অর্থনীতি
জ্বালানি সংকটে কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। এর সঙ্গে গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে লোডশেডিং। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের অবস্থা ভয়াবহ। তাতে বেড়েছে ভোগান্তি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোডশেডিং বেড়েছে।
বিদ্যুৎ বিতরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দৈনিক প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, সোমবার বিকেল ৩টায় ১৮৭৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। গত রোববারও দেশে গড়ে ১২৯১ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়।
পিজিসিবির তথ্যমতে, সোমবার বিকেল ৩টায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪৭৫০ মেগাওয়াট। তার বিপরীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ১২৭৮৮ মেগাওয়াট। দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াট।
জানা গেছে, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৩৫৯৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ আছে। জ্বালানি সংকটে দেশে ৬২৮৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। বিদ্যুতে প্রতিদিন গড়ে ৮৮ কোটি ঘনফুট গ্যাস দেওয়া হচ্ছে, যা এপ্রিলে ছিল ১৩৫ কোটি ঘনফুট। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ থাকায় গ্যাসের সরবরাহ কমেছে। পেট্রোবাংলা প্রতিদিন সরবরাহ করছে ২৫৯ ঘনফুট গ্যাস।
জ্বালানি সংকটের পাশাপাশি ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি কমেছে। ত্রিপুরা থেকে ঘণ্টায় ১৬০ মেগাওয়াটের স্থানে ৬০ থেকে ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। ভারতের সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে ভেড়ামারা দিয়ে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসার কথা থাকলেও মিলছে ৮৮০ মেগাওয়াট। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও ৪০০ মেগাওয়াট কম আসছে।
বাংলাদেশকে আদানি গ্রুপের তাগাদা
বিদ্যুৎ বিক্রয় বাবদ বকেয়া অর্থ আদায়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে তাগাদা দিচ্ছে ভারতের ধনকুবের গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপ। গ্রুপের কর্মকর্তাদের দাবি, বাংলাদেশের কাছে তাদের পাওনা বর্তমানে প্রায় ৫০ কোটি ডলার।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে আদানি গ্রুপের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা জানি বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্থিতিশীল হয়নি। (দেশটির) নতুন সরকারের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং বকেয়া পরিশোধ সংক্রান্ত আলোচনার পাশাপাশি সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা নিয়েও আমাদের কথাবার্তা হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঋণপত্র খোলার প্রতিবন্ধকতাসহ নানা সমস্যায় বেসরকারিখাত: ডিসিসিআই
টাকার মূল্যমান হ্রাস, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্বল্পতা, ব্যাংক ঋণের সুদের উচ্চহার এবং ঋণপত্র খোলার প্রতিবন্ধকতাসহ নানাবিধ সমস্যা আমাদের বেসরকারিখাত মোকাবেলা করছে বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ডিসিসিআই আয়োজিত ‘ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া সহজিকরণ: প্রেক্ষিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সংগঠনটির সভাপতি আশরাফ আহমেদ এসব কথা বলেন।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, আমাদের জিডিপিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অবদান প্রায় ২৫ শতাংশ। তবে এ হার আরও উন্নীত করতে হলে, বন্দর এবং শুল্ক কার্যক্রমে অটোমেশন, লজিস্টিক সুবিধা বৃদ্ধি, সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার সমন্বয়হীনতা হ্রাস, ব্যালেন্স অব পেমেন্টের অবস্থার উন্নয়ন, বৈদেশিক রিজার্ভ বাড়ানো এবং ব্যাংক ঋণের সুদহার যৌক্তিকভাবে হ্রাস করা জরুরি।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে টাকার মূল্যমান হ্রাস, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্বল্পতা, ব্যাংক ঋণের সুদের উচ্চহার এবং ঋণপত্র খোলার প্রতিবন্ধকতাসহ নানাবিধ সমস্যা আমাদের বেসরকারিখাত মোকাবেলা করছে।
এ ছাড়াও বন্দরের আমদানি পণ্যের শুল্কায়নে পদ্ধতিগত জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা, নানা ধরনের জরিমানা আরোপের ফলে আমাদের ব্যবসায়িক খরচ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন আশরাফ আহমেদ।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৫ অর্থবছরের জন্য সরকার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৫৭.৫ বিলিয়ন নির্ধারণ করছে, এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে রপ্তানি বৃদ্ধিকল্পে আমাদের সকল বন্দরগুলোর কার্যক্রমে অটোমেশনের পাশাপাশি সহজিকরণ, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, বন্দর ও কাস্টমস হাউসে নিয়োজিত ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি, বন্দরগুলোর সাথে স্থল, রেল ও জলপথের সংযোগ উন্নীতকরণ, আন্তর্জাতিক লেনদেন প্রক্রিয়া সহজতর করার লক্ষ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে নির্ধারিত আলোচনায় সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের সদস্য (ফিন্যান্স) এস এম লাভলুর রহমান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমোডর এম ফজলুর রহমান, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপসচিব (পরিচালক, ট্রাফিক) মো. কামাল হোসেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (ডব্লিউটিও অনুবিভাগ) ড. ফারহানা আইরিছ এবং বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাসান আলী অংশগ্রহণ করেন।
লাভলুর রহমান বলেন, বন্দরের নিয়োজিত সরকারি সংস্থাসমূহের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে পণ্যের আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা পরিলক্ষিত হয়। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কার্যক্রম চালু হলে কার্গো সুবিধা আরও ২-৩ গুণ বৃদ্ধি পাবে এবং সেখানে আরও ৩টি কার্গো ভিলেজ স্থাপন করা হবে। বিমানবন্দরগুলো পণ্য খালাস প্রক্রিয়া সহজতর করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট সময় ভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগদান করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমোডর এম ফজলুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে অনেকক্ষেত্রে বন্দরে কন্টেইনারসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, বিষয়টি মোকাবেলায় অটোমেশন কার্যক্রম বাড়ানো জরুরি।
বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাসান আলী বলেন, দেশের ২৪টি স্থলবন্দরের মধ্যে ভারতের সাথে ২৩টি এবং মিয়ানমারের সাথে একটি দিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সকল স্থলবন্দরে অটোমেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে, যা আগামী ২ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। যার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি পাবে পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন। এ ছাড়াও স্থলবন্দরসমূহে স্ক্যানিং সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হলে পণ্য আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ভোজ্য তেলের শুল্ক অব্যাহতির প্রস্তাব
সয়াবিন তেল ও পাম তেল আমদানিতে আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ এবং উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে আরোপিত সমুদয় মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতির প্রস্তাব দিয়েছে ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে বাণিজ্য উপদেষ্টা ড সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রস্তাব করা হয়।
সর্বশেষ গত ১৮ এপ্রিল সয়াবিন তেল ও পাম তেলের মূল্য সমন্বয় করা হয়েছিল। বিশ্ববাজারে গত কয়েকমাস ধরে ধারাবাহিকভাবে সয়াবিন তেল ও পাম তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের মূল্য ১৪.৮শতাংশ এবং আরবিডি পাম তেলের মূল্য ১৮.৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধি না করে আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা ও স্থানীয় উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে সকল ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ধরনের শুল্ক অব্যাহতির ফলে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি না করে বিদ্যমান মূল্য বহাল থাকবে বলে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে। এর আগে তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে মূল্য সমন্বয়ের আবেদন করে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কাছে প্রস্তাব/ সুপারিশ প্রেরণের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে এনবিআর করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান,বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আরও একবছর চাপে থাকবে বাংলাদেশের অর্থনীতি: বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও একবছর চাপে থাকবে বলে জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। তারা বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমে ৪ শতাংশ হবে। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সেটি বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
সংস্থাটি বলছে, করোনা মহামারি সংকটের পরবর্তী সময়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। ফলে প্রবৃদ্ধি কমে ২০২৪ সালে প্রকৃত প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ২ শতাংশ।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্ব ব্যাংকের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত রিপোর্টে তারা বলছে, প্রবৃদ্ধির ধারা কমছে দেশে, যদিও সংস্থাটি ২০২৩ সালে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা জানায়। এছাড়া ২০২৫ সালে দেশে প্রবৃদ্ধি হবে ৪ শতাংশ বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ যে তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সেগুলো হলো, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা ও বৈশ্বিক খাতের চাপ। আর্থিক খাত নিয়ে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে নানা ধরনের সংকট রয়েছে, বিশেষ করে খেলাপি ঋণ অনেক বেশি। সরকারের অনেক প্রচেষ্টার পরও সেটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এছাড়া মূল্যস্ফীতি কমাতে ঋণের সুদের হার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বেসরকারি খাতে ঋণ গ্রহণ কমেছে।
প্রতিবেদনে বিশ্ব ব্যাংক বলেছে, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে ৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ২ শতাংশের মধ্যে থাকবে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, মধ্যবর্তী পয়েন্ট হবে ৪ শতাংশ। যদিও চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বিশ্ব ব্যাংক এপ্রিলে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল।
চলমান অর্থবছরের বাজেটে সদ্য পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকার ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। সেই হিসাবে বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস সরকারি লক্ষ্যের চেয়ে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ কম হবে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী কমে গেলে তা হবে কোভিড মহামারির পর সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।
চলতি অর্থবছরের পূর্বাভাস কমানোর পাশাপাশি বিশ্ব ব্যাংক গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলনও কমিয়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশে নামিয়েছে। গত অর্থবছরের জন্য সরকারের সাময়িক প্রাক্কলন ছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ।
কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের শ্রম বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ফাঁক রয়েছে। সেটি একটি বড় সমস্যা। এক্ষেত্রে রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং শিক্ষার মান বাড়াতে হবে। দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার ‘মিস ম্যাচ’ আছে। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে এসব বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের পরিস্থিতি খারাপ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এতে।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়াশিংটন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা, অর্থনীতিবিদ নাজমুস খান এবং বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহবুব।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে খুব বেশি ভূমিকা রাখতে পারেনি। অথচ প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ শ্রম বাজারে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে শিক্ষিত ও শহুরে বেকার বৃদ্ধি পাওয়াটা একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
তিনি আরও বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের জন্য অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ। নানা উদ্যোগ নিয়েও এটি কমানো যাচ্ছে না। বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। যা সাধারণ মানুষের জীবনমানকে নিচে নামাচ্ছে। পাশাপাশি বৈষম্যও বাড়ছে বাংলাদেশে। এক্ষেত্রে বৈষম্য কমানোর উদ্যোগ নেওয়া দরকার। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং আর্থিক খাতে বিভিন্ন সংস্কার দ্রুত করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ডিমের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে সরকার
চাহিদায় আকাশের চাঁদ এবং দামে দুর্লভ হয়ে ওঠা ডিমের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি ডজন ডিমের দাম হবে ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ডিম উৎপাদক এবং সরবরাহকারীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান এ কথা জানান।
তিনি বলেন, উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সায় ডিম বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সে হিসেবে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি ডজন কিনতে খরচ হবে ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা।
আগামীকাল বুধবার (১৬ অক্টোবর) থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ডিমের নির্ধারিত দাম বাস্তবায়ন করতে বাজারে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সে কারণে তেজগাঁও আড়তের ব্যবসায়ীরা ডিম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।
অবশ্য, সাম্প্রতিক অভিযানে ডিমের দামে তেমন একটা প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। বরং তেজগাঁও আড়তের মতো কিছু কিছু পাইকারি বাজারে ডিম বিক্রি বন্ধ হয়ে গছে। অনেক জায়গায় ডিম বিক্রি কমিয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এতে ঘাটতি তৈরি হয়েছে সরবরাহে।
রাজধানীর কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফার্মের মুরগির লাল ও সাদা ডিম ডজনপ্রতি ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বর্তমানে। এছাড়া পাড়ামহল্লায় ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১৯০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।
এর আগেও ডিমের দাম নির্ধারণ করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। তাতে নির্ধারিত দরে ডিম বিক্রি তো দূরের কথা, উল্টো দাম বাড়িয়েছিল ব্যবসায়ীরা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ট্রেজারি বিল ও বন্ডে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফি নির্ধারণ
ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মতো সরকারি সিকিউরিটিজ কেনার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কাছ থেকে ফি ও চার্জ নেওয়ার সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে সেবা দেওয়ার বিনিময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত হারে ফি বা চার্জ নিতে পারবে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে গতকাল সোমবার পাঠানো এক চিঠিতে বাংলাদেশে ব্যাংক বলেছে, গ্রাহক সেবা প্রদানকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে বিভিন্ন সেবার দেওয়ার ক্ষেত্রে ফি বা চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক স্টক এক্সচেঞ্জের বিনিয়োগকারীদের জন্য খোলা বিপিআইডি ছাড়া অন্য বিপিআইডি খোলার বিনিময়ে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা এবং অব্যক্তিক বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা ফি নেওয়া যাবে।
প্রাইমারি অকশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিটি সফল বিডের ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা এবং অব্যক্তিক বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা ফি নেওয়া যাবে। তবে স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকারেজ কর্তৃক অমনিবাস বিপিআইডির মাধ্যমে বিড দাখিলের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা ফি বা চার্জ নেওয়া যাবে।
ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সেকেন্ডারি ট্রেডিংয়ের জন্য প্রতি লেনদেন সর্বোচ্চ ফি নেওয়া যাবে ১০০ টাকা। এই সেবার জন্য অব্যক্তিক বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকেও সর্বোচ্চ ১০০ টাকা নেওয়া যাবে।
একটি পঞ্জিকাবর্ষে বিপিআইডি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা চার্জ নেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে অব্যক্তিক বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে নেওয়া যাবে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা।
এ ছাড়া আয়কর সনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদেরকে বছরে একটি সনদ বিনা মূল্যে দিতে হবে। তবে পরবর্তী অতিরিক্ত প্রতিটি সনদের জন্য সর্বোচ্চ ২০০ টাকা চার্জ করা যাবে। অন্যদিকে অব্যক্তিক বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরকে ব্যাংক বছরে একটি সনদ বিনা মূল্যে দেবে। পরবর্তী অতিরিক্ত প্রতিটি সনদের জন্য সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা চার্জ করা যাবে।
এই ফি ও চার্জের মধ্যে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই পাঁচ রকমের সেবা ছাড়া সরকারি সিকিউরিটিজ–সংক্রান্ত অন্যান্য সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, যেমন মুনাফা/কুপন/আসল পরিশোধ, অ্যালটমেন্ট/হোল্ডিং রিপোর্ট, বিপিআইডি বন্ধ করা ইত্যাদির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ফি বা চার্জ আরোপ করা যাবে না।
এমআই