ব্যাংক
ছাত্র আন্দোলনে হুমকিদাতা এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান অর্থ দিলেন সমন্বয়কদের!

আওয়ামী সরকারের পতনে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের পল্টি। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ব্যাংকের অর্থ লুটপাটসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকার সুর করে আচরণের ভোল পাল্টেছেন তিনি। এনআরবিসি ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা তৎকালীন কোটা সংস্কার আন্দোলনে শামিল হলে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিয়ে সতর্ক করেছিলেন। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত কোন পোস্ট শেয়ার ও মন্তব্য করলে, তাকে প্রশাসনিক হয়রানির হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। অথচ তৎকালীন সরকার পতনের পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিয়ে অতীত অপকর্মের ইতি টানতে মরিয়া পারভেজ তমাল। অর্থসংবাদের এক অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সূত্র বলছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনার হয়ে কাজ করেছেন পারভেজ তমাল। এমনকি এনআরবিসি ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা তৎকালীন কোটা সংস্কার আন্দোলনে শামিল হলে এবং এ সংক্রান্ত কোন মন্তব্য করলে তাকে প্রশাসনিক হয়রানির হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া কেউ যাতে আন্দোলনে শামিল হয়ে দেরি করে ব্যাংকে না ঢুকতে পারে এজন্য তদারকিও করা শুরু করেছিলেন। আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে তার নির্দেশে গত ১৭ জুলাই রাতে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা এনআরবিসি ব্যাংকের প্রত্যেক শাখা প্রধান বরাবর পাঠানো হয়। যার তথ্য প্রমাণ অর্থসংবাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।
ব্যাংকের ওই নির্দেশনায় বলা হয়, ব্যাংকে কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোন সমাবেশে শামিল হওয়া বা সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোটা সংস্কার সংক্রান্ত কোন ধরনের কোন মন্তব্য, এই সংক্রান্ত কোন তথ্য শেয়ার করা বা পোস্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এই ব্যাপারে মানব সম্পদ বিভাগ হতে প্রেরিত সূত্রপত্র ‘চ’ ই-মেইলে উল্লেখিত নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হলো। এই আদেশের ব্যত্যয় হলে তার বিরুদ্ধে মানব সম্পদ বিভাগের নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ব্যাংক এবং ব্যাংকের আশেপাশে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যথাসময়ের মধ্যে কর্তব্য স্থানে যোগদান করার নির্দেশনাও দেওয়া হয় সেই চিঠিতে।
সূত্র জানায়, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ম্যানেজ করার পাঁয়তারার গুঞ্জন উঠেছে। যার প্রমাণ হিসেবে সম্প্রতি ৫০ লক্ষ টাকা অনুদানের চেক হস্তান্তরের অনুষ্ঠানের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর নিজের ক্ষমতা ধরে রাখতে ছাত্রদের পক্ষে সুর তুলেন পারভেজ তমাল। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের জন্য ব্যাংকের কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। যার চেক হস্তান্তর করা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসানত আবদুল্লাহর নিকট। সেই অনুদানের ছবি ঢালাওভাবে প্রচারের জন্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। ফলে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে পারভেজ তমাল আসলে কোন পক্ষের লোক? শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর কোন উদ্দেশ্য হাসিলে তিনি ভোল পাল্টাচ্ছেন? এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠাভাজন হয়েও হঠাৎ ছাত্রদের পক্ষে সুর তোলার কারণে সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ছাত্র-জনতার জন্য অনুদান দেওয়া অনুষ্ঠানে ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়তে যারা স্বপ্ন দেখেছে, তাঁদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এনআরবিসি ব্যাংক পাশে থাকবে। আহতদের