অর্থনীতি
কৃষিঋণ বিতরণ কমেছে ১০ শতাংশ

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণ করেছে এক হাজার ৭৯০ কোটি টাকা। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে এই ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৯৯১ কোটি টাকা। সে হিসাবে গত বছরের একই মাসের চেয়ে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণ কমেছে ২০১ কোটি বা ১০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।
তবে কৃষি বিতরণ কমলেও ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন ব্যাংকাররা। তারা বলছেন, গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ব্যর্থ করতে শেখ হাসিনা সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখে। সঙ্গে কারফিউ ও আন্দোলনের কারণে ব্যাংকিং কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে পড়ে। আর এসব কারণে অন্যান্য খাতের মতো কৃষি খাতেও ঋণ বিতরণ কমেছে। এখন পরিস্থিতির উন্নতি হওয়া ধীরে ধীরে এটি বাড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, কৃষি খাতে বিতরণকৃত মোট ঋণের পরিমাণ এখন ৫৬ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা। যার মধ্যে খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা বা বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে কৃষি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫২ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। যার মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল ৪ হাজার ৪৪ কোটি টাকা। সে হিসাবে এবার কৃষিতে ঋণ ও খেলাপি দুটোই বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, দেশে খাদ্য চাহিদা পূরণে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষকদের জন্য ৩৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে ব্যাংকগুলো। এটি গত অর্থবছরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছর কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল ৩৫ হাজার কোটি টাকা। যদিও ব্যাংকগুলো শেষমেশ ৩৭ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করেছে। মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিতরণ করেছিল ৩২ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ১২ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা, বেসরকারি এবং বিদেশি বাণিজ্যিকগুলোর জন্য ২৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো বিতরণ করে ৫৭৮ কোটি বা লক্ষ্যমাত্রার ৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং বিদেশি ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো এক হাজার ২১৩ কোটি বা লক্ষ্যমাত্রার ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। কৃষি ও পল্লীঋণে সবচেয়ে বেশি বিতরণ করেছে বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। ব্যাংকটি এই সময়ের মধ্যে ঋণ বিতরণ করেছে ২৮৪ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেই কৃষকরা ২ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকার ঋণ শোধ করেছেন। যা বিগত ২০২৩-২৪ বছরের একই সময়ে আদায় হয়েছিল ২ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার একই সময়ের আদায় কমেছে ১৭৬ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ কম।
কৃষিঋণের মধ্যে দুই ভাগে অর্থাৎ শস্য-ফার্ম (গবাদিপশু ও মৎস্য খামার) এবং নন ফার্ম খাতে ঋণ দেওয়া হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে শস্যে ৭৩৪ কোটি, পোল্ট্রিতে ৪৭১ কোটি, মৎস্য খাতে ৩২৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। আর নন-ফার্মে ২৬৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।

