জাতীয়
কারাগারে ডিভিশন পাচ্ছেন যারা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মোট ৩৭ জন এমপি-মন্ত্রী গ্রেপ্তার হয়ে দেশের বিভিন্ন কারাগারে রয়েছেন। এদের মধ্যে নয়জনকে কারাগারে ডিভিশন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বকশিবাজারে অবস্থিত কারা অধিদপ্তরে কারা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন গৃহীত ব্যবস্থাদি সম্পর্কিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।
এক প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যেসব বন্দিরা সাজাভোগ করেছেন, তারা রেয়াত পেতে পেতে মুক্তি পেতে পারেন। যখন তারা মুক্তির আওতায় চলে আসেন, তখন তারা মুক্তি পেতে পারেন। যারা মুক্তির আওতায় চলে আসেন, তাদের বিষয়ে প্রস্তাবনা আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠাই। পরবর্তীতে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বেটিংয়ের পর চূড়ান্তভাবে যদি মাফ করতে হয় সেটি রাষ্ট্রপতি করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে মাফ করার অধিকার রাষ্ট্রপতির। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী কিংবা প্রধান উপদেষ্টাও পারেন। এ রকম অনেক বন্দিদের বিষয়ে প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো আছে। এই বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করছি। এই বিষয়ে অতি শিগগিরই একটি বৈঠকের প্রস্তাবনা আছে। যারা অক্ষম চলাফেরা করতে পারে না, অথবা যারা রেয়াত পাওয়ার যোগ্য, তাদের মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
পলাতক বন্দিদের মধ্যে জঙ্গি কতজন রয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত নয়জন জঙ্গি পালিয়েছে। এছাড়া, বিচারাধীন মামলার অনেক জঙ্গি পালিয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট ৭০ জন জঙ্গি পলাতক রয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক বন্দিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি পালিয়ে ছিল মোট ৯৮ জন। এদের মধ্যে অনেককে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বর্তমানে দেশের সব কারাগারের ধারণক্ষমতা কত ও বর্তমানে কতজন বন্দি রয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন বলেন, বর্তমানে দেশের সব কারাগারের ধারণক্ষমতা ৪২ হাজারেরও কিছু বেশি। এই মুহূর্তে আমাদের কারাগারে আছে ৫০ হাজারেরও বেশি বন্দি।
কারাগারে হামলার সময় কত আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারাগার থেকে ৯৪টি অস্ত্র লুট হয়ে গিয়েছিল। এখনো উদ্ধার করা বাকি আছে ২৯টি অস্ত্র। অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মোট সংখ্যা ৬৫টি।
কারাগারে নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রমের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়ম-বহির্ভূত কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে আমরা চিহ্নিত করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলমান রয়েছে। যেসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মোটা দাগে বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে আমি অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতা নিচ্ছি। এ বিষয়ে কিছু ব্যবস্থা শিগগিরই দেখা যাবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে সৎ অফিসারদের আমরা পদায়ন করছি। লম্বা সময় ধরে কিছু লোক একই জায়গায় কাজ করছিল, তাদের সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
৫ আগস্টের পর এখন পর্যন্ত কারাগার থেকে সাধারণ মানুষসহ কতজন শীর্ষ সন্ত্রাসী ও জঙ্গি বের হয়ে এসেছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এ রকম আলোচিত মোট ৪৩ জন বন্দি এখন পর্যন্ত কারাগার থেকে জামিন পেয়ে মুক্ত হয়েছেন।
বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর কিছু কিছু কারাগারে হামলা হয়। এ সময় সাধারণ মানুষদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যায়। এরা আসলে কারা ছিল। কারা কর্তৃপক্ষ তাদের চিহ্নিত করেছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, তাদের শনাক্ত করার জন্য আমরা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সাহায্য নিচ্ছি। ৫ আগস্টের পরে যারা হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের চিহ্নিত করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে অনেক সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতেও হামলা হয়েছিল। কারাগার যেহেতু একটি ক্ষোভের জায়গা ছিল, এরই বহিঃপ্রকাশ এসব হামলা।
তিনি বলেন, যেসব কারাগারে বিশৃঙ্খলা হয়েছিল, আমরা প্রতিটিতেই মামলা করেছি। মামলায় আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে আসামি করতে পারিনি। কারণ পরিস্থিতি যেহেতু ভিন্ন ছিল। অজ্ঞাতনামা আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে মূলত মামলা করা হয়েছে। আটটি কারাগারে বিশৃঙ্খলার দায়ে মোট আটটি মামলা দায়ের হয়েছে। আমাদের পাঁচটি কারাগার থেকে বন্দিরা পালিয়েছে, সে সংক্রান্ত পাঁচটি মামলা হয়েছে। তবে, সবমিলিয়ে আমাদের ১৭টি কারাগারে হামলার ঘটনা ঘটেছিল।