চিকিৎসা ও অনুদানের পাশাপাশি ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে এনআরবিসি ব্যাংক। এছাড়া, আহত শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করবে। শহীদ পরিবারে কর্মক্ষম সদস্যদের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা হবে। অথচ কিছুদিন আগেও শেখ হাসিনার সমর্থনে কথা বলছিলেন আওয়ামী ঘনিষ্ঠ ব্যাংক চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসানাত আবদুল্লাহর মুঠোফোনে অর্থসংবাদের অফিস থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। একাধিকবার তাঁর মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। একইসঙ্গে অপর সমন্বয়ক সারজিস আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পরিচিত মুখ সাইয়েদ আব্দুল্লাহ ফেসবুকে লিখেন, ঝোঁপ বুঝে কোপ মেরে ছাত্রদের কাছে ইমেজ প্রতিষ্ঠিত করে ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসাবে টিকে থাকার রাস্তা ক্লিয়ার করার মিশনে আছে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং ব্যাংকে তার ঘনিষ্ঠজনরা। এসময় পারভেজ তমাল এবং তার ঘনিষ্ঠজনদের বিরুদ্ধে দুদক এবং সাংবাদিকদের জরুরি তদন্ত শুরু করতে অনুরোধ করেন তিনি।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সূত্র বলছে, হাসিনা সরকারের সাফাই গাইতে গিয়ে ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে বিভিন্ন অনুদান প্রদান করেছেন এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান। এসবের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর নামে শিক্ষাবৃত্তি, শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, কর্ম নিয়ে ‘প্ল্যানেট’ ম্যাগাজিনের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ, বঙ্গবন্ধু যুবমেলায় এনআরবিসির অনুদান, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টে ব্যাংক থেকে কোটি টাকা প্রদান, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ঘিরে ব্যাংক থেকে বই ও ইফতার বিতরণ করেছেন। এছাড়া শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পে ব্যাংক থেকে কোটি টাকার অনুদানও দিয়েছিলেন তিনি।
জানা যায়, নিজেকে রাশিয়ান অলিগার্ক পরিচয় দেওয়া পারভেজ তমাল রাশিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ছিলেন। নিজের নাম আর পদবী ব্যবহার করে দেশ ছেড়ে পালানো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন নেতাদের সহায়তায় ঋণ জালিয়াতি, কমিশন বানিজ্য, নিয়োগ বানিজ্য, শেয়ার কারসাজি, মানিলন্ডারিং, বিদেশে অর্থ পাচার, গ্রাহকের কোম্পানী দখলসহ বিবিধ আর্থিক দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে।
এর আগে নিয়মবহির্ভূতভাবে ঘনিষ্ট কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাংলাদেশ ব্যাংকে তমালের বিরুদ্ধে ব্যাংকটির এক স্পন্সর শেয়ারহোল্ডারের অভিযোগের সূত্র ধরে এ তদন্ত করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসি ডিপার্টমেন্টের সার্কুলারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তমাল পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়া ৩৮০০ কর্মকর্তা কর্মচারীকে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট না দিয়ে শুধু ২৭ জন কর্মকর্তাকে ৫ থেকে ১৩টি পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট দিয়েছেন। যা নিয়মবহির্ভূত ও দেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে বিরল। এছাড়া তমাল ও তার পিএস আসিফ ইকবাল পরিচালকদের সভায় প্রতি বৈঠকে উপস্থিতি ফি ৭ হাজার ২০০ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত হলেও তারা প্রতি বৈঠকে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা অতিরিক্ত অন্যায়ভাবে গ্রহণ করছেন, যা ব্যাংক কোম্পানি আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। একইসঙ্গে তমাল পারভেজ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে মতিঝিল ও গুলশানে ২টি অফিস ব্যবহার করছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ব্যতিরেকে এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট নামক একটি বিধিবহির্ভূত প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। তবে রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারে নিজের বিরুদ্ধে করা এ তদন্ত শুরুর কয়েকদিনের মধ্যে ইতি টানান প্রভাবশালী পারভেজ তমাল।
