জাতীয়
বিটিআরসির পাওনা ৯২১ কোটি টাকা না দিয়ে পালাল তারা!

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর টেলিযোগাযোগ খাতে ব্যবসায় নামেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। বিদেশ থেকে টেলিফোন কল আনার ব্যবসায় নেমেছিলেন তিনি।
২০১২ সালে শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান ও ছেলে ইমতিনান ওসমানের নামে কে টেলিকম লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে বা আইজিডব্লিউ লাইসেন্স নেন, যার মাধ্যমে বিদেশ থেকে টেলিফোন কল আসত। কে টেলিকমের কাছে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পাওনা দাঁড়িয়েছিল ১২৬ কোটি টাকা। সেই টাকা তারা পরিশোধ করেনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শামীম ওসমানের পরিবার আত্মগোপনে চলে গেছে। ফলে সরকারের টাকা আদায় একেবারেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
শুধু শামীম ওসমান নয়, বিটিআরসি দ্বাদশ সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর ছেলে আসিফ শামস ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের পরিবারের প্রতিষ্ঠানসহ ছয়টি আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠানের কাছে ৯২১ কোটি টাকা পাবে। বিটিআরসি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তবে টাকা আদায় করতে পারেনি।
বিটিআরসির আগের প্রশাসনের বিরুদ্ধে টাকা আদায়ে জোর তৎপরতা না থাকা এবং মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে ঢিলেমির অভিযোগ ছিল। সংস্থাটির কমিশনার (অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগ) মুশফিক মান্নান চৌধুরী বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিটিআরসি এখন কাজ করবে।
দেশের বাইরে থেকে করা (আন্তর্জাতিক ইনকামিং) কলগুলো আইজিডব্লিউ অপারেটরের মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করে। নীতিমালা অনুসারে, আন্তর্জাতিক কলের আয় থেকে ৪০ শতাংশ অর্থ বিটিআরসিকে দিতে হয়। যদিও ছয়টি প্রতিষ্ঠান সেই টাকা দেয়নি।
দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধির আগে আন্তর্জাতিক কলসংখ্যা অনেক বেশি ছিল। আইজিডব্লিউ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০১৫ সালেও দেশে প্রতিদিন ১০ কোটি মিনিট কল আসত। এখন অবশ্য তা প্রায় দেড় কোটি মিনিটে নেমে এসেছে। কারণ হলো, মানুষ এখন হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, সিগন্যাল, টেলিগ্রাম ইত্যাদি ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে কথা বলেন। তবু এখন ২৪টি আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
বিটিআরসির তথ্য মতে, পাওনা না দেওয়া ৬টি প্রতিষ্ঠানের ৫টি ২০১২ সালের এপ্রিলে লাইসেন্স নেয়। আরেকটি লাইসেন্স পায় একই বছরের অক্টোবরে। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে তারা ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে তাদের লাইসেন্স বাতিল করে বিটিআরসি। এসব প্রতিষ্ঠান রাজস্ব ভাগাভাগি বাবদ প্রায় ৬০৯ কোটি টাকা, লাইসেন্স ফি বাবদ ৭৩ কোটি টাকা, মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) বাবদ ১২ কোটি টাকা এবং বিলম্ব মাশুল বাবদ ২২৭ কোটি টাকা পরিশোধ করেনি।
বিটিআরসি ও আইজিডব্লিউ খাতের সূত্র বলছে, এই ছয় প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যই ছিল অল্প সময়ে বড় অঙ্কের অর্থ আয় করে চলে যাওয়া। দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবসা করা তাদের লক্ষ্য ছিল না। এ কারণে তখন কম খরচে কল এনে তারা বিপুল অর্থ আয় করে। সেখান থেকে বিটিআরসির পাওনা ও লাইসেন্স ফি না দিয়ে তারা চলে যায়।
যাঁদের কাছে পাওনা
বিটিআরসি এবং যৌথ মূলধনী কোম্পানি ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) সূত্র জানিয়েছে, জাহাঙ্গীর কবির নানকের মেয়ে সৈয়দা আমরিন আঁখি ও স্ত্রী সৈয়দা আরজুমান্দ বানুর নামে রাতুল টেলিকমের লাইসেন্স নেওয়া হয়েছিল। বিটিআরসি তাঁদের কাছে ১৩০ কোটি ৪০ লাখ টাকা পায়।
শামসুল হক টুকুর ছেলে ও পাবনার বেড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র এস এম আসিফ শামসের প্রতিষ্ঠান ভিশন টেলের কাছে ২৩৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা পাবে বিটিআরসি। শামস ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর অংশীদারত্ব প্রত্যাহার করেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছিল, ভিশন টেলের মালিকানায় ছিলেন অনলাইন প্রতারণার ঘটনায় আলোচিত রিং আইডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী আইরিন ইসলামও।
শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান ও পুত্র ইমতিনান ওসমানের নামে থাকা কে টেলিকমের মালিকানা পরিবর্তন করা হয় ২০১৩ সালের আগস্টে। নতুন মালিক হন মো. সাখাওয়াত হোসেন, দেবব্রত চৌধুরী ও মো. রকিবুল ইসলাম। এই তিন ব্যক্তির কোনো খোঁজ বিটিআরসি পায়নি।
টেলেক্স লিমিটেড নামের আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠানের কাছে ১১৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা পাওনা বিটিআরসির। আরজেএসসি সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান। তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
অ্যাপল গ্লোবালটেল কমিউনিকেশনসের কাছ থেকে ১১৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা পাবে বিটিআরসি। আরজেএসসি থেকে ৮ সেপ্টেম্বর জানা যায়, অ্যাপল গ্লোবালটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন মজুমদার। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন ফারহানা জাফর, মো. জাবেদ আলী, মো. নাসির উদ্দিন ও মো. নূর হোসেন। তাঁদের সম্পর্কেও বিস্তারিত জানা যায়নি।
বিটিআরসি ১৯৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা পাবে বেস্টটেক টেলিকম নামের একটি আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠানের কাছে। এর মালিক মো. তারিকুল ইসলাম, এনায়েত কবির ও মো. মামুন-উর-রশিদ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিস্তারিত জানেন না।
টাকা পাবে মোবাইল অপারেটররাও
আইজিডব্লিউগুলোর আয়ের একটি অংশ মোবাইল অপারেটররাও পায়। এই ছয় প্রতিষ্ঠান মোবাইল অপারেটরদের টাকাও দেয়নি। ৪ অপারেটর পাবে ৩২০ কোটি টাকা।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকার বিটিআরসির মতো কমিশনকেও করায়ত্ত করেছে এবং ক্ষমতা খর্ব করেছে। পটপরিবর্তনের সুযোগে বিটিআরসিকে এসব বিষয়ে শক্ত ভূমিকা নিতে হবে। এমনকি এ ধরনের অনিয়মে বিটিআরসির কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
কাফি

জাতীয়
প্রতারকচক্র থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান পুলিশের

প্রতারকচক্র থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। বুধবার (৪ জুন) পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) ইনামুল হক সাগর গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এ বিষয়টি জানিয়েছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, সম্প্রতি প্রতারকচক্র দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিনব কৌশলে মাইক্রোবাসে যাত্রী তুলে প্রতারণা করছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতারকচক্র যাত্রীদের নির্জন স্থানে নিয়ে জিম্মি করে তাদের টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিচ্ছে।
আবার যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের কাছে ফোনকল করিয়ে বিকাশে অর্থ দাবি করছে। এ ধরনের অপরাধী থেকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে যাত্রী সাধারণকে অনুরোধ করা যাচ্ছে। এ ধরনের প্রতারণার কবল থেকে রক্ষা পেতে যাত্রীদের পথিমধ্যে থেকে মাইক্রোবাস বা এ জাতীয় যানবাহনে না উঠার জন্য পুলিশ অনুরোধ জানাচ্ছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, যাত্রাপথে অপরিচিত কোন ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো খাবার গ্রহণ না করা এবং অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টিসহ প্রতারকচক্রের ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।
একাকী ভ্রমণের সময় সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ। নিজের অবস্থান এবং গন্তব্য সম্পর্কে পরিবারের সদস্য বা নিকটজনকে অবহিত রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
কাউকে সন্দেহ হলে বা সন্দেহজনক কোনো গাড়ি বা পরিস্থিতি লক্ষ্য করলে তৎক্ষণাৎ নিকটস্থ পুলিশকে জানান বা ৯৯৯ এ কল করতে বলা হয়েছে।
কাফি
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। আজ বুধবার (৪ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তিনি সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎকালে হাইকমিশনার কুক সম্মানজনক কিং চার্লস হারমনি পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান।
পুরস্কারের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি একটি মহান সম্মানের বিষয়।’
অধ্যাপক ইউনূস ৯ জুন ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং ১৩ জুন ফিরে আসবেন। সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ঊর্ধ্বতন ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনারের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, যেমন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিমান চলাচল সংক্রান্ত সহযোগিতা, অভিবাসন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়াও অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কারমূলক উদ্যোগ ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা হাইকমিশনারকে জানান, জাতীয় ঐকমত্য গঠনে গঠিত কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় দফার আলোচনা এ সপ্তাহে শুরু হয়েছে এবং শিগগির তা শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের সামুদ্রিক গবেষণা কার্যক্রম আরও উন্নত করতে যুক্তরাজ্যের কারিগরি সহায়তা এবং ব্রিটিশ গবেষকদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ এবং ব্রিটিশ উপহাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যান উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
আজ রাত থেকে বন্ধ হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল

আসছে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা বজায় রাখা এবং শিডিউল বিপর্যয় নিরসনে আজ বুধবার (৪ জুন) রাত থেকে বন্ধ হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল।
ঈদ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের নেওয়া কর্মপরিকল্পনা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়, ঈদের আগে ৫ জুন রাত ১২টার পর থেকে ঈদের দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কনটেইনার ও জ্বালানী তেলবাহী ট্রেন ছাড়া অন্যান্য সকল গুডস ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
আরও বলা হয়, ঈদুল আজহার দিন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কতিপয় মেইল এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। তবে কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।
কাফি
জাতীয়
পদ্মা সেতু নির্মাণে মোবাইলে সারচার্জ বন্ধে আইনি নোটিশ

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য মোবাইল ফোনে ব্যয়ের ওপর চলামন ‘সারচার্জ’ কর্তন বন্ধে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ দিয়েছে বেসরকারি ভোক্তা অধিকার ‘কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি’ (সিসিএস)।
আজ বুধবার (৪ জুন) ৫ মন্ত্রণালয়ের সচিব, এনবিআর ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং ৪ মোবাইল অপারেটরকে সিসিএস নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদের পক্ষে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী এ কে এম আজাদ হোসাইন।
নোটিশে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের থেকে মোবাইলে খরচের ওপর ১ শতাংশ সারচার্জ চালু রয়েছে। ২০১৬ সালে ‘সারচার্জ‘ আরোপ করা হয় যা বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে এই সারচার্জের মাধ্যমে ভোক্তাদের থেকে দুই হাজার (২০০০) কোটি টাকার বেশি আদায় করা হয়েছে। কিন্তু ২০২২ সালে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হলেও মোবাইল ফোনে সারচার্জ কর্তন বন্ধ করা হয়নি।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু নির্মাণে ভোক্তাদের থেকে সারচার্জ কর্তনের জন্য ২০১৫ সালে ‘উন্নয়ন সারচার্জ ও লেভি (আরোপ ও আদায়) আইন’ করে সরকার। ওই আইনের অধীনে ২০১৬ সালের ১০ মার্চ অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে ‘সারচার্জ‘ আদায় শুরু করে সরকার। তবে আইনের ৪নং ধারায় বলা হয়েছে, সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তৎকর্তৃক আরোপিত শর্তে ও নির্ধারিত মেয়াদে উন্নয়ন সারচার্জ আদায় করতে পারবে। কিন্তু প্রজ্ঞাপনে কোনো মেয়াদ নির্দিষ্ট না করেই সারচার্জ আদায় শুরু হয়। ফলে সারচার্জ আদায় ৯ বছর চললেও তা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেই। যা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ায় এবং মেয়াদ নির্দিষ্ট না করে বেআইনিভাবে ‘সারচার্জ‘ আদায়ের মাধ্যমে ভোক্তার স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ফলে ভোক্তা অধিকার সংস্থা হিসেবে সিসিএস এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আইনি পদক্ষেপের প্রথম ধাপ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয় সচিব, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিব, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি এবং টেলিটক কর্তৃপক্ষকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে আগামী ৭ দিনের মধ্যে মোবাইল ফোনে ব্যয়ের ওপর চলমান ১ শতাংশ ‘সারচার্জ‘ কর্তন বন্ধ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে সারচার্জ কর্তন বন্ধ করা না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
কাফি
জাতীয়
এক বদলির জন্য এক কোটি টাকা অফার এসেছিল: শিক্ষা উপদেষ্টা

একটি বড় পদের পদায়নের জন্য আমার কাছে তদবির এসেছিল। ওই পদে বদলির জন্য এক কোটি টাকা অফার করেছিল বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
বুধবার (৪ জুন) সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়সভায় শিক্ষাখাতে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে এ কথা জানান তিনি। সভায় আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
শিক্ষাব্যবস্থা স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত করতে সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে অবস্থান করছে জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা উদাহরণ দেন, ‘একটি বড় পদের পদায়নের জন্য আমার কাছে তদবির এসেছিল। তার জন্য প্রথিতযশা একজন বুদ্ধিজীবী তদবির করেছিলেন। পরে তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখি তিনি ওই পদের জন্য যোগ্য নন। তখন আমরা তাকে প্রত্যাখ্যান করি। পরবর্তীতে তিনি অন্য মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন এবং তিনি আমাকে একটা অ্যামাউন্ট অফার করেন। ’
অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, এক কোটি টাকা অফার করেছিলেন তিনি। তিনি যাকে দিয়ে বলিয়েছিলেন, তিনি আমার পরিচিত। যিনিও একটি প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন। আমি আর বিস্তারিত বলতে চাচ্ছি না। আমি বোঝাতে চাচ্ছি, আমার সহকর্মী যারা আছেন তারা যেন নৈতিক অবস্থানে স্থির থাকেন। আমি পদে থাকা অবস্থায় কোনো দুর্নীতি সহ্য করব না।
দুর্নীতির কথা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শোনেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমার কাছে যে পত্রিকাগুলো আসে, সেগুলোর বেশিরভাগ কাটিংয়ে দুর্নীতির খবর থাকে। তবে কোনটা সত্য, কোনটা সত্য না, তা যাচাই করার সব সময় সক্ষমতা আমাদের হাতে থাকে না। তবে যেখানে ঘটনা ঘটে, আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট-জিরো টলারেন্স।
সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কাফি