অর্থনীতি
আইসিএবি অ্যাওয়ার্ড পেল ২২ প্রতিষ্ঠান

উপস্থাপিত সেরা বার্ষিক প্রতিবেদন, সমন্বিত প্রতিবেদন এবং কর্পোরেট সুশাসনে ১৩ খাতে আইসিএবি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ২২ প্রতিষ্ঠান। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনাগাঁও হোটেলে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এর উদ্যোগে আয়োজিত ‘২৪তম আইসিএবি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, উপদেষ্টা, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দিন, ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিএবির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দীন। এছাড়া সেরা প্রতিবেদন নির্বাচন প্রক্রিয়া তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন আইসিএবি’র রিভিউ কমিটি ফর পাবলিশড একাউন্টস এন্ড রিপোর্টস (আরসিপিএআর) এর চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির এফসিএ ও কো-চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জান।
২৪তম আইসিএবি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড প্রতিযোগিতায় ব্যাংক এশিয়া পিএসি ওভারঅল উনার নির্বাচিত হয়েছে। সেরা উপস্থাপিত বার্ষিক প্রতিবেদন, সমন্বিত প্রতিবেদন এবং করপোরেট সুশাসন ডিসক্লোজারস এই তিন খাতে মোট ২২ প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়াও ৮ প্রতিষ্ঠানকে ‘মেরিট’ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
জানা যায়, প্রতিযোগিতায় মনোনয়নের জন্য ৭৬ প্রতিষ্ঠান তাদের আর্থিক প্রতিবেদন ২০২৩ আইসিএবিতে জমা দেয়। বিজয়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে প্রতিটি খাতে তিনটি সেরা প্রতিবেদন সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন অব একাউন্ট্যান্টসের (সাফা) প্রতিযোগিতায় মনোনয়নের জন্য প্রেরণ করা হবে।
আইসিএবি-বিপিএ পুরস্কারের বিজয়ী যারা
প্রাইভেট সেক্টর ব্যাংকস: ব্যাংক এশিয়া পিএলসি এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি যৌথভাবে গোল্ড পুরস্কার বিজয়ী এবং সিটি ব্যাংক পিএলসি সিলভার এবং ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি যৌথভাবে ব্রোঞ্জ পুরস্কার বিজয়ী হয়েছে।
ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস সেক্টর: আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড গোল্ড এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স পিএলসি ব্রোঞ্জ পুরস্কার বিজয়ী হয়েছে।
ম্যানুফ্যাকচারিং: ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড গোল্ড, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি সিলভার এবং রেকিট বেনকিজার (বাংলাদেশ) পিএলসি ব্রোঞ্জ পুরস্কার বিজয়ী।
পাওয়ার এন্ড এনার্জি সেক্টর: ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড সিলভার পুরস্কার বিজয়ী।
ডাউভার্সিফাইড হোল্ডিংস: অ্যাডভান্সড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড/এসিআই লিমিটেড ব্রোঞ্জ পুরস্কার বিজয়ী।
ইন্স্যুরেন্স (জেনারেল): গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড গোল্ড, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড সিলভার এবং সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ব্রোঞ্জ পুরস্কার বিজয়ী হয়েছে।
ইন্স্যুরেন্স (লাইফ): ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ব্রোঞ্জ পুরস্কার বিজয়ী হয়েছে।
এনজিও/এনপিও: সাজিদা ফাউন্ডেশন সিলভার এবং শক্তি ফাউন্ডেশন ফর ডিসঅ্যাডভান্টেজড উইমেন ব্রোঞ্জ পুরস্কার বিজয়ী হয়েছে।
কমিউনিকেশন এন্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি: রবি আজিয়াটা লিমিটেড গোল্ড, গ্রামীণফোন লিমিটেড সিলভার এবং জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড ব্রোঞ্জ পুরস্কার বিজয়ী হয়েছে।
সার্ভিস সেক্টর: ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস পিএলসি ব্রোঞ্জ পুরস্কার বিজয়ী।
করপোরেট গভর্ন্যান্স ক্যাটাগরি: ব্যাংক এশিয়া পিএলসি গোল্ড, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি সিলভার এবং ব্রোঞ্জ পুরস্কার বিজয়ী হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি।
ইনটিগ্রেটে রিপোটিং ক্যাটাগরি: ব্যাংক এশিয়া পিএলসি এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি যৌথভাবে গোল্ড পুরস্কার বিজয়ী হয়েছে, আইডিএলসি ফাইন্যান্স পিএলসি সিলভার এবং ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি ব্রোঞ্জ পুরস্কার বিজয়ী হয়েছে।
