জাতীয়
যে প্রধান তিন কারণে দেশে বিদ্যুৎ সংকট

বেশ কয়েকদিন ধরে দেশজুড়ে চলছে লোডশেডিং। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং হচ্ছে বেশি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকছে না বিদ্যুৎ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। ডলার সংকটের কারণে জ্বালানি সরবরাহ না থাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন কমার পাশাপাশি জ্বালানির আমদানি নির্ভর এই খাতে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাছে সরকারের বকেয়াও বাড়ছে। ফলে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না।
দেশে বর্তমানে উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ২৭ হাজার মেগাওয়াটের বেশি হলেও চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াটের কম। শেখ হাসিনা সরকার গত ১৫ বছরে দেশে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত না করে অপরিকল্পিতভাবে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অনেক ক্ষেত্রে চাহিদাও বিবেচনায় নেয়া হয়নি।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেখ হাসিনার সরকার অর্থনৈতিক যে বিপর্যয় রেখে গেছে তারই ফলশ্রুতিতে এই পুরো খাত মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই খাতে অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। সম্পূর্ণ টাকা দেয়া সম্ভব না হলেও যতটুকু টাকা দিয়ে সরবরাহ বজায় রাখা যায় ততটুকু দিতে হবে।
দেনার বোঝায় বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ খাত
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, সাময়িক সংকট সমাধানে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ডলার পেমেন্ট করা হচ্ছে।
এই খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকটের মূল সমস্যা ডলার সংকট। একে কেন্দ্র করেই অন্য সমস্যাগুলো প্রকট আকার ধারণ করেছে এই মুহূর্তে। একইসঙ্গে বিগত সরকারের অপরিকল্পিত প্রকল্প বাস্তবায়নের খেসারত দিতে হচ্ছে জনগণকে।
ডলার সংকট
দেশে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ আসে গ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা আছে প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট। আগে সাড়ে ছয় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। অথচ এখন পাঁচ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ খাত দিনে ১২০ থেকে ১৩০ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে। এখন ৮০ থেকে ৮৫ কোটি ঘনফুট সরবরাহ হচ্ছে বলে জানিয়েছে পিডিবি।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে দিনে গ্যাস আসে একশ দশ কোটি ঘনফুট। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল গত ২৭শে মে থেকে বন্ধ। ফলে এখন সরবরাহ হচ্ছে ৬০ কোটি ঘনফুট।
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের সব ইউনিট। ফলে গতকাল মঙ্গলবার তিন হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি লোডশেডিং ছিল।
ভারতের ঝাড়খণ্ডে নির্মিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। দিনে দেড় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল। কিন্তু বকেয়া পরিশোধ না করায় এখন এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে তারা।
শেখ হাসিনার সরকার ব্যাংক থেকে বন্ড ছেড়ে বেসরকারি খাতের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল কিছুটা কমাতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাদের এখনও অনেক বকেয়া রয়েছে। গ্যাস বিল, সরকারি–বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল, ভারতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল সব কিছু মিলিয়ে পিডিবির বকেয়া টাকার পরিমাণ ৩৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
এরই মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বকেয়া অর্থ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি।
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, ‘এখন অন্যতম প্রধান সমস্যাই অর্থ সংকট। তাই অন্য খাতে কমিয়ে এখানে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে হবে। তেল-চালিত কেন্দ্রগুলো বেশি চালাতে হবে। ডলার জোগাড় করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে। ১৫ শতাংশ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য গ্যাস রেশনিং করতে হবে। তবেই লোডশেডিং এর সংকট সমাধান হতে পারে।’
জ্বালানিতে আমদানি নির্ভরতা
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ খাতে পলিসিগত যে ভুল সবচেয়ে ভয়াবহ হয়েছে সেটা হলো পুরো বিদ্যুৎ ব্যবস্থা শক্তিশালী অর্থনীতির বিবেচনায় আমদানি নির্ভর করা হয়েছিল।
শেখ হাসিনার সরকার অর্থনীতির একটি ভ্রান্ত ধারণার উপর ভিত্তি করে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে। এসব কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গ্যাসের পাশাপাশি তেল ও কয়লার ব্যবহার বেড়েছে।
এই জ্বালানির বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এর আগে সরকার কখনো নিজেরা প্রাথমিক জ্বালানির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। অথবা বিকল্প জ্বালানি হিসেবে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসের দিকে গুরুত্ব দেয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জ্বালানির এই আমদানি নির্ভরতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। যা সরাসরি ডলারের ওপর চাপ তৈরি করেছে। আমদানি নির্ভরতার সংকটের দৃষ্টান্ত হিসেবে ২০২২-২৩ সালকে উল্লেখ করছেন বিশ্লেষকরা। জ্বালানি আমদানির জন্য অতিরিক্ত ১৩ বিলিয়ন ডলার খরচ হয় ওই বছর।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বাকিতে দিচ্ছে। তারা নিজের খরচে জ্বালানি ক্রয় করছে। কিন্তু ফুয়েল এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের টাকাতো তাদের বাকি পড়ছে।
