বীমা
মেটলাইফের ১৪২৫ কোটি টাকার বিমাদাবি নিষ্পত্তি

বিমা প্রতিষ্ঠান মেটলাইফ বাংলাদেশ ২০২৪ সালের প্রথম ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন) ১ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার বিমাদাবি নিষ্পত্তি করেছে। গ্রাহকদের বিমা সুবিধা হিসেবে পরিশোধ করা অর্থের পাশাপাশি চিকিৎসা ও মৃত্যুদাবি হিসেবে পরিশোধ করা অর্থ এর অন্তর্ভুক্ত।
শনিবার মেটলাইফ বাংলাদেশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গ্রাহকদের জন্য সেরা অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে মাত্র ৩ থেকে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে বীমাদাবি নিষ্পত্তি সুবিধা দিচ্ছে মেটলাইফ বাংলাদেশ। সময়মতো ও দক্ষতার সঙ্গে বিমাদাবি পরিশোধ বীমার প্রতি জনসাধারণের আগ্রহ ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে গুরুত্তপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এ বিষয়ে মেটলাইফ বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আলা আহমদ বলেন, বাংলাদেশে একটি সুগঠিত বিমা অবকাঠামো তৈরিতে মেটলাইফ কাজ করে চলেছে, যাতে গ্রাহকরা দ্রুত ও ঝামেলাহীন বিমা দাবি এবং অন্যান্য সেবা পেতে পারেন। দ্রুত বীমাদাবি নিষ্পত্তি গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং বিমা খাতের ওপর গ্রাহকদের আস্থা দৃঢ় করে তোলে।
এমআই

বীমা
উচ্চ ঝুঁকিতে দেশের ৩২ বিমা কোম্পানি: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

দেশে ব্যবসা করা ৩২টি বিমা কোম্পানি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম। এসব কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৫টি জীবন বিমা এবং ১৭টি সাধারণ বিমা কোম্পানি বলে জানান তিনি।
বুধবার (২ জুলাই) আইডিআরএ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান তিনি। কোম্পানিগুলোর ব্যবসা, সম্পদসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে এই উচ্চ ঝুঁকিতে থাকার তথ্য বের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিমা কোম্পানিগুলো সময়মতো গ্রাহকদের বিমা দাবির টাকা পরিশোধ না কারায় এ খাত চরম আস্থাহীনতার মধ্যে রয়েছে বলেও জানান তিনি। যে কারণে বিমা খাত পিছিয়ে পড়ছে বলে অভিমত আইডিআরএ চেয়ারম্যানের।
তিনি বলেন, দেশের ৩৬টি জীবন বিমা কোম্পানির মধ্যে মাত্র ৬টি ভালো অবস্থানে রয়েছে। বিপরীতে উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে ১৫ বিমা কোম্পানি এবং ১৫টি রয়েছে মধ্যম ঝুঁকিতে।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, সাধারণ বিমা খাতের ১৭টি বিমা কোম্পানি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে উচ্চা ঝুঁকিতে থাকা জীবন ও সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর নাম উল্লেখ করেননি তিনি।
তবে আইডিআরএ’র এক সূত্রে জানিয়েছে, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা ১৫ জীবন বিমা কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- ফারেইস্ট ইসলামী লাইফ, পদ্মা ইসলামী লাইফ, প্রাইম ইসলামী লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, সানলাইফ, গোল্ডেন লাইফ, বায়রা লাইফ, প্রগ্রেসিভ লাইফ, এনআরবি ইসলামিক লাইফ, ডায়মন্ড লাইফ, বেস্ট লাইফ, প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফ, যমুনা লাইফ এবং স্বদেশ লাইফ।
সংবাদ সম্মেলনে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, সময় মতো বিমা দাবি পরিশোধ না করায় এ খাতের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা বেড়েছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ছাড়া আস্থা বাড়বে না। বর্তমানে জীবন বিমা খাতে অপরিশোধিত দাবি আছে ৪৫ শতাংশ। এছাড়া সাধারণ বিমা খাতে প্রায় ৪৭ শতাংশ দাবি অপরিশোধিত রয়েছে।
এসব দাবি সময়মতো পরিশোধ, মানুষের আস্থা বাড়াতে বিভিন্ন আইন ও বিধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্যাংক রেজ্যুলেশনের আদলে বিমাকারীর রেজ্যুলেশন প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে। এর আলোকে কেবল বিমা প্রতিষ্ঠান একীভূত হবে তেমন না- অবসায়ন, অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ড. এম আসলাম আলম বলেন, জিডিপি অনুপাতে ২০১০ সালে বিমার হার ছিল শূন্য দশমিক ৯৪ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা কমে শুন্য দশমিক ৪১ শতাংশে নেমেছে। ২০২৪ সালে তা আরও কমেছে। শুধু ২০২৪ সালে আইডিআরএ ২৪ হাজার ৮৫২টি অভিযোগ পেয়েছে। তবে জনবল সংকটের কারণে এসব তদারকি করা সম্ভব হচ্ছে না। আইডিআরএতে ১৬০ জন অনুমোদিত জনবলের বিপরীতে মাত্র ১০৭ জন কর্মরত রয়েছেন।
সম্প্রতি বিমা কোম্পানিগুলোর নিবন্ধন নবায়ন ফি হাজারে এক টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে আইডিআরএ। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়- বর্তমানে বিমা কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্যে রয়েছে। গ্রাহকদের দাবির টাকা পরিশোধ করতে পারছে না। এ পরিস্থিতিতে নিবন্ধন নবায়ন ফি বাড়ানো হলে কোম্পানিগুলোর আর্থিক অবস্থার আরও অবনতি হবে কি না? তাছাড়া বর্তমানে আইডিআরএ’র তহবিলে বড় ধরনের উদ্বৃত্ত অর্থ রয়েছে। এর উত্তরে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। লোকবল বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লোকবল বাড়লে তখন আইডিআরএ’র খরচ বাড়বে। সবকিছু বিবেচনা করেই নিবন্ধন নবায়ন ফি বাড়ানো হচ্ছে।
বীমা
১৫ বীমা কোম্পানির তথ্য চেয়ে আইডিআরএ’র চিঠি