উল্লেখ্য, এবছর নির্ধারিত নম্বর না পাওয়ায় পাবলিক সেক্টর ব্যাংক, ইনফ্রাস্ট্রাকচার এন্ড কনস্ট্রাকশন সেক্টর ও এগ্রিকালচার খাতে কোন পুরস্কার প্রদান করা হয়নি।
এমআই

অর্থনীতি
একনেকে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৪ হাজার ৪৩৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ১ হাজার ২২৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২ হাজার ৬৭০ কোটি ০৯ লাখ টাকা পাওয়া যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্ব করেন।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৭টি, সংশোধিত প্রকল্প ৫টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির ১টি প্রকল্প রয়েছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; অর্থ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ; স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.); পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম; শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার: শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ একনেক সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
সভায় অনুমোদিত ১৩টি প্রকল্প হলো–
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প ‘তথ্য আপা: তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়) (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প- ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর এর গবেষণাগার সমূহের সক্ষমতা বাড়ানোসহ আধুনিকায়ন এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৩টি প্রকল্প- (১) ২০০০ হর্স পাওয়ার রিগ ক্রয় প্রকল্প এবং (২) ৪টি মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ (শাহবাজপুর-৫, ৭ এবং ভোলা নর্থ-৩, ৪) এবং ১টি অনুসন্ধান কূপ (শাহবাজপুর নর্থ-ইস্ট -১) খনন (৩)”নেসকো এলাকায় নেটওয়ার্ক অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার মর্ডানাইজেশন প্রকল্প।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রকল্প- এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (EC4J) (৩য় সংশোধন) প্রকল্প।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রকল্প- উপকূলীয় ও ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকায় বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প (৩য় পর্যায়) প্রকল্প।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রকল্প- (১) শেখ হাসিনা স্পেশালাইজড জুট টেক্সটাইল মিল (১ম সংশোধিত সমাপ্তিকরণের উদ্দেশ্যে) প্রস্তাবিত ‘যমুনা স্পেশালাইজড জুট অ্যান্ড টেক্সটাইল মিল (১ম সংশোধিত)।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ০৩ টি- (১) খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেজ-২) এবং (২)নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কদমরসুল অঞ্চলে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প।
এছাড়া ইন্টিগ্রেটেড সার্ভিস অ্যান্ড লাইভহুড ফর ডিসপ্লেস পিপল ফ্রম মিয়ানমার অ্যান্ড হোস্ট কমিউনিটি ইম্প্রুভমেন্ট প্রকল্প।
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প (১ম পর্যায়) ঢাকার মিরপুর পাইকপাড়ায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতি
প্রথম চালানে ভারতে গেলো সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ

এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রথম চালানে সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৮টি ট্রাকে এসব ইলিশ ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ করে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, ভারতের কলকাতার পাঁচটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রথম চালানের ইলিশ আমদানি করেছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ন্যাশনাল ট্রেডিং, এফএনএস ফিশ, জয় শান্তসী, মা ইন্টারন্যাশনাল ও আর জে ইন্টারন্যাশনাল।
অপর দিকে বাংলাদেশ থেকে ৬টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রথম চালানে ৩৭ টন ৪৬০ কেজি ইলিশ রপ্তানি করেছে। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সততা ফিশ, স্বর্ণালি এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, বিশ্বাস ট্রেডার্স ও লাকী ট্রেডিং।