এর আগে ২০২৩ সালের ১১ জুলাই দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে অর্থপাচার ও নিয়মবহির্ভূত ঋণ প্রদানের অভিযোগে এনআরবিসি ব্যাংকের ১১ জন কর্মকর্তাসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার এজহারে বলা হয়, আসামিগণ পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার অভিপ্রায়ে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ ও অসদাচরণের মাধ্যমে পর্যাপ্ত জামানত ছাড়াই উত্তরোত্তর ঋণ বৃদ্ধিপূর্বক ৭৪ কোটি ৬০ লাখ ৩৩ হাজার ৮০৪ টাকা (সুদসহ ৭৮ কোটি ৫৭ লাখ ০২ হাজার ২৭৩ টাকা) পরিশোধ ও আদায় না করে আত্মসাৎ করেন। এছাড়া ৫ কোটি ৯৭ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫ টাকা সমমূল্যের পণ্যের রপ্তানীমূল্য বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন না করে পাচার করা হয়। এতে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের যোগসাজশ রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে নিজের সংশ্লিষ্টতা থাকায় উচ্চ মহলের সহযোগিতায় দুদকের এ তদন্ত ধামাচাপা দেওয়া হয়। যা পরবর্তী প্রতিবেদনে প্রকাশ করবে অর্থসংবাদ।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ব্যাংক
যেসব এলাকায় ব্যাংক খোলা আজ

তৈরি পোশাকশিল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি বিল সংক্রান্ত লেনদেন এবং পোশাক কারখানার কর্মীদের বেতন, বোনাস পরিশোধের সুবিধার্থে শিল্পঘন এলাকায় আজ শনিবার (২৯ মার্চ) ব্যাংক খোলা থাকবে।
ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত পোশাকশিল্প এলাকার ব্যাংকের নির্দিষ্ট কিছু শাখা আজ খোলা থাকবে।
এর আগে গতকাল শুক্রবারও সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এসব এলাকায় ব্যাংকের শাখা খোলা ছিল। তবে লেনদেন চলে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত, বাকি সময় লেনদেন পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
আজ শনিবার শিল্প এলাকায় ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এর মধ্যে লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। যেসব শাখা খোলা থাকবে সেসব শাখায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ছুটির দিনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিধি মোতাবেক ভাতা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
শুক্রবার রাষ্ট্রায়ত্ত ৪ ব্যাংক খোলা, লেনদেন ২ ঘণ্টা

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ঈদুল-ফিতরের আগে বেতন ভাতাদি উত্তোলনের সুবিধার্থে শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে- সােনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক এবং রূপালী ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ঈদুল ফিতরের আগে বেতন-ভাতাদি উত্তোলনের জন্য রাষ্ট্রীয় চার ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শুক্রবার সীমিত সংখ্যক লােকবলের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলাে।
ব্যাংক লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। আর অফিস সূচি হবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। লেনদেন পরবর্তী বাকি সময় অফিসের আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনা হবে। এ সময়ের মধ্যে জুমাতুল বিদার বিরতি থাকবে দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত। ছুটির দিন দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিধি অনুযায়ী ভাতা পাবেন বলে জানানো হয় নির্দেশনায়।
শিল্প এলাকায় খোলা ব্যাংক
ঈদুল ফিতরের আগে তৈরি পোশাকশিল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি বিল বিক্রির জন্য এবং ওই শিল্পে কর্মরতদের বেতন, বোনাস ও অন্যান্য ভাতা পরিশোধের সুবিধার্থে শিল্পঘন এলাকায় ২৮ ও ২৯ মার্চ ব্যাংক শাখা খোলা রাখতে হবে। যেসব এলাকায় ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে তার মধ্যে রয়েছে- ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত পোশাকশিল্প এলাকা।
