পুঁজিবাজার
বেক্সিমকোর শেয়ার কারসাজিতে জড়িত ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান

সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে বেক্সিমকোর শেয়ারে কারসাজির মাধ্যমে চার ব্যক্তি ও চার প্রতিষ্ঠান মিলে গড়ে ওঠা একটি চক্র হাতিয়ে নিয়েছে ৩১৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। একই সময়ে চক্রটি ৫২৬ কোটি টাকা ‘আনরিয়ালাইজড গেইন’ করেছে। বিষয়টি উঠে এসেছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) একটি তদন্ত প্রতিবেদনে। তবে ২০২২ সালে এ তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হলেও এতদিন তা ধামাচাপা দিয়ে রাখা ছিল। অভিযোগ রয়েছে, পুজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং শেখ হাসিনা সরকারের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণে প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি বিএসইসি সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেয়ার কারসাজিকারী চক্রটির চার ব্যক্তি হলেন আব্দুর রউফ, মোসফেকুর রহমান, মারজানা রহমান ও মমতাজুর রহমান এবং প্রতিষ্ঠানটি চারটি হল জুপিটার বিজনেস, অ্যাপোলো ট্রেডিং লিমিটেড, ক্রিসেন্ট লিমিটেড ও ট্রেডনেক্সট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত বেক্সিমকোর শেয়ারের লেনদেন মূল্য ছিল ৪ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে ভিন্ন ভিন্ন ক্লায়েন্ট কোডের মাধ্যমে এর ৭০ শতাংশের বেশি লেনদেন করেছে এই আট বিনিয়োগকারী। এর মাধ্যমে চক্রটি মুনাফা তুলে নিয়েছে ৩১৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আর এ সময় তাদের আনরিয়ালাইজড গেইন (অবিক্রীত শেয়ার কেনা দামের চেয়ে মূল্য বেশি ছিল) ৫২৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
জানা গেছে, ২০২২ সালে জুপিটার বিজনেস ও ট্রেডেনেক্সট ইন্টারন্যাশনাল বিমান প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার অধিগ্রহণের পর পরিচালনা পর্ষদে ঢোকে। দুটি কোম্পানি ফারইস্টের বোর্ডে তাদের প্রতিনিধিত্বের জন্য বেক্সিমকো গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভদের মনোনীত করে। ট্রেডেনেক্সট ইন্টারন্যাশনাল বেক্সিমকো গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা জামানুল বাহারকে মনোনীত করে। অন্যদিকে জুপিটার বিজনেস বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা আলী নওয়াজ ও বেক্সিমকো টেক্সটাইলের জেনারেল ম্যানেজার মাসুম মিয়ার নাম সুপারিশ করে।
ডিএসইর অনুসন্ধান অনুসারে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর ধারা ১৭-এর বেশ কয়েকটি উপধারা লঙ্ঘন করে চক্রটি শেয়ার কারসাজি করেছে। ধারা ১৭ লঙ্ঘন একটি ফৌজদারি অপরাধ। সুবিধাভোগী বিনিয়োগকারী আব্দুর রউফ ছিলেন ইউনাইটেড সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী। অন্যদিকে ক্রিসেন্ট লিমিটেড প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত ছিল। মোসফেকুর রহমান, মমতাজুর রহমান অ্যান্ড দেওয়ার অ্যাসোসিয়েটস জুপিটার বিজনেস, অ্যাপোলো ট্রেডিং, মারজানা রহমান এবং ট্রেডনেক্সট ইন্টারন্যাশনাল জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের বিনিয়োগকারী ছিলেন। এই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কেউ কেউ গ্রিন ডেল্টা সিকিউরিটিজ, বেক্সিমকো সিকিউরিটিজ, শেলটেক ব্রোকারেজ এবং আইসিবি সিকিউরিটিজের সঙ্গে আলাদা বিও অ্যাকাউন্টও রেখেছিলেন। তারা বেক্সিমকো শেয়ারে সার্কুলার লেনদেন করেছিল, যেখানে কিছু বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করেছে এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যরা ভুয়া সক্রিয় ট্রেডিং দেখাতে একাধিক লেনদেনে এসব শেয়ার কিনেছে।
ডিএসইর অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে, ক্রিসেন্ট লিমিটেড বেক্সিমকো শেয়ারের শীর্ষ ক্রেতা ছিল। ক্রিসেন্ট লিমিটেডের পরিচালক ও যুগ্ম অপারেটর আব্দুর রউফ চারটি বিও অ্যাকাউন্ট দিয়ে শেয়ার লেনদেনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। এই ৪টি বিও অ্যাকাউন্টের মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৩.২৫ শতাংশ। জুপিটার বিজনেস লিমিটেড দ্বিতীয় শীর্ষ ক্রেতা ছিল। মোসফেকুর রহমান সক্রিয়ভাবে সাতটি বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ব্যবসায় অংশ নেন। আট বিনিয়োগকারীর গ্রুপ যৌথভাবে বেক্সিমকো শেয়ারের ২৪.৬১ শতাংশ লেনদেন করেছে।
একই ব্যক্তিরাই শীর্ষ বিক্রেতাদের মধ্যেও ছিলেন। একদিকে তারা শেয়ার কিনেছেন, অন্যদিকে সেগুলো বিক্রিও করেছেন। এসব কিছু করা হয়েছে স্রেফ স্টকটিকে সক্রিয় দেখানোর জন্য।
এদিকে সিকিউরিটিজ বিধি লঙ্ঘন ও কারসাজির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ থাকা আব্দুর রউফ নিজেকে বেক্সিমকো গ্রুপের একজন কর্মচারী এবং গ্রুপের ইনস্যুরেন্স কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করতেন বলে দাবি করেন। শেয়ার কারচুপির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। শুধু কম্পানির লোকেরাই এ বিষয়ে আরো তথ্য দিতে পারবে।’
কোম্পানির নামে খোলা বিও হিসাব অনুযায়ী আব্দুর রউফকে ক্রিসেন্ট লিমিটেডের যুগ্ম পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় কিছু নথিতে আমার স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে, তবে আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।
ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বেক্সিমকো শেয়ার কারসাজি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর ধারা ১৭-এর বেশ কয়েকটি উপধারা লঙ্ঘন করেছে। ধারা ১৭ লঙ্ঘন অনুযায়ী এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পুঁজিবাজার
শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে না বিডি ফাইন্যান্স

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেড গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেবে না।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে আলোচিত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সর্বশেষ হিসাববছরে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ৪১ টাকা ৬১ পয়সা লোকসান হয়েছে। আগের বছর সমন্বিতভাবে ৫ টাকা ৬০ পয়সা লোকসান হয়েছিল।
গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট দায় ছিল ৩০ টাকা ৫ পয়সা।
আগামী ২৯ মে সকাল ১১ টায় ডিজিটাল হাইব্রিড পদ্ধতিতে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ মে ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সেনা ইন্স্যুরেন্সের আয় বেড়েছে ১০৭ শতাংশ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সেনা ইন্স্যুরেন্স পিএলসি ৩১ মার্চ, ২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ১০৭ শতাংশ বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে আলোচিত প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৯০ পয়সা। গত বছর একই সময়ে ইপিএস হয়েছিল ৯২ পয়সা।
আলোচিত প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি অর্থের প্রবাহ ছিলো ৯ টাকা ৫০ পয়সা। যা গত বছর ছিলো ১ টাকা ৪০ পয়সা।
গত ৩১ মার্চ ২০২৫ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ২৬ টাকা ৯৮ পয়সা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
আইডিএলসির ২০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আইডিএলসি ফাইন্যান্স পিএলসি গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ, বাকী ৫ শতাংশ বোনাস।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আলোচিত বছরে সমন্বিতভাবে আইডিএলসি ফাইন্যান্স ২০০ কোটি ২৮ লাখ টাকা নীট মুনাফা করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৩২ শতাংশ বেশি। এককভাবে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ১৬৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে ৫৩ শতাংশ বেশি।
সর্বশেষ বছরে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৮২ পয়সা, যা আগের বছর ৩ টাকা ৬৪ পয়সা ছিল।
আলোচিত বছরে কোম্পানিটির আমানতসহ অন্যান্য সূচকও ছিল উর্ধমুখী। সর্বশেষ বছরে গ্রাহকের আমানত বৃদ্ধি পেয়ে মোট ৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, পাশাপাশি গ্রুপটি সাফল্যের সাথে ১১ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকার লোন পোর্টফোলিও ধরে রেখেছে।
আইডিএলসি ফাইন্যান্সের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আইডিএলসি’র রিটার্ন অন ইক্যুইটি (আরওআই) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০.৩৩% এ; অন্যদিকে রিটার্ন অন অ্যাসেটস (আরওএ) বেড়ে ১.৩৫% হয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানের মূল সম্পদের কার্যকরী ও লাভজনক ব্যবহারের প্রমাণ।
উল্লেখিত বছরে ১০৬.১১% মন্দ ঋণের কভারেজ অনুপাত সহ আইডিএলসি’র মন্দ ঋণের (এনপিএল) অনুপাত ছিল ৪.৪৫%, যা প্রতিষ্ঠানটির আগের বছরের অনুপাতের তুলনায় কম এবং আর্থিক খাতের গড়ের তুলনায়ও উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এটি আইডিএলসি’র দক্ষ ঋণ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার পরিচয় দেয় এবং দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক প্রস্তুতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে আইডিএলসি’র দৃঢ় প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে।
আইডিএলসির পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান–আইডিএলসি সিকিউরিটিজ লিমিটেড, আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড, এবং আইডিএলসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড ২০২৪ সালেও নিজেদের সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে, যা আইডিএলসি গ্রুপের সাফল্যে অবদান রেখেছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সরকার পুঁজিবাজারের সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছে: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী

সরকার পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও সংস্কার নিশ্চিত করতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা দেশের উন্নয়ন ও সংস্কার তথা পরিবর্তনের জন্য কাজ করছেন। পুঁজিবাজারের উন্নয়ন না হলে দেশ এগোতে পারবে না।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ আমন্ত্রণের ভিত্তিতে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এবং কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজার উন্নয়ন কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকুল ইসলাম, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বীমা ও পুঁজিবাজার অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাঈদ কুতুব এবং পুঁজিবাজার অংশীজন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের শীর্ষ প্রতিনিধিরা।
আজ বৃহস্পতিবার বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সভায় ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী মতবিনিময় সভা আয়োজন ও সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি পুঁজিবাজারের বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত মতামত এবং প্রস্তাব তুলে ধরার জন্য বিএসইসি ও বাজার অংশীজনদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, সংস্কার ও প্রতিবন্ধকতাগুলোর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট লিখিত প্রস্তাব আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কমিটির কাছে পাঠানোর অনুরোধ জানান তিনি।
ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, শুধু বিদেশি অনুদাননির্ভর না হয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য যে ফান্ড বা বিনিয়োগ প্রয়োজন, তা দেশের মধ্যে থেকেই সংগ্রহ করতে হবে। সেজন্যই দেশের পুঁজিবাজারের উন্নতি দরকার। পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সবাই একসঙ্গে পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য কাজ করব।
দেশের কল্যাণের স্বার্থে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও সংস্কার নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে অধিকতর শক্তিশালী করা এবং দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও সংস্কারে সহায়তার অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য ভালো কোম্পানির তালিকাভুক্তি প্রয়োজন। দেশের পুঁজিবাজার গত ১৫ বছরে ভালো কোম্পানি পায়নি। ভালো কোম্পানিকে বাজারে নিয়ে আসাও চ্যালেঞ্জ। ভালো কোম্পানির তালিকাভুক্তির জন্য বিএসইসি চেষ্টা চালাচ্ছে। পুঁজিবাজার সংস্কার টাওফোর্সের সুপারিশের আলোকে খুব দ্রুতই পাবলিক ইস্যু রুলসের সংস্কার করা হবে, যা ভালো কোম্পানির তালিকাভুক্তি নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। তিনি দেশের অর্থনীতিকে পুঁজিবাজারমুখী করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সভায় পুঁজিবাজারের অংশীজনরা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, টার্নওভারের ওপর উৎসে কর কমানো, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের পার্থক্য বৃদ্ধি, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে নেগেটিভ ইকুইটির সমাধান, ভালো ও মৌলভিত্তিসম্পন্ন সরকারি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা, পণ্যে বৈচিত্র্য আনা, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ বাস্তবায়ন, বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, পুঁজিবাজারের বাজার কাঠামো আধুনিকায়ন, সিসিবিএলের বাস্তবায়ন, সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয় বৃদ্ধি, ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন রিভিউ, বিভিন্ন প্রণোদনা বা সুবিধার মাধ্যমে কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে আগ্রহী করা, পুঁজিবাজারে অনিয়ম ও কারসাজি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, লভ্যাংশ আয়ের ওপর কর রেয়াত বৃদ্ধি, মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগে রিবেট সুবিধা বৃদ্ধি, মিউচুয়াল ফান্ডের আইপিও কোটা বৃদ্ধি, বিনিয়োগ নীতিমালা প্রস্তুত করা, পুঁজিবাজারে সকল পর্যায়ে অটোমেশন বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি সরকারের নীতি সহায়তার বিষয়ে সভায় প্রস্তাব রাখেন।
সভার প্রথমাংশে বিএসইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালকগণ, পরিচালকগণ ও কমিশন সচিব সভার এ অংশে অংশ নেন। কমিটির সদস্য সচিব ও বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখ সভার সূচনা করেন এবং সকলকে স্বাগত জানান। এ সময় বিএসইসি’র পরিচালক মো. আবুল কালাম একটি প্রেজেন্টেশন দেন। এ সময় বিএসইসির সামগ্রিক কর্মকাণ্ড ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সাম্প্রতিক সময়ে বিএসইসির পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীকে অবহিত করা হয়। এছাড়াও বিএসইসির অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়সহ বিএসইসি ও পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করার পথে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেন কমিটির সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
সভার দ্বিতীয়াংশে পুঁজিবাজারের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়। এ সময় পুঁজিবাজার অংশীজন হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির (ডিএসই) চেয়ারম্যান মো. মোমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির (সিএসই) চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবদুল মোতালেব, সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আ স ম খায়রুজ্জামান, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. সাইফুদ্দিন, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মাজেদা খাতুন, অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানি আন্ড মিউচুয়াল ফান্ডসের (এএএমসিএমএফ) সহ-সভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, অ্যাসোসিয়েশন অব ক্রেডিট রেটিং এজেন্সির (এসিআরএবি) সভাপতি এন কে এ মবিন এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি রূপালী হক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ব্লকে ১৭ কোটি টাকার লেনদেন

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লকে মোট ২১ টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ২২ লাখ ৮৯ হাজার ১২৬টি শেয়ার ৫৬ বারে লেনদেন হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ১৭ কোটি ৮২ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ব্লকে সবচেয়ে বেশি বীচ হ্যাচারির ১২ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রিমিয়ার সিমেন্টের ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার ও তৃতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার্সের ১ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এসএম