জাতীয়
সাত দিনের রিমান্ডে শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু ও শাহরিয়ার কবির

পৃথক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবির, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত ও একাত্তর টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল বাবুর ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্লাহ ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গৃহকর্মী লিজা হত্যার ঘটনায় রাজধানীর রমনা মডেল থানার মামলায় একাত্তর টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বাবু ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এ ছাড়া গণঅভ্যুত্থানে গুলি করে যুবক ফজলুকে হত্যার অভিযোগে ভাষানটেক থানায় করা মামলায় ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এর আগে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) একাত্তর টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল বাবু ও দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তকে ময়মনসিংহ সীমান্ত এলাকা থেকে এবং শাহরিয়ার কবিরকে তার বনানীর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এমআই

জাতীয়
জুলাই শহীদ পরিবারে অনুদানের টাকা বণ্টনে নতুন বিধিমালা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের এককালীন অনুদান ও মাসিক ভাতা বণ্টন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে নতুন বিধিমালা জারি করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। নতুন বিধি অনুযায়ী, আর্থিক সহায়তা শহীদদের স্বামী বা স্ত্রী, সন্তান এবং বাবা-মায়ের মধ্যে সমান তিন ভাগে বণ্টন করা হবে।
সরকারি সহায়তা নিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রায়শই দ্বন্দ্ব ও ঝামেলা তৈরি হওয়ায় সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন বিধিমালা, ২০২৫’ জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সহায়তার অর্থ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে ধর্মীয় উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী অর্থ বণ্টন শুরু হলেও তা নিয়ে আপত্তি ওঠে। কারণ, অনুদান বা ভাতা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ নয়। এ কারণে একটি সুনির্দিষ্ট বিধিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। শহীদ পরিবারকে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা এককালীন অনুদান দেওয়া হচ্ছে এবং মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা পাওয়ার কথা রয়েছে। এ পর্যন্ত ৮৪৪ জন শহীদের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।
বিধিমালা অনুযায়ী, আর্থিক সহায়তা তিন ভাগে ভাগ হবে— এক-তৃতীয়াংশ শহীদের স্বামী বা স্ত্রী, এক-তৃতীয়াংশ সন্তান এবং বাকি এক-তৃতীয়াংশ বাবা-মা পাবেন। যদি কোনো একজন না থাকেন, তবে তার অংশ বাকিদের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হবে। অবিবাহিত শহীদের ক্ষেত্রে তার সহায়তার অর্থ বাবা-মায়ের মধ্যে সমানভাবে বণ্টিত হবে।
এছাড়াও বিধিমালায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে:
ভাতার অবসান: শহীদ পরিবারের কোনো সদস্য মারা গেলে বা শহীদের স্বামী বা স্ত্রী পুনরায় বিবাহ করলে মাসিক ভাতার অংশের অবসান ঘটবে।
আহত জুলাই যোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা: অভ্যুত্থানের সময় আহত কোনো জুলাই যোদ্ধা যদি পরবর্তীতে মারা যান, তবে তাকেও শহীদ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং তার পরিবার শহীদ পরিবারের সব সুবিধা পাবে।
পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ: জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর শহীদ পরিবারের সদস্য ও জুলাই যোদ্ধাদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নেবে।
বিরোধ নিষ্পত্তি: আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন নিয়ে কোনো বিরোধ দেখা দিলে তা নিষ্পত্তির জন্য একটি সালিশ বোর্ড গঠন করা হবে। বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে আপিল করার সুযোগও থাকবে, যেখানে মহাপরিচালকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।