অর্থনীতি
বিসিএমএ’র নতুন সভাপতি প্রিমিয়ার সিমেন্টের এমডি আমিরুল হক

দেশের সিমেন্টশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমএ) নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রিমিয়ার সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আমিরুল হক।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ঢাকায় বিসিএমএর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে তাঁকে দুই বছরের জন্য সংগঠনটির সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
এ ছাড়া সংগঠনের প্রথম সহসভাপতি হয়েছে কনফিডেন্স সিমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইমরান করিম। সহসভাপতি হয়েছেন ইউনিক সিমেন্টের পরিচালক তানজিমা বিনতে মোস্তফা।
বিসিএমএ জানায়, নবনির্বাচিত সভাপতি আমিরুল হক বিসিএমএর পাশাপাশি এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলওএবি) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চার দশক ধরে তিনি দেশে ব্যবসা–বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। পেট্রোকেমিক্যাল, শিপিং, বীজ প্রক্রিয়াকরণ ও ভোজ্যতেল শোধনাগার, আটার কল, চিংড়ি হ্যাচারি, ব্যাগ, স্যাক উৎপাদন, আবাসন খাতসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম চেম্বার ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন আমিরুল হক। দেশের শিল্প খাতে অবদানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তিনি একাধিকবার সিআইপিও নির্বাচিত হন।
সভাপতি, প্রথম সহসভাপতি ও সহসভাপতি ছাড়াও বিসিএমএর নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন সেভেন রিং সিমেন্টের তাহমিনা আহমেদ।
এ ছাড়া নির্বাহী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন হাইডেলবার্গ সিমেন্টের ট্যারেন্স ওএনজি, মীর সিমেন্টের শামা-ই-জহির, ডায়মন্ড সিমেন্টের আবদুল্লাহ ইফতেখার, এনজিএস সিমেন্টের অভিমুন্য সাহা ও আকিজ সিমেন্টের মো. মশিউর রহমান।
আমিরুল হকের আগে বিসিএমএর সভাপতি ছিলেন ক্রাউন সিমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলমগীর কবির। তিন দফায় দায়িত্ব পালনের পর নিয়ম অনুযায়ী নতুন সভাপতির হাতে সংগঠনের নেতৃত্ব তুলে দেন বিদায়ী সভাপতি।
অর্থনীতি
বাড়তি ব্রয়লার মুরগির দাম, মাছের বাজারে স্বস্তি