এসব এলাকায় ২৮ মার্চ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ব্যাংকের শাখা খোলা রাখতে হবে। লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত, বাকি সময় লেনদেন পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা হবে। শনিবার ব্যাংক শাখা খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত, এর মধ্যে লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত। যেসব শাখা খোলা থাকবে, এই শাখাগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ছুটির দিনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিধি মোতাবেক ভাতা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঈদের আগে শেষ ব্যাংকিং লেনদেন আজ

আসন্ন ঈদের ছুটিতে টানা ৯দিন বন্ধ থাকবে ব্যাংক। ছুটির আগে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) শেষ হচ্ছে স্বাভাবিক ব্যাংকিং লেনদেন। শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে সাপ্তাহিক, ঈদের ও বিশেষ ব্যবস্থার ছুটি। তবে এর মধ্যে আগামী শুক্র ও শনিবার বিশেষ ব্যবস্থায় গার্মেন্ট এলাকাগুলোয় সীমিত সময়ের জন্য ব্যাংকগুলোর কিছু শাখা খোলা থাকবে। এছাড়াও ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথ, অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা সার্বক্ষণিকভাবে খোলা থাকবে।
ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তোলা, ঋণের অর্থ ছাড় করা, রেমিট্যান্সের ডলার ভাঙানো, সঞ্চয়পত্র ভাঙানো, মুনাফা উত্তোলনসহ সব ধরনের ব্যাংকিং কাজ আজ করা যাবে। এজন্য ব্যাংকগুলো প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। কলমানিসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নিয়ে টাকার জোগান বাড়িয়েছে। ঈদের আগে গ্রাহকদের টাকা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্যের জোগান দেওয়া হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর তদারকির কারণে বরাবরের মতো এবারও কলমানি মার্কেটে সুদের হার বেশি বাড়তে পারেনি। এখনো সুদের হার ১০ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।
আজ ব্যাংকগুলোয় নগদ টাকার বেশি চাহিদা থাকলেও কলমানির সুদের হার আগের মতোই স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকগুলোর তহবিল ব্যবস্থাপকরা। কারণ, ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের নগদ টাকার চাহিদা মেটাতে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রেখেছে।
এদিকে ঈদের আগে ২৮ মার্চ শুক্রবার ও ২৯ মার্চ শনিবার বিশেষ ব্যবস্থায় কিছু এলাকায় ব্যাংকের শাখা সীমিত সময়ের জন্য খোলা থাকবে। এর মধ্যে শুক্রবার লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। শনিবার লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত। এ দুইদিন ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের কিছু এলাকায় ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে। এ ছাড়া শনিবার বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী শাখাগুলোও বিশেষ ব্যবস্থায় আগের নিয়মে খোলা থাকবে। এ সময়ে শুধু টাকা তোলা, স্থানান্তর, চেক নগদায়ন করা যাবে। রপ্তানিকারকরা তাদের রপ্তানি বিল ভাঙিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে পারবেন। ঋণবিষয়ক কোনো কাজ করা যাবে না।
আগামী শনিবারের পর ৬ এপ্রিল রোববার ব্যাংক খুলবে। তখন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ব্যাংক লেনদেন চলবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
লভ্যাংশ বিতরণের শর্ত শিথিলতার দাবি বিএবি’র

বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নির্দেশনায় বলা হয়েছে ২০২৪ সালে ডেফারেল সুবিধা নেওয়া কোনো ব্যাংক লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড দিতে পারবে না। তবে ব্যাংকগুলো যেন আগের নিয়ম অনুসারে ডিভিডেন্ড বিতরণ করতে পারে সে দাবি জানিয়েছে বেসরকারি ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক (বিএবি)।