এ খাতের সংকট নিরসনে সরকারকে অগ্রাধিকার-ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ করতে হবে বলে মনে করেন শামসুল আলম। যতটুকু অর্থ দিয়ে সরবরাহ বজায় রাখা যায় তা দিতে হবে। অপরিকল্পিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও সরবরাহ লাইন না থাকা জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা এ খাতকে চরম অব্যবস্থাপনার খাত হিসেবে অভিহিত করেন।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের হিড়িক পড়ে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইন পাস করে এগুলোকে দায়মুক্তি দেয়া হয়। এ আইনের অধীনে দরপত্র ছাড়াই একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। ব্যবসায়ীরা ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতারাও বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকানা নেন।
অনেক পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করা হলেও সেগুলো থেকে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ অর্থের অভাবে গ্যাস ও তেল কেনা যাচ্ছে না। এরকম বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চুক্তি স্থগিত বা রিনিউ করা হয়নি।
দেশের দক্ষিণে চারটি বড় বড় কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এগুলো হলো পায়রা, রামপাল, এস আলম এবং মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র। এগুলোর মোট উৎপাদন সক্ষমতা পাঁচ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ লাইন না থাকার কারণে এগুলো থেকে বিদ্যুৎ ঢাকার দিকে আনা যাচ্ছে না। অথচ তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়।
তারা বলছেন, এখন ক্যাপাসিটির অসুবিধা নেই। কিন্তু সরবরাহ লাইনের সীমাবদ্ধতা আছে। ফলে উৎপাদন সক্ষমতা থাকলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ৬০ শতাংশ জ্বালানি আমদানি করার কারণে এই সেক্টর বেশি প্রভাবিত বলে জানান জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।
লোডশেডিংয়ে কারণ জানালেন উপদেষ্টা
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘চুক্তিটা নিয়ে অনেক কথা হতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে আদানির সরবরাহ যদি বন্ধ হয়ে যায় তবে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। কথা হচ্ছে যে আদানি আটশ মিলিয়ন ডলার পাবে এটাতো তার চুক্তি অনুযায়ী প্রাপ্য। এখন আমরা যদি না দিতে পারি টাকাটা, ওরা কতদিন বাকিতে বিদ্যুৎ দেবে?’
‘আদানিরা বলেছে পাঁচশ মিলিয়ন ডলারের ওপর বকেয়া হলে এটা সাসটেইনেবল না। তারা পাঁচশ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত রানিং বিল বাকি রাখতে রাজি আছে। আসলে চুক্তি অনুযায়ী সেটাও থাকতে পারে না। কিন্তু তারা এগ্রি করেছে। এর উপরে হলেতো…. তাদেরও কয়লা আমদানি করতে হয়, লজিস্টিক, মেইনটেনেন্স কস্ট আছে। তাই না?’ যোগ করেন তিনি।
যা বলছেন জ্বালানি উপদেষ্টা
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র এখন বন্ধ আছে। একইসঙ্গে আদানির কেন্দ্র থেকেও বিদ্যুতের সরবরাহ কমানো হয়েছে।
জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সাংবাদিকদের জানান, ‘বড়পুকুরিয়াতে একটা বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে। সেখানেও একটা যান্ত্রিক ত্রুটি হয়েছে। সেটাও আমরা আশা করতেছি ১৮ তারিখের মধ্যে চলে আসবে। এছাড়া আদানি থেকে যে আমরা বিদ্যুৎ আনি, সেখানেও একটু সরবরাহ কমে গেছিল। এটা যোগাযোগ করা হয়েছে। এবং সেটা আবার পুনরায় বেড়ে গেছে। সেজন্য গত পরশুর তুলনায় গতকাল বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভালো ছিল।’
বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতির প্রধান কারণ গ্যাসের অভাব এ কথা উল্লেখ করে ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সামিটের এফএসআরইউটা সাড়ে তিন মাস ধরে বন্ধ ছিল। সেটা এখন ঠিক হয়েছে। আমরা এখন নতুন গ্যাসের অর্ডার দিয়েছি। আজকেই এটার জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়া শেষ করে ধরেন তিন সপ্তাহের মধ্যে গ্যাস আসবে। তাহলে পাঁচশ এমসিএফডি গ্যাস যুক্ত হবে। তখন আমরা আনুপাতিক হারে বিদ্যুতের জন্য বেশি গ্যাস পাব।’
এর ফলে লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন জ্বালানি উপদেষ্টা। গত তিন দিনে লোডশেডিংয়ে যে পরিস্থিতি হয়েছে সেটা আর হবে না বলে জানান ফাওজুল কবির খান। সাময়িক সংকটে ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
‘এমনে সার্বিক উন্নতির জন্য এফআরএসইউটা চালু করা হয়েছে ১০ তারিখ থেকে। এখন এটা না থাকলে তো গ্যাস আনতে পারতাম না। এজন্য ক্রয় কমিটিতে আলাপ করেছি। আজকেই টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।’-জানান জ্বালানি উপদেষ্টা।
এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ছয় সাতদিন লাগবে জানিয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘তারপরে আরও দশ দিন লাগবে শিপমেন্টটা আসতে। ওই শিপমেন্টটা আসলে মোটামুটি তিন সপ্তাহের মধ্যে পাঁচশ এমসিএফডি গ্যাস যুক্ত হবে। তখন কিন্তু আরও বেশি গ্যাস পাব। বিদ্যুৎ সংকট আরও অনেকটা কমে যাবে।’
ডলার সংকটের কারণে বকেয়া বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে না। এর ফলে দেশের বেসরকারি খাতের কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়েছে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র।
ডলার সংকটের বিষয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘ডলার আমরা পেমেন্ট করতেছি। আপনারা জানেন যে, ডলারের এভেইলেবিলিটি কিছুটা বেড়েছে। তো এটা কন্টিনিউয়াসলি আমরা মনিটর করতেছি।’
কাফি