লাইফ বীমা খাতের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ১৫ কোম্পানির ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের ব্যাংক হিসাব এবং দাবি পরিশোধের তথ্য চেয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে এসব তথ্য কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) আইডআরএ’র পরিচালক আহম্মদ এহসান উল হান্নান ও সহকারী পরিচালক মো. শামসুল আলম খান স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এসব কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এই চিঠি প্রেরণ করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, এসব কোম্পানির ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের ব্যাংক হিসাবের বিবরণ ও বীমা দাবি পরিশোধ বিবরণের অনুলিপি আইডিআরএ কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কোম্পানিগুলো হলো- সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
জানা গেছে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংক হিসাব এবং দাবি পরিশোধের তথ্য প্রেরণ করতে হবে। এই তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে কোম্পানির আর্থিক স্বচ্ছতা ও বীমা দাবির বাস্তবতা মূল্যায়ন করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কাফি
অর্থনীতি
বাজেটে বিমা খাতে কর কমানোসহ ১৫ প্রস্তাব ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের

আসছে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে বীমা খাতের কর্পোরেট কর কমানোর পাশাপাশি কিছু বিমা পণ্যের উপর কর পত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে বিমা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। সোমবার (১৭ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত চিঠিতে ১৫টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। চিঠিতে কর্পোরেট কর হার হ্রাস করা, কৃষি বীমা, গবাদিপশু বীমা, বিভিন্ন ধরনের শস্য বীমা, উদ্ভাবনী বীমা, নতুন সামাজিক বীমা পণ্যেসহ অনলাইন ভিত্তিক বীমা প্রিমিয়ামের উপর মূল্য সংযোজন কর ও কর্পোরেট কর রহিত করার বিষয় তুলে ধরা হয়।
চিঠিতে কর্পোরেট কর হার হ্রাস করার বিষয়ে বলা হয়, আয়কর আইন অনুযায়ী তালিকাভুক্ত ব্যাংক, ইন্স্যরেন্স এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করহার ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ। ব্যাংকের আয় ও ব্যবসায়ের পরিধি ইন্স্যুরেন্সের চাইতে অনেক বেশি তারপরও ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কর হার ব্যাংকের সমান। এছাড়া, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো ২৫ শতাংশ অথবা তার চেয়ে কম হারে কর প্রদান করে থাকে যদিও তাদের ব্যবসায়ের ক্ষেত্র ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চাইতে বেশি। কিন্তু ইন্স্যুরেন্স ব্যবসায় ব্যাংক এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মত ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করতে পারেনি। তাই ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোকে অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মত বিবেচনা করে কর্পোরেট কর হার ব্যাংকিং কোম্পানির মত সমান না রেখে অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মত কর হার নির্ধারণ করার জন্য প্রস্তাব করা হলো।
কৃষি বীমা, গবাদিপশু বীমা, বিভিন্ন ধরনের শস্য বীমা প্রিমিয়ামের উপর মূল্য সংযোজন কর ও কর্পোরেট কর রহিত করার বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষি খাতের ভূমিকা অপরিসীমা কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে এই খাত ক্রমাগত বিপন্ন হচ্ছে যার ফলে কৃষিকাজে কৃষকদের অনীহা দিন দিন বাড়ছে। তাই কৃষকদের জন্য কৃষি বীমা অপরিহার্য। এই জন্য কৃষি বীমার উন্নয়ন ও প্রসারের জন্য কৃষি বীমা, গবাদিপশু বীমা, বিভিন্ন ধরনের শস্য বীমা প্রিমিয়ামের উপর মূল্য সংযোজন কর এবং এই বীমা পরিকল্প হতে অর্জিত মুনাফার উপর কর্পোরেট কর রহিত করার জন্য প্রস্তাব করা হলো।
এছাড়া, অনলাইন ভিত্তিক বীমা প্রিমিয়ামের উপর মূল্য সংযোজন কর ও কর্পোরেট কর রহিত করার বিষয়ে বলা হয়, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বীমা শিল্প ও সরকারের সাথে একাত্ম হয়ে কাজ করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বিভিন্ন অনলাইন পলিসি ইস্যু করার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে যা গ্রাহকদেরকে সর্বোচ্চ বীমা সেবা প্রদানের পথকে সুগম করবে। ডিজিটাল সেবা এবং ইন্স্যুরটেকের মাধ্যমে ইস্যু করা বীমা পলিসি হতে অর্জিত প্রিমিয়ামের উপর মূল্য সংযোজন কর এবং পলিসি প্রিমিয়াম হতে অর্জিত মুনাফার কর্পোরেট কর রহিত করার প্রস্তাব করা হলো।
চিঠিতে উদ্ভাবনী বীমা ও নতুন সামাজিক বীমা পণ্যের উপর মূল্য সংযোজন কর এবং কর্পোরেট কর রহিত করার বিষয়ে বলা হয়, উদ্ভাবনী বীমা ও নতুন সামাজিক বীমা পরিকল্প অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের জীবন যাত্রার মানের উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। যে দেশ অথনৈতিকভাবে যত উন্নত তাদের জীবনযাত্রার মানও তত উন্নত আর এই উন্নয়নে বীমার অবদান অনেক বেশি। আর একটি দেশের সামাজিক মূল্যবোধ এবং সচেতনতার অভাবই এই শিল্পের বিকাশে মূল বাধা। তাই বীমা শিল্পের বিকাশে উদ্ভাবনী বীমা ও নতুন সামাজিক বীমা পণ্যের উপর উপর মূল্য সংযোজন কর এবং কর্পোরেট কর রহিত করার প্রস্তাব করা হলো।
এছাড়াও, নন-লাইফ বীমার অন্তর্ভুক্ত সকল শ্রেনীর নৌ-কার্গো, নৌ-হাল, বিবিধ বীমা সহ বীমা সেবার বিপরীতে পুনঃবীমাকারীকে সকল প্রিমিয়ামের উপর মুসক চার্জ অব্যাহতি, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপন ব্যয়কে আয় হিসাবে গন্য না করে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাক্ট অনুসারে লভ্যাংশের উপর কর নির্ধারন করা, পুনঃবীমা করার সময় পুনঃবীমা প্রিমিয়ামের উপর প্রাপ্য কমিশনের উপর নতুন করে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ রহিত, বৈদেশিক পুনঃবীমা প্রিমিয়ামের উপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট ও ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর রহিত, স্বাস্থ্য বিমার প্রসারে এর ওপর ট্যাক্স রহিত ও বিমা এজেন্টদের কমিশন আয়ের উপর উৎসে কর কর্তন থেকে অব্যাহতি প্রদানে প্রস্তাব করে বিআইএ।
এর আগে, আসন্ন ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেট অধিকতর অংশগ্রহণমূলক, গণমুখী, শিল্প, ব্যবসা ও করদাতাবান্ধব করতে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর কাছে বাজেট প্রস্তাবনা চেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এসএম
বীমা
নিবন্ধন সনদ নবায়ন আবেদন না করায় বায়রা ও গোল্ডেন লাইফকে নোটিশ

