টেলিকম ও প্রযুক্তি
নতুন আইসিটি সচিবের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আইসিটি উদ্যোক্তা কাউন্সিলের সাক্ষাৎ
সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে বৈষম্যবিরোধী আইসিটি উদ্যোক্তা কাউন্সিলের প্রতিনিধি দল।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কাউন্সিলের সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার তালহা ইবনে আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল সাক্ষাতে অংশ নেন। প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন মনিরুল মাওলা, এ এন এম আবরার, আব্দুল্লাহ নাবিল, ইঞ্জিনিয়ার সাজিদ , মো. জুয়েল প্রমুখ।
সাক্ষাৎকালে বৈষম্যবিরোধী আইসিটি উদ্যোক্তা কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ নতুন সচিবকে শুভেচ্ছা জানান এবং আইসিটি খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ নামে যে সকল দুর্নীতি করা হয়েছে সেগুলো কঠোর হাতে দমন করতে আহ্বান জানান। উদ্যোক্তারা আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সিন্ডিকেট ভেঙে প্রাইভেট সেক্টরের সকল কোম্পানি ও উদ্যোক্তাদের জন্য সুষম কর্মপরিবেশ সৃষ্টিরও দাবি জানান।
এ সময় সরকারের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী তাদেরকে আশ্বস্ত করে তথ্য প্রযুক্তি সেক্টরকে দুর্নীতিমুক্ত ও সত্যিকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল জনগণকে পৌঁছে দিতে সময় ও তরুণ উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
এর আগে, গতকাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনে অডিট ক্যাডারের কর্মকর্তা বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (অতিরিক্ত সচিব) শীষ হায়দার চৌধুরীকে সচিব পদে নিয়োগ দেয় সরকার। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে কথা বলে প্রকিউরমেন্ট ও অডিট খাতে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এই সচিবের দক্ষতা ও সুনাম সম্পর্কে জানা গিয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
স্মার্টব্যান্ডে যুক্ত হচ্ছে গুগলের এআই চ্যাটবট জিমিন
স্মার্টওয়াচে অসংখ্য নতুন নতুন ফিচার যুক্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অনেক আগেই এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি যুক্ত হয়েছে স্মার্টওয়াচে। এবার স্মার্টব্যান্ডে যুক্ত হচ্ছে গুগলের এআই চ্যাটবট জিমিন। ফিটবিটে একটি নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বৈশিষ্ট্যযোগ করছে। যা ব্যবহারকারীদের তাদের স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস সম্পর্কে আরও ভালো তথ্য দেবে।
গুগল সম্প্রতি ফিটবিটে একটি নতুন এআই ফিচার যুক্ত করেছে, যা ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্য ও ফিটনেস ট্র্যাকিংকে আরও উন্নত করবে। এই ফিচারটির নাম গুগল এআই জিমিন, যা প্রযুক্তির সাহায্যে ব্যক্তিগত ফিটনেস সহায়তা প্রদান করবে। এই নতুন ইনোভেশনটি ফিটবিটের ইউজারদের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা করবে।
গুগল এআই জিমিন একটি উন্নত অ্যালগরিদমের মাধ্যমে কাজ করে, যা ব্যবহারকারীর ফিটনেস ডাটা, যেমন হাঁটার সংখ্যা, স্লিপ প্যাটার্ন, হার্ট রেট এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য তথ্য সংগ্রহ করে। এই তথ্য বিশ্লেষণ করে এআই ফিচারটি ব্যক্তিগতভাবে উপদেশ প্রদান করে।
ফিটনেস ট্র্যাকিংয়ের পাশাপাশি, এআই জিমিন ব্যবহারকারীদের খাদ্যাভ্যাস ও লাইফস্টাইল পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও নির্দেশনা দিতে সক্ষম। এটি খাদ্য সম্পর্কিত সুপারিশ, যেমন ক্যালোরি এবং পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করার জন্য টিপস, প্রদান করতে পারে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিজেদের স্বাস্থ্যগত লক্ষ্য অর্জনে আরও উৎসাহিত হতে পারবেন।
গুগল এআই জিমিনের একটি বিশেষত্ব হলো এটি ব্যবহারকারীর অগ্রগতি ট্র্যাক করতে পারে এবং সেই অনুযায়ী তাদের লক্ষ্য পুনর্বিবেচনা করতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি ব্যবহারকারী একটি নির্দিষ্ট ওজন কমানোর লক্ষ্য স্থির করেন, তবে এআই সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো বিশ্লেষণ করে এবং দৈনন্দিন কাজের পরামর্শ দেয়।
এছাড়া, ফিটবিটের ব্যবহারকারীরা গুগল সহায়তার মাধ্যমে বিভিন্ন ফিটনেস চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণ করতে পারবেন, যা তাদের ফিটনেস যাত্রাকে আরও মজাদার ও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলবে। এটি সামাজিক সংযোগ তৈরিতে সহায়ক হবে, যেখানে ব্যবহারকারীরা একে অপরের সাথে তাদের অগ্রগতি শেয়ার করতে পারবেন।
সার্বিকভাবে, গুগল এআই জিমিন ফিটবিটের জন্য একটি গেম চেঞ্জার হিসেবে প্রমাণিত হতে চলেছে। এটি শুধু ফিটনেস ট্র্যাকিংকেই উন্নত করবে না, বরং ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনকে উৎসাহিত করবে। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য প্রযুক্তির এ ধরনের উদ্ভাবন আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে আরও সহজ এবং সুস্থ করে তুলবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
বাজারে এসেছে রিয়েলমি ১২, প্রি-অর্ডারে লাখ টাকা পুরষ্কার
দেশের বাজারে এসেছে নতুন স্মার্টফোন রিয়েলমি ১২। মিডিয়াম বাজেটের ফোন হলেও এই মডেলে শক্তিশালী স্ন্যাপড্রাগন চিপসেট ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে ফোনটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে কাজ করবে। মডেলটি প্রি-অর্ডারের মাধ্যমে লাখ টাকার পুরস্কার জিতে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন গ্রাহকেরা।
রিয়েলমি ১২ মডেলে ৫ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারিসহ ৬৭ ওয়াটের সুপারভুক চার্জিং প্রযুক্তি থাকায় ১৯ মিনিটের মধ্যে শূন্য থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ হবে। এমনকি পাঁচ মিনিটেও ১৮ শতাংশ চার্জ বাড়িয়ে নিতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। সেই সঙ্গে রিয়েলমি ফোনটির প্রচারে স্লোগান ব্যবহার করেছে। এতে অত্যাধুনিক ফিচারের কমতি নেই।
দাম ও রং
রিয়েলমি ১২ ফোনটি ৮ জিবি (গিগাবাইট) র্যাম থাকলে ৮ জিবি ডাইনামিক র্যাম যুক্ত করা যাবে। সেই সঙ্গে ইন্টারনাল স্টোরেজ থাকবে ২৫৬ জিবি।
ফোনটির এই সংস্করণের দাম ২৯ হাজার ৯৯৯ টাকা রাখা হয়েছে।
প্রি-অর্ডারকারী গ্রাহকরা পেতে পারেন ১ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার এবং ৫০ হাজার টাকার দ্বিতীয় পুরস্কার।
ফোনটি দুটি রঙে পাওয়া যাবে—স্কাইলাইন ব্লু (আকাশি) ও পায়োনিয়ার গ্রিন (গাড় সবুজ)
ফিচার
ফোনটির ডিসপ্লেতে রেইনওয়াটার স্মার্ট টাচ প্রযুক্তি ব্যবহার করা রয়েছে। এটি বৃষ্টির সময় ভেজা হাতে ব্যবহার করা যাবে। যাদের হাত বেশি ঘামে তাদের জন্য ফিচারটি বেশ সুবিধা দেবে। আর এআই প্রোটেক্টিভ ফিল্ম টাচের মতো ফিচার, যা যে কোনো পরিস্থিতিতে সর্বোত্তম প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করে।
আর ফোনটি আনলকের জন্য এতে ইনডিসপ্লে টাচ ফিচার ব্যবহার করা হয়েছে।
ফোনটিতে ভ্যাপার চেম্বার কুলিং সিস্টেম রয়েছে। এটি শক্তিশালী চিপসেটের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে। ফলে ফোনটি চার্জ দেওয়ার সময় বা বেশিক্ষণ ব্যবহার করলেও এটি তেমন গরম হবে না।
এ ছাড়া অডিও শোনার অভিজ্ঞতাকে আরও ভালো করতে এতে হাই-রেস অডিও সার্টিফিকেশন অর্জন করা ডুয়েল স্টেরিও স্পিকার দেওয়া হয়েছে।
ফোনটির ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও মোড, ফটো মোড, নাইট মোড, স্ট্রিট শুটিং মোড, পোর্ট্রেট মোড, হাই পিক্সেল, প্রোফেশনাল প্যানোরামিক ভিউ, সুপার টেক্সট, টিল্ট-শিফট, টাইম-ল্যাপ্স, স্লো-মুভ, মুভি মোডে ছবি তোলা যাবে।
রিয়েলমি ১২ এর স্পেসিফিকেশন
পেছনের ক্যামেরা: ডুয়েল ক্যামেরা—অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজার (ওআইএস) প্রযুক্তির ৫০ মেগাপিক্সেল সনি এলওয়াইটি-৬০০ ক্যামেরা এবং ২ মেগাপিক্সেল মনো ক্যামেরা।
সেলফি ক্যামেরা: ১৬ মেগাপিক্সেল
নেটওয়ার্ক: ৪ জি
ওয়াইফাই: ২ দশমিক ৪ / ৫ গিগাহার্টজ
আয়তন: ১৬২.৯৫ এমএম x ৭৫.৪৫ এমএম x৭.৯২ এমএম
ওজন: ১৮৭ গ্রাম
ডিসপ্লে: ৬ দশমিক ৬৭ ইঞ্চি আলট্রা-স্মুদ অ্যামোলেড
রিফ্রেশ রেট: ১২০ হার্টজ
টাচ স্যাম্পলিং রেট: ১৮০ হার্টজ
ব্রাইটনেস: ২০০০ নিট পিক ব্রাইটনেস
অপারেটিং সিস্টেম: রিয়েলমি ইউআই ৫.০
চিপসেট: কোয়ালকম স্ন্যাপড্রগন ৬৮৫
সিপিইউ: অক্টাকোর ৬৪ বিট
জিপিইউ: অ্যাড্রেনো ৬১০
র্যাম: ৮ জিবি + ৮ জিবি
ইন্টারনাল স্টোরেজ: ২৫৬ জিবি
স্পিকার: ডুয়েল স্টেরিও স্পিকার
ব্লুটুথ: ৫.০
জিপিএস: আছে
ইউএসবি: ইউএসবি সি
ব্যাটারি: ৫০০০ এমএএইচ
চার্জিং: ৬৭ ওয়াট
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
ফেসবুক-গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন: নিরাপত্তা নাকি বিপদ?
ফেসবুক বা গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা অ্যাপে সরাসরি লগইন করা যায়। ফলে সেই ওয়েবসাইট বা অ্যাপে প্রবেশের জন্য আলাদা করে অ্যাকাউন্ট ও পাসওয়ার্ড লিখতে হয় না। আলাদা করে ই-মেইল বা পাসওয়ার্ড লেখার ঝামেলা এড়াতে অনেকেই নিজেদের ফেসবুক ও গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে অন্য সাইটে লগইন করে থাকেন। সিঙ্গেল সাইন ইন বা এসএসও নামের এ পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পেলেও তা নিরাপদ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মনে।
যেভাবে কাজ করে এসএসও পদ্ধতি
সাধারণত এসএসও পদ্ধতিতে গুগল ও ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য বেশি ব্যবহৃত হয়। এ পদ্ধতিতে অনলাইন অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করার পর সেটি ফেসবুক বা গুগলের মতো প্রাথমিক অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যবহারকারীর নাম, ই–মেইল ঠিকানা, ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। তবে কখনো কখনো ব্যবহারকারীর ফোন নম্বর, জন্মদিন, বয়স, আগ্রহের বিষয়সহ অবস্থানের তথ্যও সংগ্রহ করে। ফলে এসএসও পদ্ধতিতে লগইন করলে অন্য সাইটগুলো কোন কোন তথ্য সংগ্রহ করছে, তা ব্যবহারকারী জানতে পারেন না। শুধু তা–ই নয়, ফেসবুক ও গুগল অ্যাকাউন্ট থেকে সংগ্রহ করা তথ্য কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনও দেখিয়ে থাকে ওয়েবসাইট ও অ্যাপগুলো।
ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি ও সাইবার হামলার আশঙ্কা
এসএসও পদ্ধতি ব্যবহার করলে ব্যবহারকারীদের ফেসবুক ও গুগল অ্যাকাউন্টের ব্যক্তিগত তথ্য গোপনে সংগ্রহ করে বিক্রি করে দিতে পারে বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা অ্যাপ। এসব তথ্য কাজে লাগিয়ে সাইবার হামলাও চালানো যায়। ফলে নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি হয়। শুধু তা–ই নয়, এসব তথ্য কাজে লাগিয়ে সাইবার অপরাধীরা যদি কোনো একটি ওয়েবসাইটের অ্যাকাউন্টের দখল নিতে পারে তবে খুব সহজেই ব্যবহারকারীদের অন্য অ্যাকাউন্টগুলোও হ্যাক করা যায়। ফলে এসএসও পদ্ধতি ব্যবহার করে কোনো অনলাইন সেবার অ্যাকাউন্ট চালু করা সহজ হলেও এতে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তাঝুঁকি রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
টেলিকম ও প্রযুক্তি
মনিটাইজেশন আরও সহজ করছে ফেসবুক
মেটা প্ল্যাটফর্মসের মালিকানাধীন বিশ্ব-সামাজিক আন্তযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট হচ্ছে ফেসবুক। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। ব্যবহারকারীরা বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলি হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন। সেইসঙ্গে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন।
এ ছাড়া ফেসবুকে পেজ খুলে অনেকেই ব্যবসা করে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করতে পারছেন ঘরে বসেই। আবার অনেকেই ফেসবুকে ভিডিও বা বিভিন্ন কনটেন্ট বানিয়ে আয় করে থাকেন। তবে কনটেন্ট বা ভিডিও শেয়ারের মাধ্যমে আয় করতে হলে ভিন্ন ভিন্ন শর্ত রয়েছে। যা ভাঙলে আয় করা সহজ হয়ে উঠে না। তাই এবার ভিডিও নির্মাতাদের জন্য নতুন কিছু পরিবর্তন আনছে ফেসবুক।
সম্প্রতি দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে, তিন পদ্ধতিতে ফেসবুক থেকে আয় করা যায়। সেগুলো হচ্ছে ইন-স্ট্রিম অ্যাডস, অ্যাডস অন রিলস ও পারফরম্যান্স বোনাস। তবে এসব ব্যবস্থার পরিবর্তন আনছে ফেসবুক। কনটেন্ট মনিটাইজেশন প্রোগ্রামে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য আয়ের পথ আরও সহজ এবং সুবিধাজনক করে তুলবে এ পরিবর্তন।
জানা গেছে, নতুন ব্যবস্থায় ইন-স্ট্রিম অ্যাডস, রিল অ্যাডস, এবং পারফরম্যান্স বোনাসকে একটি সিঙ্গেল প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করেছে। তবে নতুন এ মনিটাইজেশন প্রক্রিয়া চালু হলে ভিডিও নির্মাতাদের আবেদন করে অনবোর্ডিং প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে হবে। এরপরই ইন-স্ট্রিম অ্যাডস, অ্যাডস অন রিলস ও পারফরম্যান্স বোনাস এ তিন পদ্ধতিতে আয় করা যাবে। ফলে বারবার আবেদন করতে হবে না।
২০২৫ সালে সবার জন্য নতুন এই মনিটাইজেশন মডেলটি উন্মুক্ত করা হবে। বর্তমানে এটি শুধুমাত্র আমন্ত্রিত ক্রিয়েটরদের জন্য বিটা ভার্সনে চালু করা হয়েছে। বিটা ভার্সনের অংশ হিসেবে এক মিলিয়ন ক্রিয়েটর এ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সামিট সিন্ডিকেটের কবজায় দেশের ইন্টারনেট খাত!
বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দেওয়ার কারণে ইন্টারনেট সেবার একক কর্তৃত্ব হারিয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি)। একসময় একক নিয়ন্ত্রণ থাকলেও বর্তমানে দেশের চাহিদার অর্ধেকেরও কম ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি। বাকি অর্ধেকের বেশি সরবরাহ করে বেসরকারি ৭টি কোম্পানি। যদিও দেশের চাহিদার চেয়ে বেশি সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটির।
জানা গেছে, দেশে বর্তমানে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৬ হাজার জিবিপিস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথের চাহিদা রয়েছে। আর বিএসসিপিএলসি দুটি সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার ৭০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করছে। অথচ কোম্পানিটির সক্ষমতা রয়েছে প্রায় ৭ হাজার ২০০ জিবিপিএস। অন্যদিকে, আইটিসির লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৭টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করছে ৩ হাজার ৩০০ জিবিপিএস। যার শুধু সামিটই সরবরাহ করে ৮০ শতাংশ। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে বিএসসিপিএলসির অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে প্রায় ৫ হাজার জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ। সরকার হারাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব।
সক্ষমতা থাকার পরও কেন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যান্ডউইথ বিক্রি কমে যাচ্ছে—এর কারণ অনুসন্ধানে গিয়ে জানা গেছে, বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় এবং ‘কাছের লোকদের’ মালিকানাধীন কোম্পানিকে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়। ফলে সরকারি কোম্পানিটির সরবরাহের পরিমাণ অর্ধেকেরও নিচে নেমে আসে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছে সামিট। আমদানি থেকে শুরু করে গ্রাহক পর্যায় পর্যন্ত ইন্টারনেট সরবরাহের সব ধরনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে আলোচিত এই কোম্পানিকে। সরকারি কর্মকর্তারাই এই সুযোগ করে দিয়েছেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দেশে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ আমদানি করে ইন্টারনেট সেবা দিয়ে আসছিল বিএসসিপিএলসি। অন্যদিকে, ইন্টারন্যাশনাল টেরিসট্রিয়াল কেবল (আইটিসি) লাইসেন্স নিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ আমদানি করে। কোনো কারণে সাবমেরিন কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হলে শুধু এর বিকল্প হিসেবে সামিটসহ ৭টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে আইটিসি লাইসেন্স দেওয়া হলেও বর্তমানে বেসরকারি কোম্পানিগুলোই নিয়ন্ত্রণ করছে দেশের ইন্টারনেট ব্যবসা।
এমনকি লভ্যাংশ প্রদানেও বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বিটিআরসির রেভিনিউ শেয়ারিং নীতিমালায় সাবমেরিন কেবল লাইসেন্সের ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে লভ্যাংশের ৩ শতাংশ রাজস্ব দেওয়ার বিধান থাকলেও বেসরকারি আইটিসিদের জন্য সেটা মাত্র এক শতাংশ। দেশের বেশিরভাগ ব্যান্ডউইথ সরবরাহকারী সামিটকে বিশেষ সুবিধা দিতেই এটা করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দেশের ইন্টারনেট ব্যবসা মূলত সামিটের নেতৃত্বাধীন বেসরকারি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দখলে চলে যায়। এমনকি সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএসসিপিএলসিকেও সামিটের ওপর নির্ভরশীল করা হয়েছে। এই নির্ভরশীলতা কমাতে গত বছর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের অনুপাত ৭০:৩০ নির্ধারণের অনুরোধ জানায় বিএসপিএলসি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এ বিষয়ে এখানো কোনো অগ্রগতি হয়নি।
প্রয়োজন না থাকলেও বেসরকারি খাতে সাবমেরিনের লাইসেন্স: বিএসসিপিএলসির সক্ষমতা বাড়াতে নতুন করে হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল সিমিউই-৬ প্রকল্প চলমান রয়েছে, যা ২০২৫ সালে শেষ হবে। এর মধ্য দিয়ে বিএসসিপিএলসি প্রায় ১৩ হাজার ২০০ জিবিপিএস অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ সক্ষমতা অর্জন করবে। মোট ব্যান্ডউইথ ক্ষমতা দাঁড়াবে ২০ হাজার ৪২০ জিবিপিএসর বেশি, যা বর্তমান চাহিদার তিন গুণেরও বেশি।
এদিকে, সাবমেরিন কেবল পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণে বছরে ৫০-৬০ কোটি টাকা খরচ হয়। তৃতীয়টি চালু হলে খরচ হবে প্রায় শতকোটি টাকা। ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে এই ব্যয় মেটানো হয়। ব্যান্ডউইথ বিক্রি না হলে পরিচালন ব্যয় উঠে আসাই চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
এর পরও সামিটসহ তিনটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ব্যন্ডউইথ আমদানির জন্য সাবমেরিন কেবলের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। লাইসেন্স পাওয়া তিনটি কোম্পানি সামিট কমিউনিকেশন্স লিমিটেড, সিডিনেট কমিউনিকেশন্স লিমিটেড ও মেটাকোর সাবকম লিমিটেড। তৃতীয় সাবমেরিন কেবল চালু হলে যেখানে সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাহিদার প্রায় তিন গুণ সক্ষমতা বাড়বে, সেখানে বেসরকারি খাতে সাবমেরিন কেবলের লাইসেন্স দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
সাবমেরিন কেবলের লাইসেন্স পাওয়া কোম্পানির মধ্যে সামিট কমিউনিকেশন্সের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ফরিদ খান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের ছোট ভাই। মেটাকোর সাবকম কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক এবং সিডিনেটের পরিচালক হিসেবে আছেন চৌধুরী নাফিজ সারাফাত। বর্তমানে এই তিনটি কোম্পানির অনুকূলে বিএসসিপিএলসির কেপিআইভুক্ত নিজস্ব জমি এবং সাবমেরিন কেবলের পিভিসি ডাক্ট লিজ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বিএসসিপিএলসির সাবেক এবং বর্তমান কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই বিএসসিপিএলসির কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশনের জমি এবং সাবমেরিন কেবলের পিভিসি ডাক্ট লিজ নিতে আবদার করে চিঠি পাঠায় প্রাইভেট তিন সাবমেরিন কেবল কোম্পানি। কিন্তু কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই অনুমোদন করতে তড়িঘড়ি করে ৭ দিনের মধ্যে বিএসসিপিএলসির ২২৮তম পর্ষদ সভায় প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। যদিও সরকার পতনের পর সেটা আর সম্ভব হয়নি।
টেলিকম ও ইন্টারনেট খাতে সামিটের আধিপত্য
২০০৯ সালে আত্মপ্রকাশের পরে টেলিকম ও ইন্টারনেট অবকাঠামো খাতে দেশে সবচেয়ে বড় কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে সামিট কমিউনিকেশন। কোম্পানিটির হাতে রয়েছে টাওয়ারের ব্যবসা, আইআইজি, আইটিসি, এনটিটিএন আর সবশেষে সাবমেরিন কেবলের লাইসেন্স। সব ধরনের লাইসেন্স থাকায় সামিট গ্রাহককে আইটিসি থেকে ব্যান্ডউইথ কিনতে বাধ্য করছে। সামিট ব্যান্ডউইথ এবং অপটিক্যাল ফাইবারের মিশ্রণে প্যাকেজ সেবার সুযোগ নিচ্ছে। এনটিটিএন লাইসেন্স থাকায় আইটিসি থেকে আগত ব্যান্ডউইথ আইআইজি পর্যন্ত সামিট নিজেই নিয়ে যেতে পারে। বিএসসিপিএলসির এনটিটিএন লাইসেন্স না থাকার সুবিধা গ্রহণ করছে সামিট। এসবের মধ্য দিয়ে ইন্টারনেট সিস্টেমের প্রতিটি খাতের লাইসেন্স সামিটকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দিয়ে একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, গত নভেম্বরে বিএসসিপিএলসি পাওনা বকেয়া থাকার কারণে ১৯টি আইআইজি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যান্ডউইথ সীমিত করে। এ কারণে দেশের ব্যান্ডউইথের প্রায় ৫০ শতাংশ প্রভাবিত হয় এবং গ্রাহকদের প্রায় ৪ দিন সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আসলে এই পুরো বিষয়টি বিএসসিপিএলসি এবং বিটিআরসির যোগসাজশে ঘটানো হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আইআইজি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যান্ডউইথ সীমিত করার পেছনে যৌথভাবে কাজ করেছেন আইসিটি সচিব ও সামিট। সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান বিগত সময়ের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী আজিজ খান এবং সামিট কমিউনিকেশন্সের চেয়ারম্যান ফরিদ খানের নির্দেশনা এবং পরামর্শে সামিটের প্রতিযোগী আইআইজিদের একটি তালিকা তৈরি করে সচিব বরাবর পাঠানো হয়। এরপর বিএসসিপিএলসি বোর্ড সভায় নিজ ক্ষমতাবলে সব আইআইজির ব্যান্ডউইথ সীমিত করার আদেশ দেন আইসিটি সচিব। মূলত সামিটের রাজনৈতিক চাপে ব্যান্ডউইথ সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসসিপিএলসি। এ ছাড়া সরকারি তিনটি প্রতিষ্ঠানের এনটিটিএন লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও কার্যত অকেজো করে রাখা হয়েছে। যাতে এনটিটিএন ব্যবসা সামিট এবং আরেক আইটিসি লাইসেন্সধারী ফাইবার এট হোম নির্দ্বিধায় করতে পারে।
ব্যক্তিস্বার্থে প্রাইভেট কোম্পানিকে বিশেষ সুবিধা: বিএসসিপিএলসির এবং বিটিআরসি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিজেদের স্বার্থে বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পানির কাছে স্পর্শকাতর তথ্য পাচার করে বলে অভিযোগ উঠেছে। তথ্য পাচারের বিপরীতে কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকে। বিএসসিপিএলসির এবং বিটিআরসি তথ্য পাচারের অভিযোগ প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এবং বর্তমান এমডির বিরুদ্ধে। এ ছাড়া সামিট সিন্ডিকেটকে সাবমেরিন লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে বিটিআরসির কর্মকর্তারাও জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। লাইসেন্স দেওয়ার পুরস্কার হিসেবে চলতি বছরের মার্চে বিটিআরসির চার কর্মকর্তা সামিট সিন্ডিকেটের অর্থে সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করেন।
জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই বিএসসিপিএলসির কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশনের জমি এবং সাবমেরিন কেবলের পিভিসি ডাক্ট লিজ নিতে আবদার করে চিঠি পাঠায় প্রাইভেট তিন সাবমেরিন কেবল কোম্পানি। কালবেলার হাতে আসা নথি বিশ্লেষণে দেখা যায়, ল্যান্ডিং স্টেশনের ৩০-৩৩ শতাংশ জমি এবং একটি চার ইঞ্চির পিভিসি ডাক্ট লিজ নিতে চায় কোম্পানি তিনটি। এজন্য সুনির্দিষ্ট করে পিভিসি ডাক্টের অব্যবহৃত দুটি ডাক্টের কথা উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু মাটির নিচে থাকা এই ডাক্টের কথা বিএসসিপিএলসি কর্তৃপক্ষ ছাড়া কেউ জানার কথা নয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, সাবমেরিনের লাইসেন্স পাওয়া সামিট সিন্ডিকেটের আরেক কোম্পানি সিডিনেট কমিউনিকেশনের সিইও মশিউর রহমান ছিলেন বিএসসিপিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। তা ছাড়া প্রাইভেট খাতে সাবমেরিন কেবলের লাইসেন্স দেওয়ার অন্যতম ক্রীড়ানকও ছিলেন তিনি। লিজ চাওয়া চিঠিতেও কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে তার নাম রয়েছে।
কোম্পানি সূত্র জানায়, প্রাইভেট কোম্পানিগুলোকে সুবিধা দিতে মশিউর রহমান তার মেয়াদকালে সিমিউই-৪ প্রকল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি অনুমোদন করতে চাননি। শুধু তাই নয়, চার বছরেরও অধিক সময় ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে থাকায় বিএসসিপিএলসির সব তথ্যই তিনি জানেন। যার পুরস্কার হিসেবে অবসর গ্রহণের পরপরই তাকে সাবমেরিন কেবলের লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সিডিনেটের সিইও পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক এমডি মশিউর রহমান বলেন, যখন বেসরকারি কোম্পানিকে সাবমেরিনের লাইসেন্স দেওয়া হয় তখন তিনি ছিলেন না, এর সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি বলেন, অবসর গ্রহণের পর সিডিনেটে তিনি নিয়োগ পান, তবে সেটা কোনো অনৈতিক সুবিধার কারণে নয়। বিএসসিপিএলসির জমি এবং ডাক্ট লিজে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন করে সাবমেরিন কেবল লাইন স্থাপনের জন্য অনেক টাকা খরচ হবে। সে ক্ষেত্রে আমরা সামিটের সঙ্গে মিশে বিএসসিপিএলসির জমি এবং ডাক্ট লিজ চেয়েছিলাম। যদিও এই প্রস্তাব ছিল সামিটের। সামিট তৎকালীন আইসিটি প্রতিমন্ত্রীকে দিয়ে এটা অনুমোদন করাতে চেয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করলেও সামিটের একক আধিপত্যের কথা স্বীকার করে সিডিনেটের এই সিইও বলেন, সামিট একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যাদের ইন্টারনেটের সব ধরনের লাইসেন্স রয়েছে। যে কারণে এ খাতে এখন আর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। সাবমেরিনেরও লাইসেন্স পাওয়ায় এখন তাদের আধিপত্য আরও বেড়ে গেছে। সব ধরনের লাইসেন্স থাকায় তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কেউ পারবে না। এটার দায় বিটিআরসিসিও এড়াতে পারে না।
ক্ষতির মুখে সরকারি প্রতিষ্ঠান
জানা গেছে, সিমিইউ-৪ এবং সিমিইউ-৫ এই দুই কেবলের বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় প্রায় ৫০-৬০ কোটি টাকা। আর সিমিইউ-৬ চালু হলে এই ব্যয় বেড়ে হবে ৯০-১০০ কোটি টাকা, যা বিএসসিপিএলসি ব্যান্ডউইথ বিক্রির আয় থেকে পরিশোধ করে। ব্যান্ডউইথ অব্যবহৃত রয়ে গেলে পরিচালন ব্যয় উঠে আসাই চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। এ ছাড়া পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত লাভজনক সরকারি প্রতিষ্ঠানটিতে শেয়ারের প্রায় ২৭ শতাংশের মালিকানায় রয়েছেন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। ব্যবসা ক্রমাগত হারাতে থাকলে কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। লভ্যাংশ প্রদানের সক্ষমতা কমবে।
এমআই