জাতীয়
ফাঁকা রাজধানীর নিরাপত্তায় কাজ করছে ৫০০ পেট্রোল টিম: ডিএমপি কমিশনার

পবিত্র ঈদুল আজহা ঘিরে রাজধানীতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ঈদের এ সময়ে ফাঁকা রাজধানীর নিরাপত্তায় ৫০০ পেট্রোল টিম দিন-রাত কাজ করছে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার (৬ জুন) সকালে রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা জানান ডিএমপি কমিশনার।
তিনি বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। ফাঁকা রাজধানীর নিরাপত্তায় রাতে-দিনে ৫০০ পেট্রোল টিম কাজ করছে।
ঈদগাহের নিরাপত্তা সম্পর্কে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জাতীয় ঈদগাহ, বায়তুল মোকাররমসহ পুরো এলাকায় সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। ঈদগাহে প্রবেশের সময় কোনো ধরনের ধারালো বস্তু বহন করা যাবে না।
এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও বলেন, পুরো দেশের নিরাপত্তার জন্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে শতভাগ কনফিডেন্ট আমরা।
কাফি
জাতীয়
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সচেষ্ট রয়েছে সরকার: উপদেষ্টা আসিফ

কোরবানির ঈদে ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
শুক্রবার (৬ জুন) সকালে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। পরিদর্শন শেষে এজাজ জানান, ঈদযাত্রায় যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ভোর থেকেই রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে ডিএনসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করছে।
এ সময় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে কয়েকটি বাস কাউন্টারে অভিযান চালায়। অভিযানের সময় লাবিবা ক্লাসিক লিমিটেড পরিবহন কাউন্টারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রমাণ পাওয়ায় সড়ক পরিবহন আইনের ৮০ ধারা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কাফি
জাতীয়
কালুরঘাট সেতুতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা: বরখাস্ত ৪ রেলকর্মী, তদন্তে কমিটি

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর ওপরে ঢাকামুখী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল দুমড়েমুচড়ে গেছে। এ ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও অনেকে। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০ টার দিকে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার তদন্তে ইতোমধ্যে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে প্রাথমিকভাবে চার রেলকর্মীকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে।
শুক্রবার (৬ জুন) সকালে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (সিনিয়র তথ্য অফিসার) রেজাউল করিম সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বরখাস্ত হওয়া রেলকর্মীরা হলেন দুর্ঘটনা সংশ্লিষ্ট ট্রেনের গার্ড সোহেল রানা (হেড কোয়ার্টার, চট্টগ্রাম), লোকোমাস্টার গোলাম রসুল (টি নম্বর-৫৩০), সহকারী লোকোমাস্টার আমিন উল্লাহ (টি নম্বর-৭২৩) এবং অস্থায়ী গেটকিপার মাহবুব (টিএলআর)।
গঠিত তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও)। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ডিএমই (লোকো), ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার-১ ও বিভাগীয় চিকিৎসক (পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম)। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর বোয়ালখালী অংশে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাত সোয়া ১০টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহতদের মধ্যে দুই বছর বয়সী একটি শিশু রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেতুর ওপর একটি গাড়ি নষ্ট হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। ঠিক তখনই কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা ঢাকামুখী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি সেতুর দিকে এগিয়ে আসে। নিয়ম অনুযায়ী, লাইনম্যানের সংকেত নিয়ে ট্রেন সেতুতে ওঠার কথা থাকলেও লোকোমাস্টার (ট্রেনচালক) তা মানেননি। ফলে সেতুর ওপর থাকা কয়েকটি অটোরিকশা, একটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেল দুমড়ে-মুচড়ে যায় ট্রেনের ধাক্কায়।
কাফি
জাতীয়
ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ৪৫ কিলোমিটার যানজট

শেষ সময়ে নারীর টানে বাড়ি ফিরছে মানুষ। তবে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক দিয়ে মানুষ ভোগান্তি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছে। এ মহাসড়কের যমুনা সেতু থেকে করটিয়া পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে জামুর্কি পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঘরমুখো মানুষ। অন্যদিকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক ও বাসের ছাদে করে গন্তব্য যাচ্ছেন যাত্রীরা। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়ার নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
অতিরিক্ত গাড়ির চাপ, সেতুর ওপর গাড়ি বিকলসহ বিভিন্ন কারণে বুধবার (৪ জুন) ভোর ৪টা থেকে মহাসড়কের আশেকপুর বাইপাস থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত প্রায় ২২ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। সেই যানজট সারাদিন পেরিয়েও সারারাত অব্যাহত থাক। সবশেষ শুক্রবারও (৬ জুন) মহাসড়কে যানজট দেখা যায়।
পুলিশ, চালক ও যাত্রীরা জানান, ২ ঘণ্টার রাস্তা পার হতে সময় লাগছে ৬-৮ ঘণ্টা। মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন বিকল ও দুর্ঘটনার ফলে এই ভোগান্তি। অন্যদিকে যমুনা সেতুর ধারণক্ষমতা কম থাকায় স্বাভাবিকভাবে গাড়ি পারাপার করতে পারছে না। ফলে উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী যানগুলো ভূঞাপুর দিয়ে ঘুরিয়ে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু দিয়ে ঈদযাত্রায় ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের ৬৪ হাজার ২৮৩টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার ৯৫০ টাকা।
গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন জানান, অতিরিক্ত গাড়ির চাপের কারণে যানবাহন ধীরগতিতে চলছে। যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, যানজট নিরসন আমরা নিরসলভাবে কাজ করছি।
জাতীয়
১৬ দিন পর আন্দোলন স্থগিত করল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি

লিখিত আশ্বাসে ১৬ দিন আন্দোলনের পর মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচি স্থগিত করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আজ বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক প্রতিশ্রুত ও জারিকৃত দপ্তর আদেশে পল্লী বিদ্যুতের সাত দফা দাবির যৌক্তিকতা বিবেচনায় নিয়ে সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাসে এবং আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহার সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও গ্রাহক ভোগান্তির বিষয় বিবেচনায় কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করা হলো।
এ সময় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিদ্যুৎ বিভাগের উপসচিব মো. সোলায়মান, ফারজানা খানম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, নিয়াজ মোরশেদ, আবু আব্দুল্লাহ সজীব ওয়াফিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সিস্টেমের সংস্কার দাবিতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্ভয়ে কাজে যোগদান করার জন্য বলেছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা।
সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সকল পক্ষের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদান করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
কাফি