সারাদেশ
নির্বাচিত সরকার পেতে সারজিস আলমের দুই পরামর্শ
জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাইলে সকল রাজনৈতিক দলসহ দেশবাসীকে দুটি কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম।
নির্বাচন প্রসঙ্গে এই ছাত্রনেতা বলেন, দেশের সিস্টেমগুলোতে ক্যান্সার ধরেছে। যত দ্রুত সম্ভব ক্যান্সার নির্মূল করে জনগণের ভোটের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার আনতে হবে। এটার জন্য দুটি কাজ আমাদের করতেই হবে। এক আমাদের ধৈর্য ধরে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করা, দুই আমাদের রাজনৈতিক আদর্শ, দলাদলি ও মুখোমুখি হবার যে ট্রেডিশন, সেটি থেকে কিছু সময়ের জন্য বিরত হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বার্থ, মান-অভিমানগুলোকে একপাশে রেখে বাংলাদেশের জন্য কাজ করতে হবে।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, আমরা যদি বিগত সময়ের কাজগুলো থেকে শিক্ষা না নিই তাহলে শেখ হাসিনা, সালমান এফ রহমান, ডিবি হারুনের মতো একই অবস্থা হবে। সেটা আজ না হোক আর দশ বা ষোল বছর পরই হোক, ওই একই অবস্থা হবে। যারা এসব করবেন তাদের অবস্থা ফ্যাসিস্টদের মতোই হবে। গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা কোনো অথোরিটি নয়। আমরা একটা প্রেশার গ্রুপ (চাপ সৃষ্টিকারী। আমরা যদি কিছু করতে চাই, তা অবশ্যই আইনগতভাবে হতে হবে। আমাদের কেউ যেন ক্ষমতার অপব্যবহার না করি। তাহলে দেশ স্থিতিশীলতার দিকে যাবে এবং জনতার সিস্টেমের পরিবর্তন আসা সম্ভব হবে।
বিগত সময়ে পোশাক পরিধানে নানা রকম অপবাদ ও ট্যাগ দেওয়া হতো উল্লেখ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এই ছাত্রনেতা বলেন, আমাদের আজকের অনুষ্ঠানে অসংখ্য ভাই এসেছেন। যারা আজকে নির্দ্বিধায় পাঞ্জাবি-টুপি-পায়জামা পরে আসতে পেরেছেন। এটাই চব্বিশের ছাত্র-জনতার সবচেয়ে বড় স্বাধীনতা। কারণ বিগত ১৬ বছরে এসব কাপড় পরিধান করলে তাদেরকে ইচ্ছে মতো ট্যাগ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজকে সকল রাজনৈতিক আদর্শের ভাই-বোনেরা এখানে উপস্থিত আছেন। বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আপনাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়েছে। আপনাকে হাইকোর্টে মিথ্যা মামলা দিয়ে কাঁদিয়েছে। আপনাকে থানায় ঘুরিয়েছে। আপনার ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। চাঁজাবাজি-সিন্ডিকেটের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। এ কারণে ১৬ বছর পরে সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওই ফ্যাসিস্টদের পতন ঘটিয়েছে। কিন্তু আজকে যদি আমি কিংবা আমরা ওই একই কাজগুলো করি তাহলে আমাদের শহীদ ভাইদের আত্মত্যাগের যে স্পিরিট তা ধুলোয় মিশে যাবে।
আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মনোযোগী ও দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত হবার আহ্বান জানিয়ে সারজিস বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষিত করতে হবে। দেশকে ১০০ বছর এগিয়ে নিতে চাইলে আমাদের কোয়ালিটিফুল রিসোর্স লাগবে। বাংলাদেশে ভারতসহ বিদেশের অসংখ্য দেশ তাদের জনবল দিয়ে এখান থেকে লক্ষ কোটি ডলার নিয়ে যায় বেতন হিসেবে। আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ওই কাজগুলোর জন্য নিজেদেরকে কোয়ালিটিফুল হিসেবে গড়ে তোলা। ২০২৪ সালের স্পিরিটকে ধরে রাখতে চাইলে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বাঁচাতে হবে। মাদকের ছোবল, সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার থেকে বাঁচাতে হবে। নীতি-নৈতিকতা ও পারিবারিক শিক্ষার পাশাপাশি শৃঙ্খল হতে হবে।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতার একটা ডিমান্ড আছে, চাওয়া আছে, একটা স্পিরিট আছে। এই দ্বিতীয় স্বাধীনতা আপনাকে বলে না অন্ধভাবে একটি মার্কা দেখে ভোট দিন। এই দ্বিতীয় স্বাধীনতা চায় না আপনার চৌদ্দগোষ্ঠী যে দল করে এসেছে, আপনি সেই দল করুন। এই স্বাধীনতা চায় এই রংপুর বিভাগের জন্য যারা কথা বলবে, মেহনতি মানুষের জন্য যারা কাজ করবে, সমস্যাগুলো যারা সংসদে তুলে ধরবে, ওই মানুষগুলোকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে সংসদে নিতে হবে।