চিকিৎসা সহায়তা: আহত জুলাই যোদ্ধারা সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাবেন।
জাতীয়
বিমানবন্দরে ১৩০ কোটি টাকার কোকেন আটক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এক যাত্রীর কাছ থেকে ৮.৬৬ কেজি বা ১৩০ কোটি টাকার সমপরিমাণ কোকেনসহ এক যাত্রীকে আটক করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দোহা থেকে ঢাকায় আসা কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইট নম্বর QR638-এ সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এক যাত্রী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যাগেজসহ কাস্টমসের গ্রিন চ্যানেলে স্ক্যানিং লাগেজের সঙ্গে মিলিয়ে (যার টোকেন নম্বর: 7IBAHK STUFFLE SEQ NR 264) প্লাস্টিকের ৩টি জার পাওয়া যায় এবং জারের ভিতরে ২২ পিস ডিম্বাকৃতির ফয়েল পেপারে আবদ্ধ কোকেন (মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, এয়ারপোর্ট ইউনিট কর্তৃক প্রাথমিক পরীক্ষায় প্রমাণিত) পাওয়া যায়।
প্রাপ্ত পণ্যের (কোকেন) ওজন আট দশমিক ৬৬ কেজি, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১৩০ কোটি টাকা। কোকেনসহ যাত্রীকে আটক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চোরাচালানের অভিযোগে ফৌজদারি ও কাস্টমস অ্যাক্টের আওতায় বিভাগীয় মামলা দায়েরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেল, এয়ারপোর্ট বি-শিফটের কর্মকর্তা, উপ-পরিদর্শক ও সিপাহিদের তৎপরতায় দেশের অভ্যন্তরে এ বিশাল মাদক চালান প্রবেশ রোধ করা সম্ভব হয়েছে।
কাফি
জাতীয়
সীমানা নির্ধারণ: ঢাকা অঞ্চলের দাবি-আপত্তি শুনছে ইসি

ঢাকা অঞ্চলের খসড়া সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দাবি আপত্তি শুনানি শুরু হয়েছে। এ অঞ্চলের ২৮টি আসনের তিন শতাধিক দাবি আপত্তি আবেদন রয়েছে। এরমধ্যে পক্ষে বিপক্ষে অনেক আবেদনই একই ধরনের; সেক্ষেত্রে তাদের পক্ষে একজন কথা বলতে পারবে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে নির্বাচন কমিশনের এ শুনানিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনসহ চার নির্বাচন কমিশনার এবং ইসি সচিব উপস্থিত রয়েছেন।
নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে শুনানির সময়ে দাবি-আপত্তিকারী বা আবেদনকারীর কৌশলী নির্ধারিত স্থানে দাঁড়িয়ে নিজেদের যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন।
আজ ঢাকা অঞ্চলের দাবি-আপত্তির শুনানি হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ-১, ২, ৩; মুন্সিগঞ্জ ১, ২, ৩; গাজীপুর ১, ২, ৬; নরসিংদী-৩, ৪, ৫, নারায়ণগঞ্জ-৩, ৪, ৫; আড়াইটা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঢাকা-১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ১০, ১৪, ১৫, ১৬, ১৮ ও ১৯ আসনের শুনানি হওয়ার কথা।
গাজীপুরের আসন আগের ও বর্তমান অবস্থান
আসন
ত্রয়োদশ সংসদের প্রস্তাবিত এলাকা
গাজীপুর-১
কালিয়াকৈর উপজেলা; গাজীপুর সিটির ১-১৮ নম্বর ওয়ার্ড
কালিয়াকৈর উপজেলা, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড
গাজীপুর-২
গাজীপুর সিটির ১৯-৩৯ নম্বর ওয়ার্ড; ৪৩-৫৭ নম্বর ওয়ার্ড; গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৩ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড; গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন
গাজীপুর-৩
শ্রীপুর, গাজীপুর সদরের মির্জাপুর, ভাওয়ালগড়, পিরুজালী ইউপি
শ্রীপুর উপজেলা এবং গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর, ভাউয়াল গড় ও পিরুজালী ইউনিয়ন এবং গাজীপুর সেনানিবাস
গাজীপুর-৫
কালীগঞ্জ, গাজীপুর সিটির ৪০-৪২ নম্বর ওয়ার্ড, গাজীপুর সদরের বাড়িয়া ইউপি
কালিগঞ্জ উপজেলা
গাজীপুর-৬
আগে ছিল না
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৪ থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড
আগামীকাল ২৭ আগস্ট রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও সিলেট অঞ্চলের দাবি আপত্তির শুনানি হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পঞ্চগড়-১, ২, রংপুর-১, কুড়িগ্রাম-৪, সিরাজগঞ্জ-২, ৫, ৬, পাবনা-১; আড়াইটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল-৬, জামালপুর-২, কিশোরগঞ্জ-১, সিলেট-১, ফরিদপুর- ১, ৪, মাদারীপুর-২, ৩, শরীয়তপুর-২ ও ৩ আসনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
গত ৩০ জুলাই ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এতে ভোটার সংখ্যার সমতা আনতে গিয়ে বাগেরহাটের আসন চারটি থেকে কমিয়ে তিনটির প্রস্তাব করা হয়। আর গাজীপুর জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে করা হয় ছয়টি। ১০ আগস্টের মধ্যে ৮৩টি সংসদীয় এলাকার সীমানা নিয়ে এক হাজার ৭৬০টি দাবি-আপত্তির আবেদন নির্বাচন কমিশনে জমা হয়। ২৭ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি নিয়ে দাবি-আবেদন নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ করবে ইসি।
জাতীয়
তিন বছরে দারিদ্র্য বেড়ে ২৮ শতাংশ

বাংলাদেশে তিন বছরের ব্যবধানে দারিদ্র্য বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। বর্তমানে দেশে দারিদ্র্যের হার প্রায় ২৮ শতাংশ। ২০২২ সালে এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ
সোমবার (২৫ আগস্ট) বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিশিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) এক গবেষণায় দারিদ্র্য বৃদ্ধির এই চিত্র ওঠে এসেছে। ‘ইকনোমিক ডায়নামিকস অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউজহোল্ড লেবেল ইন মিড ২০২৫’ শীর্ষক গবেষণা ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি মিলনায়তনে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
গত ৮ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে সারাদেশের ৮ হাজার ৬৭টি পরিবারের ৩৩ হাজার ২০৭ জন ব্যক্তির মতামতের ভিত্তিতে গবেষণাটি করা হয়। পিপিআরসি বলেছে, দেশের এখন তিন ধরনের সংকটের প্রভাব চলমান আছে। এগুলো হলো—কোভিড (২০২০-২০২২), মূল্যস্ফীতি ও রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে আর্থ–সামাজিক পরিবর্তন প্রসঙ্গে পিপিআরসি প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের আগস্টের পর ঘুষ কমেছে। গবেষণায় অংশ নেওয়া উত্তর দাতাদের মধ্যে গত বছরের আগস্ট মাসের আগে ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ সেবা নিতে ঘুষ দিয়েছেন। আগস্ট মাসের পর এই হার ৩ দশমিক ৬৯–এ নেমে এসেছে। এখনো সবচেয়ে বেশি ঘুষ দেওয়া হয়েছে সরকারি অফিসে। এর পরে পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের বেশি ঘুষ দিয়েছে মানুষ। এছাড়া পরিবারে আয়ের ৫৫ শতাংশ চলে যায় খাদ্য পণ্য কেনার পেছনে।
অনুষ্ঠানে পুরো পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারও সংগত কারণে ক্ষুদ্র অর্থনীতির তুলনায় সামষ্টিক অর্থনীতিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। অর্থনীতির পরিকল্পনায় জনমুখী দৃষ্টি (পিপলস লেন্স) থাকা খুবই জরুরি হয়ে গেছে। শুধু জিডিপির ওপর আলোচনাটা সীমাবদ্ধ না রেখে আমাদের সমতা, ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীনতা ও নাগরিকের কল্যাণ নিয়ে আলোচনা বাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় পাঁচটি নতুন ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্র আমাদের বিশেষভাবে মনে রাখা দরকার। প্রথমত, আমাদের মাঝে দীর্ঘস্থায়ী রোগের বোঝা ক্রমেই বাড়ছে। ক্রনিক রোগ মোকাবিলার জন্য একটি নতুন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, নারীপ্রধান পরিবারগুলো সমাজের সবচেয়ে নিচের স্তরে পড়ে আছে, তাই এদের বিশেষ সহায়তা প্রয়োজন। তৃতীয়ত, ঋণের বোঝা বাড়ছে, যা একটি বড় ধরনের সমস্যা হয়ে উঠছে। চতুর্থত, ক্রমবর্ধমান খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা। এটি এখনো ব্যাপক আকারে হয়নি, তবে ধীরে ধীরে বাড়ছে এবং যা উদ্বেগজনক। পঞ্চমত, স্যানিটেশন সংকট উত্তরণ করে এসডিজি অর্জনের জন্য আমাদের হাতে মাত্র পাঁচ বছর আছে, কিন্তু এখনো প্রায় ৩৬ শতাংশ মানুষ নন-স্যানিটারি টয়লেট ব্যবহার করছে। ফলে নিরাপদ স্যানিটেশন নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কর্মসংস্থান নিয়ে হোসেন জিল্লুর রহমান আরও বলেন, আমাদের মাঝে এখন কর্মসংস্থানের জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বেকারত্বের দুর্যোগের বাস্তবতার মধ্যে আমরা অবস্থান করছি। কর্মসংস্থান নিয়ে বড় ধরনের ভাবনা এবং জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন। এ বিষয়ে এখনই আমাদের আলোচনা এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
