শিল্প-বাণিজ্য
নয় দিনে চীন থেকে পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রামে
এই প্রথম চীন থেকে পণ্য নিয়ে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। এমভি কোটা আংগুন নামে জাহাজটি চীন থেকে পণ্য নিয়ে মাত্র নয় দিনে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করেছে।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১০টা ৪২ মিনিটে বন্দরের ১৩ নম্বর জেটিতে নোঙর করে জাহাজটি। এটি বিশ্বের ব্যস্ততম সমুদ্র বন্দরের শীর্ষস্থানে থাকা পোর্ট অব নিংবো-ঝুশান থেকে ৫৫২টি কনটেইনার নিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী টার্মিনাল ম্যানেজার (কন্ট্রোল) রাজিব চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চায়না-চিটাগাং এক্সপ্রেস (সিসিই) নামের এই সার্ভিসে একাধিক প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন জাহাজের একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করা হয়েছে। এই সার্ভিসের আওতায় চীনের পোর্ট অব নিংবো-ঝুশান থেকে প্রথমবারের মতো আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে মাত্র নয় দিনের মাথায় চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে এমভি কোটা আংগুন নামের একটি ভ্যাসেল।
এদিকে,প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল লাইন (পিআইএল) কর্মকর্তা মো.মাহতাব বলেন, সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী জাহাজটি চীন থেকে ৫৫২টি আমদানি করা কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে। জাহাজটি ৭ সেপ্টেম্বর চীনের নিংবো থেকে যাত্রা করে সাংহাই ও শেকাউ হয়ে নয় দিনে চট্টগ্রামে পৌঁছে।
তিনি জানান, আগে চীন থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ আসতে ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগতো। এখন চীন-চট্টগ্রাম সরাসরি রুট চালু হওয়ায় কম সময়ে জাহাজ আসা-যাওয়া করবে। এতে চীনের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক উন্নতি ঘটবে।
জানা যায়, বাংলাদেশে পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানি খাতের বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল চীন থেকে আমদানি করা হয়। আবার বাংলাদেশের চামড়াসহ বেশ কিছু পণ্য চীনে রপ্তানি হয়। এসব পণ্য আমদানি ও রপ্তানিতে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা কলম্বো হয়েই চীন-চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আনায়ন করা হয়। এতে মাদার ভ্যাসেলে থেকে ফিডার ভ্যাসেল ব্যবহার ও অন্য বন্দরে হয়ে আসার কারণে এ ট্রান্সশিপমেন্টে সময় ও ব্যয় দুটিই বেশি হয়।
এ নিয়ে শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, চীন থেকে বাংলাদেশে প্রচুর পণ্য আমদানি করা হয়। তাই চীন-চট্টগ্রাম রুটে সরাসরি জাহাজ পরিচালনা করাটা বেশ সম্ভাবনাময় একটি বিষয়। তবে নিয়মিত জাহাজ চলাচল অব্যাহত রাখা না গেলে এ রুটটি টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাবে। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা যদি ভাবেন এবং রুটটি টিকিয়ে রাখেন তাহলে তা দেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৭ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
শারদীয় দুর্গা ও লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে সাতদিন বন্ধ থাকবে দেশের অন্যতম রপ্তানিমুখী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর।
ভারতীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে চিঠির মাধ্যমে আখাউড়া আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোশিয়েসনকে এ তথ্য জানানো হয়।
আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে আগামী ১০ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এরপর লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে আরও দুইদিন ১৬ ও ১৭ অক্টোবর বন্দরে বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। পরের দিন ১৮ অক্টোবর শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি। ১৯ অক্টোবর শনিবার থেকে বন্দরে পুনরায় বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু হবে। তবে এ সময় বন্দরে আমদানি-রপ্তানিসহ সব ধরনের বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম বৃহৎ ও রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে হিমায়িত মাছ, প্লাস্টিক, রড, সিমেন্ট, ভোজ্য তেল, তুলা ও বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী রপ্তানি করা হয়ে থাকে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
১৫ শতাংশ সুদ দিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা দুঃসাধ্য: ব্যবসায়ীরা
কারখানার নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ জানিয়েছেন দেশের ব্যবসায়ী নেতারা। তাঁরা বলছেন, ১৪-১৫ শতাংশ সুদ দিয়ে ব্যবসা করে বিশ্বের কোনো দেশে মুনাফা করা যায় না। ঋণের সুদ ৯ থেকে বেড়ে ১৬ শতাংশ হয়ে গেছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক ব্যবসা বাংলাদেশে এসেছে।