সংগঠনটির মতে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ শর্ত শিথিল করা উচিত। নতুন নিয়ম ২০২৫ সাল থেকে প্রযোজ্য হওয়া উচিত।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে দেখা করেন বিএবি চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে কয়েকটি ব্যাংকের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তারা শর্ত শিথিল করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে অনুরোধ জানান। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর, সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৩ মার্চ একটি সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক, যেখানে বলা হয়েছে- ২০২৪ সালের সমাপ্ত বছরে ডিভিডেন্ড বিতরণের জন্য ২০২১ সালের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। ওই নির্দেশনায় ডেফারেল নেওয়া ব্যাংকগুলোকে ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দেওয়ার সুযোগ বাতিল করা হয়েছে। ফলে ডেফারেল সুবিধা নেওয়া ব্যাংক ২০২৪ সালে কোনো ডিভিডেন্ড বিতরণ করতে পারবে না।
বিএবির নেতারা জানান, শর্তশিথিল হলে ডেফারেল সুবিধা নেওয়া ব্যাংকগুলো ২০২৪ সালে ডিভিডেন্ড বিতরণ করতে পারবে। এতে ব্যাংকগুলোকে তাদের শেয়ারহোল্ডারদের কাছে আরও টানতে সহায়তা করবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
সিটি ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে দুই নতুন নিয়োগ

সিটি ব্যাংক সম্প্রতি ব্যাংকের ডিএমডি ও চিফ রিস্ক অফিসার মেসবাউল আসীফ সিদ্দিকীকে হোলসেল ব্যাংক প্রধান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেছে। একই সাথে মোহাম্মদ মাহমুদ গনি ব্যাংকটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে কর্পোরেট ব্যাংকিং প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন।
আসীফ ১৯৯৯ সালে ইস্টার্ন ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ২০০৪ সালে কমার্শিয়াল ব্যাংক অফ সিলনে যোগ দেন এবং পরবর্তীকালে ২০০৬ সালে এইচএসবিসি ব্যাংকে যোগ দিয়ে ব্যাংকটির বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর অফিসে দীর্ঘ ৯ বছর কর্পোরেট ব্যাংকিংয়ের নানা শাখায় কাজ করেন। ২০১৫ সালে তিনি এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে সিটি ব্যাংকের কর্পোরেট ব্যাংকিংয়ে যোগ দেন।
মেসবাউল আসীফ সিদ্দিকী গত টানা চার বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে সিটি ব্যাংকের শীর্ষ টেকসই ব্যাংক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং সাসটেনেবিলিটি ও গ্রিন ফাইন্যানসিংয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক উদ্যোগ ‘নেট-জিরো ব্যাংকিং অ্যালায়েন্স’-এ সিটি ব্যাংককে অন্তর্ভুক্তিকরণে অবদান রাখেন।
হোলসেল ব্যাংক প্রধান হিসেবে তাঁর দায়িত্বের আওতায় পড়বে কর্পোরেট ব্যাংকিং, ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট, স্ট্রাকচার্ড ফাইন্যান্স, অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসা ইত্যাদি। আসীফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্সে এমবিএ এবং বিআইবিএম থেকে এমবিএম সম্পন্ন করেন।
মাহমুদ গনি ২০০১ সালে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে সিটি ব্যাংকে যোগদান করেন। ২০০৭ সালে সিটি ব্যাংকের সামগ্রিক ট্রান্সফরমেশন প্রজেক্ট টিমের অন্যতম সদস্য হিসেবে তিনি কর্পোরেট ব্যাংকিংকে পূনর্গঠন করে বর্তমান উৎকর্ষে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখেন। ২০১০ সালে স্বল্প সময়ের জন্য তিনি দেশের অন্য একটি ব্যাংকে যোগ দিয়ে ২০১৭ সালে কমার্শিয়াল ব্যাংকিং প্রধান হিসেবে আবার সিটি ব্যাংকে ফিরে আসেন।
২৪ বছরের ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে মাহমুদ গনি কমার্শিয়াল ব্যাংকিংয়ে ব্যবসার প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন যার অন্যতম অভিমুখ ছিল ব্যাংকটির বৈদেশিক বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি। মাহমুদ গনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিংয়ে এমবিএ সম্পন্ন করেন।