ের তুলনায় কম দামে কেনা যাচ্ছে। এসব সবজি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০-৬০ টাকায়। এছাড়া চিচিঙ্গা, ঝিঙে, কাকরোল, উস্তা, বেগুন ও বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।
সবজি বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে, দামও কমছে। তবে বাজার এখনো ওঠানামা করছে। বৃষ্টিতে সরবরাহ কমলে দাম বাড়ছে। এছাড়া প্রতিদিনই দামে কিছুটা হেরফের হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সর্বজনীন পেনশনের চাঁদার টাকা নিতে ১২ ব্যাংকের সঙ্গে এমওইউ

সর্বজনীন পেনশন স্কিমগুলোর রেজিস্ট্রেশন ও চাঁদার টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যে ১২টি ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। এর আগে আরও ১২টি ব্যাংকের সঙ্গে এমওইউ সই করা হয়। ফলে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের চাঁদার টাকা সংগ্রহে মোট ২৪টি ব্যাংকের সঙ্গে এমওইউর সই হলো।
বৃহস্পতিবার নতুন করে ১২টি ব্যাংকের সঙ্গে এমওইউ সই করার তথ্য জানিয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। পর্যায়ক্রমে দেশীয় মালিকানাধীন সব ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
নতুন করে এমওইউ সই করা ১২টি ব্যাংক হলো- এবি ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আইএফআইসি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক এবং ট্রাস্ট ব্যাংক।
সচিবালয়ে অর্থ বিভাগ সভা কক্ষে এক অনুষ্ঠানে ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও উপস্থিত থেকে নিজ নিজ ব্যাংকের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে সই করেন। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পক্ষে নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দীন খান সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
তিনদিনের ব্যবধানে ফের কমলো স্বর্ণের দাম

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ৩ হাজার ৪৫২ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৬৫ হাজার ৭৩৪ টাকা নির্ধারণ করেছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (১৬ মে) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৭৩৪ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৫৮ হাজার ১৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬০৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১২ হাজার ৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এর আগে, সবশেষ গত ১৩ মে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৫৬৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৬৯ হাজার ১৮৬ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৮ হাজার ৪২৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৪ হাজার ৪৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল গত ১৪ মে থেকে।
এ নিয়ে চলতি বছর ৩৪ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ২২ বার, আর কমেছে মাত্র ১২ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।
স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮১১ টাকায়।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭২৬ টাকায়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সিকদার গ্রুপের রন হকসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

করোনাকালীন সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের ৪০৪ কোটি টাকা উত্তোলন করে অর্থ আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে সিকদার পরিবারের চার সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৭ মে) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপপরিচালক রাম প্রসাদ মন্ডল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় সিকদার পরিবারের মনোয়ারা সিকদার, পারভীন হক সিকদার, রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদারকে আসামি করা হয়েছে। যারা ওই সময় ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন।
এছাড়া সাদ মুসা গ্রুপের কর্ণধার মো. মোহসিন, রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইলের এমডি মঈন উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক এভিপি মো. একরামুল হক, এসইভিপি ও ম্যানেজার মো. হাবিবুর রহমান, সাবেক ভিপি মোহাম্মদ আবু রাশেদ নোয়াব, সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম বুলবুল, সাবেক এমডি চৌধুরী মোশতাক আহমেদ ওরফে সিএম আহমেদ, সাবেক পরিচালক খলিলুর রহমান, পরিচালক জাকারিয়া তাহের, সাবেক পরিচালক মাবরুর হোসেন সাবেক পরিচালক মো. নায়মুজ্জামান ভুইয়া মুক্তা ও পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাদ মুসা হোমটেন্দ্র অ্যান্ড ফ্লথিং লিমিটেডের মালিক ও সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ মোহসিন ও রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের কর্ণধার মঈন উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া কাগজপত্র এবং অনুমোদনবিহীন প্রক্রিয়ায় প্রণোদনার ঋণ নেন। ব্যাংকের শাখা ও প্রধান কার্যালয়ের তৎকালীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পরিচালকেরা প্রকৃত আর্থিক প্রয়োজন যাচাই না করেই করোনাকালীন সেটিমুলাস প্যাকেজের ঋণসহ রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডকে ৪০৪ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেন। এ অর্থ একাধিক লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর, ফ্লোর ক্রয়, আগের ঋণ পরিশোধ ও ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারার পাশাপাশি দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ১১ মার্চ সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার, তার মা মনোয়ারা সিকদারসহ তাদের পরিবারের ১৪ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
এরআগে ৯ মার্চ রন হক সিকদার, তার মা মনোয়ারা সিকদারসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের ৪২টি বিও হিসাব (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর সিকদার গ্রুপের রন হক, তার মাসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্যের স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত।