অর্থনীতি
পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে মাঠে নেমেছে দুদক
শেখ হাসিনা সরকারের ১৭ বছরে পাচার হওয়া প্রায় এক লাখ কোটি টাকার খোঁজে পূর্নাঙ্গ শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই কাজে সংস্থাটিকে সাহায্য করছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) একটি দল।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) এফবিআইয়ের লিগ্যাল অ্যাটাচে রবার্ট ক্যামেরুন ও সুপারভাইজার স্পেশাল এজেন্টের সমন্বয়ে একটি দল দুদকের মানিলন্ডারিং এবং লিগ্যাল শাখার মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক মহাপরিচালক বলেন, ‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছে দুদক। এছাড়া পাচার হওয়া টাকা উদ্ধারে আমাদের সফলতা আছে। মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত কার্যক্রম, আইন ও আমাদের সক্ষমতা এফবিআইকে জানাবো।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরাতে সংস্থাটির কোনো সাহায্য নেওয়া যায় কি না সে বিষয়ে আমাদের কথা হবে। এছাড়া যৌথ টাস্কফোর্স নিয়েও আলোচনা হতে পারে। দুদকের সঙ্গে এফবিআইসহ একাধিক বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হয়।’
এদিকে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সভা শেষে অন্তবর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘টাস্কফোর্সের কর্মপদ্ধতি কী হবে, কারা থাকবে, এর প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ চলছে। কিছুদিনের মধ্যে এই টাস্কফোর্স দৃশ্যমান হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ব্যাংক খাতের সংস্কারে আলাদা টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।’
সরকারের বিশেষ টাস্কফোর্সে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন, অর্থ বিভাগ, এনবিআর, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ইত্যাদি সংস্থার প্রতিনিধিরা থাকছেন বলে জানা গেছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্র্যাক ব্যাংকের এমডির পদত্যাগ দাবি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের
ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেনের পদত্যাগ দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ‘ব্যাংক খাতের দুর্দশার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারাই দায়ী’ এমন মন্তব্য করায় তাঁর বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভেতরে প্রতিবাদ সভায় তাঁর পদত্যাগ দাবি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুক্তিযুদ্ধ সংসদে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভায় এমন আহ্বান জানান তারা।
সভায় ব্র্যাক ব্যাংকের এমডির বিরুদ্ধে খুব দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে অনুরোধ জানানো হয়। সভায় কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বিদেশ যাত্রায় আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি লাগলেও যা রহিতকরণের উদ্যোগ নেয় এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এর পরপরই কয়েকজন দুর্নীতিগ্রস্ত এমডি বিদেশে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। দেশের সব দায়িত্বশীল ব্যক্তি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই বিদেশে যাওয়ার রীতি প্রচলিত আছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্ধারিত সিনেমা বাংলাদেশ ব্যাংকের সব কর্মকর্তাকে দেখতে বাধ্য করা, এর জন্য অর্থায়ন করা এবং যারা সিনেমা দেখতে যায়নি তাদের একটি বিশেষ সংস্থার মাধ্যমে তালিকা বানানোর মতো অনৈতিক কাজে সেলিম আর এফ হোসেন যুক্ত ছিলেন। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নীতিমালা লঙ্ঘন করে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় বিপুল বেতন- ভাতায় পতিত সরকারের আমলে ব্যাংকের এমডির চাকরি পান তিনি। আইডিএলসিতে থাকাকালে পিকে হালদার সংশ্লিষ্ট বেনামী প্রতিষ্ঠান ক্লিস্টোন গ্রুপের আবদুল আলীমকে কোটি টাকা ঋণ দেন তিনি। আর্থিক অনিয়মের কারণে তার আপন ভাই সোহেল আরকে হুসেইন সিটি ব্যাংকের এমডির পদ ছাড়তে বাধ্য হয়। পরে তারই প্রভাব ও প্রতিপত্তিতে সে আবার ব্যাংকিং খাতে ফিরে আসে। নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ সব ব্যাংক ডাকাতদের সঙ্গে বিশেষ সখ্য গড়ে তোলা এই প্রভাবশালী এখন সরকার পরিবর্তনের সুযোগে ভোল পাল্টাতে আরম্ভ করেছেন।
উল্লেখ্য, বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিআইবিএমের এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের উপস্থিতিতে সেলিম আর এফ হোসেন অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ব্ল্যাকমেইল করছে। নিয়োগ বদলি ও প্রমোশনের বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের চাপের কথা উল্লেখ করেন ওই অনুষ্ঠানে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এসএমই খাতের উন্নয়নে ১১৮ সুপারিশ
সরকারি ক্রয়ে এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য কোটা বাধ্যতামূলক করা, ৫ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা, নিয়মিত বাজেট বরাদ্দসহ দেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে ১১৮টি সুপারিশ তুলে ধরেছেন উদ্যোক্তা প্রতিনিধি ও বিশ্লেষকরা।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘জাতীয় এসএমই নীতি প্রণয়ন: স্থিতিস্থাপক ভবিষ্যতের জন্য এসএমইকে ক্ষমতায়ন করা’ শীর্ষক একটি পরামর্শ সভায় বক্তারা এসব সুপারিশ তুলে ধরেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নূরুজ্জামান।
এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজিম হাসান সাত্তার, ফারজানা খান ও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন এবং উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সালাম সরদার পরামর্শ সভার প্রতিনিধিদের এসএমই খাতের উন্নয়নে নতুন এসএমই নীতিমালা তৈরিতে সরকার ও বেসরকারি খাতের করণীয় এবং তা বাস্তবায়নের সুপারিশ তুলে ধরার আহ্বান জানান।
নতুন এসএমই নীতিমালা তৈরিতে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত পরামর্শ সভায় তারা আরও বলেন, এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের সব সেবা এক দপ্তরের অধীনে এনে ‘ওয়ান স্টপ সেবা’ চালু করা জরুরি। এসএমই পণ্য উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ ও ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
সরকারি ক্রয়ে এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য কোটা বাধ্যতামূলক করা, ৫ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা, নিয়মিত বাজেট বরাদ্দসহ দেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে
জেলাভিত্তিক এসএমই পণ্যের ব্র্যান্ডিং-এর লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। এসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে জেলাভিত্তিক আলাদা শিল্প পার্ক ও পণ্য বিক্রয় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা দরকার।
এসএমইবান্ধব সাব-কন্ট্রাক্টিং বিধিমালা হালনাগাদ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (ইজিপি)-তে নারী-উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, এসএমইদের সক্ষমতা উন্নয়নে আধুনিক, পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির প্রসার ও ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন।
এছাড়া বাৎসরিক ভিত্তিতে জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান নিরুপণ, নিয়মিত এসএমই পরিসংখ্যান ও প্রধান প্রধান এসএমই সূচক প্রকাশ করারও সুপারিশ করা হয় পরামর্শ সভায়।
বলা হয়, এসএমইদের জন্য তুলনামূলকভাবে বৈধ ব্যবসা পরিচালনায় প্রয়োজনীয় আইনি ও প্রশাসনিক কাজ যেমন: ব্যবসা নিবন্ধন, লাইসেন্স প্রক্রিয়া ও ক্লিয়ারেন্স শর্তাদি সহজ ও নমনীয় করা জরুরি। সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধি, এসএমই উদ্যোক্তা, চেম্বার, অ্যাসোসিয়েশন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, গবেষক, পলিসি বিশ্লেষক, অর্থনীতিবিদরা অংশগ্রহণ করেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নতুন এসএমই নীতিমালা তৈরির লক্ষ্যে এরই মধ্যে দেশের প্রায় ১০০টি এসএমই উদ্যোক্তা চেম্বার, অ্যাসোসিয়েশন, এসএমই ক্লাস্টার, বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কাছ সুপারিশ গ্রহণ করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ওয়ালটন বাংলাদেশকে গর্বিত ও সম্মানিত করেছে: এনবিআর চেয়ারম্যান
রাজধানীতে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী ‘অ্যাডভান্সড টেকনোলজি সল্যুশন বা এটিএস এক্সপো-২০২৪’। দ্বিতীয়বারের মত একক এই বৃহৎ শিল্পমেলা আয়োজন করেছে দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি’র হল-৩ এ মেলা শুরু হয়ে চলবে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) পর্যন্ত। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘এটিএস এক্সপো-২০২৪’ এর উদ্বোধন করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