সেগুলো রাখতে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী নেতারা। ঋণের সুদ নিয়ে বসে আলোচনা করা দরকার। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তাঁরা।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ। এ সময় বক্তব্য দেন শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী এবং বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ।
সেমিনারের সূচনা বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, কভিড-পরবর্তী সময় থেকে আমরা নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, তবে সাম্প্রতিক সময়ে শিল্প-কারখানায় অসন্তোষের কারণে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ব্যাংকঋণের সুদের উচ্চ হার এবং সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপনার অস্থিতিশীলতার কারণে বেসরকারি খাত প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, অর্থনীতির সার্বিক বিকাশের লক্ষ্যে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তিনি আরো বলেন, দেশের ভালো ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট রয়েছে, ফলে উদ্যোক্তারা প্রত্যাশিত মাত্রায় ঋণ পাচ্ছেন না, সেই সঙ্গে কাঁচামাল আমদানিতে ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা শিল্প খাতে পণ্য উৎপাদনকে ব্যাহত করছে, ফলে স্থানীয় চাহিদার জোগান মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানি সমন্বিত রাখা বেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিল্পাঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কষ্টে আছি। আজকে আমার কারখানায় যেতে ভয় লাগে। ভয় লাগে এই জন্য যে আমি কি নিজের জীবন নিয়ে বের হয়ে আসতে পারব? এভাবে ব্যবসায়ীরা যদি নিজেদের কারখানায় যেতে শঙ্কিত হন, তাহলে তাঁরা আগামী দিনে ব্যাবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবেন না।’
বর্তমান পরিস্থিতিতে যাঁরা শিল্পাঞ্চলে অসন্তোষ উসকে দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান আহসান খান চৌধুরী। বলেন, “বর্তমানে যাঁরা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুর্বলতায় অন্যায় সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন, তাঁদের শিক্ষা দিতে হবে।
আমাদের দেশে কখনোই ‘দিতে হবে, দিতে হবে’, দাবি মানতে হবে’—এমন সংস্কৃতি ছিল না। আমরা বিগত দিনে কারখানাগুলোতে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করেছি। আমরা সেই সংস্কৃতি ফিরে পেতে চাই।” তিনি আরো বলেন, ‘ব্যবসা পরিচালনার জন্য আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি একটি মৌলিক বিষয়। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আগামী দিনে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব হবে।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, ১৫ শতাংশের বেশি ব্যাংকঋণের সুদ দিয়ে পৃথিবীতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা খুবই দুঃসাধ্য একটি ব্যাপার, তবে আমাদের উদ্যোক্তাদের সেটা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে কাস্টম হাউসে দুর্নীতির কারণে ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, যেটি নিরসনে সরকারের ফিন্যানশিয়াল রিফর্মস কমিটি গঠন করার পাশাপাশি অটোমেশন নিশ্চিত করা জরুরি।
মীর নাসির হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার এখনো ব্যবসায়ীদের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। ব্যবসায়ীদের কথা শুনতে হবে। তাঁদের অবদান স্বীকার করতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেসব অব্যবস্থাপনা ছিল, সেগুলো সংস্কার করতে হবে। তবে সেখানে এখনো কোনো উদ্যোগ দেখছি না। দেশে মধ্যম আয়ের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী গড়ে উঠেছে, যাদের করজালের আওতায় নিয়ে আসা গেলে জিডিপিতে রাজস্বের অবদান অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে এবং লাভবান হবে আমাদের অর্থনীতি।
লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বর্তামন প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ীরা ভীষণভাবে অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতরা মধ্যে রয়েছেন, যা উত্তরণে শিল্পাঞ্চলে বিশেষ করে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কার্যক্রম আরো জোরদার করতে হবে, পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বন্ধ। এফডিআই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ডলারের জন্য নয়, বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় যুক্ত হওয়া যায়। রপ্তানি পণ্যের বাড়তি দাম পাওয়া যায়। বর্তমানে যেসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান আছে, তাদের সমস্যাগুলোর সমাধান করলেই বিদেশি বিনিয়োগের দরজা খুলবে।
এ ছাড়া প্রশাসনের অনেক জায়গা থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না, এ ক্ষেত্রে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট বার্তা প্রদান করা আবশ্যক। তিনি বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে স্থানীয়ভাবে আমাদের চাহিদা কমে গেছে, যেটা উদ্বেগের বিষয়, সেখানে সবাইকে নজর দিতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ডাবল ডিজিটের সুদ দিয়ে ব্যবসায় মুনাফা করা অসম্ভব।’