জানা গেছে, ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ হলেও আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ভারতে মোট ১২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে এ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন, ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ টন করে ৭৫০ টন, ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে ৩৬০ টন এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ টন করে ৪০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজার আগেই পদ্মার ইলিশের পৌঁছে যাচ্ছে ভারতে।
জানা যায়,গত বছর ২৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। রপ্তানি হয় এক হাজার ৩০৬ দশমিক ৮১৩ মেট্রিক টন ইলিশ। যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া রপ্তানি আদেশের ৪৪ ভাগ। অনেক প্রতিষ্ঠান মাছ না পেয়ে ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। এবারও মাছ সংকট ও অতিরিক্ত মূল্যের কারণে সব মাছ রপ্তানি করা সম্ভব হবে না বলে জানান মাছ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নূরুল আমিন বিশ্বাস।
কাফি
অর্থনীতি
খেলাপি ঋণ ১০ বছরের জন্য পুনঃতপশিলের সুযোগ

বিশেষ বিবেচনায় আরও খেলাপি ঋণ পুনঃতপশিল, পুনর্গঠন করতে পারবে ব্যাংকগুলো। মাত্র দুই শতাংশ ডাউন-পেমেন্টের বিপরীতে ১০ বছরের জন্য খেলাপি ঋণ নিয়মিত করা যাবে। দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ড এবং সংশ্লিষ্ট খাতের সর্বনিম্ন সুদহারের চেয়েও এক শতাংশ কম সুদ নির্ধারণ করা যাবে। ব্যাংকগুলোই এসব সুবিধিা দিতে পারবে। কোনো কারণে প্রয়োজন হলে ৩০০ কোটি টাকার বেশি ঋণে নীতি সহায়তার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাছাই কমিটিতে আবেদন করা যাবে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সব ব্যাংকে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিগত সরকারের সময়ে বিশেষ বিবেচনায় ঋণ পুনঃতপশিল, পুনর্গঠনসহ নানা সুবিধা দিয়ে খেলাপি ঋণ কম দেখানো হতো। সরকার পতনের পর তা হুহু করে বাড়ছে। এরই মধ্যে খেলাপি ঋণ দ্বিগুণের বেশি বেড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এরকম অবস্থায় গত জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি কমিটি গঠন করে বিশেষ বিবেচনায় খেলাপি ঋণ পুনঃতপশিলের সুযোগ দিচ্ছিল। এখন তা ব্যাংকগুলোর হাতে ছেড়ে দেওয়া হলো।
আজকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৩০ জুন বিরূপ মানে শ্রেণীকৃত ঋণে পরিমাণ বিবেচনায় ব্যাংকার–গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পুনঃতপশিল করা যাবে। এ জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আবেদন করতে হবে। আবেদনের ৬ মাসের মধ্যে ব্যাংক থেকে তা নিষ্পত্তি করতে হবে। নীতি সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় ডাউন পেমেন্ট চেক বা অন্য কোনো ইনস্ট্রুমেন্টের মাধ্যমে দিলে তা নগদায়নের পর হতে ৬ মাস গণনা করতে হবে। ডাউন পেমেন্টের অর্থ ব্যাংকের অনুকূলে নগদায়নের আগে নীতি সহায়তার আবেদন কার্যকর করা যাবে না। ইতোপূর্বে তিন বা তার বেশি পুনঃতপশিল করা ঋণে অতিরিক্ত ১ শতাংশ ডাউন-পেমেন্ট আদায় করতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নীতি সহায়তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি নিতে হবে না। তবে এ বিষয়ে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ হতে অনুমোদন নিতে হবে। একাধিক ব্যাংক হতে ঋণের বিপরীতে নীতি সহায়তার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ঋণ প্রদানকারী ব্যাংক বা সকলের সম্মতিতে নীতি সহায়তার উদ্যোগ ও সভার আয়োজন করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। ৩০০ কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণ স্থিতির ঋণগ্রহীতাকে নীতি সহায়তার বিষয়ে ব্যাংক থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব না হলে আন্তঃব্যাংক সভার কার্যবিবরণী বা পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনসহ ‘ব্যবসা ও আর্থিক ব্যবস্থাদি পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গঠিত নীতি সহায়তা সংক্রান্ত বাছাই কমিটি’ বরাবর আবেদন পাঠাতে হবে।