রংপুর বিভাগকে অন্যান্য বিভাগের মতো এগিয়ে রাখতে হলে দ্বিতীয় সারিতে না রাখার দাবি জানান সারজিস আলম। তিনি বলেন, বৈষম্য দূর করতে হলে রংপুর বিভাগকে এগিয়ে নিতে হবে। যারাই দেশের নেতৃত্বে আসবে তাদের বলতে চাই আগামীতে দেশসেরা একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর বিভাগে লাগবে। দেশের সেরা কয়েকটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় লাগবে। বছরের পর বছর ধরে আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা শুনেছি কিন্তু বিগত সরকার তা বাস্তবায়ন করেনি। ফ্যাসিস্ট সরকার পদ্মা সেতু এবং পদ্মা রেল সেতু করতে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। অথচ রংপুরের তিস্তাপাড়ের কোটি মানুষ প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ১ হাজার কোটি টাকা দরকার ছিল সেটি ওই ফ্যাসিস্ট সরকার করতে পারেনি। বাংলাদেশে এ গ্রেডের কিছু জেলা ও প্রথম সারির কিছু সিটি কর্পোরেশন যেই বাজেট পায় বছরে, পুরো রংপুর বিভাগ সেই বাজেট পায়নি ১৬ বছরে।
সাংবাদিকদের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে এই ছাত্রনেতা বলেন, আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা বিগত ১৬ বছরে যা বলা উচিত ছিল, যা বলতে চেয়েছিল তা কিন্তু তারা বলতে পারে নাই। কিন্তু আজকে এত বড় একটি মঞ্চে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার সামনে তাদের যে জিনিসটি মনোঃপূত হয়নি তারা সেটার প্রতিবাদ জানাতে পেরেছে। এটিই হচ্ছে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অর্জনে স্বাধীনভাবে কথা বলা ও প্রতিবাদ জানানোর প্রমাণ।
সারজিস আলম বলেন, আমরা যখন ডিজিএফআই’র ও ডিবির হারুন ভাইয়ের হেফাজতে ছিলাম, তখন আমাদের অনেক সাংবাদিক ভাই নিউজ প্রকাশ করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদেরকে চাপ দিয়ে অনেক নিউজ প্রকাশ করতে দেয়া হয়নি এটা যেমন সত্য, আবার অনেকে আমাদের বিষয়টিকে ছোট করে কিংবা আমাদের বিষয়টিকে একপাশে রেখে আসল সংবাদগুলো আড়াল করেছিল এটাও সত্য।
সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে আপস না করার আহ্বান জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় এই সমন্বয়ক বলেন, আমাদের সাংবাদিক ভাইদের ওপর বিশাল দায়িত্ব। এই রংপুরে একজন ব্যক্তি এককভাবে যে জিনিসটি এক হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে সেটা আপনারা পুরো বাংলাদেশের সামনে নিতে পারবেন। যেখানে চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট, ঘুষ, নিয়োগ বাণিজ্য, হাজার হাজার টাকার অবৈধ লেনদেন দেখেন সেগুলো আপনাদেরকে (সাংবাদিকদের) তুলে ধরতে হবে। এগুলো সাংবাদিকদের দায়বদ্ধতা। যদি আপনারা এগুলো তুলে না ধরেন তাহলে আপনার পেশার সাথে আপনি বেঈমানি করবেন।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম, রকিব মাসুদ, আবু সাঈদ লিয়ন ও আব্দুল মুনঈম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এস আই শাহিন, মিশু আলি সুহাস, জহির রায়হান, ফিহাদুর রহমান, সুমন কিবরিয়া, সজিব ইসলাম, আব্দুর রউফ, ইমরান আহমেদ প্রমুখ।
এর আগে দুপুরে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে শহীদ ও আহত পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। এ সময় রংপুর বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা তাদের চিকিৎসাসেবা ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
সরকার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর: সুপ্রদীপ চাকমা
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম সদরের কাতালগঞ্জ এলাকায় কিশলয় কনভেনশন হলে বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু আয়োজিত নব কমিটির অভিষেক ও জাতীয় বৌদ্ধ মহাসম্মেলন ২৪ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব) সুপ্রদীপ চাকমা এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী সকলের ভাগ্য উন্নয়ন এবং সমান অধিকার সুনিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, জ্ঞানেশ্রি ভান্তে, বড়ুয়া ভান্তে, মারমা ভান্তে সকলেই আমাদের আলোকিত করেছেন। ভান্তেরা বিনয়ের সাথে চলেন। কখনো তাদের বিনয় ভংগ হয় না। মানুষের মাঝে সহিংসতা ও মারামারি কখনো কাম্য হতে পারে না।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, গুজব ও উস্কানিতে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সহিংসতা হয়ে গেল যা দুঃখজনক। আমি নিজে সেখানে গিয়েছি, সেখানে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে সরকারি সহযোগিতা বিতরণ করেছি এবং এলাকার উদ্ভূত পরিস্থিতি শান্ত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি।