বিমা আইন লঙ্ঘন করে ব্যবসা পরিচালনা করায় দুই জীবন বিমা কোম্পানি বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে বিমা কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। কোম্পানি দুটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন সনদ নবায়নের আবেদন কর্তৃপক্ষ বরাবর দাখিল না করে ব্যবসা পরিচালনা করছে। যা বীমা আইনের সুস্পষ্ট লংঘন ও আইনতঃ দন্ডনীয়।
গত ০৫ ও ৬ মার্চ কোম্পানি দুটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এ নোটিশ পাঠিয়েছে আইডিআরএ। এতে স্বাক্ষর করেছেন সংস্থাটির পরিচালক (নিবন্ধন ও ব্যবস্থাপনা, লাইফ) অতিরিক্ত দায়িত্ব আহম্মদ এহসান উল হান্নান।
নোটিশে বলা হয়, বীমা আইন, ২০১০ এর ৮ (১) ধারা অনুযায়ী বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের লাইসেন্স ব্যতীত কেউ বীমা ব্যবসা সংক্রান্ত কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। একই আইনের ১১ ধারার বিধান মোতাবেক বীমাকারিকে কোন বছরের নিবন্ধন নবায়নের আবেদন পূর্ববর্তী বছরের ৩০ নভেম্বরের পূর্বে, নিবন্ধন নবায়ন ফি (বিধি দ্বারা নিধারিত) প্রদানপূর্বক আবেদন করতে হয়। কিন্তু আপনার কোম্পানি ২০২৫ সালের জন্য নিবন্ধন সনদ নবায়নের আবেদন অদ্যাবধি কর্তৃপক্ষ বরাবর দাখিল করেনি। নিবন্ধন সনদ নবায়ন না করে বীমা ব্যবসা পরিচালনা করা বীমা আইনের সুস্পষ্ট লংঘন যা আইনতঃ দন্ডনীয়।
এতে আরও বলা হয়, ২০২৫ সালের নিবন্ধন সনদ নবায়ন না করে বীমা আইন, ২০১০ এর ৮ ধরার বিধান লংঘন করে বীমা ব্যবসা পরিচালনা করায় আপনার কোম্পানির বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা যথাযথ প্রমানকসহ ব্যাখা প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এসএম
বীমা
বিমা খাতের সংস্কারে আইডিআরএর সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি: চেয়ারম্যান

বিমা খাতের সংস্কারে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম। তিনি বলেছেন, এ খাতের উন্নয়ন করতে চাইলে আইডিআরএকে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে হবে। ক্ষমতা প্রয়োগের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
বুধবার (১২ মার্চ) আইডিআরএ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘বিমা খাতের সংস্কার ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরাম (আইআরএফ) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
আইআরএফ সভাপতি গাজী আনোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। লাইফ বিমা খাত নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রগতি লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জালালুল আজিম এবং নন-লাইফ খাত নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেনা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শফিক শামীম।
সেমিনারে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য, লাইফ ও নন-লাইফ বিমা কোম্পানিগুলোর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমে বিমা খাত নিয়ে কাজ করা সংবাদকর্মীরা অংশ নেন।
বিমা আইনকে অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ আখ্যায়িত করে ড. এম আসলাম আলম বলেন, আইডিআরএকে দুর্বল করে বিমাকারীদের পক্ষে এই আইন করা হয়েছে। আইডিআরএ কাউকে সাসপেন্ড করলে তারা আদালতে গিয়ে স্টে অর্ডান নিয়ে পুনরায় ফিরে আসে। তাই ব্যাপকভাবে আইডিআরএ’র ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।
আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে তথ্যের প্রয়োজন। কিন্তু বিমা কোম্পানিগুলো সঠিকভাবে তথ্য দিতে চায় না। যেসব তথ্য দেয় তা ফেব্রিকেটেড (জাল-জালিয়াতি) কি না তাও নিশ্চিত নয়।
তিনি বলেন, ডিজিটালাইজেশন হলে ৮৫ শতাংশ অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যায়। আমরা পদক্ষেপ নেই কিন্তু সহযোগিতা পাওয়া যায় না।
আইডিআরএ চেয়ারম্যান আরও বলেন, আইএমএস যেটা ইউএমপি নামে পরিচিত ছিল সেটা ১০টি সার্ভিস দিচ্ছে। বিমা কোম্পানিগুলো মনিটরিং করতে এসব তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকরা রাখে। আইএমএস-এ পূর্ণ তথ্য দিলে আইডিআরএ কাজ করতে পারবে। কিন্তু বিআইএ’র নতুন কমিটি ঘোষণা দিয়েছে তারা এটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে না।
ড. এম আসলাম আলম বলেন, ডিজিটালাইজেশন ছাড়াও যদি যথাসংখ্যক জনবল থাকতো তাহলেও হতো। কিন্তু আইডিআরএকে স্বল্প সংখ্যক জনবল ও স্বল্প টেকনোলজি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তবে বিমা খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব কিছু নিয়েই কাজ চলছে। এজন্য সময় লাগবে, রাতারাতি সম্ভব নয়।
গ্রাহকদের বকেয়া বিমা দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, উল্লেখযোগ্য শেয়ারহোল্ডারের সম্পদ বিক্রি করে দাবি পরিশোধের ক্ষমতা আইডিআরএ’র নেই। এজন্য আদালতে যেতে হয়। এরই মধ্যে কর্তৃপক্ষের বেশ কিছু মামলা চলমান।
তিনি বলেন, অনিষ্পন্ন বিমা দাবি পরিশোধ না হলে বিমার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে না। সুশাসন কায়েম হলে আস্থা বাড়বে।