জাতীয়
সংবিধান সংস্কারসহ ৬ কমিশন গঠনের ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার
সংবিধান সংস্কারসহ ছয়টি ক্ষেত্রে সংস্কারের লক্ষ্যে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আগামী ১ অক্টোবর থেকে এসব কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে শেষ করবে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে সাংবিধানিক এ সংস্কারের কথা বলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন তিনি।
সাংবিধানিক সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রাথমিকভাবে ছয়টি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এসব কমিশনের কাজ পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককে এই কমিশন পরিচালিনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এরপর আরও বিভিন্ন বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হবে।
সুষ্ঠু নির্বাচনে সাংবিধানিক সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা মনে করি নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব আশঙ্কা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশনসহ অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের কথা আমরা ভাবছি। নির্বাচনব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। এসব প্রতিষ্ঠানের সংস্কার জনমালিকানা-ভিত্তিক, জবাবদিহিমূলক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়ও অবদান রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
ছয়টি কমিশনের প্রধানদের নাম উল্লেখ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সরফরাজ চৌধুরী, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে ড. শাহদীন মালিক দায়িত্ব পালন করবেন।
এসব কমিশনের অন্য সদস্যদের নাম কমিশন প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কমিশনগুলোর আলোচনা ও পরামর্শসভায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ছাত্র, শ্রমিক, জনতা আন্দোলনের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা থাকবেন।
পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত হওয়ার পর কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী ১ অক্টোবর কাজ শুরু করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এটি পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আমরা ধারণা করছি। কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শসভার আয়োজন করবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে ছাত্র সমাজ, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক তিন থেকে সাত দিনব্যাপী একটি পরামর্শসভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে এই রূপরেখা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার একটি ধারণাও দেয়া হবে।’
এই আয়োজন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বার্তা বাস্তবায়ন এবং রাষ্ট্র পুনর্নির্মাণ তাগিদের ঐক্যবন্ধনে গোটা জাতিকে শক্তিশালী ও আশাবাদী করে তুলবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নজরুল ইসলাম ও মাহতাবুর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
হত্যা মামলার আসামি হয়েছেন এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মাহতাবুর রহমান (নাসির)। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় এ দুই ব্যাংক উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীকে আসামি করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ইমন হোসেন গাজীর (৩৬) ভাই আনোয়ার হোসেন গাজী মামলাটি দায়ের করেন। ২৮ আগস্ট দায়েরকৃত মামলাটি তদন্তে উপপরিদর্শক মির্জা মো. বদরুল হাসানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী এলাকার চিটাগাং রোডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে ইমন হোসেন গাজী অংশ নেয়। শান্তিপূর্ণ ওই মিছিলে অংশ নেয়া ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ করা হয়। নির্বিচারে নিক্ষিপ্ত গুলিতে ইমন হোসেন গাজীসহ অনেকে মারা যান।
চাঁদপুর সদরের বাসিন্দা ইমন হোসেন গাজীর সহোদর ভাই মো. আনোয়ার হোসেন গাজী বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের (মামলা নং-২৮) করেন। দণ্ডবিধির ৩০২, ১০৯ ও ১১৪ ধারায় দায়েরকৃত ওই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ৮৫ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরো ৫০-৬০ জনকে।
এজাহারে উল্লেখিত আসামিদের তালিকায় ২৬ নম্বরে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের নাম উল্লেখ করা হয়। আসামিদের তালিকায় ২৭ নম্বরে নাম রয়েছে হাবিব উল্লাহ ডনের। তিনিও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ও বারভিডার নেতা।
মামলায় ২৮ নম্বর আসামি হিসেবে গোলাম কিবরিয়া, পিতা নুর মোহাম্মদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আর ২৯ নম্বর আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে মো. মাহতাবুর রহমানের (পিতা-কাজী আব্দুল হক) উল্লেখ করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মো. মাহতাবুর রহমান (নাসির) চতুর্থ প্রজন্মের এনআরবি ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন।