বৌদ্ধ ভিক্ষুরা উপদেষ্টার মাধ্যমে সরকারের কাছে ৮টি দাবি তুলে ধরে। এর মধ্যে প্রবারণা পূর্ণিমায় ১ দিন সরকারি ছুটি, বৌদ্ধ সরকারি চাকরিজীবীদের তীর্থ ভ্রমণ ছুটি, প্রত্যেক বিহারে বিদ্যুৎ বিল মওকুফ, ভিক্ষু প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জন্য চট্টগ্রামে সরকারি জমি বরাদ্দ দান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ছিল।
উপদেষ্টা দাবির বিষয়গুলো সরকারের নজরে আনা হবে বলে জানান। তিনি বলেন, প্রবারণা, কঠিন চীবর দান বাংলাদেশে অবশ্যই হবে।
অভিষেক ও জাতীয় বৌদ্ধ মহাসম্মেলন সভার সভাপতি অগগমহাপন্ডিত অধ্যাপক বনশ্রী মহাথেরের সভাপতিত্বে এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কঙ্কন চাকমা, মহাসম্মেলনে নবনির্বাচিত মহাসচিব প্রজ্ঞাবারিধি অধ্যাপক সুমেধানন্দ মহাথের, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভার উপ সঘ-নায়ক সদ্ধর্মরশ্মি রতনশ্রী মহাথের, বিভিন্ন এলাকার ভান্তে ও সুধিজনরা উপস্থিত ছিলেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাখরাবাদ পাইপলাইন প্রকল্প পরিদর্শনে জ্বালানি উপদেষ্টা
বাখরাবাদ-মেঘনাঘাট-হরিপুর ৪২ প্রকল্পের মেঘনাঘাট এলাকায় গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে পরিদর্শন করেন তিনি।
এদিকে জিটিসিএলের (গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড) সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের জুনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩০৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে দেওয়া হবে ৫১২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। বাকি ৭৯২ কোটি ৩ লাখ টাকার জোগান দেওয়া হবে সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে।
মূলত দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাট এবং হরিপুর, সিদ্ধিরগঞ্জ ও আড়াইহাজার এলাকার বিদ্যুৎকেন্দ্র, অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহে এ সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
নদী-সাগরে মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু আজ
ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণে শনিবার (১২ অক্টোবর) মধ্য রাত থেকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের সব নদ-নদী ও সাগরে জারি থাকবে এই নিষেধাজ্ঞা। বিশেষ করে মা ইলিশ রক্ষা ও নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে প্রতিবছর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
নিষিদ্ধ এই সময়ের মধ্যে ইলিশ আহরণ, পরিবহন ও বিপণন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে বাস্তবায়নে নদ-নদী ও সাগরে মৎস্য বিভাগ, পুলিশ, কোস্টগার্ড এবং নৌবাহিনীর কঠোর নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নিষেধাজ্ঞা সফল করতে মৎস্য বিভাগকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন উপকূলীয় বাগেরহাটের শরণখোলার সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার মালিক, আড়তদার ও জেলেরা।
তবে, মৌসুমের শুরু থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ বার দুর্যোগের কবলে পড়ে এবং মাঝখানে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় সাগরে ঠিক মতো জাল ফেলতে না পারায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশ আহরণ করতে পারেননি জেলেরা। ফলে অধিকাংশ মালিক-আড়তদার লোকসানে রয়েছেন।
লোকসানে পড়ে অনেকেই তাদের এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা গুটিয়ে ফেলছেন। তারা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মালিক-আড়তদারকে সরকারি প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মৎস্য সংশ্লিষ্টরা।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এম এম রাসেল বলেন, ইলিশের প্রজনন ও মা ইলিশ রক্ষার জন্য ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফল করতে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলছে। সকল নদ-নদী ও সাগরে মৎস্য বিভাগ, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকবে। নিষিদ্ধ এই সময়ে আইন অমান্য করে কেউ ইলিশ আহরণ, মজুদ, পরিবহন বা বিক্রি করলে বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
একশো-দুশো টাকায় মিলবে ইলিশ!
প্রাচুর্যের কারনে একসময় দেশের সবচেয়ে সস্তা ইলিশ এখন সাধারণের নাগালের বাইরে। হয়ে উঠেছে দুষ্প্রাপ্য। দাম এতোটাই বেশি যে সাধারণ মানুষ এর স্বাদও নিতে পারছেন না। আর এ কারণেই রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা এই কাটা ইলিশ মাছ বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন। মাত্র একশ বা দুশো টাকায় প্রয়োজনমত ইলিশ কেনা যাবে রাজশাহীর সাহেববাজারে। এজন্য ইলিশ কেটে টুকরো আকারে বিক্রি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে এক বা দুই টুকরো ইলিশ কিনেও স্বাদ নিতে পারবেন সাধারণ মানুষ।
রাজশাহী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ সভাপতি ফরিদ মামুদ হাসান বলেন, গরীব মানুষদের জন্য এই পদক্ষেপ গ্রহন করেছি। যারা এক কেজি ইলিশ মাছ ১৮শ থেকে ২ হাজার টাকায় কিনতে পারে না, তারা এখন দুই পিস বা একশ গ্রাম হলেও কিনতে পারবেন। সবাই ইলিশ খাবে, গরীবরা খাবে না, তা তো হয় না। সে কারণে আমরা ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ এই উদ্যেগ নিয়েছি। রাজশাহীর সব মার্কেটে এটা চালু থাকবে। সারাদেশে এখন আমাদের দেখা দেখি এটা চালু হবে।
রাজশাহী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষ অনেকদিন ধরে অভিযোগ করছিলেন। তাই আমরা মৎস্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে চালু করেছি। এই কাটা ইলিশ মাছ সব সময় যেন বিক্রি হয় সেটা আমরা মনিটরিং করবো।
কাটা ইলিশ পেয়ে ক্রেতারা খুশি। বিক্রেতারাও খুশি। তারা বলছেন, সবাই গোটা ইলিশ কিনতে পারেন না। তাদের জন্য সুবিধা হলো।
বিক্রেতা গোলাপ হোসেন বলেন, আমরা কেটে বিক্রি করছি। কেউ চাইলে এক পিসও নিতে পারবেন। এটা ২০ বছর আগে হতো এখন আবার হচ্ছে। গোটা ইলিশ যদি ১৮শ টাকা কেজি হয়, তবে কাটা ইলিশের দাম হবে দুই হাজার টাকা। কারণ নাড়িভুড়ি, আঁশ বাদ যাবে। তাই কাটা ইলিশের দাম একটু বেশি হবে।
ক্রেতা নাজমা বেগম বলেন, এতে অনেক সুবিধা হলো। এক পিস হলেও কিনে খেতে পারবেন।
ফজলুর রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, আমি এক পোয়া কিনেছি ৫০০ টাকায়। এটা খুবই ভালো হলো। সবাই স্বাদ নিতে পারবেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলারে গুলি, নিহত ১
সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমের মৌলভীর শিল নামের বঙ্গোপসাগরের মোহনায় বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলারকে লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ওসমান নামে এক জেলে নিহত হয়েছেন। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত জেলে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারের জেলে। আহত ৩ জেলেও একই ট্রলারের।
ট্রলার মালিক সাইফুল বলেন, আমার মালিকানাধীন ফিশিং ট্রলারে হঠাৎ করে মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর সদস্যরা গুলিবর্ষণ করে। এসময় ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়। তার মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। পরে পাশে থাকা ৫টি ট্রলারসহ মাঝি-মাল্লাদের ধরে মিয়ানমারে নিয়ে যায়। সেখানে ৬০ জন ছিল। পরে ২ ঘণ্টা পর মিয়ানমারের নৌ বাহিনী ছেড়ে দেন। ট্রলার নিহত ও গুলিবিদ্ধের নিয়ে টেকনাফ উপকূলের দিকে রওনা দিয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী জানান, মিয়ানমারের নৌ বাহিনীরা ধরে নিয়ে যাওয়া মাঝি-মাল্লাদের ছেড়ে দিয়েছে। তারা টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। তারা কূলে এলে বিস্তারিত জানতে পারব।
কাফি