কারাগারের কর্মকর্তাদের ডোপ টেস্টের বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত আছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যোগদান করার পর মাদকের বিষয়ে ব্যাপক অভিযোগ পাচ্ছি। আসলে এই বিষয়ে আমরা শঙ্কিত। মাদক সংক্রান্ত অভিযোগ বন্দিদের বিষয়ে যেমন পাচ্ছি, তেমনি কারারক্ষী এবং কারা কর্মকর্তাদের বিষয়েও পাচ্ছি। এই বিষয়ে আমাদের সবচেয়ে আশঙ্কার জায়গাটি হলো যে, এটিকে আমরা খুঁজে কীভাবে বের করব। কারাগারে যেন মাদক না ঢুকতে পারে, সেই বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। মাদকাসক্ত কেউ কারা বিভাগে চাকরিরত অবস্থায় থাকতে পারবে না।
কারাগারে নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ বিষয়ে আমরাও আমাদের মতো করে তদন্ত করছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হলে এই বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
গত ১৫ বছরে যে পরিমাণ কাস্টডিয়ালের মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন বলেন, এটা আসলে আইনের একটা বিষয়। রুটিন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি কোনো জায়গায় সন্দেহ হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে…। আর কেউ যদি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তাহলে তাদের আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করব।
জুলাই ও আগস্টে আন্দোলন চলাকালে যারা গ্রেপ্তার হয়েছিল, তাদের মধ্যে কতজন বন্দি এখনো কারাগারে আছে, আর কতজন জামিন পেয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আন্দোলন চলার সময় যেই ধরনের মামলা হয়েছিল এবং গ্রেপ্তার হয়েছিল এ ধরনের বন্দি এখন আমাদের কাছে নেই। সবাই জামিন প্রাপ্ত হয়ে গেছেন এবং জামিনে বের হয়েছেন। আন্দোলনের কতজন বন্দি জামিনে বের হয়ে গেছে তার সঠিক সংখ্যাটা বলা মুশকিল। তবে, সেই সময় আমাদের বন্দি সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার, এখন তা ৫৫ হাজার। তাহলে বলা যায় ওই সময় এসব মামলায় গ্রেপ্তার প্রায় ১৫ হাজার বন্দি ধীরে ধীরে জামিন পেয়ে বের হয়েছেন।
বিদেশি বন্দিদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সাজা ভোগ হওয়ার পরও তাদের অনেকে জেলে থেকে যায়। এখন পর্যন্ত কতজন বিদেশি বন্দি আছে এবং তাদের বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বিদেশি বন্দিদের সাজা শেষ হয়ে গেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পরে আমরা তাদের ডি-পোর্ট করি। এখন আমাদের কারাগারে মোট ১৪৩ জন বিদেশি বন্দি রয়েছে। আমরা যদি ক্লিয়ারেন্স পাই, তাহলে আমরা তাদের নিজ নিজ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করব।
গত ৫ আগস্টের পরে যেসব মন্ত্রী এবং এমপিরা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তারা কারাগারে কোনো ডিভিশন পাচ্ছেন কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সরকারি গেজেটেড অফিসাররা কারাগারে আসলে ডিভিশন পেয়ে যান। বাকি যারা বিশিষ্ট ব্যক্তি বা এমপি-মন্ত্রী আছেন, তারা আবেদন করবেন অথবা এ বিষয়ে আদালত বললে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আর যাদের বিষয়ে আদালত বলবে না, তারা যদি আবেদন করেন, তখন সে আবেদনটি আমরা ডিসির কাছে পাঠাবো। ডিসি যদি অনুমতি দেন তাহলে আমরা তাদের ডিভিশন দিতে পারব। এই প্রেক্ষাপটে আমাদের কাছে বিশেষ বন্দি (এমপি-মন্ত্রী) মোট ৩৭ জন… তাদের মধ্যে নয়জন ডিভিশন পাচ্ছেন, আর বাকিদের বিষয় পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

জাতীয়
দেশে ১৭ লাখ শিশু শ্রমিক, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ১২ লাখ

বাংলাদেশে এখনও ১৭ লাখ শিশু শ্রমিক রয়েছে, যাদের মধ্যে ১২ লাখ ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। এটি জাতীয় অগ্রগতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, শিশু শ্রম শুধু শিশুর ভবিষ্যৎই নষ্ট করে না, পুরো জাতির টেকসই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে।
সোমবার (১৪ জুলাই) বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন কর্তৃক আয়োজিত ‘শিশু শ্রম মুক্ত বাংলাদেশ গঠনে আমাদের অঙ্গীকার’ বিষয়ক এক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এছাড়া আর এক অনুষ্ঠানে শ্রম সচিব বলেন, কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা ও সামাজিক সুরক্ষার মূল ভিত্তি হলো মাতৃত্ব সুরক্ষা। বাংলাদেশে মাতৃত্বকালীন সুবিধার আইনি কাঠামো থাকলেও বাস্তবায়নে বেশ কিছু ঘাটতি রয়েছে। ‘বাংলাদেশে মাতৃত্বকালীন বিমা প্রকল্পের রোডম্যাপ তৈরি’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী উপলক্ষ্যে আয়োজন করা এই অনুষ্ঠানেও প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