তিনি দুবাইভিত্তিক আল-হারামাইন গ্রুপেরও কর্ণধার। আর গোলাম কিবরিয়া না হলেও গোলাম কবির নামে এনআরবি ব্যাংকের একজন ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন। মামলায় উল্লেখিত নামটি এ ব্যাংক পরিচালকেরই বলে যাত্রাবাড়ী থানা সূত্র জানিয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান গ্রেপ্তার
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস।
তিনি বলেন, রাজধানীর খিলগাঁও থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পরবর্তী পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান জনিকে পুলিশি হেফাজতে ‘ক্রসফায়ারের নামে হত্যার’ অভিযোগে ডিএমপির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ বর্তমান ও সাবেক ১৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করে মামলা করা হয়। গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ডিএমপির খিলগাঁও থানায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়। জনির বাবা ইয়াকুব আলীর এ মামলা দায়ের করেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ব্যারিস্টার সুমনসহ ৯৭ জনের নামে মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হকসহ (তিনি ব্যারিস্টার সুমন নামে অধিক পরিচিত) ৯৭ জনের নামে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানায় মামলা হয়েছে। এছাড়া এই মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় এ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও জনতা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ গোলচত্বর এলাকায় জড়ো হন। এ বিক্ষোভ চলাকালে ওই দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সায়েদুল হকের নির্দেশে একদল লোক আন্দোলকারীদের ওপর হামলা চালান। এ সময় মামলার আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীদের ওপর। এত অসংখ্য লোকজন আহত হন।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, এ আন্দোলনের সময় সায়েদুল হকের নির্দেশে আসামি মানিক সরকার তাঁর হাতে থাকা একটি রামদা দিয়ে উপজেলার বড়গাঁও গ্রামের অলিউর রহমানকে আঘাত করেন। অপর আসামি কবির মিয়া খন্দকার বাদীকে একটি রড দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পাশাপাশি অন্য আসামিরাও অস্ত্র হাতে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে বেধড়ক মারধর করেন।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন চুনারুঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র সাইফুল আলম, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, রুমন ফরাজী, মানিক সরকার, মোস্তাফিজুর রহমান, ওয়াহেদ আলী ও আব্দালুর রহমান, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পিপি এম আকবর হোসেইন, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আলী, যুগ্ম সম্পাদক সজল দাশ, তাঁতী লীগের সভাপতি কবির মিয়া খন্দকার, কাউন্সিলর আবদুল হান্নান, সাবেক চেয়ারম্যান রজব আলী প্রমুখ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
নতুন ৮ ডিসির নিয়োগ বাতিল
দুই দফায় নিয়োগ দেওয়া ৫৯ জন জেলা প্রশাসকের (ডিসি) মধ্যে আটজনের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সচিবালায় নিজ দপ্তরের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিনিয়র সচিব এ কথা জানান। বঞ্চিত কর্মকর্তাদের দাবির মুখে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিলো।
লক্ষ্মীপুরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উপ-সচিব সুফিয়া আক্তার রুমী, জয়পুরহাটে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি ২-এর সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (উপ-সচিব) মো. সাইদুজ্জামান, কুষ্টিয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ফারহানা ইসলাম, রাজশাহীতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. মাহবুবুর রহমান, সিরাজগঞ্জে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মনির হোসেন হাওলাদার, শরীয়তপুরে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ সচিব আব্দুল আজিজ, দিনাজপুরে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোবাশশেরুল ইসলাম, রাজবাড়ীতে আরপিএটিসির উপ-পরিচালক মনোয়ারা বেগমকে ডিসি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তাদের নিয়োগ আজকে বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়া আরও ৪ জেলার ডিসি পদে রদবদল আনা হয়েছে।
এর মধ্যে টাঙ্গাইলের ডিসি সাবেত আলী পঞ্চগড়ে, নীলফামারীর ডিসি শরিফা হক টাঙ্গাইলে, নাটোরের ডিসি রাজীব কুমার সরকারকে লক্ষ্মীপুরে এবং পঞ্চগড়ের ডিসি নায়িরুজ্জামানকে নীলফামারীতে বদলি করা হয়েছে।
সিনিয়র সচিব বলেন, একটি বাছাই কমিটির মাধ্যমে ফিটলিস্ট হয়। সেই কমিটি আজ বৈঠকে বসেছিল। পর্যালোচনা করে ৮ জনের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার এবং মঙ্গলবার দুই দিনে দেশের ৫৯ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। এ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হট্টগোল করেন উপ-সচিব পর্যায়ের একদল কর্মকর্তা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
৪৫ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি টেলিটকের
সেবার বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা প্রায় ৪৫ কোটি টাকা মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়নি দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ও একমাত্র দেশি মালিকানাধীন মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিটক। এতে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নিরীক্ষা প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিষ্ঠানটি ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর জয়েন্ট স্টক কম্পানিতে ‘টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড’ নামে নিবন্ধিত হয়। যাত্রা শুরুর পর প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান হয়েও টেলিটকের এই ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ ব্যাপারে প্ররোচিত করতে পারে।
এনবিআরের নিরীক্ষা প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালে জুন পর্যন্ত টেলিটক অপরিশোধিত সারচার্জ, সম্পূরক শুল্ক, বিধিবহির্ভূত রেয়াত, উৎস ভ্যাট ও ভ্যাট বাবদ ৪৪ কোটি ছয় লাখ ৩০ হাজার ১৪৯ টাকা ফাঁকি দিয়েছে।
এর মধ্যে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ২৬ কোটি ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা এবং ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ১৭ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৯৭ টাকা ফাঁকি দিয়েছে।
জানা গেছে, নিরীক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা সেবা মূল্যের বিপরীতে প্রযোজ্য ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও সারচার্জ, প্রতিষ্ঠানের দাখিলপত্র, ট্রেজারি চালানের কপি ও প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা সেবামূল্যের বিবরণীর দলিল পর্যালোচনা ও পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানটি ইন্টারনেট, প্রি-পেইড, পোস্ট-পেইড, টক টাইম, সিম কার্ড ও অন্যান্য সেবার বিপরীতে এই ফাঁকি দিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে প্রতিষ্ঠানটি আদর্শ করহারের সেবার বিপরীতে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে এক কোটি ৩২ লাখ ৩৯ হাজার ৯০২ টাকা।
একই সময়ে আদর্শ করহার ছাড়া সেবা থেকে ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ ১৩ কোটি তিন লাখ ৯০ হাজার ৫২১ টাকা। উৎস ভ্যাট থেকে ফাঁকির পরিমাণ এক কোটি ৬২ লাখ ১৩ হাজার ৩৫৪ টাকা। এ ছাড়া বিধিবহির্ভূত রেয়াত গ্রহণের মাধ্যমে এক কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ হাজার ২০ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
আলোচ্য দুই অর্থবছরে টেলিটক ১৭ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৯৭ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এই টাকা মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২-এর ৭৩ ধারা অনুযায়ী আদায়যোগ্য।
একই সঙ্গে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী ভ্যাট দেওয়ার নির্ধারিত সময় থেকে পরিশোধের দিন পর্যন্ত ভ্যাটের পরিমাণের ওপর সুদ প্রযোজ্য হবে।
এর আগে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে টেলিটক অপরিশোধিত সারচার্জ, সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ ২৬ কোটি ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৩৫২ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এই টাকা আদায়ে দাবিনামা জারি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে টেলিটক ভ্যাট ফাঁকি দিলে অন্য অপারেটররাও ভ্যাট ফাঁকি দিতে উৎসাহিত হবে। তাই টেলিটকের উচিত সেবার মান ঠিক করে বাজার বড় করা এবং সঠিক সময়ে সরকারের রাজস্ব পরিশোধ করা। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় করতে না পারায় সরকারকে দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে।
ভ্যাট ফাঁকি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেলিটকের পরিচালক ও অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, আমাদের বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি (ভ্যাট ফাঁকি) উপস্থাপন করা হয়েছিল। আমরা একটি টিম করেছি। তারা এটি পর্যালোচনা করবে। টিমের কয়েকটি মিটিং হয়েছে, আরো কয়েকটি হবে। এরপর তা যাচাই করা হবে। যাচাই করার পর বিষয়টি নিয়ে বলতে পারব।
সরকারি প্রতিষ্ঠান ভ্যাট ফাঁকি দিলে দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ভ্যাট ফাঁকি দিতে উৎসাহিত হবে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি বড় কথা নয়। দেশের নাগরিক হিসেবে সবাইকে সঠিকভাবে কর দেওয়া উচিত।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা ১৯ কোটি ৪২ লাখ। এর মধ্যে শীর্ষে থাকা গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা আট কোটি ৫২ লাখ, রবি আজিয়াটার পাঁচ কোটি ৮৯ লাখ, বাংলালিংকের চার কোটি ৩৫ লাখ ও রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটকের মাত্র ৬৫ লাখ।
কাফি