জাতীয়
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের পাশে ১১ দেশ

রোহিঙ্গা সংকট জটিল হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমারের পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের চলমান মানবিক সংকটের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। বিশেষ করে আগামী মাসে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এক সঙ্গে কাজ করবে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আট বছরপূর্তিতে পশ্চিমা বিশ্বের ১১টি দেশ বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে। অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, ডেনমার্ক, সুইডেন, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও ফিনল্যান্ড এক যৌথ বিবৃতিতে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আজ সোমবার সকালে ঢাকায় ফ্রান্স দূতাবাস তাদের এক্স হ্যান্ডেল এবং ফেসবুক পেইজে যৌথ বিবৃতিটি দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের দৃঢ়তা ও সহনশীলতাকে সাধুবাদ জানাই, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে কঠিন বাস্তবতা ও বাস্তুচ্যুতি সহ্য করে চলেছেন। বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের বর্তমান অবনতিশীল নিরাপত্তা ও মানবিক পরিস্থিতির মধ্যেও দৃঢ়তা দেখিয়ে চলেছেন তাঁরা।’
১১টি দেশের বিবৃতিতে বল হয়েছে, ‘আমরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং সাধারণ মানুষের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, যাঁরা রোহিঙ্গাদের, বিশেষ করে নতুন করে আসা লোকজনদেরও আশ্রয় ও নিরাপত্তা দিয়ে চলেছেন এবং জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।’
যৌথ বিবৃতিতে ১১ দেশ বলেছে, ‘এই শর্ত পূরণ করতে হলে বাস্তুচ্যুতির মূল কারণগুলোর সমাধান প্রয়োজন, যার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল মিয়ানমার আবশ্যক। তাই আমরা স্বীকার করছি, এখনই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তাই, সব পক্ষের প্রতি একটি প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য জরুরিভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে ১১টি দেশ বলেছে, ‘আমরা মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংঘটিত সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তীব্র নিন্দা জানাই। সহিংসতা বন্ধ এবং মানবিক সহায়তা অবাধে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টির জন্য আবারও আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা অন্যায়ভাবে আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিও পুনর্ব্যক্ত করছি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জবাবদিহি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
যৌথ বিবৃতি দেওয়া দেশগুলো বলেছে, ‘আমরা আত্মনির্ভরশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আরও স্থায়ী সমাধানের পক্ষে। বিশেষ করে যখন রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মানবিক সহায়তার তহবিল কমে আসছে, তেমন পরিস্থিতিতে তাদের ভবিষ্যৎ প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার কথাও বলছি। আমরা কক্সবাজারের স্থানীয় বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীকেও সমর্থন দিয়ে যাব, যারা উদারভাবে শরণার্থীদের আতিথেয়তা জানাচ্ছেন।’
বিবৃতিতে দেশগুলো বলেছে, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের অর্থবহ অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার গুরুত্ব তুলে ধরছি, যাতে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষমতাবান হতে পারে এবং বাংলাদেশে অবস্থানকালে নিরাপদ, সম্মানজনক ও গঠনমূলক জীবন যাপন করতে পারে। আট বছর পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে এখনো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও বাংলাদেশের পাশে অটলভাবে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা এই সংকটের মূল কারণগুলো সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’