এই কর্মশালার উদ্দেশ্য হলো মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক শ্রম মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করা। শ্রম সচিব জানান, কর্মশালায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন বিমা চালুর জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন, মাতৃত্বকালীন বিমা প্রবর্তনের মাধ্যমে নারী শ্রমিকদের সুরক্ষা দেওয়া এবং কর্মক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। এই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা মাতৃত্বকালীন সুবিধার বর্তমান অবস্থা বিশ্লেষণ করে একটি টেকসই রোডম্যাপ প্রণয়নে মতামত দেন।
বাংলাদেশে আরএমজি ও অন্যান্যখাতে কর্মরত নারী শ্রমিকদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি ও স্বাস্থ্যসুবিধা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কর্মশালার সুপারিশমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে মাতৃত্ব সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।
এদিকে ‘শিশু শ্রম মুক্ত বাংলাদেশ গঠনে আমাদের অঙ্গিকার’ বিষয়ক সংলাপে সচিব বলেন, শিশু শ্রম শুধু শিশুর ভবিষ্যৎই নষ্ট করে না, পুরো জাতির টেকসই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। বাংলাদেশে এখনও ১৭ লাখ শিশু শ্রমিক রয়েছে, যাদের মধ্যে ১২ লাখ ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। এটি জাতীয় অগ্রগতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস (বিবিএস)-২০২২-এর তথ্য উল্লেখ করে শ্রম সচিব বলেন, যে বয়সে শিশুদের স্কুলে থাকার কথা, সেখানে তারা লেদ মেশিন, হোটেল কিংবা গ্যারেজে কাজ করছে। দারিদ্র্য ও অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবই এটির মূল কারণ।
তিনি সরকারি-বেসরকারি সমন্বয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিশুশ্রম নিরসনে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এ বিষয়ে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, স্থানীয় প্রশাসন এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগ জোরদার করা হবে বলেও জানান তিনি।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-৮.৭ অর্জনে শিশুশ্রম নির্মূলকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে শ্রম সচিব বলেন, শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের শিক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
জাতীয়
২০২৬ সালের হজে অংশ নিতে এজেন্সিগুলোর কাছে আবেদন আহ্বান

২০২৬ সালের হজ কার্যক্রমের জন্য সৌদি সরকার এরইমধ্যে রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এ কার্যক্রমে অংশ নিতে অনুমোদিত এজেন্সিগুলোর কাছে আবেদন চেয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১৪ জুলাই) এজেন্সিগুলোকে আবেদন দাখিলের জন্য অনুরোধ জানিয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ২০২৬ সালের হজ কার্যক্রমের জন্য সৌদি সরকার এরইমধ্যে রোডম্যাপ বা টাইমলাইন প্রকাশ করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত যেসব হজ এজেন্সি ২০২৬ সালের হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক সেসব হজ এজেন্সির স্বত্বাধিকারী বা ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছ থেকে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তুত করা নির্ধারিত আবেদন ফরমে আবেদন করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
সৌদি সরকারের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী বছর হজে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি হজযাত্রীদের চলতি বছরের ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন শেষ করতে হবে। এরপর সৌদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের হজচুক্তি হবে ৯ অক্টোবর। আগামী ১০ জুলাই হজের কোটা ঘোষণা করবে সৌদি সরকার।
জাতীয়
শুল্কনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা উৎসাহব্যঞ্জক: বাণিজ্য উপদেষ্টা

শুল্কনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা উৎসাহব্যঞ্জক বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, আমরা দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শেষ করে আবার প্রস্তুতি নিচ্ছি তৃতীয় রাউন্ডের আলোচনার জন্য। এরপর আমরা যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত যাব। আমরা আশা করছি একটা ভালো আউটকাম আসবে। আমাদের আলোচনাগুলো উৎসাহব্যঞ্জক।
সোমবার (১৪ জুলাই) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ অ্যাগ্রিমেন্টের খসড়া বিষয়ক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমরা গতকাল (রোববার) যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরেছি আমাদের দ্বিতীয় রাউন্ডের আলোচনা শেষ করে। আলোচনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা আলোচনা শেষ করে আবার প্রস্তুতি নিচ্ছি তৃতীয় রাউন্ডের আলোচনার জন্য। এরপর আমরা যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত যাব। আমরা আশা করছি একটা ভালো আউটকাম আসবে।
তিনি বলেন, আমাদের আলোচনাগুলো উৎসাহব্যঞ্জক। আলোচনাটা যথেষ্ট এনগেজিং ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও আমার বৈঠক হয়েছে। দফাওয়ারি আমাদের সঙ্গে যারা নেগোশিয়েশনে যুক্ত ছিলেন তাদের ৩৫-৪০ জনের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের মধ্যে যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে। আমরা সেখান থেকে বেশকিছু পরামর্শ পেয়েছি। অবশ্য এ পরামর্শগুলো আমরা আমাদের মধ্যেই নির্দিষ্ট রাখব। আমরা আশা করছি এই আলোচনার মাধ্যমে আমাদের জন্য একটি যৌক্তিক শুল্কহার নির্ধারণ করবে রপ্তানির ওপরে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমরা প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা করি। ২০১৫ সাল থেকে আমরা শুল্ক পরিশোধ করে ব্যবসা করছি। আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিজস্ব সক্ষমতার ভিত্তিতে এই ব্যবসা করে থাকে। যদি তুলনামূলকভাবে আমাদের সঙ্গে কোনো বৈষম্যমূলক অবস্থান তৈরি না হয় তাহলে আমাদের ব্যবসায়ীরা সফলতার সঙ্গে ব্যবসা করে যাবে।
যৌক্তিক শুল্কহারের কথা বলা হচ্ছে। আসলে কত শতাংশ শুল্ককে যৌক্তিক মনে করছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শূন্য’।
নেগোশিয়েশনের কোন পর্যায়ে আমরা রয়েছি– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তো আলোচনা করি। আমাদের তো আশা আছে এটাকে (শুল্কহার) শূন্যতে নিয়ে আসা। তবে এ বিষয়ে আমাদের ‘নন ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট’ রয়েছে। সুতরাং অ্যাগ্রিমেন্ট বিষয়ক কোনো প্রশ্নের উত্তর আমরা দেব না।
জাতীয়
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পেলেন শেখ মইনউদ্দিন

রেলপথ মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পেয়েছেন প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন।
রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী শেখ মইনউদ্দিনকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করে সোমবার (১৪ জুলাই) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তিনি এখন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে রেলপথ মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পেলেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে সহায়তা করতে প্রধান উপদেষ্টা গত ৫ মার্চ শেখ মইনউদ্দিনকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় এই মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা দিয়ে নিজের বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেন।
আগের আদেশের মতো রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে সহায়তা করতে শেখ মইনউদ্দিনকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারীর অতিরিক্ত দায়িত্ব এবং এই মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে।
একই সঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছেন মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
জাতীয়
মাদকের সঙ্গে জড়িত গডফাদারদের ধরতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, শুধু বাহক নয়, মাদকের সঙ্গে জড়িত গডফাদারদের ধরতে হবে। মাদক ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের মাধ্যমে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনে।
সোমবার (১৪ জুলাই) কক্সবাজারে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মাদক কারবারিদের ধরে আইনের আওতায় আনা হবে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পাশাপাশি মাদক ঢুকে পড়ছে। মাদক নির্মূলে কক্সবাজারের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন হতে হবে। মাদক নির্মূলে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিকতার পরিবর্তন করে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণ সচেতন হলে মব ভায়োলেন্স হবে না। এ ছাড়া মব ভায়োলেন্স, চাঁদাবাজি গ্রহণের মতো অপরাধ কেউ করলে ক্ষমা করা হবে না। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিয়াম ফাউন্ডেশন আঞ্চলিক কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীরপ্রতীক, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল হাফিজ, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, পুলিশ সুপার সাইফুদ্দিন শাহীন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার, জেলা প্রশাসন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কাফি