এসময় অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম আশরাফুল আলম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান, উরি ব্যাংকের কান্ট্রি হেড জিন হুর, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসির চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার নাজিথ মীওয়ানাগে প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ওয়ালটন বাংলাদেশকে গর্বিত ও সম্মানিত করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি করছে ওয়ালটন। বিশ্বে বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করেছে ওয়ালটন।
তিনি আরো বলেন, এটিএস এক্সপোতে এসে শুধু ওয়ালটন সম্পর্কেই নয়; বাংলাদেশের সক্ষমতার বিষয়েও দারুণ ধারণা পেয়েছি। প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গিয়েছে। ওয়ালটন শুধু নিজেরাই এগিয়ে যাচ্ছে না; দেশের অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে নিতে কাজ করছে।
বৈশ্বিক বাজারে ওয়ালটন পণ্যের চাহিদা সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অফিসিয়াল কাজে বেশ কিছুদিন পূর্ব তিমুরে ছিলাম। সেখানকার বাজারে ওয়ালটন পণ্যের ব্যাপক চাহিদা দেখেছি। ওয়ালটন পণ্যের উচ্চ গুণগতমান দেশটির ক্রেতাদের আস্থা জয় করে নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, ওয়ালটনের নিজস্ব প্রোডাকশন প্ল্যান্টে ফিনিশড প্রোডাক্টস, কাঁচামাল, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার, প্যাকেজিংসহ সব ধরনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস ও কম্পোনেন্টস উৎপাদিত হচ্ছে। এসব পণ্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করতে সক্ষম ওয়ালটন। দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের নিকট ওয়ালটনের এই সক্ষমতা তুলে ধরে দেশের আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করার লক্ষ্যেই এটিএস এক্সপো আয়োজনের উদ্যোগ।
তিনি জানান, স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় শিল্পজাত উপকরণ এখন দেশেই তৈরি করছে ওয়ালটন। এসব পণ্য এখন আর বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না। এতে করে স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উপকরণ ক্রয়ের খরচ এবং সময়ও যেমন কমবে, তেমনি দেশের আমদানি নির্ভরতা হ্রাসের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে।
সরকারকে দেশীয় শিল্পে প্রদত্ত নীতি সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে ওয়ালটনের এমডি বলেন, অ্যাসেম্বলার ও ম্যানুফ্যাকচার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইনগত পার্থক্য করা প্রয়োজন।
ওয়ালটনের ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম আশরাফুল আলম বলেন, এটিএস এক্সপোর মাধ্যমে বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বে ভিন্নভাবে পরিচিত করিয়ে দিতে চাই আমরা। বিশ্বের সেরা সব পণ্য আমরা এখন দেশে তৈরি করতে সক্ষম। লাস ভেগাস, ক্যান্টন ফেয়ার এবং ফ্র্যাঙ্কফুটের মতো বিশ্ব মেলা মঞ্চে আমরা ওয়ালটন পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছি। আমরা সেখানে দেখিয়েছি, বাংলাদেশ কোথায় আছে। এখন বৈশ্বিক ক্রেতাদের এখানে এসে দেখে যেতে হবে। সারাবিশ্ব অচিরেই বাংলাদেশকে প্রযুক্তি পণ্যের হাব হিসেবে চিনবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এটিএস এক্সপো’তে একই ছাদের নিচে ওয়ালটনের সর্বাধুনিক ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টস এ উৎপাদিত আন্তর্জাতিক মানের ৫০ হাজারেরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস, সার্ভিসেস ও টেস্টিং সল্যুশনস প্রদর্শন করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রদর্শিত হচ্ছে এনার্জি সেভিং ও পরিবেশবান্ধব ফ্রিজ, এসি, টিভি, ওয়াশিং মেশিন, লিফটসহ বিভিন্ন ধরণের ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল, হোম এবং কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য সামগ্রী।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এস আলমমুক্ত ৬ ব্যাংকের এলসি খোলার শর্ত শিথিল
এস আলমের গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হওয়ায় শরিয়াভিত্তিক ছয়টি ব্যাংকের এলসি খোলায় শতভাগ মার্জিনের বাধ্যবাধকতা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে অন্য সব ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ বহাল থাকবে এস আলম মুক্ত হওয়া এসব ব্যাংকে।
বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।
এতদিনে এসব ব্যাংক পতিত সরকারের বিশেষ আনুকূল্যে এস আলম গ্রুপ মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণে ছিল। গত ৬ আগস্টের পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করে। পরে ছয় ব্যাংকের ঋণ বিতরণসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ওই সময়ে ব্যাংকগুলোয় পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, কৃষি, চলতি মূলধন, সিএমএসএমই, প্রণোদনা প্যাকেজ এবং নিজ ব্যাংকে রক্ষিত এফডিআরের বিপরীতে এসওডি ও শতভাগ নগদ মার্জিনের বিপরীতে বিনিয়োগপত্র ও অন্যান্য পরোক্ষ বিনিয়োগ সুবিধা ছাড়া অন্য কোনো বিনিয়োগ করা যাবে না।
এসব খাতেও ৫ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ কিংবা সীমাতিরিক্ত বকেয়া স্থিতির নগদ আদায় ছাড়া বিদ্যমান বিনিয়োগ সুবিধা নবায়ন করা যাবে না।
অন্য কোনো ব্যাংক বা ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কোনো বিনিয়োগ অধিগ্রহণ করা যাবে না। ব্যাংকের শীর্ষ ২০ ঋণগ্রহীতা থেকে আদায়ের তথ্য মাসিক ভিত্তিতে জানাতে হবে। এসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ও আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এ নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নোভারটিসের অধিকাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করবে রেডিয়েন্ট ফার্মা
নোভারটিস বাংলাদেশ লিমিটেড নিজেদের মালিকানাধীন শেয়ার শীর্ষস্থানীয় দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করবে। এ নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শেয়ার হস্তান্তরের ঘোষণা দেওয়া হয়। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন নোভারটিসের হেড এশিয়া আ্যসপায়রিং মার্কেটস কেভিন জু রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.)সিনা ইবনে জামালী। এসময় দুই প্রতিষ্ঠানেরই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাণ উপস্থিত ছিলেন।
নোভারটিসের হেড এশিয়া অ্যাসপায়রিং মার্কেটস কেভিন জু বলেন, গ্লোভাল স্ট্র্যাটেজির সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমরা এনবিএল-এ আমাদের শেয়ার শীর্ষস্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি। আমাদের উদ্ভাবনী ওষুধগুলোর মাধ্যমে রোগীদের সেবা প্রদান নিশ্চিতে আমরা প্রতিশ্রুতি বদ্ধ;পাশাপাশি,আমরা বাংলাদেশের মানুষের জিবনের মানোন্নয়ন ও তাদের সুদীর্ঘ জীবন অর্জনে ভূমিকা রাখার লক্ষ নিয়ে কাজ করছি । উপরন্তু,আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমাদের কর্মীদের প্রতি ন্যায্য আচরণ নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিব্ধ । এ হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় রেডিয়েন্টকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।
রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্য়ান মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী রেডিয়েন্ট ও নোভারটিসের মধ্যে নতুন ব্যবসায়িক অংশদারিত্বের দিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি মনে করেন, এ অংশীদারিত্ব দেশের মানুষের জন্য নোভারটিসের উদ্ভাবনী পন্য সরবারহে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তিনি নোভারটিসের পূর্ববর্তী কোম্পানি সিবা-গেইগি এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাস্থখাতে নোভারটিসের উল্লেখযোগ্য অবদানের প্রশংসা করেন। এ শেয়ার হস্তান্তর উভয় প্রতিষ্ঠান এবং বৃহত্তর পরিসরে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
১৯৭৩ সাল থেকে নোভারটিস ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে ব্যবসায়িক পরিচালনা করে আসছে নোভারটিস।
বাংলাদেশে এনবিএলের মাধ্যমে ব্যবসার ধারাবাহিকতা ও উদ্ভাবনী ওষুধ সরবারহ অঙ্গিকারবদ্ধ নোভারটিস। এছাড়া, এনবিএলেএর অধিনে থাকা সব স্থায়ী কমপক্ষে ৩বছর একই সুযোগ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে রেডিয়েন্ট। এ হস্তান্তরের মাধ্যমে কর্মীদের জন্য আরও সুযোগ সৃস্টি হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে; পাশাপাশি, এটি বাংলাদেশে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় সাধনেও উল্লেখযো্গ্য ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী এবং রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম । রেডিয়েন্ট ফার্মার সাড়ে ৬ হাজারের ও বেশি কর্মী রয়েছে। এছাড়াও ,প্রতিষ্ঠানটির পোর্টফলিওতে ১শ’র বেশি নিবন্ধিত ব্রান্ড এবং ১২ টি আন্তর্জাতিক অংশীদার রয়েছে । এই মালিকানা স্থানান্তর দীর্ঘমেয়াতে উভয় প্রতিষ্ঠানের টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এবং ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির শক্তিশালী ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।