রাজধানীর কাঁচাবাজারে ফের বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ঈদের পর দাম কমে গেলেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এদিকে হঠাৎ করেই দামের এই ঊর্ধ্বগতিতে বিস্মিত হচ্ছেন ক্রেতারা। তবে মাছের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল থাকায় সেখানেই কিছুটা স্বস্তি খুঁজছেন তারা। এদিকে গরু ও খাসির মাংসের দাম আগের মতোই রয়েছে, কিন্তু ঈদের রেশ না কাটায় সেখানে নেই তেমন বিক্রি।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রীসহ আশেপাশের একাধিক বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬৫–১৭০ টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহেও সেটি ছিল ১৪৫–১৫০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ কেজিতে ১৫–২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সোনালি মুরগির দামও বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৮০ টাকা।
গত বছরের সেপ্টেম্বরেই কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ব্রয়লার মুরগির জন্য সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা দাম নির্ধারণ করেছিল। এক বছর না যেতেই আবার সেই দামের কাছাকাছি চলে এসেছে বাজার।
রামপুরা বাজার গিয়ে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দোকানে ভিড় অনেকটাই কম। মুরগির দোকানে দাঁড়িয়ে আছেন গৃহিণী হাসিনা আক্তার। পাশ থেকে হাঁক ডেকে বললেন, “ভাই, এই তো গত সপ্তাহে তো ১৫৫ টাকায় কিনেছি, আজকে হঠাৎ ১৭৫ বলছেন ক্যান? সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকা বাড়া কি স্বাভাবিক?” দোকানি মো. রিয়াজ উদ্দিন মুখে কিছুটা বিরক্তি নিয়ে জবাব দিলেন, “ আমরা তো নিজেরা দাম বাড়াই না। ফার্ম থেকেই এখন ১৬০–১৬৫ টাকা পড়ছে। আমাদের যদি ১০ টাকা লাভ না থাকে, চলবে কীভাবে? আমরাও তো কষ্টে আছি।”
রেজাউল করিম নামের এক পোশাককর্মী বলেন, তিনদিন আগেও অফিসের পেছনের গলির দোকানে ১৫০ টাকা কেজি ছিল। আজ বলল ১৭০! বাসায় বাচ্চাদের জন্য কিনি, নিজেরা তো যা পাই তা দিয়েই চলে। এত দাম দিলে তো মুরগিও বাদ দিতে হবে!
তিনি বলেন, এতদিন মুরগি ১৪০-১৫০ টাকার মধ্যে ছিল, আমার মতে এটাই ছিল ব্রয়লার মুরগির স্বাভাবিক দাম। এই দামে থাকলে গরিব ধনী সবাই নিজেদের চাহিদা মতো খেতে পারবে। কিন্তু মাঝেমধ্যেই হঠাৎ করে দাম কেন জানি বেড়ে যায়।
বাজার পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, ফার্ম ও পরিবহনপর্যায়ে একটি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে। যদিও খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন—বর্ষা মৌসুমে সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন এবং ফিডের মূল্যবৃদ্ধিই দাম বাড়ার পেছনে মূল কারণ। মুরগি বিক্রেতা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, “দাম বাড়ছে ফার্ম থেকে। আমরা আগে যেখানে ১৪৫–১৫০ টাকায় কিনতাম, এখন সেখানে কিনতে হচ্ছে ১৬০–১৬৫ টাকায়। আমাদের যে খরচ, তাতে অন্তত ১৫ টাকা লাভ না রাখলে ব্যবসা টিকবে না। এই দামে বিক্রি করতেই বাধ্য হচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, কোনো কোনো গ্রাহক ভাবছেন আমরা ইচ্ছে করে দাম বাড়িয়েছি। কিন্তু আমরাও বিপদে। পরিবহন খরচ, শ্রমিক, দোকান ভাড়া—সবমিলিয়ে ন্যূনতম লাভেই চলছি।
বনশ্রী এ ব্লক এলাকার বাজারে গিয়ে দেখা গেলো সকালের মাছের বাজার অনেকটাই জমজমাট। মাছের দোকানগুলোতে তাজা রুই, কাতল, পাবদা সাজানো। দাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে বাজারে রুই ও কাতল বিক্রি হচ্ছে ৩০০–৩৪০ টাকা কেজিতে। পাবদা ৩৫০–৪০০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০–৭০০, টেংরা ৬০০–৭০০, শিং ৪০০–৪৫০, কৈ ২০০–২২০ এবং তেলাপিয়া–পাঙ্গাস পাওয়া যাচ্ছে ১৮০–২০০ টাকায়। দেশি শিং ও কৈ মাছের দাম অবশ্য এখনও অনেক বেশি—প্রতি কেজি যথাক্রমে ১২০০ ও ১০০০ টাকা।
বাজার করতে আসা শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বললেন, আজকের বাজারে মুরগির দাম একটু বেড়েছে। গরু-খাসির দাম তো অনেক বেশি। সেই তুলনায় আমার মত নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য মাছ এখন সবচেয়ে ব্যালান্সড অপশন।
মাছ বিক্রেতা হুমায়ুন কবির বললেন, “ঈদের পর এখন লোকজন মাংস থেকে সরে মাছেই ঝুঁকছে। দামও বাড়েনি, আবার ভালো মাছ মিলছে, তাই বিক্রিও ভালো।”
শ্যামল মিয়া নামক আরেক বিক্রেতা জানান, মাংস-মুরগির বাজারে দাম বাড়ছে, আর আমরা মাছওয়ালারা একটু স্বস্তিতে আছি। রুই কাতল আগের মতোই আছে, তাই মানুষ আসছে। পাবদা, তেলাপিয়া ভালো যাচ্ছে।
এদিকে ঈদের এক সপ্তাহ পেরোলেও এখনও রাজধানীর অধিকাংশ পরিবারে কোরবানির মাংস আছে। সেই কারণে গরু, খাসি ও ছাগলের মাংসের দোকানগুলোতে এখনো ক্রেতার অভাব। রামপুরা বাজারের মাংস ব্যবসায়ী মো. কবির হোসেন বলেন, “ঈদের পর এমনটা হতেই পারে, তবে এবার একটু বেশি সময় ধরে লোকজন মাংস কিনছে না। দাম কমেনি—গরু ৭৫০–৭৮০, খাসি ১১০০ আর ছাগল ১০০০ টাকায় বিক্রি করছি। কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। যারা কোরবানি দেয়নি, তারাও মাছ-মুরগিতে চলে গেছে।
অর্থনীতি
আজ ও আগামীকাল কাস্টম হাউজ খোলা

আজ শুক্র ও আগামীকাল শনিবার (১১-১২ জুলাই) ছুটির দুই দিন দেশের সব কাস্টম হাউজ খোলা থাকবে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) কাস্টমস নীতির প্রথম সচিব মু রইচ উদ্দিন খানের সই করা নির্দেশনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, ধীরগতির কারণে গত কয়েকদিন দেশের আমদানি-রপ্তানি পণ্যচালান ছাড় প্রক্রিয়া কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়।
এ অবস্থায় দেশের আমদানি- রপ্তানি বাণিজ্য নিরবচ্ছিন্ন রাখার উদ্দেশ্যে ১১-১২ জুলাই, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান রাখার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
অর্থনীতি
অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত গ্রেপ্তার

অর্থনীতিবিদ ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল বারকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মো. নাসিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ধানমন্ডি থেকে আবুল বারকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা আছে। এর ভিত্তিতে ডিবি অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি আবুল বারকাতসহ ২৩ জনের নামে মামলা করে দুদক। সংস্থাটি জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ও আবুল বারকাত পরস্পর যোগসাজশে জালজালিয়াতির মাধ্যমে এননটেক্স গ্রুপের ২২টি প্রতিষ্ঠানকে এই টাকা ঋণ দিয়েছিলেন। আতিউর রহমান, তাঁর সহযোগী অন্য ব্যক্তিরা বিভিন্ন অনৈতিক কৌশলে এই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বারকাত বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
অর্থনীতি
৮ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবে স্টার্টআপ, সুদের হার ৪ শতাংশ

স্টার্টআপ বা নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বড় সুখবর দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের ২১ বছর বা তার বেশি বয়সী যে কেউ এখন থেকে নতুন ব্যবসা শুরু করতে চাইলে ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ নিতে পারবেন।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) এ সংক্রান্ত একটি মাস্টার সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, নতুন এই নীতিমালা দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করবে। এতে করে উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাড়বে, কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত হবে। এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনেও সহায়তা করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, নতুন উদ্যোক্তাদের বড় ধরনের সুযোগ তৈরির এই ঋণের সুদের হার হবে মাত্র ৪ শতাংশ। এ ছাড়া, ব্যাংকগুলো এখন শুধু ঋণ নয়, চাইলে বিনিয়োগও করতে পারবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি গঠন করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনার ফলে এখন নতুন উদ্যোক্তাদের ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশে স্টার্টআপ সংস্কৃতি আরও জোরদার করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব স্টার্টআপ তহবিল থেকে এখন শুধু ইক্যুইটি বা অংশীদার ভিত্তিতে বিনিয়োগ করতে পারবে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার তহবিল থেকে দেওয়া যাবে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ। তবে এই তহবিল ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে নতুন করে ঋণ বা বিনিয়োগ করা যাবে না। আগে যেসব ঋণ বা বিনিয়োগ অনুমোদন হয়েছে, সেগুলোর অর্থ ছাড় দেওয়া যাবে।
সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, নতুন নিয়মে ঋণের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। আগে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা দেওয়া হতো, এখন ধাপে ধাপে ২ কোটি থেকে ৮ কোটি টাকা পর্যন্ত দেওয়া যাবে। অর্থায়নের জন্য উদ্যোক্তার বয়স কমপক্ষে ২১ বছর হতে হবে। তবে সর্বোচ্চ বয়সের কোনো সীমা নেই। যেসব স্টার্টআপ ইতোমধ্যেই চালু আছে, সেগুলোও এই সুবিধা পাবে। তবে কোম্পানির বয়স ১২ বছরের বেশি হলে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না।
তবে ব্যাংকগুলো নিজেরা যে পুরোনো স্টার্টআপ তহবিল তৈরি করেছিল, তা থেকে এখন নতুন করে ঋণ দেওয়া যাবে না। আগে যে ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে, সেগুলোর অর্থ বিতরণ চালিয়ে যাওয়া যাবে। এতদিন ব্যাংকগুলো কেবল পুরোনো বা চলমান ব্যবসাকে ঋণ দিত। নতুন উদ্যোক্তারা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন, কারণ ব্যাংকারদের মনে হতো নতুন ব্যবসার ঝুঁকি বেশি। তবে এখন সেই ধারণা বদলেছে।