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিদ্যমান শ্রমিক অসন্তোষ কার্যক্রমে অনুপ্রবেশকারীদের হাত রয়েছে। এরই মধ্যে শ্রমিকদের বেশ কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি শ্রমিকদের যেকোনো যৌক্তিক দাবি বিজেএমইএ ও বিকেএমইএ ইতিবাচকভাবে মেটাতে বদ্ধপরিকর।
ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, বর্তমান সময়ে তৈরি পোশাক খাতের ঝুট ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রণ, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব এবং শ্রমিক অসন্তোষের কারণে শিল্প-কারখানায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ায় পণ্য উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, যা মোটেই কাম্য নয়। যেকোনো মূল্যে এই পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে হবে, তা না হলে বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে ইমেজ সংকটে পড়তে পারে।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ বলেন, শিল্প খাতের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে মাঠ পর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ পরিলক্ষিত হচ্ছে না, যেটি মোটেই কাম্য নয়। সরকারকে এ বিষয়টিতে নজর দেওয়া জরুরি।
মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, গত মাসের বন্যা ও পার্বত্য এলাকায় অস্থিরতার ফলে স্থানীয় পর্যটন ব্যবসা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে, সেই সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশে ভিসা জটিলতার কারণেও এই খাতে নেতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে ই-কমার্স খাতের উন্নয়নে আস্থার পরিবেশ উন্নতির কোনো বিকল্প নেই।
ফুডপান্ডা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এবং সিইও আমব্রারিন রেজা বলেন, গত তিন মাসে ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় বিশেষ করে ডিজিটাল সেবা খাতের ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং এই খাতের বেশির ভাগ উদ্যোক্তাই এসএমই, যাঁদের ব্যাবসায়িক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক করতে দ্রুততম সময়ে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রদান করা জরুরি।
ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দসহ বেসরকারি খাতের আমন্ত্রিত অতিথিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেলো ২৭৬ টন ইলিশ
বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচ চালানে ভারতে গেল ২৭৬ টন ইলিশ। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ৫৪ টন, শনিবার ৪৫ টন, রোববার ১৯ টন, সোমবার ৮৯ টন এবং মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ৬৯ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১০ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ১৮০ টাকা।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ডেপুটি ডিরেক্টর রাশেদুল সজিব নাজির গণমাধ্যমকে জানান, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার থেকে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঁচ চালানে ৯১টি ট্রাকে ২৭৬ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। রপ্তানিকারকদের আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি শেষ করতে হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে।
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। অনুমোদন পাওয়া ৪৮টি প্রতিষ্ঠান ৫০ টন করে ২ হাজার ৪০০ টন, আর একটি প্রতিষ্ঠান ২০ টন ইলিশ রপ্তানি করবে।
অন্যদিকে, মা ইলিশ রক্ষায় বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা নিয়ে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে ভিত্তি ধরে আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুদ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
হামদর্দের বিরুদ্ধে প্রভিডেন্ট ফান্ড আত্মসাতের অভিযোগ
উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও বড় আয়ুর্বেদিক প্রতিষ্ঠান হামদর্দ (ওয়াক্ফ) ল্যাবরেটরীজের বিরুদ্ধে প্রভিডেন্ট ফান্ড আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর বাংলামোটরে হামদর্দের প্রধান কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রভিডেন্ট ফান্ড আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এ সময় প্রায় কয়েক শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। প্রভিডেন্ট ফান্ড আত্মসাত, গ্র্যাচুইটি ভাতা বৃদ্ধি, বিপণন পরিচালক শরিফুল ইসলামের পদত্যাগসহ মোট ১৯ দফা দাবিতে আন্দোলন করেন তারা।
আন্দোলেন আসা কর্মকর্তাদের ‘দফা এক দাবি এক, শরিফ স্যারের পতদ্যাগ’; ‘আমাদের দাবি, আমাদের দাবি, মানতে হবে, মানতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এতে অংশগ্রহণ করা এক কর্মকর্তা বলেন, হামদর্দে কর্মরত যেসব কর্তারা আছেন, তারা আমাদের প্রভিডেন্ট ফান্ড অনেকটা খেয়ে (আত্মসাৎ) ফেলেছে। আগে আমাদের প্রভিডেন্ট দ্বিগুণ দেওয়া হলেও এখন তা দেওয়া হচ্ছে না। অর্থাৎ আমাদের সুযোগ-সুবিধা বর্তমানে নেই বললেই চলে।
তিনি বলেন, ২০১৯ সাল থেকে নিয়োগ পাওয়া কিছু কর্মকর্তা নিজেদের হর্তাকর্তা ভেবে হামদর্দের বাকি চাকুরিজীবীদের পথে বসিয়ে দিয়েছেন। তারা নানান অজুহাতে আমাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছেন।
উল্লেখ্য, কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সময় ব্যক্তির আয় থেকে প্রতি মাসে মূল বেতনের সাত থেকে ১০ শতাংশ কেটে একটি তহবিলে রাখা হয়। একই পরিমাণ অর্থ প্রতিষ্ঠানও ওই তহবিলে জমা রাখে। এর মাধ্যমে যে অর্থ জমা হয় তা কর্মী চাকরি শেষে পান। টাকা জমা রাখা এই তহবিলকেই বলা হয় প্রফিডেন্ট ফান্ড।
এ বিষয়ে জানতে হামদর্দের মুখপাত্র আমিরুল মোমেনীন মানিককে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়ে মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
আন্দোলেন আসা এই কর্মকর্তা আরও জানান, হামদর্দ বহু আগে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যে যাতায়াত ভাতা নির্ধারণ করেছিলো, তা এখনো বহাল রয়েছে। অথচ নির্ধারিত ভাতার তুলনায় যাতায়াত খরচ ১২০ গুণ বাড়লেও তাদের যাতায়াত বিলের উন্নতি হয়নি। এতে তাদের নানান সংকটের সম্মুখীন হতে হয়।
বেতন নিয়ে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আমরা এখন নিয়মিত বেতন পাচ্ছি না। আবার কর্তৃপক্ষ নানান অজুহাতে আমাদের বেতন কাটতে চায়। এতে আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ও পরিবার আর্থিক হুমকির মুখে পড়ছে।
বিপণন পরিচালক শরিফুলের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে হামদর্দের এ কর্মকর্তা বলেন, আমাদের প্রধান দাবি মার্কেটিং ডিরেক্টর শরিফুল স্যারের পদত্যাগ। তিনি আমাদের সব ধরণের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছেন। এছাড়া প্লাস্টিক কোম্পানির সাথে যোগসাজশে তিনি হামদর্দের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জোরপূর্বক কিছু ওষুধি পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য করেন। এতে তিনি প্লাস্টিক কোম্পানি থেকে কমিশন (অবৈধ উপার্জন) গ্রহণ করেন।
মেয়াদোর্ত্তীন পণ্য নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, হামদর্দ মেয়াদোর্ত্তীন পণ্যের বিপরীতে কোন পণ্য পরিবর্তন করে দেয় না। কিন্তু বাকি কোম্পানিগুলো তা পরিবর্তন করে দেয়। এতে পণ্য বিক্রি করতে না পারার কারণে কোম্পানি বেতন কাটার সুযোগ খুঁজে।
উপমহাদেশের অন্যতম পরিচিত আয়ুর্বেদিক প্রতিষ্ঠান হামদর্দের অসাধু কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কোন সুনাম ক্ষুণ্ণ না হওয়ার দাবি জানান তিনি। এছাড়া তাদের গ্র্যাচুইটি বিল বৃদ্ধিসহ মোট ১৯ দফা দাবিতে তারা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হামদর্দের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অর্থসংবাদকে বলেন, প্রভিডেন্ট ফান্ড চলমান আছে। তবে এ নিয়ে কিছু বিভ্রান্তিও আছে। এসব নিয়ে তারা দাবি তুলেছেন। এ দাবির মধ্যে কিছু যৌক্তিক আবার কিছু বাড়তি দাবি আছে। যৌক্তিক দাবিগুলো খুব শিগগিরই ব্যবস্থাপনা পর্ষদ পর্যালোচনা করবেন।
বিপণন পরিচালক শরিফুল নিয়ে তিনি বলেন, শরিফুলকে নিয়ে তাদের কিছু অভিযোগ রয়েছে। তারা লিখিত আকারে আজ প্রধান কার্যালয়ে তা জমা দিয়েছেন। তবে এসব অভিযোগ যৌক্তিক হলে ব্যবস্থাপনা পর্ষদ থেকে শিগগিরই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জানা যায়, হামদর্দ (ওয়াক্ফ) ল্যাবরেটরীজ বাংলাদেশের প্রশাসন ও বিধিবিধান (সংশোধিত ২০১৯) অনুযায়ী, হামদর্দে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাগণ প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণী মোতাবেক অর্জিত নিট মুনাফার ৫ শতাংশ অর্থ লভ্যাংশ হিসেবে প্রাপ্য হবেন। যা লভ্যাংশ বন্টন তহবিলে জমা হবে এবং এ অর্থ হামদর্দ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে বন্টন বা প্রদান করা হবে।
এদিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় জামালদীতে অবস্থিত হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদত্যাগ সম্প্রতি পদত্যাগ করায় তাকে সপদে বহলের দাবিতে সম্প্রতি বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী মেডিসিন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের পক্ষে কথা বলায় হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. ফারুক উজ জামান চৌধুরীকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত বগুড়া হামদর্দ ইউনানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অধ্যক্ষ নিয়োগসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর কমপ্লিট শাট ডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার ১৯ দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে হামদর্দের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগ করতে চায় সংযুক্ত আরব আমিরাত
চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। বাংলাদেশে নিযুক্ত আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ খাসিফ আল হামুদি নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনকে একথা জানান।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি সচিবালয়ের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে একথা জানান।
সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রাম বন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার বিনিয়োগ করতে চায় জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ আমিরাতের বন্ধু রাষ্ট্র। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে পোশাক, কৃষিজাত পণ্য, নিটওয়্যারসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে আসছে। এ ধারাবাহিকতায় আমরা বাংলাদেশের অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আরো বৃহৎ পরিসরে নতুনভাবে কাজ করতে আগ্রহী। যার মাধ্যমে উভয় দেশের জনগণই উপকৃত হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সমুদ্রবন্দর ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ড (দুবাই পোর্ট) বর্তমানে ছয়টি মহাদেশজুড়ে ৬০টির বেশি সমুদ্রবন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে।
এছাড়া ১০টি দেশে তাদের কার্যক্রম আরো বিস্তৃত ও নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। আমাদের লন্ডন গেটওয়ে পোর্ট নির্মাণের অভিজ্ঞতাও রয়েছে। উপমহাদেশের অন্যান্য দেশ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কায়ও ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের। সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার বিশ্বাস করে, বাংলাদেশেও বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগের মাধ্যমে উভয় দেশই উপকৃত হতে পারে।
রাষ্ট্রদূতের এ বিনিয়োগ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সব সময় বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সেক্টরে বহুমাত্রিক সম্পর্ক বিদ্যমান। আমরা চট্টগ্রাম বন্দরসহ অন্যান্য সকল ক্ষেত্রেই আমিরাতের বিনিয়োগের আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানাই। আমি মনে করি, এর মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। বাংলাদেশের জন্য যেটি মঙ্গলজনক, সে সকল বিদেশি প্রস্তাবকে বর্তমান সরকার ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে।
এ সময় উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশী নাবিকদের জন্য দুবাইয়ের ভিসা জটিলতা দূরীকরণের মাধ্যমে সহজ উপায়ে ট্রানজিট ভিসা ইস্যু করার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত আল হামুদি উপদেষ্টার প্রস্তাব গ্রহণ করে বলেন, বাংলাদেশী নাবিকদের জন্য এখন থেকে সহজ উপায়ে ট্রানজিট ভিসা প্রদানের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উভয় দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য ঘাটতি দূর করে বাণিজ্য ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে– বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি পাটজাত পণ্য আমদানির আহ্বান জানিয়ে বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা বলেন, সোনালী আঁশ পাট বাঙালির ঐতিহ্য। এটি সহজে পচনশীল ও পরিবেশবান্ধব। আমরা পাটের সোনালী অতীত ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। ইতোমধ্যে ২৮২ ধরনের পাটজাত দ্রব্য উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে, যেগুলো অত্যন্ত আকর্ষণীয়। পরিবেশ দূষণরোধে পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহারে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের সুপারশপগুলোতে প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দুবাইয়ের সুপারশপগুলোতেও এ সকল পণ্য যা পরিবেশের ক্ষতিকর সেগুলো ব্যবহারে বিধিনিষেধ রয়েছে। ইউএই সরকার বাংলাদেশ থেকে অত্যন্ত মানসম্মত ও বৈচিত্রপূর্ণ পাটজাত দ্রব্য আমদানি করতে পারে।
এসময় তিনি বাংলাদেশের পাট ও বস্ত্র শিল্পে আমিরাতকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার পরিবেশের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য এক বিরাট হুমকি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সারাবিশ্বেই পাটজাত দ্রব্যের চাহিদা ক্রমশ বেড়ে চলছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়াত্ব পাটকল ও বস্ত্র কল গুলোতেও বিদেশি বিনিয়োগ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি আশা করব সংযুক্ত আরব আমিরাতও বাংলাদেশের পাট ও বস্ত্র শিল্পে বিনিয়োগ করবে।
উপদেষ্টার এ আহবানকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রদূত উভয় দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যেকোনো বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব দেয়ার অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ খাসিফ আল হামুদির নেতৃত্বে বৈঠকে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে।
এসময়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের রুটিন দায়িত্বে) সঞ্জয় কুমার বণিক ও নৌপরিবহন অধিদপ্তরে মহাপরিচালকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।