বিশেষ সুবিধা দেওয়া ঋণের বিপরীতে ব্যাংকার–গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সাধারণ প্রভিশন রাখতে হবে। বিশেষ সুবিধা পাওয়া ঋণ এসএমএ মানে শ্রেণীকরণ করে সাধারণ প্রভিশন রাখতে হবে। প্রকৃত আদায় ছাড়া ব্যাংকের আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে না। তবে সাধারণ প্রভিশন সংরক্ষণের জন্য স্থানান্তর করা যাবে। এ ধরনের সুবিধা দেওয়া ঋণে নতুন সুবিধা দেওয়া যাবে। এক্ষেত্রে অতীত লেনদেনসহ সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করতে হবে। আর ২০২২ সালে শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল আমদানির জন্য বাকিতে খোলা এলসির ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার অপ্রত্যাশিত বিনিময় হারজনিত ক্ষতির মোট পরিমাণ গতবছর জারি করা সার্কুলারের নির্দেশনা অনুযায়ী হিসাবায়ন করতে হবে। কোনো গ্রাহক চাইলে পুনর্গঠন বা এককালীন এক্সিট সুবিধা নিতে পারবে।
জাল-জালিয়াতি বা অন্য কোন ধরনের প্রতারণা বা অনিয়মের মাধ্যমে সৃষ্ট ঋণের ক্ষেত্রে এ সার্কুলারে বর্ণিত সুবিধা দেওয়া যাবে না। ব্যাংক থেকে চূড়ান্তভাবে ঘোষিত ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা এ সার্কুলারে বর্ণিত সুবিধাদি পাবে না। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতার ক্ষতির পরিমাণ এবং প্রতিষ্ঠানের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে বিবেচনায় নিয়ে পুনঃতপসিল, পুনর্গঠন বা এক্সিটের মেয়াদকাল নির্ধারণ করতে হবে। মেয়াদকাল নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় উপস্থাপিত স্মারকে এবং সভার কার্যবিবরণীতে সুস্পষ্ট কারণ সুনির্দিষ্টভাবে লিখতে হবে। সুবিধা দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ব্যাংক ও গ্রাহক সোলেনামার মাধ্যমে চলমান মামলার স্থগিতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পরবর্তীতে কোনো গ্রাহকের দেওয়া সুবিধার কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে তার অনুকূলে প্রদত্ত সকল সুবিধা বাতিল বলে হবে এবং ব্যাংক ঋণ আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবে।
অর্থনীতি
এনবিআরের ৫৫৫ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ৫৫৫ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়ন করেছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদের বদলি ও পদায়ন করা হয়।
এর মধ্যে এনবিআরের কাস্টমস ও ভ্যাট প্রশাসন শাখা-৩ এর দ্বিতীয় সচিব তানভীর আহম্মেদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে ৪৫৯ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। দ্বিতীয় সচিবের সই করা অপর এক প্রজ্ঞাপনে আরও ৯৬ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়নের কথা বলা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে। এসব আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে, সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ১৮২ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়ন করে এনবিআর। গেল কয়েক মাস ধরেই এনবিআরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলি করা হচ্ছে।
এনবিআর বিলুপ্তির আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন দফতরে বেশ কয়েক মাস ধরেই ব্যাপক রদবদল চলছে।
অর্থনীতি
বেড়েছে স্বর্ণের দাম, ভরি প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার

ফের দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৬৭৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬২২ টাকা। এটা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ দাম। আজ প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৪৭ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বাজুস। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬২২ টাকা, ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি এক লাখ ৮১ হাজার ২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৫৫ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ২৮ হাজার ৭০১ টাকা ।
এবার সোনার দামের সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে রুপার দামও। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৩ হাজার ৩১৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৮৪৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এতদিন দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৮১১ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা ১ হাজার ৭২৬ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে।