আন্তর্জাতিক
মহাকাশে গবেষণা স্যাটেলাইট পাঠালো ইরান

মহাকাশে এবার একটি গবেষণা স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে ইরান। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চামরান-১ নামের স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয়। এটা চলতি বছর উৎক্ষেপণ করা ইরানের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে। পুরো বিষয়টির দেখভাল করেছে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) মহাকাশ বিষয়ক বিভাগ অ্যারোস্পেস ফোর্স।
আরও বলা হয়, মাত্র ৬০ কেজি ওজনের স্যাটেলাইটটি ঘায়েম-১০০ রকেটে করে কক্ষপথে স্থাপন করা হয়। এটাকে কক্ষপথের ৫৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় (৩৪০ মাইল) স্থাপন করা হয়েছে। এর আগের স্যাটেলাইটটিও এই ঘায়েম-১০০ রকেটে করে পাঠানো হয়েছিল।
এই ধরনের উৎক্ষেপণের ব্যাপারে ইরানকে বারবার সতর্ক করে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। তারা বলছে, একই প্রযুক্তি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ব্যবহার করা হতে পারে। আর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরমাণু ওয়ারহেড বহন করতে পারে।
তবে ইরান বলছে যে, তারা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চাচ্ছে না। তাদের স্যাটেলাইট ও রকেট উৎক্ষেপণের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র বেসামরিক ব্যবহার বা প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিশ্বের কোনো দেশের চেয়ে পিছিয়ে থাকতে চায় না ইরান। সেই অঙ্গিকার থেকে দেশটি তার মহাকাশ গবেষণা ও কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমাদের প্রবল বিরোধিতার মুখেও পিছপা হচ্ছে না দেশটির সরকার। ইরানি কর্মকর্তারা জোর দিয়েই বলছেন, তাদের মহাকাশ কর্মকাণ্ড শান্তিপূর্ণ এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনা অনুসারেই চলছে।
তারই অংশ হিসেবে একের পর রকেট ও স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে সবসময়ই যে উৎক্ষেপণ সফল হচ্ছে, তেমনটা নয়। সম্প্রতি তাদের বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরই বিস্ফোরিত হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সোরাইয়া নামে একটি স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণ করে ইরান। এটি কক্ষপথের ৭৫০ কিলোমিটার (৪৬৫-মাইল) উচ্চতায় স্থাপন করা হয়, যা এখন পর্যন্ত কোনো দেশের জন্য সর্বোচ্চ।
এরপর ফেব্রুয়ারিতে কক্ষপথে একটি রিমোট সেন্সিং ও ইমেজিং স্যাটেলাইট স্থাপন করে ইরান। যা পাঠাতে সহায়তা করেছিল রাশিয়া। স্যাটেলাইটটি পাঠানোর পর যুক্তরাষ্ট্র এর নিন্দা জানায়।

আন্তর্জাতিক
আমিরাতে ‘লাইফটাইম গোল্ডেন ভিসা’ দেওয়ার খবরটি গুজব

বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকরা কোনো ধরনের বিনিয়োগ ছাড়াই সংযুক্ত আরব আমিরাতের ‘লাইফটাইম গোল্ডেন ভিসা’ পাবেন, সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ছড়ানো এমন খবরগুলো গুজব বলে জানিয়েছে আমিরাতের কর্তৃপক্ষ। কাউকে এ ধরনের গুজব ও ভুয়া বিজ্ঞাপনের ফাঁদে না পড়তে এবং কোনো পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থ প্রদান বা ব্যক্তিগত নথিপত্র জমা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) আমিরাতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ওয়ামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘নির্দিষ্ট কিছু জাতীয়তাবিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য আজীবন গোল্ডেন ভিসা’ দেওয়া হচ্ছে—এমন খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
আমিরাতের ফেডারেল অথোরিটি ফর আইডেন্টিটি, সিটিজেনশিপ, কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট সিকিউরিটি (আইসিপি) এক বিবৃতিতে জানায়, দেশটির গোল্ডেন ভিসার জন্য যে শ্রেণি, শর্ত ও নিয়ম রয়েছে, তা আইনি কাঠামো, প্রযোজ্য আইন ও মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত। এসব তথ্য আইসিপির অফিশিয়াল ওয়েবসাইট বা স্মার্ট অ্যাপ্লিকেশনে বিস্তারিত পাওয়া যায়।
কর্তৃপক্ষ আরও স্পষ্ট করে জানায়, গোল্ডেন ভিসার আবেদন কেবল সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভেতরে সরকারি চ্যানেলগুলোর মাধ্যমেই করা সম্ভব। কোনো অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদিত আবেদন প্রক্রিয়াকারী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি একটি বিদেশভিত্তিক কনসালটেন্সি অফিস ‘সব শ্রেণির মানুষ আজীবন গোল্ডেন ভিসা পেতে পারেন’—এমন দাবি করে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং আমিরাত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো ধরনের সমন্বয় ছাড়াই করা হয়েছে।
আইসিপি জানায়, তারা নিরাপদ ও স্বচ্ছ সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সরকারি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই সেবার মান উন্নয়নের কাজ করছে। একই সঙ্গে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করা সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কর্তৃপক্ষ সবাইকে অনুরোধ করেছে—যারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভ্রমণ, বসবাস বা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, তারা যেন এ ধরনের গুজব ও ভুয়া বিজ্ঞাপনের ফাঁদে না পড়েন এবং কোনো পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থ প্রদান বা ব্যক্তিগত নথিপত্র জমা না দেন।
এর আগে, একাধিক ভারতীয় সংবাদম্যধমের খবরে দাবি করা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের জন্য নতুন একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে কোনো ধরনের বিনিয়োগ ছাড়াই আজীবন বসবাসের সুযোগ পাবেন বাংলাদেশি ও ভারতীয় নাগরিকরা।
তবে আমিরাতের কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা এ ধরনের কোনো প্রকল্প চালু করেনি। এসব খবর পুরোপুরি ভুয়া।
আন্তর্জাতিক
শুল্ক নিয়ে কোনো ধরনের ছাড় বা সময়সীমা বদলাবে না: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি করা পণ্যের ওপর ঘোষিত নতুন শুল্কহার কার্যকর হওয়ার সময়সীমা আর পেছাবে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, আগামী ১ আগস্ট থেকেই এসব শুল্ক পরিশোধ করা বাধ্যতামূলক হবে এবং কোনো ধরনের ছাড় বা সময়সীমা বৃদ্ধির সুযোগ থাকবে না।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) নিজের ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টের এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, গতকাল যেসব দেশের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং আজ, আগামীকাল ও সামনের কিছুদিনেও যেসব চিঠি পাঠানো হবে, সবগুলোতে পরিষ্কার বলা আছে—শুল্ক সংগ্রহ শুরু হবে ২০২৫ সালের ১ আগস্ট থেকে। এই তারিখে কোনো পরিবর্তন আসেনি এবং আসবেও না। অর্থাৎ, ১ আগস্ট থেকেই সব অর্থ পরিশোধযোগ্য হয়ে যাবে। কোনো ধরনের সময় বাড়ানো হবে না।
এর আগে, গত ৭ জুলাই ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৪টি দেশের ওপর আমদানি শুল্কের নতুন হার ঘোষণা করেন। এসব দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪০ শতাংশ শুল্ক পড়েছে মিয়ানমার ও লাওসের ওপর। বাংলাদেশকে ৩৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের কথা জানানো হয়েছে।
ট্রাম্পের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই দেশগুলোর বাণিজ্য সম্পর্ক ‘অসম’ এবং তাদের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতেই এই শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই জানিয়েছেন, এই সময়সীমা ‘শতভাগ চূড়ান্ত নয়’। অর্থাৎ আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে কোনো সমঝোতা হলে শুল্কহারের পরিবর্তন হতে পারে।
আন্তর্জাতিক
গোল্ডম্যান স্যাক্সের সিনিয়র উপদেষ্টা হলেন ঋষি সুনাক

বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাক্সের সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ব্যাংক খাত ভূ-রাজনৈতিক ও নিয়ম-কানুনের অনিশ্চয়তায় থাকায়, অভিজ্ঞ এই নীতিনির্ধারকের যোগদান গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
গোল্ডম্যান স্যাক্সে ঋষি সুনাকের এই নিয়োগ একধরনের প্রত্যাবর্তনও বটে। ২০০০ সালে তিনি প্রথম গোল্ডম্যান স্যাক্স গ্রীষ্মকালীন ইন্টার্ন হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটিতে বিশ্লেষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
গোল্ডম্যান স্যাক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডেভিড সলোমন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই ভূমিকায় তিনি আমাদের বৈশ্বিক ক্লায়েন্টদের গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ে পরামর্শ দেবেন এবং সামষ্টিক অর্থনীতি ও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তার বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্লেষণ শেয়ার করবেন।’
রয়টার্স জানায়, এই পদক্ষেপটি একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ক্যারিয়ারধারার ইঙ্গিত দেয়। প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তারা প্রায়ই আর্থিক খাতে প্রবেশ করেন। তাদের নীতিগত অভিজ্ঞতা ও বৈশ্বিক সংযোগকে এই খাতে কৌশলগত সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এর আগেও যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন ব্ল্যাকরকে উপদেষ্টা হিসেবে এবং সাজিদ জাভিদ সেন্ট্রিকাস বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানে পার্টনার হিসেবে যোগ দেন।
বর্তমানে, ব্যাংকগুলো এমন অভিজ্ঞতাকে আরও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, কারণ তারা ক্রমশ জটিল হয়ে ওঠা বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ক্লায়েন্টদের গাইড করতে চায়।
সুনাক ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত অর্থমন্ত্রীর (চ্যান্সেলর অফ দ্য এক্সচেকার) দায়িত্বে ছিলেন।
২০২৪ সালে লেবার পার্টির কেয়ার স্টারমারের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়ার পর তিনি প্রধানমন্ত্রী এবং কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। বর্তমানে তিনি রিচমন্ড এবং নর্থালারটনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
কাফি
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশিদের কম খরচে গোল্ডেন ভিসা দেবে দুবাই, সুবিধা কী

সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা পেতে বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রয়োজন হতো। তবে এখন ভারতীয় এবং বাংলাদেশিদের জন্য চালু হয়েছে একটি নতুন ধরনের গোল্ডেন ভিসা, যেটি মূলত মনোনয়ন-ভিত্তিক। ফলে এ ভিসা পেতে আর ব্যবসা বা সম্পত্তিতে বিশাল বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে না।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা পেতে দেশটিতে কোনো ব্যবসা অথবা কমপক্ষে ২ মিলিয়ন দিরহাম (৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার বেশি) মূল্যের সম্পত্তি কিনতে হতো। তবে, নতুন ‘মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসা নীতি’র আওতায় ভারতীয় ও বাংলাদেশিরা ১ লাখ দিরহাম (প্রায় ৩৩ লাখ টাকার কিছু বেশি) ফি দিয়ে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার ভারতীয় এ নতুন ভিসার জন্য আবেদন করতে প্রস্তুত।
ভারত ও বাংলাদেশের জন্য এ নতুন ভিসা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার প্রক্রিয়া চলছে। রায়াদ গ্রুপ নামে একটি পরামর্শক সংস্থা ভারত ও বাংলাদেশে মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার প্রাথমিক রূপটি পরীক্ষা করার দায়িত্ব পেয়েছে। রায়াদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়াদ কামাল আইয়ুব এ নতুন ভিসাকে ভারতীয় ও বাংলাদেশিদের জন্য একটি ‘সুবর্ণ সুযোগ’ বলে অভিহিত করেছেন।
ভারত ও বাংলাদেশের জন্য এই পাইলট প্রকল্প সফলভাবে শেষ হওয়ার পর, সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যান্য সিইপিএ (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট) আওতাভুক্ত দেশগুলোতেও এই নতুন ভিসা চালু করা হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া কেমন হবে?
নতুন গোল্ডেন ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া এবং অনুমোদনের বিষয়ে রায়াদ কামাল আইয়ুব বলেন, যারা এই ভিসার জন্য আবেদন করবেন, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড (অতীত ইতিহাস) যাচাই করা হবে। এর আওতায় অর্থপাচার এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের রেকর্ড যাচাইও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আবেদনকারীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও পরীক্ষা করা হবে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এই ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হলো, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাজার এবং ব্যবসাগুলো যেন আবেদনকারীর কাছ থেকে সংস্কৃতি, অর্থ, বাণিজ্য, বিজ্ঞান, স্টার্টআপ, পেশাদার পরিষেবা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কীভাবে উপকৃত হতে পারে, তা নির্ধারণ করতে পারে।
রায়াদ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘এরপর রায়াদ গ্রুপ আবেদনপত্রটি সরকারের কাছে পাঠাবে, সরকারের নির্দিষ্ট দপ্তর মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
আবেদনকারীদের দুবাই ভ্রমণ করতে হবে এবং তারা নিজ দেশ থেকে প্রাথমিক অনুমোদন নিতে পারবেন।
রায়াদ জানান, আবেদনগুলো ভারত ও বাংলাদেশের ওয়ান ভাস্কো সেন্টার (ভিসা কনসিয়ারজ সার্ভিস কোম্পানি), তাদের নিবন্ধিত অফিস, অনলাইন পোর্টাল, অথবা তাঁদের ডেডিকেটেড কল সেন্টারের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে।
নতুন ভিসার সুবিধা
এই নতুন ভিসার অন্যতম বড় সুবিধা হলো, এটি সম্পত্তি-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা থেকে আলাদা। সম্পত্তি-ভিত্তিক ভিসা সম্পত্তি বিক্রি বা ভাগ হয়ে গেলে বাতিল হয়ে যেতে পারে, কিন্তু মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসা একবার পেলে তা স্থায়ী হবে।
রায়াদ আরও জানান, যারা এই ভিসার জন্য মনোনীত হবেন, তারা পরিবারকে দুবাইতে নিয়ে আসতে পারবেন এবং তাদের ভিসার ওপর ভিত্তি করে গৃহকর্মী ও গাড়িচালক রাখতে পারবেন। এ ছাড়া তারা দুবাইতে যেকোনো ব্যবসা বা পেশাদার কাজ করতে পারবেন।
কাফি
আন্তর্জাতিক
৩৫শ বছরের পুরনো শহরের সন্ধান পেলেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর উত্তরাঞ্চলের বারাঙ্কা প্রদেশে এক প্রাচীন শহরের সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। ‘পেনিকো’ নামের এই শহরটি প্রায় ৩৫০০ বছরের পুরোনো বলে মনে করা হচ্ছে।
রবিবার (৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পেনিকো ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র, যা প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলীয় জনগোষ্ঠীকে আন্দিজ পর্বতমালা এবং আমাজন জঙ্গলের সঙ্গে সংযুক্ত করত। শহরটি রাজধানী লিমা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার উত্তর দিকে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬০০ মিটার (প্রায় ২০০০ ফুট) উঁচুতে অবস্থিত।
ধারণা করা হয়, শহরটি গড়ে উঠেছিল খ্রিস্টপূর্ব ১৮০০ থেকে ১৫০০ সালের মধ্যে— সে সময় মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার পাশাপাশি পৃথিবীর অন্য প্রান্তেও প্রাচীন সভ্যতাগুলোও গড়ে উঠছিল।
গবেষকরা বলছেন, এই আবিষ্কার আমেরিকার প্রাচীনতম সভ্যতা ‘কারাল’ সম্পর্কে নতুন ধারণা দিতে পারে। বিশেষত, এই সভ্যতা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ধ্বংস হওয়ার পর কী হয়েছিল, তা বোঝার ক্ষেত্রে।
ড্রোনচিত্রে দেখা যায়, একটি পাহাড়ের ঢালে গোলাকৃতি একটি কাঠামো, যার চারপাশে রয়েছে মাটি ও পাথরের তৈরি ভবনের ধ্বংসাবশেষ। এখন পর্যন্ত সেখানে খনন করে পাওয়া গেছে ১৮টি প্রাচীন স্থাপনা। যার মধ্যে উপাসনালয়, বসবাসযোগ্য ঘরবাড়ি এবং ধর্মীয় কেন্দ্রও রয়েছে।
এসব ভবনে খুঁজে পাওয়া গেছে নানা ধর্মীয় সামগ্রী, মানুষের এবং পশুর মূর্তি এবং ঝিনুক ও পুঁতির তৈরি গয়না। মূলত পেনিকো শহরটি কারাল সভ্যতার মূল কেন্দ্রস্থল সুপে উপত্যকার কাছাকাছি অবস্থিত। সেখানে প্রায় ৫০০০ বছর আগে (খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ সালে) আমেরিকার প্রাচীনতম শহর ‘কারাল’ গড়ে উঠেছিল।
কারাল শহরে রয়েছে ৩২টি স্মৃতিস্তম্ভ, যার মধ্যে রয়েছে বিশাল পিরামিড আকৃতির স্থাপনা, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং প্রাচীন নগর জীবনযাপন। বিশ্বাস করা হয়, এই সভ্যতা ভারত, মিসর, সুমের এবং চীনের মতো প্রাচীন সভ্যতাগুলোর সঙ্গে কোনো সংযোগ ছাড়াই নিজস্বভাবে গড়ে উঠেছিল।
প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ ড. রুথ শ্যাডি ১৯৯০-এর দশকে কারাল আবিষ্কার করেছিলেন এবং পেনিকোর সাম্প্রতিক গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, “পেনিকো শহরটি বাণিজ্যিক যোগাযোগের জন্য একটি কৌশলগত স্থানে গড়ে উঠেছিল। এটি উপকূল, পাহাড় এবং জঙ্গলের জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিনিময়ের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করত।”
পেরুর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ মার্কো মাচাকুয়াই বলেন, “পেনিকোর গুরুত্ব শুধু এর প্রাচীনত্বে নয় বরং এটি কারাল সভ্যতার ধারাবাহিকতারও প্রমাণ।”
উল্লেখ্য, পেরুতে এর আগেও বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার হয়েছে। যেমন আন্দিজ পর্বতের ইনকা দুর্গ ‘মাচু পিচু’ এবং উপকূলীয় মরুভূমির ‘নাজকা রেখা’। এখন পেনিকো আবিষ্কার এই ঐতিহাসিক ঐতিহ্যেই নতুন মাত্রা যোগ করেছে।